এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ২০১১ ও পরিবর্তন

    tatin
    অন্যান্য | ৩১ ডিসেম্বর ২০১০ | ৬৫৭৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • rupankar sarkar | 110.227.168.236 | ০৩ জানুয়ারি ২০১১ ১৮:৩০464567
  • নিনা (দেবী বাদ দিতে বলছেন) কে প্রথমেই জানাই, রাগের কোনও প্রশ্নই নেই, গোল টেবিলে চা/কফির সাথেও তো তক্কাতক্কিতে তুমুল চ্যাঁচামেচি হয়, যে রাগে, সে এককাপ চা বেশী খায়। আপনি, এবং আর যাঁরা আমার বিপরীতে মত প্রকাশ করেছেন, তাঁদের আমিই ঠিকমত বোঝাতে পারিনি, দোষটা আমারই। পুরো বাংলা বলতে কী বোঝাতে চেয়েছি তার উদাহরণ ; -

    ১)দুগগো পূজোর প্রাক্কালে, টি ভি র- এক অনুষ্ঠানে (টিভি-টাও বাংলা নয়,আমি তেমন কথা তুলিনি)এক সেলিব্রিটির ( এটাও বাংলা নয়, ইচ্ছে করেই লিখলাম, এতে আপত্তি নেই, তা বোঝাতে) প্রাক্তন চিত্রাভিনেত্রী স্ত্রীর ইন্টারভিউ(বাংলা নয়) চলছে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছে, - এবার পূজোয় কেনাকাটা কেমন হলো ? তা তিনি বললেন, - না, পূজোয় তো বিশেষ কিছু নয়, আমার কেনাকাটা তো সারা বছরই চলে, 'বাটিয়া', পূজোর আগে মল-এ ঘুরে ঘুরে দেখতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। এবার আমি পড়েছি বিপদে, - 'বাটিয়া' শব্দের মানে কিছুতেই বুঝছিনা, বাটি মানে জানি, টিয়া মানেও জানি, কিন্তু বাটিয়া - নতুন কোনও আমদানী ? কি জানি, বুড়ো মানুষ, যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছিনা বোধহয়। ওঁর ইন্টারভিউ আরো বেশ কিছুক্ষণ শোনার পর বুঝলাম, ওটা 'butyeah'। উনি এরকম বিচিত্র শব্দাবলী মাঝে মাঝেই গুঁজছিলেন ওঁর প্রাথমিক শিক্ষা(?)টা কনভেন্টে, এটা বোঝাতে।
    ২) একজন 'বাডিং'ক্রিকেটার - ( বাডিং মোটেই বাংলা নয়, এর বাংলা প্রতিশব্দ -'উঠতি'। ইচ্ছে করেই লিখলাম, কী বলতে চাই তা জানাতে) তিনি রঞ্জি টনজি খেলেছেন, জাতীয় দলে সুযোগ পেতে পারেন এরকম একটা কথা শোনা যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি, জাতীয় দলে খেললে ( বিশেষত: ক্রিকেট) ইংরিজী না জানলে বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের সামনে মান থাকেনা। ভারত-পাকিস্তানের বহু ক্রিকেটার ইংরিজী স্বচ্ছন্দে বলতে পারতেননা, ( সেহবাগ, হরভজন, ইঞ্জামাম এবং আরো) এঁরা এখন মাস্টার রেখে শিখে, কোনও মতে উতরে দেন। তা এই বাডিং বাবুকেও তো অভ্যাস করতে হবে !
    প্রশ্ন(টিভি) - কি মনে হচ্ছে, ডাক পাবে ?
    উত্তর - আই থিংক,ভাল খেললে একদিন না একদিন ডাক পাবই।
    প্রশ্ন - এর জন্য বিশেষ কোনও পরিশ্রম করছো ?
    উত্তর - আই থিংক, আলাদা করে কিছু করার দরকার নেই, নিজের খেলা চালিয়ে যাব।
    প্রশ্ন - বোলিং-এর সঙ্গে ব্যাটিংটাও নজর দিচ্ছ তো ?
    উত্তর - আই থিংক, দুদিকে নজর দিতে গেলে কোনওটাই ভাল করে হবেনা।
    এর পরও যতগুলো প্রশ্ন ছিল, তার সবকটার উত্তরেই উনি 'আই থিংক' আউড়েছেন। উনি ঐটুকু ইংরিজী-ই শিখেছেন, কিন্তু না বললে লোকে কী ভাববে - তাই বলছিলাম লজ্জা ঘৃণা ত্যাগ করে........
  • sayan | 12.20.48.10 | ০৩ জানুয়ারি ২০১১ ১৯:১৮464568
  • lol @ "বাটিয়া' (""বাটিয়া'র প্রতি অট্টহাস্য' ইচ্ছা করেই লিখলাম না।)

    এই "থ্রেড'টা ("সুতো' বললে আর.হুতো রেগে যাবে) ভালো চলছে। চলুক, চলুক।
  • Sibu | 99.203.26.41 | ০৩ জানুয়ারি ২০১১ ২০:৫১464569
  • রেটোরিক্যাল প্রশ্নের উত্তর দেব না ঠিক করেছি। তাতে আসল কথা থেকে বড্ড ডাইভার্শন হয়।

    @Shibanshu। আপনার মূল বক্তব্য হল পরিভাষা নিয়ে। বাংলায় বিজ্ঞান ইত্যাদি চর্চার জন্য পরিভাষা তুলনায় ছোট সমস্যা। কেন না উপযুক্ত পরিভাষা না পাওয়া গেলে ইংরাজী, ল্যাটিন, গ্রীক শব্দ সরাসরি বাংলায় ঢুকিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু ক্রিয়া ওভাবে ধার করা যায় না। এখন আপনি বলেছেন ইংরাজী এগিয়ে আছে কেন না তারা আগে থেকে বিশেষ্যপদের ক্রিয়া বর্গীকরণ শুরু করেছে। সেটা পুরোটা ঠিক নয়। একটু খেয়াল করলে দেখবেন, সংস্কৃত ক্রিয়া বাংলার তুলনায় অনেক বেশী পোক্ত জিনিষ। সেখানে কথায় কথায় অক্সিলিয়ারী ভার্ব লাগাতে হয় না। আমাদের সমস্যা হল, আমরা হুতোম দিয়ে শুরু করে ভাষাটাকে বাস্টার্ডাইজড করে ফেলেছি, আর মেছুনী-জেলেনী-দের অ্যাকোমোডেট করতে গিয়ে সংস্কৃত থেকে সরে গেছি। বঙ্কিমবাবু এ নিয়ে একটা ভারী চমৎকার লেখা লিখেছিলেন, যেটা এখনো খুবই প্রাসঙ্গিক।

    জার্মান ও জাপানীদের সাথে আমাদের তুলনা ঠিক না। তাদের কখনো কেরানীগিরি করে বা কল সেন্টারে চাগরি করে খাবো, এই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বড় হতে হয় নি। কাজেই ছেলে ইংরাজী না শিখলে কি খাবে, সে নিয়ে তাদের বাবা-মারা কখনো আকুল হয় নি। তাতে তারা নিজেদের মত করে নিজেদের ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা করেছে, ও নিজেদের মত করে ভাষা তৈরী করে নিয়েছে। আমাদের বেলায়, খেয়াল করলে দেখবেন, ছেলে বাংলা না শিখলে তার একটু অসুবিধা হয়। কিন্তু ইংরাজী না শিখলে মুশকিল হয়। যেখানে গুরুর ভাষা ও পেটের ভাষার মধ্যে বিরোধ, সেখানে পেটের ভাষাই জেতে।

    আর একটা কথা। ইমোশনাল কথাবার্তা এই আলোচনা থেকে বাদ থাকুক। পৃথিবীতে বহু ভাষা জন্মেছে আর মরেছে। সে পরিণতি বাংলারও হতে পারে। রবিঠাকুরের ভাষা বলে নিয়ম বাংলার বেলায় আলাদা হতে পারে না। বস্তুত: যদি আজকে হঠাৎ ভোজবাজীতে সব বাঙালীর মাতৃভাষা ইংরাজী হয়ে যেতে পারত, তো আমি তাইই চাইতাম। সেটা অসম্ভব বলেই এত কথা।
  • Sibu | 99.203.26.41 | ০৩ জানুয়ারি ২০১১ ২১:০৪464570
  • @Rupankar-বাবু। দু-চাট্টে ইংরাজী (বা, আপনার উদাহরনে pig english) যদি লোকে বলে তো ক্ষতি কিসের? ধরুন নজরুল অনেক আরবী-ফার্সী শব্দ ব্যবহার করতেন। তাই নিয়ে লোকে পোচ্চুর আবাজও দিত। কিন্তু তাতে বাংলার কিছু ক্ষতি হয় নি। সে সব শব্দ বাংলায় ঢুকেই গেছে।

    মোদ্দা কথা হল, আমার আপনার সৌন্দর্য্যবোধ আহত হয় বলে লোকে তাদের ভাষা বদলাবে না। তাতে ভাষার ভালই হবে। সতী মেয়ে, ও একনিষ্ঠ ভাষা, বড্ডই আনইন্টারেস্টিং। সাত ঘাটের জল খেয়ে যে ভাষা বহুৎ জারজ শব্দ ও বাগ্‌ধারা জড়ো করেছে (এই যেমন ইংরাজী) সে ভাষা আম্রপালির মতই মোহময়।
  • ranjan roy | 122.168.165.3 | ০৩ জানুয়ারি ২০১১ ২৩:১৭464571
  • তিনটে ব্যাপারে কথা বলতে চাইছি।

    এক, SDA এর বক্তব্যের সঙ্গে একমত। আমি আইটি'র কেউ নই, কিন্তু একটা ইম্প্রেসনিস্টিক ভিসন আছে যে ওরা অনেকটা SEZ গোছের মানসিকতা নিয়ে স্টাফ এর সঙ্গে ব্যবহার করে।
    খেয়াল করুন, SDA আই টি কোম্পানিগুলোর ""হারামিপনা"" বন্ধ করতে চাইছেন। আইটি কোম্পানিগুলোকে নয়।
    গুরু'র যাঁরাই আইটির দৌলতে বহাল তবিয়তে আছেন তাঁরা কেউ আইটির ""হারামিপনা''য় উপকৃত এমন তো মনে হয় না। কাজেই SDAর্স্বপ্ন সত্যি হলে কার কি ক্ষতি হবে? বরং লাভের সম্ভাবনাই বেশি।

    দুই, রুপংকরবাবুকে ধন্যবাদ। আসলে মাঝে মাঝে আমার প্রিয় এক কবি ঈশ্বর গুপ্ত মশায়ের অক্ষম নকল করে ফক্কুড়ি করার চেষ্টা করি।:))))))

    তিন, কিন্তু আপনার ২ জানুয়ারি ৭/৩৪ এর পোস্ট পড়ার আগে আমিও বুঝতে পারিনি আপনি আসলে কী বলতে চান! ভাষা, গতি, মিশ্রণ নিয়ে শুরুর দিকে সবাই যে আপত্তি গুলো তুলেছিলেন সেসব প্রাথমিক পাঠ যে আপনার অজানা নয়, সে নিয়ে আমার কোন ভ্রম ছিল না। তাই আরো বেশি বুঝভম্বুল হয়ে গেছিলাম। ভাবছিলাম দাদা বলতে চাঐছেন কী? যাকগে এখন বেশ পোস্কার হয়েছে।

    মূলত: শিবাংশুর বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েও শিবুর বক্তব্যটি আগ্রহের সঙ্গে বোঝার চেষ্টা করছি। এখনও পারিনি। আলোচনা চলুক।
  • a x | 99.53.140.72 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ০০:২২464572
  • রূপংকর, আপনি যে উদাহরণ দুটো দিলেন, ওটা মনে হয় ভালো ভাবে কথা বলতে পারার অক্ষমতার জন্য। যেকোনো ভাষাতেই ওটা ওনারা করতেন। ঠিক ইংরেজি জানি দেখাতে হবে, এই মানসিকতা থেকে না, বাট ইয়াহ, আই থিংক, এগুলো ফিলার (filler, feeler না :-))।
    আমার নিজের ধারণা এবং এখানে আমার হিন্দিবিদ্বেষ কাজ করে বলেও আমার মনে হয়, এর অনেকটাই উ:ভারতের অবদান। হিন্দি সিরিয়াল, সিনেমাতে দেখবেন লোকে এইভাবে কথা বলে। শুধু ইংরেজি না, ইনফ্যাক্ট, ইংরেজির চেয়েও হিন্দি গুঁজে দেওয়া এখন অনেক বেশি "কুল" (kewl, cool না)। আমাদের চারপাশের এই বিবিধ শব্দের ধাক্কা যেভাবে আসছে, আমরা কথাও বলছি সেইভাবে। অন্যভাবে বলতে গেলে সচেতন ভাবে, বিশেষ প্রয়াস দিয়ে বলতে/লিখতে হবে। এই শেষ বাক্যটার মতই। আমি প্রয়াসের জায়গায় এফর্ট লিখতেই বেশি সাবলীল, এফর্ট না লিখলেও আমি ইংরেজি জানি। লিখলেও জানি। কিন্তু আমি এফর্ট লিখছি বলে বাংলাতে এফর্ট ঢুকে পড়বে বলে মনে হয়না। এরমধ্যে নি:সন্দেহে একটা রাজনীতি রয়েছে, ইংরেজি ও হিন্দির প্রভাব বিস্তার, সেটাকে প্রতিরোধ করা সমর্থন করি। কিন্তু সেই প্রতিরোধ শুধু নিজে সচেতন হয়ে বাংলা বলার মধ্যে দিয়ে আসে, বা যারা শুদ্ধ বাংলা বলছেন না, তাদের লজ্জা বা কোনো নৈতিক স্খলনের ভয় দেখিয়ে রোধ করা যায়, এটা নিশ্চয়ই আপনিও ভাবেন না।

    এই প্রসঙ্গে সিকির কথাটা ভেবে দেখার, ভাষার প্রবাহে বা তার নির্মাণে কাদের অবদান? জেলেনী, মেছুনী, বাজারের তরকারী বিক্রেতা মাসি, ছুতোর, কাগজওয়ালা, না কেরানী বাঙ্গালী, আইটি গাই, মন্টেসরি টিচার? নাকি সাহিত্যিক, কবি, সঙ্গীতকার, নাট্যকার এদের?

    একটা ভাষা কি কথ্যে একরকম আর লেখায় আরেকরকম হয়ে বেঁচে থাকতে পারে?

    যে ভাষাগুলো মরে গেছে, তারা কি মরেছে তাদের ভাষায় অন্য শব্দ ঢুকে পড়ছিল, এই জন্য, স্পঞ্জের মত শুষে নিচ্ছিল বলে, না নিজের ভাষাটাই তারা সম্পূর্ণ ত্যাগ করে, বা করতে বাধ্য হয়?

    আর হ্যাঁ শিকড়ের চেয়ে শেওলা চিরকাল আমাকে টানে বেশি। জবুথবু মানুষ আর স্রোতে ভাষা মানুষ, কোনজন বেশি সমৃদ্ধ? তাছাড়া দেখুন, শেওলা টিঁকেও আছে অনেক বেশিদিন ধরে :-)
  • a x | 99.53.140.72 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ০০:২৫464573
  • ভাসা, ভাসা, ভাষা না! এত সচেতন ভাবে লিখেও শেষরক্ষা করতে পারলাম না! ঘাড় টন্‌টন্‌ করছে! মাইরি! (এটা বাংলা তো?)
  • Nina | 68.84.239.41 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ০৫:৪৩464574
  • রূপঙ্করবাবু, এইবার বুঝলাম ঠিক কি বলতে চেয়েছেন। ধন্যযোগ ! আপনার মতের ঠিক যে বিপরীত মত আমার, তা নয়। অহেতুক ইংরেজি কিম্বা হিন্দী শব্দের ব্যবহার বাংলা বলাকালীন , অহেতুকই ! আবার অক্ষ যেমন বলেছেন , filler হিসেবে কিছু ঢুকে পড়ে, ঐ যুক্তিটাও খুব ঠিক। (আমার কিন্তু হিন্দী বিদ্বেষ একেবারে নেই, বরং হিন্দী ও ভালবাসি) আর সিকির মতন আমারও মনে হয় বাংলা ঠিক রয়ে যাবে নতুন নতুন রূপে, নতুন পুরোনো দু ডায়লেক্টেই। শিবু যেমন বলেছেন তাতে এদিক ওদিক থেকে আরবী-ফার্সি ইংরিজি একটু-আধটু ঢুকলে ক্ষতি কি? খুব বিকৃত হয়ে যাক তাও চাইনা আবার খুব রিজিড থাকলেও অসুবিধে :) আমার ছেলে মেয়ে কে এই দেশে খুব মন দিয়ে বাংলা শিখিয়েছি--আমাদের বাড়ীতে চারজনেরই কথাবলার ভাষা বাংলা। ছেলে কলেজেও ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে বাংলা পরীক্ষা দিয়ে উতরে গিয়েছিল। পরীক্ষক ছিলেন এক রাশিয়ান ভদ্রলোক , খুবই সাধুভাষায় প্রশ্নপত্র ছিল--যেমন পিতাশ্রী ও মাতাশ্রীর নাম লিখ :)
    এদিকে আবার দুজনেই বলে পিয়ানো খেলছি ---আবার মন দিলে ঠিক বলে, বাজাচ্ছি--এই আর কি।
    মোদের গরব মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা ! এর কোনও পরিবর্তন চাইনা।
  • siki | 155.136.80.174 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ০৯:০৩464575
  • অক্ষদা দিদিমনি বলেই দিয়েছেন, তাই আর লিখলাম না ফিলার সম্বন্ধে। বাংলাতেও এর উদাহরণ আছে। কাঁচা হাতের কাব্যি, যেমন উঠতি কিশোরের প্রথম কবিতা লেখার প্রচেষ্টা বা কিশোরকুমারের বাংলা গানের লিরিক বা রাহুল দেব বর্মণের বাংলা গানের লিরিকে দেখবেন এই রকমের ফিলারের ছড়াছড়ি। "তো', "যে', "রে', "ওরে' এই ধরণের।

    স্টার আনন্দ চ্যানেলে ব্যবহৃত হওয়া জনপ্রিয় ফিলার হল "কিন্তু'। সবাই জানেন। এই নিয়ে অনেক খিল্লিও হয়েছে। চ্যানেলটার আরেক নাম তাই, স্টার কিন্তু।

    আর আপনি তো কলকাতার নব্য-"বং'দের মুখে এই রকমের বাটিয়া শুনেছেন। হিন্দি বলয়ে সেকেন্ড জেন-কে (আই মিন্‌, দ্বিতীয় প্রজন্ম :-)) বাংলা বলতে শুনবেন। আমার লা-জবাব দিল্লিতে তাই নিয়ে দু-লাইন লিখেওছিলাম। ... ঐ আর কি, সেটাও এক ধরণের ডায়ালেক্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে, হিন্দি বলয়ের বাংলা ডায়ালেক্ট।
  • dukhe | 122.160.114.85 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১০:৪২464577
  • অক্সিলিয়ারি ভার্ব নিয়ে পুরো ঘেঁটে গেলাম । ওটা লাগানো বা না লাগানোতে বিজ্ঞানচর্চার অসুবিধেটা ঠিক কী ? ইঞ্জিরিতে "Iamgoing" বলতে হয়, বাংলায় 'am' টা কাটিয়ে দেওয়া যায় । তাতে কি বাংলা বেশী বলিষ্ঠ ভাষা হল ?
  • Shibanshu | 59.97.232.210 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১২:১০464578
  • @sibu পরিভাষা নিয়ে একটা সমাধান তো হয়েই গেছে, সেটা খুব বড়ো সমস্যা নয়। প্রশ্নটা জাগে তার সামগ্রিক প্রয়োগ ও ব্যবহার নিয়ে। এই 'ব্যবহার' ব্যাপারটির মধ্যে নিজস্ব মানসিকতার একটি ফলিত প্রয়োগ আছে। আমি কোনও একটি বাংলা পরিভাষা, যা সহজ ও গ্রিকলাতিনের থেকে অধিক গ্রহণযোগ্য, ব্যবহার করবো কি না, তা নির্ভর করে আমার এই মূহুর্তের মানসিক স্বাচ্ছন্দ্যের উপর। একটি জটিলতর বিদেশি শব্দবন্ধ আমার কাছে অধিকতর সরল ও লাগসই মনে হতে পারে, যদি আমি বাংলাভাষার প্রতি যথেষ্ট ভরসা না রাখতে পারি। শব্দ তো প্রতীক মাত্র। তার কার্যকারিতা নির্ভর করে আমার মনে সেটা কী অভিঘাত নিয়ে আসতে পারে তার উপর। যেমন AX ভাবেন তিনি এফর্ট শব্দের সঙ্গে অধিক স্বচ্ছন্দ, প্রয়াসের সঙ্গে নন। তিন চারশো বছর আগে য়ুরোপীয় ভাষাগুলি যখন ক্ল্যাসিক ভাষা থেকে এই সমন্বয়ের কাজটি শুরু করেছিলো তখন তাদের মধ্যেও নানা মতান্তর ছিলো। পরবর্তীকালে সেগুলি স্থায়িত্ব অর্জন করেছে। এতোদূর পর্যন্ত স্বীকৃত সত্য।

    এর পর যেটা আপনি বলেছেন, বঙ্কিমের একটি প্রবন্ধের সূত্র ধরে, সেটা নিয়ে দুটো কথা। বঙ্কিম কালী সিংহি কেন বিদ্যাসাগরের বাংলাকেও স্বীকার করতেন না। যদি সংস্কৃত ব্যাকরণের ধাতুজ ক্রিয়ার জটিল গঠন বিদ্যাসাগর সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করতেন, তবে বাংলা আজ এতোদূর পর্যন্ত আসতে পারতো না। সেকালের একজন শ্রেষ্ঠ সংস্কৃত পন্ডিত হিসেবে বিদ্যাসাগর তৎকালীন সমস্ত সংস্কৃত পন্ডিতদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন, বাংলাকে একটা সম্পূর্ণ ভাষার মর্যাদা দিতে, সংস্কৃতের উপভাষা হিসেবে তিনি একে স্বীকার করতে চাননি। কারণ বিদ্যাসাগর তাঁর সমস্ত মাহাত্ম্য সত্বেও ছিলেন ইতরযানী বাঙালি সভ্যতার আইকন ( ঐ মেছুনি-জেলেনিদের প্রতিনিধি)। বঙ্কিম ছিলেন সম্পূর্ণভাবে জায়মান য়ুরোপ প্রভাবিত মধ্যবিত্ত সংস্কৃতির প্রতিভূ। ভাষা ও ভাবের সূক্ষণ্‌তার প্রশ্নে বঙ্কিম বিদ্যাসাগরের সক্ষমতা বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করতেন। তাই বঙ্কিমের কোনও একটি বিচ্ছিন্ন ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা ভাষার সামগ্রিক গঠন কী হবে তা নিয়ে একমত হওয়া যায়না। এমনকি রবিবাবুও এই প্রশ্নে বিদ্যাসাগরের লাইনটিই গ্রহণ করেছিলেন, বঙ্কিমের নয়।

    একটা কথা আমার কাছে স্পষ্ট, মাতৃভাষার প্রসঙ্গে আমার কিছু 'ইমোশনাল' মাত্রা আছে। এটা হয়তো আপনার সঙ্গে মিলবে না। কিন্তু এই 'ইমোশন' এই জন্য নয় যে বাংলা একটি অক্ষম দুগ্‌ধপোষ্য ভাষা, যাকে নিষ্করুণ পৃথিবীর অত্যাচার থেকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন আছে। এই 'ইমোশন'টি ব্যবহার করি পৃথিবীর আর পাঁচটা 'উন্নত' ভাষার সঙ্গে বাংলাকেও যাতে তার উপযুক্ত স্বীকৃতি দেওয়া হয়, সেই দাবিতে।

    জর্মনি বা জাপানকে দুশ বছরের ঔপনিবেশিক খোঁয়ারির বোঝা বইতে হয়না, তাই তাদের ভাবার প্রকারটা আলাদা। আগামী দুশো বছরে কালচক্রের আবর্তনে বাংলাকে যদি পৃথিবীর একটা মুখ্য ভাষা হিসেবে উঠে আসতে হয়, তবে তাকে নিজস্ব চরিত্র সৃষ্টির উদ্যমটি এখন থেকেই গ্রহণ করতে হবে, যেটা এককালে ইংরেজরা করেছিলো।

    ভাষা একটা বহতা নদী, প্রতি বাঁকেই তার নতুন নতুন রূপ দেখা যায়। তা বলে নদীটি বদলায় না। চর্যাপদ যদি গঙ্গোত্রী হয় তবে বলাকা হয়তো হাজিপুরের গঙ্গা। কিন্তু স্রোতটি থাকছে, এটাকে স্বীকার না করা সঙ্গত হবেনা । কারণ বাংলাভাষা ওঙ্গিজারোয়াদের ভাষা নয়। সংখ্যাগত বিচারে তা সারা বিশ্বে প্রধান ভাষাগুলির মধ্যে পড়ে।

    বাংলা ইংরিজির মতই বহুমাত্রিক ভাষা, কারণ গত একশো বছর ধরে এই আত্তীকরণের প্রয়াস অব্যাহত আছে। এখন প্রশ্ন, বিশেষ্যপদের 'ক্রিয়া'ন্বয়নের কাজটা আমরা করবো ( আমারও মনে হয় কাজটি জরুরি), না বাংলাভাষার গঙ্গাযাত্রার জন্য কর জোড়ে অপেক্ষা করবো। তবে আমি আশাবাদী এই কারণেই যে আমাদের মতো চায়ের পেয়ালায় তুফানতোলা বিপ্লবীরা সামগ্রিকভাবে বাংলাভাষা ব্যবহারকারী জনতার পাঁচ শতাংশও নয়। 'মেছুনি-জেলেনি'রা বেঁচে থাকুক।
  • rupankar sarkar | 110.227.68.37 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:১২464579
  • প্রথমেই সবিনয়ে নিবেদন করি, এই যে thread বা সুতো চলছে, তার মাথা একদিকে ধরে না রাখলে জট পাকিয়ে যাবার সম্ভাবনা প্রবল। গোড়াতেই বলা হয়েছিল, রয়দার (কেন rather লিখলাম, পরে বলছি ) লিঙ্কায়িত করা হয়েছিল, ২০১১ তে কে কী পরিবর্তন চান ( ফেসবই-এর লিঙ্কের আগে ছিল, -'না হবার সম্ভাবনা আছে' জাতীয় কোনও বাক্য) তো এই অধম যে যুগের লোক, তারা তো পিছুটানের প্রভাবে নিজেদের সময়ে বলা/শোনা বাংলার প্রতি টান থাকবেই। এবং চাইলেই যে হবে তা নয়, উল্টোটা হবার সম্ভাবনাই যে প্রবল, তা তো বলার অপেক্ষা রাখেনা।
    বহু জন(person,মহিলাদের ধরে)পক্ষে/বিপক্ষে বললেন, এবং সুস্থ আলোচনার তো এটাই লক্ষণ। তা না হলে সুতো কেটে দিতে হত। দেখলাম একমাত্র রঞ্জনবাবু আমার মনের কথা খানিক বুঝলেন। এইবার আমি শিবুবাবুর সঙ্গে একমত, বাংলাভাষায় ভাব প্রকাশের দুর্বলতা নিয়ে, তা না হলে এত লিখেও মাত্র একজনকে বোঝাতে পারলাম কেন। অবশ্য ভাষা নয়, আমার নিজেরর দুর্বলতাই বেশী বলে ঠাউর হয়।
    যাই হোক, 'বাটিয়া' এবং 'আই থিঙ্ক' কে filler বলে মানতে আমি গররাজী। ফিলার প্রধানত: দুই প্রকার, ১) যেখানে ইংরিজী/হিন্দী।অউর্দু শব্দের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বাংলার চেয়ে আগে তা মনে আসছে, ২)যেখনে দুই বা ততোধিক বাংলা শব্দের বদলে একটি ঐ ধরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আমার ওপরে লেখা 'rather' এই ধরণের 'আধুনিক' ফিলার ( যদিও এই ব্যবহার আমার নিজের মন:পুত নয়)। বাটিয়া-র জায়গায় অনায়াসে 'তবে' বলা যেত, যেটা এই যুগেও বহুল প্রচলিত, আর, আই থিংক ছাড়া প্রত্যেকতি বাক্যই স্বয়ংসম্পূর্ণ, ওটি একেবারেই 'ফালতু'।
    ফিলার ছাড়াও রিপ্লেসমেন্টের ব্যাপার আছে। কিছুদিন আগেও প্রচলিত ছিল এমন বাংলা শব্দ এখন খুব একটা ব্যবহার হচ্ছেনা, তার বদলে টি ভি সিরিয়ালে দেখা/শোনা শব্দ গেড়ে বসেছে এমনও হয়। আমি বেশ কিছু 'আরবান' ( এটা রিপ্লেসমেন্ট,আরবান বলতে বাংলা 'শহুরে'র বাইরে আরো কিছু) কিশোর-কিশোরী-র ওপর নিরীক্ষা করে দেখলাম, detective এর বাংলা জিজ্ঞেস করলে সবাই (ফ্ল্যাটবাড়ি/ম্যান্সন/বস্তি) একবাক্যে 'জাসুস' বলছে, 'গোয়েন্দা' শব্দটা মনে করিয়ে দিলে, ওদের মধ্যে কেউ কেউ 'ও-হ্যাঁ' বলছে, বাকিরা বলছে, কোনওদিন শোনেনি।
    এই সব ফিলার বা রিপ্লেসমেন্ট কালের ধর্মে এসেছে, এদের নিয়েও 'পুরো' বাংলা বলা যায়, বাটিয়া, আই থিংক, ছাড়াই। ( বলে, আমার ধারণা, সবাই যদি বলেন 'ভুল' - তো ভুল !!)
  • pi | 72.83.86.24 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:৩০464580
  • দুখেদার মত আম্মো auxiliary verb নিয়ে পুরো ঘেঁটে।
    auxiliary verb কম লাগাতে হয় বলে সংস্কৃত বাংলার চেয়ে শক্তপোক্ত ভাষা, ওদিকে ইংরাজী ও আবার বাংলার চেয়ে বেশি মজবুত ভাষা, কিন্তু তাতে আবার গুচ্ছ auxiliary verb লাগাতে হয়।
    ঘাঁটবো না ? :(

    আর এটার সাথে বিজ্ঞান চর্চার অসুবিধের সম্পর্ক নিয়েও বেশ ঘাঁটছি। কোনো উদাহরণ দিলে ভালো হয়। জার্মান, জাপানীরা কেমনভাবে সুবিধার জন্য ভাষার পরিবর্তন করেছে, সেটা জানতে সিরিয়াসলি ইচ্ছুক।

    একসাথে মেছুনি, জেলেনি ও সাহিত্যিকদের ভাব প্রকাশের ও কাজের ভাষা হওয়া নিয়ে এবং অন্যদের কাজ তো দূরস্থান ভাব প্রকাশেও অক্ষম হওয়া নিয়ে ও এখনো ঘেঁটে কিন্তু :)।

    যাই হোক ভাষার বাস্টার্ডাইজেশন নিয়ে প্রবল উদ্বিগ্ন মুখের একটা ইমো দিলুম ( বিপ্লব রহমানের থেকে ধার করে :) )
  • pi | 72.83.86.24 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:৩১464581
  • আর আক্ষেপ বা ক্ষোভটা কী নিয়ে ? আমাদের পেটের ভাষা ইংরাজী হওয়া সঙ্কেÄও আমাদের মাতৃভাষা বাংলা বলে ? আমাদের পেটের ভাষা বাংলা না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ নেই ?
  • Baijayanta | 14.96.61.218 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:৩৫464582
  • ইতরযানী বাঙালী সভ্যতার আইকন হিসেবে বিদ্যাসাগর মশাইকে কল্পনা করাটা বেশ ইন্টারেস্টিং।

    "পুরাতন প্রসঙ্গ" থেকে শ্রীকৃষ্ণকমল ভট্টাচার্যের জবানে:

    "বিদ্যাসাগর মাইকেলের লেখা পছন্দ করিতেন না। ব্ল্যাঙ্ক ভার্স তাঁহার একেবারে অসহ্য। তিনি ক্যারিকেচার করিতেন-

    তিলোত্তমা বলে ওহে শুন দেবরাজ,
    তোমার সঙ্গেতে আমি কোথায় যাইব।

    তিনি বঙ্কিমকেও পছন্দ করিতেন না। ম্যাটার সম্পর্কে তিনি আপত্তি করিতেন না; কিন্তু ম্যানার সম্বন্ধে, স্টাইল সম্বন্ধে তাঁহার বিশেষ আপত্তি ছিল।....বঙ্কিমও বিচলিত হইলেন না। তিনি বিদ্যাসাগরের "সীতার বনবাস"কে বলিতেন "কান্নার জোলাপ"।

    বিদ্যাসাগর ঈশ্বর গুপ্তকেও দেখিতে পারিতেন না। আমার দাদার বেকনও তিনি পছন্দ করিতেন না, কারণ তাহাতে সংস্কৃত কথার সহিত ছোট ছোট বাঙ্গালা কথা ছিল। আমি ত পূর্ব্বেই বলিয়াছি, বিদ্যাসাগরের ঐ একটা প্রধান দোষ ছিল, তাঁহার ন্যারোনেস, তাঁহার বাইগট্রি, তাঁহার একান্ত "বামুন পণ্ডিতি" ভাব। এক হিসাবে ক্যাথলিসিটি তাঁহার ছিল না। যে তাঁহার প্রদর্শিত পথ না লইল, তিনি তাহাকে নগণ্য মনে করিলেন; যে তাঁহার অনবরতবিগলিত্বাষ্পাকুলিতলোচনের মত ভাষার প্রয়োগ না করিল, তাহার উপর তিনি খড়্‌গ-হস্ত।

    পরগুণপরমাণুন্‌ পর্ব্বতীকৃত্য নিতং
    নিজহৃদিবিকশন্ত: সন্তি সন্ত: কিয়ন্ত:।

    এই দুই ছত্রে "ভামিনীবিলাস"-এর কবি জগন্নাথ পণ্ডিত যে উদারতার কথা ব্যক্ত করিয়াছেন, বিদ্যাসাগরের সে উদারতা কোথায়? পরগুণের পরমাণুগুলিকে পর্ব্বতপ্রমাণ করিয়া তুলা তো দূরের কথা, তিনি ইংরাজীশিক্ষিত লেখকদিগের গুণ দেখিতেই পাইতেন না।"
  • Ishan | 122.248.182.16 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:৩৬464583
  • এই নিয়ে দেবেশ রায়ের ভারি চমৎকার একটা লেখা আছে। হাতের কাছে নেই, লেখার মতো অবস্থাও নেই। ছোটো করে বিষয়টা লিখি:

    বঙ্কিমবাবুর ভাষাভাবনা, মূলত: কলোনিয়াল। এটা কোনো আপতিক ঘটনা নয়, যে, বঙ্কিমের প্রথম উপন্যাস প্রকাশিত হয় ইংরিজিতে। বঙ্কিমের নভেলভাবনা মূলত: ইংরিজি নভেলের ভাষা এবং স্ট্রাকচারের উপরেই দাঁড়িয়ে ছিল। সেটাকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করতে গিয়ে বঙ্কিম দেখলেন, যে, ইংরিজির ভাবগাম্ভীর্য কিছুতেই বাংলায় আসছেনা। অতএব, উনি তৎসম শব্দের দিকে ফিরলেন। কপালকুন্ডলা বোধহয় বঙ্কিমের প্রথম পপুলার রচনা। তার প্রবাদপ্রতিম ডায়ালগ হল, পথিক তুমি কি পথ হারাইয়াছ? লক্ষ্য করে দেখুন, "পথিক' এবং "পথ' এবং "হারাইয়াছ', এই তিনটে শব্দ একসঙ্গে জুড়ে যে ভাবগম্ভীর ধ্বনিমাধুর্য্য তোরি হয়, সেটা আপাতদৃষ্টিতে অন্য কোনো ভাবে আনা সম্ভবই নয়। মেছুনি জেলেনিদের ভাষাতে তো নয়ই।

    খুব কৌতুহলোদ্দীপক, যে, এই চিন্তনপ্রক্রিয়া বঙ্গভাষী দীর্ঘদিন ধরে বহন করেছে। রবীন্দ্রনাথ তো করেছেনই। সাধু এবং চলিত, দুই প্রকারের ভাষার উদ্ভবও এ কারণেই। একই ভাষার মধ্যে ঘোষিত ভাবে দুটো আলাদা ভাষা, যারা কেউ কারো উপভাষা নয়, পৃথিবীর আর কোথাও খুব বেশি হয়েছে বলে জানিনা। (সংস্কৃত-প্রাকৃত এরকম এক আধটা খুচরো উদাহরণ এদিক সেদিক হয়তো পাওয়া যেতে পারে।)

    যথারীতি স্বভাব দোষে পোবোন্ধো হয়ে যাচ্ছে, ছোটো করে লিখি, যে, বলাবাহুল্য এর মধ্যে সত্যতা কিছু নেই। পাতি বাংলায়, আদতেই গম্ভীর ভাব যথেচ্ছ প্রকাশ করা যায় এবং যেত। এর গুচ্ছ উদাহরণ আছে। দুটো দিই:

    ১। দোষ কারো নয় গো মা/ আমি স্বখাত সলিলে ডুবে মরিই শ্যামা।
    -- লক্ষ্য করবেন:
    ক, "নয় গো মা" বা "ডুবে মরি' ব্যবহার করাতে ভাবের কোনো অভাব হয়নি।
    খ, "সেখাত সলিলে' জাতীয় তৎসম শব্দগুলিও কি সহজভাবে এসেছে। মেছুনি জেলেনিদের কিন্তু তৎসম শব্দে কোনো অচ্ছুৎপনা নেই। এবং এই ভাষা বাংলার মূল কাঠামোকে অক্ষুন্ন রেখেও কি দারুন ভাবে তৎসম ঐতিহ্যকে বহন করতে সক্ষম।

    ২। কথামৃত (হুহহু কোটেশন নয়):

    "এ কি ন্যাবা লেগেছে। চাদ্দিকে তোমাকেই দেখছি' বলিতে বলিতে ঠাকুর সমাধিস্থ হইলেন। ঘর নিস্তব্ধ। ভক্তগণ মহাভাবময় ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণকে -- অতৃপ্ত-নয়নে বারবার দেখিতেছেন।

    বাক্যগুলো হুবহু হয়তো এরকম না। (কথামৃত থেকে টুকব বলে আমার কাছে রাখা ছিল।) কিন্তু ভয়াবহ কিছু আলাদাও না। লক্ষ্য করে দেখুন, ন্যাবা শব্দটি কোথাও ভাবের ছন্দপতন ঘটাচ্ছেনা।

    আসলে বাংলা ভাষা ভাব প্রকাশে অক্ষম, এটা নব্য বাবুদের ইংরিজি খোঁয়াড়ির অংশবিশেষ ছিল। তাঁরা বাংলায় ভাবপ্রকাশে অক্ষম ছিলেন। সেটা তাঁদের দোষ। বাংলার না।

    --------------

    দেবেশ রায়ের নাম দিয়ে পুরোটা চালালাম, কিন্তু বস্তুত এর মধ্যে বোধহয় দেবেশ রায়ের কোনো বক্তব্যই নেই। :) উনি আসলে ক্রিয়াপদ নিয়ে অনেকটা লিখেছিলেন। বাংলা ক্রিয়াপদের যে চলন, সেটা ইংরিজির চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। তাতে শক্তির বেশি-কমত্ব প্রমাণিত হয়না। উনি লিখেছিলেন, যে, বাংলা ভাষার সম্পূর্ণ অম্য রকম একটা গড়ন হতেই পারত ( বা এখনও পারে)।

    বেশি লম্বা লিখবনা। জাস্ট একটা উদাহরণ। ধরুন, অ্যাক্সিলারেশন এর বাংলা করা হয়েছে ত্বরণ। এবার অ্যাক্সিলারেটেড পার্টিকলের বাংলা কি? ত্বরিত কণা? বিশ্রী লাগল। ত্বরণশীল কণা বললে কোনোভাবে ম্যানেজ দেওয়া যায়। কিন্তু তাতে করেও এই ধরণের পরিভাষায় বাংলার দুর্বলতাই ধরা পড়ে। ত্বরণের জায়গায় ঊর্ধ্বগতি বর্ধনশীল বেগ, যাই ব্যবহার করুন, সমস্যাটা একই থাকবে।

    কিন্তু এটা, মানে এই সমস্যাটা বাংলা ভাষার সমস্যা নয়। ভাষাকে না বোঝার সমস্যা। ইংরিজিতে ভার্বের শেষে ed লাগিয়ে দিলেই অ্যাডজেক্টিভ হয়ে যায়, বাংলাতেও তা প্রত্যাশা করে চলা। ত্বতিত কেন, ত্বরণশীল কেন, ওটা ত্বরণে চলা কণা লিখুন। ঝামেলা চুকে গেল। বাংলা ভাষার বেসিকে না ঢুকে অন্য জায়গা থেকে নানা বস্তু আরবিট কপি করতে গেলে ভাষাকে দুর্বলই লাগবে।

    অবশ্য ত্বরণ শব্দটা নিয়েও আমার আপত্তি আছে। সেটা পরিভাষা বানানোর সমস্যা। সেটা পরে। অন্য কোনো দিন।

  • nyara | 122.172.23.223 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:৩৮464584
  • আরেকটা filler চলত - "you know"। আমাদের ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ের সময়ে, আমাদের যাদের ইংরিজি টুটাফুটা ছিল, তারা you know ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দিতাম।

    তো আমদের এক বন্ধু কোন একটা প্রশ্নের উত্তরে এত you know বলেছিল যে ইন্টারভিউয়ার বলতে বাধ্য হয়েছিলেন, "Yes, we know. But we want to find out how much you know."
  • pi | 72.83.86.24 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৩:৪৫464585
  • রূপঙ্করবাবু, এই 'বাটিয়া' টা কিন্তু শুনতে বেশ লাগছে :) তদ্ভব শব্দ হিসেবে বাংলা ভাষায় ঢুকিয়ে নিলে কেমন হয় ? :)
  • kd | 59.93.241.72 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৪:২২464586
  • প্রথমেই রুপঙ্করবাবুকে ধন্যবাদ জানাই, ওনার একটি ছোট্টো ইচ্ছে এত সুন্দর আলোচনার জন্ম দিলো। এটি আমার মতো যারা ইংরিজিও শিখলুম না আর বাংলাটাও ভুলে গেছি, তাদের বড়ো কাজে লাগবে।

    শিবাংশুর চার তারিখের ১২:১০এর পোস্ট বেশ আমার মনের মতন।

    একটা প্রশ্ন আছে সকলের কাছেই - মনে হচ্ছে আর সকলে উত্তর জানে, কিন্তু আমি পুরো লস্ট। এই শিবু যে বাংলা ভাষার অক্ষমতা বল্লো কিসব বিশেষ্য-ক্রিয়া ইত্যাদি নিয়ে, শিবাংশুও তাই বল্লো - আমায় ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে দেবে? উদাহরণ দিয়ে বোঝালে খুব ভালো হয় - আমার মাথাটা কিঞ্চিৎ মোটা কিনা।

    আর একটা কথা, বাংলা একটি জাতীয় ভাষা হয়েছে বাংলাদেশের সৌজন্যে - এইজন্যে UNOতে বাংলায় টুর হয়। সুমেরুর কাছে শুনেছি ঐ বাংলার ব্যাকরণ ইত্যাদি আলাদা আমাদের থেকে। তাই যদি হয়, আমাদের কি উচিত নয় ওই 'ভার্শান'টাকেই 'অফিশিয়াল' হিসেবে মেনে নেওয়া? (আমি কোনো বিতর্কের চেষ্টা করছি না, সে ক্ষমতাই আমার নেই - জাস্ট জানতে চাইছি তোমরা কী ভাবো)।
  • kd | 59.93.241.72 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৫:১৩464588
  • এই রে! আমিও তো অক্ষর মতো এ'গুলোকে 'ফিলার'ই ভাবছিলুম - 'ফিলার'এর অন্য মানে হ'তে পারে, ভেবেই দেখিনি। পরের বাক্য কী বলবো, কীভাবে বলবো, তার জন্যে একটু সময় নেওয়া কিছু সম্পর্করহিত শব্দ বলে - বাংলায় যেমন আমরা 'ইয়ে' (বাঙালরা 'ইসে') বলি।

    (ঠিক যেমন আমার একমাত্র জানা প্রোগ্রামিং ভাষায় কিছু 'নো-অপ' ঢুকিয়ে সাইক্‌ল-টাইম বাড়াতুম)
  • Shibanshu | 59.97.232.210 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৫:২৩464589
  • কাবলিদা, ইশান ভালো লিখেছেন। অনেক ব্যাপার পরিষ্কার করেছেন পরিশ্রম করে। গুরুচন্ডালিতেই দেখবেন একটা লেখার ধারা আছে। যেমন ট্যাগ করেছেন না বলে ট্যাগিয়েছেন এখন খুব চলিত আছে। এটা একটা ধরন, আবার ইশান যেটা বলেছেন ইংরিজিতে ed লাগিয়ে পদান্তর করে দেওয়া যায়, বাংলায় সেটা এখনও হয়না। এখনও হয়না বলে কখনও হবেনা তাতো নয়। তবে তার মডেলটা আমাদের ঠিক করতে হবে, ইংরিজির অন্ধ অনুকরণ করে নয়। ইংরিজি ভাষার ঈর্ষাজনক সরলীকৃত করার ক্ষমতা থেকে শিক্ষা নেবো, কিন্তু বাংলার নিজস্ব ক্যানন হবে, নিজের গড়নের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে। পরিভাষা তৈরির সময় তৎসম হলে তৎসম, না হলে তদ্ভব, দেশি বিদেশি, কোনও শব্দই অচ্ছুত নয়। সবারই জায়গা আছে।

    গোঁয়ার নাস্তিক বামুন কৃষ্ণকমলের ব্যাপারে সময় পেলে লিখবো।
  • rupankar sarkar | 110.227.219.23 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৮:০৪464590
  • @nyara - হাহাহা X ২৫

    @pi - মন্দ হয়না, আসলে আমি আর আমার পুত্র নতুন কিছু পেলেই, নিজেদের মধ্যে চালু করে দিই। একবার কোনও এক ক্রিকেট খেলার ধারা-বিবরনী তে ক্যাচ-মিস কে ক্যাস-মিচ বলেছিলেন কেউ, সেই থেকে আমরা দুজন ক্যাচ ফস্কালেই ক্যাস-মিচ বলি। বাটিয়াও ঢুকে গেছে আমাদের কথোপকথনে। : )

    @kd - আপনি যা ভাবতেন filler যথার্থই তাই। যা fill করে, তাই তো ফিলার। আমার কথা ঠিক মত বোঝাতে না পারার জন্য একমাত্র আমার ভাষাজ্ঞানের অভাবই দায়ী, একথা অনস্বীকার্য। আমার বক্তব্য ছিল, ওখানে উনি পরের কথা হাতড়াতে গিয়ে 'বাটিয়া' লাগাননি, বিন-বাটিয়া উনি হেসেখেলে পরের কথা বলতে পারতেন। ওটা ওঁর স্টেটাস সিম্বলের ফিলার। খেলোয়াড়টির 'Ithink'- ও কথা খুঁজতে গিয়ে বলা হয়নি, সে বেচারা ইংরিজীতে ঐটুকু বলতে শিখেছে। টি ভি-র সামনে হবু জাতীয় খেলোয়াড় এটুকুও বলবেনা ? আমি আগের পোস্টে যা বলেছি, সবই বাংলা ফিলার/ফিলারসকল -এর বদলে বিদেশী শব্দ ব্যবহারের কথা।
  • Sags | 114.143.7.146 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৯:১৪464591
  • মুস্কিলটা হোলো অন্য জায়গায় - ঐ বাডিং ক্রিকেটার-কে টিমে চান্স পেতে গেলে বোলিং এর সাথে সাথে ইংরিজি বোলনা ভি জরুরী হ্যাঁয়।
  • Sibu | 173.153.62.117 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ১৯:৩২464592
  • Auxiliary verb নিয়ে আমার কথাটা এট্টুস বলে দেই।

    Noun-to-verb এবং verb-to-noun কনভার্শন নিয়ে বাংলা খুব স্বচ্ছন্দ নয়। ধরুন The train accelerated. এর বাংলা হবে কি? ট্রেন গতি বাড়াল। Noun হল গতি (acceleration)। ইংরাজীতে noun থেকে সরাসরি verb হয়ে গেল। বাংলায় একটা অতিরিক্ত ভার্ব লাগল। এবারে একটা আপত্তি ওঠে, acceleration কথাটার বাংলা গতি নয়। তাই একটা অতিরিক্ত ভার্ব লাগল। এবারে ধরুন আমরা accelerate কথাটা বাংলায় নিয়ে নিলাম। তবু কিন্তু বাংলা হবে - ট্রেন accelerate করল। ইংরাজী যেখান থেকেই শব্দ নিক, সেটাকে সাথে সাথেই ভার্ব বানিয়ে ফেলে, এই "করল", 'বাড়াল' ছাড়াই।

    "বাড়াল" অবশ্য ঠিক auxiliary verb নয়। কিন্তু আমি কি বলতে চেয়েছিলাম সেটা আশা করি বোঝা গেল।

    এরকম সংস্কৃত থেকে উদাহরণ - পশ্য সিংহ মদমত্ত শশকেন নিপাতিত। নিপাত থেকে প্রত্যয় (ক্ত, না ক্তবতু?) লাগিয়ে ক্রিয়া হল। বাংলা (voice ঠিক রেখে) অনুবাদ করতে হলে হবে - দেখ, মদমত্ত সিংহ খরগোসের দ্বারা হত হল। একটা অতিরিক্ত ক্রিয়া দরকার হল। (ইংরাজী হলে লিখতাম - An extraa verb needed. কিন্তু বাংলাতে - দরকার হল।;) আশা করি ব্যাপারটা বোঝা গেল।)

    @Shibangshu। আপনি বলেছেন এই ব্যাপারটা ঠিক করা দরকার। আম্মো তাই বলি। তবে তফাৎ হল, সে নিয়ে আমি খুব আশাবাদী না। ক্রিয়া জিনিষটা বিশেষ্য বা বিশেষণের মত অন্য জায়গা থেকে সহজে ধার করা যায় না, বা, দু-চারজনে মিলে বদলে দেওয়া যায় না। ওটা অনেকে মিলে একটা কিছু অনেকদিন ধরে করলে তবেই তৈরী হয়। তা বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার বেলায় একটা চিকেন-এগ সমস্যা আছে। সব্বাই দু'হাত তুলে বলে বাংলায় বিজ্ঞান-চর্চা হোক। কিন্তু বাংলায় বিজ্ঞান চর্চার কোন ইনসেনটিভ নেই। তাই সবাই অজুহাত দেয় সরকার উপযুক্ত ভাষা/পরিভাষা তৈরী করে দিচ্ছে না। (এই ব্যাপারে কট্টর বাজারপন্থী থেকে উগ্রবাদী মার্কসপন্থী, সবাই একমত)। কিন্তু আগে চর্চা, না আগে সেই চর্চার ভাষা?

    এখন এ নিয়ে আমার দু:খু নেই। আমার নাতি/প্রনাতি/প্রপ্রনাতির ভাষা আমার ভাষার থেকে আলাদা হবেই। সেটাকে বাংলা বলা হোক বা না হোক, ম্যাটার করে না। লিঙ্গুইস্টরা যাই বলুন, চর্য্যার ভাষা আর আধুনিক বাংলা, অন্তত: ম্যাংগো পাবলিকের কাছে, এক ভাষা নয়।

    আমি নিজে বাঙালী। তারাশঙ্কর, রবীন্দ্রনাথ চুটিয়ে পড়েছি, এবং এনজয় করেছি। আমাদের ছেলেপিলে যদি এঁদের লেখা না পড়ে অন্য কারো লেখা পড়ে (বা না পড়ে) তাতে আমার আজকের আনন্দ একটুও কম পড়ে না। আর তাদের আনন্দ উপভোগ কিসে ভাল হবে সে তারাই ঠিক করুক।
  • tatin | 70.177.55.6 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ২০:০৩464593
  • এক্সট্রা ভার্বটা নিয়ে অসুবিধে কী একটু বলবেন- ইজ ওয়াজ জাতীয় এক্সট্রা ভার্ব ইংরেজিতে বিজ্ঞান লেখার খুব কিছু অসুবিধে করছেনা দেখছি। বরং একটা অন্য সুবিধে আছে, অ্যাক্সিলারেটডের বদলে গতি বাড়াল করলে একটা শব্দ (এবং পরিভাষা) কম দরকার পড়লো। ফলে নতুন ইউজারের কাছে এই ভাষা ইউজ করা অনেক সোজা হবে (জেলেনি/মেছুনিদেরও)
    এর অন্য কিছু সমস্যা থাকতে পারে অবশ্য।
    আমার খুব মনে হয় (সেটা অবশ্য বেশি করে বাংলায় নিজস্ব কোনও পরিভাষা না থাকার জন্যে), বাংলায় বিজ্ঞান চর্চা বেশ কঠিন (এমনকি অসম্ভব রকমের কঠিন) যদি না অন্য ভাষার পরিভাষাগুলো ডিটো ইউজ করি- বরং পরিভাষা বাদ দিয়ে একটু ভাববাদী লেভেলের কাজকর্ম অনেক সহজ। শ্রেষ্ঠ উদাহরণ বোধহয় বাউল গান।
    বলা যায়না, কোয়ান্টাম মেক ফেক বাংলাভাষায় ভালো হতেও পারে, যেখানে ঐ 'কিছু পাই অনুমানে' ব্যাপারটা রাখা দরকার :P
    যাই হোক,ত্বরিত হলো কে গতি বাড়াল বললে কেন বিজ্ঞান বলার চাপ হবে সেটা একটু লিখুন
  • rupankar sarkar | 110.227.203.11 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ২০:৫৫464594
  • শিবুবাবুর জন্য একটা ছোট্ট সংশোধনী : মদমত্ত - টা 'মদোন্মত্ত' ( মদ+উন্মত্ত) হবে। আধুনিক বিজ্ঞানের পরিভাষা যথযথ রেখে পড়লেই মনে হয় সমস্যার সমাধান হতো। বাংলায় 'অ্যাকসিলারেশন' বারংবার লিখতে লিখতে একদিন চেয়ার-টেবিলের মত ওটাও বাংলা হয়ে যেত, আর অভিধানে এর অর্থ লেখা হতো - ক্রমাগত গতিবৃদ্ধি।
    যাক, বিতর্ক ছেড়ে nyara কথিত কৌতুকোপাখ্যানের পর আমার একটু এই ফিলার নিয়ে আরও একটু বলার ইচ্ছে হল। লোভ সম্বরণ করতে পারলামনা। আমরা জানি, অতীত যুগের ইংরেজ সাংসদ গ্ল্যাডস্টোন ও ডিস্রেলী সাহেবের বাগ্মিতার কথা প্রায় প্রবাদের পর্যায়ে চলে গেছিল। এই ডিস্রেলী সাহেবের অভ্যাস ছিল একটি ফিলার ব্যবহারের, তা হল,'Iconceive' । একবার সংসদে উনি তিন তিনবার আই কনসিভ বলার পরও কথা খুঁজে পাচ্ছিলেন না, তখন গ্যালারীর পেছন থেকে একজন রোগামতন লোক দাঁড়িয়ে উঠে বলল,- Sir, awomanproducesachildbyconceivingonlyonce.Isn'titratherstrangethatyoucouldn'tproduceanythingevenafterconceivingthrice ?
  • tatin | 130.39.149.87 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ২১:৩৪464596
  • *arojore
  • tatin | 130.39.149.87 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ২১:৩৪464595
  • accelerationbojhate 'arojorachola' bollechaaphoykikhub?
  • ranjan roy | 122.168.167.177 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ২১:৪০464597
  • মজা আ গিয়া বস্‌!
    আমার একজন ফেবারিট( যার লেখা পড়তে পাইনে বলে ইদানীং হা-হুতাশ করি:)))), অর্থাৎ বৈজয়ন্ত বিতর্কে যোগ দিয়েছে।
    কিন্তু এখানেও আমার ঝোঁক ইতরযানী বাংলার ভগীরথ হিসেবে বিদ্যাসাগর মশাইকে দেখার ব্যাপারে।
    " সীতার বনবাস", যদ্দূর মনে পড়ছে ওনার শেষের দিকের রচনা নয়। ওনার লেখারও বিবর্তন হয়েছিল।
    আমার মনে পড়ছে ""প্রভাবতী সম্ভাষণ"'। ক্লাসিকের অনুবাদে স্বাভাবিক ভাবেই উনি "" এই সেই জনস্থান মধ্যবর্তী প্রস্রবণগিরি। ইহার শিখরদেশ জলধরপটলসংযোগে নিবিড়নীলিমায় অলংকৃত'' লিখেছেন এবং বংকিমীভাষাকে ''শবপোড়া মড়াদাহের দল'' বলে ঠাট্টা করেছেন।
    কিন্তু যেই সমসাময়িক জীবনের ছায়ায় লিখতে গেলেন তখনি অনায়াসে ওনার কলমে এলো "" মাগী শোলো"" (অর্থাৎ মাগী শুইল)। বা ""- উনি আর তোমাকে ভালবাসিবেন না।
    --- ভালবাসিবি, ভালবাসিবি।
    তুই ভালবাসিবি না, আমি ভালবাসব।''

    বাস্তব প্রয়োজনের ঠেলায় উড়ে গেছে নাকউঁচু ভাব, অনায়াসে ঠেলাঠেলি করে ঢুকে পড়েছে তদ্ভব ও দেশি শব্দ।
    আবার বর্ণপরিচয় ( গোপালের এর গল্প, মাসি , তুমিই আমার ফাঁসির কারণ) ইত্যাদি মনে করুন।
    আচ্ছা, আমার একটু গুলাইয়া গ্যাসে। তাই কিন্তু-কিন্তু করে জিগ্যেস করছি--'' শকুন্তলার পতিগৃহে যাত্রা'' উনিই লিখেছিলেন না।
    তাহলে বলতে হয় ক্লাসিকের গল্প লিখতেও ক্রমশ: ওনার বাংলা সহজযানী হয়ে গেছে।
    অবশ্যি খোদ বংকিমের কপালকুন্ডলা থেকে ইন্দিরা ও রাজসিংহে ভাষার পরিবর্তনটা দেখুন।
  • Sibu | 66.102.14.1 | ০৪ জানুয়ারি ২০১১ ২২:৪১464599
  • ঐ অতিরিক্ত ভার্বটির একটি অসুবিধা হল যে কোথায় সেটি কি হবে তা কেস-বাই-কেস ঠিক করতে হয়। যেমন ধরুন - Label the vertex হবে ভার্টেক্সটি লেবেল কর। আবার Label the bottle হবে বোতলে লেবেল আটকাও। এতে দুটো সমস্যা।

    ১। প্রচুর কেস মনে রাখতে হয়।
    ২। এটি আরো বড় অসুবিধা। যখন কোন নতুন নাউন আসে (বা পরিচিত নাউনের ভার্ব ফর্ম পরিচিত নয়), তখন সেটির ভার্ব ফর্মে কি অক্সিলিয়ারী ভার্ব বসবে সেটি ঠিক করতে হয়। তাতে কিছু মুশকিল হয়, কেন না সকলের ভাষাবোধ সমান নয়। ইংরাজীতে যেহেতু বেশীরভাগ নাউন সরাসরি ভার্ব হয়ে যায় (বা ed লাগালেই কাজ চলে), সেহেতু ইংরাজীতে এই প্রক্রিয়াটি এফিসিয়েন্ট। সংস্কৃততেও ক্ত বা ক্তবতু লাগানো নাউন টু ভার্ব কনভারশনের স্ট্যান্ডার্ড উপায়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন