ম্যাসাচুসেটসের বেভার্লি এয়ারপোর্টে কদিন আগে রীতিমত হইহই কান্ড। একটি প্রশিক্ষণ বিমানের বাঁদিকের ডানার ওপর বসে পড়েছেন হাজারদশেক মৌমাছির এক বিশাল বাহিনী!! এহেন আচরণের হেতু? বিমানে চেপে ওড়ার শখ হয়েছে হয়ত বা! ডাক পড়ল পেশাদার মৌমাছিতাড়ুয়া উইলকিন্স সায়েবের। তিনি জানালেন উড়তে উড়তে নিশ্চয়ই রাণীমার একটু বিশ্রামের প্রয়োজন হয়েছিল, অনুগত প্রজাগণও যথারীতি রাণীমা কে অনুসরণ করেছেন। ... ...
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কেন? প্রধানমন্ত্রী জানালেন, এতদিন ধরে এমনিই রাজ্যপালের শাসন চলছে। সেটা সিধে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গেই সম্পর্কিত। এর ফলে নানা উপকার হচ্ছে। ঝুলে থাকা প্রকল্প কাজে লাগছে। আইআইটি আইআইএম সব হুহু করে এগোচ্ছে। এবার সিধে কেন্দ্র-সরকার দায়িত্ব নিয়ে বাকিটাও ঝপাঝপ নামিয়ে ফেলবে। পরিবারতন্ত্র, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতির যে জোয়াল মানুষের ঘাড়ে চেপে বসে ছিল, তা থেকে কাশ্মীরি জনতার এবার চিরমুক্তি। কাশ্মীরি জনতা এই ব্যবস্থা চেয়েছিল কিনা, দুম করে কেন্দ্রীয় সরকার এমন কাটাছেঁড়া করে ফেলতে পারে কিনা, সে নিয়ে অবশ্য তিনি কিছু বলেননি। একটি কথা বলেছেন, যে, এম-এল-এ, মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী সবই আগের মতই থাকবে। কিছুই বদলাবেনা। তাহলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আর রাজ্য আলাদা কীসে? সব রাজ্যকে ধরে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে দিলেই তো হয়। প্রধানমন্ত্রী সেই নিয়ে কিছু বলেননি। কে জানে হয়তো পরিকল্পনা তেমনই। তবে এও বলেছেন, যে কাশ্মীরকে (লাদাখকে নয়), আবার তিনি রাজ্য বানিয়েও দিতে পারেন। যেমন ঝপ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানিয়ে দিতে পারেন, তেমনই। কী ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে বলেননি, তোমার বাঁচা-মরা আমার হাতে, আমি এমন শক্তিমান। আমার প্রচন্ড অভিমান। ... ...
মহানগরের পর্দা সরালেই মহারগড়ের প্রসেনিয়াম! কখনও আপনি দর্শক, কখনও আপনিই নটরাজ। হয় ফ্যালফ্যাল, নতুবা, স্বপ্নের বডি কাঁধে নিয়ে তপ্ত-মটকা ধেই ধেই। কোনও নাট্যকার নেই। যখন ইচ্ছে যেখানে ইচ্ছে যা ইচ্ছে। সিগনাল-তোড়ু বাইক থেকে ভিড়মি-জাগানো মাইক, কোলকাতা পুলিশের কেচ্ছা হইতে পাবলিক প্লেসের পেচ্ছাপ, দাদার হালুম টু চাঁদার জুলুম – মোদ্দা প্লট, কল্লোলিনীর কল খারাপ, আর মিস্তিরিরও ফোন অফ। ছিল তিলোত্তমা, হলো তিলোঃট্রমা! অতেব, টানার যেমন হ্যাঁচড়া, খিচুরির যেমন ছ্যাঁচড়া, কলকাতার তেমন ক্যাচড়া। জড়িয়ে পড়লেন দীপাংশু আচার্য ... ...
তার দু’হপ্তা পরের কথা। এই দু’হপ্তায় আমার শরীর আদ্দেক হয়ে গেছে। মাথায় আর চুল বিশেষ অবশিষ্ট নেই। তার মধ্যে মুখে কী সব গুড়িগুড়ি বেরোনো শুরু হয়েছে। আমার সুহৃদরা ডাক্তার পাল্টাতে বলছে। কেউ কেউ বলছে একটা সেকেন্ড ওপিনিয়ন নিতে। কথাটা ডাক্তারকে বলতেই ওনার চোখদুটো ছলোছলো হয়ে গেল। কান্নাভেজা গলায় বললেন, "অন্তত আর দুটো হপ্তা দাও আমায়?" ওই কাঁদোকাঁদো মুখ দেখে আমার মনে ভদ্রলোকের জন্য মায়া হল। ভাবলাম, যাক গে দুটো সপ্তাহর তো ব্যপার। ডাক্তার বলল, "রেডিও শুনবে?" ... ...
শীতের বাজারে পার্টি করবেন? আলুর চিপস আর নরম পানীয়? সাবধান। ওসব কিন্তু মোটা হবার মহৌষধ। বিষও বটে। নরম পানীয় এমন বস্তু, তা দিয়ে ঘষলে নোংরা টয়লেটও নাকি ঝকঝক করে। তবে কি কেবল ফাস্টফুড আর গরম পানীয়?নাঃ একদম না। অতিরিক্ত মদ্যপানে লিভারে সিরোসিস হবে। আর ফাস্টফুড যেমন অখাদ্য তেমনই অস্বাস্থ্যকর। দুমাসেই ফুলে ঢোল হবেন, শরীরে বাসা বাঁধবে হরেক রকম অসুখ-বিসুখ... ... ...
শুধু নিজের বই নিজে ছাপেনা, শুধুই নিজেদের গান নিজে গায়না, শুধু নিজের বই নিজে বেচেনা, নিজেরাই সমালোচনা করে, আহ্লাদে আটখানা হয়, গাল দিয়ে ধুইয়ে দেয়। নিজেরাই ফসল ফলায় নিজেরাই খায়, নিজেদের বর্জ্য নিজেরাই সার হিসেবে ব্যবহার করে আবার। এক কথায় সম্পূর্ণ স্বনির্ভর, ইমপোর্ট এক্সপোর্টের বালাই নেই। জুতো সেলাই থেকে ফেসবুক পাঠ পর্যন্ত এভাবে একঘাটে টেনে আনার মতো ক্ষমতাবান, এত উদ্ভট বাস্তুতন্ত্র বাংলায় আর কখনও হয়নি। ... ...
আজ সেই বহুপ্রতীক্ষিত ও বহুপ্রতিশ্রুত ৫০ (x ৬) দিন পর আমাদের দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত মশা থেকে মুক্ত, গঙ্গা নদীতে বইছে পবিত্র টাকা, বয়স্কদের ওষুধের জোগান নিশ্চিত, সন্ত্রাসবাদ, নক্শালপন্থা, মাওবাদ, জালটাকার বাণিজ্য, ড্রাগ ব্যবসা, মানব পাচার সব কিছু উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে। প্রধানমন্ত্রী মহোদয়, এখন দয়া করে সেই 'অর্ধেকের বেশি সাংসদ', যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনার যুদ্ধকে বাধা দিয়েছিলেন, তাদের নাম গুলো প্রকাশ্যে আনুন। দুই তৃতীয়াংশের বেশী সাংসদ তো আপনারই জোটের। দয়া করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন তাদের ওপর। অন্তত আপনার ঘরের সাংসদদের ওপর তো বটেই। ইংরেজীতে কথাই আছে, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম, তাই না? ... ...
ক্রমে২ সন্ধ্যা হয়ে গ্যালো। শিশুদের ভিড় চাঁদাপার্টির মতো দোর থেকে দোরে ছুটে ব্যাড়াচ্চে বাবুরা ফটাফট্ বীয়রের বোতল খুলে আয়েশ করে বসেচেন ও একে অপরের সহিত শেয়ারের দাম, গদ্দাফির মৃত্যু ও বিনেপয়সার পানুসাইটের দুÖপ্রাপ্যতা লয়ে আলোচনা কর্চেন বিবিরা পড়্শীদের ডিভোর্স্ ও পরকীয়ার কিস্যার সঙ্গে২ সুচিত্রা ভট্চাজের নতুন উপন্যাসের প্লট্ লয়ে তর্কাতর্কিতে মশগুল চারিদিকে হো২ হাসি ও সিগ্রেটের ধোঁয়ার মেঘ - ওরি মদ্যে বেচেলর তরুণরা একটু আবডালে বসে বৌদিদের বুক ও কোমরের খাঁজ দেকে কিঞ্চিৎ সুখ নিচ্চে, এবং বেঙ্গলি মেট্রিমনিতে রাখা প্রোফাইলের ছবিটি পাল্টানো উচিৎ কিনা, সেই লয়ে মনে২ জল্পনা কর্চে। খ্রীষ্টমাসের আগে আর পরব নাই, তাই সকলেরই মন একটু ভার। ... ...
এইতো দিকে দিকে লোকেরা ওঁৎ পেতে দেখছে চোখ ফেঁড়ে বিশ্বকাপ পূর্ব আভাসে ও বিশেষ মতামতে বসছে নড়েচড়ে রক্তচাপ নিরীহ কবিবর থাকেনা সাতে পাঁচে ঘোরে না মাঠে ঘাটে দিন বেবাক ... ...
বাঙালির বগলে পাউডার। পন্ডস পাউডারের গোলাপি কৌটোটি অনেকদিনের । সেই কবে মা বা কাকির ড্রেসিং টেবিল থেকে টিনের সেই কৌটোটি ঝেড়ে দিয়ে, আমি ও বুটু মেঝেতে পাউডার ছড়িয়ে ব্যালে নাচ ব্যালে নাচ খেলেছিলাম পেছল শানে পা ঘষে। ফলত মাথা ফাটা আছাড় খেয়ে। সেই পন্ডসের জায়গায় আরো কিছু কিছু অ-ব্র্যান্ডেড নামের আনাগোনা ছিল, তার উবে গেছে গ্রীষ্মের সন্ধেতে ক্রমক্ষীয়মান পাউডারের গন্ধের মত । তাদের মধ্যে একটির নাম হালকা ভাবে মনে পড়ে, কিউটিকিউরা। কী অদ্ভুত নাম। আর বোধ হয় ছিল মাইসোর স্যান্ডালেএর কৌটোগুলোও। পরে ওগুলোতে কানের দুল, ক্লিপটিপ রাখা যেত, দিব্যি শক্তপোক্ত কৌটো। ... ...
গরু আমাদের রাষ্ট্রমাতা। সে কেউ বলুন চাই না বলুন। আদি-অনন্তকাল ধরে আমরা গরুকে মাতৃস্থানীয় করে রেখেছি। তাই, গোমাতা নিয়ে কেউ আমাদের বোকা বানালে সেই নিয়ে আমাদের সরব হয়ে ওঠা দরকার। প্রসঙ্গতঃ, গত কয়েক দিন ধরে চীনের কিছু গুপ্তচর আমাদের দেশের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির মাঠে-ঘাটে গরু সেজে অবাধ বিচরণ করছিল। দেশের খবর পাচার করা তাদের মূল উদ্দেশ্য। ধরা পড়ে তারা এটা স্বীকার করেছে। এরকম ভাবে গরুর ছদ্মবেশ ধারণ করে আমাদের বোকা বানানো হচ্ছে। ... ...
আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতেই পারে। দেশে এখনো পর্যাপ্ত পরিমানে প্রাকৃতিক গ্যাস রয়েছে। তবুও সকাল সকাল এমন মানবগ্যাসের দুর্গন্ধময় আইডিয়া কেন ছড়িয়ে দিতে চাইছি। না পেটখারাপ হয়নি, আপনি হয়তো জেনে গেছেন গ্যাসে ভর্তুকির খবর। এই অবস্থায় গ্যাসে রান্নার অভ্যাস ছেড়ে মাটির উনুনে ফিরে যাওয়ার উপায় নেই। বিদ্যুতের বিলের কথা মাথায় রেখে ইন্ডাকশন কুকার বা হিটার চালানোর আগেও আপনাকে ভাবতে হবে। সাধারণ পরিবারের এসব কিনে ওঠার সামর্থ্য নেই। সর্বোপরি আপনি যদি প্রকৃত দেশপ্রেমিক হন, দেশের ছাপান্ন ইঞ্চির ছাতিধারী প্রাণপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীর মা-বোনেদের গ্যাসে রান্নার স্বপ্নকে সফল করতে এই মানবগ্যাসের সাহায্য নিতে হবে। কারন স্বাভাবিক এল.পি.জি কেনার মতো পরিস্থিতি হয়তো আগামীতে থাকবে না। মানবগ্যাস ব্যবহারে উদ্যোগী হয়ে অচ্ছেদিনের এই ধারাকে এগোতে দিন। বেশি চিল্লাচিল্লি করলে পাকিস্তান টুরিজম আছে...। সরকার যখন ভর্তুকি দিতে অপারগ, তখন আমাদের আম্বানী বা আদানীদের মতো দেশপ্রেমীদের মুনাফার কথা চিন্তা করে চড়া দামে গ্যাস কিনতে হবে। নচেৎ চুপ থাকতে হবে, কারন সেনারা সীমান্তে লড়ছেন। কাজেই মধ্যপন্থা হিসেবে মানবগ্যাসের ব্যবহার অতি উত্তম উপায়। ... ...
বাংলাদেশ কিসে চ্যাম্পিয়ন বলুনতো? ফুটবলে না, ক্রিকেটে না, বাস্কেটবল বা ভলিবল দুরে থাক, এমনকি হা-ডু-ডু তেও না। বিগত পাঁচ বছর ধরে আমরা এমন একটা বিষয়ে চ্যাম্পিয়ান হয়ে আসছি, যেটার কথা আমাদের শিশুরা কখনো তাদের সাধারণ জ্ঞান বইয়ে খুঁজে পাবে না। অ্যাল্,ছি ছি, শিশুদের এর মধ্যে টানা উচিত নয়, এটা একেবারে অ্যাডাল্ট ওনলি ব্যাপার। ... ...
"আমরা সমাজটাকে চারটে ভাগে ভাগ করেছি।'' মার্ক্স এঙ্গেলস কি অপর গোলার্ধ কাঁপানো কোনো দেড়েল অর্থনীতিবিদ বা সমাজতাত্বিক নয়, এ ঘোষণা একটি প্রাইভেট সংস্থার প্যানেল রিসার্চ ফিল্ড সার্ভেয়ারের। ভারতবর্ষের জনসংখ্যার, একশ কোটি জনসংখ্যার, চারটি "SEC" অর্থাৎ "Social Economical Class"A, B, C, এবং D । অমর্ত্য সেন বিগলিত হবেন, মনমোহন সিং উৎফুল্ল ও আবুল কালাম মশাই আত্মহারা হয়ে পড়তে পারেন এমন সহজ সাধারণ আর্থসামাজিক পরিকাঠামো বিভাজনে এবং আমাদের দাবি ব্যপারটাকে অবিলম্বে পাঠক্রমের অন্তর্ভূক্ত করা হোক। ... ...
শিশুকাল থেকে শুনে আসছি একপ্রকার পতঙ্গ শিকারী ফুল আছে। বিনয়ের সাথে আমরা বলতেই পারি,সত্যি কথা। এই অপরূপ মোহিনী ফুলটি, আহা, নাম তার মিডিয়া। ইমোশন রূপ পতঙ্গ, তা সে সস্তাই হোক বা তার তিন প্রকার রূপভেদই হোক, সুতোর টান অতীব নিঁখুত। পরতে পরতে সাজানো ক্রীম আর ক্যারামেল, মাঝে একটু বিরতি,- বুদ্ধিদীপ্ত অ্যালমন্ড। নেহাত গদগদ ভাব অসহ্য ঠেকলে একটু আধটু মরিচ মিশিয়ে দেওয়া - যা আমরা হামেশাই করে থাকি সঠিক অভিপ্রায় ব্যতিরেকেই। এই মিডিয়ার বহুরূপ। আমাদেরই মনন ও উৎকর্ষের খুপরি জরিপ করে তার এই দিন দুগনি রাত চৌনি শ্রীবৃদ্ধি। মৃত্যু নেই, জরা নেই। শুধু ফুলে ওঠা আছে, ফেঁপে ওঠা অমৃত বেলুন। এঁকে নমস্কার কর। ... ...
ভবিষ্যতের ডানা থেকে খসে পড়া দু-একটা পালক কখনো কখনো বর্তমানের মায়াবী আলো-বাস্তবতায় ভাসতে ভাসতে অতীতে গিয়ে ল্যাণ্ড করে। ধুলোরোদ আর আবছায়ার মারাত্মক কম্বিনেশন থেকে তাকে চিনে নেওয়ার মতো রুস্তম মার্কেটে এখনো খুব একটা নেই। পুজোপ্যাণ্ডেলের নিয়ন-পাটাতনে ঝিনচ্যাক ছেলেমেয়েগুলো যখন ঘ্যামসে জানিয়ে দিচ্ছিল - ""নবনগর থেকে এসেছেন বিপুল প্রামানিক। আপনি হারিয়ে গেছেন। আপনার বাড়ির লোক আপনার জন্য ....'' তখন লাইনে দাঁড়ানো না-দাঁড়ানো ঝারিপ্রবণ তাবৎ বিস্ময়কুৎকুৎ বাঙালী পাব্লিকের গ্রে-ম্যটারে শুড়শুড়ি লেগেছিল কি? ... ...
বঙ্গীয় শিক্ষাব্যবস্থার নতি কোন অভিমূখে যাইতেছে, তাহা অধুনা প্রবর্তিত "গ্রেড" ব্যবস্থার ফলাফল হইতে অচিরেই নিরূপণ করা যাইবে। এমনিতেই "ছাত্রানামধ্যয়নং তপ:" - এই মূলমন্ত্রটি বর্তমান ছাত্রসমাজ সম্পূর্ণরূপে বিস্মৃত হইয়াছে; তদুপরি উহাদিগের মন ভুলাইবার যাবতীয় সরঞ্জাম ইতোমধ্যেই সর্বত্র মজুদ। সর্বোপরি গোদের উপর বিষফোঁড়ার ন্যায় সাম্প্রতিকতম সংযোজন, "গ্রেড" প্রথার প্রবর্তন। ... ...
আলপটকা বৃষ্টি হয়ে স্টার থিয়েটারে, অধুনা সিনেমা, দুফোঁটা জল ঢুকেছে বলে কত কথা! নাকি, সেখানে তখন মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। হাতিবাগানে তো আর প্রখর বর্ষাকালেও জল জমে না! গোমুখ্যু ইঞ্জিনিয়ার আর আকাট রাজমিস্ত্রির হাতে পড়েই নেথাৎ, আহা, অমন ঐতিহ্যঘৃতগন্ধী বিল্ডিংটা মবলগ চুলকে গেল গা! সাংস্কৃতিক শীর্ষনেতৃত্বের জমানায় তাই প্রকৃত কালপ্রিট ঢুঁড়ে, দামড়ে সিধে করার প্রেসকপি নোটিস গেছে বলে শোনা যায়। এসব শাক সরিয়ে শহর কলকাতার জলনিকাশী ব্যবস্থার কানকো উল্টে যাঁরা লাল না কালচে বিচারের বেহায়া আঁতলামো মারাচ্ছেন, তাদের জন্যে চালুনি ছাড়া অন্য কোনো নাম বরাদ্দ নেই। ... ...
বাংলায় চুরি ক্রমশ: বাড়ছে-- মরুদ্যান শুকিয়ে গেল বলে। হপ্তা দুই আগে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর গোঁফচুরি হয়ে গেল। একটি বন্ধুত্বের সাইটে ছবি-টবি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর একটি "ফেক' প্রোফাইল বানিয়েছিলেন জনৈক যুবক, তাই নিয়ে মিডিয়ার হুল্লোড় যেন যৌবনের জলতরঙ্গ, রুধিবে কার পিতৃদেব। মুখ্যমন্ত্রীর আইডেন্টিটি চুরি হয়ে যাচ্ছে, সম্মানহানি হচ্ছে, রাজ্যের ভাবমূর্তি ম্লান হচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি থেকে শুরু করে থেকে শুরু করে কোনো কোনো গপ্পের গোরু "ইহা একটি চক্রান্ত' পর্যন্ত পৌঁছে গেল। তাও কপাল ভালো, এর মধ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কালো হাত কেউ দেখতে পাননি। (অবশ্য দেখতে পেলেও নির্ঘাত চেপে গেছেন, এই শিল্পায়নের বাজারে মার্কিন বহুজাতিক নিয়ে প্রশ্ন তোলার বুকের পাটা আর কোন বাপের ব্যাটার আছে?) ... ...
বছর আট নয় আগে সদ্য বীরভূম থেকে আসা এক ছাত্র কলেজে কলেজ সুলভ মুক্তির স্বাদ পায়নি। কেবল বছরের বিশেষ একটা সময়ে নিজের আদলে মুক্তির খোলা মাঠে দৌড়ে যেত হাফ সোয়েটারে। সে বড় সুখের সময় ছিল যখন বছরের ঐ কটা দিন প্রথম অর্ধের পর কলেজ ছুটি হয়ে যেত ছেলেটির নিজস্ব নিয়মে। রোদ্দুর মেখে ভাঁজ করা নিদাঘ ডানা মেলে দেওয়া ছিল নিপাট সারল্যে। ছিল তখনও পর্যন্ত কোলকাতার রাস্তাঘাত সম্পর্কে অবহিত না থাকা জনিত ভয় এবং কলেজ গেট থেকে বের হতেই বাস থেকে ""বইমেলা, বইমেলা, ময়দান, বইমেলা'' চিৎকারে সেই ভয় নামক কুয়াশার পাতলা হতে হতে মিলিয়ে যাওয়া - অপূর্ব সে আলো। বাস ঢুকছে, দেখা যাচ্ছে বইয়ের স্টল, প্যাভিলিয়ন, জমতে থাকা মাথা, তৎক্ষণাৎ নেমে পড়া সেই জমিনেই - টিকিটের লাইন - দ্রুত পায়ে ঢুকে পড়া আকাঙ্খিত মরুদ্যানে, সম্মোহিত প্রাণ। ... ...