এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • গল্পের টই

    M
    অন্যান্য | ১৫ ডিসেম্বর ২০০৯ | ৯২৪৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • M | 59.93.174.10 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:০২424452
  • তিল,
    খুব চলবে।দৌড়াবে।
  • M | 59.93.174.10 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:২৪424453
  • ল্যামি নাকি সকালে লিখবে?

    গেলো কোথায় ছেলেটা?
  • Lama | 203.99.212.53 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৪:৫০424454
  • মিটিং-এ আছি
  • til | 220.253.71.161 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৫:৪৬424455
  • তিলের নাড়ু (১)

    বুক ঢিব, ঢিব

    বহু বছর আগের কথা। ১৫ নম্বর ট্রামে উঠতাম সকালে অফিস যাবার পথে। ডেলি প্যাসেঞ্জার শিয়ালদহ থেকে। একই সময়ে রোজ, ট্রেন লেট না হলে। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ।
    মেয়েটি কোথা থেকে যেন আসতো। এখনও মুখটা ভেসে আসে, সুইট আর শরীরটা যেন এক বস্তা পেঁজা তুলো, নরম , মখমল। অন্তত তাই ই মনে হতো বিনা স্পর্শ করেও।
    সীট পেয়েও বসতাম না, হুঁ, চোখ দিয়ে গিলতাম! শিয়ালদার মোড় থেকে কলেজস্ট্রীট অবধি, ১০/১২ মিনিটেই ফিল্ম শেষ।
    আমি তখন প্রায় বেকার, সবে ইঞ্জিনীয়ারিং পাশ করেছি, ইয়েস তখন চাকরী পাওয়া যেত কেবল ইন্টারভিউ বোর্ডের চেয়ারম্যানের মৃত পুত্রের মতো দেখতে হলে! ভয়াবহ রিসেশান। কোন ক্রমে একটা ট্রেনিং করি, তাও এক বছরের মেয়াদ। মাথার ওপর বিরাট সংসারের চাপ।
    মেয়েটিকে দেখতামই শুধু। নাহ, সাহসই হয়নি কথা বলার, তখনকার দিন তো।
    নামতে ইচ্ছে করতো পিছন পিছন; ঐ পর্য্যন্ত, ব্যস।
    দি এন্ড ।
    --
    এত বছর বাদে কোথায় আছে, কে জানে। অবশ্যই দিদুমা হয়ে গেছে বেঁচে থাকলে। আমার কাছে কিন্তু সেই দিনগুলোর মতই, এক বস্তা পেঁজা তুলো।

    --------------------------
    বিগ M,
    চলবে?

  • Lama | 203.99.212.54 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৭:০১424456
  • তিলের নাড়ু অতি স্বাদু
  • M | 59.93.202.232 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৯:২৭424457
  • তিল,
    স্বাদু আর সাধু, চলবে না মানে?
    এত দৌড়াচ্ছে,আরো কই?

    আর এই যো লামা মিটিন শেষ করে লেখো দিকি।
  • Nina | 76.124.208.223 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৯:৩৬424458
  • আহা, সকাল সকাল কি দারুণ তিলের নাড়ু পেলাম!! আরও চাই।

    লামা, বসে আছি যে---BE College এর প্রতি একটু দুব্বলতা আছে --সেখানকার একজনকেই তো পকেটে পুরেছি :)
  • M | 59.93.202.232 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৯:৩৮424459
  • ই: বাবা! কি মারাত্মক দিদিয়া:P
  • til | 210.193.178.129 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০৩:৫২424460
  • @ নিনা,
    কারেকশান!
    আপনে গোঁজা পাকিট মে ওর উনহোনে ছিপ ফেলকে বঁড়শিমে গাঁথা আপকো ?
  • Nina | 76.124.208.223 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০৩:৫৮424462
  • ফুল ও প্রেম

    এখনে এখন ফুলের কিদ্দাম! ভ্যালেনটাইন ডে আসছে , ব্যাস ফুল দিতে হবে তো --তা সে প্রেম নতুন, পুরোনো ,প্রচন্ড ,আধা --যাই হোক!
    আমার মনে পড়ে যায় সেই দিনটির কথা:

    আমি তখন ছোট্ট, বছর ছয়েকের বোধহয়। মা খুব ফুল ভালবাসতেন। আমাদের বাড়ীতে কত ফুল যে ফুটত, মা নিজেই বাগান করতেন। রোজ বাগানের ফ্রেশ ফুল তুলে ফুলদানিতে রাখতেন। আর বাবাও মাঝে মাঝেই হাইকোর্টের বাগানের মালিদের তৈরি ফুলের তোড়া কিনে আনতেন মার জন্য।
    বাবা মার নিজের পছন্দের বিয়ে ---মা গোঁড়া ব্রাহ্মন পরিবারের মেয়ে, বাবা কায়স্থ। দুজনেই স্বদেশীবাবু ছিলেন, ইংরেজ আমলের। আমি তাঁদের বেশি বয়সের সন্তন। অনেক দেরী করে বিয়ে করেছিলেন।
    যাক সেই ফুলের মতন দিনটি
    বাবা হাইকোর্ট থেকে ফিরতেন বিকেলে, গাড়ীর আওয়াজ পেলেই মা বাইরে বারান্দায় বেরিয়ে অসতেন। সেদিন ও বাবার হাতে একটি খুব সুন্দর ফুলের তোড়া, নানা রঙের ফুলের----(আমিও ছিলাম মার গা ঘেঁসে) বাবা মাকে ফুলের তোড়াটি দিয়ে বল্লেন:

    তোমাকে।

    অকারণে।
  • til | 210.193.178.129 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০৯:২৮424463
  • বেশ, নিটোল প্রেমের গল্প।
    --
    এবার নিনা কি কহানী চাই।
  • db | 59.94.72.106 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১২:৩৩424464
  • তিলের নড়ু বেশ সুস্বাদু । অমন হয় গো অমনই হয়। যেতে যেতে অথের ধারে হঠাৎ ফোটা ফুল অমনি মন ভোলায় - চলুক দেখি মাঝে মঝে ফোড়োন কাটব
  • til | 220.253.71.161 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৬:০৩424465
  • তুমি কে বাওয়া db? চিনি চিনি করি, তবু চিনিতে না পারি!
    আমায় আস্কারা দিলে কিন্তু ফল ভাল হবে নাকো, যা খুশী লিখলে, বিগ M এর টই এর বদনাম হবেক!

  • M | 59.93.173.69 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৬:১১424466
  • নিনাদিদিয়া,

    দারুন কিন্তু!

    আরো চাই।

    তিল,
    ভয় নাই, অভয় দিলুম,নির্ভয়ে ল্যাখেন।
  • Lama | 203.99.212.54 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৬:২৪424467
  • ফুলের গল্পটা ফুলের মতই সুগন্ধী
  • M | 59.93.173.69 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৭:০৩424468
  • এইযো ল্যামি,
    তোমার কি কাল থেকে ওয়ান লাইনার ডে চলছে?
  • Lama | 203.99.212.54 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৭:১১424469
  • কি করব, সব লেখকরা লেখার জন্য বাগানবাড়ি, ডাকবাংলো কত কি পায়, আর কিছু না হোক একখানা কেরোসিন কাঠের ডেসকো পায়। যে অভাগা লেখক তাও পায় ন, সে দিনে কয়েক ঘন্টা অবকাশ পায়। আমাদের মতো লোকের জীবনে শুধু সোসন হি সোসন। লিখতে গেলেই একটা করে ফোন এসে যাচ্ছে।

    ভাবছি গল্পটাকে সাপ্তাহিক করে দিতে হবে।
  • til | 220.253.71.161 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৭:৩৯424470
  • লামা বাছাধন,
    টাকা পুড়িয়ে এত ফোন কে করে গো তোমায়?
    Call divert করে দিয়ো আমার নম্বরে!
  • Lama | 203.99.212.54 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ১৮:৩৫424471
  • (পূর্ব প্রকাশিতের পর)

    স্পটলাইটের জোরালো আলোয় সেই 'কেউ একটা বা কিছু একটা' ব্যাপারটা কিছুটা বোঝা গেল- একটা টিকটিকি।

    টিকটিকি? নাহ্‌, টিকটিকি কি এত বড় হয়?

    ওয়াচ টাওয়ারের সান্ত্রী বুক পকেট থেকে বাঁশি বার করে ফুর্‌র্‌র্‌ করে বজিয়ে দিল। পাগলা ঘন্টি বেজে উঠল। চার কোনের চারটে ওয়াচ টাওয়ার থেকে চারটে স্পটলাইটের আলো এসে প্রথম স্পটলাইটের আলো যেখানটায় পড়েছিল সেখানে এসে স্থির হল।

    বড় টিকটিকি নয়। সেপাই সান্ত্রী পেয়াদা পুলিশ সকলের চোয়াল ঝুলে পড়ল।

    (ক্রমশ:)
  • Nina | 66.240.33.39 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২০:৫৬424473
  • লামা, নাহয় দারুণ লেখার হাত বাপু, তাই বলে পাঠককুলকে এ হেন সাইকলজিকাল টরচার :(
    এটা কি BE College এর স্পেশাল কোর্স ! মানুষ কে উলুধুধু ( মানে হচ্ছে তুমি যা করছ সেটা) বাড়ীতে দিনরাত ভুগি, টই তেও ভুগতে হবে :(
    Have mercy on us, milord !
  • sinfaut | 117.194.202.15 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২১:০৫424474
  • "পিছন থেকে একটা বেঁটে মতন লোক এগিয়ে এসে বলল, 'টেরাড্যাক্টিল!!'।

    অনুভবী পাঠক মাত্রই জানেন, পূর্ব ভারতে ক'দিন থেকেই সংবাদপত্র আর পাঁচরকম আবাগীর মিডিয়া খুব হিটকি নিয়ে খবরটা চালাচ্ছে। অন্ধকার আর নদীর পাড় দেখলে পাবলিক ভয় খাচ্ছেও। "

    এমন কিছু একটা ভেবে নেওয়াই যেতে পারে, আপাতত, যতক্ষন না লামা লিখছেন।
  • dd | 122.167.5.183 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২২:৩০424475
  • "না:, ভুতুম কই ?" বলে চেঁচিয়ে উঠলেন লর্ড ধ্যানেশ। দিদির চোখে তখন পাগলা হাসি, কইলেন " রাজপুত্তুর ক্ষি কারুর এগার হয় রে বোমফটাশ?"

    পকেটে উশখুশ করছে তিন্টে মোটা ভাম,অরুন বরুন আর মোদো গবাই। জিভ বার করতেই সর্বনাশ। উদুম।

    ধাই ধপা ধপ করে ছুটে গ্যালো .....

    বাকীটা ২০১৩ তে, ততোদিনে,আপ্নেরাও দুমফটাস।
  • Abhyu | 97.81.71.179 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২২:৪৯424476
  • অ্যাঁ ২০১৩? তদ্দিনে তো গুরুচন্ডাল৯ পনেরো বেরিয়ে যাবে, এমনকি গুরুচন্ডাল৯ চোদ্দো বেরোনোও কিছু অসম্ভব নয়। তাইলে?
  • bb | 117.195.169.206 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২৩:৩৩424477
  • dd আপনি কিন্তু ইচ্ছা করলেই হজবরলের sequel লিখতে পারেন:)
  • bb | 117.195.169.206 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২৩:৩৪424478
  • *হযবরল
  • ranjan roy | 122.168.253.9 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২৩:৩৭424479
  • [ আমার খুব ভাল লাগছে। অ্যাদ্দিনে আমাদের ওপর হামলাকারীদের নামে গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট বেরিয়েছে। ওরা পালিয়েছে এবং লুকিয়ে থেকে বেইল পাওয়ার চেষ্টা করছে। কর্পোরেশনের কমিশনার বিল্ডারকে শো-কজ করেছেন--- কেন ওর লাইসেন্স ক্যানসেল করে ওর গ্যারান্টি মানি বাজেয়াপ্ত করা হবে না?
    তা' ওসব আগামী সপ্তাহে বাস্তুহারা টইয়ে লিখবো।
    এখন একটা ছোট্ট গল্প লিখি? স্বপ্নাদ্য গল্প। সত্যি বলছি যেমন দেখেছি তেমনি লিখেছি-- একেবারে র', খালি সামান্য নুন-আদাবাটা সার্ভ করতে গিয়ে লাগিয়েছি।
    যদি বিশ্বেস না করেন তাহলে খেলবো না।]

    মুর্দানগর
    ------------
    ট্রেনের জানলায় মাথা রেখে ফুরফুরে ঠান্ডা হাওয়ায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। রাতের গাড়ি। সহযাত্রীরা আগেই আলো নিভিয়ে দিয়েছিল। আমি জানালার ধারে সীট পেয়ে বেশ পুলকিত। খানিক পরেই ওপরের বার্থ আর পাশের থেকে ফোঁ-ও-ও, ফুরুৎ, ঘুরুৎ ইত্যাদি নানারকম আওয়াজের ঐকতান শুনতে শুনতে আর বাইরে চাঁদের মায়াবী আলোয় পিছনে ছুটে যাওয়া মাঠঘাট, ধানের ক্ষেত, ছোটখাটো টিলা, মজা নদীর খাত দেখতে দেখতে কখন আমারই চোখ লেগে গেছে বুঝতে পারিনি।
    ঘুম ভাঙলো কারো ডাকে। না, কামরার ভেতর থেকে নয়, ডাকটা আসছে জানলার খুব কাছে, প্ল্যাটফর্ম থেকে।
    কেউ যেন আমার কানের কাছে বলছে-- মুর্দানগর! মুর্দানগর!
    গাঢ় ঘুম থেকে জেগে কিছুই ঠাহর হচ্ছিল না। জানলা দিয়ে মাথা বাঁকিয়ে দেখলাম একটি ছোট্ট স্টেশন, জনমনিষ্যি নেই, তবে একটা রেলের নীলচে কালো কোট পরা খালাসী মত লোক লাল লন্ঠন দুলিয়ে চলে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে ওই লাল আলোও দূরে মিলিয়ে গেল।
    হাই তুলে আড়মোড়া ভেঙে দাঁড়াতেই হটাৎ মাথার ভেতরে টিউবলাইট জ্বলে উঠলো।
    আরে! এটাই তো আমার স্টেশন,-- মুর্দানগর। আমাকে যে এখানেই নামতে হবে। হুড়মুড়িয়ে উঠে আমার পাশে রাখা এয়ারব্যাগ তুলে নেই নামতে নামতে খেয়াল হল কামরাটাতে কোন যাত্রী নেই। অথচ হাওড়া স্টেশনের ২১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের থেকে রওনাদেবার সময় কামরাতে অন্তত: জনা বিশেক লোক ছিল। যাকগে, হয়তো আগের কোন বড় জংশনে সবাই নেমে গেছে।
    প্ল্যাটফর্মে নেবে এদিক ওদিক তাকাই, না কোন যাত্রী নেই, কোন কুলি নেই,কোন ভিখারি বা নেড়ি কুকুর কিচ্ছু না।
    চা-কফির কিওস্ক গুলো, পত্রিকার স্টল সবই বন্ধ। ছোট্ট একটা ওয়েটিং রুম, তাতেও পুরনো জমানার আলিগড়ি তালা। স্টেশন মাস্টারের ছোট্ট রুম? দুস্‌ শালা! হাতঘড়ি বলছে এখন রাত দুটো। মানে অন্তত: তিনটে ঘন্টা স্টেশনে কাটাতে হবে। কিন্তু একটা লোক দেখছিনে, একটা কামরাও খোলা নেই। তবে কি খালি বেঞ্চিতে? তাই মন্দ কি! একটা সিগারেট ধরাই। কেন এলাম মুর্দানগরে? আমি হরিদাস পাল এখানে কি করবো? এর চেয়ে বাঁশদ্রোণী বাজারে আঁটি বেঁধে পালংশাক বেচলে কোন মানে হত।
    আস্তে আস্তে মনটা ফোকাস হল।
    ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল গত শনিবারে পাঁচ দিন আগে। আমাকে জুনিয়র সহকর্মী মৃগেন বল্লো--
    আচ্ছা, হরিদাসদা, আপনি কলেজে পড়তে শ্যামল বলে কাউকে চিনতেন?
    চমকে উঠি। বিশহাজার ভোল্টের শক্‌ খাই।
    --- হ্যাঁ, আমার সঙ্গে পড়ত। কেন বলতো?
    --- শ্যামলের মা রমলা মাসীকেও চিনতেন?
    ও তীক্ষ্ণচোখে আমার দিকে তাকায়।
    আমাকে ইতস্তত: করতে দেখে কেমন কাটা কাটা ভাবে বলে---- একসময় একবেলা ওদের বাড়িতেই খেতেন। এখন বোধহয় মনে পড়ে না! কি বলুন?
    এবার আমি বিরক্ত হই।
    -- কী ব্যাপার! তুমি আমার সঙ্গে এই টোনে কথা বলছ কেন? তুমি কে হে? আমার গুরুঠাকুর? আমার ব্যক্তিগত জীবনের কৈফিয়ৎ তোমাকে কেন দেব?
    --- সরি! সরি! আপনি রেগে যাচ্ছেন? আপনাকে খোঁচা দেয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না। আসলে আপনার পুরনো বন্ধু শ্যামলের মা আমাদের বাড়িতে দু'বেলা রান্না করেন। ছাদের চিলেকোঠায় ভাড়া থাকেন। ভারী স্নেহময়ী মহিলা, ভালো ঘরের, আজ কপালের ফেরে। ছেলেটাকে নাকি পুলিশে তুলে নিয়ে গেছে, আজও ফেরেনি।
    বহুবার থানায় গেছেন, কোন লাভ হয় নি। ওরা স্বীকার করছে না। হয়তো কোথাও লাশ ফেলে দিয়েছে।
    এখন সেদিন কথায় কথায় আমার অফিসের গল্প বলতে বলতে আপনার কথা উঠলো।
    হটাৎ মাসিমার চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। আপনার কলেজ, কবে থেকে চাকরি, কোন পাড়া, বাড়িতে কে কে আছেন---সব জিগ্যেস করলেন।
    আমার একটু অবাক লাগছিলো।
    শেষে পেড়াপেড়িতে বল্লেন-- বাবা, একবার তোমাদের হরিদাসবাবুকে বলতে পারবে-- শ্যামলের মা, ওর রমলা মাসী একবার দেখা করতে বলেছে, শুধু পাঁচমিনিটের জন্যে। আমার কিন্তু কিন্তু ভাব দেখে বল্লেন- না না, টাকাকাপয়সার কোন দরকার নেই। একটা পেট, তোমাদের কাছে যেমন আছি এই যথেষ্ট। অন্য একটা দরকার। শুধু একবার।
  • Nina | 66.240.33.35 | ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ২৩:৪৩424480
  • দেউলি জেল। ৪০ দশক

    জেলে তখন অনেক রাজবন্দী আছে। তাদের একটু ভাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। আর কিছু কয়েদীরা স্বদেশীবাবুদের একটু কাজ-টাজও করে দেয়। এই সব কিছু ছোটখাট চুরি করে জেল খাটছে এমন কয়েদী।সেই রকমই একজন নিতাই। ছোট্টখাট্ট রোগা মতন, চোখদুটো কোটরে ঢোকা । খুব চুপচাপ মানুষ , কোনও সতেপাঁচে থাকেনা, কারুর সঙ্গে
    ঝগরা না, যে যা বলে করে দেয়। শুধু দুবেলা খাওয়ার সময় তার চোখ থেকে অঝোরধারে জল পড়ে , কোনওদিন সে পুরো লপসীটা শেষ করতে পারেনা। কেন যে অমন করে কে জানে।

    খবর এল আমার মা মারা গেছেন। জেলর আমায় বল্লেন তিনি সব ব্যাবস্থা করে দেবেন , যা যা দরকার জানাতে, আমি যাতে মায়ের কাজ বিধিসম্মতভাবে করতে পারি। আমি বল্লাম এই রবিবার জেলের সমস্ত বন্দীদের যেন বড়াখানা খাওয়ানো হয়, শুধু রাজবন্দীরা নয়। সেটাই হবে আমার মায়ের কাজ। বড়াখানা রীতিমতন ভাল আয়োজন রোজকার অনুপাতে--জেলর বল্লেন বেশ তাই হবে।

    সবাই খুব খুশী, সাধারন কয়েদীরা খুউব খুশি , এমন তো তাদের জোটেনা। খেতে বসে দেখি, নিতাই হাউ হাউ করে কাঁদছে আর কিচ্ছুটি খাচ্ছেনা। কাচে গিয়ে বল্লম, কিরে নিতাই খাচ্ছিস না কেন? কাঁদিস কেন?
    নিতাই হাহাকার করে উঠল, সব আমার পাপ গো দাবাবু, আমার লোভের শাস্তি। বাড়ীতে কচি চারটে ছেলেমেয়ে, বৌ বুড়োমা , কি যে করছে, কি খাচ্ছে, কি করে বেঁচে আছে জানিনা--কেউ নেই গো দেখবার। বড় গরিব আমরা। এই ভাল খানা আমার গলা দিয়ে নামবেনি গো দাবাবু, বলে আর কাঁদে।
    তাকে বলি, কি হয়েছিল, কি চুরি করেছিলি, কেন করেছিলি?
    মহাজনের খেতে কাজ করত নিতাই। ধান চাল বাছা
    , খুদগুলো গরুর জন্যে তুলে রাখা এইসব কাজ। দিনশেষে একটু খুদমেশানো চাল, কোনওদিন একটু ডাল আর কটি পয়সা পেত। বৌ পোয়াতি, বড্ড গরম ভাত খেতে প্রাণ চাইছে । যা পায় নিতাই সেতো কোনওমতে সবার পেট ভরে , বড় মেয়েটা, বুড়ো মা কলমির শাক, কচু ঘেঁচু কিছু কুড়িয়ে আনে পুকুর পাড় থেকে, চলে যায় কোনওমতে।
    একদিন খুদগুলি গরুর জন্যি তুলতে গিয়ে একমুঠো নিজের গামছায় বেঁধে নিয়েছিল, যে আজ বাড়ীতে বৌটা এট্টু বেশি খাবে, সবই তো তাদের পাতে দেয়, নিজের জন্যি কতটুকুই বা রাখে। কিন্তু বাবুর
    মুনিষ দেখে ফেল্ল, কত কাকুতি মিনতি কল্লাম, খুদটুকু বই তো নয়, ফেলেই তো দেবে, নয় গরুর জাবনায় মেশবে গো, বাবু আজ এইটুকুনি
    নিয়ে যেতে দাও। কিন্তু বাবু খুব রেগে গেলেন, বল্লেন তুই ব্যাটা চুরি করলি কেন, এত আস্পদ্দা তোর, আমর এখেনে চুরি! দরোগাবাবুরে ডেকে ধরিয়ে দেলেন---তাই আমার জেল হল গো দাবাবু।
    আমি বসে আছি স্তব্ধ হয়ে। দেশ স্বাধীন করব ইংরেজ তাড়িয়ে--সেই মত্রে দীক্ষা নিয়েছি। কিন্তু এদের কে করবে স্বাধীন, এরা কিকরে , কবে স্বাধীন হবে? সারারাত ঘুমোতে পারিনি ,

    এটা আমার বাবার ডায়রীতে পড়ে ছিলুম। স্মৃতি হাতড়ে লেখা। ভুলগুলো তাই সবাই নিজগুণে ক্ষমা করে দিও।
  • Lama | 64.207.243.83 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০০:৪৭424481
  • কি অসাধারণ দুটো গল্প!!! সাধুবাদ জানাই।
  • Nina | 66.240.33.41 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০১:২৫424482
  • লামা, ভাল বল্লে আর কার না ভাল লাগে-:)
    সময় নিয়ে পড়লে, ভাল লাগল।
    কিন্তু আমাদের যে সব চোয়াল
    সেই কখন থেকে ঝুলছে---এবার খুলে পড়ে যায় যদি :(

    as usual রঞ্জন, এক ঘর।
  • til | 220.253.71.161 | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০ ০৩:০৯424484
  • নিনা,
    তোমার বাবার সাধ অপূর্ণই থেকে গেছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন