এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মকবুল ফিদা হুসেন - জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য

    Bishan Basu লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১০৮৭৭ বার পঠিত
  • বিনোদবিহারী সখেদে বলেছিলেন, “শিল্পশিক্ষার প্রয়োজন সম্বন্ধে শিক্ষাব্রতীরা আজও উদাসীন। তাঁরা বোধহয় এই শিক্ষাকে সৌখিন শিক্ষারই অন্তর্ভুক্ত করে রেখেছেন। শিল্পবোধ-বর্জিত শিক্ষা দ্বারা কি সমাজের পূর্ণ বিকাশ হতে পারে?” (জনশিক্ষা ও শিল্প)

    কয়েক দশক পরেও, পরিস্থিতি বদলায় নি। হয়তো, কিছুটা অধঃপতনই হয়েছে।

    শিল্প বা শিল্পীর প্রতি সাধারণ মানুষের অবজ্ঞা বা অনীহা চোখে পড়ার মতো। তথাকথিত শিক্ষিত মানুষও, যাঁরা এমনকি বিভিন্ন তাত্ত্বিক বিষয়ের চর্চা করে থাকেন, তাঁরাও রীতিমতো গর্বের সাথে বলে থাকেন, মডার্ন আর্ট নিয়ে আমি ইন্টারেস্টেড নই। সত্যি বলতে কি, ছবিটবি আমি তেমন বুঝি না, এই কথাটা বেশ আঁতলেমি করে বলা যায়। আর এর থেকেই বোঝা যায়, চিত্রশিল্প বিষয়ে আমাদের অবজ্ঞার শিকড় ঠিক কতোখানি গভীরে।

    অথচ, শিল্পশিক্ষার প্রয়োজন শুধুমাত্র শিল্পী তৈরী করার জন্যে নয়। শিল্পরস অনুভবের জন্যেও এই শিক্ষা সমান জরুরী। আমাদের প্রাত্যহিকতার মাঝেই যে সুন্দর লুকিয়ে থাকতে পারে, তার অনুধাবনের জন্যে কিছুটা আর্ট এপ্রিসিয়েশনের দীক্ষা থাকা জরুরী। নান্দনিকতার বোধ ছাড়া মানুষ কি সম্পূর্ণ হতে পারে!!

    সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে, কোনো জায়গায় কোনো বন্ধু বেড়াতে গেলে, তার কয়েকশো ছবি আমাদের দেখা হয়ে যায়, বা বলা ভালো, দেখে ফেলতেই হয়। সেই সুন্দরের অভিঘাত কয়েক সেকেন্ড মাত্র। আমাদের মেঘ ঢেকে যায় লক্ষ জিবি ডিজিটাল জাঙ্কে। যিনি ছবি দেখলেন, আর যিনি বেড়াতে গিয়ে ছবি তুলে আনলেন, দুজনের কারোরই মনের মধ্যে, সেই সুন্দরের দীর্ঘমেয়াদী কোনো প্রভাব রইলো কি?

    তা-ই যদি থাকতো, তাহলে আমাদের পারিপার্শ্বিক কি এমন অবাধে ছেয়ে যেতে পারতো কুৎসিত অসুন্দরে?? বেমানান অট্টালিকা গজিয়ে উঠতে পারতো কি হেরিটেজ বিল্ডিং-এর পাশে? শতাব্দীপ্রাচীন সৌধের গায়ে লাগানো যেতো মন্ত্রীর পছন্দের রঙের পোঁচ?

    শিল্পকে ভালোবাসাও তো এক আজন্ম সাধনা। অবনীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, “দুই ধরণের সাধনা থেকে এক দল হল আর্টিস্ট অন্য দল হল রসিক। আর্টিস্ট হবার তপস্যা এবং আর্ট বিষয়ে সমঝদার হওয়ার সাধনা - দু দিকেই রস উপভোগের সঙ্গে অনেকখানি কর্মভোগ জড়ানো রইলো তবে হল মানুষ পাকা আর্টিস্ট বা পাকা সমঝদার। এই দুই দল, আর্টিস্ট ও সমঝদার - এরা দুজনেই ক্রিয়া করছে বিভিন্ন রকম কিন্তু ফল পেতে চলেছে এক। রস পাওয়া নিয়ে কথা - খেলা করে রস, খেলা দেখে রস।” (রস ও রচনার ধারা - বাগীশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী)

