এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • সিউড়ি-কীর্নাহার-হেতমপুর-ফারাক্কা-বিডনস্ট্রীটের গল্প

    Abhyu
    অন্যান্য | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ৯৪৩৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Abhyu | 85.137.0.58 | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:৩৮626704
  • ব্যাঙদি লেখো।
  • byaang | 233.227.73.128 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:২২626815
  • তা বিডন স্ট্র্রীটের গল্প দিয়েই শুরু করি।

    বিডন স্ট্রীটের একটা ইস্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হল আমাকে। অবিশ্যি সামনের বাড়ির মহুয়াদিকে দেখে আমিই বলেছিলাম মহুয়াদিদির স্কুলেই আমাকে ভর্তি করে দিতে। তা নয়তো অন্য কোনো স্কুল কি আর ছিল না। কিন্তু মহুয়াদিদি তো আর সেই সব ইস্কুলেপড়ত না।
    চার বছর বয়্স হওয়ার দিন কুড়ি বাদে নীল রঙের সুটকেস নীল রঙের পেনসিল বাক্স আর নীল রঙের জলের বোতল আর কটা চটিবইখাতা নিয়ে ইস্কুলে যেতে শুরু করলাম।
    ইস্কুলে যেতে শুরু করার কিছু দিন পর থেকে আমাকে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করল আমার নিজের মা। হ্যাঁ নিজের মা। (মানে উনি আজ অব্দি আমাকে তাই বলে এসেছেন যে উনি আমার নিজের মা। কিন্তু আমার সন্দেহ উনি চল্লিশবছরেও মুছে দিতে পারেন নি, ওনার দাবীর স্বপক্ষে কোনো জোরদার প্রমাণও দিতে পারেন নি।) যে কথা বলছিলাম , মানে ব্ল্যাকমেলের কথা। মা হয়ে মেয়েকে করা ব্ল্যাকমেলের নমুনাগুলো একটু শুনুন।
    ১) দুধের গ্লাস এক চুমুকে খালি না করে দিলে বাড়ি এসে আর আমাকে দেখতে পাবে না। আমি মরে যাব। আমাকে খাটে শুইয়ে ফুল দিয়ে সাজিয়ে বাবুলরা নিয়ে চলে যাবে। বাড়ি ফিরে আর কোত্থাও আমাকে খুঁজে পাবে না।
    ২) আমার রান্না শেষ হওয়ার আগে যদি পাঁচপাতা ব লেখা শেষ না হয় কাল বাড়ি এসে আমাকে আর দেখতে পাবে না। ১ নং পয়েন্টের শেষ তিনটে বাক্য আবার পড়ুন।
    ৩) এক্ষুনি চোখ বন্ধ করে না শুলে, পায়ের আঙুল নাড়ানো এক্ষুনি বন্ধ না করলে কাল বাড়ি এসে আমাকে আর দেখতে পাবে না।১ নং পয়েন্টের শেষ তিনটে বাক্য আবার পড়ুন।
    ৪) অদিতির মাথায় উকুন আছে, ওর মাথায় মাথা ঠেকিয়ে তোমার ঐ কোঁকড়া চুলে উকুনদের নেমন্তন্ন করে নিয়ে আসলে আর সত্যিই কোনোদিনও আমাকে দেখতে পাবে না। তোমার মাথা ন্যাড়া করে তোমাকে ইস্কুলে পাঠিয়ে আমি মরে যাব। ১ নং পয়েন্টের শেষ দুটো বাক্য আবার পড়ুন।
    এই লিস্টিটা অনেক লম্বা। পুরোটা লিখতে গেলে হাত ব্যথা করবে। এমনকি এই লিস্টির একটা পয়েন্ট ছিল সজনেডাঁটা ভালো করে চিবিয়ে ছিবড়ে করে না দিয়ে, আধচেবানো করে মুখ থেকে বার করে দিলেও বাড়ি এসে ওনাকে আর দেখা যাবে না।
    এবারে হয়েছে কী, ইস্কুলটা বিডন স্ট্রীটে হওয়ায় যা হয় আর কি। মানিকতলা, বাগমারি, উল্টোডাঙা, কাঁকুড়গাছি ফুলবাগান মানে পুবদিকে যতদূর আপনি ভাবতে পারেন, সেই সব জায়গায় যারা মারা যেত, তাদেরকে আমার মায়ের বর্ণনামতন খাটে শুইয়ে ফুল দিয়ে সাজিয়ে চন্দন এঁকে নিয়ে যাওয়া হত আমার কেজি ওয়ান এ সেকশনের ক্লাসরুমের পাশ দিয়ে। না আমাকে দেখানোর জন্য নিয়ে যেত না। নিমতলা যাওয়ার মনে হয় ওটাই সবচেয়ে সহজ রুট ছিল। তা যারা নিয়ে যেত, তারা নিজেদের রুট সহজ করতে গিয়ে আমাকে যে কী পরিমাণ টেনশনে ফেলত, তা তারা কল্পনাও করতে পারবে না।
    যেই শুনতাম বল হরি, হরি বোল অম্নি মনে হত এ নির্ঘাত আমার মা। কালও তো আমি মিথ্যা বলেছি , বাথরুমের লাল দেওয়ালে আঙুলে করে সর্ষের তেল দিয়ে ফুল আর পাতা এঁকে স্বীকার করি নি। মা বোধহয় সেই মিথ্যে সইতে না পেরেই মরে গেছে। আর বাবুলদারা এখন মাকে নিয়ে পোড়াতে যাচ্ছে। ঐ কথা মনে হওয়ার পর কি আর কোনো চার বছুরের পক্ষে দিদিমণির কথায় কান দেওয়া সম্ভব? সে তখন ডেস্কের উপর উঠে , সেখান থেকে জানলার তাকে চেপে জানলা দিয়ে খাটে শোয়ানো ব্যক্তির মুখ দেখার চেষ্টা করছে। কখনো কখনো খাটের চারটে কোনায় এত এত রজনীগন্ধার স্টিক লাগানো থাকত, যে শুয়ে থাকা মানুষটির মুখ ভালো করে দেখা যেত না। তখন অবিশ্যি নিশ্চিন্তি হওয়ার আরেকটা উপায় ছিল। মুখ দেখা না গেলে খাটের মাপ দেখে নিশ্চিন্তি হয়ে নিতাম যে আমার মাকে নিয়ে যাচ্ছে না। আমাদের বাড়ির খাটটা মাঠের মতন বড়, এইটুকু তো আর নয়।
    এদিকে আমাদের ক্লাসটিচার ছিলেন সেলিনদি। খুব ভালো মানুষ। তিনি তাঁর শিক্ষকতার জীবনে এরকম নতুন ছাত্রী খুব একটা দেখেন নি , যে ক্লাসের পাশ দিয়ে কেউ "বল হরি হরি বোল " বলতে বলতে গেলেই অম্নি পাগলপারা হয়ে ছুটে এসে জানলায় চেপে লোকজনের নিমতলা যাওয়া দেখে।
    সেলিনদি বলেন "ওটা কী হচ্ছে? ও কী অসভ্যতা? কেউ স্বর্গে গেলে জানলায় চেপে দেখতে হয় নাকি? নেমে এস , এক্ষুনি নেমে এস বলছি। আজ তোমার মা তোমাকে নিতে এলে ওনাকে জানাব যে তুমি ক্লাসের জানলায় চেপে বাইরে দেখেছ। এক্ষুনি নেমে এস। সাবধানে নামবে। হুড়মুড় করে আবার পড়ে যেও না। নেমেছ? হ্যাঁ এখন ঐ কোনায় যাও, গিয়ে দাঁড়িয়ে থাক কান ধরে। আমি না বলা অব্দি নড়বে না।"
    আমি ভাবি, মা আমাকে যদি নিতে আসে, তবে না বলবেন, মা ঐ খাটে শুয়ে থাকলে তো আর বলতে পারবেন না।
    কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই আবার শুনি "বল হরি হরি বোল আবার বল হরি বোল"। আমিও আবার ছুটে জানলার কাছে গিয়ে ডেস্কে চাপি , ডেস্ক থেকে জানলায়, আবার মুখ দেখার চেষ্টা করি। আবার বকুনি এবং আবার শাস্তি।
    মা ছুটির পর আমাকে নিতে এলে , আমাকে ক্লাসের বাইরে পাঠিয়ে সেলিনদি আর মায়ের মধ্যে কীসব যেন কথা হয়। তারপর দেখি দুজনেই হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসছে। ওমা, দুজনে বন্ধু হয়ে গেছে নাকি!
    এদিকে লোকে বলে শুনি, শৈশবের স্মৃতি নাকি বড়ই মধুর। যারা বলে, তাদের ইস্কুলের পাশ দিয়ে নিশ্চয়ই নিমতলা যাওয়া যেত না।
  • Abhyu | 107.81.103.15 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:২৬626840
  • গুচ্ছ গুড!
  • jhiki | 113.10.66.64 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:৩৩626851
  • ব্যাং, একটু ভয় ধরিয়ে দিলে যে! মরার নয়, তবে অফিস থেকে বাড়ী না ফেরার/ বাড়ী থেকে চলে যাওয়ার ভয় আমি আমার সাত বছুরে কে দেখিয়ে থাকি বটে!!

    তবে হুল্লাট শুরু করেছ ঃ))
  • kumu | 133.63.112.107 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:৩৬626862
  • খুব ভালো, খুব খুব।লেখো , লিখে যাও।
  • Bhagidaar | 218.107.71.70 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:৩৯626873
  • ও মা! আহাগো ছোট্ট মেয়েটা!
  • রোবু | 213.147.88.10 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:০৭626884
  • কী লেখা!
  • byaang | 233.227.73.128 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:১০626895
  • ঝিকির সাতবছুরেকে তাহলে আমার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করিয়ে দিতে হবে।
    আমার ভাইকে উপরে বর্ণিত উপায়ে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করায় আমার সাতবছুরে ভাই খুব খচে গিয়ে ব্ল্যাকমেলারকে বলেছিল, "তুমি মর তো দেখি এক্ষুনি"
    ব্ল্যাকমেলার তো সেই শুনে খুব বিপন্নবোধ করছিলেন, খানিকক্ষণ বাদে একটু ধাতস্থ হয়ে ব্ল্যাকমেলার বললেন, "আমার মরে যাওয়া দেখতে চাস তুই?"
    আমার ভাই উত্তর দিয়েছিল "টিভিতে শুধু চিতায় পোড়ানো দেখায়, ইলেকট্রিক চুল্লি কেমন হয়, কক্ষনো দেখি নি। তুমি মরে গেলে ইলেক্ট্রিক চুল্লিতে পুড়িয়ে দেব। আমারও জিনিসটা ভালো করে দেখা হবে।"
    ব্ল্যাকমেলার আর কখনো উপরে বর্ণিত উপায়ে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করেন নি।
  • Abhyu | 107.81.103.15 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:১৬626906
  • :))))))))))))))))))
  • Ekak | 24.96.85.33 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:২২626705
  • কেন এমন কেজানে । খুব ছোটবেলার স্মৃতি বলতেই মনে পরে মা একটা কাঁথা বা চাদর মাথা অবধি ঢেকে শুয়ে পরেছেন ,ডেকেই চলেছি মা মা । বেশ কিছুখ্খন পর গম্ভীর গলায় চাদরের তলা থেকে "মা মরে গ্যাছে " । উফফ । একে বাড়িতে একাধিক ডাক্তার থাকায় সিএমসি টা সেকেন্ড মামার বাড়ি হয়ে গেছিল তার ওপর এই মৃত্যুর নাটক । বাকি যা যা ব্যাং বললেন । আর বাড়াব না । সুধু এই কদিন আগের ঘটনা বলি । ব্যাঙ্গালোর এসেছেন । একথা সেকথায় বেশ খানিকটা ঝড় ঝাপাটি বয়ে গ্যাছে । যথারীতি শোবার ঘরে মাথা অবধি চাদর ঢাকা । জিগালুম "পাখা টা চালিয়ে দেব " । উত্তর নেই । হাসি পেয়ে গেল । নিঃশ্বাস এর আওয়াজ শুনে নিশ্চিন্ত হওয়ার অভ্যেস তো সেই সুদুর ছোটবেলাতেই গ্রো করে গ্যাছে । তাই হাসি পেল শুধু । এ কোন ভালবাসা যা ভয় না দেখালে পাওয়া যায়না । বুঝিনা । ভয় , বিরক্তি পেরিয়ে শুধু মায়া জেগে থাকে । আমি বড় হলুম । মা চত্ব মেয়েটি রয়ে গেলেন ।

    ব্যঙ্গের তই তে আত্ভাট বকার জন্যে সরি । বড় মিলে গ্যালো তাই না লিখে পারলুম না ।
  • jhiki | 113.10.66.64 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:২৪626716
  • ঃ))))))))))

    নাঃ সে এখনও তুমি চলে গিয়ে দেখাও তো দেখি বলে নি......
  • byaang | 233.227.73.128 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:৪৩626727
  • এককের লেখার এই তিনটে লাইন মাথার মধ্যে গেঁথে গেল "ভয় , বিরক্তি পেরিয়ে শুধু মায়া জেগে থাকে । আমি বড় হলুম । মা চত্ব মেয়েটি রয়ে গেলেন ।" এখন কয়েকদিন মাথার মধ্যে বাজতে থাকবে লাইনগুলো।

    কিন্তু একক এ কী কথা! এটা আমার টই মানে? আর যারই টই হোক না কেন, অন্যরা সেই টইয়ে আটভাট বকতে পারবে নাই বা কেন?
  • সিকি | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:৪২626738
  • মরামরির গপ্পো নেই। আমার সেন্ট জনস ইশকুলের পাশটিতে গরম কালে মাছ শুকনো হত। শুঁটকি। টানা তিন বছর ঐ গন্ধ শুঁকে বড় হয়েছি। তারপর থেকে কোনও গন্ধই আমাকে আর কাবু করতে পারে না। ভালোবেসে শুঁটকি খাই। রেঁধেও খাই।
  • de | 190.149.51.67 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:৫২626749
  • আহারে! বেচারা পুঁচকি মেয়েটা -- বড়ো কষ্ট হোলো!

    মায়ের মরে যাওয়াটা বোধ্হয় যেকোন বাচ্চার কাছেই সবচেয়ে বড়ো ভয়!

    ব্যাং, আরো লেখো!
  • hu | 188.91.253.21 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৬:৩৬626760
  • ব্যাংদি খুব ভালো লেখে। কিন্তু এই গল্পটা যেন শুধুই গল্প হয়!
  • Blank | 180.153.65.102 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৬:৫৯626771
  • ব্যাঙ দির ভাইকে লাইক দিয়ে গেলাম।
    লিখতে থাকো ব্যাঙ দি।
  • I | 24.99.69.79 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:৩০626782
  • ব্যাঙ বড় ভালো লেখে। লীলুপিসি সগ্গ থেকে কলম ছুঁয়ে দিয়ে গেছে।
  • rabaahuta | 172.136.192.1 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:৪৪626793
  • যাবতীয় কমেন্টকার্পণ্য এবং আলস্য ত্যাগ করে পুরোটা পড়ে ওঠার আগেই লিখতে হলো - খুব মন দিয়ে পড়ছি।
  • kk | 81.236.62.176 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২৩:০৯626804
  • আমার ঐ ছোট্ট ব্যাং এর জন্য খুব মনখারাপ হলো।
  • a x | 138.249.1.206 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২৩:১৭626816
  • আমারও।
  • Ranjan Roy | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৪:৩৯626827
  • ডিভিসি বোকারো পাওয়ার হাউস নামের ছোট্ট জনপদের পাহাড়ের গায়ে থাক কেটে তৈরি লেবার কোয়ার্টার। শীতের ভোর-ভোর সকালে চার- বছুরে ছেলেটার রোজ ঘুম ভেঙে যায়। আলো জ্বেলে বাবা মাকে পড়াচ্ছে। গ্রামার না কি যেন! নাউন-প্রোনাউন-অ্যাড্জেকটিভ--। কানে আসে। -- আটরকম। আটটা নাম ঠিক করে বল দেখি?
    মা পারেনা, রোজ একটা দুটো ভুল করে। অপ্রস্তুত হাসে। বাবা মেজাজ হারায়, মা কে বকে। মা চটে গিয়ে বলে -- তোমার কাছে পড়ব না।
    রোজ প্রায় একইরকম। একঘেয়ে। চারবছুরে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
    কিন্তু আজ যেন অন্যরকম লাগছে! বই খাতা নেই।
    বাবা দেশলাই জ্বেলে মার হাতের আঙুল পুড়িয়ে দিচ্ছে। ইস্‌ কেন দিচ্ছে? মা ফোঁপাচ্ছে। বলছে--লাগছে, বলছে আমি আর বাঁচব না।
    চার বছুরে আতংকিত। বাবা কোথায় ? ও তো রাক্ষস। আবার দেশলাই? আবার আগুন? মা ভয় পাচ্ছে। বাবা বলছে-- শিঙ্গি মাছের কাঁটা ফুটে আঙ্গুলহাড়া হয়েছে। দেশলাইয়ের বারুদ আর পটাশ দিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছি, একটু সহ্য কর। ঠিক হয়ে যাবে। নইলে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করাতে হবে। তাই চাও?
    চার বছুরে মনে মনে শপথ নেয়। সাহস কর। রুখে দাঁড়াও। নইলে তোমার মা মরে যাবে। কিছু একটা করতে হবে। শিগ্গির!
    বাবা-মা চমকে ওঠে। বচ্চাটা বিছানার ওপরে উঠে দাঁড়িয়েছে। এক ঝটকায় ছুঁড়ে ফেলেছে গায়ের লেপচাপা।
    --তুমি কি আমার মায়েরে মাইর‌্যা ফেলাইতে চাও?
    বাবার মুখে অপ্রস্তুত হাসি। মাথা নেড়ে উঠে গিয়ে সিগ্রেট ধরায়।
    মা চোখে জল নিয়ে হেসে বাচ্চাটাকে বুকে চেপে ধরে।
    বাচ্চাটা ভ্যাবাচাকা। মা-বাবা নিজেদের মধ্যে চোখ চাওয়াচাওয়ি করে হাসছে কেন?
  • | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৯:৫৮626832
  • আমারো মন খারাপ হল।
    এই লেখাটা যেন চলে।
  • sosen | 125.241.23.108 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১০:০৮626833
  • ব্যাংদির লেখা পড়ে বহুবার শোনা একটা গল্প মনে পড়ে গেল। ভাগীদারের গল্প, তার মুখেই শোনা। সেটা শেয়ার করলে ভাগীদার রাগ করবে না নিশ্চয়। একটু আধটু শুধরে দিতেও হতে পারে।
    ভাগীদারের মামার বাড়ি ছিল কাছাকাছিই। ছোটবেলায় ভাগীদারের মা প্রায়ই যৌথ পরিবারে দুই ছানাকে রেখে মামারবাড়ি চলে যেতেন। বেচারারা সবসময় জানতেও পারত না। এমনই একদিন , ভাগীদার বোধকরি বাড়ির সামনে খেলছিল, এমন সময় মা তৈরী হয়ে বেরোতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলেন ছানার কাছে। ছানা ভাগীদার বায়না জুড়ল "আমিও যাব তোমার সাথে!"
    প্রত্যুতপন্নমতি মা বললেন "যাবি? আচ্ছা যা একটা ভালো জুতো পরে আয়।"
    খুব খুশি হয়ে ভাগীদার তো ছুটল বাড়ির ভিতর। মামাবাড়ি যাবে। জুতো পরে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখল , ও মা, ফাঁকা। মা চলে গেছেন তাকে রেখেই।

    আমি এই অব্দি শুনে জিগ্গেস করতাম " তারপর তুই কি করলি? খুব কাঁদলি?"
    উত্তর পাই " না, কি আর করব। বুঝলাম মা চলে গেছে, এদিক ওদিক দেখে আবার খেলতে শুরু করলাম। "

    মাকে ছবিতে ছাড়া দেখার সুযোগ হয়নি, কিন্তু এই গল্পটা শুনে কিঞ্চিত দিশেহারা ছোট্ট একটা বাচ্চাকে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মায়ের খোঁজে এদিক ওদিক তাকাতে দেখতে পাই। ভিতরটা কেমন ভিজে যায়।
  • Abhyu | 34.181.4.209 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:২২626834
  • টই খোলার জন্যে আমারও তো কিছু ক্রেডিট প্রাপ্য হয়?
  • sosen | 192.66.1.44 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১১:৫৩626835
  • আমাজন ক্রেডিট? আমার এক টাকা আছে।
  • byaang | 132.167.147.205 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:০০626836
  • আমার কপালটাই মন্দ। যখনই যা লেখার চেষ্টা করি, তার ফল হয় উল্টো। ভাবলুম ছোটবেলার ক্যাবলামোর এমন একটা গপ্পো লিখি, লোকে হেসে গড়াবে, খিল্লি করবে, ওমা দেখি সবাই মুখ গোমড়া করে ফোঁপাচ্ছে। এর আগে প্রেমের টইতে সিরিয়াস প্রেমের গপ্পো লিখতে গেলাম, তখন লোকে খিল্লি করে ভূত ভাগিয়েছিল।
  • Ekak | 24.99.238.225 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:০৩626837
  • সুখেন দাস এরও এমন আক্ষেপ ছিল নিজেকে নিয়ে :P
  • Bhagidaar | 218.107.71.70 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:০৪626838
  • কারেকশন কিছু নেই, শুধু মা ভালো জামা পরে আসতে বলেছিল, জুতো না।
    আর মা প্রায়ই মামারবাড়ি যেত, বলে বা না বলে, আর মামার্বারিতে দিদিমা/মাইমা ইত্যাদির জোর করে রেখে দিত সে রাতে। বাড়িতে তখন ফোন নেই, খবর দেওয়া যেতনা। বাবা জেনে গেছিল, চিন্তা করতনা, কিন্তু আমি সারা সন্ধে এই করছি ওই করছি কিন্তু কানটা পরে থাকত দরজার দিকে যদি কেউ কড়া নাড়ে ---
  • byaang | 132.167.147.205 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:০৫626839
  • একক ঃ-)))
  • jhiki | 212.67.46.24 | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১২:১০626842
  • ব্যাং, আমি সিরিয়াসও হইনি আর মনখারাপও হয়নি। র‌্যাদার সবাই দুঃখ পাচ্ছে দেখে ব্যোমকে গেছি। ইনফ্যাক্ট স্মৃতি মানেই স্যঁতসেতে - এই কনসেপ্টটা তোমার লেখাপত্তরে থাকেনা বলেই পড়লেই মন তাজা হয়ে যায় ঃ))
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন