এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মিতার সুবিচার চাই

    শারদ্বত লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ | ৪২৫৪ বার পঠিত
  • মিতাকে আমি ভাল করে চিনতাম না। আমিও, ওরই মত, যাদবপুরে বাংলা পড়তাম। ক্লাস করে ফেরার সময় সিঁড়িতে দেখা হত কখনো-সখনো। একই ব্যাচ, একই বিভাগ, বিষয়ও এক, কিন্তু এরকম হয়েই থাকে, আমার বন্ধুমহল আর ওর বন্ধুমহল আলাদা ছিল। আলাপ হয়েছিল রি-ইউনিয়নে। আমার ওপর দায়িত্ব পড়েছিল ডিপার্টমেন্ট সাজানোর, আর আমাকে সাহায্য করার জন্য ছিল আরো দশ-বারোজন, তাদের মধ্যে মিতাও ছিল। টানা চার-পাঁচদিন শোলা কেটে রঙ করে আঠা দিয়ে ঘর সাজাতে সাজাতে রি-ইউনিয়নের আগের দিন খুব ক্লান্ত হয়ে ও বলেছিল, ‘এত খাটলাম, কিছু খাওয়াবি না?’ অগত্যা সবাই মিলে ঝালমুড়ি, যার যা রেস্ত। ওইটুকুই। পাশ করে যাওয়ার পরে কনভোকেশনেও দেখা, ওই, হাই-হ্যালো। তারপর অভীক-সমন্বিতা-দিব্যর ফেসবুক ওয়াল থেকে জানতে পারলাম, মিতা বিয়ে করেছে। লাইক, কনগ্র্যাচুলেশনের কমেন্ট, যোগাযোগ শেষ।

    অবশ্য ও চলে যাওয়ার পর ওর বাড়ি গিয়ে, বন্ধুদের সঙ্গে মিতার কথা তুলে এনে যা যা জানা গেল, সেগুলো জানা থাকলে লড়াই কাকে বলে, তাও জানা হত। মিতার বাড়ি গড়িয়ার শান্তিনগরে। কাঠের পুল দিয়ে নালা পেরিয়ে যে গলির মধ্যে ওর বাড়ি, তার রাস্তার চারপাশে এখনো নবমীর বৃষ্টির থই থই জল। মিতার বাড়িতে টালির চাল, দরমার দেওয়াল। বাবার আয়ের কোনো ঠিকঠিকানা নেই। দিন গেলে ১৫০-২০০ টাকা। দুই দাদার একমাত্র বোন মিতা যাদবপুরে পড়ার সময় বইখাতার খরচ আর হাত খরচ তুলত সেলাই করে, পাড়ার কিছু বাচ্চা ছেলেমেয়েকে টিউশন পড়িয়ে। মা বাড়ি বাড়ি কাজ করে ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ যুগিয়েছেন। সেলাইয়ের খুব ভাল কাজ জানত, বন্ধুদেরও টুকটাক ব্লাউজ-কুর্তি বানিয়ে দিয়েছে ও। এত কষ্টের পরিবেশেও কী একটা মনে পড়াতে এক শিঞ্জিনী হাসতে হাসতে বলছিল, ‘ভাব, ব্যাগ থেকে ফিতে বার করে ক্লাসরুমেই আমার মাপ নিয়েছিল’... এই মেয়ে যে এত লড়াই করে যাদবপুরে পড়তে এসেছে, সেটা যাদবপুরের সৌভাগ্য। আমরা মধ্যবিত্তরা জীবনযুদ্ধের কীই বা জানি?

    মিতা টাকাপয়সা নিয়ে খুব খুঁতখুঁতে ছিল, পাই-পয়সা ধার রাখত না বন্ধুদের কাছে। ওর বিয়ের পর যাদবপুরের বন্ধুদের সঙ্গে ওর দেখা হয় এমফিল পরীক্ষার দিন। শ্বশুরবাড়ির সুখ্যাতি করেছিল বেশ কয়েকবার। কোনো একবার চায়ের দামের পাঁচটাকা দিতে না পারায় যখন খুব লজ্জিত, তখন দিব্য-অভীক বলেছিল, ‘সাধ’-এ তো মেয়েদের ডাকবি। আমরা তো ডাক পাব সেই তোর বাচ্চার অন্নপ্রাশনে, তখন পাঁচটাকা কেটে রেখে গিফট দেব। রসিকতার পাত্রী লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে- এরকম ইয়ার্কি আমরা দিয়েই থাকি, কিন্তু আমরা কিংবা মিতার বাড়ির মানুষরা, কেউই জানতাম না কত কিছু মিতা লুকিয়ে যাচ্ছে আমাদের সবার কাছে। মিতা বাপের বাড়ির সবার কাছে লুকিয়ে গেছে, যে বিয়ের আগে অনেকদিনের সম্পর্কই ছিল ওর আর রানার। যেমন, মিতার কাছে রানা চেপে গেছে তার মদের নেশার কথা। একবার, মাত্র একবারই বিয়ের পর বাপের বাড়িতে মিতা বলেছিল, বর খুব মদ খায়। বন্ধুদের কাছেও বলেনি এ কথা। শুধু বৌদিকে একবার বলেছিল, ক’দিন আগে, ওর অনেক কথা জমে আছে, বলার মত। পুজোয় বাপের বাড়ি এলে বৌদিকে বলবে সব। চতুর্থীতে মিতা বাপের বাড়ি আসে, সপ্তমীর দিন রানা ওকে শ্বশুরবাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। তার পরের ঘটনাগুলো আমরা সোশ্যাল মিডিয়া আর পেপারে পড়েছি।
    মিতা যাদবপুরে বাংলা এম.এ.তে আমাদের সঙ্গেই ভর্তি হয় ২০১৩ সালের জুলাই মাসে। ২০১৫র ডিসেম্বরে আমাদের কনভোকেশন হয়ে যায়। মিতা বিয়ে করে ২২শে এপ্রিল ২০১৬। দশমীর বিকেল-সন্ধ্যে নাগাদ অনলাইন মিডিয়ায় আমরা খবর পাই, আমাদের মিতা মারা গেছে, রিপোর্টে ‘আত্মহত্যা’ নয়, সরাসরি ‘গলা টিপে ঝুলিয়ে দেওয়া’র কথা উল্লেখ করা আছে।

    মিতার বাড়িতে রানার ফোন আসে দশমীর দিন, ১১ই অক্টোবর ভোরে, ৫.০০-৫.৩০ নাগাদ। রানা ফোনে বলে, ‘আপনাদের মেয়ে সুইসাইড করার চেষ্টা করেছে।’ তার ১৫ মিনিট পরেই আবার ফোন করে বলে, ‘আপনাদের মেয়ে মারা গেছে।’ পাড়া থেকে কোনোমতে গাড়িভাড়া করে মিতার বাড়ির লোকজন সঞ্জীবন নার্সিং হোমে পৌঁছলে মিতার মৃতদেহের কাছে তার বাড়ির কোনো মানুষকে দেখা যায় না, রানা কোথাও নেই। মিতার শ্বশুরবাড়ির সবারই কেমন যেন আক্রমনাত্মক ভাব। যে মেয়ে আত্মহত্যা করে, তার স্বামীর তো শোকে বিহবল হওয়ার কথা, সে কেন নিখোঁজ? মিতার কাকাশ্বশুর বলে, ‘আপনাদের মেয়ে সুইসাইড নোট লিখে গেছে’। সুইসাইড নোট কোথায়, এই প্রশ্ন করতেই সে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে প্রায় পালিয়ে যায় কেন? এরকম অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলে মিতার নিথর দেহ দেখে। এমনই আত্মহত্যা করেছে মিতা, যাতে তার নাক-কান দিয়ে প্রচণ্ড রক্ত পড়েছে। রক্তের ধারায় মুখ ভেসে চুল পর্যন্ত চাপ চাপ রক্তে ভরে গেছে। কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়েছে অনেকটা। গলায় আর ঘাড়ে আঁচড়ের গভীর ক্ষত। একটা কানের লতি ছিঁড়ে গেছে। বাহুতে আঙুলের ছাপ পড়ে কালশিটে পড়ে গেছে। গলায় গভীর কালো দাগ, তা আঙুলে হতে পারে, দড়িতেও হতে পারে, আবার দুটোই, মানে, আঙুলের পরে দড়ি ব্যবহার করেও হতে পারে। মিতার হাতের শাঁখা-পলা, হাতের মেহেন্দি, পায়ের আলতা, দাম্পত্যের সবকিছুর চিহ্ন তখনও রয়ে গেছে। আত্মহত্যাই, কারণ রানার বাড়ির লোকজন এই ঘটনাকে খুব ‘স্বাভাবিক-মৃত্যু’ ‘আত্মহত্যা’ বলে তার মৃতদেহ খুব তাড়াতাড়ি দাহ করার চেষ্টা করছিল।

    মিতা যে ঘরে ‘আত্মহত্যা’ করেছে, তার খাট এত উঁচুতে, আর সিলিং এতই নিচুতে, সে ঘরে খাটের ওপর দাঁড়ালে পাখার ব্লেড মিতার গলায় লাগার কথা – মিতার ছোড়দার থেকে এমনই জানা গেল। ঝোলার স্থান নেই যেখানে, সেখানে ফ্যানে ঝুলে পড়ে সে ‘আত্মহত্যা’ করল? এত আঘাত তাহলে সে কখন পেল? সঞ্জীবন নার্সিংহোম, যেখানে চাকরি করে মিতার স্বামী রানা, সেখানকার রিপোর্টে কেন লেখা হল আঘাত কেবলমাত্র গলার চারপাশে? মৃত্যুর কারণ কেন লেখা হল, ঝুলে পড়ার জন্য দম আটকে মৃত্যু হয়েছে তার? ডাক্তাররা কি রক্ত চেনেন না? আঁচড়ের দাগ চেনেন না? ব্রেনে হ্যামারেজ না হলেও, এমনি এমনিই নাক কান দিয়ে ভলকে ভলকে রক্ত বেরিয়ে আসা খুব স্বাভাবিক ঘটনা- এমনটাই কি মনে হয়েছিল সঞ্জীবন নার্সিংহোমের ডাক্তারদের? আমরা সত্যিই জানি না, কেবল শুনেছি, উড়ো কথাও হতে পারে, যে জমিতে সঞ্জীবন হাসপাতাল তৈরি হয়েছে তার বেশ কিছুটার প্রাক্তন মালিক রানার পরিবার। ওই হাসপাতালে তার পরিবারের দাপট আছে, রানার ওই হাসপাতালের টেকনিশিয়ানের চাকরিও সেখানেই পাওয়া। যেখানে মিতার মৃত্যু হয়েছে, পুলিশ সেই ঘরটিকে সিল করেনি এখনও। প্রমাণ লোপাট হতেই পারে, খাটের অবস্থান বদলে দিলেই মিতার ‘আত্মহত্যা’র পক্ষে যুক্তি সাজাতে পারবে খুনিরা। মিতার স্বামী-শ্বশুর ধরা পড়লেও দেওর-শাশুড়ি এখনও পলাতক। হ্যাঁ, মিতার খুন হওয়ার সময় তারা সেই বাড়িতেই উপস্থিত ছিল। খুন হওয়া মেয়ের পরিজনকে নার্সিংহোমে ঢোকার মুখে মিতার শাশুড়ি বলেছিল, ‘আপনার মেয়ের খুব জেদ।’ তখনও ভয় পায়নি সে। কুশবেড়িয়ার মণ্ডলপাড়ায় মিতার শ্বশুরবাড়ি, সেখানে সমস্ত মানুষই রানাদের আত্মীয়, সরাসরি না হলেও জ্ঞাতি তো বটেই। তাই খুন হওয়া মিতার বাড়ির মানুষ যখন নার্সিংহোমে, হাসপাতালের মর্গে, থানায় দৌড়াদৌড়ি করছেন, সব জায়গায় তাঁদের প্রত্যাখ্যাত হতে হয়েছে। পুলিশ এফআইআর নিতে চায়নি, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁদের। শেষে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, দুশ-আড়াইশ লোকের হাত থেকে মিতার আত্মীয়-পরিজনকে বাঁচানোর জন্য র‍্যাফ দিয়ে প্রোটেকশন দিয়ে হাওড়া পর্যন্ত তাঁদের এগিয়ে দিয়ে যেতে বাধ্য হয় পুলিশ।

    এর সঙ্গে আরো অনেকগুলো ছোট-ছোট আপাত-বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছিল, যেগুলো জুড়লে,ব্যাপারটা আর অনেকটা পরিষ্কার হয়। মিতা চতুর্থীর দিন বাড়িতে এসে বলে, ও বি.এড. পড়তে চায়, তার অনেক খরচ। শ্বশুরবাড়ি থেকে অল্প কিছু টাকাই পাওয়া যাবে, বাকিটার জন্য বাবার কাছ থেকে ওর একলাখ টাকার দরকার। আর, খুন হওয়ার মাসদুয়েক আগে আমাদেরই সহপাঠী, ওর ঘনিষ্ঠ বান্ধবীকে জানায়, ও কনসিভ করেছিল, তারপর সদ্য অ্যাবরশন করতে হয়েছে ওকে। এই বিশেষ বিশেষ ঘটনাগুলো কি আমাদের খুব চেনা ছকের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে না?

    খুব পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, ঘটনা কী, কিন্তু আমাদের দেশে আইনের শাসন এমনই হাস্যকর যে, বহু মানুষের সমর্থন না পেলে তা বলবৎ হয় না। আমরা, মিতার বন্ধুরা ভয় পাচ্ছি, মিতা সুবিচার পাবে না। কারণ, মিতার পরিবারের লোকবল নেই, অর্থবল নেই, দক্ষ আইনজীবী নিয়োগের সামর্থ্য নেই। আমরা ভয় পাচ্ছি, বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্ঞানচর্চা আর প্রগতিশীলতার কেন্দ্র যাদবপুরের তথাকথিত আধুনিক ছাত্রী হয়েও মিতা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার হল দেখে। আমরা, মিতার বন্ধুরা আর আত্মীয় পরিজনরা এখনো জানি না কী ভাবে এগবো, জানি না, এই লড়াই কীভাবে টেনে নিয়ে যাওয়া যাবে। আপনারা, যাঁরা এই লেখাটি পড়ছেন, তাঁরা সবাই মিতার পাশে, মিতার পরিবারের পাশে এসে না দাঁড়ালে মিতার সুবিচার নিশ্চিত করা যাবে না।

    #justiceformita

    #abolishdomesticviolence
    মিতার সুবিচার চাই - ২ (আরও দু'চার কথা)

    (এটা ঠিক আপডেট নয়, তবুও দশদিন পর অনেকগুলো কথা বলার ছিল, সেগুলো বললাম এখানে।)

    দশদিন আগে, ১৩ই অক্টোবর মিতার বাড়ি যাই আমরা জনাদশেক বন্ধু। তার দুইদিন আগেই জেনেছি মিতার খুনের ঘটনা। গড়িয়া স্টেশনে নেমে শান্তিনগরে কাঠের পুল পেরিয়ে যখন মিতার বাড়ির গলিতে আমরা ঢুকি, আমাদের, বিশেষ করে দিব্য-অভীক-সমন্বিতা-সোনালিকে দেখে মিতার বাড়িতে কান্নার রোল ওঠে। মিতার এই বন্ধুরা শেষবার এই বাড়িতে এসেছিল মিতার বিয়ের দিন। তারপর এই আসা। এত কান্না, এত অভিযোগ, এত অবিচারের কথা শুনতে শুনতে আমাদের চোয়াল শক্ত হয়ে উঠছিল বারবার। মিতার মা অসুস্থ শরীরে যেভাবে আমাদের বুকে আছড়ে পড়ে কাঁদছিলেন, তাতে চোখের জল চেপে রাখা মুশকিল। আর তখনই জেদের জন্ম হয়। আমরা জানি, প্রতি মিনিটে কয়েকশো নারী ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের শিকার, আমরা জানি, লিঙ্গবৈষম্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যে দেশগুলোর, তার মধ্যে অন্যতম হল ভারত, কিন্তু সেই মুহূর্তে এত কথা, এত ফালতু পলিটিকাল কারেক্টনেস আর জেনারালাইজেশনের কথা আমাদের মাথায় আসেনি। শুধু মনে হচ্ছিল, হ্যাঁ, স্বার্থপরের মতই আমাদের মনে হচ্ছিল, আমাদের সহপাঠী, বন্ধু এই মেয়েটি, যাকে আমরা আড়াই বছরধরে চিনতাম, আমাদের সামনে যার পরিজন কাঁদছে যাকে হারিয়ে, কেবলমাত্র সেই মেয়েটির জন্য আমরা লড়ে যাব শালা, এই শুয়োরের বাচ্চা সিস্টেমের শেষ দেখে নেব।

    ঘন্টাদুই ধরে বিভিন্ন সংলগ্ন অসংলগ্ন কথাবার্তার ভিড়ে যা যা আমরা শুনি, সেগুলো সম্পূর্ণ গোছানোর জন্য যাদবপুর ক্যাম্পাসে ফিরে এসে আমাদের একটা আলোচনা হয়। উলুবেড়িয়া থানায় ডেপুটেশন দিতে যাওয়া, পিটিশন লেখা ছাড়াও আমাদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে একটা লেখা সার্কুলেট করার কথা ভাবা হয়। লেখালিখি করি টুকটাক, তাই আমার ঘাড়েই দায়িত্ব পড়ে পুরোটা লেখার। আমি বলি, দ্যাখ, আমি খুব পার্সোনাল একটা লেখা লিখতে চাই, তার মধ্যে আমাদের যুক্তিগুলোও থাকবে, তবুও, লেখার প্রথম অংশটা আমারই, বাকিটা সবার। সেই মত কথা হয়। বন্ধুরা যোগান দিতে থাকে তথ্য, আমি লিখে চলি, ছবিগুলো সাজিয়ে সাজিয়ে এডিট করতে থাকি। রাত দুটোর সময় ফোন করে লেখাটা বিভাগের স্যরকে দিয়েও চেক করানো হয়। তিনিও পালিশ করে দেন। পরদিন লইয়ারকে দিয়ে ফাইনালি চেক করিয়ে বেলা দুটোর দিকে আমি পোস্ট করি। বন্ধুরা লেখার ভূমিকাটুকু বাদ দিয়ে তার বর্ণনা-উপসংহারটিকে নিয়ে নিজের নিজের কথা জুড়ে নিজের নিজের ওয়ালে পোস্টায়। শিঞ্জিনী ট্রান্সলেট করে লেখাটি। আমি আট-দশটি গ্রুপে ছড়িয়ে দিই। প্রথম চার ঘন্টায় পাঁচ হাজার শেয়ারের পর আর দেখিনি। পরদিন সকালে সেটা বাইশ হাজারে চলে যায়। টিভিতে দেখি 'সোশ্যাল মিডিয়ায় সহপাঠীদের ঝড়'... আমাদের ফোন করে বিভিন্ন চ্যানেলে ডেকে পাঠানো... ইন্টারভিউ চলতে থাকে। পিটিশনটি তৈরি হয়ে যায়, তার সাইন ক্যাম্পেনও চলতে থাকে। দিন দুই পর মুখ্যমন্ত্রী মিতার পরিবারকে ডেকে আশ্বাস দেন, মিতার হত্যার তদন্তের দায়ভার নেয় সিআইডি।

    এতদূর পর্যন্ত সবাই মোটামুটি জানেন। যেগুলো ফেসবুকের ওয়ালে শো করে না, সেই সেই ঘটনাগুলো বলব এবার। মিতাকে নিয়ে লেখাটি ভাইরাল হওয়ার পর পায়েলদির বন্ধুরা আমার সঙ্গে ইনবক্সে যোগাযোগ করেন (পায়েলদিই বলছি, কারণ, যে কলেজে পায়েলদি পড়াশুনো করেছে, আমাদের বন্ধু দিব্যদীপ সেই কলেজে একই ডিপার্টমেন্টে পায়েলদির দুই বছরের জুনিয়র ছিল। দিব্য একইসঙ্গে মিতার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, পায়েলদির জুনিয়র)। অর্পিতাদি, পায়েলদির বন্ধু আমার সঙ্গে ইনবক্সে যোগাযোগ করেন, বলেন,
    -'তোমরা তোমাদের বন্ধুর জন্য লড়ে যাচ্ছ, দেখে ভাল লাগছে। কিন্তু আমাদের বন্ধুর কী হবে?'
    আমি তখন দিনে শ'চারেক মেসেজের রিপ্লাই দিচ্ছি, মিতার পিটিশনে তাদের সাইন করাচ্ছি, আমার অন্য বন্ধুদের অবস্থাও তথৈবচ। তার মধ্যেও বলে রাখি,
    -'আপনারা দিন দুয়েক একটু অপেক্ষা করুন, আমরা দেখছি কী করা যায়'

    তখন আমাদের কথা জানতে পেরে আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন প্রায় জনা তিরিশেক লইয়ার। এগিয়ে এসেছে হিউম্যান রাইটস ল নেটওয়ার্ক (HRLN), এগিয়ে এসেছে SWAYAM, APDR, ঋজুদার থেকে নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করেছেন নারী অধিকার কর্মী অঞ্চিতাদি, ইটিভির টক শোতে আমার সঙ্গে আলাপ হয়েছে শাশ্বতীদির... হয়তো, এতগুলো পরিচিতির ভরসাতেই আশ্বাসটা বেরিয়ে এসেছিল মুখ থেকে।

    শিঞ্জিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানালাম পুরোটা। বিভিন্ন দিক ঠিক রাখতে রাখতে আমার-শিঞ্জিনীর-সমন্বিতার তখন পাগল পাগল দশা। তার মধ্যে শিঞ্জিনীও বলল, ওর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন নাজিয়ার বাড়ির মানুষরা, পার্কসার্কাসে যে একুশ বছরের মেয়েটিকে তার স্বামী আর শ্বশুরবাড়ির লোক পুড়িয়ে মেরেছে। এদিকে যাদবপুরের বন্ধুরা, চারপাশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের তরুণ-তরুণী বন্ধুরা ঠিক করেছে তারা এই ঘটনাগুলো জুড়বে। মিতার ঘটনা তো কেবল যাদবপুরের ঘটনা নয়। সর্বত্র ঘটে চলা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের একটি বিন্দু হল মিতা, ঘটনাচক্রে আমরা মিতার বন্ধু, যারা জানি কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিতে হয়, ঘটনচক্রে মিতা এমন দাদা পেয়েছে, যে বোনের দেহ পোস্ট মর্টেমে দেওয়ার আগে ফটো তুলে রেখেছে। কিন্তু বাকিরা? প্রতিদিন হাজারটি ঘটনার বাকি ৯৯৯ জন? তারা কোথায় যাবে?

    নাজিয়ার বাড়িতে আমরা জনাছয়েক যখন পৌঁছলাম, তারপর যা যা ঘটল, তার সঙ্গে মূলগত ফারাক নেই মিতার ঘটনার, কেবল তীব্রতা আরো বেশি। ১৭ বছরে তার বিয়ে হয়, প্রথম ছয় মাসে অ্যাবরশান, তার পর টর্চার। থানায় জেনারেল ডায়েরি করে তো কোনো লাভ হয় না, সবাই জানে। তাও সেটা করা হয়েছিল। তারপর একটি সন্তানের জন্ম। গর্ভাবস্থায় অত্যাচারের কারণে তার মুখের একদিক জন্ম থেকেই ক্ষত-বিক্ষত। তারপর দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম এবছরের ফেব্রুয়ারিতে। মার্চ-এপ্রিলে লাগাতার অত্যাচার, মুখে হাতে অজস্র কালশিটে আর রক্তাক্ত ক্ষত নিয়ে সে পালিয়ে আসে বাড়িতে। এফআইআর করা হয়, তারপর ক্ষমা-টমা চেয়ে তার স্বামী তাকে আবার বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এ বাড়িতে নাজিয়া থাকতোই বা কোথায়? দুটি ঘরে প্রায় জনাদশেক লোকের বাস। তারপর অবশেষে সম্পূর্ণ পুড়িয়ে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে দেহ ফেলে রেখে বাড়িতে ফোন যায়, নাজিয়া গায়ে আগুন দিয়েছে।

    আমরা একের পর এক সুন্দরী সদ্যযৌবনা নাজিয়ার ছবি দেখছিলাম। হঠাৎ নাজিয়ার মামী এসে বললেন, 'ইয়ে লিজিয়ে ডেডবডি কা ফোটো'। সম্পূর্ণ পুড়ে চুল-ভুরু গুটিয়ে যাওয়া একটি ঝলসানো দেহ, তখনও ধোঁয়া উঠছে যেন অল্প অল্প। পর পর এরকম ছবি দেখার পর এই ছবিটা দেখে কিছুক্ষণের জন্য সমস্ত অনুভূতি শূন্য হয়ে যায় আমাদের। গায়ে কাঁটা দিতে থাকে।

    পুলিশ বিন্দুমাত্র সহায়তা করেনি। হত্যাকারীর পরিবারের সঙ্গে খুব উঁচুমহলের রাজনৈতিক যোগাযোগ। পুলিশ সম্পূর্ণ সহায়তা করছে হত্যাকারীদের। শোনা খবর, দেড়লক্ষ টাকার বিনিময়ে পুলিশ কাস্টডিতে দুটি ফ্যান ও প্যাকেজড ফুড সহ নাজিয়ার হত্যাকারী স্বামী ছুটি কাটাচ্ছে। পরিবারের বাকিরা, নাজিয়ার শ্বশুর-শাশুড়ি-দুই ননদ-দুই নন্দাই এখনো ফেরার। পুলিশ লুকিয়ে রেখেছে তাদের। বিক্ষোভ বাড়লে তাদের থেকে নিয়েই শিশুপুত্রদুটিকে এই পরিবারের হাতে হস্তান্তর করে যায় তারা। অথচ বলে, তারা নাকি ফেরার।

    পায়েলদিকে গলা টিপে অথবা ঝুলিয়ে খুন করা হয়েছে। বাথরুমের শাওয়ারে ঝুলে আত্মহত্যা করার গল্প মানতে চাননি পায়েলদির পরিবার, বন্ধু আর প্রতিবেশিরা। বাড়ি সিল করা হয়নি। দশদিনের আত্মগোপনে পায়েলদির ছয়মাসের মেয়ে এখন সারা গায়ে র‍্যাশ আর রক্ত পায়খানা নিয়ে ফিরে এসেছে তার মাসি-মেসোর কাছে। মেয়ে জন্ম দিয়েছে তো, তার পর থেকেই অত্যাচার বাড়ছিল। গাড়ি কেনার জন্য তিনলাখটাকার দাবি তো ছিলই।

    বারুইপুরের নমিতা নস্করের ঘটনা আমরা টিভিতেই দেখলাম। সাত বছরের শিশুপুত্রের সামনে পিটিয়ে গলায় বিষ ঢেলে তার মাকে মারল তার বাবা।

    আরো কত কত পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে উঠতে পারলাম না। আরো কত কত মেয়ে... আরো কত কত অত্যাচার... মৃত্যু বাঁচিয়ে জীবন্মৃত হয়ে আরো কতকাল বেঁচে থাকা... কোথায় থামব?

    যাদবপুরের ফেটসুর ইউনিয়ন রুমে যখন পায়েলের পরিবার আর নমিতার পরিবার মুখোমুখি বসেছেন, একটা সুতোর বুনন ঘটে যাচ্ছে আমাদের চোখের সামনে, নাজিয়ার দাদা সাবির যখন বলছেন, আমরা আমাদের লড়াই ছিনিয়ে নেব, নমিতার জামাইবাবু বলছেন, আমাদের মেয়েকে হারালাম, আপনারা দেখবেন আর কোনো মেয়ে যেন না হারিয়ে যায়, পায়েলের পড়শিরা বলছেন, আমরা হার মানিনি, থানা ঘেরাও করেছিলাম... তখন জেদ চেপে যাচ্ছে আমাদের। সেই জেদটা ছিলই। মিতার বৌদি যাদবপুরে এসে আমার দু'হাত জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলছেন,
    -'ভাই তুমি যা লিখেছ, আমি রোজ পড়ি আর কাঁদি'
    আমি হাত ছাড়িয়ে ধমক দিয়ে বলছি,
    -'কাঁদবেন না বৌদি, কাঁদলে হেরে যাবেন।'
    নাজিয়ার দিদি আমাদের সামনে কাঁদছিলেন,
    -'আপলোগ কুছ কিজিয়ে, কুছ কিজিয়ে ভাইয়া'
    আমরাই ধমকে বলছি,
    -'রোনা মত।'

    আর যাদবপুরের মাঠে আমরা এই পরিবারগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে দিচ্ছি স্বয়ম, এপিডিআর, এইচআরএলএন কে। আমরা এটুকুই তো পারি।
    আমি চোখের সামনে দেখছি আমার যাদবপুর বদলে যাচ্ছে, বদলে বদলে যাচ্ছে যাদবপুরের কমিউনিকেশনের ভাষা। চোয়াল শক্ত হচ্ছে সবার। কোনো দলই মুখ্য নয়, অথচ সব দল এগিয়ে এসে ভাগ করে নিচ্ছে তাদের দায়িত্ব। তারা বলছে কম, শুনছে বেশি। ক্যাম্পাসের বাইরে তাদের দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছে নতুনভাবে। চারপাশের সবাইকে ডেকে আনছে তারা। তাদের সঙ্গে কাজে মিশে তাদের ঘরে ঢুকে পড়ছে, কষ্টের কথা শুনছে। ক্যালকুলেশন করছে কম, ইনভলভড হচ্ছে বেশি। যখন মিতা-নাজিয়া-নমিতা-পায়েলের কথা শুনছি আমরা, একপাশে শাশ্বতীদি আর অঞ্চিতাদি নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন, গিয়ে বললাম,
    -'গল্প করছেন?'
    -'ঠিক গল্প নয়, তিরিশ বছরের নারী অধিকার নিয়ে লড়ে এখন উই আর শেয়ারিং ফ্রাস্ট্রেশনস। এই মেয়েগুলো তো মরে গেল বল, যারা বেঁচে আছে, তাদের জন্য কিছু করবে না তোমরা?'

    সবকিছুই খুব ভাল নয় কিন্তু। আছে কিছু অভিসন্ধি খুঁজে বার করা পাবলিক। স্ট্যাটাসটিতে ফ্রেন্ড সার্কলের বাংলা অনুবাদ করেছিলাম বন্ধুমহল, ওর আর আমার ফ্রেন্ড সার্কলে কমন কিছু বন্ধু থাকলেও আমরা সরাসরি একে অন্যের বন্ধু ছিলাম না। তাই, পার্সোনালি মিতাকে ঠিক কতটুকু চিনতাম লিখেছি। লিখেছি, মিতা যে কতটা যুদ্ধ করেছে জীবনে, তার খতিয়ান সে বেঁচে থাকতে জানতে পারিনি আমি। এই লেখাগুলোর পেছনে আর কী অভিসন্ধি থাকতে পারে? তবুও শুনতে হল, আমি তার গরিবীকে সেন্সিটাইজ করেছি, সে আমার বৃত্তের, অর্থাৎ 'যাদবপুরের উচ্চশিক্ষিত মহল' এর অংশ নয়, সেটাও আমি কৌশলে উল্লেখ করেছি, শুনতে হল, কেবল মিতাকে কেন গ্লোরিফাই করছি। এদের বলতে চাই, 'সবার জন্য লড়তে চাই' - কথাটা সবসময় আউড়ে গেলে আসলে কারোর জন্যই লড়া হয় না। এই নেগেটিভিটির রাজনীতি আমি দীর্ঘদিন ধরে চিনি। আমি জানি আপনারা খুব খুশি হতেন মিতা সুবিচার না পেলে। কারণ, যেখানে কেউ সুবিচার পায় না, সেখানে ও কেন পাবে সুবিচার... এই তো আপনাদের প্রশ্ন? আপনাদের বলছি, 'ফুটুন'। মিতাকে ব্যবহার করে আমাদের ফুটেজ খেতে দিন। হাত কামড়াবেন না।

    লজ্জা করে না আমাদের, যখন মিতার শেয়ার হওয়া ছবিতে আমরা লিখি, 'ইউ আর সেক্সি'?

    লজ্জা করে না আমাদের, এরকম অবস্থায় ইনবক্সে খিস্তি আর যৌন প্রোপোজাল পাঠাতে?

    লজ্জা করে না আমাদের মিতার স্ট্যাটাস শেয়ার করে 'যাদবপুরের মাগী খুব তো আজাদি চেয়েছিলি, এই তো পরিণতি হবে তোদের' লিখতে?

    লজ্জা করে না আমাদের, যখন বলি, 'আগে কেন বেরিয়ে আসেনি মেয়েটা'...?

    লজ্জা করে না আমাদের, যখন আমরা বলি, 'প্রেম করে বিয়ে করেছিল, নিজেরই দোষ'...?

    মিতা-নাজিয়া-নমিতা-পায়েল-আলেমাদের এইভাবে খুন করতে লজ্জা করে না আমাদের?

    লেখাটা লিখতে লিখতে মনে পড়ল, মিতার বাড়ি গিয়েছিলাম ১৩ই অক্টোবর।নয় বছর আগে, ক্লাস টেনে পড়ার সময় ওইদিনেই আমাদের প্রিয় তিন বন্ধু তলিয়ে যায় পুকুরের জলে। আমরা সেইদিন পুজোর ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলাম। পেপার মিডিয়া তোলপাড় হলেও ঘরে বসে কাঁদা ছাড়া কিছুই করতে পারিনি। কাকে দোষ দেব? এমনই শীত ঘনিয়ে আসা বিষণ্ণ ছিল দিনকাল। দিন যায় না, ফিরে ফিরে আসে সব। আমাদের সবার মধ্যে পুষে রাখা কোনোদিন কারোর জন্য কিছু না করতে পারার কষ্টরা এভাবেই নিজের ইকুইলিব্রিয়াম খুঁজে নেয়।

    লড়াইটা সবার। সারা বাংলার ছাত্রসমাজ লালবাজার অভিযান করছে ২৬শে অক্টোবর, প্রতিটি গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনাকে পুলিশ যেন তীব্রতম গুরুত্ব দিয়ে দেখে, প্রতিটি ব্লক-গ্রাম-পঞ্চায়েত যেন সক্রিয় হয় গার্হস্থ্য হিংসা বিলোপে - এই দাবিতে। বেলা তিনটের সময়, কলেজ স্ট্রিটে, আপনারাও আসুন। এই নরম মেরুদণ্ডহীন সর্বত্র পিছিয়ে পড়া পশ্চিমবাংলার ভেতো বাঙালিরা গার্হস্থ্য হিংসায় সারা ভারতে ফার্স্ট বেঞ্চে বসে। লজ্জা করে না আমাদের? লজ্জা ঢাকতে রাস্তায় নামব না আমরা?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ | ৪২৫৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ছোটোলোক | 198.155.168.109 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৬58990
  • জঘন্য
  • Sayantani | 126.203.168.229 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:১৫58991
  • বেশির ভাগ বাড়ির লোক মেয়ের মৃত্যুর আগে অবধি "মানিয়ে নিতে" শেখায় তো! মেয়েটি ও হয়তো লজ্জায় বলে উঠতে পারেনি, নিজে ভালোবেসে বিয়ে করেছে, বাড়িতে এবং সমাজে সেই কারণে কথা শুনতে হবে। হয়তো ভেবেছিলো, সব ঠিক হয়ে যাবে। এইরকম ই তো ভাবে মেয়েরা, এইরকম ই তো ভাবি আমরা। বলা হয় ডি ভি র শিকার মেয়েদের 7 টা ট্রায়াল লাগে, ফাইনালি সম্পর্ক টা থেকে বেরোতে।
  • Du | 182.58.105.207 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:২৬58992
  • এর চেয়ে তিন তালাক সত্যিই ভালো।
  • ছোটোলোক | 198.155.168.109 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:৫১58993
  • মেয়েরা তিন তালাক দিতে পারে না কিন্তু।
    বরং, এর চে বেটার জাস্ট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কোথায় যাবে সে?
  • pi | 127.194.80.162 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:০৬58994
  • নিজে রোজগার করে নিজে থাকার রেওয়াজটা চালু হওয়া খুব জরুরি।
    স্বামী বা শাশুড়ি অত্যাচার করলে সেখান থেকে না বেরোনোর কারণ কী কী হয়ে থাকে ? অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকলেও সমাজ কী বলবে, পরিবার কী বলবে। এক্ষেত্রে এইসব বিষয় নিয়ে যত কথা হয়, ভাল। সমাজ , পরিবার বা মেয়েটি মানেও তো সেই আমরাই।
  • Du | 182.58.105.207 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:১৭58995
  • কদিন আগে তিন তালাক ব্যান প্রসঙ্গে কোন একটা বোর্ড বলেছিল তালাক না থাকলে লোকে মার্ডার করতে পারে - যুক্তি শুনে স্টানড হয়েছিলাম ।।। সেটাই মনে পড়লো।।তাই লিখলাম।
  • pi | 127.194.80.162 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:২৬58996
  • কেউ ডিভোর্স দিতে চাইলে সেটা আটকে রাখার কোন কারণ দেখিনা

    তিন তালাক নিয়ে আপত্তি দুটো কারণে, এক তো এটা খুব তাৎক্ষণিক ব্যাপার, রাগ বা আবেগের মাথায় আসতে পারে, যেটা পরে নিজেরই ভুল মনে হতে পারে আর দুই,
    মেয়েরা দিতে পারেনা।

    নইলে কেউ চাইলেই ডিভোর্সটা দেওয়া উচিত বা বেরিয়ে আসার সুযোগ। তিন তালাকের মত সহজ কোন ভাবে ( অবশ্যই এভাবে দুমদাম বলে নয়, পরে ঠাণ্ডা মাথায় কোন স্বীকৃত, কিন্তু সহজ, স্বল্পদৈর্ঘের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে) । যে পক্ষই চাক না কেন। দুজনের একটা সম্পর্কে , একজন থাকতে চাইছেনা, এটা সেই সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য যথেষ্ট কারণ। কারণ সম্পর্কের ভিত্তিটাই আর নেই।
    এরপরেও থেকে যাওয়া, অন্যপক্ষের পক্ষে অপমানজনক। যদি না সম্পর্কের ভিত্তি আর্থিক হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে সম্পর্কের নাম অন্য দেওয়া উচিত।
  • ranjan roy | 192.69.127.20 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৬:০৯58997
  • মিতার খুনের দোষীরা যাতে শাস্তি পায় তার জন্যে আমরা কী করতে পারি? মিতার বন্ধুরা বলুন। উদ্যোগ তাঁদেরই নিতে হবে। আমরা অবশ্যই পাশে দাঁড়াব, সাহায্য করব। আগে বলুন তাঁরা কী ভাবে এগোতে চান?
  • Sayantani | 126.203.183.26 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৯:৩৯58999
  • আইনের রাস্তায় হাটতে হবে। পরামর্শ নেওয়া চলছে।
  • ছোটোলোক | 198.155.168.109 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৯:৫১59000
  • পড়লাম।
  • pi | 127.194.80.162 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ১১:৩২58988
  • কাগজে ঘটনাটা পড়ে খুব খারাপ লেগেছিল, কিন্তু এখানে পড়ে প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে। না, মিতা যাদবপুরের বলে বা পার্সোনাল আকাউণ্টের জন্য না, এই মৃত্যু নিয়ে আরো অনেক তথ্য জেনে, যা জানতাম না। জানিনা, এগুলো সামনে আসবে কিনা, এলে কীভাবে আসবে, সুবিচার কীভাবে সম্ভব।
  • de | 24.139.119.174 (*) | ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ১২:২৮58989
  • এই অত্যাচার মুখ বুজে সইছিলো মেয়েটা, বাড়ির লোকে কিছুই ধরতে পারেনি? কেন বাড়ির লোকে আরো আগে থেকে দাঁড়ালো না ওর পাশে - একেবারে শেষ না হওয়া অব্দি কেন এতো মেয়ে তাদের বাড়িতে ফিরে আসতে পারে না -- হতাশার থেকে লিখলাম, কারোকে অ্যাকিউজ করে নয়!

    খুব খুব খারাপ লাগলো - মিতার বাড়ির লোক যদি আইনি লড়াই চালানোর জন্য রাজী থাকেন, চাঁদা করে পয়সাকড়ি তুলে ওঁদের হাতে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক, আমি যথাসাধ্য সাহায্য করবো।
  • Abhyu | 34.158.243.219 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩৪59004
  • সই করলাম, ছবিগুলো ডিসটার্বিং
  • Abhyu | 34.158.243.219 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৩৬59005
  • সই করে কি কিছু হয়? কে জানে?
    আফটার অল, দশ সেকেণ্ডের কাজ ...
  • sch | 55.250.245.132 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:৫৬59002
  • কিছুই হবে না - কিছুদিন এরা জেলে থাকবে - তারপর পুলিস চার্জশীট এতো দুর্বল বানাবে যে মামলা টিকবে না - এরা খালাস পেয়ে যাবে। ছেলেটির তিনোযোগ আছে - দলের হয়ে দুটো লাশ ফেলে দেবার প্রতিশ্রুতি দিলেই রাজীব কুমার ওকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করে দেবে। সল্টলেকের অনিন্দ্য চোর, সারদার মদন চোর ইত্যাদির মতো।

    যদি অটপ্সিতে সুইসাইদ নয় প্রমাণ হয় (এটা ইম্পর্ট্যান্ট) - তাহলে যেভাবে হোক ছেলেটিকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করুন। যাদবপুরের ছেলেমেয়েরা একদিনের জন্য হোক্ক্যালানো করতে পারবে না? কি শ্বারদ্বত ?? অনেক মোমবাতি মিছিল হল তো - এবার একটু পেট্রল মিছিল হোক - রাণাকে অল্প কেলিয়ে পেট্রোল দিয়ে সদ্গতি করে দিলে খারাপ হবে?
  • Abhyu | 34.158.243.219 (*) | ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ১২:৪৮59001

  • Abhyu | 106.32.176.80 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১০59006


  • দুটো জিনিসে খটকা লাগছে। অনেকদিনের প্রেমের পরে বিয়ে - মিতা তার বরের স্বভাব জানত না? আর শারদ্বতের লেখায় স্পষ্ট মেয়েটির আত্মসম্মানবোধ ছিল প্রখর - উচ্চশিক্ষিতা - নিজের ব্যবস্থা নিজেই করতে পারত। বেরিয়ে এলো না কেন?
  • . | 193.82.199.156 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ০৫:০২59007
  • আত্মসম্মানবোধ প্রখর হলে সুইসাইড হওয়ার সম্ভবনাই বেশি।
    যদিও আত্মীয়্স্বজন আর বন্ধু-বান্ধব ইমোশ্যানাল হয়ে সেটা মানতে চাইবেন না -স্বাভাবিকতই।
  • মনোজ ভট্টাচার্য | 113.252.167.161 (*) | ১৬ অক্টোবর ২০১৬ ১০:০৮59008
  • আজ দেশে শুধু মিতা বা নাজিয়া নয় - বধু হত্যার মিছিল চলেছে । যেখানে রেড রোড ধরে দুর্গার কার্নিভাল হচ্ছে - তখন রানাদের মতো অর্থলোভীরা এইভাবে বধুদের মারতেই থাকবে !

    কাগজের রিপোর্ট পড়ে বোঝাই যাচ্ছে - বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্যে মিতার ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছিলো - মিতার বৌদি তো সেইরকম কথাই বলেছে !

    তাছাড়া লোকাল থানায় প্রভাব থাকলেই - পুলিশও সেভাবে কেস রিপোর্ট করে না ! কেস যেভাবে লিখবে সেই ভাবেই তো চার বছর পরে মামলা উঠলে - সবই তো অপরাধির পক্ষেই যাবে !

    এভাবে আর কত সুজেট, নাজিয়া বা মিতাদের মরতে হবে ! এর পর মেয়েদের লাশ রাখার স্থান হবে তো !

    মনোজ
  • Abhyu | 57.32.90.4 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৮59027
  • টই লাইনে এসে গেছে। ভাবছিলাম এতগুলো পোস্ট পড়ল এখনো রামকৃষ্ণ মিশন এলো না?

    আরে এটা ছোটোব্যালাপ্রবণ বড়দের আড্ডা মারার জায়গা। আগেকার দিনে পশুপালন পদ্ধতিতে শিশুপালন হত। খোঁজ নিয়ে দেখুন এখনো মিশনে সেরকম ঠ্যাঙানো হয় কি না। আমার তো মনে হয় না। বরং ব্যাঙাচিকে জিজ্ঞেস করে দেখা যেতে পারে অ-সন্ন্যাসীদের ঠ্যাঙানো কিরকম।
  • সিকি | 132.177.119.37 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩১59028
  • ইটিভি নিউজ বাংলায় এখন এই নিয়ে আলোচনা চলছে। স্টুডিওতে রয়েছে শারদ্বত।

    http://english.pradesh18.com/live-tv/etv-bangla/
  • Abhyu | 208.137.20.25 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৬59029
  • http://www.anandabazar.com/state/mita-mandal-murder-case-cm-orders-cid-inquiry-dgtl-1.496622#

    মিতা মণ্ডল খুনে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

    পুলিশের কাছে মিতা মণ্ডলের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছে। পুলিশের দাবি, ওই রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, গলায় ফাঁস লেগে ঝুলে থাকার দরুন মিতার মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়ার আগে ধস্তাধস্তির কারণেই শরীরে এত আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
  • aranya | 154.160.226.92 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৭59030
  • নন-মিশন স্কুলেও ছোটবেলায় মার খেয়েছি, আবার ভালবাসাও পেয়েছি, ভালবাসার পরিমাণ অনেক বেশি। কিছুটা সেই সময়ের কালচার, আর অনেকটাই শিক্ষকের মানসিকতার ওপর নির্ভর করে, মারধরের ব্যাপারটা
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৯59031
  • শুধু শিক্ষক-শিক্ষিকা নয়, বাবা-মা অথবা অন্যান্য অভিভাবকদের ক্ষেত্রেও একই কথা। মানসিকতা।
  • aaj | 193.82.199.156 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৬59032
  • nabanita | 162.79.255.200 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:০১59033
  • কতগুলো কথা মেয়েদের মাথায় ছোটবেলা থেকে গেঁথে দেওয়া উচিৎঃ

    বিয়ে জীবনেরultimate destination নয়। বিয়ে হয়ে বা না হয়ে আরো অনেক কিছু হতে পারে। প্রয়োজনে বিয়ে ভেঙে বেড়িয়ে এসেও অনেক ভাল জীবন হয়।

    প্রেম এক এমন কোনো অপরাধ নয় যার সাজা life in prison without parole বা death

    নিজের জীবন চলার মত রোজগার না হওয়া পর্যন্ত বিয়ের চিন্তা কোরো না।

    শ্বশুর বাড়ি এমন কিছু স্বর্গ নয়, সেখানে অন্যায় হলে নখে দাঁতে প্রতিবাদ কর - থানা, আইন, মিডিয়া সবাইকে নিয়ে। পারলে মেরি সসুরাল বা ঐ ধরণের হাবিজাবি গোছের টিভি প্রোগ্রাম দেখা বন্ধ কর।

    নিন্দা, লজ্জা এই সব কিছুর চাইতে নিজের জীবন অনেক দামী। নিজের জীবন, অধিকার সব নিজেকেই বাঁচাতে হবে। মানিয়ে চলা, adjustment কথা গুলো মাথা থেকে সরিয়ে দাও - যদি দু পক্ষ adjust করে তবে adjustment আপনিই আসে। ভারতে মেয়েদের জন্যে এগুলো slavery-র নামান্তর।

    কেউ একটি চড় তুললে তাকে তিনটে মারতে শেখ। লোকে তোমার দিকে হাত তোলা বন্ধ করবে।
  • Debi | 213.197.123.132 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:২০59009
  • সব চেয়ে অবাক লাগে যে মিতাদের মতো মেয়েরা কেন সহ্য করে? একটা মেয়ের কি শুধু যেন তেনো প্রকারে শশুর বাড়িতে প্রতিষ্টা পেতেই হবে? বাংলা সিরিয়েল গুলো দেখুন। শুধু মেয়েটি কিভাবে শশুর বাড়ির লোকের মন জয় করবে সেটাই দেখানো হয়। মেয়েদের জীবনে র কিছু চাওয়ার নেই? কয়েক মাস আগে এক মহিলা পুলিশ অফিসার সুইসাইড করে পারিবারিক কারণে। তিনি ও কি এতো অসহায় ছিলেন? মিতার ব্যাপার নিয়ে হৈ চৈ হচ্ছে কারণ ও উচ্চশিক্ষত যাদবপুর এর প্রাক্তনী।সারা বছর এরকম কত ঘটনা যে রিপোর্ট হয়। সেই মিতাদের জন্য কোনো লেখালিখি ও হয় না।আমাদের মেয়েদের আত্মসম্মান জ্ঞান কবে হবে? কবে আমরা একটু সাহস করে প্রতিবাদ করে উঠতে পারবো? জানি না। খুব অসহায় লাগে।
  • ইউটোপিয়া | 178.26.197.46 (*) | ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:৩০59034
  • এগুলো সবই।

    এগুলো সবই মেয়েদের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ঠুকে ঢুকিয়ে দিলেও বিয়ে ভেঙ্গে মাতাল স্বামীর কবল থেকে বেরিয়ে আসতে, কিম্বা তাকে লাথিয়ে ছিটকে দেবার পথে আরও অনেক অনেক বাধা থাকে।
    আমি এমন মেয়েদের জানি যাদের এসবই মাথায় ছিল, আছে, তারা উচ্চশিক্ষিত, এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন তো বটেই। তবু পারা যায় নি, কিম্বা পারতে সময় লেগেছে বহু বছর।
    সামাজিক লজ্জা একটা বিরাট বড় বাধা, যা কাটিয়ে উঠতে সময় লাগে। এছাড়া ভালোবাসা, মায়া - এগুলো ও কম বড় বাধা নয়। ইংরিজিতে এর একটা নাম আছে "কোডিপেন্ডেন্সি।" সেখান থেকে বেরোনো সহজ নয়।

    আর ভায়োলেনস? কেউ একটা চড় মারলে তাকে তিনটে চড় মারা? এগুলো, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সহজ নয়। বিশেষত বিয়ের মতন একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রে, তিনটে চড় পালটা মারলেই সমস্যা মিটে যায় না।
    একটা বিরাট বড় বাস্তব হলঃ পুরুষের গায়ে জোর বেশি, মাতাল পুরুষের গায়ের জোর অনেক বেশি, এবং মাতাল মানুষের ভায়োলেন্সের ক্ষেত্রে মানসিক বাধা অনেক কম। একটা মেয়ে পালটা তিনটে চড় মারলেই তার মাতাল স্বামী ভয়ে পিছিয়ে যায়? সেটা কোন দেশে হয়? আর বাংলাদেশে, শ্বশুরবাড়ির আর সব লোকেরা? তারাও তো আছে, থাকে মাতাল ছেলেকে সাপোর্ট দেবার জন্যে।

    সহজ নয়। সম্পর্ক পচে নষ্ট হয়ে গেলেও, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগে। এই মিতার তো মোটে কয়েক বছর বিয়ে হয়েছিল।

    যেটা দরকার, সেটা হল ভিক্টিমদের জন্যে সামাজিক সাপোর্ট তৈরী করা। মেয়েদের কি করা উচিত তা নিয়ে তো অনেক কথা হল। সমাজের কি করা উচিত? ছেলেদের কি ভাবে শিক্ষা দেওয়া উচিত? কেমন করে ছেলেদের শেখানো যায় আত্মনিয়ন্ত্রণ যাতে তারা রাগে মাথা গরম হলেও মেয়েদের গায়ে হাত না তোলে?
    এগুলো নিয়ে অনেক বেশি কথা বলা দরকার।

    আর দরকার ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স নিয়ন্ত্রনের কড়া আইন।

    এগুলো না হলে, মেয়েরা যতই আত্মনির্ভরশীল হোক না কেন, বিশেষ লাভ হবে না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন