শ্রীকৃষ্ণ বললেন, "কাশ্মীরের ভূমি স্বয়ং পার্বতী। কাশ্মীর রাজ হলেন শিবের অংশ। রাজকর্তৃত্ব মন্দ হলেও মঙ্গলকামী জ্ঞানী মানুষের তাঁকে অবজ্ঞা করা অনুচিত। পুরুষের যে চোখগুলি নারীকে সুখভোগ্য পণ্য মনে করে তাঁর দিকে অসম্মানসূচক দৃষ্টিপাত করত, তারাই তাঁকে প্রজাদের দেবীস্বরূপা মাতা হিসেবে গ্রহণ করল।" এই উক্তির সূত্র ধরে আসুন এই লেখায় আমরা ভূস্বর্গ কাশ্মীরের মহাপরাক্রমশালিনী শাসিকাদের কাহিনী পাঠ করে দেখি। ... ...
অহল্যা বাঈ হোলকার কে ছিলেন? কেন মধ্যভারতের এক বিশাল অঞ্চলে আজও তিনি 'লোকমাতা' রূপে স্মরণীয়া হয়ে রয়েছেন? সচরাচর এই ধরনের ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্বদের আজকাল আর ফিরে দেখা হয়না প্রায় কারোরই। ইতিহাস চর্চার নতুন আবহেও প্রায়ই বাদ পড়ে যান তাঁরা। তবুও অসহিষ্ণু এই দেশে -এই সমকালে অহল্যা বাঈদের মতো মানুষরা চির প্রাসঙ্গিক। ঠিক যেমন চির অমলিন তাঁর অসামান্য জীবন - অনন্য কীর্তিসমূহও। ... ...
তামাম বাংলা-বাঙালি তথা ভারতীয় উপমহাদেশের মনের জমিতে ক্রিকেট খেলাটিকে যিনি প্রথম রোপণ করেছিলেন সেই সারদারঞ্জন রায়ের আজ ১৬৫তম জন্মদিন। আজ সারাদিন কাজী নজরুলের জন্মতিথিতে তো সব্বাই তাঁকে স্মরণ করেছেন নানা ভাবে। আমি বরং "ভারতীয় ক্রিকেটের W. G GRACE". তথা ক্রিকেটার-অধ্যাপক-সংগঠক সারদারঞ্জন রায়কে আজ স্মরণ করি। 'ক্রিকেটপাগল' বাঙালিকে যিনি 'পাগল' হতে শিখিয়েছিলেন এই আই পি এলের ভরা মরশুমে বরং বিস্মৃতির ধুলোয় আবছা হয়ে যাওয়া সেই সারদারঞ্জনের কৃতি জীবন আর অনন্য উদ্যোগগুলিকে আরেকবার ফিরে দেখি আজ। ... ...
১০ ক্লাসের ইতিহাস বইয়ের ৩ নম্বর অধ্যায়ের প্রথমভাগে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ১৮-১৯ শতকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলির প্রতিরোধের ইতিহাসে মাত্র সাড়ে পাঁচ লাইন ব্যয়িত হয়েছে 'ভীল' বিদ্রোহের জন্যে। 'ভীল' বলে সেই একদল প্রাচীন উপজাতি গোষ্ঠী, যাঁরা কিনা সেই সুদূর খান্দেশ-আরাবল্লীর রুখাসুখা পাথুরে জঙ্গলে ইংরেজদের বিরুদ্ধে একটানা বিদ্রোহ করে এসেছিল প্রায় দু'শো বছর ধরে, তাঁদের কথা আমরা বাঙালিরা স্কুলের সিলেবাস নির্বাচনজনিত বাস্তবিক নানা সীমাবদ্ধতার কারণে না জানলেও আরাবল্লীর গাঁও দেহাতের ভীল-মীণা-ডামোর আদিবাসীরা চির গৌরবের সঙ্গে মনে ধরে রেখেছেন তাঁদের প্রিয় দুই শিক্ষক এবং বীর বালিকা কালী বাঈয়ের স্মৃতিকে। একটু সময় খরচা কর পড়ে নেবেন কি কালীবাঈয়ের অজানা ইতিহাস? ... ...
"সে ছিল এক একদম অন্যরকম হিন্দোস্তান। যেখানে বাস করতেন বলিষ্ঠ পাঠান, নির্ভীক রাজপুত, জ্ঞানী ব্রাহ্মণরা…সম্মানের সঙ্গে সেখানে একসঙ্গে বাঁচতেন হিন্দু আর মুসলিম জনগণ.."। আনিস কিদওয়াই লিখেছিলেন তাঁর 'আজাদী কি ছাঁও মে' নামক বইয়ের মুখবন্ধে। কে ছিলেন এই আনিস কিদওয়াই? কি এমন কাজই বা করেছিলেন তিনি এই দেশের জন্য? নিশ্চিত আমাদের অনেকের কাছেই আনিস এক অশ্রুতপূর্ব নাম। এই লেখায় আমরা বরং সংক্ষেপে ফিরে দেখি এই ব্যতিক্রমী অথচ বিস্মৃত সমাজকর্মীর জীবন ও মহতী সক্রিয়তাগুলিকে…। ... ...
বাবা কুঞ্জন আর মা থাইথারা মানি সাধ করে নয়, জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবেই আদরের ছোটো মেয়েটির জন্মের পর নাম রেখেছিলেন দাক্ষায়ণী অর্থাৎ দক্ষের কন্যা দুর্গা। এই শ্রুতিমধুর নামটি যুগ যুগ ধরে কোচিন-ত্রিবাঙ্কুরের জাতে-বর্ণে শতধা বিভক্ত সমাজে কেবল উঁচু বর্ণের সম্পত্তি হয়েই রয়ে গেছিল! উচ্চবর্ণের জন্য নির্দিষ্ট নাম নিজের সন্তানকে দেওয়ার সাহসই পুলায়াদের হয়নি কখনো। প্রতিবাদী নামটিকে আক্ষরিক অর্থে সার্থক করে তোলার জন্যই যেন জন্ম হয়েছিল দাক্ষায়ণীর। ... ...
হ্যারি বেলাফন্টেদের কাছে সময় হার মানে...সবসময়!! ..আর জিতে যায় ক্লান্ত ক্লান্তিহীন মানুষের নিয়ত ভেসে চলার গান!! ... ...
" সম্ভবত আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে টালমাটাল সময়ে, ১০ আগস্ট ১৯৪৭-এর সকালে আমি দিল্লি পৌঁছলাম। ২০০ বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের শেষে হিন্দোস্তান আর পাকিস্তান নামের দুটি স্বশাসিত ডোমিনিয়নে চিরতরে ভেঙে যাওয়া ভারত ১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট নিজের প্রথমতম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য অস্থির উদ্দীপনা নিয়ে অপেক্ষা করছিল। আমিও অবশ্য ভাঙছিলাম...।আমি ভাঙছিলাম আমার সুরক্ষিত আর গতানুগতিক জীবনের সমস্ত শিকলগুলোকে। ... পরিবারের তামাম তির্যক কানাঘুষো, সমাজের সব নিষ্ঠুর নিন্দামন্দ আর লখনৌয়ের স্বাচ্ছন্দ্যময় জীবনের যাবতীয় অভ্যেসের বন্ধন ভেঙেছিলাম আমি আর পুরুষের কোনরকম সহায়তা আর অনুমোদন বিনে আমার জীবনটাকে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য বেরিয়ে এসেছিলাম একদম একলা। আশ্চর্য ধৈর্য্য আর সহিষ্ণুতা দিয়ে আমার ঘটানো এমন অভূতপূর্ব কান্ডকে পারিবারিক আর সামাজিকভাবে সামলানোর জন্য আমি আমার মা আর শাশুড়ি মায়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব...।" কেবল এই দেশই নয়, পৃথিবীর প্রথম পেশাদার মহিলা সংবাদপাঠক সাঈদা বানোর আত্মজীবনী 'ডগর সে হঠ কর'-বইটির কয়েক লাইন দিয়েই না'হয় শুরু হোক এই লেখা...। ... ...
সে এক অন্যরকম সময়। সত্তরের শেষ থেকে আশির দশক। ঘরে-বাইরের সব কাজ সামলে সুরে সুরে বলা শ্রমজীবী মেয়েদের কথা-কথকতা খুঁজতে বেরোলেন এক দিদিমণি। নাম তাঁর চন্দ্রা মুখোপাধ্যায়। সফরের গোড়াতে, সেসময় তাঁকে পথ দেখাচ্ছেন সংগীত শিক্ষক মৃণাল বড়ুয়া অপার বাংলার নারীগান সংগ্রহের পথিকৃৎ গৌরীপুরের রাজকন্যা নীহার বড়ুয়া, দিকপাল নাট্যব্যক্তিত্ব খালেদ চৌধুরী আর আরো নানা গুণীজন...... ... ...
১৯৬৪র কোন এক সময়। ডক্টর মিচিয়াকি তাকাহাসির তিন বছরের ছোট্ট ছেলে তেরুয়ুকি ভীষন কষ্ট পাচ্ছে ক'দিন হোলো। হিউস্টনে ওদের পড়শী মেয়েটির কপালে খেলার দিনই কপালে গুটি গুটি ফুসকুড়ি বেরিয়েছিল। মেয়েটির সঙ্গে খেলে আসার পরই তেরুয়ুকির ধুম জ্বর, গা ভর্তি ফোস্কা আর প্রবল শ্বাসকষ্ট। বিজ্ঞানী বাবা বোঝেন রোগটা চিকেন পক্স। ছোট্ট ছেলের রোগ সেরে গেল একসময়। কিন্তু পৃথিবীকে পক্সমুক্ত করার শপথ থেকে আর সরে আসলেন না ডক্টর মিচিয়াকি তাকাহাসি। ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৪; প্রথমে মার্কিন মুলুকে, তারপর ১৯৭০ থেকে জাপানে ভ্যারিসেলা জোস্টার ভাইরাস নিয়ে দীর্ঘ একদশকের নিমগ্ন গবেষণার পর বিজ্ঞানী বাবা আবিষ্কার করে ফেললেন পৃথিবীর প্রথমতম চিকেন পক্সের টিকা। ... ...