এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • এ কলকাতার মধ্যে (টীকাসহ)

    ন্যাড়া লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ | ১৯৪১ বার পঠিত
  • [কুড়ি বছর আগে লেখা এক বছর-পঁচিশ বয়সী যুবকের পুরোন ডায়রি আমার হাতে এসেছে।
    এডিট না করেই তুলে দিলাম - কুড়ি বছরে কলকাতার বাহ্যিক রূপ কতটা পাল্টেছে সেটা
    দেখার জন্যে। এর আর কোন মূল্য নেই।]

    ... এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা।
    হেঁটে দেখতে শিখুন ...

    - শঙ্খ ঘোষ

    আমি হাঁটতে থাকি। যাদবপুর থেকে ঢাকুরিয়া, গড়েহাটা হয়ে বাঁদিকে গোঁত্তা খাই।
    গুরুসদয় দত্ত রোড হয়ে সার্কুলার থুড়ি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডে পড়ি। বিরাট "হোয়েনএভার
    ইউ সি কালার, থিংক অফ আস" সাইনবোর্ডের ঠিক নীচটায় একটা উমনোঝুমনো পাগলকে
    লাল-কালো পাটকেল-কয়লা দিয়ে আঁকিবুঁকি কাটতে দেখি। নন্দনের পাশ দিয়ে রবীন্দ্রসদনের
    গা ঘেঁষে ডানে যাই। ময়দান। "পায়ে পায়ে কত পথ পেরিয়ে এলে ...।"

    একটা আড়াইতলা বাস ঘক্ ঘক্ করতে করতে বিড়লা প্ল্যানেটেরিয়ামের সামনে দিয়ে বেঁকছে।
    আমি লাফিয়ে সরে যাই। একটা মারুতি।
    সাফারি-সুটের-পকেট-থেকে-পান-পরাগের-পাউচ-বেরিয়ে-থাকার মুখে বিরক্তি। "সরি" বলে
    আবার লাফিয়ে ফুটপাতে উঠে আইটিসির নামাঙ্কিত রেলিং স্পর্শ করি। [১]

    ঠিক তক্ষুনি কে যেন আমার নাম ধরে ডেকে ওঠে। আমি আকাশের দিকে চাই। "কে তুমি আমারে
    ডাক"? থিয়েটার রোডের মোড়ে স্পষ্টতই বিসিএল-থেকে-বেরোচ্ছি মুখে একটি মেয়ে একরাশ বই
    হাতে রাস্তা পেরোয়। একজন ট্র্যাফিক পুলিশ দূরে ছায়ায় দাঁড়িয়ে খৈনি ডলছে। একসঙ্গে
    অনেকগুলো বিবাদী-বাগ-গামী মিনিবাস আর প্রাইভেট বাস যে-যেখানে-খুশি দাঁড়িয়ে যাত্রী
    ডাকে। চশমাপরা তিরিশ-বত্তিরিশের অফিসফেরত বাসস্ট্যান্ডে এসে একটা পা-কে টেবিলে করে,
    তার ওপর রেখে পাতলা ব্রিফকেস খুলে সিগারেটের প্যাকেট বের করে বুকপকেটে রাখে। একটি
    উনিশ-কুড়ির ছেলে হাতে ফুটবল বুট ঝুলিয়ে এসপ্ল্যানেডের দিকে এগোয়। আমি অলস দৃষ্টিতে
    এসব দেখতে দেখতে আবার সেই ডাকটার প্রতীক্ষা করি। আকাশ এখন বারুদরঙা। পশ্চিমের আকাশ
    ক্রমশঃ খুন-খারাবি লালের দিকে এগোচ্ছে।

    আমি আবার হাঁটি। "হাজার বছর ধরে ... "। লিন্ডসের সামনে কাঁধের কাছে ছোঁয়া পাই। ঘাড়
    ঘুরিয়ে দেখি, নতুন নিউ মার্কেটের নিজাম রেস্তোঁরার "নো বিফ" সাইনটা মুখ বের করে
    হাসছে। এবার ডানে। যেতে যেতে ঘাড় ঘুরিয়ে মিউজিয়ামের সামনের জনতা দেখি। ঘাড় সোজা করে
    গ্লোব সিনেমার দিকে এগিয়ে যাই। বাদশা আবার খুলেছে। গ্লোব পেরোই। বাঁদিকের ফুটপাতে
    আসি। হগ সাহেবের বাজারে ঢুকতে গিয়ে থমকে যাই। "এখনই অন্ধ বন্ধ কোরোনা পাখা।" [২]

    কামান। বাঁদিকের গলি। লাইট হাউসের সামনে। এরপর? "তুমি এক দূরতর দ্বীপ।" লাইট
    হাউসের গাড়ি-বারান্দার তলা দিয়ে লেবু-জল, এগরোলের বাচনিক আহ্বান উপেক্ষা করে অলস
    পায়ে এগোই। দূরে দেখি - ময়দান মার্কেট, এসপ্ল্যানেড গুমটি ছাড়িয়ে - পশ্চিমাকাশ
    ম্যাজেন্টা-বেগুণি হচ্ছে। নিউ এম্পায়ারের গাড়ি-বারান্দা। থমকে দাঁড়িয়ে "নেক্সট
    চেঞ্জ"-এর ছবি দেখি। পকেটে হাত ঢুকিয়ে দেশলাইয়ের তলায় জড়োসড়ো হয়ে থাকা খুচরোগুলোকে
    স্পর্শ করি, ওজন যন্ত্রটা দেখে হেসে পাশ কাটিয়ে যাই। কারেন্ট বুকিং স্টল পেরিয়ে এক
    ধাপ নিচে নেবে বাঁদিকে তাকিয়ে খাঁচার ভিড় দেখি। [৩]

    চা খাওয়া কি প্রয়োজনীয়? এখনই? হাঁটতে হাঁটতেই উত্তর খুঁজি। গ্র্যান্ডের সামনে
    ফুটপাতে রকমারি জিনিসের পশরা। এগোই। ফুটপাতে মেলে ধরা বইয়ের জগতে থামি। তারপর বাটার
    জুতো। অলস চোখে দাম দেখতে দেখতে আবার সেই খুচরো স্পর্শ করি। কেউ যেন আমার নাম ধরে
    ডেকে উঠবে। এখনই।

    রিটজের গায়ে নতুন রঙ চড়ছে। "প্রলেপ মাখা মুখের শোভা ...।" সোজা। ভিক্টোরিয়া হাউজের
    দিকে। ক্যাপিটাল, র‍্যালিজ, গুপ্তাজ না শর্মাজ - সব পেরিয়ে যাই ঘোরে। ডানদিকে
    সুরেন ব্যানার্জি রোড। হস্তসঞ্চালনে স্তব্ধ গতি। একটা বিচ্ছিরি রঙের মারুতি,
    ভীষণ-রোগা ড্রাইয়্ভারের পাশে নির্লিপ্ত-মুখ হাতে-রিডার্স-ডাইজেস্টকে নিয়ে বাঁয়ে
    বেঁকতে গিয়ে ধমক খেয়ে চুপ। এসবই দেখি অত্যন্ত নির্বিকার চোখে। শুধু দুই ভুরুতে ঢেউ
    খেলে যায়, ঠোঁটের কোণদুটো একটু ভেতরে ঢুকে যায়। ঘামেভেজা খুচরোগুলো ... [৪]

    ধর্মতলা স্ট্রিট ধরে ওয়্লিংটনের দিকে। ক্যাসেটের দোকান পেরোই, বার পেরোই, চাঁদনি
    পেরোই, হকারদের গুলতানি দেখি প্রাকসন্ধ্যায়। রাস্তায় নাবি। ঘটাং-ঘট শব্দে একটা
    ট্রাম প্রায় ঘাড়ের কাছে। মুচকি হেসে আবার ফুটপাতে। "যদিও সন্ধ্যা আসিছে মন্দমন্থরে
    ..."। আলো জ্বলে গেছে দোকানে দোকানে দোকানে। চিরাচরিত হলদেটে আলোর বাল্ব,
    ফ্যাটফ্যাটে সাদা আলোর বাল্ব, শোভন মৃদু দামী আলো, লম্বা দপদপে সাদা আলোর টিউব, আর
    উৎসহীন লালাভার আকাশ -

    আমি হাঁটছি। ওয়েলিংটন স্কোয়ারের দিকে। দাঁড়িয়ে গেছে যানযন্ত্র। "বেদম ট্র্যাফিক
    জ্যাম ..."। ম্যাডান স্ট্রিটের ক্রসিং পেরোই। রাস্তার পাশে পুরোন রেকর্ডের দোকানে
    "চলো দিলদার চলো ..."। মোড়ের কাছাকাছি বাঁদিকে চ্যাপেলের গায়ে সাদার ওপর নীল কালি,
    "যীশু বলিলেন, তোমরা আমার নিকট আইস ..."।

    ****

    ... আমি জানি দুঃখ পায়, কেঁদে হয় কলকাতা আকুল
    মনের ভিতরে। তুমি একবার কান পেতে শোনো ...
    ... রোজই যাকে কাঁদতে হয়, সে কি আর দুঃখ পেতে জানে ?

    - শক্তি চট্টোপাধ্যায়

    আমার কলকাতা এমনই। এমনই সরল, এমনই দ্বন্দ্বে ভরা। আমার কলকাতায় গ্রীষ্ম আসে -
    পিচগলা গ্রীষ্ম। বর্ষা আসে - জলজমা, শহর-অচল-করা বর্ষা। আমার কলকাতায় শরৎ আসে -
    নীল-আকাশে-সাদা-মেঘের-ভেলা-ভাসানো শরৎ, ঢাকের-বোল-তোলা শরৎ। শীত আসে -
    আসব-কি-আসব-না করেও শীত আসে। বসন্ত আসে - গরমের হল্কা নিয়ে, ঘাস-উঠে-যাওয়া
    দেশবন্ধু পার্কের একটা গাছে মধ্যদুপুরের সঙ্গীহীন কোকিলের ডাক নিয়ে বসন্ত আসে।
    আমার কলকাতায় ক্রিকেট আসে, বইমেলা আসে, নাট্যোৎসব আসে।

    কলকাতায় জমি দখলের দাঙ্গা হয়। কলকাতায় বিদেশিনীকে ধর্ষণ করে জওয়ানরা। কলকাতায়
    লোকের মুখে অ্যাসিড বাল্ব ছুঁড়ে অন্যায়ের প্রতিবাদের প্রতিরোধ করা হয়। কলকাতায়
    কারখানা বন্ধ হয়, হাত-বদল হয়, আবার খোলে - মাঝখান থেকে কিছু লোক মরে যায়।

    কলকাতায় সুমনের গান হয়, গোপন-স্ট্রিপটিজ নাচ হয়, ভীমসেন যোশী ভৈরবী ধরেন
    ব্রাহ্মমুহূর্ত্যে, রাত সাড়ে-দশটার পর মধ্য-কলকাতা দখল নেয় বেশ্যা-মাতাল-টাউটরা,
    ফুটপাতে জন্ম-মৃত্যু-রমন হয়। কলকাতা স্বোচ্চার হয় কিউবার দুঃখে, তিব্বত নিয়ে কারও
    কোন মাথাব্যথা নেই; ভিয়েতনাম যুদ্ধের নিন্দে হয়, আফগানিস্তানের কোন দুঃখ থাকে না। [৫]

    কলকাতায় দুরন্ত কবিতা লিখে চলেন জয়, তসলিমা নাসরিনের লড়াকু জার্নাল প্রকাশিত হয়, বিকাশ
    ভট্টাচার্য রঙে-রেখায়-জমিতে সৃষ্টি করেন পুরোন দৃশ্যের, নতুন বোধের। কলকাতার
    ফুটপাতে বিক্রম শেঠের নতুন বইয়ের পাশেই বিকোয় হলুদ-মলাট, হাইজেনবার্গের
    ফিজিক্স-ফিলোসফির পাশে থাকে বিকৃতকাম উপন্যাস। কার্জন পার্কে বাদল সরকার দেখে
    ফেরার পথে চোখে পড়ে ক্যাবারে-সংকুল ঘোষিত-নাটক। [৬]

    আজকাল আর পথে রথ চলে না। কলকাতায় চলেনি কোনদিন। তবু সে দেখেছে ফিটনে জোড়া অয়েলারের
    দাপাদাপি, শুনেছে এবং শুনছে গরুর গাড়ির ক্যাঁচকোঁচ, রিক্সাগাড়িতে জোতা মানুষগুলোর
    গভীর নাদ-গভীর নিশ্বাস।

    এসবই বলা কথা বহুবার। কথায় কিছু হয়না। তবু শব্দই ব্রহ্ম, শব্দই নির্বাণ।

    সুতানুটি গোবিন্দপুরের সঙ্গে গাঁটছড়া-বাঁধা দিন তো কবেই শেষ হয়ে গেছে। রাক্ষুসী
    কলকাতার উদ্গীরণে সেসব দুঃখ এখন দূষণ হয়ে ভাসে। আর আমরা, কলকাতা মানুষজন, আশায়
    ভাসি, আশায় বাঁচি, আশায় ...

    ১৯ শে মার্চ, ১৯৯৩

    টীকাঃ

    ১। ঢাকুরিয়া বা সার্কুলার রোডের ফ্লাইওভার তখনও কল্পনাতেও আসেনি। হয়নি চৌরঙ্গী ফ্লাইওভার বা
    মোহরকুঞ্জও।
    ২। নিউ মার্কেট, মানে হগ সাহেবের মার্কেট আশির দশকের শেষে আগুন লেগে পুড়ে যায় অনেকখানি। কারকো
    নামের বিখ্যাত রেস্টর‍্যান্ট পুড়ে যায় সেই সঙ্গেই। একটা অংশ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে। সেই অংশের দোকানপাট
    সাময়িকভাবে স্থানান্তরিত করা হয় চৌরঙ্গীর ওয়াই-এম-সি-এ বিল্ডিং-এর সামনে। সেখানে একটা নিজাম খুলেছিল,
    যারা গরুর মাংস বেচতো না।
    [৩] লাইটহাউজ তখনও জামাকাপড়ের দোকান হয়ে যায়নি, সিনেমা হল ছিল। নিউ এম্পায়ারের সামনে তখনও থামওলা
    গাড়িবারান্দা। উল্টোদিকের মলও হয়নি, দোকানের সারি ছিল সেখানে।
    [৪] আজ যেখানে পিয়ার্লেস ইন তথা আহেলী রেস্তোঁরা, সেখানে রিটজ নামের হোটেল ছিল যা সত্তর দশকের শেষে বন্ধ হয়ে
    যায়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে নব্বইয়ের শুরুতে পিয়ারলেস সেটি নিয়ে পিয়ারলেস ইন বানায়। সেই সময়ে পিয়ারলেস
    ইন বাননোর তোড়জোড় চলছিল।
    [৫] আফগানিস্তান সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ান দখল নিয়েছিল। অ্যামেরিকা পাকিস্তানের সাহায্যে প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছিল। অবশ্য
    ততদিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা সমাজবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা সারা পৃথিবীতেই তখন ভেঙে পড়ছে।
    [৬] সারকারিনা প্রভৃতি শ্যামবাজারী নাটকের হলে চলে এমন নাটক যার বিজ্ঞাপনে মূল ঘোষণা থাকে, মঞ্চে মিস অমুকের
    ক্যাবারে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ | ১৯৪১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কল্লোল | 125.242.160.54 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০১:০৪46942
  • ন্যাড়া। স্মৃতিকে প্ররোচিত করার জন্য, কি বলবো বেশ ইয়ে মতোন লাগছে। আমাদের কলেজ্বেলার একদিন লেখার ই্চ্ছে হচ্ছে। লিখে ফেলবো।
  • Ranjan Roy | 24.99.248.61 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৪৮46963
  • সে,
    আহা! সব জেগে উঠছে। কেমন যেন হলিউডের ভুতুড়ে বইয়ের লাশকাটা ঘর থেকে জেগে ওঠা অশরীরী বা ড্রাকুলার মোহিনী রক্তচোষা নারীদের সন্ধ্যেয় জেগে ওঠার মত। (শহর কলকাতা ড্রাকুলা বটেক!)
    মারীচ সংবাদ করে কাঁপিয়ে দিলেন চেতনা। সবাই বিতর্কে মাতল--- এটাতেই ব্রেখটিয় অ্যালিয়নেশন হয়েছে , অথবা হয় নি! নান্দীকারের তিন পয়সার পালা প্রথম মঞ্চসফল ব্রেখটের কোলকাতা নাটক বটে কিন্তু কেমন যেন নন-ব্রেখটিয় প্রযোজনা ইত্যাদি ইত্যাদি!
    মারীচ সংবাদের সেই গান গুলো?
    ১) সব জানতে পারবে তাহার কাছে সিয়া! সিয়া! সিয়া!
    ২) মেরি বাবা! মেরি বাবা!
    ৩) চাপের মহিমা বর্ণন( দেশপ্রেমের চাপ!)
    ৪)শেষের দৃশ্যে বাল্মীকির সিগ্রেট খেতে খেতে আসা ও তার আবাহন গীত ( একটু ঔড্র্দেশীয় উচ্চারণে)ঃ
    অজ্ঞ্জন বন্দে তোমায় এস বাল্মীকি মুনি( এই রকম কিছু)ঃ)))
  • ন্যাড়া | 219.131.62.113 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৪৯46964
  • অনুপকুমারের ট্রেন ফেলের নাটকটা বোধহয় "অঘটন"। কিছুদিন নায়িকার অভিনয় বাসবী নন্দী করতেন।
  • Ranjan Roy | 24.99.248.61 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:০৮46965
  • De,
    নাঃ, দে'জ বা ভারবিতে গিয়ে দেখব ওঁর শ্রেষ্ঠ কবিতায় পাই কি না!
    গল্পটা হল পূর্ণেন্দু প্রেমেন মিত্তিরের "তেলেনাপোতা আবিষ্কার" গল্পটি নিয়ে একটি ফিলিম বানিয়েছিলেন-- " স্বপ্ন নিয়ে"।
    [ ফিলিমটা খাজা; আমার ব্যক্তিগত মত। সেটাই মৃণাল সেনের হাতে পরে চমৎকার ফিলিম হল "খন্ডহর"। তাতে যামিনী করেছিলেন শাবানা আজমী।]

    তাতে যামিনীর ভূমিকায় মাধবী। সিনেমা শেষ হল। তীরবেঁধা পাখি পূর্ণেন্দু কবিতা লিখলেন শুটিংয়ের একটি সীন নিয়ে।
    ঃ টেবিলে বাঘের মুখ--।
    মাধবী এগিয়ে আসুন, বলুনঃ কোন লাভ আছে মনে রেখে?
    মনে হবে অবসন্ন কুসুমেরা ঝরিতেছে--"

    ইত্যাদি, ইত্যাদি।
    সিনেমা যাই হোক, কবিতাটা পড়ে এই চন্ডাল আঠেরো বছর বয়সে দিওয়ানা হয়ে গেল। বুক খালি, হু হু করে।
    শেষে মৌলানা আজাদ কলেজ ছেড়ে পাড়ার গড়িয়া কলেজে বিশেষ মেয়েটির এক ইয়ার নীচে ভর্তি হল। তবু রোজ ওকে দেখতে পাবে এই আশায়। যারা বোঝার তারা বুঝল। হ্যাটা খেল।
    কিছু লোক মাসিমা মালপোয়া খামু বলার জন্যেই জন্মায়।
    সেই কোলকাতায় লোকে ক্যারিয়ার গড়ার থেকে প্রেমে পড়াকে বেশি প্রায়োরিটি দিত। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বেশি আনন্দ পেত।
    রোল মডেল ভাবত গোরার থেকে দেবদাসকে, আর বড়ে গুলামের চেয়ে হেমন্তকে, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের চেয়ে চারু মজুমদারকে।ঃ((((
    তাই আজ বঙ্গের এই অবস্থা!
  • Ranjan Roy | 24.99.248.61 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:১৯46966
  • সমস্ত চন্ডালী ও গুর্বীদের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধঃ
    কেতকী কুশারী ডাইসনের পত্রোপন্যাস " নোটন নোটন পায়রাগুলি" প্রেসীডেন্সী লাইব্রেরীর ছাতিম প্রকাশন দ্বারা পুনঃ প্রকাশিত হইয়াছে। ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাঙালীকন্যার আইডেনটিটি ক্রাইসিস এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিশ্বের নারীদের আত্মজিজ্ঞাসার ডিসকোর্স অতীব স্বাদুরূপে পরিবেশিত, আজিও প্রাসংগিক। হার্ডকভার দাম মাত্র ৩০০/-। ২০% কমিশন অন্তে ২৬০/-।
    পড়িলে ঠকিবেন না। আমি দ্বিতীয় বার কিনিয়া বন্ধুকন্যাকে দিয়াছি।
  • ন্যাড়া | 172.233.205.42 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৩৭46943
  • কল্লোলদা, লিখে ফেল। আমাদের কৈশোর-যৌবনের কলকাতা যে কী পরিমাণে বদলে গেছে সেটা আবিষ্কার খুব অবাক হই। হা-হুতাশ নয়, পাল্টানোগুলো জীবনের স্পন্দন, কিন্তু দলিল থাকলে ভাল।
  • সিকি | 131.243.33.212 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৪:৫১46944
  • ১৯৯৩এর এই লেখার পরেও তো কলকাতা পাল্টে গেছে বিশাল রকমের। নিউ এম্পায়ার লাইটহাউস বোধ হয় ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত চলেছিল। যমুনা কি এখন খোলা আছে?

    সারকারিনা নিয়ে একটা নিষিদ্ধ কৌতূহল ছিল চিরদিনই, ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে যখন কলকাতায় আসতাম, সারকারিনার পোস্টারের দিকে লুব্ধ চোখে তাকিয়ে থাকতাম, আর ভাবতাম, বড় হলে একদিন নিজে নিজে ঠিক দেখতে আসব। আসবই।

    বড় হলাম। নিজে নিজে কলকাতায় আসাও শিখে গেলাম। কিন্তু তার বেশ কয়েক বছর আগেই রিলিজ করে গেছে বেসিক ইনস্টিংক্ট। যৌনতার চাহিদা গেল পাল্টে। আর কখনও সারকারিনায় ক্যাবারে দেখতে যাওয়া হয় নি। সারকারিনা হলটা কোথায়, তা-ই জানি না এখনও।
  • aranya | 154.160.226.53 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:১২46967
  • দারুণ হচ্ছে - ন্যাড়া, সে, রঞ্জন-দা
  • theatre | 127.194.205.203 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৩২46945
  • সারকারিনাতেই তো গোল মঞ্চটা ঘুরত? উপরে নীচে ওঠানামা করত? সেখানে দেখেছিলাম রবি ঘোষের সাবাস পেটোপাঁচু। নাটক। ঝিন্দের বন্দীর কমেডি রিমেক।
  • ন্যাড়া | 172.233.205.42 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৪৭46946
  • সাবাস পেটোপাঁচু তো মধ্য-আশি।
  • nina | 22.149.39.84 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৩৪46968
  • বেশ শীতের রোদের ওম নিয়ে মনকেমনিয়া ভাল লাগা----
    -সেই হাওড়া ব্রিজে যানজটে গাড়ি নট নড়ন-চড়ন---তবু কি ভাললাগা---কলকাতায় এসেছি--হাঁ করে তাকিয়ে থাকা -চারিপাশে আলো ঝলমলে সব বিজ্ঞাপনের বোর্ড - বিরাট বিজ্ঞাপন লিপটন চায়ের--সাদা কেট্লী থেলে সোনালী চা নীল কাপে পড়ছে ------

    ন্যাড়া, সে, রঞ্জনভাউ--চলুক চলুক----
  • theatre | 127.194.215.4 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৪৭46947
  • হুম, মধ্য আশি। রেঞ্জটা খ্যাল করুন শুধু।
  • জনতা | 127.221.195.44 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৫৮46969
  • ওটা ১৬ই অগাস্ট ১৯৮০ হবে - বিদেশ আর দিলীপ পালিতে লাথালাথিতে জনতার হাতাহাতি আর ফলস্বরূপ ১৬জনের মৃত্যু।
  • Pubদা | 202.193.171.149 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:০৩46970
  • দুর্দান্ত লাগছে ।
    কলকাতা গেলে টাটা সেন্টার কিম্বা পিয়ার্লেস বিল্ডিঙ্গের সামনে দিয়ে বাস গেলে ফ্লোর গুনতে গুনতে যেতাম । কিম্বা বাবার সাথে মিডলটন স্ট্রীটের অফিস থেকে য্খ্ন ধর্মতলার ঐ ফুট্পাথটায় হাটতাম - তখন কতকিছুই চোখে পRত ।
  • তাতিন | 132.252.251.244 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:১৭46948
  • নিউ এম্পায়ার বোধ হয় ২০০০-এর পরেয কিছু দিন ছিল। সারকারিনার ক্যাবারে সম্ভবতঃ বুদ্ধবাবু বন্ধ করেছিলেন।
  • kaushik | 127.211.91.76 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৩৬46949
  • নস্টালজিয়া উস্কানো লেখা।
    ভালো লাগলো।
  • cb | 127.194.70.195 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৪০46951
  • সিকি আমি ২০০৩ পর্যন্ত স্কুল কাট মেরে লা হা , নি এ তে সিনেমা দেখেসি, এইরকমই মনে পড়ছে
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৪০46950
  • সারকারিনায় আমি/আমরা প্রোগ্রাম করেছি ১৯৮১তে (ক্যাবারে নয় বাবারে)।
    রামমোহন মঞ্চে মিস্‌ শেফালি নাচতেন। (এটা শ্যামবাজার নয়, শুকিয়া স্ট্রীটের মোড়ে)। পাশেই লাইব্রেরী ছিলো। আরেকটু দক্ষিনমুখো হলে প্রতাপ মেমোরিয়াল হলে (রাজাবাজারে) চলত বারবধূ, ভালবাসার ব্লোহট নাটক। প্রকান্ড হাতে আঁকা পোস্টারে কেতকী দেবীর ছবি পেছন ফেরা ভঙ্গী - পুরুষের দুই হাতে ছিঁড়ে যাচ্ছে লাল ব্লাউজ ভেতরে কালো ব্রেসিয়ার। সব সময়ই দেখতাম হাউজফুল। পাশেই পাবলিক পায়খানা, শুকনো মল, দুর্গন্ধ। আরো এগুলো গরুর মাংসের দোকানে হুকে ঝোলানো প্রকান্ড সব মাংসখন্ড।
    সেই মিস্‌ শেফালিকে আবার দেখা গেছল শমিতভঞ্জ-মুনমুনসেন অভিনীত একটা ছবিতে, খলনায়িকার ভূমিকায়। সেখানে শমিতভঞ্জের বৃদ্ধ অবুঝ বাবা উৎপল দত্ত বলছেন মিস্‌ শেফালিকে দেখে, ও ওর ছোটোবেলার জামা পরেছে কেন? (হায়, তিনিতো হট্‌প্যান্ট ও চিনতেন না) তারপরে উৎপল দত্ত পিয়ানো বাজিয়ে বড়ো আশা করে গাইতে লাগলেন। সিনেমাটার নাম মনে নেই।
    ছায়া সিনেমায় তখনো A মার্কা ইংলিশ সিনেমা দেখানো হতো না। কিন্তু পূর্ণশ্রীতে "গুপ্ত জ্ঞান" সেক্স এডুকেশনের ছবি A লাগিয়ে হাউসফুল চলত। বড়তলা থানা থেকে লাঠি চার্জ হতো কারেন্ট টিকিটের লাইনটায়। তেমনি ধর্মতলায় রীগ্যালেও A লাগিয়ে সেক্স এডুকেশান চলত। হিন্দিতে/ইংরিজিতে (ভারতের মূল অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজগুলোয়)। নর্থে খান্না সিনেমায় হুহা চলত রাজেশ খানা, পরে অমিতাভ মিঠুনের বই। আবার গলির মধ্যে বিধুশ্রীতে আবারো সেক্স এডুকেশন। সেক্স এডুকেশন বলছি এই কারনে যে তখনো সফ্ট পর্ণ হার্ড পর্ণ কনসেপ্ট খোলাখুলি বলা হত না। ভদ্রলোকেরা কক্‌খনো বলতেন না - মাই ওয়াইফ ইজ্‌ প্রেগ্‌ন্যান্ট।
    বলতেন, শী ইজ্‌ এক্স্‌পেক্টিং।
    গ্র্যান্ড হোটেলের সামনে শুধু বই আর ম্যাগাজিন? নো ও ও ও। গ্র্যান্ডের নীচের বাটার সামনে দুপুর থেকেই দালাল ঘুরত। চাহিয়ে সাব? চাহিয়ে? এক্‌দম্‌ ফ্রেস্‌। স্কুলমে পড়তি হ্যায়।
    রিট্‌জ্‌? নাকি রিট্‌জ্‌ কন্টিনেন্টাল?
    শুধু নিজাম? পুরোনো নিউমার্কেটের পেছনে পিগারি ঘেঁষে কর্পোরেশন পার্কে প্রতি বছর যে হতো "ক্যালকাটা আর্ট ফেয়ার"? আর্ট কলেজের ছাত্ররা, থার্ড ইয়ারের ছাত্র বেশি, স্যাটাস্যাট বসে পোর্ট্রেট আঁকত। মনোক্রোম দশটাকা। কালার্ড হলে দাম ভ্যারি করত ১৫ থেকে ২৫। সব অয়েল প্যস্টেলে। নিজাম ও তার আশে পাশে বীফ কাবাব, পরোটা, খিরি কাবাব। বাদশার রোল তখন রীতিমতো ডেলিক্যাসি। যমুনা সিনেমার গলিতে একটা বারের পেছনে বোর্ড বসত। তাস। সাট্টা। আজও বসে। সদর স্ট্রীট। যে বাড়ীতে বসে রবি ঠাকুর নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ লিখেছিলেন সেই বাড়ীর দুটো বাড়ীপরেই একটা হোটেল কাম সস্তার লজিং হাউস। বিলেত অ্যামেরিকার সস্তার টুরিস্টদের আখড়া। খোলা রাস্তায় চরস থেকে হেরোইন - সব মিলেগা। কোড জানতে হবে।
    ফ্রী স্কুল স্ট্রীট তখনো মির্জা গালিব স্ট্রীট হয় নি। সিএমসি নামের সেই সরকারি (আধা সরকারি) আইটি সংস্থা অবশ্য একটা বাড়িতে অফিস বানিয়েই ফেলেছিলো রিপন স্ট্রীট ও ফ্রীস্কুল স্ট্রীটের মুখটায়। রিপন স্ট্রীট বিরাট ঘিঞ্জি ছিলো। অথচ কসমোপোলিটান।
    সারদিয়ে কয়েকটা নার্সিং হোম যেখানে সুলভে ও গোপনীয়তা বজায় রেখে গর্ভপাত করানো হয়। মেরী স্টোপ্‌স্‌ নয়। কিছু ওষুধের দোকান, যারা নির্দ্ধিধায় জালি বিল করে দেবে অফিসের ফেক মেডিক্যাল ক্লেইম্‌সের জন্যে। পাশাপাশি ভাঙাচোরা বাড়ীর মধ্যে দর্জ্জির দোকান। বৃদ্ধ মুসলমান দর্জ্জি কাঁপা হাতে কাপড় কাটছেন- লোকাট ব্লাউজ, মিনিস্কার্ট, ক্লিভেজ দেখা যাবে এমন স্কিনফিট অর্ডারি ড্রেসের।
    তখনো শপিং মল ছিলো না। বিদেশি কাটিঙের জামা ড্রেস সব বই দেখে দেখে কাটতেন রিপন স্ট্রীট আর মেটেবুরুজের মাস্টারমাশাইরা। আর ব্লাউজ সালোয়ার কামিজের বিখ্যাত দরজি ছিলেন কাশেম ভাই। এম. এ. কাশেম। নিউমার্কেটের উল্টোফুটে ব্লুপ্রিন্টের পাশে দুটো দোকান ছেড়ে। এখন সে দোকান নেই। কাশেম ভাইয়ের ও ইন্তেকাল হয়েছে একযুগের ওপর।
    কেন লিখছি এসব?
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:৫৭46952
  • এই কর্পোরেশনের বিল্ডিঙ্গের ভেতরেই দেখেছিলাম (তখনো জ্ঞান হয় নি তেমন) সীমান্ত গান্ধীকে। টকটকে ফর্সা রং। এক শীতের সন্ধ্যাঘেঁষা বিকেলে তাঁকে সংবর্দ্ধনা জানানো হয়েছিলো। খান আবদুর গফর খান। একজন পরিপাটি ভদ্রলোক।
    গভর্ণমেন্ট আর্ট কলেজ ও ইন্ডিন্ডিয়ান মিউজিয়াম। লিয়োনার্দো দা ভিঞ্চির অরিজিন্যাল ওয়ার্ক্সের এক্জিবিশন। সেল্ফ পোর্ট্রেইট। বা আরো এক যুগ পেরিয়ে ১৯৮৩ তে বিড়লা অ্যাকাডেমির সামনে ঘন্টার পর লাইনে দাঁড়িয়ে দামী এন্ট্রি টিকিট কেটে রদ্যাঁর ভাস্কর্য দেখে কিছুটা বুঝে ও অনেকটাই না বুঝে শিহরিত হওয়া ক্যালকেশিয়ানদের ভীড়ে একটা মুখ আমার নিজের। জাস্ট কোনো মানে হয় এসবের?
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১০:১৬46953
  • হ্যাঁ মনে পড়েছে।
    সারকারিনায় চলত "সম্রাট ও সুন্দরী", অভিনয়ে ...জ্যাকলিন, ভেরোনিকা, ..ইঃ। প্রতি বৃহষ্পতিবার বিকেল সাড়ে ছটায়, প্রতি শনি রবি ও ছুটির দিনে দুপুর তিন ও সন্ধ্যা সাড়ে ছটায়।

    উল্টোদিকে রঙ্গনায় চলছে "নট-নটি" বা অনুপকুমারের কোনো হাসির নাটক যেখানে মুচকুন্দপুরে যেতে গিয়ে ট্রেন মিস্‌ হবে নায়কের, নায়িকাকে নিয়ে ট্রেন ছেড়ে দেবে। নায়িকা সাজতেন রুবি দি। খুব শান্ত মানুষ।
    স্টার থিয়েটারে তখন মাঝে মাঝে যাত্রা হতো। অজিতেশ তখন টাকার রোজগারের জন্যে যাত্রার ক্ন্ট্র্যাক্ট সই করেছিলেন। মুঘল-এ-আজম্‌ এ সাজাহানের রোলে অজিতেশ স্টারে বর্ষাকালে। বর্ষায় গ্রামে যাত্রা হওয়া ঝামেলার।
    আবার তপন থিয়েটারে চলত "নহবত"। কলকাতার অন্যতম প্রথম বিউটি পার্লার "সঙ্গম" হরিশ মুখার্জি রোডে তখনো ছেলেদের সেকশন ছিলো না। মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত মেয়েরা সবে ভুরু প্লাক করতে শিখছে। লম্বা চুলও তেমন খুব একটা বেশি কেউ কেটে ছোটো করে ফেলতে চাইত না। কিন্তু "লক্‌স্‌" কাটত খুব। তাতেই বেদম সেক্স্যাপীল হয়ে যেত।

    বিশ্বরূপা থিয়েটারে চলত "কড়ি দিয়ে কিনলাম", "দেনা পাওনা" । নয়ত খালধারে মানিকতলা থানার পাশেই কাশীবিশ্বনাথ মঞ্চে সৌমিত্র কাঁপাইয়ে দিচ্ছিলেন "না" (তারাশঙ্করের) করে।

    বয়েজ ওন লাইব্রেরীর হলেও হয়ত চলছে "বর্ধমানের বর, বরিশালের কনে" নয়ত বিশেষ ভূমিকায় মিস্‌ জুলি সহ কোনো একটা সাড়া জাগানো ব্লো-হট নাটক। বয়েজ ওনের সামনে রাস্তার ওপরে একটা প্লট থেকে টানা দশ বারো বছর শুধু জল পাম্প করা হয়েই চলেছে।

    কোথায় তখন গিরীশ মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, উত্তম মঞ্চ?
  • jhiki | 233.255.225.68 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১০:১৭46954
  • সিনেমাটার নাম বোধহয় ' সম্রাট ও সুন্দরী'।
  • i | 147.157.8.253 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১০:২৩46971
  • সে,
    একটি পূর্ণাঙ্গ লেখার অনুরোধ / দাবি জানাচ্ছি। লিখুন।
  • Tim | 188.91.253.11 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১০:৩০46955
  • লাইটহাউস, নিউ এম্পায়ার, সারকারিনা... আড়াইতলা বাস, হগ মার্কেট... ফ্রি স্কুল স্ট্রিট... নামগুলো আর লেখার শেষের টীকা মনে পড়িয়ে দেয় সময় গিয়েছে চলে ইত্যাদি। ভালো লাগলো।
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১১:০৫46956
  • আড়াইতলা বাস। এল নাইন। লাল রঙের। আর ছিলো অনেক লাল ও নীল দোতলা বাস।
    লাল দোতলা বাস ছিলো টু, টু-বি, এইট-বি, ইলেভেন, ইলেভেন-এ, পনেরো নম্বর, তিন নম্বর, দশ নম্বর।
    নীল দোতলা বাস ছিলো এল-টু, এল্‌-নাইন।
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১১:১৪46957
  • রামমোহন মঞ্চে আরো হতো "থানা থেকে আসছি" এতে নাচ ছিলো কিনা জানি না।
  • de | 190.149.51.69 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১১:২৮46958
  • ন্যাড়াবাবু আর সে -- জমিয়ে দিয়েচেন !
  • Biplob Rahman | 212.164.212.20 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৩৩46959
  • ..."কলকাতায় দুরন্ত কবিতা লিখে চলেন জয়, তসলিমা নাসরিনের লড়াকু জার্নাল প্রকাশিত হয়"...

    ১৯৯২-৯৩ সালে কলকাতায় বেড়াতে গেলে বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে বহুজনে জানতে চেয়েছেন, "তসলিমার 'লজ্জা' পড়েছেন?"

    সে সময় পায়ে হেটেঁ অনেকটা কলকাতা ঘুরেছি, এ কারণেই বোধহয় ডায়েরি লেখাগুলো খুব একান্ত মনে হলো। নোটে খানিকটা কফি হাউজ, কলেজ স্ট্রিট, নন্দন, চ্যাপলিন, গঙ্গা, ট্রেন, ট্রাম, ট্যাক্সি, টানা রিকশা, মেট্রো -- থাকলে আরো ভালো হতো।

    চলুক।
  • Ranjan Roy | 24.99.101.114 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৩৫46960
  • " সে" মনে হয় আমার থেকে সামান্য কম বুড়োঃ)))।
    একটা গোটা লেখা লিখুন না!
    লিখুন প্রতাপ মেমোরিয়ালে "বারবধূ" বন্ধ করতে( অপসংস্কৃতি চলবে না, চলবে ন!) বামেদের যুব আন্দোলন।
    ঊষে উত্থুপের যতীন চক্কোত্তির সঙ্গে বিতর্ক, খিল্লি ও গান গেয়ে চিমটি কাটা, রামকিংকরের তৈরি রবীন্দ্রনাথের মূর্তি নিয়ে সত্যজিৎ ও যতীন চক্কোত্তি( জ্যাকিদা) কাজিয়া, মিঠুনের হোপ -৮১ গোছের অনুষ্ঠান। আগে রবীন্দ্রসরোবর স্টেডিয়ামে মুম্বাইয়ের স্টারদের ফাংশানে ব্যাপক স্ট্যাম্পেড। ফুটবল মাঠে পি দে, কাজল, জামশেদ, কৃশানু, চিমা।
    ইডেনে শ্রীলংকার ম্যাচে আগুন।
    প্রথ্ম ও দ্বিতীয় নেহরু গোল্ড কাপ। উৎপল দত্তের দুঃস্বপ্নের নগরী। চেতনার জগন্নাথ। বাদল সরকারের নাটক।
    উৎপল দত্তের যাত্রাপালা রাইফেল। ছোট পঞ্চু সেন। বীণা দাশ্গুপ্তার মৃত্যু।

    সত্যজিতের লেজিয়ন দ্য অনর লাভ।
    আরো কত সব!
    পুর্নেন্দু পত্রীর মাধবীকে নিয়ে দেশে লেখ কবিতা।

    "কিছু লাভ আছে মনে রেখে?"
  • I | 24.96.90.44 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৪৯46972
  • আমি সেকেণ্ড করলাম।
  • de | 190.149.51.68 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৫৪46961
  • এই কবিতাটা আছে কারো কাছে রঞ্জনদা? পড়তে চাই!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন