এরপর পিনাকীর বয়ান– দরজার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে দেখি একতালার বারান্দায় পাঞ্জাবী পরা লম্বা সাদা দাড়ি, টুপি মাথায় এক বুড়া লোক বসে পেপার পড়ছে। সেটা দেখে তো আমার ভয় বেড়ে গেল আরও। ভাবি এই হুজুর যদি এখন দেখে এক ধুতি পরা লোক তার বাড়িতে উঁকি ঝুঁকি মারছে, তাহলে না জানি কোন ঝামেলা বাঁধায়? আমি সাহস করে লোহার গেটে ধাক্কা দিই। দাড়ি, টুপি ভদ্রলোক পেপার হাতে নিয়েই বাগান পার হয়ে লোহার গেট খোলেন। আমাদের দেখে একটু কপাল কুচকান। আমি তাকে লম্বা করে একটা সালাম দেই– ‘আসসালামালাইকুম চাচা। উনি কোলকাতা থেকে এসেছেন, একসময় এই বাড়িটা উনার বাবার ছিল, বাড়িটা জাস্ট একটু দেখতে এসেছেন।’ বলেই আমি বেশ নার্ভাস থাকি। কে জানে ভদ্রলোক এই নিউইয়র্ক কিন্ডারগার্ডেনের দীনিয়াতের টিচার কিনা। ছুটির দিনে হয়তো একটু আরাম করে বসছেন পেপার পড়তে, সেইখানে এক লোক কোলকাতা থেকে এসে যদি বলে এই বাড়ি আমার ছিল, তাহলে তার ভালো লাগার কথা না। পুরা ব্যাপারটায় একটা গ্যাঞ্জাম লেগে যাবার সম্ভাবনা আছে। ... ...
সারাদিন অপেক্ষা করে নওশাদ, কিন্তু কোনো উত্তর আসে না। রাতে ঘুম ভেঙে গেলে নওশাদের মনে পড়ে তার কী করা উচিত, সে রেডিওর ডায়াল ঘুরিয়ে ১২০ কিলোহার্টজ বেছে নেয়। তারপর কয়েকবার “নওশাদ বলছি” বলে। ভোরবেলা সূর্য ওঠার আগে রেডিও প্রাণ পায়। বেলার কন্ঠ, “আপনি সেন্ট্রাল রোডের পেছনের বাড়িগুলির মধ্য দিয়ে কাঁটাবন পার হবেন। আজিমপুর দিয়ে লালবাগে ঢুকবেন। নদী আপনাকে সাঁতরে পার হতে হবে রাতে।” নওশাদ রুদ্ধশ্বাসে বলে, “তারপর?” আবার সারাদিন নিস্তব্ধতা। সন্ধ্যায় নওশাদ ৮০ কিলোহার্টজে বার্তা পাঠায়, “নদীর ওপাড়ে কি প্রতিরোধ কমিটির কেউ থাকবে?” ভোরে বেলার কন্ঠ ভেসে আসে, “না আপনাকে ধলেশ্বরী পর্যন্ত হেঁটে আসতে হবে, আমি সেখানেই আছি।” ... ...
বছর যেতে আর কি? আমরা এখন বড় হয়ে গেছি। আমার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি জুটেছে। ওদিকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তিন ভুবনের পারে বলে একটা ছবিতে কি ইনোসেন্ট এক মস্তানের রোলে কী অসাধারণ অভিনয় করেছেন! তনুজা তাঁর শিক্ষয়িত্রী স্ত্রী। পল্টুদা অবশ্য মস্তান হতে পারে নি। তবে সুন্দরই আছে। সাধারণ একটা সরকারি চাকরি করে। পাত্র হিসেবে তেমন কিছু নয়, তবে বিয়ের আশা ছাড়ে নি। মা বাবা তো নেই। ধনমাসীমা বলে এক ধনবতী মাসীর পালিত পুত্র। ধনমাসীমা বলেন “জন্মকালে মা-হারা দুর্ভাগারে কে আর মাইয়া দিবো।” আমরা ভাবি আহা, পল্টুদা সাহিত্য ভালবাসে, মিশুকে, পরোপকারী। কেউ না কেউ ভালবাসবেই ওকে। কিন্তু তেমন কেউ দেখা দিল না। ... ...
আমি দুপুরবেলা ফুলের বীজগুলো মাকে দিলাম আর বললাম মা, তুমি কি এই বীজগুলো পুঁতে দেবে? মা বলল, হ্যাঁ প্রজ্ঞা, দেব। তারপর মা পুঁতে দিল বীজগুলো। আর আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম। আমি রোজ জল দিয়েছি। কিন্তু এক সপ্তাহেও কিচ্ছু হল না। দেড় মাস পর চারা বেরোল। আরো দু ... ...
হয়তো আমাকে তুমি ততটা মনে রাখোনি কখনো। তোমার ছিল একান্ত গণ্ডীতে বাঁধা এক নিজস্ব জীবন। কিন্তু আমি তোমাকে ভুলতে পারব না কোনদিনও। কারণ আমার সুখের ঘরের চাবিকাঠি ছিল তোমার হাতে, আমার শান্তির পারাবত উড়তো তোমারই হাতের ইশারায় ..! তবু তোমার মত এক নিকটজনকে হারাতে যে কী বেদনায় ছটফট করেছি, তা কেউ বুঝবে না। বড় কঠিন ছিল সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া।... পারব কি...? হবে কি...? এমন নানান যুদ্ধ চলেছে মনের মধ্যে, কুরে কুরে খেয়েছে আমায় প্রতি পল। কিন্তু শেষ অবধি সই করেছি তোমার মৃত্যুর পরোয়ানায় ! রাজি হয়েছি অনেক দ্বিধার পর, কারণ দিনে দিনে তুমি হয়ে উঠছিলে দুর্মদ...অসহনীয়...কালান্তক...! ... ...
ভয় করে আজকাল, বড়ো ভয় করে। রাত হলে, যখন সুয্যিমামা টুপ করে ডুবে যায় দূরের ঐ গাছগুলোর ওপারে, আর গাছগুলো কালো-কালো ছায়া-ছায়া হয়ে যায়, মনে হয় ঐ ছায়ামূর্তিরা এবার আমার ঘরে ঢুকে পড়বে, ভয় দেখাবে। ছোটোবেলার কথা মনে পড়ে। যখন আলো ক্রমশ কমে আসত, কমে আসত, কিন্তু শেষ হতনা বিকেলের খেলা, মনে হত এখনও একটু আলো থেকে গেছে আকাশের গায়ে, সেই তখনকার কথা। ... ...
শোভাবাজার রাজবাড়ির পিছনের গেটের কাছে ইন্দুর চেহারা, অবয়ব একটু একটু করে পরিস্ফুট হচ্ছিল শৌভিকের। যেন কিছুটা উৎকণ্ঠা, কিছুটা সতর্কতা নিয়ে জোরকদমে হাঁটছে সে। কাঁধে একটা মাঝারি সাইজের ব্যাগ। বোঝাই যাচ্ছে সে পিছুটান ফেলে রেখে বেরিয়ে আসতে চেয়েছে আজ। উল্টোদিকে শৌভিকের সঙ্গে কিন্তু কোনও ব্যাগ নেই। এমনকী পকেটে পার্সও নেই। আসলে শৌভিকের এমনিতেও কোনও পিছুটান নেই। মাঝেমধ্যেই সে রাতেরবেলা পায়ে হেঁটে বেরিয়ে পড়ে কলকাতার রাস্তায়, রাতের জীবন দেখবে বলে। একাধিকবার ফুটপাতে শুয়ে থেকেছে সারারাত। ভিখারি-চোর-মাতাল-কাগজকুড়ুনিদের সঙ্গে। এরকমই এক রাতে, তার মনে আছে, এক স্বল্পবয়সি ভিখারিনি, যার মরদ একসপ্তাহ অন্য মেয়ের ডেরায় কাটিয়ে ফিরে এসেছে, লোকটাকে চ্যালাকাঠ হাতে শাসিয়েছিল—“আর কোনওখানে নয়। তোর ঠিকি ওইখানটায় মারব। মর্দানি জন্মের মতো ঘুচে যাবে, বাঞ্চোত”। ... ...
মন খারাপের সাথে মন ভালোর কোনদিন আলাপ হয়নি । নাকি হয়েছিলো? কে জানে, আমাকে বলে টলে নি কেউই। এসব আলাপ হয়েছিলো - হয়নি - হতে পারতো ব্যপার গুলো বড্ডই গোলমেলে। কি দরকার? ... ...
একটা ঢিল ছোড়া যাক। ঢিলটা কাক-ওড়া সরলরেখা ধরে যেতে থাক। যদিও কাকেরা সরলরেখায় ওড়ে, বিষয়টা এমন, মানে, প্রামাণ্য নয়। বিষয়টা কাক নয় ঢিল, ঢিলটা মহাজাগতিক দ্রুতগতিতে সাঁই সাঁই ধাবমান, সরলরেখা কিম্বা প্যারাবোলায়। সরলরেখা, প্যারাবোলা বা নেহায়েৎ ছাপোষা বক্ররেখা ধরে যেতে যেতে ঢিল টাল খেতে বা লড়খড়াতে পারে, নাও পারে। বিষয়টা সেটা নয়। মানে, ঢিলটা কি আদৌ আছে? থাকলেও সেটা কি দৌড়োচ্ছে? আরো মোদ্দা কথা যেটা, সেটা কি ছোড়া হয়েছে? এ সব প্রশ্নের মীমাংসা ধীরে ধীরে হবে, কিম্বা আদৌ, কখনোই হবে না। ... ...
সেই সময়গুলোতে রানুর একটা বিশাল বিশাল জানালা ঘেরা ঘরে থাকতে ইচ্ছে করে। চারিদিক থেকে হাওয়া দেবে, জাহাজের মত। জাহাজে সে কোনোদিন চড়েনি বা দেখেনি, শুধু বইয়ে পড়েছে। তবু অনেক হাওয়ার কথা ভাবলে কেন জানিনা তার জাহাজের কথাই মনে হয়। ... ...
অনীতার কথা এইবেলা বলে নেওয়া ভালো কেননা, অনীতা প্রেমে পড়েছে। সেটা খুব বড় কোনো ব্যাপার নয়, আকছার পৃথিবীর প্রতিটি কোণেই চৌদ্দ থেকে চব্বিশ বয়সী একগাদা মেয়ে কিশোরী মায় উদ্ভিন্নযৌবনা পর্যন্ত প্রেমে পড়ছে, শুধু পড়ছে না, বলা ভালো ধপাধপ আছাড় খাচ্ছে। প্রেমের মতো এমন একটা সঘন স-আবেগ তদুপরি সলজ্জ ব্যাপারের সাথে আছাড় খাওয়ার মতো অমন আনকুথ ক্রিয়াশীলতার কথা ভাবতেই কেমন যেন তেতো অনুভূতি হয় মুখের মধ্যে ওর, কিন্তু ব্যাপার টা ঠিক ঐ রকমই আনকুথ বলা যায় একেবারে বিশ্রী রকমের আনকুথ হয়ে গ্যাছে। কারণ অনীতা, আমাদের সুন্দরী ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া চোখে হাফ কাট রিডিং গ্লাস দেওয়া, লেয়ার কাট চুল, স্মুথ হেয়ার সিল্কি শাইনিং স্কিন অনীতা, টম ক্রুজ লুক আর রালফ লরেন পোলো টি শার্ট বিশেষজ্ঞ অনীতা, সর্বোপরি শোভা দে আর সিডনী শেলডন গোগ্রাসে গিলে খাওয়া অনীতা হঠাৎ করে আছাড় খেয়েছে, থুক্কু, মন প্রাণ সবই সঁপে বসে আছে এই দর্জিকে! ... ...
কিন্তু গোলুর মনকেমন যায় না। ক্রমশ বাড়ে। চোখের সামনে মেয়েটাকে কষ্ট পেতে দেখতে ভালো লাগছে না গোলুর। হঠাৎ আকাশ থেকে একটা শিউলিফুল এসে পড়ে। একটু বড়! গোলু যেই না হাতে নেয়, ফুলটা কথা বলতে শুরু করে। বলে, "গোলু, তোমার মনে আছে মেঘ দিদির কথা?" গোলু বলে, "হ্যাঁ। কেন বলো তো?" "ওই আমাকে তোমার কাছে পাঠিয়েছে। তোমার দুঃখ মেটাতে। কি হয়েছে তোমার?" শিউলি ফুল বলে ওঠে। কিন্তু গোলু কিছু বলেনা। ওর মনে হয় স্বপ্ন দেখছে। গোলু বলে, "জানো তো, ওই যে মুখুজ্যেদের বাড়ির কাছে, একটা মেয়ে বসে আছে, পুরনো গোলাপি জামা পরে, ওর খুব কষ্ট। পুজোয় একটাও জামা হয়নি। খুব দুঃখ। এদিকে দেখো। ... ...
ঘন জঙ্গলের মধ্যে বজ্রযোগিনীর মন্দির থেকে তখনো কাঁসরঘন্টার আওয়াজ ভেসে আসছিল বাতাসে। দিগন্তজোড়া গাছগাছালির মধ্যেকার ফাঁকফোকর দিয়ে অতি অল্প যেটুকু দৃশ্যগোচর হয়, তাতে কেবলমাত্র মন্দিরের আকৃতি টুকুই বোঝা যায়। সন্ধ্যার অন্ধকারে নাটমন্দিরের জ্বলন্ত প্রদীপমালায় কিছু দুর্বোধ্য অক্ষরের আভাস পাওয়া যায়। সন্ধ্যারতির সময় কিছু ভক্তসমাগম হয়, নারী পুরুষ, বালক, বালিকা সকলেই আসে, ভক্তিভরে অঞ্জলিপ্রদান করে তারা যে যার ঘরে ফিরে যায়। তারপরে শুরু হয় দেবদাসীদের পিশাচিনী নৃত্য। মন্দিরের অনতিদূরে মৃতদেহ সৎকার করতে আসা আত্মীয় পরিজন রা অতি সম্ভ্রমে দূর থেকে এই ডাকিনী নৃত্য দর্শন করে। কখনো বা মৃতদেহ সৎকার সম্পুর্ণ না করেই পালিয়েও যায়। কিছুক্ষন আগেই যে এই সব দেবদাসীরা স্বাভাবিক ভাবে ভক্তবৃন্দের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলো তা বিশ্বাস করাই দুষ্কর হয়ে ওঠে। তাদের দু এক প্রহর আগেও দেখলে মনে হতে পারে তারা আপন আপন গৃহস্থী সামলাতেই ব্যাস্ত। তারা সকলেই কৃশকায়, পরনের লালপেড়ে সাদা শাড়িটি রাঢ় বঙ্গের রীতি অনুসারে পরা। নদীমাতৃক বঙ্গভূমিতে শাঁখ ঝিনুক ইত্যাদির অভাব নেই তাই তাদের আভরণেও শঙ্খের প্রাধান্য। কদাচিৎ বিশেষ তিথিতে পোড়ামাটির গয়নায় সর্বাঙ্গ ঢেকে এই যুবতীরা একসাথে শ্মশানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীবক্ষে নগ্নিকা নৃত্য করে। কিছু নিজ অভিজ্ঞতা কিছু জনরব আর বাকীটা কল্পনার পাঁচমিশেল-- এই সবে মিলে এই বজ্রযোগিনীর মন্দিরটি চূড়ান্ত রহস্যজালের সৃষ্টি করে সাধারণ গ্রামবাসীর কাছে ... ...
মণিমালা নীচু হয়ে সুখশয্যায় শোয়া সুকান্তের মুখের সামনে হাত নিয়ে ঢেলে দিল ভাজা মৌরি। সুকান্ত মুখ বন্ধ করে জড়িয়ে ধরল মণিমালাকে, টেনে নিল নিজের বুকের ওপর। সুকান্তর বুকে মণিমালার বুক থেপসে গেল। একটুও আগুন জ্বলল না ঠিকই, কিন্তু সুকান্ত পুড়ে ছাই হতে লাগল। ছাড়ো, ছাড়ো আমার এখনো রাজ্যের কাজ বাকি। আমার পাশে শোয়াটাও তোমার একটা কাজ। ছাই কাজ। ঠিক তাই, সেই থেকে পুড়ে পুড়ে আমি ছাই হচ্ছি। ইস, আমি এখন তাহলে এসে ছাইয়ের গাদায় শুলাম? ছাইয়ের গাদা, উঁ, ছাইয়ের গাদা, দেখাচ্ছি কেমন ছাইয়ের গাদা। নরম ও আরামের সুখশয্যার ওপর সুকান্ত চেপে ধরল আগুনতপ্ত মণিমালাকে। তারপর মণিমালার মুখের কাছে মুখ নামিয়ে বলল মশলা খাবে? মণিমালার দু চোখে সর্বনাশের ডাক, তার আঁখিপাখি পাখা ঝাপটিয়ে বলল, খাবো। ... ...
মোট আটজন। একটা ছোট বৃত্ত। চারটে বড় পাঁচ ব্যাটারীর টর্চ। জ্বলছে। একটা তার মধ্যে মাঝেসাঝে একটু পাড়াটা বা মাঠে চোখ বোলাচ্ছে। যেসব মনুষ্য এবং মনুষ্যেতর প্রাণীরা তাদের এই কার্যকলাপ নিরীক্ষণ করছে, তাদের মধ্যে কোনও অবাঞ্ছিত চাঞ্চল্য ঘটছে কিনা মেপে নিচ্ছে। আর বাকি তিনটে আলো স্থির। ঐ বৃত্তটার কেন্দ্রে। কেন্দ্র মানে ঠিক বিন্দু নয়। বরং আর একটা বৃত্ত। দু'জন কনস্টেবল শাবল দিয়ে ক্রমাগত ঝপাঝপ কুপিয়ে যার পরিধি আর গভীরতা সমানে বাড়িয়ে দিচ্ছে। তিনটে টর্চের সাথে পাঁচজোড়া চোখও ওই দিকেই নিবদ্ধ। বাকি একজোড়া চোখ আলাদা। সেও দেখছে ওদিকেই। কিন্তু ওই আলগোছে। মাঝেমাঝেই চোখ সরাচ্ছে। কখনও বুজছে। এই চোখজোড়ার মালিক গোটা দলটার মধ্যেই যাকে বলে অড ম্যান আউট। বাকিরা সবাই সশস্ত্র, সবার কাছেই থ্রি নট থ্রি রাইফেল, কেবল এই দলটার নেতা যে, স্থানীয় থানার মেজবাবু, এস আই দিবাংশু কর, যে সিগারেট টানছে, গর্ত খোঁড়াটা নজর করছে আর মাঝেমাঝে আড়চোখে ওই লোকটাকে দেখছে, তার খালি কোমরে সার্ভিস রিভলভার। কিন্তু এই লোকটা নিরস্ত্র। সুঠাম চেহারা, একটা চোখ আর ঠোঁটের কোনটা ফুলে রক্ত জমে আছে। পরনে একটা ছেঁড়া গেঞ্জি আর আস্ত লুঙ্গি। দুটো হাত সামনে জড়ো করা। হ্যান্ডকাফ লাগানো। কোমরেও একটা মোটা দড়ি বাঁধা যার খুটটা পেছনে এক কনস্টেবলের শক্ত মুঠোয়। ... ...
আমাদের বাড়ির চারপাশে অনেক বেড়াল থাকে মাঝেমধ্যে তারা নিজেদের মধ্যে বেজায় ঝামেলা করে। ... ...
একটি মেয়ে খুব সুন্দর স্কুটার চালাত। সে আকাশের পাখিদের দেখত আর ভাবত সেও যদি উড়তে পারে। সে মাঝে মাঝে-ই দেখত একটি ছোট্টো পরী উড়ে এসে গাছের ডালে বসে তার স্কুটার চালানো দেখত। আর উড়ে উড়ে সঙ্গে যেতো। এই পরীটা ম্যাজিক জানত। সে তার ম্যাজিক ওয়্যান্ড সব সময় সঙ্গে রাখত। ... ...
- সাল সত্তরের শুরুও হতে পারে, আবার ওয়াইটুকেও হতে পারে। তুমি কোনটা চাও? তুমি পরে আছো খুব হালকা নীলচে জামা, ছাই রঙের ট্রাউজার। ফুলশার্ট, পাড়ার দর্জি হারুদা বানিয়েছে। সন দুহাজার হলে জামাটা গোঁজা। চশমা সত্তর হলে নেই, নয়ত আছে। তোমার হাইট পাঁচ ফুট আট, গায়ের রং প্রায় ফরসা, গাল একটু বসা। কথা না বাড়িয়ে সোমনাথ হাঁটছিলো। গরম হাওয়া বইছে রাশবিহারী অ্যাভেনিউ বরাবর, ট্রামলাইন পেরিয়ে সে হাওয়া ঘুপচি দোকানগুলোয় ঝাপটা মারছিলো। - ক্যালিফোর্নিয়া গ্যাছেন? ওখানে এমনি হাওয়া দেয় গরমে ... ...