যাবেন না কি ? ইন্দ্রপ্রস্থ অথবা হস্তিনাপুর হয়ে প্রয়াগ আর লক্ষণপুরী ? দশটি হাজার টাকায় দশদিনের প্যাকেজ ট্যুর। কি হল ? অমন ব্যোমকে গেলেন ? বুঝেছি। কাগজপত্র পড়া কি ছেড়েই দিলেন ? আরে বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবি সমাজে বাঁচবেন কি করে। যাকগে আসুন এট্টূ জ্ঞান দিয়ে নিই। ... ...
পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়নের উপদ্রব বেড়েছে আর বিহারে নাকি ডাকাতের। বিশেষ করে ব্যাঙ্ক ডাকাতের। বিহার পুলিশের বড়োকর্তারা এই নিয়ে একাধিক গম্ভীর মিটিং এবং তৎসহ প্রচুর চা, বিড়ি, সরকারি পেট্রোল এবং টিএ বিল খরচার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, যে, আসলে দোষটা মোবাইল ফোনের। কেন মোবাইল ফোন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা দক্ষিণমেরুর পেঙ্গুইনদের এ ব্যাপারে কেন দায়ী করা হচ্ছেনা, সে নিয়ে বিশদ তথ্য না পাওয়া গেলেও, সংবাদে প্রকাশ, ব্যাঙ্কে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, যে, ডাকাতরা ডাকাতির কাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। যুক্তি মারকাটারি সন্দেহ নেই। ... ...
সুতরাং, হে বীর, সাহস অবলম্বন কর। সংসার সমরাঙ্গণে যুদ্ধ কর প্রাণপণ। ¢কন্তু দোহাই তোমার, ¢নর্দলত্বের ঢ্যামনা¢ম ছেড়ে পরে নাও কোন এক দলীয় বর্ম। ব্যস, তারপরে, হে বীর, কোন শালা তোমায় ঠেকাবে? এখন হইতে তোমার সকল কর্ম পা¢র্ট অনুমো¢দত। যাও, চ¢রয়া খাও। জ¢ম লও, কারখানা বানাও, ফÔÉ¡ট বানাইয়া প্রমোটা¢র কর, রাع¡ অবরোধ কর, বন্ধ কর - যাহা ইচ্ছা কর, খা¢ল ¢নর্দলী ক¢রয়ো না। স্বাধীন ¢চন্তা ক¢রয়ো না। পা¢র্টকে অনুসরণ ক¢রও। মনে রা¢খয়ো পা¢র্ট ভুল করে না। নেত«ব«ন্দ ঈশ্বরের দূত। প্রভু তাহাদের ভুল ক¢রবার ক্ষমতা ¢দয়া প্রেরণ করেন নাই। ... ...
নেপালের আকাশে নাকি এখন লাল তারা জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। স্বৈরাচারী রাজা পিছু হঠেছেন। ক্ষমতাচ্যুত হলেন বলে। এখন একদা বিপ্লবীদের হাতে গণতন্ত্রের বিজয়পতাকা। দীর্ঘদিনের বিরাট লড়াইয়ের শেষে এসেছে বিজয়। বিজয়ী বীররা তাই নামিয়ে রেখেছেন অস্ত্র। সেই অস্ত্রের পরিমান এতই বেশি, যে, ভারত থেকে পাঠানো হয়েছে অস্ত্র রাখার কন্টেনার। সেখানে অস্ত্রশস্ত্র জমা রাখার পর তালা বন্ধ করে একটি চাবি নিয়েছেন প্রচন্ড। অন্য ডুপ্লিকেট চাবিটি ঠিক কার কাছে জমা আছে, সেটা এই মূহুর্তে জানা না গেলেও, এই আনন্দের মূহুর্তে আমরা আর সেসব নিয়ে মাথা ঘামাবোনা। আজ আনন্দের দিন। আজ বহুদিন পরে বিজয় এসেছে ফিরে। আজ আমরা, অর্থাৎ আমি আর আমার চিরপুরাতন পাড়াতুতো প্রেমিকা খেঁদি , হলইবা রিমেক, শাহরুক খানকে দেখব মন দিয়ে। ... ...
বাঁদরামির জ্ঞানের নির্মাণে আর একটি জায়গা ছিল মানুষের সত্তা বা এসেন্স বা লোগোসের খোঁজ। প্রশ্নটা পুরোনো - "মানুষ' বলতে আমরা কি বুঝি? মানুষের শাঁসটা কি আর খোসাটাই বা কি (এখানে অবশ্য ধরে নেওয়া হচ্ছে যে শাঁস আর খোসা আলাদা বিষয়)? এই প্রশ্নের জবাবে পশ্চিম একটা ভাবনার স্ট্রাকচার বানায় যার নাম ডুয়ালিজম বা দ্বিত্ত্ববাদ। অনেক ডুয়ালিস্ট মডেলের সাথে আমরা পরিচিত, যেমন পুরুষ/নারী, প্রকৃতি/সংস্কৃতি, পূর্ব/পশ্চিম, মন/শরীর, আমি/তুমি, সুস্থ/পাগল, শাঁস/খোসা ইত্যাদি। এবার "মানুষ' নামের তাত্ত্বিক সমস্যাতে ফেরা যাক। মানুষ একদিকে যেমন জৈবিক, প্রাকৃতিক আবার সে একইসাথে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিও বটে। এখন প্রশ্ন হল এই ডুয়ালিটিতে কোনটা শাঁস, কোনটা খোসা? পশ্চিম বাছাই করে আমাদের বলে দিয়েছে যে দুর্গামূর্তির খড়ের গোঁজের মত জৈবিক সত্তাটাই মানুষের এসেন্স আর মূর্তির ওপরের রংচং আসলে সংস্কৃতি। মানুষের প্রকৃতি আসলে জৈবিক, বায়লজিকাল। এই স্বত:সিদ্ধ থেকে তাই বলা যেতেই পারে যে যেহেতু বাঁদর মানুষের পূর্বপুরুষ, তার মধ্যেও সেই একই জৈবিক বৈশিষ্ট্য থাকবে। অর্থাৎ মানুষ আর বাঁদরের হার্ডওয়্যারটা একই, পার্থক্য শুধু সফটওয়্যারে। তাই বাঁদরামির গবেষণা পশ্চিমি সাহেব-মেমদের আত্মানুসন্ধানের চেষ্টা (গবেষণা করা ব্যাপারটা প্রাকৃতিক না সাংস্কৃতিক?)। ... ...
দেওয়ালীর হইহুল্লোড় শেষ হতে না হতেই, "মস্ত্' পাবলিক বছরশেষের মস্তির যোগাড়যন্তর শুরু করে দেয়। প্লেনের টিকিট, হোটেল বুকিং, পার্টির খবরাখবর; হ্যাপা কি কম নাকি! আর "আজকাল সস্তার টিকিট পেয়ে যত অ্যারাগ্যারা লোকও প্লেনে চাপে মশাই"। আগে থেকে ভাল ডীল দেখে বুক না না করলে, শেষে একগাদা গচ্চা যাবে। কটা ছুটি বাঁচল বছরশেষে নেবার জন্য, কটা সামনের বছরে ক্যারী ফরোয়ার্ড করানো যাবে, কটা সিকলীভ, কটা ক্যাজুয়াল, কার সাথে কাকে নেওয়া যাবে; এইসব হিসাবনিকাশও পাশাপাশি কষে ফেলতে হয়। ... ...
দ্যাখেন তো ওই বিষন্ন গ্লিসারিন জবজবে টিভি সিরিয়াল আর স্টেনগানের প্রদর্শণী কিছু ধ্বজামার্কা সিনেমা। কেন, কার্গিল ধামাকায় মিডিয়া যখন ধূপধুনো জ্বেলে "ওং মিলিটারায় নমস্তুতে" জপছিল তখন তো মশাই আপনি করজোড়ে নতজানু, পঞ্চপ্রদীপ জ্বেলে আরতি করতেও বাকি রাখেননি। স্কুলের কচিমাত্রেই তখন অনিবার্য স্লোগান : ভারতীয় সেনা, দেশপ্রেম আর বন্দেমাতরম। এই ক'বছরেই সব ভুলে সাফ! ক'টা পুলিশ ঠেঙিয়েছে বলে ছি ছি করছেন? আরে ছো:। পুলিশ কি একটা মানুষ হল? সহবতের একটা ক্র্যাশ কোর্স কলকাতা পুলিশে জন্যে যে অবিলম্বে দরকার সে কথা ভেবেছেন? বর্ষবরণের রাত। ... ...
মানুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করার অহঙ্কারে অন্যজীবকে হেয় করাই যেন আমাদের জন্মগত অধিকার। বিশেষত: বাঁদরদের ওপর আমাদের আক্রোশ যেন একটু বেশীই। কথায় কথায় রেগে গেলেই আমারা একে অপরকে "বাঁদর" বলে আখ্যা দিই। "বাঁদরামো ঘুচিয়ে দেব" বলে গাল পাড়ি। সত্যি কথা বলতে কী, রাগ হবে নাই বা কেন? এ ধরাধামের সবচেয়ে উন্নততম জীব আমরা। সমাজনীতি, অর্থনীতি, রাজনীতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রভৃতি শাখায় আমাদের পান্ডিত্য অপরিসীম! আর আমাদের পূর্বপুরুষ কী না ওরকম একটি ইতর প্রাণী! তবে আজ এই শ্লাঘাকে কিন্তু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন আমাদের পূর্বপুরুষেরা। ল্যাজ খসিয়ে মাতব্বরি মারার দিন শেষ। আগে আমাদের শরীরে ছেড়ে গিয়েছিল "অ্যাপেনডিক্স' নামক ক্ষুদ্র ও আপাত নিরীহ একটি অঙ্গকে এখন শুনছি এইচ.আই.ভি ভাইরাসটিও নাকী তাদের দান। গেরোটা এখানেই। সময় সুযোগ পেলে অ্যাপেনডিক্সকে কেটে বাদ দেওয়া যায়। তাতে প্রাণনাশের ঝুঁকি কম, কিন্তু একবার এইচ.আই.ভি ভাইরাস শরীরে ঢুকলে আর নিস্তার নেই। মরিবেই মরিবে। ... ...
২০০৭ সাল। মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকায়, কচ্ছ থেকে ইটানগরে সেই বার্তা রটি গেল ক্রমে। কোনও খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন বেরলো না, টিভি রেডিওর কোনও চ্যানেলেই সম্প্রচারিত হল না সেই খবর, তবু এক কী আশ্চর্য ইথার তরঙ্গে অসমুদ্রহিমচলের তাবৎ যুবাকূলের কর্ণপটহে প্রবেশ করিল সেই বার্তা। আকূল করিল প্রাণ। পনেরো থেকে পঞ্চান্ন সমস্ত ভারতীয় যুবকের দল এক নিমেষে চার্জড হয়ে গেল। দীর্ঘ দু মাসের উপোসের দিন শেষ। শালা, ভাগ্যিস মাঝের ফেব্রুয়ারি মাসটা আঠাশ দিনের ছিল! ... ...
লক্ষ্য করে দেখবেন, ইদানীং বঙ্গীয় মধ্যবিত্ত সমাজের (মধ্যবিত্ত বোল্ড এবং আন্ডারলাইন সমেত) যাবতীয় তক্কোবাজির শুরু হয় আবেগ দিয়ে, তারপর ঢোকে সি পি এমাদি, এবং শেষে নির্জলা খেউড়। সিঙ্গুর-নন্দীগেরাম, সি এ বি নির্বাচন থেকে বইমেলা- সবেতেই মোটামুটি একই প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। বলতেই পারেন যে "তুমি কোতাকার কোন হনু এলে বাওয়া যে গাছের ডালে ন্যাজ ঝুলিয়ে জ্ঞান মারাচ্চো?" আম্মো আলাদা কিছু নই। সেই আবেগ, সি পি এমাদি এবং খেউড়। তবে জিনগত মর্ষকামিতার জন্য খালি আয়নায় তাকাই আর দেখি নৈনিতালের একটা ভ্যাদভেদে পুরোনো আলু। তো এই আলুকিত সমাজের জ্ঞানীজনেরাই যখন এই সব বাচালতা পড়ে থাকেন, অতএব নিজেদের নিয়ে চর্বিতচর্বণ করাই ভালো। আপাতত: মিডিয়ার এই চর্বিতচর্বণের ফোকাল পয়েন্ট হল বইমেলা। ... ...
রিচার্ড লেয়ার্ড "হ্যাপিনেস" নামের একটা চোদ্দ অধ্যায়ের বই লিখে পেঙ্গুইন থেকে ছাপিয়েছেন বলে নয়, অনির্বাণ চাটুজ্জে সে বইয়ের রিভিউ লিখে এ সংখ্যার গায়েগতরে দেশ-টার দাম তিরিশ টাকা করার পথে সাহায্য করেছেন বলেও নয়, লেখাটায় উন্নয়ন আর জি.ডি.পি.র সঙ্গে সুখে থাকার গুরুচণ্ডা৯য় অসমীকরণের রাজনৈতিক ফোড়ন রিক্যাপিচুলেটেড বলেও নয়, "ব্রেন ফিজিওলজী", "ইলেকট্রোএনসেফ্যালোগ্রাম" আর "ব্রেন স্ক্যান" বিজ্ঞানস্ট্যাম্পগুলো মাঠে নেমেই কী-বোর্ড চুলকে দিল। অর্থনৈতিক গবেষণার প্যারামিটার নেওয়া হচ্ছে মানুষের ভালো থাকার বোধটিকে, এবং তা স্রেফ ডিক্লারেশন নির্ভর নয় আর, হাই ফাই যন্ত্রপাতি প্রমাণিত। অর্থাৎ প্রশ্নাতীত একটি থিওরাইজেশনের পথ তৈরি হচ্ছে। ... ...
অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা এই প্রবন্ধের বিষয়বস্তু নয়। এইটুকু হোমো-স্যাপিয়েন্সত্ব এখনো অবশিষ্ট আছে যে ওদের নিয়ে ক্যাওড়ামো করলে পাব্লিক ভালোভাবে নেবেনা। তাই বৈধই সই। তাছাড়া যেসব ব্যতিক্রমী পাঠকবর্গ (লিঙ্গ নির্বিশেষে) সমস্তরকমের হ-য-ব-র-ল লেখা পড়ার আগে মনোযোগ দিয়ে শিরোনামটি পড়ে নেন এই ডিস্ক্লেমার তাদের জন্যও নয়। এ হলো বৈধ অনুপ্রবেশের ব্যতিক্রমী গপ্পো। আর এই উত্তর-আধুনিক, উত্তর-ঔপনিবেশিক আর উত্তর-গুরুচন্ডা৯ যুগেও অনুপ্রবেশ আর বৈধ শব্দদুটি পাশাপাশি কি করে সহবাস করে সেই নিষ্পাপ ভাবনায় যারা আবিল হচ্ছেন, তাদের প্রভূত সহানুভূতি আর একচিমটে তিতিক্ষা ফ্রীতে দিয়ে আসুন যাওয়া যাক পরের প্যারায়। ... ...
সেন্টিমেন্ট নিয়ে এঁদের কোনো মাথাব্যথা নেই। বাঙালির সংস্কৃতি স্থানবিশেষের উপর নির্ভরশীল নয়, বলে এঁরা মাইক ফোঁকেন। ময়দানপ্রেমীদের পিছনে ছুরি মেরে অবলীলায় সল্টলেকে দৌড় দেন, এবং অলৌকিক ক্ষমতাবলে এমন একটি বইমেলার উদ্বোধন করে দেন, যেখানে একটিও বই নেই। এছাড়াও, বইহীন বইমেলায় প্রবেশ করতে হলে যে কোনো টিকিট লাগবেনা তা বুক ঠুকে জানিয়ে জনসাধারণকে কৃতার্থ করেন। ... ...
এই তো মানবাধিকার নিয়ে এত হইচইয়ের পরেও, দেশে-বিদেশের অনেক চাপের পরেও বিনায়ক সেনের মতো একজন হাই প্রোফাইল লোকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড কি হয়নি? দেশে-বিদেশে প্রচার করে, ফিল্ম শো করে, সই সংগ্রহ করে, কোনো বাপের ব্যাটা সেসব আটকাতে পেরেছে? মানবাধিকার কর্মীদের সমস্ত আঘাত তিনি বুক পেতে নিয়েছেন। মিডিয়ার সব ঝড়ঝাপ্টা সামলে দিয়েছেন। সমস্ত রাজনৈতিক বিরোধিতাকে উড়িয়ে দিয়ে জঙ্গলমহলকে খাঁকি পোশাক আর মিলিটারি বুটে মুড়ে দিয়েছেন। সবই তো মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এর পরেও,এত কিছু করার পরেও, তাঁর ক্ষমতার উপর এত অবিশ্বাস? তাঁকে লেঙ্গি মেরে এলাকা পুনর্দখলের চক্রান্ত? এ কি রেগে যাবার জন্য যথেষ্ট কারণ নয়? যথেষ্ট অবিশ্বাস, যথেষ্ট আঘাত নয়? পৌরুষ আর প্রেমে আঘাত পেলে মানুষ কত কিছু করে। আর এ তো ইংরিজি লেখায় সামান্য দুটো বাংলা শব্দ। হতেই পারে। ... ...
আমেরিকা মহাদেশে এখন প্রতিযোগিতার হাওয়া। এমনিতেই আমেরিকায় বচ্ছর বচ্ছর একটি মেগামোচ্ছব কাম মহাপ্রতিযোগিতা হয়, যার নাম অস্কার। দুনিয়া জোড়া ফিল্ম দিগগজদের নাক সিঁটকানোর পরেও আহা, তাহার গ্ল্যামার বেড়েই চলেছে। এবং নিয়ম করে প্রতি বছর শোনা যাচ্ছে, একটি ভারতীয় সিনেমা এবার "বিশ্বজয়ী' হবেই। কার বিশ্ব, কে জয় করে, এসব কূট প্রশ্ন তুলে জিনিসটাকে ঘুলিয়ে দেবার দরকার নেই, মোদ্দা জিনিসটা যা হচ্ছে, বচ্ছরভর ঢাক বাজছে, ঢোল বাজছে, সাতমন তেল পুড়ছে, কিন্তু রাধিকা নাচিতেছেনা, দিনশেষে মার্কশিটে গোল্লা নিয়ে হাসি-হাসি মুখে (হাসি-হাসি, কারণ অংশগ্রহণটাই আসল, জয় নয়) বাড়ি ফিরছে যুগন্ধর হিন্দি সিনেমা। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি, প্রতিযোগিতার শেষে "ভালো খেলিয়াও পরাজিত' তকমা নিয়ে ফিরছে কি যেন একটা ভারতীয় সিনেমা। ... ...
১৮৫৪ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি সিয়াটল উপজাতির লোকদের লোকদের নির্দেশ দেন তাদের বসতি এলাকা ছেড়ে চলে যেতে। কেননা সেখানে তৈরি হবে আধুনিক শহর। তার উত্তরে উপজাতি প্রধান "বড় সাদা সর্দার' আমেরিকার রাষ্ট্র পতিকে যে চিঠিটি দেন, ইংরিজি থেকে তার একটি যথাসম্ভব মূলানুগ অনুবাদ এখানে প্রকাশ করা হল। ... ...
বাসে উঠলেও শোনা যাবে "পিছন দিকে এগিয়ে যান'। ফ্লুরোসেন্ট হাইলাইট : "এগিয়ে'। সমকালে যে শব্দটিতে, অনিচ্ছাতেও, "অগ্রগতি' আর "উন্নয়ন'-এর দিকে অবধার্য আঁকশিটান। আমরা কিন্তু আরো স্পেসিফিকালি, ফোকাস করব অন্য একটি রিলেটেড অংশশব্দ : "গতি' তে। যে গতি, পথ ফুরোবার পরেও জেগে থাকে, অনবধান অভ্যাসে। নিউটন "জাড্য' নাম দেন। ... ...
তাই নামিলেন নীচে। অবশেষে। ফ্লাইট দু মিলেনিয়াম লেট , অথচ আপেক্ষিকতার সূত্র মেনে জৈবিক ক্লকে দেবানন্দীয় স্থবিরতা। বেথলেহেমে প্রথম স্টপ। গন্তব্য নেতাজি আন্তর্জাতিক। চেলা বোঝায় রকেট থেকে এইসা ধোঁয়া- মনে হল, খোদ গড, রজনীকান্ত নকল করে ধূম ছেড়েছেন। বাঙ্গালী ভক্তদের কলকাকলিতে অশান্ত ওয়েটিং এরিয়া দেখে ঘোর সন্দ, যার নামে বিমানবন্দর তিনিই মুখ তুললেন বুঝি? হল না, টি আর পি স্কেলে মেগাতর ভাবুন। তৃতীয় ভুবন পরিদর্শনে ত্রিভুবনেশের পুত্র স্বয়ং হাজির!! যুগ বদলেছে। আকাশপথের পুরানো রুটে আজ একটার বদলে পঁচাশটি তারা। ছবি মেলাতে গিয়ে পদে পদে ঠকবেন। কল্পনাপ্রবণ আঁকিয়েদের কাজ দেখে ভেবেছিলেন, চে গুয়েভারা, চন্দ্রিল ভাট, আর জন লেননের ককটেল , তাই না? দূর, এ তো পাতি কদমছাঁট। তবে হ্যাঁ, সেই মায়াভরা চোখ, সেই শান্ত স্থির চলাফেরা, সেইই হাত তোলার মোলায়েম কায়দা। (এক প্রখ্যাত র:স: গায়িকা গলা ফসকে বিস্মবিষ্ট 'কা-লো?' থ্রো করেই ইনস্ট্যান্ট অপ্রস্তুত, মুদ্রাদোষের অজুহাতে শেষরক্ষে।) ... ...
ঘরে আলো খুব কম, দেওয়ালের রঙ সাদা নয়, কেননা সার দেওয়া গ্রামাফোন রেকর্ডেরাও ঢেকে গেছে পোস্টারে পোস্টারে এবং আলো সত্যিই খুব কম। শেষ হয় অরুন্ধতি কন্ঠ বিস্তর কূটকচালির পর, যার সবটা আমার পক্ষে এখানে দেওয়া সম্ভব নয়, তবু শেষটুকু দি, কেননা আমাদের কাছে ভাষা ছাড়া কিছুই নেই প্রমাণযোগ্য। শেষে স্লোগান সমবেত হয় ও সকলে উঠে দাড়ায়... ইন এবিলিটি টু সি অ্যা ওয়র্ল্ড ইন টার্মস আদার দ্যেন দোজ দ্য এস্টাবলিশমেন্ট হ্যাজ সেট আউট ফর ইউ, ইফ ইউ আর নট বিশি, ইউ আর তালিবান। ইফ ইউ ডু নট লাভ আস, ইউ হেট আস। ইফ ইউ আর নট গুড, ইউ আর ইভিল। ইফ ইউ আর নট উইথ আস, ইউ আর টেররিষ্ট।... সেদিন শনিবার সকাল, তখন ও কানে আসেনি নন্দীগ্রাম, এক ঘন্টা ভারতীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান এবং সেখানে গেলে দেখা পাব এক ভারতীয় বন্ধুর, এর বেশি কিছু ভাবিনি! ... ...
পশ্চাদ্দেশ দেখানোর ঐতিহ্য আমাদের বহুদিনের। সেই পুরাকালের কথা, যখন একাই মঞ্চ কাঁপাতেন সুমন চাটুজ্যে আর তাঁর বাক্যগুলি যাদুকরের ছুরির মতো মঞ্চ থেকে উড়ে এসে আমাদের বুকে বিঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে লক্কা পায়রা উড়িয়ে দিত, সেযুগে একদা সুমনবাবু অকস্মাৎ মঞ্চে পিছনঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন, ও বলেছিলেন, ওমুক সংবাদপত্রের শ্রী অমুক চন্দ্র অমুক, এই দেখুন আমার পশ্চাদ্দেশ। বলাবাহুল্য, সাংবাদিকটি সেদিন প্রেক্ষাগৃহের প্রথম সারি আলো করে বসে ছিলেন। সুমনের যুক্তি ছিল অতীব সিম্পল। আপনাদের আছে সংবাদপত্র, আমার আছে মঞ্চ। কাগজে আপনি যা খুশি লেখেন, কোনো জবাবদিহি করেননা, মঞ্চেও আমি যা খুশি করব। কোনো জবাবদিহিতে বাধ্য নই। আহা, যেন, তোমার আছে বন্দুক, আর আমাদের আছে ক্ষুধা। মনে আছে, এই আঁভাগার্দ বিপ্লবীয়ানায় মুগ্ধ ও হতচকিত আমরা, কাগজে কাগজে প্রতিবাদের ঝড়কে হেলায় উড়িয়ে দিয়ে সে যুগে কত বিমোহিত করতালিতে ভরিয়ে দিয়েছি প্রেক্ষাগৃহ, আর যাদুকরের ঝোলা থেকে বেরোনো পায়রারা উড়ে গেছে এদিক-সেদিক দুনিয়াদারির পথে। ... ...