ঔরঙ্গজেবের আমল থেকে ফারুখ শিয়র পর্যন্ত ওনার আয়ুষ্কাল। উর্দু ব্যঙ্গ কবিতার জনক বলা হয় মির জাফর জাটেল্লিকে (শাটেল্লি ?)। আসল নাম মির মুহম্মদ জাফর। ললিত ফার্সি জবানে কাঁচা মুখের ভাষার সব শব্দ বসিয়ে - নতুন মিশ্র-রাখতা ভাষা তৈরিতে, যৌন ইঙ্গিতে সব শালীন ছক উল্টে দিয়ে সময়ের অনেক আগের এক আলোর বর্তিকা হলেন জাটেল্লি। ওই শৈলীকে বলত হুজ্জু বা সমাজদেহের নানা হিপোক্রেসি আর ক্ষমতার চামড়া ছাড়িয়ে নেওয়া নেওয়া শুধু নয় সেই খালবোশ শরীরে রীতিমত ঝাল নুন ছিটোন ল্যাম্পুনিং করার শৈলী। ওনার ব্যক্তিগত জীবন ... ...
"কবি বলছে এই সময় পকেট খালি গড়ের মাঠ ;কারুর যদি থাকে জল রুটি নেই অবশ্যই। ঘোষণা হতাশ গোটা বিশ্বময় গরিবির কোনও ইলাজ নেই। এতই দেখ জলেতে টান চকচকে ভাব যায় পারায়। রুটি একটাই পাওয়া যায় সে হল ওই আকাশের চাঁদ। ভুলেও খুঁজো না মুক্তো আর হারিয়ে মানিক্য তার, সাগরে নুড়ি বিছায় । উরফি বলে চিন্তা কী ? যদিও পকেট গড়ের মাঠ আর ভাবলে তুমি হারাল সে লোভ যতসব সোনারূপায়।"The poet describes how in his times, no one has the wherewithal; if he has water, then there is no bread. Despair announces it to the entire world that poverty has no cure. Water (āb) is so scarce that even the arrow ... ...
ফিরিঙ্গীদের হাতে রাজত্ব খোয়ানো, অবধের নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ নরমসরম মানুষ ছিলেন। এক নাচনেওয়ালিকে গান্ধর্ব মতে বিয়ে করে ছেলে হওয়া সত্ত্বেও তালাক দিলেন। সেই নাচনেওয়ালি টার্নড বেগম ছিলেন চিরকেলে ঘাড় বেঁকা। নাচনেওয়ালিদের নেচে নেচে রুটি কাবাব ডাল ভর্তা যোগাড় করতে হয় হররোজ। তাতে হররোজ অনিশ্চয়তা সঙ্গে জবরদস্তি, মাতালের যৌনসঙ্গী হওয়ার জঘন্য জ্বালা। ওই অনিশ্চয়তা আর জ্বালার জন্য এমনিতেই নাচনেওয়ালি বেগমের ঘাড় খুবই বেঁকে গিয়েছিল। তারপর তালাকের ফলে আর ফিরিঙ্গীদের হারামখোরীতে আরো বঙ্কিম ভাব ধারণ করে। প্রথম স্বাধীনতার জন্য অবধের হিন্দু-মুসলিম রায়তরা বলল, “আপনাকে আমরা বেগম মানি”। বেগম সোজা তাকিয়ে থাকেন। তাঁর দৃষ্টি ছেলের দিক থেকে ঘুরে ঘুরে কলকেতায় চলে যাচ্ছে ... ...
আকবরের আমল থেকে মোঘল দরবারে ব্রাহ্মণ পণ্ডিতরা বা কায়স্থরাও উচ্চ পদে বসতে শুরু করে। শাজাহানের সময়ও অনেকে ছিলেন তাঁদের মধ্যে মুন্সি- সেক্রেটারি চন্দ্রভান ব্রাহ্মণ খুবই বিখ্যাত ফার্সি কবিও বটে। ইতিহাসকার রাজীব কিনরা ওনার ওপর বড়োসড়ো কাজ করেছেন। বইটার নাম ''রাইটিং সেলফ, রাইটিং এম্পায়ার'' - ''নিজেকে নিয়ে, সালতানাতকে নিয়েও লেখা'', এক বিচিত্র বই বটে! চন্দ্রভানের সময়কার গোটা সাংষ্কৃতিক জগতের ইতিহাস উঠে আসছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হল চন্দ্রভানের পেননেম -ছদ্ম নাম ছিল ব্রাহ্মণ। বোঝা যাচ্ছে, শাহী মহলের সঙ্গে সায় দিতে পারলে হিন্দু পরিচয় দরবারি স্বীকৃতির বাধা হতো না শুধু তাই নয় উচ্চকোটির পারসিক সাংস্কৃতিক মহলেও সমাদৃত হতো। কবি হিসেবে চন্দ্রভানের পরিচয় মোঘল সালতানাতের সীমা ... ...
চিস্তি সুফিরা ইন্ডিক-হিন্দু নানা টেক্সটের ওপর রীতি মতো পড়াশোনা করত। তাঁদের নাথ যোগী সম্প্রদায়ের সাধুদের সঙ্গও করতে দেখা যায়। হঠ যোগের ওপর কিছু বইও তাঁরা লেখেন। তবে রুদাউলির সাবিরি চিস্তি আব্দুর রহমান সবাই কে ছাপিয়ে গেলেন। ষোলোশো তিরিশের গোড়ায় উনি মিরাত উল মাখলুকাত নামের একটা বই লিখলেন ( Emperor Who Never Was, Dara Sikoh in Mughal India – Supriya Gandhi page 69-70 )। ফার্সিতে লেখা সে বইতে উনি বশিষ্ঠ মুনিকে জিনদের জগতের অবতার বলে বর্ণনা করছেন। ইসলাম আসার আগে হিন্দুস্থানে জিনেরা বসবাস করত। বশিষ্ঠ মুনি আবার নাকি আদম ও হজরত মুহম্মদের মহত্ব বিষয়ে লেখেন। উনি জিনদের রাজা মহাদেবের থেকে দিব্যজ্ঞান লাভ ... ...
এই জোটের শুরু বিহারে। সেখানে বিজেপি বিরোধিতাকে কেন্দ্রীয় বিষয় করে লোহিয়াপন্থী-নকশাল আলাদা ভাবে।পরে কংগ্রেস-লোহিয়াপন্থী-নকশাল-বামপন্থী নানান প্রক্রিয়া চলছে উনিশের একটু আগে থেকে। উত্তরপ্রদেশেও তার ধারা মোটামুটি একই। ওখানকার যে তেহজিব-সংস্কৃতি তা মিশ্র হিন্দুস্থানী গঙ্গা যামুনি তেহজিব তার সঙ্গে এখানকার বেশ ফারাক। ওখানের নানা ধারার যে জোট হয়েছে তার অনেকটাই এই তেহজিবের প্রশ্নটাকে ধরে। হিন্দুত্বের আগ্রাসী প্রভাবে ... ...
আশার ব্যাপার হল বিজেপি যে ফ্যাসিস্ট দল, বিজেপির ক্ষমতায় থাকা মানে ভারতীয় ঐতিহ্যের বিপর্যয় এটা সম্পর্কে সংখ্যাগুরু বিরোধীরা একমত হয়েছেন। তাঁদের বিভক্তির জন্যই ভারতীয় সমাজের পক্ষে বিপদজনক হিন্দুত্ববাদ ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে। এটা গঙ্গা যামুনি তেহজিবের মানুষরা আগেই উপলদ্ধি করেছেন। এখন এ বোধ অন্যান্য তেহজিবের মানুষরা উপলদ্ধি করছেন। যেমন পেরিয়ার পন্থী , ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী তেহজিবের মানুষেরা , কেরালার সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের মিশ্র তেহজিবের মানুষরা। এমনকি আঞ্চলিকতার সঙ্গে হিন্দুত্বের মিশেল আছে এমন মিশ্র তেহজিবের মহারাষ্ট্রের মানুষরা। তাঁরাও ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের আদর্শ নিম্নবর্গের কৃষক জনতার দখিন জাতীয়তাবাদের কাছে চলে গিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে একজোট হচ্ছেন উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে। সে ক্ষেত্রে বরাবরের বেয়াড়া , কৃষক সত্ত্বার ... ...
বিদ্রোহের সময় শাহাজাদা শাজাহান নানা সুফি সিলসিলা -সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেন যার মধ্যে চিস্তি ছাড়াও নক্সবন্দিরাও ছিলেন। এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়াতে কাদিরি আর সুহরাবর্দি সিলসিলারও ভালোই প্রভাব ছিল। দ্বাদশ শতকে সুফি বিবর্তনের দ্বিতীয় পর্যায়টা তরিকা পর্যায় বলে পরিচিত সেসময়ই নানা সিলসিলার আলাদা হওয়া শুরু হয় প্রথম পর্যায়ে যা খানাকা পর্যায় বলে পরিচিত সেসময় সুফিরা আলাদা সিলসিলার পরিচিতি নিয়ে বিভক্ত ছিল না আদৌ। আরো পর সুফি আন্দোলনের তাইফা পর্যায়ে সুফিরা তো পীর বা সন্ত কেন্দ্রিক জনপ্রিয় ভক্তি আন্দোলনে বিবর্তিত হয়ে যায়। এই অন্তিম পর্যায়ের অনন্য উদাহরণ হলেন সন্ত কবির যিনি সুফিদের ইসলামী পন্থায় সরাসরি ভগবানকে পাওয়ার তারিকাকেও অতিক্রম করে নিজস্ব হিন্দুস্থানী ... ...
কুন্দেরা বলছেন ''কমিউনিজম আমাকে মুগ্ধ করেছিল স্ত্রাভিনস্কির সুরের মতো, পিকাসোর ছবির মতো, সুররিয়ালিজমের মতো। তা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মহান, জাদুকরী রূপান্তরের (মেটামরফোসিস), এক্কেবারে নতুন আর আলাদা এক জগতের।'' বাস্তবের রূঢ় অভিঘাতে কমিউনিস্ট রাষ্ট্রিক পরিবর্তন যখন রূপান্তরের বা মেটামরফোসিসের সমার্থক হল না তখন কাফকার মতো কুন্দেরার টেক্সটও কি পোকা হতে চাওয়ার মেটামরফোসিস প্রতক্ষ্য ... ...
পাদশানামায় শুধু প্রদর্শন, বাদশাহ শাজাহানের প্রদর্শন, মোঘল বীরত্বের প্রদর্শন। রঙের ঝলকানি, অপূর্ব নীল আকাশের তলায় মত্ত হাতি সুধাকরের মুখোমুখি, চোখাচোখি সজোরে শুঁড়ে বর্শা বেঁধানো অকুতোভয় বীর শাহাজাদা ঔরঙ্গজেবের ল্যান্ডস্কেপের বিখ্যাত ছবি আঁকছেন শিল্পী গোবর্ধন। ছবিতে ধোঁয়ার প্রাবল্য, কিশোর ঔরঙ্গজেবের বীরত্বে শাজাহানের সেক্রেড সভরিনিটির মহিমার প্রাবল্য, সুজার বেরাদারির প্রাবল্য, জয় সিংহের রাজপুত বীরত্বর জান কসম করা প্রাবল্য কিন্তু কোথাও ঘোড়াটা নেই। কী দশা হয়েছিল তার?রাজা বাদশাহদের ইতিহাসে ঘোড়ার খোঁজ কি কেউ করবে না? এ জানতে বীরগাথার দেশ রাজস্থানে গেলে জানা যাবে ঘোড়া খুঁজে পাওয়ার ইতিহাস। চেতকের ধারণার নির্মাণ যে এক কল্পনার নির্মাণ এমনটাই বলছেন ইতিহাসকার সিনথিয়া টেলবট। আফগান সেপাইসালার হাকিম খান ... ...