লতার যুক্তিটা মানতে পারলাম না।লতা বিরল প্রতিভা।এমন প্রতিভা,যাকে অন্য গায়িকা দিয়ে রিপ্লেস করা যায়নি বা যেতো না। প্রায় প্রত্যেক নাম করা সুরকার ই বলেছেন,সুমন কল্যাণ পুর,বাণী জয়রাম,রুনা লায়লা,এরা একটা জায়গায় গিয়ে লতার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারতো না।
সলিল চৌধুরী অধিকাংশ গান লতা কে দিয়ে গাইয়েছেন।বাংলা হোক বা হিন্দি।ঘরে সবিতার মতন প্রতিভা থাকা সত্বেও। সচিন দেব বর্মন এর সঙ্গে লতার মনোমালিন্য হয়েছিলো।কিন্তু রাহুল লতা কে ফিরিয়ে আনে,বিরল প্রতিভার জন্যই।বাবাকেও রাজি করায়,লতা কে দিয়ে গাওয়াতে।
রাজ কাপুরের সঙ্গে,পাওনা নিয়ে ঝগড়ার পরেও,রাজ কাপুরের মতন লোক লতাকে দিয়ে গান গাইয়েছে।রাম তেরি গঙ্গা অবধি।
রফি ছিলেন ভীষণ সরল লোক। বিনয়ী ও সৎ। উনি গান গেয়ে পাওনা নেবার পর যে রয়ালটি মেলে,সেটা জানতেন ই না।লতা নিতে বলায় মনে দুঃখ পান। এটুকুই ব্যাপার।
বলিউড হলো ঘোঁট পাকানোর জায়গা।এখানে আন্ডার ওয়ার্ল্ড, বড় প্রোডিউসার, ডিস্ট্রিবিউ টর,ফ্যামিলি, পেডিগ্রী হাত ধরা ধরি করে চলে।এরা দিব্যা ভারতী র মতন নতুন আর্টিস্ট ওঠাতে পারে।আবার মন্দাকিনীর মতন টেনে নামিয়ে দিতে পারে।
এমন জায়গা যেখানে ছ মাসের বেশি চর্চা না হলে, লোক জন ভুলে যেতে থাকে। নয়তো তাপসী পান্নু,আয়ুষ্মান,রাজপুত এরা আরো অনেক এগিয়ে যেতে পারতো।
সব প্রফেশনেই বিপত্তি আসে বা থাকে,কিন্তু বলিউড হলো,খাদের ধারের রাস্তা।
করন জোহরের মুন্ডুপাত করছেন , তার ছবি দেখা বন্ধ করবেন বলছেন । বাহ, বেশ । এটা করুন অসুবিধা নেই ,কিন্তু তার আগে এটা আপনারা ভেবে দেখেছেন কি লতা মঙ্গেশকরের গান তাহলে আপনারা শুনছেন কেন ? কেন তার গান শোনা এখন ও বন্ধ করেননি। বাণী জয়রাম ,সুমন কল্যানপুর ,আরতী মুখোপাধ্যায় , সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এরা আত্মহত্যা করেননি বলে ? নাকি সত্যটা জেনেও আবেগ দেখান বলে ? ট্যালেন্ট থাকা সত্ত্বেও সুমন কল্যানপুর ,বাণী জয়রাম আরতী মুখোপাধ্যায়কে বম্বেতে টিকতে দেননি লতা মঙ্গেশকর। কলকাঠি নেড়েছেন । প্রোডিউসাররা লতাকে চটাতে সাহস পাননি ফলত যা হওয়ার তাই হল । সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় বম্বেতে যে লতা মঙ্গেশকরের রাজনীতির শিকার এটা সঙ্গীত জগতে কান পাতলেই শোনা যায়। এরবেলায় আপনারা রাজনীতি দেখেন না। রফি সাহাবের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ,আদালতে কেস (রফি সাহেবের বিরুদ্ধে আজ অবধি বলিউড এর একমাত্র অভিযোগকারিণী )রফি সাহাবের মানসিকভাবে ধাক্কা ,এবং তার চলে যাওয়া এসবেও আপনারা কিছুই দেখেননা যত দোষ খালি করন জোহরের ?
শিল্প জগতে নোংরা রাজনীতি বরাবরই ছিল তখন কম ছিল ,এখন বেশী এটাই যা ফারাক।
বম্বের খোয়াব দেখা হয়ত উত্তমকুমারের ঠিক হয়নি কিন্তু "ছোটি সি মুলাকাত "এর ফ্লপের পিছনে রাজ কাপুরের রাজনীতিও বলিউড জানে ।
নেপোটিজমের এত ব্যাখা দিচ্ছেন সবাই অথচ এটা মাথায় নাই যে নেপোটিজম দিয়ে সিনেমায় সুযোগ পাওয়া যায় ,কিন্তু টিকে থাকা যায় না। তার জন্য দরকার অভিনয় ক্ষমতা । যে কারণে আপনারাই অভিষেক বচ্চনকে ছুড়ে ফেলেছেন ,কুমার গৌরব একটা সিনেমায় টুকী দিয়েই ব্যাস । কিন্তু সঞ্জয় দত্তকে দেখুন । টিকেছে নিজের ক্ষমতায় , মুন্নাভাই সুশান্ত সিং কে দিলেই হয়ে যেত ? সেলিম খানের আরো দুই ছেলের সিনেমার অভিনয় কেউ তেমন মনেই রাখে না কিন্তু সলমন খানকে দেখুন। যে মেলোড্রামা আর সিক্স প্যাক সর্বস্ব ছবি নন এলিট দর্শক চায় সেটা সালমান অন্যদের থেকে অবশ্যই বেটার টেনে নিয়ে যায় , গুলশান কুমার এর ভাই কিষেন কুমার কে আপনি পরিচালক হলে দাবাং এ নিতেন? হ্যা এক্টিং এর পার্ট টা এক লেভেলের হতো , অ্যাকশন এ মানাতো ?
আজ হয়ত আরিয়ান খান ,সুহানা খান ,সারা আলি খান , নশা দেবগনরা চান্স পাবে কিন্তু টিকে থাকবে কি ? আলিয়া ভাট ,মহেশ ভাটের মেয়ে বলে হয়ত চান্স পেয়েছে কিন্তু অভিনয়টা করতে পারে বলে টিকেছে। বরুন ধাওয়ান ,টাইগার শ্রফ , এদের জন্য ও ওই এক ই কথা। রোহন গাভাস্কার কেন ব্যবসা করে আজকাল আর সৌরভ ইসিসি র চেয়ারম্যান ?
অভিনেতা অভিষেক চ্যাটার্জী অভিযোগ করেন তার কেরিয়ারে কলকাঠি নেড়ে শেষ করে দিয়েছেন প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী। আপনারা প্রসেনজিৎ এর সিনেমা দেখেন ,কিন্তু অভিষেক চ্যাটার্জী যদি আত্মহত্যা করতেন তাহলে আর দেখতেন না ,তাই তো ?
আবেগ নয়,যুক্তি বুঝুন।
Abhinandan Bhattacharyya
সংগৃহিত
আজকাল এই ফেসবুক জমানায় একটা ফ্যাশন হয়েছ কিছু ডিস ক্রীমিনেশন ধরে,দেখানোর চেষ্টা; আমি কি ভালো!অর্থাৎ সমাজের এই পচে যাওয়া ব্যাপারটা আমার নজরে আছে।
উদাহরণ--ফর্সা হবার ক্রিম মাখা।আরে যারা এই ত্রুটি তুলে ধরছে,তারাই তো মাখছে ,না কি। কেউ কালো কিন্তু ক্রিম মেখে ফর্সা হতে চায়।সেটা তার ইচ্ছে।
কেউ বেঁটে ,হিল দেওয়া জুতো পরে লম্বা হতে চায়।কি করা যাবে! কেউ প্লাস্টিক সার্জারি করে রিংকল কমাতে চায়,;কমাবে।কেউ সাদা চুলে কলপ করে কালো করতে চায়।করবে।
বলিউড এর নেপটিস্ম শত বর্ষ পার করে ফেলেছে। ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্টরা চাইছে, আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর ছাতা থেকে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রী কে বার করে, নিজেদের হাতে নিয়ে নেবার।এমন নয়,যে তারাও যখন প্রয়োজন; মাসল পাওয়ার ব্যবহার করবে না। ওই আর কি! বাঘের থেকে সরে কুমীরের গাড্ডায় পড়া!
R2h
খুব ভালো লিখেছেন , যথার্থ ভাবে এই 'নন্দ ঘোষ শেমিং 'আন্দোলনে'র ব্যাখ্যা করেছেন
অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রে র মতো ফিল্মি দুনিয়াতেও নেপোটিজম থাকবে সেটা স্বাভাবিক , হলিউড থেকে ঢালিউড কোথাও ব্যতিক্রম নেই আর থাকলে সেটাই আশ্চর্য হবার মতো ঘটনা
আত্মহত্যার সাথে নেপোটিজম এর লিংক টাও জনগণের এই লকডাউন সময়ে অলস চিন্তাভাবনার ফসল , সুইসাইড নোট এ লিখে গেলে তবুও একটা কথা ছিল কিন্তু জল ঘোলা হলে জাল নিয়ে অনেকেই বেরিয়ে পড়বে সেও আজকাল স্বাভাবিক হয়ে গ্যাছে
চাড্ডি ভার্সেস খান এটা বোধ হয় এক্ষেত্রে একটু বেশি সরলীকরণ মনে হলো বিহারে জনতা পার্টি র লোকেরাও মিছিল করেছে খবরে দেখলাম , আবার জাভেদ আখতার , বিগ বি সহ টুইটার প্রেমী রা অনেকে পুরো ব্যাপারটায় চুপ , বিজেপির কোনো উচ্চপদস্থ নেতা বা মন্ত্রী সল্লুভাই কে নিয়ে সেভাবে কিছু বলেন নি এখনো , যেটা এক্সপেকটেড ছিল
আপনাকে আগে মাথা গরম মুষ্টিপ্রয়োগে সিদ্ধহস্ত ভেবে আমার ভুল হয়েছিল , ক্রমশ আপনার যুক্তিবাদী লেখা পড়ে আপনার AC হয়ে যাচ্ছি
প্রণামান্তে
দারুন খবর!সত্যি ভালো খবর।বিশেষত আমাদের মতো গরীব দেশের খুব কাজে লাগবে। সারা পৃথিবীর লোক উপকার পাবে।
এবার একটা যুত সই ভ্যাকসিন বেরোলে হয়। এন হেইচ এস কেও ধন্যবাদ।