এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কমিউনিস্ট রাশিয়া তে একচুয়ালি কী হত ?

    একক
    অন্যান্য | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ | ২৫৬৯৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 203.108.233.65 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:০৫627776
  • পুতিন কি ভিক্তর ইয়ানোকোভিচ - সকলেই ডিক্টেটর। ক্ষমতালোভী।
    ইয়ুলিয়া তিমোশেন্‌কো-র ও ট্র্যাক্‌ রেকর্ড ভালো নয়।
    টাকা পয়সা সরানোর চান্স পেলে প্রত্যেকেই লোভী ও চোর।
    একবার সিংহাসনে বসলে এরা কেউ সেখান থেকে উঠতে চায় না। কমিউনিস্ট আমলে ডেমোক্র্যাটিক ইলেকশন ছিলো না। দীর্ঘ সোশ্যালিস্ট রেজিমে গনতান্ত্রিক নির্বচন ছিলো না। তারও আগে ৎসারের আমলেও নয়। ফলতঃ এই সবে ডেমোক্র্যাসীর মুখ দেখতে শুরু করেছে এরা। অভ্যাস নেই। আগে ক্রেমলিনের পলিটব্যুরো ঠিক করত কে বসবে গদিতে। গনতন্ত্রে সেরকম তো হবার কথা নয়। তার ওপরে বহুপার্টি সিস্টেমও হজম করতে পারছে না শাসকেরা। ভুললে চলবে না যে এরা এই বিশ বাইশ বছর আগেও সব কমিউনিস্ট পার্টির কোর কমিটির মেম্বার ছিলো। এখন হয়ত পার্টির নামটুকু(গুলো) বদলেছে - সেই রাজনৈতিক শিক্ষা, অভ্যাস, নীতিগত চিন্তা এসব তো বদলায় নি।
    এরপরে যিনিই বসুন না কেন কিয়েভের সিংহাসনে - খুবই সতর্ক থাকতে হবে জনতাকে। বিপ্লব করা, বিপ্লবে জয়লাভ করবার চেয়েও অনেক কঠিন হচ্ছে তার পরবর্তী সময়ে সমস্ত কিছুগুছিয়ে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, সুসংগঠিত সরকার বানানো, ডিক্টেটরেরা যে সম্পদ চুরি করে ফাঁক করে দেয় সেই ঘাটতি সামলানো। কাউন্টার রেভোলিউশনের জন্যে প্রস্তুত থাকা। কিছু সৎ লোককে বেছে নেওয়া। নইলে বিপদ আরো বাড়বে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের মানুষ। দুদিক থেকে চাপ আসবে। একদিকে রাশিয়া, অন্যদিকে পশ্চিম। যে পক্ষই হারুক না কেন, এই হারকে তারা এত সহজে মেনে নেবে না। পূর্ব ইয়োরোপের পশ্চিম ভাগ ও রাশিয়ার মধ্যিখানে স্যান্ডুইচ্‌ হয়ে আছে ইউক্রেন (শুধু ভৌগলিক অবস্থানই নয়, রাজনৈতিক ভাবেও), আবার ইউক্রেনের দক্ষিণ পশ্চিমে মল্‌দোভা (ছোটো দেশ)।
    যদিও বা আজ রাশিয়ার দাদাগিরির কবল থেকে ইউক্রেন ছাড়া পায়, তার মানেই কিন্তু এই নয় যে কালকেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তাকে বরণ করে নিজের ঘরে তুলবে। যে দীর্ঘ ভূমিসীমা রয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে সেখানেও তখন বিশেষ পাহারার প্রয়োজন হয়ে পড়বে দুপক্ষেরই। চোরাচালান, মানুষ পাচার, ইল্লিগ্যাল ইমিগ্রেন্ট্‌স্‌, সমস্তই তখন কন্ট্রোল করবার দরকার হবে ঐ সীমানা বরাবর।
    এছাড়া ইউক্রেনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তেলের পাইপলাইন। রয়েছে বন্দর।
  • j | 230.227.106.153 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:১২627777
  • ২০১০ এ ৪৮ % ভোটে নির্বাচিত সরকারকে জাস্ট ধরনা দিয়ে ফেলে দেওয়াটাও তথাকথিত "গণতন্ত্রের" পক্ষে শুভ লক্ষণ? আর ইউক্রেনের লিডিং নিও নাজিরা তো প্রথম দিন থেকে "ময়দানে" ছিল
  • maximin | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:৫৩627778
  • Whatever the next days and weeks bring in Ukraine, Putin has suffered a blow. He can’t extend hegemony without meeting resistance, and his authoritarian style of rule can’t be exported without arousing protests. Putin’s fear at the moment is that Kiev’s protests will spread to Moscow.
  • PT | 213.110.246.230 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৩:৫৯627779
  • কমুনিস্ট না হয়েও hegemony? এসব তো কমুনিস্ট রাশিয়ার কাঁটার মুকুট ছিল!!
  • j | 230.227.106.153 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৪:০৮627780
  • if this kind of protest against a democratically elected government starts in Mexico or Guatemala, will it not reach Washigton DC ?
  • j | 230.227.106.153 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৪:১৬627781
  • দুষ্টু রাশিয়া শুধু গ্যাস কানেকশন কাটলেই কি হবে দেখা যাক , রাশিয়া ইন্টারভেন না করে গ্যালারিতে বসে মজা দেখার পলিসি নিয়েছে , এটাই বেস্ট মনে হচ্ছে এই মুহুর্ত্তে

    একি হনুব্রতর আম্রু দেশ নাকি যে বাড়ির পাশের ইরাকে , জাস্ট দেয়ালের পাশে ভিয়েতনামে কথায় কথায় বোম মারবে !
  • j | 230.227.106.153 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৪:২০627782
  • শুধু লেনিন মুর্ত্তি নয় , ২য় বিশ্বযুদ্ধে নাজিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সেনানীদেরও ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে !

    http://rt.com/news/war-monument-toppled-ukraine-351/

    নেপোলিয়নের আগ্রাসন রুখে দেওয়া জার আমলের সেনাপতির মুর্ত্তিও খানখান

    http://rt.com/news/ukraine-kutuzov-monument-demoliotion-594/
  • maximin | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৪:২৭627783
  • 'দিস কাইন্ড অফ প্রোটেস্ট' কে লেজিটিমেসি দিয়েছে ইয়ানিকোভিচের ওই গোপন সম্পত্তি। সাধারণ মানুষ চোখে দেখেছে, দেশটা গরীব বলে অবাক হয়েছে। লুটতরাজ করেনি কিন্তু, এটাও লক্ষ্য করবার।

    আগেও বলেছি, আবারও বললাম।
  • j | 230.227.106.153 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৪:৩৩627784
  • নিও নাজিরা নেতৃত্ব দিচ্ছে এই আন্দোলনের - এই মতকে লেজিটিমেসি দিয়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের ওয়ার মেমোরিয়াল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া
  • maximin | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৪:৩৪627786
  • সুন্দরী মস্কোকে নেপোলিয়ন লুট করতে চেয়েছিলেন। এসে দেখেন লোকজন সব হাওয়া। কোথায় সেই কুটুজভ কোথায় সেই স্ট্র্যাটেজি। আর ভাই।
  • maximin | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:০৯627787
  • সে 01:05 -- A+
  • ম্যামি | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:১৩627788
  • 'সে-কে' না ব'লে 'তাকে' বলা যায় কি?
  • সে | 203.108.233.65 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:২৮627789
  • ঃ-)
  • de | 190.149.51.67 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:৫৪627790
  • মাফিয়ার গল্পটা?
  • সে | 203.108.233.65 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ১৫:৫৭627791
  • একটা নয়, বিবিধ। এট্টু পরে।
  • ম্যামি | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২১:৪৩627792
  • মস্কোর ছবি ২০০৭

  • সে | 203.108.233.65 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২১:৫৪627793
  • মাফিয়ার গল্পের গোড়াতেই জানিয়ে রাখা দরকার যে দুজন খুনীর সঙ্গে আমার আলাপ ছিলো। আলাপের সময়ে তাদের খুনী হিসেবে চিনতাম না - পরে তারাই জানিয়েছিলো। এদের মধ্যে একজনের অনেকদিনের এক্স্‌পিরিয়েন্স আরেকজন অপেক্ষাকৃত নতুন।

    কিন্তু সেসব কথা লিখবার আগে দু দুটো নিরুদ্দেশের গল্পও বলতে হবে।
  • Sibu | 84.125.59.185 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:১২627794
  • নিরুদ্দেশ মানে কিডন্যাপ?
  • সে | 203.108.233.65 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:৩০627795
  • নিরুদ্দেশ ১

    দেশ তখনও জোড়া। একত্র। এমন সময়ে ওদেশে কিছু আত্মীয় সমাগম হয়েছিলো। যা হয় আরকি, দেশ থেকে আত্মীয় স্বজন এলে স্থানীয় দেশের নেটিবদের বাড়িতে ডেকে ডেকে নেমন্তন্ন করে খাওয়ায় দাওয়ায় গল্প করে।
    ফ্লোরা নামের এক ভদ্রমহিলার বাড়িতে তেমনি এক সন্ধ্যায় ভুরিভোজের নিমন্ত্রন ছিলো। প্রথমে অল্প চা মিষ্টি নোনতা, তারপরে ডিনার, সবশেষে খোশগল্প। সেইসময়ে ফ্যামিলি ফোটোর অ্যালবাম দেখাচ্ছিলো ফ্লোরা। এক এক করে সব ফোটো দেখাচ্ছে ও চিনিয়ে দিচ্ছে কে কোনজন। বিরাট ফ্যামিলি একান্নবর্তী পরিবার। সেই পরিবারের সকলেই হাসি মুখে আমাদের সঙ্গ দিচ্ছিলেন। এরা খুবই অতিথি বৎসল জাত। ফ্লোরার দিদি ও জামাইবাবুর ফোটো দেখলাম। তারা সেদিন সেখানে উপস্থিত ও ছিলেন তাই চাক্ষুষ মানুষগুলোকেও দেখলাম।
    অ্যালবামে আরো একজনের ফোটো আছে, সেই দিদির সঙ্গেই যেন মনে হলো। ফ্লোরা পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে সেই ফোটোর সঙ্গে - দিদি জামাইবাবু।
    খটকা লাগছে- দিদি তো একজনই কিন্তু জামাইবাবুর ছবিগুলো মনে হচ্ছে দুজন আলাদা মানুষের। একদম আলাদা মুখ।
    আমার মনের ভাব আঁচ করে নিয়ে সে বলেছিলো - পরে কখনো বলব।
    এরপরে ফ্লোরাকে আমার নিমন্ত্রণ করবার পালা।
    সেই নিমন্ত্রণরক্ষার্থে এসে সে তখন ঐ ফোটোর কনফিউশান দূর করে দেয়।
    বেশ কিছুবছর আগে দিদির বিয়ে হয়েছিলো (যাঁকে শুধু ফোটোয় দেখলাম) সেই জামাইবাবুর সঙ্গে। এর কিছুদিন পরে এরা দল বেঁধে ভ্লাদিভস্তকে বেড়াতে যায়। দিদি জামাইবাবু ফ্লোরা নিজে আরো দুজন ভাই মা এক কাকা অনেকে মিলে। খুবই আনন্দে ঘুরে বেড়িয়ে সময় কাটছিলো। অদ্ভুত সুন্দর সেই দ্বীপ। খুবই ঝলমলে আনন্দের পরিবেশে গান বাজনা রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়া করে এনজয় করছিলো ওরা সকলে। এক সন্ধ্যায় ওরা সবাই রেস্টুরেন্টে খেতে গেছে। একসময় জামাইবাবু টয়লেটে গেল। ওরা সব খাচ্ছে তখন ডেসার্ট। মোটামুটি হাল্কা নেশাও হয়েছে। চমৎকার বাজনা বাজছে। ডেসার্ট শেষ হয়ে গেল, বাজনা একটার পর একটা হয়ে যাচ্ছে, বিল চোকানোর সময় এসে গেছে- বিল জামাইবাবুই ভরবে - সে আর টয়লেট থেকে ফেরে না।
    টয়লেটে খুঁজে তাকে পাওয়া গেল না, রেস্টুরেন্টের বাইরে, আশেপাশে কোত্থাও না। গ্রীষ্মের সন্ধ্যা। ক্রমশ অন্ধকার নেমে এলো জাহাজের আলোগুলো জেগে উঠছে একে একে অন্ধকার সমুদ্রের দিক থেকে। পুলিশে খবর দেওয়া হলো। খোঁজ খোঁজ রাস্তায় হাসপাতালে সর্বত্র। তারপরে গোটা সোভিয়েত ইউনিয়নে
    আর কোনোদিন তাকে খুঁজে পাওয়া যায় নি। নিরুদ্দেশ। তবে এই নিরুদ্দেশের ঘটনাকে জাস্টিফাই করবার সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য যে গল্পটা ওরা মেনে নিয়েছিলো সেটা হচ্ছে - কোনো কারণে মাফিয়ার হাতে মৃত্যু হয়েছে জামাইবাবুর। মাফিয়ারা নাকি এমন করে থাকত। খুন করে ফেলে দিত সমুদ্রে। এমন নাকি আরো হয়েছে সেই জমানায়।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:৩৬627797
  • দ্বিতীয় গল্পটা বলবার আগে এই পার্কটার ছবি দেখুন। পুরোটা দেখা যাচ্ছে না অবশ্য। এই পার্কটা মস্কো শহরের মধ্যিখানে - এতে পুকুর টুকুর তো আছেই বেশ অনেকগুলো রেস্টুরেন্টও ছিলো।

    পার্ক কুলতুরী।
  • ম্যামি | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:৫১627798
  • কষ্টের গল্প। অ্যাট দি সেম টাইম, আপলিফফটিং ফর দি স্পিরিট।
  • ম্যামি | 69.93.253.55 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২২:৫৫627799
  • কুলতুরি কি কালচার?
  • সে | 203.108.233.65 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ২৩:৪৬627800
  • নিরুদ্দেশ ২
    সেটা সামার ভেকেশানে দেশে যাবার টাইম। জুলাই ফুলাই হবে। খুব সম্ভবতঃ তখনো সোভিয়েত ইউনিয়ন একটাই দেশ। নাকি জাস্ট ভেঙ্গে গেছে? মনে করতে পারছি না। যাই হোক, সন্ধ্যে সাড়ে আটটা নটার আগে অন্ধকার হয় না তখন। খুব ভালো ওয়েদার। আমাদের ফ্লাইট সেই রাতে, এয়ার ইন্ডিয়ার। আমরা বলতে চারজন। আমি ও আরো তিনটে ছেলে। একজন কাশ্মীরি (আফতাব), আরেকজন দিল্লীর (হরিশ), বাকিজন পোর্ট ব্লেয়ারের (অভি)। কাশ্মীরি ছেলেটা দিল্লীতেই থাকে। পোর্ট ব্লেয়ারের ছেলেটা আবার বাঙালী কিন্তু বাংলা জানে না। সকলে দিল্লীর ফ্লাইটই ধরব। তা সন্ধ্যেটা কাটাচ্ছি পার্ক কুলতুরীর মধ্যে একটা রেস্টুরেন্টে। আমাদের বসবার জায়গা রেস্টুরেন্টের বাইরে খোলা আকাশের নীচে। আফতাব ও আমি নিয়েছি ফ্রেশ স্ট্রেবেরী আইস্ক্রীম উইথ আখরোটের টুকরো। সঙ্গে রয়েছে লেমন জেলি ও পেপ্সি। হরিশ ও অভি আইস্ক্রীম খায় না - খুব ম্যাচো স্বভাবের, তাই বিকেল থেকেই চলছে বিভিন্ন মদ, সঙ্গে টুকটাক স্ন্যাক্স্। হরিশ অভির থেকে সিনিয়র ও যথেষ্ট ঝানু প্রকৃতির। অভির মেন্টরিং করছে হরিশ। মেয়েদের সঙ্গে কিকরে আলাপ করতে হয়, কোন মেয়ে কেমন করে পটাতে হয় সব হরিশের নখদর্পণে, নানারকম টিপ্স্ দিচ্ছে সে ব্যাপারে। এই ট্রিপেই নয়, ওরা বরাবরই একসঙ্গে ঘোরে, নানান মেয়ে ঘটিত অ্যাড্ভেঞ্চারে যায়। অভি বলতে গেলে হরিশের শিষ্য এব্যাপারে।
    আমি ও আফতাব বাইরে বলে লেকের জল দেখছি, বাচ্চারা দৌড়চ্ছে, চেঁচামেচি, বারের ভেতর থেকে ভেসে আসছে গানের আওয়াজ। ওরা দুটোয় একবার করে গেলাস ভরে মদ নিয়ে আসছে, আমাদের সঙ্গে একটু বসছে, ফের ঢুকে যাচ্ছে রেস্টুরেন্টের ভেতরে। দুজনেরই হাল্কা নেশা হয়েছে। বেশি হাসছে। এবার দুজনে ভেতরে গেল। আফতাব ও আমি জল্পনা করছি, এখানেই ডিনার সেরে ফেলব কিনা। ফ্লাইট সেই রাত্রে। ফ্লাইটে উঠেই ঘুমোবো, মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠিয়ে খেতে দেয় - বড্ড বিরক্ত লাগে। কী অর্ডার দেওয়া যায় ঠিক করে ফেললাম, তবুও হরিশ ও অভির কথা ভেবে অপেক্ষা করছি, ওয়েট্রেসকে ডাকিনি।
    দুম করে হরিশ বেরিয়ে এলো ভেতর থেকে - হাতে তুড়ি দিয়ে বলল, - চল্ ইয়ার, অভি নিকাল্তে হেঁ ইধার্সে।
    - আরে, ডিনার তো কর্ লে! (আফতাব বলল)
    - নেহি ইয়ার, অভি নিকাল্তে হেঁ ফটাফট্।
    - অভি?
    - আয়েগা বাদ্মে। চল্ চল্ এক কাম ইয়াদ আয়া।
    হরিশের ভীষণ তাড়া। ঝটিতি পার্ক থেকে বেরিয়ে আমরা ট্যাক্সি নিয়ে নিলাম। সোজা শেরেমিয়েতভো২। পাক্কা চল্লিশ মিনিটের জার্নি।
    হরিশের কোন কাম ইয়াদ এসেছিলো, সেটা জানা হলো না।
    আগে আগে পৌঁছনোর জন্যে ভালো পছন্দের সীট পেলাম, আরো বেশ কয়েকটা চেনামুখের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, তুমুল হুল্লোড় করতে করতে আমরা দিল্লীর ফ্লাইটে চেপে প্রায় না ঘুমিয়ে গল্প আড্ডা খাওয়া দাওয়া হাসি ঠাট্টা করতে করতে সময় কাটিয়ে দিলাম।
    কি অদ্ভুত মানুষ আমরা, একবারও অভি ফ্লাইটে কোথায় বসেছিলো, ও ফ্লাইট সময়মতো ধরতে পেরেছিলো কিনা সে ব্যাপারে ভাবি নি। জাস্ট ভুলে গেছলাম ওর কথা।
    ছুটি কাটিয়ে ফের ওদেশে ফিরলাম। পুরোদমে নতুন সেমেস্টার, নতুন সাবজেক্ট, নতুন টাইমটেবল, আনন্দময় হোস্টেল লাইফ।
    অভি কিন্তু ফেরেনি। সবাই ঠিক সময়ে বা একটু দেরী করে ফিরেছে, কিন্তু একমাস কেটে গেল, দুমাস। অনুপস্থিতির জন্যে ওর নাম কাটা গেছে শুনলাম ইন্স্টিটিউটের খাতা থেকে।
    - ভেরি স্যাড্ ইয়ার!
    - শায়দ শাদি করকে সেট্ল্ হো গিয়া উধার্।
    - লওন্ডিবাজি খতম্।
    - আজীব সা বান্দা হ্যায়!
    নানান রকমের কমেন্ট করে ছাত্ররা।
    ধীরে ধীরে অভিকে আমরা ভুলে গেলাম।
    কিন্তু একটা অদ্ভুত ব্যাপার নাকি লক্ষ্য করা গেছল যেটা কয়েকবছর পরে (চার বছর পরে) শুনেছিলাম।
    এম্ব্যাসীর একতলার সেই বিরাট টেবিলটাতে ভারতীয় ডাকের অঁভলপে অভির নামে চিঠি আসত পোর্ট ব্লেয়ার থেকে। ভায়া ডিপ্লোম্যাটিক ব্যাগ, সাউথ ব্লক, নিউ ডেলি।
    অনেকের বাড়ী থেকেই সস্তার পোস্টেজে ডিপ্লোম্যাটিক ব্যাগে চিঠি আসত। তারাই দেখতে পেত অভির চিঠি পড়ে আছে।
    -মালটা গেল কোথায়?
    -বাড়ীর লোকে ভাবছে ও এখনো পড়ছে, এদিকে ও হয়ত অন্য কোনো শহরে গিয়ে হেভি মাগিবাজি করছে।
    ঠিক এইরকমই রিয়্যাক্শন্ ছিলো অনেকের।
    কিন্তু ঐ অবধিই। তারপরে আমরা ভুলে যেতাম।
    হরিশ খুব ঘন ঘন মস্কো যেত। ওখানে ওর রাশিয়ান গার্লফ্রেন্ড ছিলো, মেয়ে ছিলো। অন্যান্য ধান্দাও ছিলো - কেমন করে সেট্ল্ করবে, বিজনেস করবে, এসমস্ত।
    দেশে ফিরে আসার এক সপ্তাহ আগে হাড় হিম করা একটা খবর শুনেছিলাম। একটা বাংলাদেশি ছেলে এসে আমাকে বলে গেছল।
    হরিশ নাকি মদের ঝোঁকে কন্ফেস করেছে। সেই অনেক বছর আগে পার্ক কুলতুরীর রেস্টুরেন্টে ওর সামনে অভি খুন হয়ে যায়। একটার পর একটা মদ কিনছিলো ওরা। ঘুরছিলো হাসছিলো, মেয়ে পটাবার চেষ্টা করছিলো। এমনি একটা মেয়েকে গিয়ে পটাবার চান্স নিয়েছে, দূর থেকে লক্ষ্য রাখছিলো মাফিয়া। সেই মেয়ে মাফিয়ার গার্লফ্রেন্ড। দুজন হেফ্‌টি লোক এলো, অভিকে জাস্ট ঝুলিয়ে নিয়ে গিয়ে দেয়ালে মাথা থেঁতলে দিলো, তারপরে কোনো রিস্ক না নিয়ে রিভলভার বের করে কাছ থেকে মাথায় গুলি।
    ভেতরের গান বাজনা, খাওয়া দাওয়া এতে এক সেকেন্ডের জন্যেও থামেনি। হরিশ তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে এসে আমাদের নিয়ে তড়িঘড়ি এয়ারপোর্ট চলে যায়। আমরা বাইরেই বসে ছিলাম - দশ মিটারেরও কম দূরত্বে একটা খুন হয়ে গেল, কিছু জানতেই পারলাম না।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০০:১০627801
  • কুলতুরা (স্ত্রী লিঙ্গ) - কালচার
    কুলতুরা কে চতুর্থী বিভক্তিতে ফেললে কুলতুরী।
    রাশিয়ানের এই চতুর্থী বিভক্তি খানিকটা সংস্কৃতে ষষ্ঠী বিভক্তির অনুরূপ।
  • সে | 203.108.233.65 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০০:৫৯627802
  • গোটা শহরটা একাধিক ভাগে ভাগ করে মাফিয়ারা নিজ নিজ এলাকায় রাজত্ব করে। সাধারনত এরা দুভাগে ভাগ করে নেয় এলাকা।
    অবশ্যই পুলিশ ( ফিক্‌! পুলিশ নয় মিলিৎসিয়া) এদের সর্বতভাবে সাহায্য করে কারণ তারাও মাগনায় কাজ করে না- তাদেরও ভালো মার্জিন থাকে।
    যে শহরের কথা বলছি, তাতে গোটা শহরটা ছিলো দ্বিধা বিভক্ত। একটা পার্ট সেলিমের, অন্যটা গফুরের। কিন্তু ব্যালেন্স সমান সমান নয়। গফুর এককালে খুব দাপিয়ে বেড়ালেও ক্রমশঃ তার শক্তিহ্রাস হয়, তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা ছিলো বুড়োটে ও পুরোনোপন্থী। অন্যদিকে সেলিম নিজে গফুরের থেকে বয়েসে সামান্য ছোটো হলেও তার দূরদৃষ্টি ছিলো বেশি, দেশটা যে ভেঙ্গে যাবে তা সে আগেভাগেই আঁচ করেছিলো। শুধু তাই ই নয়, তার ব্যবসার স্ট্র্যাটেজিও সেইভাবে মেপে রেখেছিলো। সেলিমের দলে কাজ করত তরুণ নওজওয়ানেরা। এরা উচ্চাকাঙ্খি, আধুনিক মনস্ক ও ফ্যাশনেবল্‌। সেলিমের সাফল্যের আরেকটা কারণ তার এলাকা। শহরের এয়ারপোর্টটা ছিলো তার এলাকার মধ্যে। এয়ারপোর্ট সংলগ্ন একট পেট্রল স্টেশন থেকে তার দলের ছেলেরা গাড়ীর ট্যাঙ্ক ভরত - পয়সা দিতে হতো না।
    কিন্তু বাকি যা কাজ সে সবের গতি প্রকৃতিতে সেলিমে-গফুরে সেরকম পার্থক্য ছিলো না।
    গফুরের দলে ছিলো একটু বয়স্ক লোকেরা, ম্যানেজমেন্টে। তাদের আবার অন্য প্রোফেশনও আছে এবং সেগুলো লোক দেখানো কিছু নয়। তারা স্ব স্ব ফিল্ডে সত্যিকারের গুণী, প্রতিভার অধিকারী।
    তেমনি এক ম্যানেজার র‌্যাঙ্কের মধ্যবয়স্ক লোকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো।
  • ম্যামি | 69.93.253.55 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০১:১২627803
  • স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
  • a x | 138.249.1.206 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০১:৫২627804
  • আমিও পুরো হাঁ!
  • ঈশান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০২:৫৫627805
  • সে একটা ব্লগ খোলেন্না কেন। কবে থেকে বলছি।
  • aranya | 154.160.5.25 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৬:১৮627806
  • এই টই-তে সে-র লেখা একটা বিশাল প্রাপ্তি
  • ac | 132.164.24.162 | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ ০৭:৫৬627808
  • প্রথম নিরুদ্দেশ - এমনো তো হতে পারে, জামাইবাবু দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন আর পালানোর জন্য ওই রাতটাই বেছে নিয়েছিলেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে প্রতিক্রিয়া দিন