এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • এ কলকাতার মধ্যে (টীকাসহ)

    ন্যাড়া লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ | ১৯৪০ বার পঠিত
  • [কুড়ি বছর আগে লেখা এক বছর-পঁচিশ বয়সী যুবকের পুরোন ডায়রি আমার হাতে এসেছে।
    এডিট না করেই তুলে দিলাম - কুড়ি বছরে কলকাতার বাহ্যিক রূপ কতটা পাল্টেছে সেটা
    দেখার জন্যে। এর আর কোন মূল্য নেই।]

    ... এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা।
    হেঁটে দেখতে শিখুন ...

    - শঙ্খ ঘোষ

    আমি হাঁটতে থাকি। যাদবপুর থেকে ঢাকুরিয়া, গড়েহাটা হয়ে বাঁদিকে গোঁত্তা খাই।
    গুরুসদয় দত্ত রোড হয়ে সার্কুলার থুড়ি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডে পড়ি। বিরাট "হোয়েনএভার
    ইউ সি কালার, থিংক অফ আস" সাইনবোর্ডের ঠিক নীচটায় একটা উমনোঝুমনো পাগলকে
    লাল-কালো পাটকেল-কয়লা দিয়ে আঁকিবুঁকি কাটতে দেখি। নন্দনের পাশ দিয়ে রবীন্দ্রসদনের
    গা ঘেঁষে ডানে যাই। ময়দান। "পায়ে পায়ে কত পথ পেরিয়ে এলে ...।"

    একটা আড়াইতলা বাস ঘক্ ঘক্ করতে করতে বিড়লা প্ল্যানেটেরিয়ামের সামনে দিয়ে বেঁকছে।
    আমি লাফিয়ে সরে যাই। একটা মারুতি।
    সাফারি-সুটের-পকেট-থেকে-পান-পরাগের-পাউচ-বেরিয়ে-থাকার মুখে বিরক্তি। "সরি" বলে
    আবার লাফিয়ে ফুটপাতে উঠে আইটিসির নামাঙ্কিত রেলিং স্পর্শ করি। [১]

    ঠিক তক্ষুনি কে যেন আমার নাম ধরে ডেকে ওঠে। আমি আকাশের দিকে চাই। "কে তুমি আমারে
    ডাক"? থিয়েটার রোডের মোড়ে স্পষ্টতই বিসিএল-থেকে-বেরোচ্ছি মুখে একটি মেয়ে একরাশ বই
    হাতে রাস্তা পেরোয়। একজন ট্র্যাফিক পুলিশ দূরে ছায়ায় দাঁড়িয়ে খৈনি ডলছে। একসঙ্গে
    অনেকগুলো বিবাদী-বাগ-গামী মিনিবাস আর প্রাইভেট বাস যে-যেখানে-খুশি দাঁড়িয়ে যাত্রী
    ডাকে। চশমাপরা তিরিশ-বত্তিরিশের অফিসফেরত বাসস্ট্যান্ডে এসে একটা পা-কে টেবিলে করে,
    তার ওপর রেখে পাতলা ব্রিফকেস খুলে সিগারেটের প্যাকেট বের করে বুকপকেটে রাখে। একটি
    উনিশ-কুড়ির ছেলে হাতে ফুটবল বুট ঝুলিয়ে এসপ্ল্যানেডের দিকে এগোয়। আমি অলস দৃষ্টিতে
    এসব দেখতে দেখতে আবার সেই ডাকটার প্রতীক্ষা করি। আকাশ এখন বারুদরঙা। পশ্চিমের আকাশ
    ক্রমশঃ খুন-খারাবি লালের দিকে এগোচ্ছে।

    আমি আবার হাঁটি। "হাজার বছর ধরে ... "। লিন্ডসের সামনে কাঁধের কাছে ছোঁয়া পাই। ঘাড়
    ঘুরিয়ে দেখি, নতুন নিউ মার্কেটের নিজাম রেস্তোঁরার "নো বিফ" সাইনটা মুখ বের করে
    হাসছে। এবার ডানে। যেতে যেতে ঘাড় ঘুরিয়ে মিউজিয়ামের সামনের জনতা দেখি। ঘাড় সোজা করে
    গ্লোব সিনেমার দিকে এগিয়ে যাই। বাদশা আবার খুলেছে। গ্লোব পেরোই। বাঁদিকের ফুটপাতে
    আসি। হগ সাহেবের বাজারে ঢুকতে গিয়ে থমকে যাই। "এখনই অন্ধ বন্ধ কোরোনা পাখা।" [২]

    কামান। বাঁদিকের গলি। লাইট হাউসের সামনে। এরপর? "তুমি এক দূরতর দ্বীপ।" লাইট
    হাউসের গাড়ি-বারান্দার তলা দিয়ে লেবু-জল, এগরোলের বাচনিক আহ্বান উপেক্ষা করে অলস
    পায়ে এগোই। দূরে দেখি - ময়দান মার্কেট, এসপ্ল্যানেড গুমটি ছাড়িয়ে - পশ্চিমাকাশ
    ম্যাজেন্টা-বেগুণি হচ্ছে। নিউ এম্পায়ারের গাড়ি-বারান্দা। থমকে দাঁড়িয়ে "নেক্সট
    চেঞ্জ"-এর ছবি দেখি। পকেটে হাত ঢুকিয়ে দেশলাইয়ের তলায় জড়োসড়ো হয়ে থাকা খুচরোগুলোকে
    স্পর্শ করি, ওজন যন্ত্রটা দেখে হেসে পাশ কাটিয়ে যাই। কারেন্ট বুকিং স্টল পেরিয়ে এক
    ধাপ নিচে নেবে বাঁদিকে তাকিয়ে খাঁচার ভিড় দেখি। [৩]

    চা খাওয়া কি প্রয়োজনীয়? এখনই? হাঁটতে হাঁটতেই উত্তর খুঁজি। গ্র্যান্ডের সামনে
    ফুটপাতে রকমারি জিনিসের পশরা। এগোই। ফুটপাতে মেলে ধরা বইয়ের জগতে থামি। তারপর বাটার
    জুতো। অলস চোখে দাম দেখতে দেখতে আবার সেই খুচরো স্পর্শ করি। কেউ যেন আমার নাম ধরে
    ডেকে উঠবে। এখনই।

    রিটজের গায়ে নতুন রঙ চড়ছে। "প্রলেপ মাখা মুখের শোভা ...।" সোজা। ভিক্টোরিয়া হাউজের
    দিকে। ক্যাপিটাল, র‍্যালিজ, গুপ্তাজ না শর্মাজ - সব পেরিয়ে যাই ঘোরে। ডানদিকে
    সুরেন ব্যানার্জি রোড। হস্তসঞ্চালনে স্তব্ধ গতি। একটা বিচ্ছিরি রঙের মারুতি,
    ভীষণ-রোগা ড্রাইয়্ভারের পাশে নির্লিপ্ত-মুখ হাতে-রিডার্স-ডাইজেস্টকে নিয়ে বাঁয়ে
    বেঁকতে গিয়ে ধমক খেয়ে চুপ। এসবই দেখি অত্যন্ত নির্বিকার চোখে। শুধু দুই ভুরুতে ঢেউ
    খেলে যায়, ঠোঁটের কোণদুটো একটু ভেতরে ঢুকে যায়। ঘামেভেজা খুচরোগুলো ... [৪]

    ধর্মতলা স্ট্রিট ধরে ওয়্লিংটনের দিকে। ক্যাসেটের দোকান পেরোই, বার পেরোই, চাঁদনি
    পেরোই, হকারদের গুলতানি দেখি প্রাকসন্ধ্যায়। রাস্তায় নাবি। ঘটাং-ঘট শব্দে একটা
    ট্রাম প্রায় ঘাড়ের কাছে। মুচকি হেসে আবার ফুটপাতে। "যদিও সন্ধ্যা আসিছে মন্দমন্থরে
    ..."। আলো জ্বলে গেছে দোকানে দোকানে দোকানে। চিরাচরিত হলদেটে আলোর বাল্ব,
    ফ্যাটফ্যাটে সাদা আলোর বাল্ব, শোভন মৃদু দামী আলো, লম্বা দপদপে সাদা আলোর টিউব, আর
    উৎসহীন লালাভার আকাশ -

    আমি হাঁটছি। ওয়েলিংটন স্কোয়ারের দিকে। দাঁড়িয়ে গেছে যানযন্ত্র। "বেদম ট্র্যাফিক
    জ্যাম ..."। ম্যাডান স্ট্রিটের ক্রসিং পেরোই। রাস্তার পাশে পুরোন রেকর্ডের দোকানে
    "চলো দিলদার চলো ..."। মোড়ের কাছাকাছি বাঁদিকে চ্যাপেলের গায়ে সাদার ওপর নীল কালি,
    "যীশু বলিলেন, তোমরা আমার নিকট আইস ..."।

    ****

    ... আমি জানি দুঃখ পায়, কেঁদে হয় কলকাতা আকুল
    মনের ভিতরে। তুমি একবার কান পেতে শোনো ...
    ... রোজই যাকে কাঁদতে হয়, সে কি আর দুঃখ পেতে জানে ?

    - শক্তি চট্টোপাধ্যায়

    আমার কলকাতা এমনই। এমনই সরল, এমনই দ্বন্দ্বে ভরা। আমার কলকাতায় গ্রীষ্ম আসে -
    পিচগলা গ্রীষ্ম। বর্ষা আসে - জলজমা, শহর-অচল-করা বর্ষা। আমার কলকাতায় শরৎ আসে -
    নীল-আকাশে-সাদা-মেঘের-ভেলা-ভাসানো শরৎ, ঢাকের-বোল-তোলা শরৎ। শীত আসে -
    আসব-কি-আসব-না করেও শীত আসে। বসন্ত আসে - গরমের হল্কা নিয়ে, ঘাস-উঠে-যাওয়া
    দেশবন্ধু পার্কের একটা গাছে মধ্যদুপুরের সঙ্গীহীন কোকিলের ডাক নিয়ে বসন্ত আসে।
    আমার কলকাতায় ক্রিকেট আসে, বইমেলা আসে, নাট্যোৎসব আসে।

    কলকাতায় জমি দখলের দাঙ্গা হয়। কলকাতায় বিদেশিনীকে ধর্ষণ করে জওয়ানরা। কলকাতায়
    লোকের মুখে অ্যাসিড বাল্ব ছুঁড়ে অন্যায়ের প্রতিবাদের প্রতিরোধ করা হয়। কলকাতায়
    কারখানা বন্ধ হয়, হাত-বদল হয়, আবার খোলে - মাঝখান থেকে কিছু লোক মরে যায়।

    কলকাতায় সুমনের গান হয়, গোপন-স্ট্রিপটিজ নাচ হয়, ভীমসেন যোশী ভৈরবী ধরেন
    ব্রাহ্মমুহূর্ত্যে, রাত সাড়ে-দশটার পর মধ্য-কলকাতা দখল নেয় বেশ্যা-মাতাল-টাউটরা,
    ফুটপাতে জন্ম-মৃত্যু-রমন হয়। কলকাতা স্বোচ্চার হয় কিউবার দুঃখে, তিব্বত নিয়ে কারও
    কোন মাথাব্যথা নেই; ভিয়েতনাম যুদ্ধের নিন্দে হয়, আফগানিস্তানের কোন দুঃখ থাকে না। [৫]

    কলকাতায় দুরন্ত কবিতা লিখে চলেন জয়, তসলিমা নাসরিনের লড়াকু জার্নাল প্রকাশিত হয়, বিকাশ
    ভট্টাচার্য রঙে-রেখায়-জমিতে সৃষ্টি করেন পুরোন দৃশ্যের, নতুন বোধের। কলকাতার
    ফুটপাতে বিক্রম শেঠের নতুন বইয়ের পাশেই বিকোয় হলুদ-মলাট, হাইজেনবার্গের
    ফিজিক্স-ফিলোসফির পাশে থাকে বিকৃতকাম উপন্যাস। কার্জন পার্কে বাদল সরকার দেখে
    ফেরার পথে চোখে পড়ে ক্যাবারে-সংকুল ঘোষিত-নাটক। [৬]

    আজকাল আর পথে রথ চলে না। কলকাতায় চলেনি কোনদিন। তবু সে দেখেছে ফিটনে জোড়া অয়েলারের
    দাপাদাপি, শুনেছে এবং শুনছে গরুর গাড়ির ক্যাঁচকোঁচ, রিক্সাগাড়িতে জোতা মানুষগুলোর
    গভীর নাদ-গভীর নিশ্বাস।

    এসবই বলা কথা বহুবার। কথায় কিছু হয়না। তবু শব্দই ব্রহ্ম, শব্দই নির্বাণ।

    সুতানুটি গোবিন্দপুরের সঙ্গে গাঁটছড়া-বাঁধা দিন তো কবেই শেষ হয়ে গেছে। রাক্ষুসী
    কলকাতার উদ্গীরণে সেসব দুঃখ এখন দূষণ হয়ে ভাসে। আর আমরা, কলকাতা মানুষজন, আশায়
    ভাসি, আশায় বাঁচি, আশায় ...

    ১৯ শে মার্চ, ১৯৯৩

    টীকাঃ

    ১। ঢাকুরিয়া বা সার্কুলার রোডের ফ্লাইওভার তখনও কল্পনাতেও আসেনি। হয়নি চৌরঙ্গী ফ্লাইওভার বা
    মোহরকুঞ্জও।
    ২। নিউ মার্কেট, মানে হগ সাহেবের মার্কেট আশির দশকের শেষে আগুন লেগে পুড়ে যায় অনেকখানি। কারকো
    নামের বিখ্যাত রেস্টর‍্যান্ট পুড়ে যায় সেই সঙ্গেই। একটা অংশ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে। সেই অংশের দোকানপাট
    সাময়িকভাবে স্থানান্তরিত করা হয় চৌরঙ্গীর ওয়াই-এম-সি-এ বিল্ডিং-এর সামনে। সেখানে একটা নিজাম খুলেছিল,
    যারা গরুর মাংস বেচতো না।
    [৩] লাইটহাউজ তখনও জামাকাপড়ের দোকান হয়ে যায়নি, সিনেমা হল ছিল। নিউ এম্পায়ারের সামনে তখনও থামওলা
    গাড়িবারান্দা। উল্টোদিকের মলও হয়নি, দোকানের সারি ছিল সেখানে।
    [৪] আজ যেখানে পিয়ার্লেস ইন তথা আহেলী রেস্তোঁরা, সেখানে রিটজ নামের হোটেল ছিল যা সত্তর দশকের শেষে বন্ধ হয়ে
    যায়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে নব্বইয়ের শুরুতে পিয়ারলেস সেটি নিয়ে পিয়ারলেস ইন বানায়। সেই সময়ে পিয়ারলেস
    ইন বাননোর তোড়জোড় চলছিল।
    [৫] আফগানিস্তান সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ান দখল নিয়েছিল। অ্যামেরিকা পাকিস্তানের সাহায্যে প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছিল। অবশ্য
    ততদিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা সমাজবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা সারা পৃথিবীতেই তখন ভেঙে পড়ছে।
    [৬] সারকারিনা প্রভৃতি শ্যামবাজারী নাটকের হলে চলে এমন নাটক যার বিজ্ঞাপনে মূল ঘোষণা থাকে, মঞ্চে মিস অমুকের
    ক্যাবারে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ অক্টোবর ২০১৩ | ১৯৪০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ১৮ অক্টোবর ২০১৩ ১২:০৯46962
  • হ্যাঁ রঞ্জনদা, আমি কিন্তু বুড়ো ভাম :-)))
    সত্যজিতের ২ নং বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ি অবধি চলে গেছলাম। আরেকবার ফাইনাল পরীক্ষায় না বসে বেলতলায় মৃণাল সেনের বাড়ি গিয়ে সারা দুপুর গল্প।
    যতীন চক্কোত্তি খুব ঝামেলা করতেন ঊষা উত্থুপ কে। ঊষাকে আর মহাজাতি সদনে গান অনুষ্ঠান করতে দেয়া গেল না। ঊষ অমনি গান ফাঁদলেন -
    বাতি নেই বাতি, কলকাতাতে বাতি নেই,
    গানের শহর প্রাণের শহর...
    চেতনার জগন্নাথে সেই লাস্ট সীন? অরুণ মুখোপাধ্যায়ের অভিনয় ".. আমাকে হারাবে নন্দ? আরে ছোঃ"
    কিংবা অন্য সব সংলাপ " জগন্নাথ? ও করবে ইন্‌ফর্মারের কাজ? ওতো ভালো করে হাগতে পাদতেও জানে না!"
    ".. ফুটফুটি, টুনটুনি, ঠুঁটো জগন্নাথ.."

    উৎপল দত্তের "দাঁড়াও পথিকবর" ইউনিভার্সিটি ইন্‌স্টিটিউটের হলে কত্তোদিন চলেছিলো। অঙ্গার? অঙ্গারের সেই রুক্‌মি?
    বাদল সরকারের নাটক "অশ্লীল ছবি" হাসতে হাসতে উল্লুক বনে যাওয়া।
    রেডিওতে বাদল সরকারের নাটক "ভোমা"।

    দেশে বেরোত কেতকী কুশারী ডাইসনের পত্র উপন্যাস। রবিশংকরের রাগ অনুরাগ, নীরদ মজুমদারের - পুনশ্চ পারী।
    শংকর দেশে লিখতেন ধারাবাহিক - "ঘরের মধ্যে ঘর"। জগদীশ জেঠমালানি, সুলেখা (সীমা)। উঃ। সব মনে পড়ে যায়।
    কলকাতার পাবলিক সারারাত জেগে অ্যাকাডেমির সামনে থিয়েটারের টিকিটের লাইনে দাঁড়াত। শম্ভু মিত্র ফের অভিনয় করলেন কিছু শো। গালিলেওর জীবন। তারপরে রবীন্দ্র সদনেও করলেও কয়েকটা শো - চার অধ্যায়। সেখানে এলা তৃপ্তি মিত্র।
    ইডেনে খেলা শেষে খেলোয়াড়দের হাতাহাতির জেরে স্ট্যাম্পিড হয়ে মরে গেল কত দর্শক। ১৬ই সেপ্টেম্বর।
  • kd | 47.228.105.144 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৪৯46973
  • এই তো ঠিক টই পাওয়া গ্যাচে ৷ কেউ বলতে পারবে(ন) ইউএস কনসুলেট লিটল রাসেল স্ট্রিট থেকে কবে নাগাদ হ্যারিংটন স্ট্রীটে মানে হো চি মিন সরণীতে চলে এলো ? আর কবে ইউএসআইএস এসএন ব্যানার্জি রোড থেকে আমেরিকান সেন্টার হয়ে চৌরঙ্গী রোডে চলে এলো ?
    গুগুল করে তো কিসুই পেলুম না ৷ :(
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:৫২46974
  • মেট্রোপোলিটান বিল্ডিং এর তলায় ছিলো ইউয়েসাইয়েসের লাইব্রেরী (আশির দশকের প্রথম দিকে ওটা চৌরঙ্গীতে বড় রাস্তার ওপরে চলে আসে)। পাশেই ছিলো সচ্চিদানন্দ চেম্বারস্‌ এখনো সেখানে সচ্চিদানন্দের আবক্ষ মূর্তি আছে।আসলে ঐ বাড়ীটায় আরো আগে ছিলো Whiteway Laidlow একটা সুপার মার্কেট। উচ্চমধ্য়্বিত্ত ও ধনী পরিবারের শপিং সেন্টার। সচ্চিদানন্দ চেম্বারস্‌ এর পুরোনো নাম ছিলো ভিক্টোরিয়া চেম্বার্স্‌। রাস্তার নাম ছিলো কর্পোরেশন স্ট্রীট, যদিও মেট্রোপোলিটান বিল্ডিং এর ঠিকানা ছিলো সাত নম্বর চৌরঙ্গী রোড। মেট্রোপোলিটান বিল্ডিং এ ছিলো মেট্রোপোলিটান ইনশিওরেন্স, মেট্রোপোলিটান ব্যাংক, বঙ্গলক্ষ্মী সোপ ওয়ার্ক্স্‌, বঙ্গলক্ষ্মী মিলের অফিস। সমস্ত।
    একটা লেখা তো শুরু করেছিলাম, কর্পোরেশন স্ট্রীট নাম দিয়ে। ঠিক ডকুমেন্টারি তো হবে না। লিখতে হলে আত্মজীবনীমূলক হয়ে যাবে। সেখানেই ভয়।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৪৯46975
  • বেরোতো চুণী গোস্বামী-র "খেলতে খেলতে"....

    আর ছিল ট্রাম --

    পাতাল রেলের খোঁড়াখুড়ির আগে - হাজরা মোড়, রাসবিহারি মোড়, দেশপ্রিয় পার্ক - কেমন যেন অন্যরকম ছিল, যদিও দেশপ্রিয় পার্কে পাতাল রেল নাই। চওড়া রাস্তার মাঝখান দিয়ে টানা ট্রামলাইন - দুই ট্রাম লাইনের মাঝখানে সবুজ ঘাস, মাপা দূরত্বে গাছের সারি।

    ট্রামের ড্রাইভার, কন্ডাকটার-দের দেখে একটু সমীহ হত। পরিষ্কার পোষাক, বোতাম টোতাম আটকানো, বুকে নেম প্লেট - ফিল্মে যেমন দেখাত ইওরোপিয়ান শহরের ট্রামের কন্ডাক্টারদের। মাঝে মধ্যে ট্রাম যখন গতি বাড়াত, সে এক দেখবার জিনিস - টলমল করতে করতে চলত যথাসম্ভব দ্রুতগতিতে। ভোরের ময়দানে যারা ট্রাম চড়েছেন তারা জানেন।

    এক সময় ট্রামের গায়ে খুব ফ্লিমের অ্যাড - বিশাল সাইজের ফন্টে প্রযোজকের নাম - ধীরেশ কুমার চক্রবর্তী প্রযোজিত, বা, আর ডি বনশল। বোরোলীন, কেয়ো কার্পিন -ও ছিল।

    দক্ষিণের ট্রামের তুলনায় উত্তরের ট্রাম যেন একটু অলস - ল্যাদ। শ্যামবাজারের ট্রামডিপো থেকে বেরিয়ে কলেজস্ট্রিট অবধি ধীরেসুস্থে - তারপরে আরো ধীরে। রবীন্দ্র সরণীর (চিৎপুর রোড) এলাকায় সম্পূর্ণ স্থবির - অসহ্য গরমের দুপুরে পাঁচ পয়সার টিকিট কেটে ট্রামের ফ্যানের নীচে অনেকে বিশ্রাম-ও নিয়ে নিত।

    ট্রামে ছিল ফার্স্ট ক্লাস আর সেকেন্ড ক্লাস। ৫ বা ১০ পয়সার টিকিটের দামের তফাৎ। সেকেন্ড ক্লাসের একদম শেষ প্রান্তে বসার জায়গাটি, যেখান থেকে হাত বাড়ালেই ট্রামের ন্যাজের দড়িটি প্রায় ছোঁয়া যায় - আমি ওখানে প্রায় বসার চেষ্টা করতাম। ফার্স্ট ক্লাসে সিঙ্গ্‌ল সিট থাকত, জানলার ধারে।

    ট্রাম রাস্তার জংশন (হাজরা, রাসবিহারি) গুলোতে দুটি ট্রামের কাটাকুটি লাইন ধরে বাঁক নেবার দৃশ্য চোখে ভাসে। ট্রামের লাইন বদলে দেবার জন্যে একজন কর্মী থাকতেন, তিনি ট্রামের নম্বর অনুযায়ী উঠে গিয়ে শান্টিং করে দিতেন।

    ময়দানের ট্রামে ফেরিওয়ালা কি ঊঠতে দেখেছি মনে পড়ছে না। কাঁচের বয়ামে লজেন্স, বা, বাদাম ভাজার প্যাকেট - তবে তারাও কেমন যেন ধীর প্রকৃতির ছিলেন।
  • Ranjan Roy | 24.99.64.108 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:১২46976
  • একমাত্র চার্মিনার সিগরেটের প্যাকেটের ভেতরে কোন পাতলা সাদা কাগজের ফয়েল থাকতো না। হলদেটে খসখসে মোটা কাগজের প্যাকেটে ভাজা তামাকের চারমিনার-- চেহারা-ছবি স্বাদে গন্ধে একেবারে বিশুদ্ধ প্রলেতারিয়েত সিগারেট।
    কিন্তু অগাস্ট ১৯৬৭ থেকে তার ভেতরেও সাদা কমদামী কাগজের ফয়েল পোরা হল। চারমিনার জাতে উঠল।
    বখা ছেলেরা ব্ল্ল-- চারমিনারও পেটিকোট পড়েছে!
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:২৯46977
  • ফার্স্ট ক্লাসে সিঙ্গ্‌ল সিট - শুরু হয়েছিলো সুন্দরী ট্রাম থেকে। সুন্দরী, চৈতালী, বৈশাখী এইসব ছিলো ট্রামের নাম।
    সেকেন ক্লাসে ট্রামের মধ্যিখানে টানা বেঞ্চি ছিলো।
    ট্রাম চলত চৌরঙ্গীর বুক চিরে, মনোহর দাস তড়াগের পাশ ঘেঁষে, রোটারি ক্লাব পেরিয়ে ভবানীপুর, কালিঘাট। ২৬ নম্বর ট্রাম।
    সুন্দরী ট্রাম থেকেই ট্রামের ফাস ক্লাসের সীটে গদি উঠে যায়।
    হাওড়াতেও ট্রাম চলত। একটাই ট্রাম ছিলো হাওড়া শহরে। এক বগির ট্রাম। একটাই লাইন। দুমুখো ইঞ্জিন। চলত শিবপুর ট্রামডিপো অবদি।
    কলকাতা আর হাওড়ার ট্যাক্সির রঙ ছিলো ঠিক উল্টো।
    একটার কালোবডি হলদে ছাদ, অন্যটার হলদে বডি কালো ছাদ। আর ছিলো বেঙ্গল ট্যাক্সি। আগাগোড়া হলদে রঙের।
    কলকাতার প্রথম ঘোড়ায় টানা ট্রামের জলখাবার চৌবাচ্চাগুলোর কয়েকটা কেমন করে জানি মুখ থুবড়েও টিঁকে ছিলো সার্কুলার রোডের কয়েক জায়গায়।
    একটা কারবালা ট্যাঙ্ক লেনের মোড়ে, আরেকটা রাজাবাজারে, নোনাপুকুরের দিকটাতেও ছিলো বোধয়। ওয়েলিংটনের ট্রাম, পার্কসার্কাস অবধি যেত। আর ছিলো টালিগঞ্গের দিকের ট্রাম। ২৯ নম্বর?
    বৌবাজারের ট্রাম ১৩ নম্বর। তখনো শেয়ালদায় ফ্লাইওভার হয় নি। কোর্টের মুখে এবং চত্বরে ছেয়ে থাকত টাইপিস্টরা।
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৩১46978
  • মনে আছে সেবার বাজেটে সিগারেটের ওপর থেকে ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়া হয়েছিলো! কি আনন্দ ধূমপায়ীদের। ইন্দিরা রাজত্বের শেষপর্ব্ব তখন। কোঠারি কমিশন বসতে অল্পই দেরি।
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৩৬46979
  • ট্রামের টিকিটের দাম ছিলো ১৩ পয়সা ফাস ক্লাস। সেকেন ক্লাস ১০। বাসের ভাড়াও ১০ নয়া পয়সা।
    কলকাতাই এমন এক শহর যেখানে ট্রামের ভাড়া বাড়ানো নিয়ে আন্দোলন হয়ে যেত।
    ভাড়া বাড়ালে প্রথমে কন্ডাক্টর ভাড়া চাইতে আসত না। ভয়ে। প্রথম কদিন বিনা ভাড়াতেই চলত।
    ওহ্যাঁ L বাসের ভাড়াও বেশি ছিলো, তাই সহজেই সীট পাওয়া যেত। মোটামুটি ফাঁকাই চলত Lবাস। কেউ হয়ত ভালো করে নম্বর দেখেনি উঠে পড়েছে, তারপর কন্ডাক্টর পয়সা চাইতে এসে যেই বলেছে L বাস, নেমে গেছে যাত্রী।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৪৭46980
  • হ্যাঁ,
    টালিগঞ্জ-এসপ্লানেড ২৯ নম্বর।
    আর, বালিগঞ্জ-এসপ্লানেড ছিল ২৪।
    বালিগঞ্জ-টালিগঞ্জ ছিল ২৪/২৯।
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৫৬46981
  • ভগ্নাংশেও ট্রামের নম্বর হতো। সন্ধ্যের মুখে ২৬/১২ নম্বর ট্রাম ছাড়ত গ্যালিফ স্ট্রীট থেকে পার্কসার্কাস। দৈনিক ঐ একটিই।
    ভাবতাম এরকম অপ্রকৃত ভ্গ্নাংশে নম্বরটা ঝুলিয়ে রাখে কেন? কাটাকুটি করে ১৩/৬, কিংবা আরেক্টু খেটে খুটে ২পূর্ণ১/৬ করলেই তো পারে।
    কর্ণওয়ালিস স্ট্রীটে চলত ১ নম্বর, ৫ নম্বর, ৬ নম্বর ট্রাম। ওদের আবার দুটো ডিপো শ্যামবাজার নয় বাগবাজার। আবার বাগবাজারে সবচেয়ে বড়ো ডিপো ছিলো গ্যালিফ স্ট্রীট।

    ধর্মতলা স্ট্রীট থেকে ইসকাস উঠে গেছল সত্তরের দশকের শেষের দিকে কিন্তু সাইনবোর্ডটা আরো বেশ অনেকদিন টিঁকে ছিলো।
  • | 127.194.81.175 (*) | ২০ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৪৭46982
  • ন্যাড়া দা খুব সুন্দর লেখা। বেশ কিছু বর্ননার সাথে একাত্ম-বোধ করতে পারলুম।

    আমি তো "কনে বিভ্রাট" দেখেছিলাম সরকারিনায়। রবি ঘোষ ,নন্দিনী মালিয়া; তখন মান্ধাতা হাফ প্যান্ট পরতেন।
  • সিকি | 127.216.229.177 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৩৯46983
  • নাটকের নাম অঘটন, যাত্রাও হয়েছিল ঐ নামে। অনুপকুমার, বাসবী নন্দী। সিনেমাটা উত্তম সুচিত্রা, গীতা (ঘটক?) তুলসী চক্কোত্তি এদের নিয়ে। সিনেমার নামটা বোধ হয় আলাদা। কী যেন?
  • | 127.194.83.178 (*) | ২১ অক্টোবর ২০১৩ ০৩:৫৮46984
  • আমাদের এখানে একটা L বাস চলতো। L31। সেটা তে গেলে আমরা একেবারে স্কুলের সামনে নামতে পারতুম।

    আরেক টা L বাসে আমর মাঝে মাঝে ই চড়তুম। ছাড়তো রবীন্দ্র সদনের পাস থেকে। সেটা আমরা ডানলপে নামতুম। বাস মনে হয় বেলঘড়িয়া র দিকে কোথাও একটা যেত। সেটা L কত যেন?
  • | 127.194.81.2 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০১:২২46989
  • কিন্তু আমাদের সময় তো দোতলা বাস ই ছিল বাপু। আর ওটা L9 মনে হচ্ছে যেন।
  • /\ | 69.160.210.2 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৫০46990
  • একটি রাত সিনেমায় ছিল উত্তম সুচিত্রা। আর অনুপকুমারের টিভি তে দেখানো টেলিফিল্মে ছিল তুলসী চক্কোত্তির তেল নেই।
  • শুদ্ধ | 113.24.87.64 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৬:২৯46991
  • থেমে গেল কেন? অপ্রকাশিত ডায়ারীতে আরো কিছু সংবাদ আছেই আছে।
  • k | 131.241.218.132 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৪০46985
  • L9
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:৪৪46986
  • তখন L9 আর আড়াইতলা নেই - একতলা হয়ে গেছে।
  • Reshmi | 129.226.173.2 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৩০46987
  • '৯১-৯২ তে একটা অটো চলতে দেখতাম প্রায়ই বিবেকানন্দ রোডের মোড়ে, আলাদা করে মনে রাখার কারণ খুব অভিনব একটা নাম লেখা ছিল অটোটার গায়ে, "সড়কিনী"।

    সিকি, সিনমাটা কি একটি রাত? সেই যাতে ঝুনুসোনা বলে একটা পোষা কুকুর ছিল সুচিত্রার?
  • সিকি | 131.243.33.212 (*) | ২২ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৩৩46988
  • ইয়েস। একটি রাত, বা শুধু একটি রাত নাম ছিল বোধ হয়। এবং হ্যাঁ, ঝুনুসোনা নামের সেই স্প্যানিয়েল কুকুর। তাতে তুলসী চক্কোত্তির সেই ডায়ালগ, "আ-মা-র কা-ছে তে-ল নে-ই।" এবং সব কথায় "ভালো ভালো, তা ভালো।"
  • | 127.194.84.246 (*) | ২৩ অক্টোবর ২০১৩ ০১:৪০46994
  • অনাদির মোগলাই প্রথম বোধ্হয় মাস্টার্স র প্রথম বর্ষে। গ্লোবে "প্রেম" দেখতে গিয়ে। মোগলাই আর কষা মাংস । আমার বান্ধবী খাইয়ে ছিল। মানে "তিনি"।( আগে খেয়ে থাকতে পারি কিন্তু সেটা মনে নেই ঃ) )
  • ঈশান | 202.43.65.245 (*) | ২৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৭:১৩46995
  • সবশেষে এটাও খাওয়ায় গিয়ে ঠেকেছে। আপনারা এত পেটুক কেন?
  • rivu | 78.232.127.201 (*) | ২৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৮:৪৮46996
  • দোতলা বাস বন্ধ হয়ে গেছে, না?
  • DW | 124.198.29.17 (*) | ২৩ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:২৯46992
  • অনাদির মোগলাই পরোটার দাম ৫০ পয়সা, লাইটহাউসে টিকিটের দাম ১.৪০ পয়সা। ট্রেনে সেকেন্ড ক্লাস ছিল গদি মোড়া।
    আর? হাওড়া ষ্টেশনে সাবওয়ের খোঁড়খুড়ি চলছে। দেশ পত্রিকাও ৫০ পয়সা। ট্যাক্সিতে ফ্ল্যাগফল ৫০ পয়সা , বেড়ে বোধহয় একটাকা হলো, লাফিয়ে উঠতো ১০ পয়সা করে।
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ২৩ অক্টোবর ২০১৩ ১১:৪৭46993
  • কলেজস্ট্রীটের মোড়ে দিলখুশায় কুকুরের মাংস খাওয়াবার ঘটনাটা? দীর্ঘকাল নাকি দিলখুশা বন্ধ ছিল। এটা অবিশ্যি অনেক পুরোনো ঘটনা।
  • ranjan roy | 24.97.222.112 (*) | ২৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:০১46998
  • @ সে,
    ১৯৬৬-৬৭-৬৮তে ট্রামের প্রথম শ্রেণীর ভাড়া -১০ পয়সা, দ্বিতীয়-৮ পয়সা। পার্কাসার্কাস-ধর্মতলা ট্রাম ১৯ ও ২০। বালিগঞ্জ-২৫। ফাঁড়ি থেকে গড়িয়াহাট ক্রসিং অব্দি লাইনের মাঝে সবুজ ঘাস-- সেই যে জীবনানন্দ। ফ্লাই ওভার, বিড়লা মন্দির হয় নি। সিংহী পার্ক ছিল। হকার্স কর্নার ছিল। গাঙ্গুরাম, সেন মহাশয়, জলযোগ ছিল।রোল এর দোকানগুলো ছিল না।
    আলেয়া সিনেমায় সামনের সীট ৪২ পয়সা। মেট্রো-লাইট হাউস- নিউ এম্পায়ার- জ্যোতি সিনেমায় ৬৫ পয়্সা। হাফ প্যান্ট পরে মেট্রোতে Two Women দেখতে গিয়ে ৬ফুট লম্বা প্রবাদপ্রতিম গেটকিপারের গলাধাক্কা খাওয়ায় শেষে ফুলপ্যান্ট পরে আলেয়ায় গিয়ে দেখলাম। গড়িয়াহাটের ফুটএ নির্মলা রেস্টুরেন্ট মাত্র খুলেছে--- ৬৫ পয়সায় মশলা দোসা, ৩০ পয়সায় কফি ও ৫ পয়সায় পানামা সিগ্রেট। একটাকা খরচ করতে পারলে জীবন ধন্য হয়ে যেত।
    এসপ্ল্যানেডের মোড়ে সিং অ্যান্ড র‌্যালির লস্যি, অনাদির মোগলাই আর একটু ভেতরে নিজামে বিফ রোল ৫০ পয়সায় অনেকখানি।
  • ranjan roy | 24.97.222.112 (*) | ২৪ অক্টোবর ২০১৩ ০৯:১১46999
  • সম্ভবতঃ ৬৭ এর আগে নেসকাফে বলে বহু প্রচলিত ইন্স্ট্যান্ট কফি আসে নি।
    আর ১৫ পয়সায় তিনটি করে পানের দোকানে সহজ লভ্য নিরোধ নামের সরকারি কন্ডোম ১৯৬৮ তে এল।
    দুটোতেই সদ্য কৈশোর পেরনো দের কী কৌতুহল!
    -জিনিসটা কী?
    -- আরে সোজা দুধে গুলে দাও, ব্যস কফি তৈরি।
    -- আর --?
    --ওঃ, একটু কায়দা করে মোজা পরানো।

    এর ফলে কোলকাতার যৌবনের ভাবনা-চিন্তায়, তত্ত্বে ও প্রয়োগে, বেশ নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটে গেল।
    কিন্তু আমরা? হায়, তখন বিশ্বাস করতাম মাও জন্মনিয়ন্ত্রণের বিরোধী। এইসব আর্টিফিসিয়াল জিনিস সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের খেলনা। যুব সমাজের বিপ্লবী সম্ভাবনা শেষ করে দেওয়ার চক্রান্ত।
    ( এখন হাত কামড়াই!)
  • | 127.194.80.179 (*) | ২৪ অক্টোবর ২০১৩ ১২:৪০46997
  • ইশেন শুধু খাওয়া দেখলো, প্রেম টা দেখতে পেলো না ঃ)
  • ranjan roy | 132.168.145.160 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৪৮47006
  • @সে ও সিকি,
    প্রথমে ছিল--- " দো ইয়া তিন, ব্যস্‌"।
    তারপর এল--" আগলা বচ্চা অভী নহী, তিন কে বাদ কভী নহী"।
    তারপর-- " হম দো, হমারে দো"।

    এরপর আশির দশকের শেষে হিন্দি বলয়ে দেখলামঃ
    ---" এক কে বাদ লাগাও ব্রেক, বিবি বনে রহেগি কেক!"

    প্রসঙ্গান্তরে চলে যাচ্ছি। ব্রেক লাগালাম।
    @সে,
    মনে হচ্ছে আমি বেশ বুড়োঃ(((; ; মানে কাবলিদা ছাড়া কেউ আমার থেকে বড় নন!
  • ranjan roy | 132.168.145.160 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৩ ০২:৪৮47007
  • @সে ও সিকি,
    প্রথমে ছিল--- " দো ইয়া তিন, ব্যস্‌"।
    তারপর এল--" আগলা বচ্চা অভী নহী, তিন কে বাদ কভী নহী"।
    তারপর-- " হম দো, হমারে দো"।

    এরপর আশির দশকের শেষে হিন্দি বলয়ে দেখলামঃ
    ---" এক কে বাদ লাগাও ব্রেক, বিবি বনে রহেগি কেক!"

    প্রসঙ্গান্তরে চলে যাচ্ছি। ব্রেক লাগালাম।
    @সে,
    মনে হচ্ছে আমি বেশ বুড়োঃ(((; ; মানে কাবলিদা ছাড়া কেউ আমার থেকে বড় নন!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন