এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • গল্পের টই

    M
    অন্যান্য | ১৫ ডিসেম্বর ২০০৯ | ৯৩৬৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Nina | 66.240.33.37 | ২৭ জানুয়ারি ২০১০ ২২:১৬424352
  • কিকিয়া, গুকার তো এক্ষুণি পেয়ে যাবি---এই থামতে জানার বিটকেল আর্টটা রপ্ত করে ফেলেছিস :(----পাঠককুল কেমন কুলকুল করে ঘামবে যে তাপ্পর , তাপ্পর কি হ--ল
    ( খুব ভাল লিখছিস রে স্যাসে গোবেল পেয়েও যেতে পারিস :-) )
  • M | 59.93.208.238 | ২৮ জানুয়ারি ২০১০ ১৯:০৫424353
  • অর্ক অতীতে ভেসে বেড়াতে থাকে।

    পরের যে দিন টিনার লাখোটিয়া তে ক্লাস শেষ হবার কথা সে পৌছে যায় তার পক্ষীরাজ ভেসপা টু তে চেপে।কিছুক্ষন পর লাল টুকটুকে শোয়েটার আর নীল জিনসে ঠিক এক খুদে বদরীকা পাখির মতো উড়তে উড়তে বেরোয় টিনা।

    আরে তুমি? কার জন্য?

    ম্যাডাম আপনারই জন্য।ভনিতা আসেনা ঠিক করে অর্কর।

    ও আই সি!

    চলো তোমাকে পৌছে দি, দিতে পারি কি?

    সিওর!

    সেন্ট মেরিজ কনভেন্টের মেয়ে।বাংলা বলতে অসুবিধা বোধ করে।

    এমনি করে বাড়ী নিয়ে যাওয়ার ডিউটিটা অর্ক পেয়ে যায়। কিন্তু মজা হচ্ছে, বাড়ীর কিছুটা আগেই তাকে নামিয়ে দিতে হয়।

    একদিন বসন্তের বিকেল।পাগল করে দেওয়া উতল হাওয়ায় টিনার সুন্দর করে ছাঁটা চুল অবিন্যস্ত হয়ে ওকে আরো সুন্দর দেখাচ্ছিলো, আর অর্ক ও মুগ্‌ধ হয়ে দেখছিলো।

    হাই, কি হলো? কিছু বলবে?

    টিনা , আই লাভ ইউ। তুমি হয়তো বুঝতে পারো।তবু বলেও দিলাম।

    মি টু অর্ক, বাট....

    এর মধ্যে কিসের কিন্তু?

    না! কিচ্ছু না। অনেকক্ষন হাত ধরে বসে থাকে দুজনে।

  • M | 59.93.246.60 | ২৮ জানুয়ারি ২০১০ ১৯:১৬424354
  • দিন চলতে থাকে নিজের খেয়ালে আর সময় , খেয়ালি সময়, আরো কাছাকাছি নিয়ে আসে দুটো প্রানকে সৃষ্টির সেই চিরপুরানো খেলাতে মাতিয়ে।

    সরস্বতী পুজার দিন,খুব সুন্দর করে শাড়ী পড়ে আর সেজেগুজে এসেছে টিনা,অর্ককে চমক দিতে।

    দ্যাখো তো, আমায় গডি গডি লাগছে কিনা?

    ফিক করে হেসে ফেলে অর্ক,ওর মনে পরে যায় কিছুদিন আগে ও ঘরে বসে ডেইলি রিপোর্ট লিখছিলো,আর টিনা এসেই খুব হম্বি তম্বি শুরু করলো, একি ! এখন ও বিছানা গোছাও নি, সরো, বলে বিশাল ভারী লেপটা তুলতে গেছিলো, আর কিছুতেই সেটাকে তুলতে পারেনি।

    এই তুমি শাড়ীটার ওয়েট কি করে ক্যারি করছো?

    খুব রেগে যায় টিনা।আমি এলাম মাকে মিথ্যে বলে আর তুমি কিনা--

    আচ্ছা বাবা, চলো , আজ খুব ঘুরবো।

    আরেকদিন,অর্ক টিনাকে বাড়ী পৌছাতে যাচ্ছে, সেদিন রাস্তাটা খুব অন্ধকার।টিনা বলেছিলো চলো না এই অন্ধকারে দুজনে কিছুক্ষন বসে থাকি।খুব বিরক্ত হয়ে অর্ক বলেছিলো, তুমি কি পাগল?

    ভারী রাগ করে চলে যায় টিনা। তারপর বেশ কিছুদিন কথা বলেনি। অর্ককে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেও বাসে উঠে চলে যাচ্ছিলো।

    একদিন অর্ক নিজের দুচাকাকে রাস্তার পাশে রেখে বাসে উঠে পরে,

    নেমে এসো!

    কেন?

    কথা আছে, বলে হাত ধরে জোর করে টেনে নামায়।

    তার মধ্যে আবার একবার অর্ক খুব ভালো একটা চাকরির অফার পায়,আনন্দ করে টিনাকে বলে ও। কেবল ওকে চলে যেতে হবে জলপাইগুড়ি।
  • M | 59.93.246.60 | ২৮ জানুয়ারি ২০১০ ১৯:৩৩424355
  • কেঁদে ভাসায় টিনা।

    অর্ক! আমি কেমন করে থাকবো?

    আমি তোমায় অল্পদিনের মধ্যেই নিয়ে যাবো।

    অর্ক , শোনো তোমায় আমার কিছু বলার আছে।

    আমার বাবার অনেক সম্পত্তি ছিলো, কিন্তু সব তিনি খুইয়ে ছিলেন, আর মারাও যান অল্প বয়সে, আমার এক বোন আছে, জিনা,ও ফিজিকালি হ্যান্ডিক্যাপড।আমরা মামাবাড়ির দয়ায় বড় হয়েছি। কাজেই আমাদের যেকোনো ডিশিসান ওদের জানাতে হয় আগে। ওরা অ্যাপ্রুভড করলে তবে তা কার্য্যকরি হয়। আর আমি এটা একদম পছন্দ করিনা। আমি প্রানপন চেষ্টা করি নিজের আয় বাড়াতে যাতে ওদের দয়া আর না নিতে হয়।আমার উপার্জন খুব জরুরী আমার পরিবারের জন্য।

    টিনা, তোমার উপার্জনে আমি কক্ষন ও হাত দেবো না, তুমি যা খুশি করতে পারো।আর আমি সংসার চালানোর ক্ষমতায় এসেই তোমাকে আপনাবো।

    আমি কখন ও শিলিগুড়ি ছেড়ে যেতে পারবোনা অর্ক!

    অর্ক অত ভালো অফারটা ছেড়ে দেয়।

    তিস্তা নদী দিয়ে আরো অনেক জল বয়ে যায়।

    ক্রমশ: টিনার আচরন পাল্টাচ্ছে।

    অর্ক! আমার কোনো প্রাইভেট ফার্মে কাজ করা ছেলেকে বিয়ে করা সম্ভব নয়।

    কিন্তু তুমি তো জানতে টিনা।টিনা কাঁদতে থাকে।

    মাথায় আগুন জ্বলে ওঠে অর্কর। টিনা আমি তোমার বাড়ী যাবো। তোমার মাকে বোঝাবো।

    টিনার বাড়ী যায় অর্ক। কিন্তু নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়, টিনার মা বলে দেখো বাবা আমরা ওর বাবা মারা যাবার সময় ওনার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছি কোনো গভর্মেন্ট সার্ভিস চাকুরের সাথেই ওর বিয়ে দেবো।এমন বোকা বোকা সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করতে জানেনা অর্ক।আর তার ভারী ইগোতেও লাগে।শুধু মাত্র প্রাইভেট চাকরির জন্য তাকে এভাবে বলা হলো।এর আগে ওর মা এসে টিনাকে দেখে গেছেন। তখন ও টিনা এসব কিছু বলেনি। আজ হঠাৎ ওর এমন মনে হলো কেন, এসব ভাবনায় পাগল হয়ে যায় ও।
  • M | 59.93.246.60 | ২৮ জানুয়ারি ২০১০ ২০:১১424356
  • এদিকে বাড়ীওয়ালাও লক্ষ্য করেন, অর্কর মাকে সবই জানান।আর ওর মা ও তখন অর্ককে পরিস্কার জিজ্ঞাসা করেন তবে কি আমি তোমার জন্য সম্বন্ধ দেখবো?

    আর তারপর তুমি এলে।

    তুমি আর তার সঙ্গে যোগাযোগ করোনি?

    দেখো রেগোনা কিন্তু, আমাদের বিয়েতো দেখাশোনার অনেক পরে হলো, ডেট ঠিক হবার পর, সেদিন ছাব্বিশে ডিসেম্বর , আমি গেছিলাম দেখা করতে, খুব জ্বলন হচ্ছিলো আমার। আর একদিন ওর একটা কানের দুল হারিয়ে গেছিলো, আমার সাথে ঘুরতে ঘুরতে আমি অন্যটা চেয়ে ছিলাম, দেয় নি। সেটাও চাইতে গেছিলাম।

    গিয়ে দেখি তিনি বাড়ীতে একা, মা নেই, তাই পুজার জোগাড় করছে। আমায় কফি করে খাওয়ালো।

    উলস! আমিও ভালোবাসি, আমায় কেউ কফি দিলে আমি তার প্রেমে পড়ে যাই।

    খবরদার! বিয়ের সময় যে যে ভুলভাল কথাগুলো তোমার পুরুত ঠাকুর বলছিলেন তার মধ্যে একটা প্রতিজ্ঞা ছিলো , সেটা হলো এখন তুমি আমার ছাড়া আর কারোর প্রেমে পরতে পারবে না।

    হুম, তো শুধুই কফি খেয়েছিলে?

    মানে? ভারী পাজি কিন্তু তুমি।

    দেখি তিনি সর্দি লাগিয়েছে।আমি তো ওষুধের লোক, দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনে আনলাম, আর তোমার নামে বিশাল বিশাল গুন গাইলাম।বললাম যার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে সে তোমার থেকে হাজার গুনে গুনী।একবার ও বলিনি তুমি কখন চোখ খোলো আর কখন বোজো বোঝা যায় না।

    শ্রী মনে মনে ভাবে ছেলেগুলোকি সব্বাই এত অভিমানি আর ইম্ম্যাচিওরড হয়?

    একি রাগ করলে নাতো, তুমি ভারী ভালো হয়ে গেছো তো।

    কেন, রাগ করার কি হলো?
    ও ! আমার চোখ ছোট বললে বলে।
    ধুস্‌স্‌স, এটাতো সত্যি কথা।

    আমি সেই দুলটা চাইলাম, আর ও বললো না ওটা আমি আমার বিয়েতে সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে পড়বো।। আর একটা অদ্ভুত কথা বললো জানো, তুমি তো আমার জন্য অপেক্ষা করতে পারতে!

    ও অর্ক! অর্ক!
    তুমি কি মস্ত ভুল করেছো তুমি নিজেও জানোনা। সেযে তোমায় অনেক কিছু বোঝাতে চেয়েছিলো, তুমি কি একটি বার ও তার চোখের দিকে চেয়েছিলে, তোমরা কি চিরকাল মেয়েদের এভাবেই কষ্ট দাও! এত ইগো তোমাদের? তুমি একটিবার ও বুঝলে না সংসার তার ভালোবাসা কেড়ে নিলো আর তুমি সেই কঠিন সময় তাকে সাথ দিলে না।

    অজানা অচেনা মেয়েটার কষ্টে ভেঙ্গে যেতে থাকে শ্রী।

    অর্ক কষ্ট ভরা দুচোখ তুলে তাকায় শ্রীর দিকে, শ্রী আমার অপমান, আমার কষ্ট তুমি বুঝলেনা।

    পুর্ন দৃষ্টিতে দেখে শ্রী, এক ভারী অভিমানি অবুঝ মানুষ।

    আমি জানি আমায় কেউ ভালোবাসবে না, তাই না শ্রী?কিছু তো বলো।

    কি অসহায় হয় পুরুষমানুষ ।

    এই প্রথম ছেলেটাকে ভারী আপন মনে হয় শ্রী এর।

    অর্ক আরো কিছু বলতে যায়, হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে শ্রী,

    ফর গড সেক অর্ক, হোল্ড ইয়োর টাঙ এন্ড লেট মি লাভ।

    দোহাই তোদের একটুকু চুপ কর, ভালোবাসিবারে দে আমারে অবসর।

  • M | 59.93.219.42 | ২৮ জানুয়ারি ২০১০ ২১:৩৩424357
  • শেক, টাঙ্গ, ধুস্‌স্‌স্‌স ,কি বিচ্ছিরি শোনাচ্ছে।
  • Nina | 66.240.33.40 | ২৯ জানুয়ারি ২০১০ ০২:০৬424358
  • জ্জিয়ো ও ও কিকিয়া! অর্ক জানে তার বৌ ভাগ্য কি সলিড ভালো?
    ও হ্যাঁ, হি হি কিচ্ছু বিচ্ছিরি শোনাচ্ছে না তো--এগোবি নাকি ---:)
  • M | 59.93.207.109 | ২৯ জানুয়ারি ২০১০ ০৯:৩৪424359
  • ইয়াপ!

    এর পর কুরুক্ষেত্র তো বাকী:P

    আর হালার লোকজন তো কয় শ্রী এর বর ভাগ্য নাকি ইয়ে টাইপের ভালো।:X
  • M | 59.93.246.243 | ২৯ জানুয়ারি ২০১০ ২২:৩৬424360
  • এরপর আর কি! যেমন হয়,
    কলাকাতায় ফিরে আসা। সংসারে ভাজা পোড়া হতে থাকে সব কটি ফ্যামিলি মেম্বার, একটা কুঁচো অ্যাড হয়েছে, সেটার জ্বালা আরো বেশী, মায়ের যত রাগ ঝাল তারই উপর, অবোধটা কথা বলতেও শেখেনি, আচমকা মার খেয়ে ভয়ের চোটে হিসি করে ফেলে, যেকোন কিছুতেই ভয় পেতে শুরু করে।

    অর্ক বাড়ী ফিরে ব্যাগ রেখে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কেক বা কিছু খেয়ে আড্ডা দিতে চলে যায়। ফেরে রাত দুটো আড়াইটে তে।

    দিনগুলো ক্রমশ: কঠিন থেকে কঠিনতরো হয়ে উঠছে, বাড়ীর লোকেরা আচমকা আত্মীয়দের ডেকে হুমকি দিচ্ছে, এরা বাড়ীর লোভে আছে, এদের তাড়াও।

    অর্ক হঠাৎ নিজের লোকেদের এরকম বদলে যাওয়াতে অবাক, আর কিছুতেই কলকাতার ওয়ার্ককালচারে ও নিজেকে মেলাতে পারে না।এখানে প্রায় চব্বিশ ঘন্টা কাজ করেও ম্যানেজারকে সন্তুষ্ট করা যায় না।এই জবে এত প্রেসার ক্রিয়েট করা হয় যে ওদের একটি বন্ধু এক মিটিং এ গিয়ে আত্মহত্যা করে হোটেলের ঘরে।

    তাও কিছু বদলায় না। আর রাজনীতি সচেতন কলকাতার মানুষ সবেতেই নোংরা রাজনীতি ঢোকাতে পছন্দ করে। ফলে ক্রমশ: খারাপ থেকে খারাপতর হয়ে উঠছিলো অবস্থা।

    এই সময় দেবদুতের মতোন আবির্ভুত হন মি: তুষার মুখার্জী, অর্কর এক দুরসম্পর্কীয় মামা এবং ফার্মার এক গুরুত্বপুর্ন ব্যক্তিত্ব।

    এনার অবদান অর্কর জীবনে অনেক, প্রথম চাকরি তার এর কোম্পানিতেই,তখন অর্কর বাবা মারা গেছেন সদ্য, সমস্ত পরিবার ওর মুখের দিকে তাকিয়ে, যদিও চাকরি সে নিজের ক্ষমতায় ই পেয়েছিলো তবুও ফার্মা ইন্ডাস্ট্রি তাকে মামার ভাগ্নে বলেই চেনে।
    ভাগ্যের এক অদ্ভুত পরিহাস।

    তিনি একটি আশিয়ান দেশে কাϾট্র ম্যানেজার হিসাবে আছেন।অর্ককে তিনি একটি কোম্পানির কাϾট্র ম্যানেজার হিসাবে নিয়ে যেতে চান।

    অর্ক মুক্তি খুঁজছিলো।রাত্রে শ্রীকে বলে, বুঝলি পাগলি, আমি যাই, এখানে আমি টিকতে পারছি না, একটু গুছিয়েই তোকে নিয়ে যাবো।

    মামও এলেন, এসে বললেন, শ্রী, চিন্তা করোনা। পরের বছর তোমাকে আর তোমার বেবিকে আমি নিয়ে যাবো। কথা দিলাম।
  • M | 59.93.246.243 | ২৯ জানুয়ারি ২০১০ ২২:৪৯424362
  • অর্ক চলে গেছে,দিনগুলো আরো দু:সহ, বাচ্চা মোটে বছর তিনেকের , বোঝাতে পারছেনা, খালি অসুস্থ হয়ে পড়ছে, যোগাযোগ বলতে রবিরার মিনিট দুই তিনের জন্য অর্কর ফোন,বাড়ীতে অশেষ গঞ্জনা , দেখো কেমন অলুক্ষুনে মেয়ে, একটু চোখে জল নেই, যেন চোখের জলে ভাসলেই কেবল দু:খ টাকে বোঝা যায়, পাড়ার লোকেদের ও মজার শেষ নেই, অদ্ভুত খোরাক,এ মেয়েটা কেমন,বর একে কাছে রাখতেই চায় না। নির্লজ্জ প্রতিবেশীনীরা আরো একধাপ এগিয়ে, তোমাদের মধ্যে সম্পর্ক মানে বুঝতে পারছো তো আমি কি বলছি, ঠিক ঠাক হয়নি না? পুরুষমানুষ কিন্তু যাই বলো বাপু, শরীর দিয়ে আটকাতেই হয়, তোমার চেহারার যা ছিরি, কি দেখে যে তোমাকে নিয়ে আসা হলো,ওদিকে অর্কর মা ভারী দু:খী মুখে বলে, আর বোলোনা দিদি।খুব অবাক হয় শ্রী, এরা তার মায়ের মতোন আর এদের মুখে কিছুই কি আটকায় না?আর অবোধটার উপর অত্যাচার আরো বেড়ে যায়, মরে যা তুই! তোর জন্য আমার যত বাঁধন। অবাক হয়ে চেয়ে থাকে সে। তারপর বুকে টেনে নিয়ে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকে শ্রী।

    একটা বছর যেন একশো বছরের থেকেও বেশী সময় নেয় সেই বার।

    অর্ক এলো আর জুলাইতে নিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেলো।

    নতুন বছর শুরু হচ্ছে, রাত তখন সাড়ে দশ, অন্য দেশে নতুন বছর এসে গেলো, ফোন বেজে উঠলো।জড়ানো গলায় ফোন, শ্রী, পাগলি, আমি আমার টার্গেট সময়ের আগেই শেষ করেছি, মাত্র কটা দিন ডার্লিং , তোকে আর জুনিয়রকে নিয়ে আসবো।বলতে বলতে কেঁদে ভাসায় অর্ক।
  • Nina | 66.240.33.43 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ০২:৫২424363
  • ও কিকিয়া, আমিও কাঁদলুম রে অর্ক আর শ্রীর জন্য, আর কচিটার জন্য কি কষ্ট যে হচ্ছে কি বলি---আহারে! মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু হয়, আমার দিদু বলতেন।
    ব্যাস ব্যাস এবার ভাল দিনগুলো লেখ ভাল করে।
  • M | 59.93.255.187 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ০৮:১২424364
  • দিদিয়া,
    খুব একটা ভালো দিন পকেটে তো নাই, কিন্তু তুমি একাই পড়ছো, তোমাকে কি থ্যাঙ্কু দেবো? দিদিয়া কিনা, কান মোলা খাওয়ার ভয়ে বলতে পাচ্ছিনা।
  • M | 59.93.255.187 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ০৮:২৯424365
  • এদিকে কোম্পানির সাথে গন্ডোগোল শুরু হলো। আসলে এই কোম্পানি নতুন ছিলো, এই আশিয়ান কাϾট্র খুব ব্যবসার জন্য ভালো জায়গা মনে হয়েছিলো মি: তুষারের, তিনি নিজে যেহেতু একটি কোম্পানির কাϾট্র ম্যানেজার তাই তাঁর বউয়ের নামে একটি নতুন কোম্পানি খোলেন, আর তাতেই অর্ক অ্যাপয়েন্টেড হয় অ্যাজ এ কাϾট্র ম্যানেজার।আহা কি বিশাল একখান পদ।আসলে মি: তুষারের ও খুব একটা দোষ ছিলো না। তিনি মানুষটা ভারী উপকারী ধরনের। তিনি ভেবেছিলেন একটা সামান্য রিপ্রেজেন্টেটিভ কে বিদেশ নিয়ে এলেন , তাকে তার কোম্পানির সর্বে সর্বা করে দিলেন, কাজেই এদের তো তাঁর পায়ে লুটিয়ে থাকা উচিত।

    অর্কর কাজের জিনিস বলতে একটা ডিটলিং ব্যাগ , একটা ফাইল দিয়ে বাজারে ছেড়ে দেওয়া হলো। যাও চড়ে খাও। নতুন মার্কেটে কি করতে হবে সেই নিয়ে একদিন লেকচার ও দেওয়া হয়েছিলো। ব্যাস।আর মজার ব্যাপার হলো, মি: তুষারের মিসেস, যিনি নাকি কোম্পানির ডিরেক্টর, তিনি স্বাভাবিক ভাবেই ডিরেক্টরি করতে শুরু করেন।ফার্মার কিছু না জেনেও তিনি নানান নির্দেশ দিতে থাকেন।আফটার অল ডিরেক্টর বলে কথা।

    আসলে প্রায় একলাখ টাকা খরচ করে অর্ককে আনা হয়েছিলো। এটা তুলতেও হবে, আবার কোম্পানি দাঁড় করাবার জন্য এক বিশ্বাসী চাকর দরকার ছিলো ওদের।কারন যতদিন কোম্পানি না দাঁড়াচ্ছে ততদিন তো মি: তুষার তাঁর নিজের চাকরিটা ছাড়তে পারছেন না।

    অর্ককে প্রত্যেক মাসে থাকা , খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিলো, সাথে হাত খরচ তিনশো ডলার। বিশাল ব্যাপার। ডলার কোনোদিন চোখে দেখেছো , অর্ক?কাজেই খেটে চলো। বিশাল টার্গেট ধরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। এটা করো তবে তোমার বউ ছেলেকে আনা যাবে, জানোতো এখানকার পড়াশুনা কত খরচ সাপেক্ষ। ঐ পয়সা দেবে কে?
  • M | 59.93.255.187 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ০৮:৪০424366
  • তবুও অর্ক হাল ছাড়ে না।এক ভালো দিনের আশায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই তার টার্গেট এর থেকে বেশী কাজ এগিয়ে নিয়ে যায়।

    এর মধ্যে অর্কর এক পার্সোনাল সেকরেটারি দেওয়া হয়। কারন এখানে কাজ করতে হলে এদের ভাষা জানা লোক ছাড়া কাজ অসম্ভব।অর্ক কলেজ থেকে সদ্য বেড়ানো জ্যাঙকে নিয়ে আসে আর তাকে ঘষে মেজে তৈরী করে, একটা ওদেশীয় লোককে অর্ককে দিয়ে তৈরী করেও নেওয়া হয়ে গেলো।

    মামা এবার তো আমি শ্রীদের আনতে পারি?

    তোমার সাথে কথা আছে অর্ক।

    তিনজন মিলে মিটিং হলো।

    দ্যাখো অর্ক তোমার কাজে আমি বা তোমার মামী কেউ ই সন্তুষ্ট নই,

    কিন্তু মামা আমি তো আমার টার্গেট---

    তাতে কি? তুমি ডিরেক্টরের কথা একদম শোনোনা, আমাদের কোম্পানির অন্য উইংগসগুলো তুমি বাড়াতে পারোনি,

    কিন্তু আমি তো, তুমি জানো, ফার্মার লোক। তুমি তো সেই হিসেবেই আমায় এনেছিলে। আর যেখানে আমি ডিরেক্টরের কথার বিরোধিতা করেছি সেখানে উনি ভুল বলছিলেন, তাই।

    অর্ক! ও আমার বউ, আমার সাথে এতদিন ঘর করছে,ওকে তুমি এভাবে বলোনা। ওর একসপেরিয়েন্স অনেক বেশী। অর্ক হাসবে না কাঁদবে ভেবে পায় না।

    আমরা ঠিক করেছি তোমাকে আর রাখবো না।তুমি দেশে ফিরে যাও।তোমার লাভের যে চল্লিশ হাজার প্রাপ্য তা আমি তোমায় দিয়ে দেবো। আর চাও তো আমি কাউকে বলে দেবো , তুমি যে জব করতে তা আবার গিয়ে পেতে পারো।
  • til | 220.253.71.161 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ০৮:৫১424367
  • দেখে গেলাম, চেখে গেলাম সব পাতার একটু আধটু। পরে সময় করে জমিয়ে পড়তে হবে, তোলা রইল।
    ধন্যবাদ নিনা, এই রত্নখনির সন্ধান দেবার জন্যে। "স্যারীয় থ্রেট, কিলিকিজি" এসব দেখে মনে হচ্ছে, ইহারে চিনি।
  • M | 59.93.255.187 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ০৯:০৫424368
  • অর্কর তো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়।আরে, ফিরে গিয়ে তো ও জানে চাকরি পাওয়া অসম্ভব।এই ফার্মা চেন খুব ভালো নজর রাখে মার্কেটের দিকে। তাকে ফিরে গেলে নিচু পোষ্টেই ঢুকতে হবে।তাতে হাজারো কইফিয়ত। সবাই হাসা হাসি তো করবেই, আর এত চাপ দেবে যে সে টিকতে পারবে না।হাতে কোনো পয়সা নেই যে সে ফিরে কোনো ব্যবসা শুরু করতে পারে।আর পয়সা জমবে কোথা থেকে? এই দেশে খুব খরচ সাপেক্ষ জীবনযাত্রা।ঐ তিনশো ডলার থাকে নাকি?এখন শুধু ওর পকেটে ফেরার টিকেট আছে যেটার ভ্যালিডিটি এখন ও পাঁচ , সাত মাস। ওপেন টিকেট। আর তিনশো ডলার।

    কি ভাবছো? আমি তো বলছি তোমার একটা ব্যবস্থা ওখানে করে দেবো। বিরাট মনের মানুষ মি: তুষার বললেন।

    একটা গল্প সবাই জানো বোধহয়, সিম্বা দ্য শর্মিলি শের।

    সেই লম্বা সারস পাখি ভুল করে সিম্বা দ্য শর্মিলি শের কে ওর মায়ের কাছে না দিয়ে একপাল ভেড়ার মাঝে একজনের কোলের কাছে দিয়ে যায়।

    সেই মায়ের কাছেই বড় হয় সিম্বা।আর খুব লাজুক ছিলো সে, কারন সে অন্যরকম আর বাচ্চাদের থেকে। সবাই ওকে হ্যাটা দিতো খুব করে।আর ও ওর নিজের পরিচয় জানতো না তাই চুপ করেই থাকতো, ভাবতো ওর বোধহয় লজ্জা পাওয়া উচিত।

    একদিন সেই ভেড়ার পালে নেকড়ের আক্রমন হয়। সিম্বাও ভয়ে পালাচ্ছিলো, হঠাৎ দেখে ওর মাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে নেকড়ে আর ওর ভিতরের সুপ্ত সিংহটা জেগে ওঠে।গর্জন করে ওঠে।

    গর্জন করে ওঠে অর্ক। ঠিক আছে। আমায় আর তোমায় রাখতে হবে না। তবে আমি কি করবো তুমি ঠিক করতে পারো না। সেটা আমি দেখবো। খালি আমার টাকাটা শ্রী কে পৌছানোর ব্যবস্থা করো। ওর দরকার।

    ও ! তাই নাকি? আমার ভাড়া করা এই অফিস বাড়ীতে তুমি থাকো। যত তাড়াতাড়ি পারো এখান থেকে বিদায় হবে।মুখোশ খুলে যায় মানুষটার।
  • Nina | 76.124.208.223 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ০৯:২৯424369
  • কিকিয়া, সব্বাই পড়ে রে---তুই না লিখলেই সবাই তাড়া মারে--
    বড় ছোট বয়সে অর্ক আর শ্রী দুনিয়টার কদর্য্য রূপটা পুরা দেখে নিল---কিন্তু যার কেউ নেই তার ভগবান আছে -----hard and honest work never goes in vain!!
  • de | 117.98.133.163 | ৩০ জানুয়ারি ২০১০ ১৩:২৫424370
  • বম্ম,
    এই জায়গায় থেমো না প্লীজ! খুব ভাল্লাগছে পড়তে :), আর ভাটে তোমায় মার্কার পেন কিনতে বলেছি, কিনেছো কি?
  • Nita | 74.232.11.29 | ৩১ জানুয়ারি ২০১০ ০৩:১৫424371
  • ভীষন ভালো লাগছে
  • til | 220.253.71.161 | ৩১ জানুয়ারি ২০১০ ০৩:৪৬424373
  • অর্ক বেশ দিল কিন্তু, তুষারকে তুমি বলে। অ্যায়ম উইথ ইউ অর্ক।
    তো এম, থেমে গেলেন কেন, আজ তো রোববার, ঘুম থেকে উঠে এক কাপ কফি খেয়ে লিখতে বসুন- আপনার কি কড়া পছন্দ? তাহলে এক মগ ভিত্তোরিয়া (Vittoria) প্লাঞ্জার কফি বানিয়ে দিই, কেমন! আহা , প্লাঞ্জার দিয়ে ইঞ্জেকশানের মত চাপ দিলে কফির হৃদয় নিংড়ে ফ্লেভারটা বেরিয়ে আসে, আহ!
    তো এই নিন এমদিদিমণি, শুরু করুন এবার। আমরা গলায় আঁচল দিয়ে কথা শুনবার জন্যে রেডি। একটা অনুরোধ, অক্ষর থেকে শব্দ হোন, প্লীজ , এই এম (M) বলে সম্বোধন বড্ড কষ্ট সাপেক্ষ। স
    অরি, আপনার টই এর পাতার অনেকটা জায়গা নষ্ট করে ফেললাম, আপনার পাঠকগণ আমায় কিল চড় দিল বলে!
  • ranjan roy | 115.184.44.253 | ৩১ জানুয়ারি ২০১০ ১০:২৬424374
  • বড়মা,
    আমার মত অনেকেই রেগুলার পড়ছে। খালি নিয়মিত হুঁ-কার দেবার কাজটা নিনা করছেন। কাজেই বেশি অপেক্ষা করিও না।
  • M | 59.93.244.58 | ৩১ জানুয়ারি ২০১০ ১০:৩৪424375
  • দে,
    এই সবে গুরু খুললাম, ভাট রাত্রে পড়বো, কারন এখন বইমেলা যাবার তাড়া।

    তিল,
    অর্কর মামা তো, তুমি ই তো বলতো।ঝামেলা নাই তো।

    বাকি সক্কলকে থ্যাঙ্কু,বুড়ো বয়সে এট্টু ইম্পর্টান্স ক্রেজি হয়ে যাচ্ছি।:P
  • til | 220.253.71.161 | ৩১ জানুয়ারি ২০১০ ১৫:৩৯424376
  • যাউকগা!
  • M | 59.93.163.164 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৮:৫৯424377
  • তা জেমস ই বা তিল কেন?

    আর আমি এখন ফিল্টার শুনে নেসকাফে খাচ্চি, কি দু:খ।

    কিচু রত্নরাজি নাকি রাশি যাইহোক, এই টইতে বর্ষাতে তো পারেন মহাই।
  • M | 59.93.163.164 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৯:০১424378
  • এরপর যে পর্ব শুরু হয় তাকেই বোধহয় জীবন যুদ্ধ কয়।
  • M | 59.93.163.164 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৯:১৭424379
  • অর্ক এক সপ্তাহের মধ্যে বাড়ী ছেড়ে চলে আসে, নিজের লাগেজ যা ছিলো,খুবই কম তা, নিয়ে এক বন্ধুর বাড়ী রেখে দেয়, সে বেচারী আবার রুম ফর রেন্টে থাকে, একটা মাত্র ঘর আর টয়লেট, কারোর সাথে শেয়ার করা বাস্তবিক ই অসম্ভব।তার উপর সে যেহেতু ঘটনা টা জানে, কাজেই ঘারে এসে পরার একটু ভয় ও পায়।এমনকি অর্কর ব্যবহারের মোবাইলটাও নিয়ে নেওয়া হয় যেহেতু সেটা অফিসের দেওয়া, বেচারী পকেটে সিম কার্ড নিয়ে পাগলের মতো ঘুরতে থাকে, কখন ও নদীর ধার তো কখন ও কোনো পার্ক।উদ্দেশ্যহীন,সহায় সম্বল্‌হীন মানুষ এক। কেবল একরাশ অভিমান আর অনেক জেদ সঙ্গে করে।

    ফিরে যাবো? না না, গিয়ে কি করবো? না যদি অটো ও চালানো যায়, না, আর তা হয়না।তাছাড়া আমায় মিথ্যে বদনাম দেওয়া হয়েছে, আমায় নিজেকে সঠিক প্রমান করতেই হবে।বাবাকে দেখেছি আমি,কিভাবে আস্তে আস্তে অত গুনী মানুষটা নিজেকে ফুরিয়ে ফেলেছিলেন।অভাব থাকলে সংসারের আর একটা রূপ দেখা যায় যেটা অর্ক জীবন দিয়ে দেখেছে।

    অর্ক ঠিক করে ফিরবে না।আর সে যতটা সম্ভব তা শ্রীকে জানায়, এই বিপদে একমাত্র যাকে ভরসা করা যায়।কিন্তু হায়! শ্রীও অর্কর প্রতি বিশ্বাস রাখতে পারেনা।দুর্বল মানসিক কাঠামো শ্রী এর।শক্ত হয়ে ঝড় সইতে পারছিলোনা সে। একদিকে শ্বশুরবাড়ীর চাপ,আরেকদিকে বাবা মার অবুঝপনা, আরেকদিকে একটা কচি প্রানকে সামলানো,কোনোদিন যাকে কুটো ভেঙ্গে দুটো করতে হয়নি তার এত ঝড়ে সোজা থাকার কথা ও নয়।

  • M | 59.93.163.164 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৯:৩৮424380
  • এখন ও ছমাস আমার ফেরার টিকেটের ভ্যালিডিটি, আর তিনশো ডলার আছে পকেটে , চলো দেখাই যাক।

    নদীর ধারে বসে রাত কাটানোর সময় ভাবে সেই চিরকালের একলা পথিক,প্রয়োজনে যাকে কেউ ই সাথ দেয় না।এমনকি সেই চিরসাথী যার হবার কথা সেও অবুঝের মতো ভুল বোঝে , ভাবে বুঝি তাকে ছেড়ে যেতে চায় অর্ক, এত সাহস! আমিও দেখাতে পারি। ভুল রাস্তায় চলে সেই জেদী বোকা মেয়েটা।

    অর্ক জ্যাঙের সাথে যোগাযোগ করে।এই দেশটা একটি কম্যুনিষ্ট দেশ।আইনের নানান ঘোর প্যাঁচ এখানে। ব্যবসা করতে হলে তোমাকে এখানে একজন দেশীয় পার্টনার রাখতে হবে আর তাকেই সব কিছুর মালিক বলে স্বীকার করতে হবে। অথবা অন্য দেশে কোম্পানি বানিয়ে যেমন কম্বোডিয়া বা সিঙ্গাপুরে, তারপর তুমি এদেশে বসে কাজ করো।

    জ্যাঙকে কলেজ থেকে বেরোনোর পর নিজের হাতে তৈরী করেছে অর্ক। জ্যাঙ তুমি নিজের ব্যবসা করতে চাও? তোমার পয়সা আর মালিকানা আর আমার অভিজ্ঞতা, এই দুইয়ে মিলে আমরা শুরু করতে পারি।

    এর মধ্যে আরেকখেলা শুরু হয়েছে। মি: অ্যান্ড মিসেস তুষার কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না যে অর্ক এখানে মাথা সোজা করে থেকে যাবে। ছোট্ট জায়গা , ছোট্ট ইন্ডিয়ান কম্যুনিটি, সবাই সবার হাঁড়ির খবর রাখে, আর যেহেতু বেশীরভাগ মানুষের এই দেশে অঢেল সময়, কারন কাজের চাপ থাকেনা, এদেশে মেড রাখা যায় যে কিনা এমনকি কাপড় জামা শুকিয়ে আইরন করে আলমারিতে গুছিয়ে দেয় পর্যন্ত্য,কাজেই লোকের একটাই কাজ সমাজ বদ্ধ জীব হিসাবে নিজেকে প্রমান করা আর তার মুল কাজ হলো নানা রকম গসীপ তৈরী করা নিজেদের আমোদ দেবার জন্য।কাজেই এই ছেলে থেকে গেলে নানারকম অসুবিধা হতে পারে। তাই তারা অর্কর বদনাম দেওয়া শুরু করে।
  • M | 59.93.163.164 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২০:০৫424381
  • শুরু হয় স্পেশালী বাঙালীদের পার্টি, সবেতেই সবাই আসছে, শুধু অর্ক বাদ। সবাই মিলে তাতে আলোচনা করছে, এইতো দ্যাখো দেশ থেকে আত্মীয় স্বজন নিয়ে আসার পর কি দুর্গতি হয়। নিজের মতোন করে রাখা হলো, কি করতে পারতিস নিজের ক্ষমতায় , আর এসে বছর না ঘুরতেই বেইমানী করলো।

    মজা হলো কি বেইমানী করলো, আর তা কিভাবে সম্ভব তা ব্রেনলেস আর ওয়ার্থলেস লোকগুলো বুদ্ধি দিয়ে কখন ও ভাবলো না। উল্টে এই ঘিন ঘিনে জাতটা তার নখ দাঁত বার করে ফেললো।

    এক খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাড়ীতে তখন অর্ক শেয়ারে থাকছে, সত্যি বন্ধু ও কিছু পাওয়া যায়। ইনি ও সেইরকম ই একজন।যদিও তার শেয়ারের পয়সা দিয়েই অর্ক ছিলো, তবুও সেই দুর্দিনে একঘরে করে দেওয়া মানুষটাকে তো ঠাঁই দেবার হিম্মত রেখেছিলেন তিনি।

    ঠিক তার উল্টো দিকের বাড়ীর লোকেরা , তারাও বাঙালী, সমস্ত বাঙালীকে ডেকে পার্টি দিলো, কেবল মাত্র অর্ক বাদ। তবে সেই বন্ধুটি গেলেও ফিরে আসেন খাবার সময়, না! আমার বাড়ীতে অর্ক আছে, আমি ওর সাথেই খাওয়া দাওয়া করবো।

    আরেক বন্ধু বেরিয়ে এসে হাত চাটতে চাটতে অর্ককে বলে যায় যে আজকের মেনু খুব ভালো ছিলো জানো। কতখানি নোংরা মন নিয়ে এই এক্সপ্যাটরা থাকে তা পরিস্থিতির সম্মুখিন না হলে বুঝি বোঝা যায় না। ঘেন্নায় মুখ ঘুরিয়ে নেয় অর্ক।

    কত পড়াশুনা করা, আর কত ভদ্র ঘর থেকে এই এক্সপ্যাট তৈরী হয়। আর এই স্বার্থপর কীট গুলো নিজের কেরিয়ার আর নিজের গন্ডির বাইরে সব কিছুতেই এরা ফান খোঁজে। অবশ্য এদের প্রচুর পড়াশুনা থাকে, হলিউড, প্যারীর ফ্যাশন নিয়ে, আর যেসব বই পড়ে মানুষকে চমকানো যায়, অথচ অনুভব বস্তুটার বড় অমিল এখানে।ভাবনার গভীরতার বড় অভাব।

    কিছু পুঁথি পড়ে জীবন কি শেখা মুর্খ মানুষ দু:সাহসীর মতো রাস্তায় ঘুরে জীবন কি শেখা অর্কর বিচার করতে বসে, এর চেয়ে বড় আয়রনি আর কি হতে পারে!
  • til | 220.253.71.161 | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২১:২৮424382
  • এক সঙ্গে তিন তিনটে ইনস্টলমেন্ট পেলাম, তবু ভরিল না চিত্ত।
  • Nina | 66.240.33.34 | ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০০:৫০424384
  • নি:শ্বাস বন্ধ করে বসে রইলাম, কিকিয়া-----
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন