অনাবিস্কৃত ছায়াপথ ধরে হেঁটে চলি আমি, অনন্তে মিশে যায় শ্বাস-আমাকে ঘিরে ধরে একান্ত আমারই দেহঘ্রাণ-মাথার ভিতর বাসা বাঁধে, নক্ষত্রের ঝাঁক-ধূমকেতু-দিগন্তরেখা-ফসলমাঠ-মাছবাজারআর,নষ্ট পণ্যের ক্লান্ত বিনষ্ট দরাদরি। তবু, হে ছায়াপথ, রক্ষা ক'রো আমার অভীপ্সা,সঙ্গোপনে প্রেমিকার মতো। বুকের মাঝে অনাবিস্কৃত
হারানো-প্রাপ্তি // মৌসুমী ঘোষ দাস গায়ের রঙ শ্যামলা, পরনে একটা রংচটা কুর্তি আর সালোয়ার। কুর্তির বুকের কাছে চুমকি জরির মত কাজ। কুর্তির পেছনের দুটো বোতাম খোলা, বোধহয় বোতাম ছিঁড়ে গেছে। মাথার চুল উস্কোখুস্কো। বোঝা যাচ্ছে তেল-জল পড়েনি অনেকদিন। হাতে একটা প্লাস্টিকের ব্যাগ, তাতে একটা অপরিষ্কার সোয়েটার। উদ্ভ্রান্ত দৃষ্টি। বয়স পনেরো/ষোলো মত হবে, সঙ্গে কেউ নেই। খুব সম্ভবত ভবঘুরে অথবা পাগলী। -মেয়েটাকে কিছুতেই ভুলতে পারছে না অনন্যা। মামাতো দিদি গোপাকে নিয়ে গিয়েছিল নার্সিং হোমে। জাতীয় সড়কের দুই ধারে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা নার্সিং হোম, যেগুলো বেশিরভাগই কিছুদিন আগে পর্যন্ত হোটেল ছিল, তারই একটাতে ভর্তি রয়েছে মামাতো দিদির জা। ... ...
বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি লিখেছেন, কাল দেখলাম, যে, বলাগড়ের তৃণমূল ব্লক সভাপতি "নিজে কয়েকদিন আগে চাকরি দেবার কথা বলে লোকের কাছ থেকে টাকা নেবার অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে নাক কান মুলে সেই টাকা ফেরত দিয়েছেন।" এবং সেই ব্লক সভাপতি আবার অভিযোগ এনেছেন, টাকার বিনিময়ে পঞ্চায়েত প্রার্থীকে নির্বাচনে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। মনোরঞ্জন ব্যাপারি লেখালিখি করেন, তাঁকে চিনি, অবিশ্বাস করার বিশেষ কারণ দেখিনা। কিন্তু বিষয়টা তো চেনাচিনির না। বাইরে থেকে যদি দেখেন ... ...
কাঁচা লঙ্কা ধনে পাতা দিয়ে কয়েত বেল মাখা খেয়েছেন? কিংবা কুল গাছ থেকে সদ্য পাড়া কুল? কখনও কুমীর ডাঙ্গা খেলেছেন? কিংবা ধরা চোর? হুসাহুস? পিটটু?যাঁরা আধা শহর আধা গ্রাম কিংবা মফঃস্বলের কোনো প্রান্তে আমার মত শৈশব কাটিয়েছেন। তাঁরাই একমাত্র ওগুলোর স্বাদ পেয়েছেন। কাষ্ঠগদ্যের শহুরে জীবনে কবিতার স্বাদ মেলা ভার।বাড়িতে বাড়িতে তখনও মিউনিসিপ্যালিটির কল আসেনি। প্রতিটি পাড়ায় অবশ্যম্ভাবী ... ...
সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। হাজার হাজার বছর আগের তো বটেই! অবশ্য হাজার হাজার-ই কিনা হলফ করে বলা মুশকিল, তবে ঘটেছিল যে অনেক দিন আগে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। মোটের ওপর ঘটনাটা পুরনো, তবে পুরাণের গল্প নয়, সে তুলনায় বেশ আধুনিকই! ওই ইতিহাসের খাঁজ-খোঁজে ফসিল হতে থাকার এক বিরামহীন তোড়জোড়ে হঠাৎ-আবিষ্কার আর কী!এক দেশে ছিল দুই ফেরিওয়ালা। দু’জনই পুরনো জিনিসের বিনিময়ে নতুন জিনিস বিক্রি করত। তুল্যমূল্যে — অবশ্যই ফেরিওয়ালার বিচারে, পুরনো জিনিস সংখ্যায় ও দামে কম মনে হলে ক্রেতাকে কিছু নগদও দিতে হতো বৈকি। কিছুদিন আগে অবধিও খুবই দেখা যেত পুরনো জামাকাপড়ের বদলে স্টেইনলেস স্টিল-এর বাসন-কোসন-এর এক অদ্ভুত বার্টার ... ...
বুড়িগঙ্গা একটি নগর সভ্যতার নিউক্লিয়াস। বদ্বীপের হাজারো প্রবাহের মত এই নদীও প্রাচুর্য দিয়েছে তীরবর্তী জনপদকে। প্রাচীন এই প্রবাহকে কেন্দ্র করেই ঢাকা নগরীর গোড়াপত্তন। ঢাকা। কারও কাছে মসলিনের শহর, কারও চোখে মসজিদের। ঢাকাইয়্যা আর বাঙালের সেই আদ্যিকালের রাজধানী আজও স্মার্ট হেরিটেজ। সেই যে রাজমহল থেকে স্থানান্তর হয়ে রাজধানী হলো ঢাকা, তারপর থেকে নানা উত্থান পতনের সাক্ষি এই বোবা নগরী। ... ...
যেকোন মূলধারা রাজনৈতিক দল, যাদের লক্ষ লক্ষ, অথবা ভারতবর্ষের মত এত বিশাল একটি দেশে, কোটি কোটি সমর্থক আছে, তাদের কিছু বক্তব্যের সারবত্তা অবশ্যই আছে। তা নাহলে এত মানুষ সকলেই নিজেদের বোধবুদ্ধি হারিয়ে যুক্তিহীন নির্বোধের মত তাদের সমর্থন করে চলেছে এটা মেনে নেওয়া কঠিন। তাদের পরিপ্রেক্ষিত থেকে তাদের যুক্তিটাও খানিকটা বুঝতে চেষ্টা করা উচিত, নাহলে রাজনৈতিক বোধ অনেকটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আবার উল্টোপিঠে কোন রাজনৈতিক দলের ... ...
মহাপরিনির্বাণ .............,....................... রাজগেহ, পাটলিপুত্ত, বৈশালী হয়ে ভোগনগরার পথে পা বাড়ালেন মহাকারুণিক। লক্ষ্য অতি দ্রুত পাবা তে পৌঁছানো। পাবা ও কুশিনর তখন মল্লের দুটি মহানগরী। মল্ল, ষোড়শ মহাজনপদের একটি। মল্লদের বরাবরের অনুযোগ ছিল যে তথাগত তাদের সময় দেননা। তথাগতের প্রিয় জায়গা অবশ্যই রাজগেহ, ইদানিং এই রাজগেহতে বর্ষাবাস কাটাতে ভালোবাসেন তিনি। দ্বিতীয় প্রিয় জায়গা বৈশালী। আম্রপালি এখানেই ... ...
রামায়ণে পড়েছি, কোন এক সময় এক জোড়া জুতো দেশ শাসন করেছিল, কিন্তু আজ জুতোর কোন সম্মান নেই। এই কারণে জুতোর জন্য আমার বড়ো কষ্ট হয়। জুতো ছাড়া আপনি চলতে পারবেন না, অথচ তাকে আপনি আপনার ঘরে ঢুকতে দেন না। অন্যের ঘরে ঝগড়াঝাটি বাঁধাতে আপনি ঐ জুতো উল্টে দিয়ে
হংসেশ্বরী পড়লাম। এক বসায় বলা চলে। বহুদিন পরে কোনও একটা লেখা আমায় এমন মশগুল রেখেছে। সেই থেকে একটা ঘোরের মধ্যে আছি। নারায়ণ সান্যাল লিখেছেন। কী আছে এই আখ্যানে? -- ভালোবাসা, উপেক্ষা আর অপেক্ষা। বস্তুত এরাই নিয়ন্ত্রণ করছে নৃসিংহদেব, মহামায়া, শঙ্করী আর পুরোহিত
প্রেম থেকে প্রাণ ঝাঁপ দিয়ে পড়ে ট্রেনের সামনে, কুচিকুচি হওয়ার আগে অব্দি তার চোখে ডিলিউশন। আমরা বই খাতা ফেলে ইস্কুল টিউশন খুঁজে ফিরি
ডেমি মুর (স্ত্রী) , উডি হারেলসন (স্বামী) ও রবার্ট রেডফোর্ড (কোটিপতি) অভিনীত একটা বিখ্যাত হলিউডি মুভি ছিল "ইনডিসেন্ট প্রপোজাল" (১৯৯৩) নামে। ডেমি ও উডি পরস্পরকে হাই স্কুল থেকে গভীর ভাবে ভালবাসে। পড়াশোনা শেষে তাদের গভীর ভালোবাসাকে সামাজিক বন্ধনে বেঁধে নেয়।.উডি পেশায় আর্কিটেক্ট। আর দশটা শহরের মতো নবদম্পতির জীবন শুরু হয় আর্থিক সংকটের ভেতর দিয়ে। স্বামীকে সাহায্য করার জন্য ডেমি রিয়েল এস্টেট ব্রোকারের কাজ শুরু করে। এই কাজ করতে গিয়ে ডেমি প্যাসিফিক কোষ্টের সান্তা মনিকা বিচে নিজেদের স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করার একটা চমৎকার প্লট খুঁজে পায়।.তাদের যৌথ স্বপ্নকে প্রতিষ্ঠিত করতে দুজনেই উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে থাকে। এমন সময় অর্থনৈতিক মন্দা এসে এই ... ...
সেসব হাফপ্যান্টের কাল। জীবন ও ফেস্টিভ্যাল এগরোলময় ছিল। তার আগেরটাও আমরা দেখেছি(দইবড়া, মুগের চপ ইত্যাদি)। হাফপ্যান্ট এখন ধেড়ে, বুড়ো ও বুড়িরাও পরে। এবং ফুলপ্যান্ট পরা খোকাও খুবই মেইনস্ট্রিম। এগরোল থেকে গেল। জেনারেশনটির সাদা চুলদাড়ি আসলে অকালে পেকেছে এই বিশ্বাস আঁকড়ে থাকলেও অস্বীকার করে লাভ নেই, যৌবন যদি বা থাকে তার লাস্ট ফেজ চলছে। যাদের বৌ/বর ও ছানাপোনা আছে তারা হা-ক্লান্ত। এইসব না থাকার পরেও সুনন্দ আঃ-ক্লান্ত। পিঠের ব্যথা, চটকে যাওয়া ঘুম ও লটকে যাওয়া প্ল্যান। ফেস্টিভ্যাল বয়ে চলেছে। 'দুটো এগচিকেন। শস দেবেন না।' এই ফিলজফিটা আমরা এই প্রজন্মে পেলাম। দ্বিতীয় এগচিকেনটি কার? উত্তরের জন্য আত্মবলিদান দেওয়া চিকেনটিকেই খুঁজতে হয়। খেপে ... ...
তা সেইবার রামরাজ্যে সাংঘাতিক বিপদ। চাকরি নেই, ক্ষিদে তে মানুষের রাতে ঘুম নেই। জনগণ হাহাকার করতে করতে উনিজির পায়ে পড়ে গেল, বল্লে, "হে প্রভু, এই অন্ধকার সময়ে আলো দেখান"। উনিজি একটুও বিচলিত না হয়ে বললেন, "চিন্তা কীসের? এক্ষুনি সব করে দিচ্ছি। রামের মূর্তির মাথায় সূর্য তিলকের ব্যবস্থা করেছি। সেই আলোতে আলোকিত হবে গোটা দেশ-বিশ্ব- জগৎ-সংসার"। জনগণ এই অতি সাংঘাতিক ... ...
বেনারস পর্ব ৭সন্ধ্যা হয়ে আসছে। বেনারসের রাস্তা আলোয় ঝলমল করছে। জনস্রোত চলেছে। নিজস্ব ছন্দে, গতিতে এগিয়ে চলেছে সকলেই। আমিও চলেছি দোকান দেখতে দেখতে, মানুষ জন দেখতে দেখতে। এ চলাও এক অদ্ভুত চলা ! এমন ভীড় রাস্তায় একমাত্র কলকাতার পূজোর সময়েই চলেছি। জামাকাপড়, বাসনের দোকান, মিষ্টি, রাবড়ি, চাট, ঠাণ্ডাই , মশলা দুধ, চা – কি না! সব দোকানেই ভীড়। একটি জায়গায় দেখা গেল বড় বড় হাঁড়িতে খিচুড়ি – বিলি করা হচ্ছে পথ চলতি মানুষের মধ্যে । সেই প্রসাদ কেউ গ্ৰহণ করছেন প্রসাদরূপে কেউ বা ক্ষুধা নিবৃত্তির উদ্দেশ্যে। স্বয়ং মা অন্নপূর্ণার বাস বারাণসীতে – সেখানে মায়ের কোনোও সন্তান কি আর অভুক্ত থাকতে ... ...
এই টাইমলাইনে চোখ রাখা সকলকে জানাই যে হয়তো কেউ কেউ লক্ষ্য করেছেন এখানে মূলত সিপিএম দলের রাজনৈতিক অবস্থানের সমর্থনে, ক্কচ্চিত সমালোচনায় , বা বামপন্থীদের বা বামপন্থী ঘরানার লিবেরাল গণতন্ত্রের পক্ষে, সাম্প্রদায়িক, অগণতান্ত্রিক, যুক্তরাষ্ট্রে কাঠামো বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ হীন ধনতান্ত্রিক অসাম্যের বিরুদ্ধে পোস্ট করা হয়েছে ২০২১ জুড়ে।
হিন্ চে পালং পু্ই ও বাঙালির হাস্যরস !বন্ধুবর সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় তার লেখা আর একটি বই সম্প্রতি প্রকাশ করলেন বিড়লা প্ল্যানেটরিয়ামের সভাগৃহে। সেই বইয়ের নাম ই হিন্ চে পালং পুই। বইটি বেশ রয়েসয়ে রসিয়ে পড়ছি। বন্ধুবরের ভাষায় বেশ 'খেলিয়ে' পড়ছি ! প্রথমেই আসি বইয়ের নামকরণ প্রসঙ্গে! রসসম্রাট সুকুমারের ছড়ায় আছে' একের পিঠে দুই চৌকি চেপে শুইপোটলা বেধেঁ থুইগোলাপ চাপা জুইইলিশ মাগুর রুইহিন্ চে পালং পুই -'সেই হিনচে (হেলেঞ্চা) পালং পুই। আহা অপূর্ব লেখা।অপূর্ব শব্দচয়ন ও হাস্যরসে জারিত। একদম সুস্বাদু পঞ্চ ব্যাঞ্জনের মতো রসিক পাঠকের পাতে সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়েছে প্রায় পাচতারা শেফের দক্ষতায়। অনেক সময় লেখকের রসবোধ দেখে বিস্মিত না হয়ে পারা যায়না। ... ...
.ফিল্মের মহারথীদের একের পর এক বিপুল বাজেটে নির্মিত ফিল্ম বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ছে। একটি আপাত জোলো কারণ আকাশে বাতাসে মিডিয়ার কল্যাণে ভেসে বেড়াচ্ছে। হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে কিছু লোক নাকি বয়কট লিখে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করছে। তাই নাকি ফিল্মগুলো দর্শক দেখতে হ'ল ভরাচ্ছেন না। আমির খান, অক্ষয় কুমার প্রমুখ তারকা খচিত একটি ছবি, কয়েকজনের করা বয়কট পোস্টের জন্য মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিলেন ? এই বালখিল্য যুক্তিটি মানানসই বলে মনে হয় ? বিশেষ করে আমির খান ও অক্ষয় কুমারের মত সুপার স্টারের ছবি ! মুম্বইয়ের অনেক তাবড় ফিল্ম বিশেষজ্ঞদের ভাবনা অনুযায়ী কারণ এমনটাই বর্ণিত। অথচ দক্ষিণী ছবিগুলো ডাবিং করে সারা দেশ ... ...
সম্পর্ক - জন্মের, প্রাণের, সুখের, দুখের সম্পর্ক। আত্মার আত্মীয়, একদিন কচিবেলায় যারা ছিল প্রাণের সখা, বেলপাতার তিনটি পত্রিকা, তারা আজ আপন আপন শিব ঠাকুর নিয়ে তাদের পূজায় ব্যস্ত।