এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • আমাদেরই মা বাবা

    Abhyu
    অন্যান্য | ০৫ জুলাই ২০১৫ | ৬৪৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sm | 53.251.91.25 | ০৯ মে ২০১৬ ০৯:৫৫681086
  • আচ্ছা বলতে পারেন বৃদ্ধাশ্রমে যেতে বুড়ো বুড়ি দের এত আপত্তি কেন? আমার মতে যতো গন্ডগোলের মূলে আছে অনাবশ্যক স্নেহ আর প্রত্যাশা।
    বিদেশে থাকার সময়, দাদু দিদা যদি এসে নাতি নাতনির দেখভাল করে; তার মত ভালো জিনিস আর হয়না। কিন্তু ওই যে স্নেহ আর প্রত্যাশা- যেটা নাকি বছর বছর টেনে আনে।
    কিন্তু;আমাদের দেশে বুড়ো বুড়িরা সম পরিমান দোষী।নিজেদের টাকা পয়সা , সম্পত্তি আগেই ছেলে মেয়েদের হাতে তুলে দেন ।ইদিকে, নিজের দীর্ঘ কর্ম জীবন থেকে কিন্তু শিখেছেন, পয়সা না থাকলে দুনিয়ায় কেউ আপন নয়।
    এই ট্রেন্ড টা চেঞ্জ হওয়া দরকার।প্রৌর হয়ে পরলেই ঘটি, বাটি বেচে ভালো বৃদ্ধাশ্রমে থাকার বন্দোবস্ত করে ফেলতে হয়।ব্যান্ক ব্যালেন্স টা জীবনের শেষ দিন অবধি মোটা রেখে দিতে হয়। ঝ্যাম, কমবেই কমবে।
  • Tim | 108.228.61.183 | ০৯ মে ২০১৬ ০৯:৫৮681087
  • ভাগী,

    বুড়ো বুড়ির ভবিষ্যৎ। "বন্ডিং না হওয়ার" কনসিকোয়েন্স আর কি।
  • Abhyu | 81.12.144.38 | ০৯ মে ২০১৬ ১০:০২681088
  • NRIএর মা বাবার বৃদ্ধাশ্রমের গল্পটা আরো করুণ। শেষ বয়সে বৃদ্ধাশ্রমেই নাকি ওনারা ভালো থাকেন। হবেও বা।
  • একক | 53.224.129.42 | ০৯ মে ২০১৬ ১০:০৬681089
  • খামোখা লোকে বৃদ্ধাশ্রমেই বা যাবে ক্যানো । আমার নয় বাড়ি -ঘর বোধ নেই ,ভেসে বেড়াই ; কিন্তু যাঁরা দাঁড়িয়ে থেকে বাড়ি বানিয়েছেন , একটা লোহার গ্রিল , একটা পেতলের ট্যাপ , পুরনো আসবাব , আলমারিটা এসেছিল সেই ইন্দিরা গান্ধী মারা গ্যালো সেইদিন দুজন দুজনকে মনে পড়িয়ে দেন , তাঁদের অস্তিত্বের অঙ্গ হলো বাড়ি । হুট করে সব ছেড়ে মেস এ থাকার মত বৃদ্ধাশ্রমে উঠে যাওয়া যায়না । একপাল বুড়ো -বুড়ি মিলে একসঙ্গে থাকলেই বেটার থাকে এরকম না । অনেকেই বুড়ো হলেও কমবয়েসীদের সঙ্গে গল্প করতে ভালবাসেন , বুড়ো দের সঙ্গে না ।
  • Abhyu | 81.12.144.38 | ০৯ মে ২০১৬ ১০:১০681090
  • যতদিন দুজন ততদিন চলবে। তারপর? উত্তরাধিকারী বাড়ি প্রোমোটারকে বেচে দিতে চাইলে? "তুমি একা বাড়িতে থাকলে আমাদের কতো চিন্তা, তুমি বৃদ্ধাশ্রমেই ভালো থাকবে।"
  • sm | 53.251.91.25 | ০৯ মে ২০১৬ ১০:১৭681091
  • করুন শোনালেও ওটাই ভবিতব্য।সম্প্রতি কাগজে কিছু ঘটনা বেরিয়েছে, যেখানে বৃদ্ধ বাবা বা মার পচা গলা দেহ উদ্ধার হয়েছে ফ্ল্যাট থেকে। ছেলে/ মেয়ে বিদেশে থাকে বা অন্য রাজ্যে। এরা মরার আগে অন্তত চিকিত্সা টুকু পেতে পারতো।
    --
    এবার বিদেশের একটি গপ্প শোনাই।স্কট ল্যান্ডের একটি উচ্চবিত্ত এলাকায়; এক বৃদ্ধ স্কটিশ দম্পতি থাকে।দুজনেরই বয়স আশির উর্ধে; এবং যথারীতি ছেলে পুলে অন্যত্র থাকে ও দেখা সাক্ষাত কম। ভদ্র মহিলার এলঝেইমার দিমেন্শিয়া।ভদ্রলোক কিন্তু শারীরিক ভাবে খুব সক্ষম।
    তিনি,স্ত্রীর জন্য কোনো রেসিদেন্শিয়াল হোমের ব্যবস্থা না করে নিজে দেখভাল করবেন ঠিক করেছেন ।
    ভদ্রলোক প্রতিদিন একটি কর্নার শপ থেকে কাগজ কেনেন। দুদিন না আসায়, শপ ওনার চিন্তিত হয়ে পুলিশে খবর দেন।
    পুলিশ বাড়িতে তালা ভেঙ্গে ঢুকে দেখে ; ভদ্রলোক সেরিব্রাল স্ট্রোক আক্রান্ত হয়ে অচৈতন্য মেঝেতে পড়ে আছেন।ভদ্র মহিলা প্রায় দুদিন না খাওয়া অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছেন।দিমেন্শিয়া হেতু, ফোন কল করে সাহায্য ও চাইতে পারেন নি।
    সুতরাং, উত্তর হলো ডিসিশন ইস ইওরস।
  • একক | 53.224.129.42 | ০৯ মে ২০১৬ ১০:২২681092
  • জেরিয়াত্রিক স্পেশাল হাউসিং হচ্ছে তো ইন্ডিয়াতে । আশ্রম ফাশ্রম না । নিজের ফ্ল্যাটেই থাকবেন । নিয়মিত ডাক্তার -চেকাপ -ইমার্জেন্সি -পার্ক এ ঘোরা সব ব্যবস্থা নিয়ে প্যাকেজ । মহারাষ্ট্রে হচ্ছে । পব তে শুনেছিলুম শুরু হচ্ছে । বৃহ্ধাশ্রমের চেয়ে অনেক বেটার ।
  • sm | 53.251.91.25 | ০৯ মে ২০১৬ ১০:৪৩681093
  • জেরিয়াত্রিক স্পেশাল হাউসিং একটা বয়স বা সক্ষমতা পর্য্যন্ত কার্যকর।
    আমি , রেসিদেন্শিয়াল বা জেরিয়াত্রিক নার্সিং হোমের বা রেহ্য়াব হোমের কথা বলতে চাইছিলাম। যেটা আর একটু ফ্রেইল লোকের জন্য কাজে আসবে।
    বিদেশে এগুলোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় আছে।
    দেশে, এখনকার সিস্টেম এ রয়েছে; বৃদ্ধাশ্রম । সেখানে কিছুদিন অন্তর হেলথ চেক আপের বন্দোবস্ত থাকে। মন্দের ভালো।
    লোকজন নাক না সিঁটকে ; এভেইল করতে শুরু করলেই মান বাড়বে।
    তবে ওই যে, আমার বাড়ি, বাবার ছবি, মায়ের ব্যবহার করা হাতা, বিয়ের খাট- এই সেন্টি গুলো; আলটিমেটলি বাঁশ হয়ে ফিরে আসে।
  • d | 144.159.168.72 | ০৯ মে ২০১৬ ১০:৪৯681094
  • হ্যাঁ সেই হিন্দমোটরের জমিটায় এরক কিছু ফ্ল্যাট নাকি বানাবে শ্রীরাম গ্রুপ।
  • b | 135.20.82.164 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:১৪681096
  • এদিকের বৃদ্ধাশ্রমে, একেবরে শেষ অবস্থায়, মানে যখন শরীর একেবারে পড়ে গেছে, তার কিছু অভিজ্ঞতা আছে। অসম্ভব ডিপ্রেসিং অভিজ্ঞ্তা।

    ওদিকে শান্তিনিকেতনে এক কিঞ্চিৎ আপস্টার্ট বৃদ্ধাশ্রমের কথা শুনেছিলাম। দু/তিন লাখ টাকা জমা রাখুন, জীবনের বাকি কটা বছরগুলোর জন্যে নিশ্চিন্দি। খাওয়াদাওয়া, ডাক্তার, নার্স আয়া ফেসিলিটি সব আছে। কলকাতা থেকে অনেকেই গেলেন। রাবীন্দ্রিক জল হাওয়া খেয়ে অম্বল থেকে হাইড্রোশিল অবধি সব অসুখ সেরে গ্যালো। আবার কেউ কেউ অমর্ত্য সেনের দ্যাখাদেখি (সদ্য নোবেল পেয়েছেন) সাইকেল কিনে ভুবনডাঙা কোপাই বোলপুর চক্কর দিতে লাগলেন। চার পাঁচ বছর কেটে গেলো,কিন্তু কারো আর সাধনোচিত ধামে যাবার জন্যে কোনো লক্ষণ নেই। ব্যবসাটি শেষ অবধি ফেল করে।
  • Tim | 108.228.61.183 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:২২681097
  • জলদি জলদি রেসিডেন্টরা মরে যাবেন এই অ্যাসাম্পশানের ওপর ব্যবসার কাঠামো দাঁড়িয়েছিলো?
  • b | 135.20.82.164 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:২৩681099
  • টিম হ্যাঁ। ঐ টাকাটা এক কালীন।
  • sm | 53.251.91.25 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:২৩681098
  • ব্যবসা টা ফেল করলো কেন? বুড়ো বুড়িরা টাকা পয়সা দেওয়া বন্ধ করলো না ভালো জিনিস আমাদের দেশে চলেনা।
    আপনি যে শেষ অবস্থার কথা বলছেন, বিদেশে তার ইকুইভ্যালেন্ট হলো নার্সিং হোম ( আমাদের দেশের নার্সিং হোম নয়) বা হস্পিস।
    বৃদ্ধাশ্রমে গেলে, একটু কম বয়সে যাওয়া দরকার।
  • Ekak | 53.224.129.42 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:২৪681100
  • শুনে মনে হচ্ছে লোক ঠকানোর স্কীম । লাইফ এক্স্পেক্তেন্সী ডেটা তো ইন্সীয়ুরেনস এর স্টাট ঘাঁটলেই পাওয়া যায় । এরকম হিসেব না করে ব্যবসা শুরু করে নাকি কেও ।
  • sm | 53.251.91.25 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:৩০681101
  • বাপরে! আমি বৃদ্ধাশ্রম খুললে, একক কে কন্সল্ত্যান্ট রাখবোই।কুনো, আপত্তি চলবেক নাই।
  • সে | 198.155.168.109 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:৩৫681102
  • আমাদের এখানেও বৃদ্ধাশ্রম আছে, কিন্তু তার ব্যবস্থা কিছুটা অন্যরকম এবং খুবই হাইফাই। অতদিন বাঁচতে পারলে আমিও যাব। ওপরের লেখাগুলোয় কিছু পয়েন্ট দেখলাম সেগুলো মানে সেই সমস্যাগুলো এখানে খানিকটা সমাধান করে দিয়েছে।
  • সে | 198.155.168.109 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:৩৬681104
  • এদেশে বৃদ্ধাশ্রম ব্যবসা নয় মনে হয়। আমি যেগুলো জানি সেগুলো সরকারি এবং অসম্ভব সুন্দর। অনেকবার গেছি।
  • Tim | 108.228.61.183 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:৩৬681103
  • ধুর এককও যেমন। যে ডিপোজিটটা নিচ্ছে সেটাই তো হিসেব করে নিলে পারতো, যাতে ব্যবসা না উঠে যায়। মানে এটাই সবাই করে আর কি।
  • Ekak | 53.224.129.42 | ০৯ মে ২০১৬ ১১:৩৯681105
  • আরে সেই হিসেবের জন্যেই তো বলা । তোমার কাছে লাইফ এক্স্পেক্তেন্সী ডেটা না থাকলে সঠিক হিসেব করবে ক্যামনে ? প্রেসেন্ট এক্স্পেক্তেন্সী রেট্ , কি হারে এক্স্পেক্তেন্সী বাড়তে পারে ,মার্কেট কস্ট কোথায় যাবে , মানি কত ডিব্যলুএত করবে এগুলো জানা চাই তো । যারা এসব কাজ ঠিকভাবে করে তারা এভাবেই করে । যারা আন্দাজে ধিক ছোঁড়ে তাদের ওরম অবস্থা হয় ।
  • Tim | 108.228.61.183 | ০৯ মে ২০১৬ ১২:২৮681107
  • বুঝলুম
  • Ekak | 53.224.129.42 | ০৯ মে ২০১৬ ১২:৩২681108
  • এটা নিয়ে গপ্প লেকো বরম :) টই খুলেছি ।
  • সে | 198.155.168.109 | ০৯ মে ২০১৬ ১৩:৫৮681109
  • আমাদের এখানে আল্টার্সহাইম এবং প্ফ্লেগেহাইম এইদুটো কন্সেপ্ট আছে। যদিও এখানে স্ট্যান্ডার্ড অব লিভিং খুবই যাকে বলে হাই, দুনিয়ার সেরা বলে নিন্দুকেরা, তাই আল্টার্সহাইমের কোয়ালিটিও মন্দ নয় আরকি!
    এই আল্টার্সহাইম হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রম, যদিও এতে 'আশ্রম আশ্রম' কিছু আছে কিনা চোখে পড়েনি। এদেশে যৌথ পরিবার যখন ভাঙতে ভাঙতে 'একক' বা 'দুজনের' বা 'দুজন ও তাদের শিশু' - এইরকম আকারই স্ট্যান্ডার্ড হয়ে গেল, তখন আল্টার্সহাইমও স্ট্যান্ডার্ডে দাঁড়িয়ে গেল। যৌথ পরিবারের কন্সেপ্ট দূর হয়ে যাওয়া মানেই, নিজে যেমন বাপ মায়ের সঙ্গে থাকব না - তেমনি আমার সন্তানও বড়ো হলে আমায় ছেড়ে পালাবে। নিজে যেমন নিজের বুড়ো বাপ মায়ের দায়িত্ব নিচ্ছি না, তেমনি নিজের সন্তানের থেকেও সেইরকম ব্যাপারই ঘটবে। আর নিজের যদি সন্তানাদি না জন্মায় তাহলেও একই ব্যাপার। বৃদ্ধ বয়স অবধি বাঁচতে হলে দেখাশুনো করবার লোক চাই। কচি বয়সে হাড়ের জোর থাকলে বুড়ো বয়সের হ্যাপা গেস্ করা যায় না। ছেলে মেয়েরা দূরে থাকে, কি নিঃসন্তান ছেলেমেয়ের বালাই ই নেই, এদিকে বয়স বাড়ছে, পেশির শক্তি কমছে, নানারকম জরা এসে শরীরে বাসা বাঁধছে - এখন উপায়? রোজ ওষুধ খাওয়াবে কে? বাজার করে আনবে কে? রাঁধবে কে? কাপড়জামা নিয়ম করে কাচবে কে? চান করিয়ে দেবে কে? কাপড় চোপড় ইস্তিরি করে দেবে কে? বাসন ধোবে কে? বেড়াতে নিয়ে যাবে কে? নতুন জামা কে কিনে আনবে? নিয়মিত ঘরদোর ঝেড়েমুছে সাফ করবে কে? ব্রেকফাস্ট লাঞ্চ বিকেলের খাবার ডিনার বারেবারে কে সার্ভ করবে?
    এত কাজ করবাকর জন্য 'কাজের লোক' রাখতে হলে সে অনেক কাজ। একজনের জন্য সারাক্ষণের একজন লোক চাই। তাকে নিয়মমত মাইনে দিতে গেলে খরচে পোষাবে না সরকারের। এই সমস্ত বুড়ো মানুষদের জন্য সপ্তাহে এক বা দুদিন করে সরকার থেকে 'কাজের লোক' পাঠিয়ে দেয়। সেই লোক বাড়ির সমস্ত কাজ করে দিয়ে যায়। ফ্রিজ গুছিয়ে রাখা, ঘরদোর বাথরুম রান্নাঘর সাফ করা, নোংরা কাপড়জামা ওয়াশিং মেশিনে কেচে দেওয়া, টবের গাছে জল দেওয়া, ডিশওয়াশার চালিয়ে বাসন ধুয়ে দেওয়া, জঞ্জাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, চিঠির বাক্স থেকে চিঠি নিয়ে আসা, চান করিয়ে দেওয়া, ওষুধ পত্রের হিসেব মিলিয়ে রাখা, ইত্যাদি ইত্যাদি। পোষা কুকুর থাকলে তাকে দিনে দুবার 'ঘুরিয়ে আনবার' লোকও মিলে যায় পাড়ায়। এমনি করে দিন চলে। সরকার বহন করে খরচ আমাদের ট্যাক্সের পয়সায়। আমরা যখন প্রতিজ্ঞা করেছি বাপমায়ের দায়িত্ব নেবো না, তখন ট্যাক্স দিচ্ছি সরকারকে এই খরচ বহনের জন্য। সাধারণত আশি পঁচাশি কি নব্বই বছর বয়স অবধি বুড়োমানুষেরা নিজেদের বাড়িতেই থাকে। তাদের সন্তান (যদি থেকে থাকে) দেরও বয়স হয়ে যায়, তারাও প্রায় রিটায়ারমেন্ট এজ এর দিকে পা বাড়িয়ে। তারাও হয়ত নিঃসন্তান, কি কাদের সন্তানও আলাদা থাকছে। একটা টাইমের পরে বুড়োমানুষগুলোর প্রতিদিনই দেখাশুনোর লোকের দরকার হয়ে পড়ে। তখন হপ্তায় দুতিন দিন করে লোক এসে এসে দেখে যাচ্ছে করলে চলবে না। হয়ত কিডনির অবস্থা খারাপ, কি ক্যানসার হয়েছে, কি ব্লাড প্রেশার ব্লাড শুগারের হাল ভাল নয়, চলাফেরা করতে অসুবিধে, বাথরুমে যেতে পারে না, ব্লাডার ভালো কাজ করছে না, এইরকম অনেক কিছু। তখন আল্টার্সহাইমে থাকাই শ্রেয়। এই সরকারি আল্টার্সহাইমে যেতে হলে যা সঞ্চয় আছে সব দিয়ে দিতে হবে। যার মিলিয়ন আছে সে মিলিয়ন দেবে, যার ফুটো পয়সা আছে সে দেবে ফুটো পয়সা। কিন্তু সবার জন্য একই ব্যবস্থা। আল্টার্সহাইমে যাবার পরেও পেনশন তো পাবেই। সেখানে সঙ্গে করে নিয়ে যাবে নিজের পছন্দের জিনিসপত্র, একটা বড়ো ঘরে যতটুকু আঁটে। আল্টার্সহাইম কোনো হাসপাতাল নয়, কোনো জেলখানাও নয়। এখানে খাবার জন্য ডাইনিং হল আছে। সবার নিজের নিজের পছন্দের প্রিয় বসবার জায়গা আছে। সবার স্বাস্থ্য অনুযায়ী আলাদা আলাদা খাবার। কেই চিনি খায় না, কারো মাংস বারণ, এইরকম। সবার কাপড়জামা নিয়মিত কেচে ইস্তিরি করে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়, ঘর সাফ করবার লোক আছে। আবার প্রত্যেকতলাতেই গোটাদুয়েক রান্নাঘর রয়েছে যেখানে বুড়োমানুষেরা নিজেরা ইচ্ছে করলে রাঁধতে পারে, যখন খুশি। খৃস্টমাস নিউইয়ারে তো রীতিমত ভীড় করে তারা কেক বানায়, তাদের আত্মীয়রা দেখা করতে আসবে জেনে। নিজেরাই শরীর ভালো থাকলে বাজার করে আনে, সারাদিন গল্পগুজব টিভি খবরের কাগজ ইন্টারনেট গেমস প্রেম ইত্যাদি চলে। আবার হুট করে অসুখ করে গেলে হাসপাতালেও যেতে হয়। খুব বেশি শরীর অসুস্থ থাকলে প্ফ্লেগেহাইম এ থাকে। সেটা নার্সিং হোম মতো। এদের শরীরের গতিশীলতা খুবই কম। প্ফ্লেগেহাইম থেকে ফেরে খুব কম জন। এমনকি বাড়িতে বাস করা বুড়োমানুষেরাও অনেকসময় প্ফ্লেগেহাইমে গিয়ে জীবনের শেষদিনগুলো কাটায়। আল্টার্সহাইমে নিজের ঘরে মারা গেছে এমন খুব কম। অনেকেই মরে হাসপাতালে কি প্ফ্লেগেহাইমে। মরতে তো একদিন সবাইকেই হবে। যদিও সে নিয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা করি না। কিন্তু অশক্ত হবার পর থেকে মৃত্যুর আগে অবধি সময়টুকুর দৈর্ঘ্য্য কার কতটা সেটা আমাদের জানা নেই, সেই সময়টা যাতে কষ্টে না কাটে সেইজন্যই আল্টার্সহাইম। তবে এটা ব্যবসা নয়। প্রাইভেট আল্টার্সহাইম থাকতে পারে বিলিওনিয়রদের জন্য। সেখানেও ব্যবস্থা একই। চিকিৎসাবিজ্ঞান যতই উন্নত হোক না কেন, যত পয়সাই থাকুক না কেন, অমরত্ব ব্যাপারটা এখনো চালু হয়নি বাজারে। তাই ষাট সত্তর আশি পঁচাশির লিমিট পেরোলে আল্টার্সহাইমই মোটামুটি স্টপওভার ফাইনাল ডেস্টিনেশনে যাবার আগে পর্যন্ত।
  • সে | 198.155.168.109 | ০৯ মে ২০১৬ ১৪:১৩681110
  • বছর পাঁচেক আগে মাথাপিছু খরচ ছিল মাসে হাজার সাতেক। গড় খরচ।
  • d | 144.159.168.72 | ০৯ মে ২০১৬ ১৪:২৪681111
  • সাত হাজার ইউরো? পুয়্রোটা সরকার বেয়ার করে?
  • d | 144.159.168.72 | ০৯ মে ২০১৬ ১৪:২৪681112
  • পুরোটা
  • sinfaut | 74.233.173.185 | ০৯ মে ২০১৬ ১৪:৩৩681113
  • "যার মিলিয়ন আছে সে মিলিয়ন দেবে, যার ফুটো পয়সা আছে সে দেবে ফুটো পয়সা। কিন্তু সবার জন্য একই ব্যবস্থা। "

    এমন ব্যবস্থা হলে মিলিওন রোজকার করে লাভ কী ফুটো পয়সাই তো রোজকার করবে সবাই।
  • সে | 198.155.168.109 | ০৯ মে ২০১৬ ১৪:৩৮681114
  • গতবছর মার্চমাসে আমায় হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। হাসপাতালে আমার ঘরে প্রথমে ছিলেন এক বৃদ্ধা। তিনি স্বামীর সঙ্গে বাড়িতেই থাকেন। নিঃসন্তান। ওঁর সঙ্গে দেখা করতে কেউ আসত না। উনি স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। নিজেই বললেন, স্বামীর পক্ষে দেখা করতে আসাটা অসুবিধের, বয়স হয়েছে ১০২ বছর।
    ঐ হাসপাতালেই কদিন পরে আমার ঘর/ওয়ার্ড বদল হলো। বিরাট ঘরে একাই থাকছিলাম, হঠাৎ একদিন এলেন এক বুড়িমানুষ অ্যাম্বুলেন্সে করে কোন এক আল্টার্সহাইম থেকে। খুব বাড়াবাড়ি অবস্থা, মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে পড়ি বাড়াবাড়ির সোরগোলে, ঘরে নার্সেরা আসে, আলো জ্বালিয়ে শুশ্রূষাপর্ব চলে। নাতনী দেখা করে গেল একদিন। বুড়ির মেয়ের মেয়ে। বুড়ির মেয়ে অনেক বছর আগেই মারা গেছে। নাতনী মাঝে মধ্যে খোঁজ নেয়। নাতনীর নিজেরো ঘরসংসার চাকরি বাচ্চাকাচ্চা রয়েছে, তবু সে দুবার দিদিমাকে দেখে গেল। তারপরে একদিন দুপুরে অ্যাম্বুলেন্স এলো, বুড়িকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল আল্টার্সহাইমে।
  • সে | 198.155.168.109 | ০৯ মে ২০১৬ ১৪:৪৪681115
  • হ্যাঁ গড় খরচ ঐরকমই। সাতহাজার সুইস ফ্রাঙ্ক, মানে প্রায় হাজার আষ্টেক ডলার। সরকার বহন করে মানে, আমাদের ট্যাকসের পয়সা এবং তাদের পেনশনের টাকা এবং তাদের লাইফ সেভিংস। এভাবে না করলে চলবে কেমন করে? আর এই নিয়ে অবাক হবার কিছু নেই। এর থেকে ঢের বেশি খরচ হয় স্কুল কলেজে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাখাতে। সেসবও তো আমাদের ট্যাক্সের পয়সা থেকে যাচ্ছে। এদেশে এটাকে বলা হয় সলিডারিটি প্রিন্সিপ। সব কিছুতে ব্যবসা-প্রফিট করলে মুশকিল। এগুলো বাদ প্রফিট ব্যবসার আওতা থেকে।
  • Ekak | 53.224.129.63 | ০৯ মে ২০১৬ ১৮:১০681116
  • সরকার চালাচ্ছে তো ট্যাক্সের পয়সাতেই । আপাতত ঠিকই আছে কিন্তু মানুষের লাইফ এক্স্পেক্তেন্সী বাড়তে বাড়তে ধরা যাক ১২০ বছর হলো এদিকে প্রফেশনালি একটিভ লাইফ মাত্র ৪০-৪৫ বছর , এরকম জায়গায় গিয়ে একটা বিশাল ক্রাইসিস দেখা দেবে । টোটাল লাইফের মাত্র ওয়ান থার্ড সময়ে বাকি টু থার্ড এর জন্যে রোজগার করতে হবে । এবং সেটা শুধু ওই বিলীয়নেয়ারদের ভরসায় হবেনা কারণ বিলীয়নেয়াররা জন্মে থেকেই ভালো খাচ্ছে -ভাআলো পড়ছে বলে টোটাল পাই এর বেশি অংশটা তারাই সাবাড় করে দেবে ।একটা সময় গিয়ে বাকিদের ও চাপ ফেস করতে হবে । খুব একটা পোক্ত মডেল না ।

    জেরিয়াত্রিক প্রফেশন গ্রোথ দরকার । আধুনিক যন্ত্রপাতি কাজে লাগিয়ে হাত -পা অশক্ত হয়ে গেলেও যাতে প্রফেশনাল লাইফ টাকে বাড়িয়ে টু থার্ড অফ বায়োলজিকাল লাইফে নিয়ে যাওয়া যায় সেটা দেখা দরকার । পশুপাখিদের এই সমস্যা নেই । তাদের আধুনিক চিকিত্সা বিজ্ঞান নেই বলে প্রফেশনাল লাইফ আর বায়োলজিকাল লাইফ প্রায় মার্জিং লাইনে থাকে । এটা একদম উন্নত মানুষের সমস্যা । যত দিন যাবে বড় আকার ধারণ করবে সমস্যা টা।
  • cm | 127.247.98.44 | ০৯ মে ২০১৬ ১৯:০৩681118
  • জীবন সম্পর্কে দৃষ্টি ভঙ্গী পাল্টাতে হবে। আমার সামাজিক তাৎপর্য্য না থাকলে আমি চাই আমায় ছুটি দেওয়া হোক।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন