এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পায়ের তলায় সর্ষে : ন্যাশনাল পার্কস অফ অ্যামেরিকা

    Shuchismita
    অন্যান্য | ০৫ জুন ২০১০ | ১৯৬১৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Shuchismita | 211.145.239.35 | ২৭ জুন ২০১৩ ০৩:২০456788
  • জায়ন ক্যানিয়ন ঃ জলপ্রপাত
    (ছবির উপরে ডানদিকের স্পটটা কি করে ঠিক করা যায় কেউ বলবে?)



    জায়ন ক্যানিয়ন



    ব্রাইসের পথে

  • nina | 22.149.39.84 | ২৭ জুন ২০১৩ ২২:২৭456789
  • যেমন লেখা তেমন ছবি---দুরন্ত!!!
    কয়েকপিস চেনা প্রাণীদেরকেও দেখতে সাধ হচ্ছে----
  • hu | 12.133.56.220 | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ২০:৪৭456790
  • এবার ব্রাইস। জায়ন থেকে বেরোতে গেলে একটা টানেলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। মাউন্ট কারমেল টানেল বলে এটাকে। প্রায় মাইলখানেক লম্বা। টানেলের দুইদিকে পার্ক রেঞ্জাররা দাঁড়িয়ে থাকেন। আমাদের গাড়িটা যখন ঢুকছে রেঞ্জার সাহেব আমার হাতে একটা লাঠি ধরিয়ে দিলেন। বললেন টানেল থেকে বেরিয়ে ওদিকের রেঞ্জারকে এটা দিয়ে দেবেন। যা বোঝা গেল, এভাবেই ওখানে ট্রাফিক কন্ট্রোল হয়। আমরা টানেল থেকে বেরিয়ে দেখলাম উলটোদিকে সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ওদিকের রেঞ্জারকে লাঠিটা দেওয়ার পর তিনি গাড়ি ছাড়তে শুরু করলেন। টানেলের ভেতরের রাস্তাটা সব সময়েই ওয়ান ওয়ে। বেশ কিছু গাড়ি ওদিক থেকে পাস করানোর পর আবার লাঠি চলে আসবে এদিকের রেঞ্জারের হাতে।
    ব্রাইস আমার আগে দেখা। ড্রাইভারের কাছে নতুন। আমি র‍্যালা নিই। দুদিন থাকছি। অনেক সময় আছে মনে করে সবার আগে হাজিরা দিই ভিজিটর সেন্টারে। খোঁজ নিই রেঞ্জার প্রোগ্রামের। স্টার গেজিং আছে নাকি? টেলিস্কোপে তারা খোঁজা ব্রাইসের গভীর কালো বিস্তৃত আকাশে? স্টার গেজিং ছিল। রাত সাড়ে ন’টায়। ব্রাইসে হোটেল পাইনি পার্কের আশেপাশে। পঁচিশ মাইল দূরে প্যাঙ্গুইচে মাথা গোঁজার ঠিকানা। আচ্ছা নাহয় একটু রাত করেই পৌঁছলাম! হোটেলে ফোন করে শুনি রাত এগারোটার মধ্যে চেক ইন করতেই হবে। অগত্যা স্টার গেজিং বাদ। গ্র্যান্ড ক্যানিয়নেও থাকবো রাতে। তবে কি তিন বছর আগে যে ইচ্ছে মনের মধ্যে রেখে ফিরে আসতে হয়েছিল তা পূর্ণ হবে সেখানেই? ঘন মেঘ সেবারে একটি তারাও দেখতে দেয়নি। এবারে কি পাবো দেখতে!
    স্টার গেজিং না হোক, রেঞ্জার টক তো শোনাই যায়। বিকেল পাঁচটায় সানরাইজ পয়েন্টে রেঞ্জার টক। শেষ হবে সানসেট পয়েন্টে। ঘড়িতে মোটে সাড়ে তিনটে। ইন্সপিরেশন পয়েন্ট দেখে নেব তার আগে। ড্রাইভারের সেই প্রথম ব্রাইস দেখা। যত দূর চোখ যায় কমলা শিখর ছড়িয়ে আছে। একটা বিশাল দাবার বোর্ডে অজস্র অজস্র বোড়ের মত। একটা বিশাল সেনাবাহিনী যেন হঠাৎ করে পাথর হয়ে গেছে। স্থির হয়ে আছে ড্রাইভারও। আমি জানি এমন দৃশ্য সে কখনও আগে দেখেনি। দেখিনি আমিও। জানি না পৃথিবীর আর কোথাও এ জিনিস আছে কিনা।

    https://www.facebook.com/photo.php?fbid=4993144994323&set=a.4744674662720.1073741829.1470601404&type=3&theater

    https://www.facebook.com/photo.php?fbid=4993144194303&set=a.4744674662720.1073741829.1470601404&type=3&theater

    রেঞ্জার টক যিনি দিলেন তিনি জার্মানির এক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর। কিছুদিনের জন্য ব্রাইসে এসেছেন। রিম ট্রেইল ধরে হাঁটতে হাঁটতে ব্রাইস ক্যানিয়নের গল্প বলছিলেন তিনি। ব্রাইসের ভৌগোলিক অবস্থান এমনই যে বছরের বেশ বড় একটা সময় ধরে এখানে দিনের বেলা রীতিমত গরম আর রাতের বেলা শুন্যের নিচে তাপমাত্রা। কখনও দিনরাতের তাপমাত্রার তফাৎ চল্লিশ ডিগ্রিরও বেশি। কোটি কোটি বছর ধরে ব্রাইস রাতে বরফে জমেছে। দিনের প্রখর তাপে সেই বরফ গলে চিড় খেয়েছে পাথর। জন্ম নিয়েছে দাবার ঘুঁটির মত হাজার হাজার শৃঙ্গ – যাদের পোষাকি নাম হুডু। শেষ বিকেলের আলো পড়ে কমলা-গোলাপী রঙে অপার্থিব হয়ে ওঠে ব্রাইস ক্যানিয়ন। হু হু হাওয়া দেয়। শীত করে বেশ। তারা দুজনে ভাবে কাল নামতে হবে এই ক্যানিয়নের গভীরে। হুডুগুলো মাথা তুলেছে যেখান থেকে সেখানে একবার ঘুরে না আসলেই নয়।
    পরের দিন সকাল সকাল আবার ফিরে আসা সানরাইজ পয়েন্টে। সেখান থেকে ট্রেইল নেমেছে ক্যানিয়নের গভীরে। ব্রাইস অবশ্য নামেই ক্যানিয়ন। এখানে কোন নদী নেই। জিওলজিকালি এই ভূপ্রকৃতি ক্যানিয়ন নয়। নিচে নেমে গেলে নদী নয়, পাওয়া যাবে হুডুর উৎস। মাঝে মাঝে উৎরাই এত বেশি যে ভয় হয় পা ফসকে গড়িয়ে পড়ব বুঝি। যত নামতে থাকি হুডুগুলো কাছে আসতে থাকে। আগের দিন বিকেলে যাদের দেখেছি অনেক নিচে তারা ধীরে ধীরে মাথা ছাড়িয়ে যায়। কমলা শিখরের পায়ের কাছে বসে বিশ্রাম নিই দুজনে। কত কোটি বছর লেগেছে এই ল্যাণ্ডস্কেপ তৈরী হতে। এত সহজে ছুঁয়ে ফেললাম তার প্রাচীনতম অংশ! ঈষৎ লজ্জাই লাগে। ফেরার পথ ধরি। অনেকখানি উঠতে হয়। আদিম পৃথিবীর গোপন অলিন্দ থেকে উঠে আসা অন্য এক পৃথিবীতে।

    https://www.facebook.com/photo.php?fbid=4993145314331&set=a.4744674662720.1073741829.1470601404&type=3&theater
  • hu | 12.133.56.220 | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ২০:৪৮456791
  • এহে! ছবি পোস্টানোর টেকনিক ভুলে গেছি। দেখি চেষ্টা করে।

  • hu | 12.133.56.220 | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ২০:৪৯456792


  • <
  • hu | 12.133.56.220 | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ২০:৫০456793
  • hu | 12.133.56.220 | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ২১:০১456794
  • পরের দিন আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক। এই পার্ক দুজনের কাছেই নতুন। গুগল ইমেজে উটা দিয়ে সার্চ করলে যে ছবিটা সবচেয়ে বেশিবার আসে তা হল একটা ন্যাচরাল আর্চ। এই আর্চ (পোষাকি নাম ‘ডেলিকেট আর্চ’) উটার স্টেটের সিম্বল। ডেলিকেট আর্চ এবং আরো অনেক আর্চ নিয়ে আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক। আমরা পৌঁছলাম সাড়ে এগারোটা নাগাদ। প্রথমেই ভিজিটর সেন্টারে গিয়ে রেঞ্জারের থেকে জেনে নেওয়া হল কিভাবে ঘোরা উচিত। এই পার্কে ভিজিটরের সংখ্যা লক্ষ্যনীয় ভাবে কম। কারণটা হয়তো এই যে এখানে কোন ইজি অ্যাকসেস পয়েন্ট নেই। যে আর্চই দেখতে চাও না কেন কম করে এক মাইল হাঁটতে হবেই। মাথার ওপর সেদিন গনগনে সূর্জ। ছায়া খুঁজে দাঁড়াতে পারলে একটু শান্তি মেলে বটে, কিন্তু এই পার্কে ছায়া খুঁজে পাওয়াই কঠিন। বড় গাছ প্রায় নেই। পঁচাত্তর হাজার একর জুড়ে শুধু আদিম পৃথিবীর আশ্চর্জ রূপ।


    প্রথম যে আর্চে যাওয়া হল তার নাম স্যান্ডডিউন আর্চ। পার্কিং লট থেকে বোঝা যায় না কেন এমন নাম। খানিক হাঁটলেই পাথরের দেওয়ালে একটা চিড়ের মত দেখা যায়। বড়জোর একজন যেতে পারে তার মধ্য দিয়ে। ক্যামেরা সামলে আমিই ঢুকি প্রথমে। ড্রাইভার বাইরের ছবি তোলায় ব্যস্ত। ভেতরে যা দেখি তা কল্পনার বাইরে। একটা আস্ত বালিয়াড়ি। হু হু করে হাওয়া দিচ্ছে। তার সাথে বালি এসে বিঁধছে চোখে-মুখে। ড্রাইভারও চলে এসেচে ততক্ষণে। বালির মধ্য দিয়ে হাঁটি। ছবি তুলতে খুব ইচ্ছে হয়। কিন্তু লেন্স ক্যাপ খুলতেই বালির ঝাপটা এসে লাগে ক্যামেরায়। তাড়াতাড়ি আড়াল করি তাকে। তারপর দেখা দেয় বালির মধ্যে নিখুঁত একটা আর্চ। পাথরের আড়াল খুঁজে খানিক বসি। এমন অপরূপ রূপ দেখিনি তো কখনও আগে। বেশি বসা যায় না। হাওয়ার দিক বদল হয়ে যেখানে বসেছি সেখানেও বালি উড়ে আসে। ফিরে আসি।

    ফাটল দিয়ে বেরিয়ে দেখি আরেকটা ট্রেইল চলে গেছে ব্রোকেন আর্চের দিকে। হাঁটতে থাকি। অজস্র ক্যাকটাস পথের দুদিকে। কোন কোনটায় ফুল এসেছে। মাঝে মাঝেই পথে শুধু বালি। চলার গতি স্লথ হয়ে আসে সেখানে। পথে দেখা হয় দুটি মানুষের সাথে। তারা বলে কাছাকাছি এসে গেছো, যাও দেখে এসো কি অসাধারণ! আমরা গরম হয়ে আসা জলে একটু গলা ভিজিয়ে এগিয়ে যাই। আবার পাথরের দেওয়াল। তাদের টপকে এগিয়ে গিয়ে দেখা যায় ব্রোকেন আর্চ। ভাঙা নয় মোটেই। হয়তো আগে যেমন ছিল তার থেকে কিছুটা ভেঙে পড়েছে। আমরা তো দিব্যি দেখতে পাই একটা পূর্ণাঙ্গ আর্চ। ড্রাইভার আর্চের ওপরে ওঠে ওপারে কি আছে দেখার জন্য। অ-ড্রাইভার ছায়া খুঁজে বসে। ছবি তোলার অজুহাতে জিরিয়ে দেয় খানিক। ব্রাইস থেকে তারা বেরিয়েছিল বটে ব্রেকফাস্ট করে। কিন্তু তারপরে আর পেটে পড়েনি কিছু। আর্চেসে পার্কের মধ্যে খাওয়ার বন্দোবস্ত নেই। অসময়ের সঙ্গী গ্রানোলা বারেই লাঞ্চ সারে তারা। আইস বক্সের বরফ গলতে শুরু করে দিয়েছে। জল গরম হচ্ছে ক্রমশ।


    আর্চেস ন্যাশনাল পার্কের সবচেয়ে বড় আর্চটার নাম ল্যাণ্ডস্কেপ আর্চ। ১৯৯১ সালে ল্যাণ্ডস্কেপ আর্চ থেকে কিছু অংশ ভেঙে পড়ে। কেউ জখম হয়নি, কিন্তু সেই ঘটনার পর থেকে ল্যাণ্ডস্কেপ আর্চের কাছে যাওয়া নিষিদ্ধ। তবে যে ভিউপয়েন্ট থেকে ল্যাণ্ডস্কেপ আর্চ দেখা যায় সেখানে যেতে হলেও দেড় মাইল হাইক করতে হয়। জল আর গেটোরেডের বোতল সাথে নিয়ে যাত্রা শুরু হল। পথে দেখা যায় আরো দুটো ছোট আর্চ – পাইন ট্রি আর্চ আর টানেল আর্চ। লোক এত কম, মনে হচ্ছে পার্কটা যেন নিজেদের জন্য রিজার্ভ করেছি। ল্যাণ্ডস্কেপ আর্চ ভিউ পয়েন্টে যাও বা কয়েকজনের দেখা পেলাম, পাইন ট্রি আর টানেল আর্চে একজনও ছিল না। ন্যাড়া পাথুরে রাস্তায় অজস্র বুনোফুল। পথের শেষে অদ্ভুত সুন্দর এক একটা আর্চ। ল্যাণ্ডস্কেপ আর্চটা বরং তেমন কিছু লাগলো না। বড্ড দূর থেকে দেখলাম। সূর্জ তখন যেখানে ছিল সেখান থেকে ছবিও ওঠে না ভালো। এর পরে যাবো নর্থ উইন্ডো, সাউথ উইন্ডো আর ডবল আর্চ।

    নর্থ আর সাউথ উইন্ডো পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা দুটি আর্চ। এই আর্চ দুটি পার্কিং লট থেকে বেশ কাছে। তাই হয়ত বেশ কিছু লোকও দেখা গেল এখানে। নর্থ উইন্ডোতে তাদেরই একজন ছবিও তুলে দিলেন ড্রাইভার আর অ-ড্রাইভারের একত্রে। সারাদিন রোদ লেগে দুজনেই বেশ ক্লান্ত। কিন্তু অ-ড্রাইভার তো ডাবল আর্চ দেখবেই। অতএব তারা গুটি গুটি পায়ে হাঁটা দেয় ডাবল আর্চের দিকে। এখানে আবার লোক খুব কম। এরা দুজন ছাড়া জনা দুই। ডাবল আর্চ অনেকটা সায়ামিজ টুইনসের মত। আলাদা আলাদা দুটো আর্চ নিচের দিকে জোড়া। যদিও জিওলজিকালি দেখলে এরা আসলে একটাই আর্চ। ইরোশনের ফলে মাঝ বরাবর ফাটল তৈরী হয়ে দুটো আর্চের রূপ নিয়েছে। এখানে অনেক ছায়া। ভারি ঠান্ডা জায়গাটি। বাকি বিকেলটা এখানেই কাটালে বেশ হয়, কিন্তু ড্রাইভারের তাড়া ডেলিকেট আর্চে যাওয়র। উটার স্টেট সিম্বল, যেতে তো হবেই। কিন্তু পার্ক নিউজ লেটার বলছে হাইকটি বেশ কঠিন। নির্দিষ্ট কোন ট্রেইল নেই। যেতে-আসতে দুই থেকে তিন ঘন্টা। ঘড়িতে তখন পাঁচটা। চেষ্টা করলে যাওয়া যায়। কিন্তু সারাদিন ঘুরে ক্লান্তও খুব। তাই ছেড়ে দেওয়া হল এবারের মত। ভিউপয়েন্ট থেকেই দেখা হবে। একটা ভিউ পয়েন্ট পার্কিং লটের খুবই কাছে – হুইল চেয়ার অ্যাকসিসেবল। অন্যটি হাফ মাইল চড়াই উঠতে হয়। সেখানেই যাওয়া হল। যে পাহাড়ের মাথায় আমরা তার সামনের পাহাড়টিতেই ডেলিকেট আর্চ। দিন শেষের আলোয় সোনালী। মাঝখানে খাদ। কাছে যেতে হলে পাহাড় ডিঙোতে হবে। এবারে হল না। আর কি হবে আসা!




    ফেরার পথে বার বার গাড়ি থামানো হয়। পড়ন্ত সূর্জের আলোতে আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক কি অপার্থিব সুন্দর দেখাচ্ছে। একটি বাঁক ঘুরে আমি আর ড্রাইভার একসাথে চমকে উঠি। লাল পাথরের খাঁজে সোনার থালার মত চাঁদ উঠছে। ভুলেই গেছিলাম সেদিন পূর্ণিমা। একই সাথে সূর্জাস্ত ও চন্দ্রোদয়।




    সেদিন রাতে থাকা হল মোয়াবে। পরের দিন ক্যানিয়নল্যান্ড ন্যাশনাল পার্ক। এই পার্ক আয়তনে বিশাল এবং এর অধিকাংশ ফোরহুইল ড্রাইভ ছাড়া ইনঅ্যাকসিসেবল। কুখ্যাত অপরাধীরা একসময় এই পার্কে লুকিয়ে থাকতো। তিনটে ভাগে ভাগ করা হয়েছে এই পার্ককে – আইল্যান্ড ইন দ্য স্কাই ডিস্ট্রিক্ট, নিডল ডিস্ট্রিক্ট, মেজ ডিস্ট্রিক্ট। আমরা আইল্যান্ড ইন দ্য স্কাই ডিস্ট্রিক্টে গেলাম। নিডল ডিস্ট্রিক্টের একটা ভিউপয়েন্ট আছে আই- থেকে পঁয়ত্রিশ মাইল ভেতরে। সেখানেও গেলাম। মেজ ডিস্ট্রিক্টে ঘুরতে গেলে আমাদের গাড়িতে হত না। সময়েও কুলোতো না। আপাতত বাদ গেল সেটা। যতগুলো পার্ক ঘোরা হয়েছে এই কদিনে ক্যানিয়নল্যান্ড তাদের সবার চেয়ে আলাদা। সব চেয়ে বিশাল, সব চেয়ে প্রত্যন্ত, সব চেয়ে আদিম। প্রকৃতির রুক্ষতাকে আড়াল করার কোন চেষ্টাই এখানে করা হয়নি। খুব কম লোক আসে। মেটে রঙের পাথরের ওপর সরীসৃপের মত কিলবিল করছে গ্রীন রিভারের খাত। গ্রীন আর কলোরাডো – এই দুই নদী মিলে তৈরী করেছে ক্যানিয়নল্যাণ্ড। মৃত্যুর মত নিথর উপত্যকা। সেখানে খাবার খুঁজে বেড়ায় ক্যালিফোর্নিয়া কন্ডর।

  • I | ১৪ নভেম্বর ২০১৩ ২২:০৫456795
  • ছবিগুলো কি ড্রাইভারের তোলা?
  • hu | 12.133.40.1 | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ ০৮:৫০456796
  • কোনটা কার তোলা খেয়াল নেই। তবে ভালোগুলো অবশ্যই আমি তুলেছি ;-)
  • Tim | 188.91.253.11 | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ ১১:৪৩456798
  • ছবি মিলিয়ে মিশিয়ে তোলা, কিন্তু ঝাড়াই বাছাই সবই হুচে করেছে। হাজার হাজার ছবি উঠেছিলো, আর কখুনো এত ছবি তুলবোনা পিতিগ্যে করেছি।
  • ন্যাড়া | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ ১১:৪৮456799
  • আমার এক বন্ধু বলেছিল ব্রাইস নাকি জাপানীদের তৈরি। এত সূক্ষ্ণ কাজ অ্যামেরিকানরা করতে পারবে না। আর কে না জানে টুরিস্ট আনতে সাহেবরা সব করতে পারে। এই সব ব্রাইস, আর্চেস এসব বানিয়ে রেখেছে।
  • lcm | 118.91.116.131 | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ ১১:৫১456800
  • তাইলে মাউন্ট ফুজি নাকি আমেরিকান-দের কাজ, নইলে চাদ্দিকে কিস্যু নাই - মাঝ্খানে এমন দামড়া বরফ ঢাকা অগ্নিগিরি পাহাড় - আর কাদের কাজ হতে পারে।
  • π | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ ১৯:১২456801
  • ঃ))
  • π | ১৫ নভেম্বর ২০১৩ ১৯:১৪456802
  • জায়গাটা ভারি সুন্দর তো ! এজীবনে আর দেখা হবে বলে মনে হয়না, মানস ভ্রমণই করে নি !
  • hu | 12.133.38.39 | ০১ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৫:০৫456803
  • অবশেষে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন। এখানে আসতেই হত। এখানে আসবে বলেই ড্রাইভার খুঁজে বার করেছিল আমাকে। ড্রাইভারের সেই প্রথমবার। আর আমি তিনবার ঘুরে এসে অভিজ্ঞ পথপ্রদর্শক। সেবারে ড্রাইভার এসেছিল শীতকালে। বরফে ঢাকা সাউথ রিম। নর্থ রিমের রাস্তা তো বন্ধই থাকে সে সময়। শেষ মুহূর্তে প্ল্যান করেছিল বলে পার্কের ভিতরে থাকার কোন উপায় ছিল না সেবারে ড্রাইভারের। এবারে তাই চেয়েছিলাম দুটোদিন শুধু গ্র্যান্ড ক্যানিয়নকে দিতে। পার্কের ভিতরে থাকতে তো হবেই। নইলে কি করে দেখা যাবে গভীর রাতের ক্যানিয়ন! আগেরবার যখন একা এসেছিলাম, ঘর পেয়েছিলাম ক্যানিয়ন ভিলেজে। সন্ধ্যা নামার পর রিমের ধারে গিয়ে দাঁড়িয়েওছিলাম। কিন্তু সেদিন ছিল জমাট মেঘ। ক্যানিয়নের দেওয়ালে ধাক্কা খেতে খেতে গুমোট বাতাস উঠে আসছিল ওপরে। চাপ চাপ অন্ধকারের মাঝে ওই বাতাসের গুমরানির মুখোমুখি বেশীক্ষণ দাঁড়াতে পারি নি। শাটলবাস যেখানে দাঁড়ায় সেখানে একটা আলো জ্বলছিল। হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলাম সেই আলোর নিচে এসে। এবারেও চিন্তা ছিল – দেখা যাবে কি রাতের ক্যানিয়ন! ভরসা এই, ঐ অন্ধকারের সামনে একা দাঁড়াতে হবে না, সাথে আছে একজন।

    আমরা যাচ্ছিলাম পেজ থেকে। I-89 ধ্বস নেমে বন্ধ। অতএব জিপিএস আমাদের তুলে দিল কোন গেরস্ত বাড়ির বাগানে। বাগান অবশ্য নামেই। কাঁকড়ভরা লাল বালি, ধুলো আর যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা ঘাসের ঝোপকে কোন অভিধানেই বাগান বলবে না। ঝোপ ডিঙিয়ে আমরা রাস্তায় নামলাম। রাস্তার অবস্থাও তথৈবচ। অনেকদিন ধরে যাওয়া-আসার পরে কিছুটা পথের আভাস এসেছে। জিপিএস দেখাচ্ছে কুড়ি মাইল। ড্রাইভারের চিন্তা কুড়ি মাইল যাওয়ার পর যদি আবিষ্কার করি ভুল রাস্তায় এসেছি, তখন কি হবে। যা হওয়ার হোক ভেবে আমরা এগিয়ে যাই। এবড়ো-খেবড়ো রাস্তায় গাড়ি লাফাতে লাফাতে এগোয়। পয়েন্ট টু মাইল, পয়েন্ট থ্রি, হাফ মাইল, এক, দুই, পৌনে চার – গুনতে গুনতে এক সময় কুড়ি মাইল শেষ হয়। আমরা একটা সত্যিকারের রাস্তার মোড়ে এসে পৌঁছই।

    গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন আসতে আসতে বেলা গড়িয়ে দুপুর। প্রতিবার এসে রিমের রেলিং ধরে যখন দাঁড়াই প্রথম দেখার অনুভূতি হয়। কড়া রোদে পাথরের দেওয়াল কেমন ধোঁয়া ধোঁয়া লাগে। অনেক নীচে নীল সুতোর মত কলোরাডো। আমরা ক্যানিয়ন ভিলেজে যাই চেক-ইন করতে। পার্ক রেঞ্জারকে জিজ্ঞাসা করি রাতে কোন প্রোগ্রাম আছে কিনা স্টার গেজিং-এর। অবিকল প্রোফেসর শঙ্কুর মত দেখতে ভদ্রলোক দাড়ি নেড়ে বললেন কালকেই পূর্ণিমা ছিল কিনা, আজ তো ক্যানিয়ন আলোয় ভাসবে। তারা আজ দেখতে পাবে না। তবে কিনা চাঁদনী রাতের গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখতে আমাদের গাইডেন্সের দরকার হবে না। ডিনারের পর দুজনে মিলে হাঁটতে বেরিও, যা দেখবে সারা জীবন মনে থাকবে।

    গতবার এসে সূর্জাস্তও দেখিনি ভালো করে। আকাশ মেঘে ঢেকেছিল। এবারে দেখার খুব সাধ। পছন্দ মত একটা পাথর খুঁজে জুত করে বসি। ড্রাইভার ছবি তুলে বেড়ায়। আমি মানুষ দেখি, পাথরের খাঁজে ফুটে থাকা সূর্জমুখী দেখি, ঘনিয়ে আসা বিকেলে আলো-ছায়ার খেলা দেখি। ক্যানিয়নের আকাশ জুড়ে রাজত্ব করে ক্যালিফোর্নিয়া কন্ডোর। ড্রাইভার যতই তাকে লেন্সে ধরতে চায়, সে ফাঁকি দিয়ে পালায়। কমলা পাথর ধীরে ধীরে লাল, মেরুন, বেগুনী হয়ে ওঠে। কলোরাডো নদীটা যেখানে দেখা যাচ্ছে সেখানে মফস্বলের সন্ধ্যার মত মনখারাপী কুয়াশা নামে। সেই পাতলা সরের মত কুয়াশা ক্রমশ উঠে আসতে থাকে ক্যানিয়নের চুড়ায় – আমরা যেখানে বসে আছি। সব লোক চলে গেছে। আমরা আর একটি দক্ষিণ ভারতীয় দম্পতি শেষ শাটলের অপেক্ষায়। সন্ধ্যা ঘিরে ধরেছে আমাদের। হঠাৎ করেই ঠান্ডা পড়ে গেছে। আকাশে একটি-দুটি তারা।

    ক্যানিয়ন ভিলেজে ডিনার করেই ছুটেছি ম্যাথার পয়েন্টে। নটার সময় চাঁদ উঠবে। তারপরেই আলোয় ভাসবে ক্যানিয়ন। ঘোর কালো আকাশে তারা দেখতে চাইলে মাঝের সময়টুকু ছাড়া গতি নেই। পার্কিং লট ঘুটঘুট করছে। আকাশ ভরা সহস্রকোটি তারা। আন্দাজে হাঁটি রিমের দিকে। আমার কেবলই মনে হয় ড্রাইভার ভুল পথে যাচ্ছে। আর আমি যে পথে যেতে বলি সে পথ শোনার আগেই নাকচ করে দেয় সে। গজগজ করতে করতে কখনও ট্র্যাশক্যানে, কখনও গাছে ধাক্কা খেয়ে এক সময় সত্যিই রিমের সামনে এসে দাঁড়াই। আর তক্ষুনি, ঠিক সিনেমায় যেমনটি হয় তেমন ভাবে, একটা তারা খসে। একটা আলোর ছটা, আলো দিয়ে তৈরী একটা পাখী যেন – আকাশ থেকে নেমে এসে ক্যানিয়নের গভীরে মিশে যায়।

    এত তারা কখনও দেখিনি। ছোটবেলায় যখন ফি বছর শিমূলতলা যাওয়া হত লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে কালীপুজো পর্জন্ত সন্ধ্যে হলেই ছাদে উঠে যেতাম। ইউক্যালিপটাসভরা থিকথিকে জোনাকি আর আকাশভরা তারা – এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়। কিন্তু এই আকাশ তার চেয়েও নিকশ কালো, তার চেয়েও প্রকান্ড। ইনকাদের গল্পে পড়েছি ওদের কাছে রাতের আকাশ কালো চাদরের ওপর তারার চুমকি বসানো নয়, বরং তার উল্টোটা। আলোর চাদরে একটু একটু যে কালোর নকশা তাই দিয়েই তৈরী ওদের আকাশের গল্প। এমন আকাশই দেখতো ওরা নিশ্চয়ই, এমন ঠাসা বুনোট কাজ, একটু জায়গাও খালি পড়ে নেই। ক্যানিয়ন একটা গভীর কালো গহ্বরের মত হাঁ করে আছে। অনেক নীচে একটা ক্ষীণ আলোর বিন্দু দেখা যায়। ট্রেক করে নেমেছে যারা তাদের ঘাঁটি বুঝি। আশেপাশে আর কোন প্রাণী নেই। যাদের দেখেছিলাম পার্কিং লটে তারা অন্য কোথাও গেছে হয়ত। কত কোটি বছরের পুরনো ক্যানিয়ন, কোটি বছরের পুরনো আকাশ আর ক্ষুদ্র দুটি মানুষ – আমাদের ঘিরে আছে নিস্তবদ্ধতা।

    একসময় দেখি আমাদের ডানদিকে ক্যানিয়নের মাথায় এক চিলতে আলোর আভাস। চাঁদ ওঠার কথা আছে জানি। কিন্তু কিছুতেই বিশ্বাস হতে চায় না টিমটিমে চাঁদের আলোর এত জোর হতে পারে যে মিনিট কয়েক আগের ঘুরঘুট্টি অন্ধকারও এখন ফিকে লাগে। যে সিঁড়ি ধরে নেমে এসেছি রিমে, যে ট্র্যাশক্যানে ধাক্কা খেয়েছিলাম – সব স্পষ্ট দেখা যায়। এমনকি অন্ধকারের চাঙড়ের মত পড়ে ছিল যে ক্যানিয়ন, তার খাঁজখোঁজও আকার নিতে থাকে। বিশাল এক হ্যালোজেন আলোর মত প্রায় পূর্ণ চাঁদ লাফ দিয়ে বেরিয়ে আসে ক্যানিয়নের দেওয়ালের ওপার থেকে। এতক্ষণ মনে হচ্ছিল চুপি চুপি কারোর বাড়ি ঢুকে পড়েছি, এখন আর তা লাগে না। মনে হয় এই জ্যোৎস্নাময়ী রাত্রি আদি-অনন্ত কাল ধরে শুধু আমাদেরই জন্য অপেক্ষা করেছিল।

    খানিক পরে আমরা যখন ভাবছি এবার ফিরব কিনা, দু-এক জনের গলার আওয়াজ পাওয়া যায়। তিনজন ফোটোগ্রাফারের একটি দল ট্রাইপড কাঁধে রিমের এই অংশকেই বেছে নেয় ছবি তোলার জন্য। ড্রাইভার আলাপ জমায়। ফোটোগ্রাফারদের একজন ড্রাইভারের প্রাক্তন স্কুলের। গতকাল রাতে লেক পাওয়েলের ছবি তুলেছে এরা। আজ এসেছে পূর্ণিমারাতের গ্র্যাণ্ড ক্যানিয়নকে ক্যামেরাবন্দী করতে। ওরা লেন্স ঠিক করে, ছবি নেয়, আমাদের দেখতে ডাকে। ক্যামেরার এলসিডি ডিসপ্লেতে ধরা পড়েছে আকাশগঙ্গা ছায়াপথ, কি অপূর্ব মোহময়ী! কি অদ্ভুত সুন্দর এই পৃথিবী! আমরা ফেরার পথ ধরি।

    পরের দিন একটু বেলা করে ওঠা। ক্যানিয়ন ভিলেজে ব্রেকফাস্ট করে গাড়ি ছুটেছে নর্থ রিমের দিকে। ইস্ট গেটের কাছাকাছি এসে গেছি প্রায়। ড্রাইভার হঠাৎ তার হাতের দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে – একি আমার আংটি! অনামিকার ওয়েডিং ব্যাণ্ডের বয়স তখনও একবছরও হয়নি। কোনদিন আংটি না পরা হাতে সাবধানেই ছিল এতদিন। হঠাৎ সেটি উধাও। গাড়ি থামিয়ে তন্নতন্ন করে খোঁজা হল। নেই। ফেরা হল ক্যানিয়ন ভিলেজে। যে ঘরে আমরা ছিলাম সে ঘর তখন সাফাইকর্মীরা পরিস্কার করছে। তাদের সাথে খুঁজে দেখা হল ঘর। বরফ নেওয়া হয়েছিল যে মেশিন থেকে তার চারপাশ। ডাইনিং রুম – প্রাতরাশ সেরেছি যেখানে। কোথায় লুকিয়ে রইল বিয়ের আংটি এই বিশাল পার্কে কে জানে! গাড়িতে উঠে বসলাম। ড্রাইভারের মুখ গম্ভীর। আমার অতটা না। হারাতে হলে তো এখানেই হারানো উচিত ছিল!
  • I | 24.96.112.82 | ০১ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৭:৪০456804
  • ব্যাপক। সাসপেন্সে থাকতে হচ্ছে-আংটি ফেরত এল কিনা।

    তবে এই প্রো শঙ্কুর ব্যাপারস্যাপার খুব সন্দেহজনক। সেবছর পারোতে দেখলাম জাপানী সেজে টাইগার'স নেস্ট মনাস্ট্রি ট্রেক কচ্ছেন, তো এখন শুনি আম্রিগান বনে গ্রান্ড ক্যানিয়নে বং দম্পতিকে পথ বাতলাচ্ছেন। এদিকে নতুন কিচ্ছু আবিষ্কারও কচ্ছেন না।
  • kumu | 133.63.144.204 | ০১ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৭:৫৭456805
  • ড্রাইভার ২ বলচ ক্যানো? টিম/টিমি/টিমচাঁদ/প্রোফেসর অন্তত মিট্ঠু?
  • driver | 12.133.38.39 | ০১ ডিসেম্বর ২০১৩ ১৯:৪৩456806
  • নাহ, সে আংটি আর ফেরত আসেনি
  • পুপে | 237812.68.121223.93 | ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৫:০৮456807
  • আগের বছর গরমকালে বে এরিয়াতে এসেছিলুম একা একা ইন্টার্নশিপ করতে, আশপাশ টুকটাক ঘোরাঘুরিও হয়েছিল, তবে সে সবি ডে-ট্রিপ আর আপিসের পাওয়া ফ্রি ভাড়ার সাইকেলে কাছেপিঠে গুটিকয়েক ট্রেল ইত্যাদি। এ বছর ভেবেছিলাম ইউনিতেই থেকে কাজ কর্ম এগোবো, বড়ো বেশি ফাঁকিবাজি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এদিকে আবার অ-বাবু সান-মাতেও তে সামার ইন্তার্নশিপ জোটালেন। লং ডিস্ট্যান্সে কাবু আমি তি--ই-ন মাস একসাথে থাকার লোভে লোভে তিন মাসের খুচরো চাকরির একটা ব্যবস্থা করলাম। ইতিমধ্যে অ-বাবু এ দেশের ড্রাইভিং টেস্ট পাশ করলো সান ফ্রান্সিস্কোর প্লেন ধরার ঠিক আগের দিন। কথা হল এরকম যে অ-বাবুর রুমমেট লাইসেন্সটি বোল্ডারের বাড়িতে পোস্টে এলে তাকে রেডউড সিটি তে আমাদের অস্থায়ী ঠিকানায় মেল করবে। সেইমত আশায় আশায় বসে ছিলাম যে এবার প্রচুর ঘুরতে পারবো গাড়ি ভাড়া করে (অনন্ত ল্যাদ খেয়ে নিজের লাইসেন্সের ব্যবস্থা না হবার ফল)।

    বে এরিয়া আসার এক সপ্তার মধ্যে রুমমেট জানায় অ-বাবুর ট্যাক্স রিটার্নের কীসব কাগজপত্তর এসেছে, কিন্তু লাইসেন্স ডুমুরের ফুল। অ-বাবুর টেনশন এবং হাপিত্যেশের বাতিক - এই করে তার দিনের পর দিন কেটে যায়, কিন্তু লাইসেনসের পাত্তা নেই। ডিএমভি-তে ফোন ইমেল করেও কিছু হদিশ পাওয়া গেল না, তারা বললে আমরা ফ্রিতে ডুপ্লিকেট পাঠিয়ে দিচ্ছি। অ-বাবু রুমমেটকে মেসেজ করলো যে বাপু লাইসেন্স তো এলো না, তুমি ট্যাক্সের কি কাগজ এসছে একটু খাম খুলে দেখে জানাও। সে খাম খুলে জানালো ওটি আসলে লাইসেন্সের খাম!! শান্তি! কিন্তু ভবি কি ভোলার, সেদিনই শুনতে পেলাম গজগজ- “ ট্যাক্সের কাগজটা এখনো এলো না, কি ব্যাপার কে জানে…”

    এই টই যে খুলেছিল, সে হল ইদানীং আমার “পার্টনার ইন ক্রাইম”। আমরা গুছিয়ে আড্ডা মারি, হেন জিনিস নেই যা নিয়ে আমরা হা হা হি হি করি না। তবে সে কথা থাক, তো সেই হুচিদিদি আমায় আগেই পরামর্শ দিয়েছিল যে আমরা এই ফাঁকে ইয়োসেমিতি ঘুরে আসতে পারি। মাথার মধ্যে টিকটিক করে চলেছে সেটা সমানে। লেজুড়টাকে অনেক বলে কয়ে তুতিয়ে পাতিয়ে, অফিসে কথা টথা বলে একটু চাপ নিয়ে একদিন ছুটি ম্যানেজ হল, কোন একটা শুক্রবার আর সাথে শনি রবি। ৪ জুলাই পড়েছিল বেস্পতিবার, কিন্তু ভিড়ের ভয়ে ওই উইকেন্ড কাটিয়ে দিলাম। ঠিক হল ১৯-২১। আমি সেইমত কুল্টারভিলে একটা মোটামুটি সস্তার এয়ারবিএনবি বুক করে নিলাম, পার্কের ভেতরে সব ভর্তি, বাইরে কাছেপিঠে সব প্রচুর টাকা দাম। এরপর শুরু হল একজনের প্যানিক- “ আমি ফ্রি-ওয়েতে গাড়ি ঠিকঠাক চালাতে পারবো তো? যদি অমুক হয়, যদি তমুক হয়, তুই কেন লার্নারটাও বানিয়ে রাখিস নি? আমাকে একাই গোটা রাস্তা চালাতে হবে। থাকার জায়গাটাও তো পার্ক থেকে কত দূর…”

    তিতিবিরক্ত হয়ে আমি হোস্টেল দেখতে শুরু করলাম আর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। একাই যাবো আমি। অ্যামট্র্যাকের একটা ঠিকঠাক অপশনও পাওয়া গেল- সান হোসে থেকে হাফ ডোম ভিলেজ; বাস-ট্রেন-বাস- মোট সাড়ে ছয় ঘণ্টা, খুব একটা খারাপ নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে একটা ঝামেলা হল এই যে পার্কের বাইরে থাকলে রোজ ইয়ার্টসের (ইয়োসেমিতি এরিয়া রিজিওনাল ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম) বাসে চেপে পার্কে যেতে আসতেই অনেক সময় যায়, আর বাস চলেও দিনে মোটে কটা। অফিসে সেদিনই ম্যানেজারের সাথে কথা হতে হতে ইয়োসেমিতির কথা উঠলো, উনি বললেন পার্কের ভেতরে না থাকলে মজা নেই ইত্যাদি।
    প - কিন্তু আমাদের তো ক্যাম্পিং গিয়ার নেই। ক্যাম্পগ্রাউন্ড পাওয়াও তো লটারির ব্যাপার।
    ম্যা - আমার সবি আছে, কিন্তু ছিঁড়ে মতন গেছে, নইলে তোমাকে দিতাম।
    প - না, আমি হোস্টেল দেখছি, যদি পাই।
    ম্যা - তুমি এক কাজ কর, হাউসকিপিং ক্যাম্পটা একটু নজর রাখবে, সপ্তাখানেক আগে ওখানে মাঝে সাঝে ক্যান্সেল হয়, জায়গা পেয়ে যেতে পারো। নিজের গিয়ার-ও নিয়ে যেতে হবে না, অথচ ক্যাম্পিঙও হবে। আর খুব বেশি দামি-ও নয় …

    কাজের কথা সেরে উনি বিদেয় হওয়ামাত্র ওয়েবসাইট খুল্লাম, দেখি ১৯-২১ জুলাই ভর্তি, কিন্তু ১২-১৪ সত্যিই হঠাত জায়গা খালি হয়েছে ওই ক্যাম্পে! আমি শিগগির অ-বাবুকে ফোন করলাম।
    প- পার্কের ভেতরে থাকার জায়গা পেয়েছি।
    অ - তাহলে আমরা তো বাসে করেই যেতে পারবো ?
    প - সেরকমই মনে হচ্ছে।
    অ - হ্যাঁ, আমাকে অফিসের একজন বল্লো যে আমেরিকায় লং ড্রাইভ কখনো করোনি যখন তাহলে প্রথমেই ইয়োসেমিতি যেতে যেও না…
    প - (অফিসের একজনকে মনে মনে গাল দিতে দিতে) কিসে করে যাবো সে পরে ভাববো, আপাতত আমি এয়ারবিএনবি ক্যান্সেল করে হাউসকিপিং ক্যাম্প বুক করছি।

    সেদিনই সন্ধেবেলা অফিস থেকে ফিরে মোটামুটি একটা সন্ধিস্থাপন হল, অ্যামট্র্যাকের টিকিট কাটা হল, এবার খালি অপেক্ষা! পাকেচক্রে বেড়ানো আর বিয়ের ছয় বছর পুর্তির সমাপতন! একজন আবার ফিরে গেল নিয়ম করে প্যানিক করার কাজে, আর আমি শুরু করলাম ইন্টারনেট চষে ফেলা একটা প্যাকড প্ল্যান বানানোর জন্য।
  • পুপে | 237812.69.3434.34 | ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৬:২১456810
  • বেড়ানোর প্ল্যান বানাতে গিয়ে অতিরিক্ত উত্তেজনার ফলে আমি প্রায়শই নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরার মতন অবস্থা করে ফেলি, অ-বাবু এই প্রবণতার সাথে হাড়ে হাড়ে পরিচিত। তাই সে দিনে দুবার করে মনে করিয়ে দিতে ভোলে না যে এক দিনে অনেক বেশি কিছু রাখবি না কিন্তু, মজা মাটি হবে, একবারে সব ঘোরা যায়না মনে রাখবি। উত্তরে “হুঁ হুঁ” আর ঘাড় নাড়া ছাড়া আর বেশি কিছু উত্তর দেবার প্রয়োজন মনে না করে ব্লগ পড়তে থাকি, উনি যখন কুটোটি নাড়বেন না তখন আমি যা ঠিক করবো তাই হবে। গুরুর ব্লগ, ট্রিপঅ্যাডভাইজার , হাইকারদের বক্তব্য, পার্কের নিজেদের ওওেবসাইট ইত্যাদি ঘেঁটে মোটামুটি ব্যাপারটা এরকম দাঁড়ায়ঃ
    ১২ জুলাইঃ দুপুর দেড়টা নাগাদ পৌঁছনো, ঘরে জিনিস রেখে দুটোর মধ্যে বেরিয়ে পড়া। তারপর লোয়ার ইয়োসেমিতি ট্রেল আর কুকস্‌ মিডো ট্রেল (এরা একেবারে দুধেভাতে ট্রেল)। পার্কে দু ধরনের ফ্রি শাটল বাস চলে - ভ্যালী শাটল আর এল ক্যাপিটান শাটল। এই দু নম্বর শাটল ধরে এল ক্যাপিটান মিডো, সেখানে এল ক্যাপিটান এবং ক্যাথিড্রাল রক্সের ছবি টবি তোলা, হেঁটে ব্রাইডালভেল ফলস অবধি যাওয়া, হেঁটে ক্যাথিড্রাল বিচ অবধি আসা, এখান থেকে থ্রি ব্রাদারস পীক দেখা। আবার শাটল বাসে চেপে মিরর লেক ট্রেলহেডে যাওয়া। মিরর লেক ঘুরে তারপর বাস চেপে ইয়সেমিতি ভ্যালি লজের সামনে আসা এবং মুনলাইট ট্যুরের বাস ধরা। ১৫ জুলাই পূর্ণিমা, তাই ১২-১৩-১৪-১৫ টিকিট কেটে চাঁদের আলোয় ভ্যালী দেখার বন্দোবস্ত আছে।
    ১৩ জুলাইঃ একটা গামা ট্রেল লুপ - মিস্ট ট্রেল - প্যানোরামা ট্রেল - ৪ মাইল ট্রেল, ফিরে হাউসকিপিং ক্যাম্পের লাগোয়া মার্সেড নদীর বিচ থেকে সূর্যাস্ত দেখা।
    ১৪ জুলাইঃ প্রথম দিনে যদি কিছু বাদ পড়ে যায় সেসব জিনিসপত্র দেখা। এবং প্রথম দিনের সবকিছু ঠিক থাকলে আপার ইয়োসেমিতি ফলস ট্রেলের যদ্দুর সম্ভব হয় গিয়ে ফিরে আসা এবং বিকেলে বাড়ি ফেরার বাস ধরা।
    প্ল্যান দেখেই হাঁপিয়ে যাবে ভেবে অ-বাবুকে এটা আর দেখাই না, কিন্তু নিজের মাথার মধ্যে একটা র‍্যাঙ্কিং করে রাখি যে সময় কম পড়লে কি অর্ডারে এবং কি কি বাদ দেওয়া যাবে।
  • S | 236712.158.566712.145 | ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৮:০৮456811
  • আচ্ছা আমার বাড়ি ইয়েলোস্টোনের খুব কাছে। তাই জন্য কি আমি এই টইয়ের কতৃপক্ষের কাছ থেকে একটা নোবেল টোবেল পাবো?
  • hu | 236712.158.5678.189 | ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৮:৫২456812
  • দুরন্ত হচ্ছে
  • | 237812.68.565623.145 | ১৭ জুলাই ২০১৯ ১৫:৩৭456813
  • চমৎকার হচ্ছে পুপেখুকী।
    আমি অ-বাবুর সাথে একমত, একদিনে গাদাগুচ্ছের জায়গা ঐ টিপিক্যাল বটুদের মত না র্খাই ভাল। সব জায়গাকেই তো একটু সময় দিতে হয় রে বাপু!
  • Tim | 890112.162.671223.123 | ১৮ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৮456814
  • চমৎকার হচ্ছে। চলুক।
  • পুপে | 237812.68.9008912.210 | ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৫:১৪456815
  • বারোই জুলাই ভোর বেলা সান হোসে থেকে বাস চেপে গেলাম স্টকটন, মেঘে ঢাকা ছোট ছোট পাহাড়ের পাশ দিয়ে রাস্তা ছিল, ঘুমে কাদা আমরা চোখ পিটপিট করে হয়তো মোটে দু-তিনবার জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়েছি। স্টকটন থেকে ট্রেন নিয়ে যাবে তারপর মারসেড। ট্রেনে যেতে যেতে দুপাশে একটানা চাষের খেত- বর্ধমান লাইনে ট্রেনে করে যেতে এমনি দেখতে পেতাম। তবে এখানে ধান চাষ হচ্ছে না; কি একটা ফলের গাছের সারি, মনে হয় পীচ, আর মাঝে মাঝে গরু ছাগলের খামার। রেলগাড়িতেই এর ওর থেকে খবর পাওয়া গেল এবারে নাকি খুব বরফ হয়েছিল শীতে, এখনো সব জলপ্রপাতগুলো ঝমঝমিয়ে বইছে, নইলে অন্য বছর ইয়োসেমিতি ফলস এসময়ে প্রায় শুকিয়ে যায়। তবে নদীর রাস্তায় তৈরী হওয়া ঝর্নাগুলো যেমন মার্সেডের গতিপথে নেভাদা কিম্বা ব্রাইডালভেল ক্রিক থেকে তৈরী ব্রাইডালভেল ফলস সারা বছর থাকে। মার্সেড নদী থেকেই মারসেড কাউন্টির নাম এসছে, ইয়োমেসিতির পশ্চিম থেকে পুবে বইছে সে। এ নদী নাকি তৈরী হয়েছিল সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালা মাটির তলা থেকে জেগে ওঠার সময়; তারপর দিন গেছে, হিমবাহ আচ্ছা করে পালিশ করেছে পর্বতমালার গা, তৈরী হয়েছে খাড়াই ঢাল, গভীর খাত; লাফাতে লাফাতে নেমেছে মার্সেড নদী, সবজে নীল রংতুলি দিয়ে গ্র্যানাইটের ক্যানভাসে আঁকতে আঁকতে।

    মার্সেড ষ্টেশনে নেমেই দেখি পার্কে যাবার ইয়ার্টস বাস দাঁড়িয়ে। এদের সাথে অ্যামট্র্যাকের কিছু বন্দোবস্ত আছে, ট্রেন না আসা অবধি বাস অপেক্ষা করবে। দুপাশের পাল্টাতে থাকা ভূপ্রকৃতি - খেত খামার, ঢেউখেলানো হলদে ঘাসজমি, শুকনো ছোট গাছে ঢাকা টিলা, রেডউড জঙ্গল ইত্যাদি পেরিয়ে বাস এসে পড়লো মারিপোসা, তারপর ধরে ফেললো মার্সেড নদী। আমরা চলেছি স্টেট রুট ১৪০ দিয়ে, সোজা পার্কে ঢুকে যাবে এই রাস্তা। মারিপোসা থেকে একটা অন্য রাস্তা গেছে মারিপোসা গ্রোভের দিকে, ইয়োসেমিতির একেবারে দক্ষিণ দিকের শেষভাগ, যেখানে জায়ান্ট সেকোয়া গাছের রাজত্ব। তবে এবারে ওদিকে যাওয়া প্ল্যানে নেই, পরে কখনো সময় নিয়ে আসতে হবে আবার। বাসের কোনদিকে ভালো ভিউ পড়বে জানা নেই, দুজনে বসেছি দু দিকে, যখন যেদিকে দেখার মত কিছু আসছে, তখন সেদিকে যাচ্ছি, তবে এই ব্যবস্থা অসুবিধেজনক হওয়ায় পরের দিকে আর চালানো গেল না। তারওপর অ-বাবু বলে বসলেন - “ ওঃ এই রাস্তা, এ তো ভারতে কতই চালিয়েছি, কি যে বাজে বকলো অফিসের লোকটা, গাড়ি নিয়ে এলেই হত, ইচ্ছেমত দাঁড়ানো যেত জায়গা খুঁজে…।” কটমট একটা বিষদৃষ্টি হেনে নিজের সীটে বসে জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে মাথা ঠাণ্ডা করতে লাগলুম।

    পার্কে ঢোকার পর ঝর্নারা আর পাহাড়েরা রকম রকম আকার প্রকার নিয়ে এদিক সেদিক থেকে উঁকি মারছে, মনটা ভালো না হয়ে উপায় নেই। তবে সে কি ট্রাফিক, গাড়ির লম্বা লাইন, টুক টুক করে বাস-ও চলেছে তার পিছন পিছন। তবে এ তো আমার জানা ছিল, পার্কের ওয়েবসাইটেই লেখা ছিল সপ্তাহান্তে মারাত্বক জ্যামের কথা, তারা সেখানে বলেই রেখেছে যে গাড়ি রেখে দিয়ে ভ্যালির সাটল বাসে চেপে ঘুরতে, পয়সা লাগে না। যে লোক কোন খোঁজখবর পড়াশোনা না করে পরের ভরসায় চলে এসেছে, সে অবাক হয়ে একবার বললো - “নাঃ, গাড়ি না এনেই ভালো হয়েছে দেখছি… “
  • পুপে | 237812.68.9008912.210 | ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৫:১৫456816
  • আরে দ-দি, কিছু বাদ পড়ে গেলে মনটা কেমন খচখচ করতে থাকে যে অমুক জিনিসটা দেখা হল না :-(
  • পুপে | 237812.68.9008912.210 | ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৫:৫৯456821
  • ছবিগুলো এমবেড করতে পারছি না। :-(
    সে যাক, ক্লিক করলে দেখতে পাওয়া যাবে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন