ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরি চরণ সিংহ খাপ পঞ্চায়েতের মধ্যে থেকে গণ আন্দোলন করেছেন। আটের দশক থেকে ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানার খাপগুলির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখা যায়। কৃষিতে ভর্তুকি বজায় রাখতে এবং বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে খাপ পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে মহেন্দ্র সিংহ টিকায়েত দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন করেন। তিনি অন্যান্য অনেক সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন, আবার সগোত্রে বিবাহের বিরুদ্ধে অনমনীয় মনোভাব রাখতেন। ... ...
সেই প্রথম চিত্রকরের ঘরে প্রবেশ। রঙের ভিতরে প্রবেশ। তাঁর সেই ঘরখানিতে ছিল যেন রঙিন বাতাস। আমাদের বন্ধুর দাদা শ্যামল বরণ বালক লাল্টু ওই ঝিলের জলে ডুবে গিয়েছিল ক’বছর আগে, তার নামে একটি পাঠগার করব, শুধু ছোটদের বই থাকবে সেখানে, তিনি যদি একটি ছবি এঁকে দেন বা পোস্টার। তিনি তো এঁকে দিলেন, পয়লা বৈশাখের সকালে এসে উদ্বোধন করলেন সেই পাঠাগার। আমাদের সঙ্গে মিশে গেলেন বালকের মতো। সেই আমার প্রথম আড্ডা বড় মানুষের সঙ্গে। ... ...
শঙ্খ ঘোষের কবিতা পড়া এক গভীর কৌতূহলোদ্দীপক, আশ্চর্য অভিজ্ঞতা। আমি মূলের ভাষা বা তার নান্দনিকতা নিয়ে কিছু বলতে তো পারি না, শুধু এটুকু বলতে পারি, তরজমায় যে কবিকে পাই তিনি গভীর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, সূক্ষ্ম সংবেদনশীল, গভীর আবেগময়, নির্ভুল পর্যবেক্ষণকারী এবং পরিশীলিত ভাবনার মানুষ। তিনি কবিতা-শিল্পটিকে করায়ত্ত করেছেন ন্যূনতম শব্দ খরচ করে সর্বাধিক সম্ভব ভাবপ্রকাশের পারদর্শিতায়। তাঁর কবিতার কথোপকথনের ভঙ্গিমা এবং বিবিধ উত্তর তুলে ধরা আমাকে প্লেটো-র ‘রিপাবলিক’, এবং পারসিক কাব্যের ‘কথোপকথন’ (ডায়ালগ) গোত্রের কবিতার কথা মনে করায়। আমার কাছে তিনি বিপুল পড়াশোনা করা একজন কবি, যাঁর এক চক্ষু নিবদ্ধ বিশ্বসাহিত্যের উপর। ... ...
এইসব পুরোনো বীভৎসতার ছবিকে সামনে রেখে বর্তমানের পরিস্থিতিকে যখন পড়ি, তখন বুঝতে পারি কিচ্ছু বদলায়নি। আমাদের মন বদলায়নি, সংহতি-মৈত্রীর শুভ উদ্যোগগুলিকে আজও ব্যর্থ করতে সমান ভাবে সক্ষম রাজনীতির লোকেরা, আর আমজনতা নেহাত ক্রীড়নক। গোদের উপর বিষফোঁড়ার নাম সোশ্যাল মিডিয়া। মুখে মুখে কথা ছড়াত আগে, তাকে পুলিশ আটকে রাখতে পারত অঞ্চল ঘিরে, কিন্তু আজকের নতুন দানবকে বধ করার কোনো একমুখী কৌশল নেই। দাঙ্গাবাজদের হাতে এই অস্ত্র কালাশনিকভের থেকেও বেশি ভয়ংকর। আজ যারা আগুন লাগায় তারা ঠান্ডা ঘরে বসে গোটাটাই অপারেট করে। সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে ওঠে সেই অপারেশনের বেসক্যাম্প। খবরের আগে ‘ভাইরাল’ হয় ভুয়ো খবর। প্রত্যক্ষ দাঙ্গাবাজেরা আজ প্রথমে রাস্তায় নামেন না, তাঁদের খোঁজ পেতে পেতে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ঘরবাড়ি। পশ্চিমবঙ্গে এমন ঘটনা গত পাঁচ-ছয় বছরে বারবার ঘটেছে, যখন সবটা বোঝা গিয়েছে তখন লাশ গোনা ছাড়া আর কোনো কাজই বাকি ছিল না। ৩৬ বছর বয়সি মার্ক জুকারবার্গের ব্রেন চাইল্ড ফেসবুককে মানুষখেকো দৈত্যের ভূমিকা নিতে দেখে ভূতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছে নাগরিক সমাজ। কার্যসিদ্ধিতে হাসি চওড়া হয়েছে দাঙ্গা-সওদাগরদের। হুগলি, উত্তর চব্বিশ পরগনা, মালদহ, হাওড়ায় বারবার রক্ত ঝরেছে। আমরা চিনব তাদের, যারা এই জায়গাগুলিতে আগুন লাগাল, জানব কীভাবে ছলে-বলে-কৌশলে ফেসবুককেই অস্ত্র বানাল তারা। ... ...
উঠোনের সেই সাদা কুয়াশা এখন পেয়ারা গাছের পাতা চুঁইয়ে টুপটাপ ঝরছে। আর ভোরের নিস্তব্ধতায় বারবার আছড়ে পড়ছে দমকা হাওয়া। ও দিদি, ঘরে যাও; দেখো কেমন হাওয়া ছাড়ছে। হাওয়ার কনকনে ভাব সত্যিই জার বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমি আচমকা সব আগ্রহ ফটকের সামনে রেখে বড়ঘরে চলে আসি। রান্নাঘরের বেড়ায় ঝুলতে থাকা বাতির টিমটিমে আলো উঠোন পেরিয়ে বড়ঘরে আসার আগে অন্ধকারে ধাক্কা খেয়ে আরোও ম্রিয়মাণ হয়ে যাচ্ছে। সেই আলোতে দাদুর কাঠের চেয়ারে আমি কুন্ডলী পাকিয়ে বসে আছি। গায়ে জড়ানো ঠাকুমার পাতলা চাদর। ... ...
প্লেটো থেকে হিউম অবধি সকলেই প্রায় নানা আঙ্গিকে আত্মহত্যার আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আত্মহত্যার মনস্তত্ত্বের দিকটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা। যুগে যুগে আত্মহত্যার আশ্রয় নিতে দেখা গেছে এমন বহু মানুষকে যাদের জীবনে আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রভাবগুলির প্রতিকূলতা প্রায় কিছুই ছিল না। তবুও, তাঁরা সে পথ বেছে নিয়েছিলেন। সুতরাং, আত্মহত্যার অন্তরালে যে কারণের বৈপরীত্য, ব্যাপকতা ও দ্বন্দ্বময়তা দেখা যায় তা শুধুমাত্র মনস্তত্ত্বের আঙ্গিকেই সুবিচার লাভ করে। ... ...
আমি গেছি দূর মফঃস্বলে চাকরি করতে। তখন যা দিন, মোবাইল ফোন কেন সেই মফঃস্বলে ইলেকট্রিকের আলো ছিল না, পোস্ট অফিস ছিল না। চিঠি ফেলতে ভিন গাঁয়ে যেতে হত। চিঠি দিলে একমাস আগে কলকাতা পৌঁছত না। বাস থেকে নেমে এক ঘন্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট হাঁটতে হত অফিস মানে হল্কা ক্যাম্পে পৌঁছতে, এমনই সে জায়গা। ছোটনাগপুরের মালভূমির লেজা সেই অঞ্চল। তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্রের একটি কন্যা। বয়স তার আড়াই তিন। সে তার ঠাকমাকে বলল, ছেলেধরা নিয়ে গেছে বাবুজিকাকাকে। হারিয়ে গেছে, আর ফিরবে না। শিশু যা শোনে তাই বলে। তাকে যা বলে ভয় দেখান হয়, সেও তাই বলে ভয় দেখায় ঠাকমাকে। মা তখন পিতামহী। মায়ের ঘুম আসে না। ছুটিতে বাড়ি এলে জিজ্ঞেস করে মা রাধারানি, কী খাই, কেমন জায়গা। ডাল আলু সেদ্ধ আর কুঁদরি পোস্ত ? মাছ হয় না? মাংস ? সকাল বিকেল মুড়ি, কেন পরোটা লুচি করে দিতে পারে না ? জানেই না মা ওসব। আমাদের দেশটা আসলে খুব গরিব। গ্রামটা আরো গরিব। শুনতে শুনতে মা চুপ। বুঝতে চাইছিলেন দেশটাকে আমার চোখ দিয়ে। ধরা গলায় বললেন, তুই বরং চাকরি ছেড়ে দিয়ে আয়, অন্য কিছু দেখ। না, চাকরি আমার কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে, দেশটাকে আমি চিনতে পারছি দিনে দিনে। মা চুপ করে থাকলেন, অবশেষে বললেন, দেশ সব জায়গা থেকে চেনা যায়। জমি মাটি মানুষ না চিনলে বড় হওয়া যায় না। মা বলল, বড় হবি তুই ? কী করে, প্রমোশন কবে হবে ? প্রমোশন না মা, লিখতে চাই, গল্প লিখছি, শুনবে? আমি কী বুঝব, কিন্তু তুই যদি নিজে বুঝিস হচ্ছে, তবে ছাড়বিনে, ধরে রাখবি, ছাড়বিনে একদম। মন্ত্র পেয়ে গিয়েছিলাম। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এ কিস্তিতে আফ্রিকায় মাছির উৎপাতের সমস্যা। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
রিংয়ের খেলা দেখাবার পর সে এই দুই জাদুকরের সঙ্গে মঞ্চে প্রবেশ করত। সার্কাসের মাঝখানে জলপূর্ণ কাঁচের বাক্স রাখা হত, সহকারী ঝলমলে সাঁতারের পোশাক পরে তাতে ডুব দিত৷ তারপর জাদুকরেরা চকচকে লাল কাপড়ে ঢেকে তালা লাগিয়ে দিত বাক্সে। শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তের সাথে চলত উচ্চস্বরে বাদ্যঝঙ্কার৷ যখন দর্শকদের উত্তেজনা চরমে উঠত তখনই কাপড়টা সরিয়ে ফেলে দেখানো হত বাক্স খালি, কিন্তু সেটা যথারীতি তালাবদ্ধ৷ একই সময় ড্রামের আওয়াজের সাথে পেছনের পর্দা সরে সেই সহকারী মঞ্চে প্রবেশ করত সম্পূর্ণ শুকনো অবস্থায়৷ দর্শকদের বাঁধ ভেঙ্গে যেত করতালি ও উচ্ছ্বাসে। ... ...
অবশ্য চায়ের অর্ডারে এখন আর তার কোনো আফশোস নেই৷ অবাক হতে হয় এমন আইডিয়া দেখে, গরম চায়ের সাথে চমকপ্রদ গল্প পরিবেশনা যেন চোখের সামনে অভিনীত কোনো দৃশ্য৷ একটাই আক্ষেপ, গল্পটা বেশ ছোট৷ সব কিছু নিখুঁতভাবে শেষ হবার আগেই যেন মঞ্চে পর্দা পড়ে গেল। অনেকটা যেন সেই অণুগল্পের মতো। ... ...
‘আসল বিষয়টা হল মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল না থাকলে বাস্তবের চেয়ে গল্পের ভুবনের মু্গ্ধতা জীবনপ্রবাহে মিশে যায়৷ যদিও শেষে ফিরে আসে প্রবহমানকালের আবহমান বার্তা, তবু গ্রন্থের সংযোগে বিচ্যুতি ঘটে না৷ পরের গল্প পাঠেই সব দুঃখ দূর হয়ে যায়’- এই অভূতপূর্ব বিজ্ঞাপন দেওয়া চায়ের আকর্ষণ যথার্থই পছন্দ হয়ে গেল তার৷ ... ...
মিষ্টি হাসে জয়মালিকা। সামনের গ্লাসটার কমলা রঙের সফ্ট্ ড্রিঙ্কটায় ছোট একটা চুমুক দিয়ে বলে, থ্যাঙ্ক য়্যু। একটা কথা একটু বিশদে বলে দিই। কুরুখ আমাদের ভাষার নাম, ঐ ভাষার সুবাদেই আমাদের অঞ্চলের লোকরা আমাদের কুরুখ বলে পরিচয় দেয়। আসলে যে উপজাতির মানুষ আমরা, তার নাম হলো ওরাওঁ। এ নামটা অনেক বেশি পরিচিত, আপনারা অনেকেই শুনেছেন নিশ্চয়ই। আর, সৌন্দর্যের যে কথা ম্যাডাম বললেন, সেটার সম্বন্ধে শুধু এইটুকুই বলবো, আমি আমাদের অঞ্চলের সেরা সুন্দরী নই, এমনকি, সেরাদের মধ্যে একজনও নই। আসল ব্যাপারটা হচ্ছে, আমাদের গণমাধ্যমে তথাকথিত ট্রাইবালদের যে অতি পরিচিত মুখটা দেখানো হয়, সেটা কোন্ ট্রাইবের কেউ জানে না। ট্রাইবাল-মেনস্ট্রীম ডিভাইডের ট্রাইবাল ফেস ওটা। ... ...
প্রবল নাটকীয়তার গল্প শুনে বড় হয়েছে যে ভারত, সে বাজেটে মজে থাকতে চায়, তার খুব গুরুত্ব আর না থাকলেও। আর মিডিয়ার তো কিছু একটা চাই বেঁচে থাকার জন্য, আত্নহত্যা থেকে বাজেট – কিছুতেই তাদের অরুচি নেই। তাই এই উন্মাদনা - যা প্রায় সার্কাসে পর্যবসিত। এক্ষেত্রে সঙ্গত ভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে এত কথা জানার পরেও আমি কেন এইসব নিয়ে লিখে সময় নষ্ট করছি? আমি আসলে সেই কারণেই লিখছি যে কারণে সিপিএম দুর্গাপুজোয় বইয়ের দোকান দেয়! ... ...
আমাদের দেশে এবং সমগ্র বিশ্ব জুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো করোনা-কাহিনী স্বাস্থ্য নাগরিকত্বের এই দ্বিত্বতা প্রকট করেছে। ইউরোপ আমেরিকায় একভাবে প্রকটিত, ভারতবর্ষে আরেকভাবে। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এর মতো বিশ্ববন্দিত মেডিসিনের জার্নালে আমেরিকায় কালো এবং অন্যান্য গোত্রভুক্ত মানুষের স্বাস্থ্যের সাথে সাদা মানুষদের প্রকট স্বাস্থ্য বৈষম্যকে বলা হয়েছে “স্ট্রাকচারাল রেসিজম” বা সমাজের কাঠামোগত বর্ণবিদ্বেষ। ... ...
আশ্চর্য এক বিদেশি পথে আগন্তুক, কিন্তু পথ হারানোর কোনো ভয় নেই, আমি এই কবিতাগুলিকে ছুটতে দিই আমার আগে আগে এবং একটি মাত্রার জন্যও তাদের অনুসরণ করা ছাড়ি না, চলি যেখানে তারা আমাকে নিয়ে যায়। একটি ধীর পদক্ষেপের পর আর-একটি ধীর পদক্ষেপে ‘পার্কস্ট্রিট থেকে গড়িয়ায় / আর তার মুক্তদেশে সোনালি সপ্তর্ষিরেখা রেখে’! চলে যাই গ্রামে গ্রামান্তরে, শহরে শহরে, ময়দানে, সেইসব জায়গায় যেখানে কোনোদিনই যাইনি। গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছে সওয়ার হয়ে আমি চলি, তিলমাত্র ভয় নেই যে পৌঁছাব না হয়তো। ... ...
সাদা চোখে তথ্য হিসেবে যেটুকু এখনও দেখা যাচ্ছে, বাংলায় যে টাকা বরাদ্দ হয়েছে, তার উল্লেখযোগ্য অংশ খরচ হবে কলকাতা-শিলিগুড়ি সড়কের জন্য। ... ...
এবারের ই-পত্রিকা, এমনিই গল্পসংখ্যা। এমনিই, কারণ, গুরুর পরিচিত বৃত্তের বাইরে থেকে আমাদের কাছে গল্প আসে কিছু। কিছু গল্প এদিক-সেদিক পড়িও আমরা। কেবলমাত্র সেসবেরই টুকরো-টাকরা নিয়ে তৈরি করে ফেলা হয়েছে এই সংকলন। স্বয়ংসম্পূর্ণ কোনো গল্পসংকলন তো তৈরি করা সম্ভব না। এই সংকলনেরও তেমন কোনো দাবি নেই। পৃথিবীর শেষতম বা শ্রেষ্ঠ গল্পসংকলনও এ নয়। গুরুর নিয়মিত ই-পত্রিকার এটি একটি সংখ্যা মাত্র। ... ...
ইসলামি শাসনকালে প্রাচীন হিন্দু বিজ্ঞানশাস্ত্রের চর্চা গলা টিপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এই হিন্দুত্ববাদী প্রচারের গালে একটি বিরাশি সিক্কার চড় ভাবপ্রকাশ নিঘণ্টু। মুঘল আমলে রচিত এ কেতাবকেই পণ্ডিত ও গবেষকেরা মনে করেন ‘আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মেটেরিয়া মেডিকা’। আর তাতেই রয়েছে আধুনিক খিচুড়ির প্রথম রেসিপি। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
তরঙ্গার বিদায়গাথা শুনতে পেয়ে সমুদ্রের দেবতা টাঙারোয়া জেলি ফিশ, সমুদ্রের ফেনা, আর সমুদ্রের শৈবালকে পাঠিয়ে দিলেন শিশুটিকে রক্ষা করার জন্য | তারা তাকে নিয়ে গেল শিশুটির পূর্বপুরুষ টামানুই-টে-রা’য়ের দেশে | সেখানকার লোক শিশুটিকে বাঁচিয়ে তুলল। তারপর টামানুই মাউইকে অদেখা জগতের কত রহস্যই না শেখালেন। মাউই পাখিদের সঙ্গে কথা বলতে শিখল, পাখিরা তাকে দিল ওড়ার ক্ষমতা। মাছেরা তাকে দিল শ্বাস, মাছেদের সঙ্গে সে সাঁতার কেটে বেড়াত। হাওয়া তাকে দিল স্বর, মাটি তাকে দিল আপন পরিচয়, তারারা তাকে দিল দিকনির্ণয়ের ক্ষমতা, আর আকাশের কাছে সে পেল উচ্চাভিলাষ। যখন সে বড়ো হল, একদিন টামানুইয়ের সঙ্গে তার যুদ্ধ হল, সে-যুদ্ধে তার বজ্রের মতন দণ্ড দিয়ে সে আঘাত করল টামানুইকে, টামানুই পড়ে গেলেন। এখন মাউই হল নেতা। তখন টামানুই মাউইকে বললেন, “দ্যাখো, তুমি তো পৃথিবীকে টাঙারোয়ার দেওয়া উপহার। এবারে তুমি নিজেকে নিজে খুঁজে পাও, যাও বেরিয়ে পড়ো, সর্বত্র তোমার নাম প্রচারিত হোক মাউই-টিকি-টিকি-আ-তরঙ্গা বলে।” ... ...
অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যাণ্ডের দেশের মানুষের মধ্যে যেমন বন্ধুত্ব তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা | এই যেমন ধরুণ কথাবার্তায়, উচ্চারণে | আপনি জানেন অজি (অস্ট্রেলিয়ান) আর কিউইদের (নিউজিল্যাণ্ডের মানুষ) ইংরিজি কমনওয়েলথ দেশেরই মতন, বানানবিধি প্রভৃতি সব এক রকমের, কিন্তু উচ্চারণের বেলা কিউই ইংরেজী স্বরবর্ণ এক সিলেবল এগিয়ে আর অস্ট্রেলিয়ান (“অজি”) এক সিলেবল পিছিয়ে। ব্যাপারটা কেমন জানেন? মনে করুন আপনি ফিশ আর চিপস (মাছভাজা আর আলুভাজা) কিনতে অস্ট্রেলিয়ায় গেলেন, সে খাবারের উচ্চারণ সেখানে “ফিঈঈশ” আর “চিঈঈঈপস”, আর ওই একই খাবার, টাসমান সাগর পেরিয়ে কিউইর দেশে তার উচ্চারণ হয়েছে “ফশ” (“ফুশ” ও চলতে পারে) আর “চপস” (“চুপস”) ও দিব্যি চলতে পারে। তারপর ধরুন পাভলোভা নামের মেরাং | ... ...