    অবন ঠাকুর কথিত সাধনা যদি কিঞ্চিৎ জটিল হয়, নিদেনপক্ষে নিয়মিত শিল্পকলা দেখার অভ্যেসটুকু থাকলেও, অন্তর্নিহিত নান্দনিকতার বোধখানা জাগ্রত হয়, আশেপাশের জগৎটা দেখার নজর বদলে যায়, তার লাভও কিছু কম নয়।

    পশ্চিমী দেশে শৈশব-কৈশোর থেকেই বিভিন্ন আর্ট গ্যালারী দেখাতে নিয়ে যাওয়ার চল রয়েছে। সে দেশের ছিমছাম মনোমুগ্ধকর শহর রাস্তাঘাট ইত্যাদির পেছনে, আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি, এই অভ্যেসের ভূমিকাও কম নয়।

    দুর্ভাগ্যজনক, আমাদের দেশে, সুপ্রাচীন শিল্প-ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও, আমরা শিল্প বিষয়ে চূড়ান্ত নিস্পৃহ। আমরা একগাদা পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে তৃতীয় শ্রেণীর সিনেমা দেখতে মাল্টিপ্লেক্স যাই, আরো একগাদা পয়সা খরচ করে পপকর্ন কিনি, তবু বছরভর পসরা সাজিয়ে বসে থাকা আর্ট গ্যালারী যাওয়ার কথা ভাবি না। কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে ইন্টিরিয়ার ডিজাইনার দিয়ে ড্রয়িং রুম সাজাই, তবু সামান্য কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে উঠতি প্রতিভাবান শিল্পীর ছবি সংগ্রহ করে সেই দেওয়াল আলো করি না।

    যাক গে, এতো গৌরচন্দ্রিকা যে প্রসঙ্গে, সেই কথায় আসা যাক।

    আজ হুসেন, অর্থাৎ মকবুল ফিদা হুসেনের জন্মদিন।

    স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষের সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্রকর, খুব সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণও বটে, তাঁর জন্মদিনটির উল্লেখমাত্র নেই কোনো মিডিয়ায়।

    ১৯১৫ সালে, আজকের দিনটিতে জন্ম হয়েছিলো তাঁর। মহারাষ্ট্রের পান্ধারপুরে, যদিও শিকড় গুজরাটেই। শৈশবেই হারান মা-কে। মাদ্রাসায় ক্যালিগ্রাফি শেখার সময় আগ্রহ জাগে চিত্রশিল্পে। বাড়ি থেকে পালিয়ে মুম্বাই। তাঁর আঁকা ক্যানভাসের চেয়ে কিছু কম বৈচিত্র‍্যপূর্ণ নয় তাঁর জীবন।

    শোনা যায়, বাড়ি থেকে পালিয়ে মুম্বাইয়ের ফুটপাথে যখন থাকতেন তিনি, তার উল্টোদিকে একটা বড়ো বিলবোর্ড আঁকা হচ্ছিলো। বিলবোর্ড আঁকিয়েরা দুপুরের খাবার খেতে যান রঙ-তুলি ফেলে। ফিরে এসে দেখেন, তাঁদের কাজ শেষ করে রেখেছেন, ফুটপাথে থাকা একটি ছেলে। হ্যাঁ, কোনো গ্রিডের ব্যবহার ছাড়াই, বিলবোর্ড আঁকা শেষ।

    জানি না, এই ঘটনা সত্যি, না কি নিছকই মিথ। হুসেন মানুষটাই তো মিথে ঢাকা। লার্জার দ্যান লাইফ। জীবনের প্রতি মুহূর্তে, যিনি চমকে দেবেন আমাদের।

    শৈশবে মা-হারানো যিনি আজীবন খুঁজে যাবেন নিজের মাকে। অন্য নারীর মধ্যে। আর, যেহেতু মায়ের মুখ তাঁর মনে পড়ে না, তাই তাঁর ক্যানভাসের নারীদের মুখাবয়ব, ফেসিয়াল ফিচার্স রয়ে যাবে অনির্দিষ্ট অস্পষ্ট, আমরণ।

    রাজ্যসভার সেলিব্রিটি সাংসদ হিসেবে, যিনি মৌন থাকলেও (সব সেলিব্রিটি সাংসদই তো মুখে কুলুপ এঁটেই থাকেন), নিজের অভিজ্ঞতা ছবির ভাষায় সাজিয়ে তার নাম দেবেন সংসদ উপনিষদ।

    বলিউডি ফিল্মের বিজ্ঞাপন আর বিলবোর্ড এঁকেই তাঁর প্রথম জীবন কেটেছিলো। আর, তার প্রভাব স্পষ্ট হুসেনের বাকি জীবনের ছবিতে। বৃহদায়তন ক্যানভাসে কাজ, দ্রুত লম্বা তুলির আঁচড়, কয়েকটি তুলির টানেই ছবিকে স্পষ্ট ভাষা দেওয়া। হ্যাঁ, কোনো এক জায়গায়, হুসেন মিনিমালিস্ট, অসম্ভব নিজস্ব রঙ-আঙ্গিকের ব্যবহারের পরেও।

    দুশো বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের অনিবার্য অঙ্গ, নিজস্ব অতীত ঐতিহ্য বিষয়ে শ্রদ্ধা হারানো, বা হারাতে বাধ্য হওয়া৷ ভারতবর্ষও ব্যতিক্রম নয়। দেশজোড়া স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম অংশ হিসেবেই শুরু হয় আমাদের অতীত শিল্প-ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের শিল্প-আন্দোলনও। বেঙ্গল স্কুল অফ আর্টের এই শিল্প রেনেসাঁ-র পুরোধা ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। তাঁর ছায়া রয়ে যায় কয়েক দশক জুড়ে।

    স্বাধীনতা প্রাপ্তির সাথে, দেশভাগ দাঙ্গা অনিশ্চয়তার মুহূর্তে, প্রয়োজন হয় নতুন শিল্পভাষার। আর, তাছাড়া, বেঙ্গল স্কুলের প্রাচ্য আঁকড়ে অতীতচারিতার সময় তখন বিগতপ্রায়। পশ্চিমে, ইম্প্রেসানিজম কিউবিজম মডার্নিজম সুররিয়ালিজম নিত্যনতুন পরীক্ষানিরীক্ষার স্রোত আছড়ে পড়ে এই দেশেও। প্রসঙ্গত, উল্লেখ করি, ভারতীয় ছবিতে আধুনিকতা আনার একটা বড়ো কৃতিত্ব রবীন্দ্রনাথের। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, তিনি তেমন করে আধুনিক এক শিল্প-আন্দোলনের জন্ম দিতে পারেন নি। হয়তো একেবারে শেষ বয়সে ছবি আঁকা শুরু করেছিলেন, সেই জন্যেই, শিল্পের অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায়, চিত্রশিল্পে রবীন্দ্রপ্রভাব বৃহত্তর ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

    ফ্রান্সিস নিউটন সুজা আর মকবুল ফিদা হুসেনের নেতৃত্বে সৃষ্টি হয় নতুন এক যুগের। তৈরি হয়, বোম্বে প্রোগ্রেসিভ আর্ট গ্রুপ। পরবর্তীকালে যাঁরা এই গ্রুপে যোগ দেন, তাঁরা সকলেই আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার কিংবদন্তী। তায়েব মেহতা, আকবর পদমসি, রামকুমার, সৈয়দ রাজা, কৃষেণ খান্না সবারই উত্থান এই প্রোগ্রেসিভ আর্ট গ্রুপ থেকেই। এঁরা প্রত্যেকেই স্বক্ষেত্রে স্বরাট, এবং ভারতীয় ছবির আন্তর্জাতিক বাজারের, অন্তত আর্থিক অঙ্কের হিসেবে, অনেকটাই এঁদের সুবাদে।

    আশ্চর্য এইটাই, যে, একই আর্ট গ্রুপের অন্তর্গত থাকলেও, এঁরা প্রত্যেকেই নিজস্বতা রাখলেন অটুট। এঁদের মধ্যেও, হুসেন অনন্য, কেননা পাশ্চাত্য চিত্রাঙ্কন রীতির সাথে দেশজ লোকশিল্পের আঙ্গিক বা দেশীয় কন্টেন্ট এমন করে মেলাতে সফল হওয়া, প্রায় নজিরবিহীন।

    বিনোদবিহারী বলেছিলেন,
    “শিল্প-সৃষ্টির মোটামুটি তিনটি পথ -
    ১. সমাজের ব্যাপক তাৎপর্য সম্বন্ধে চেতনা।
    ২. সমকালীন অবস্থা-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত শিল্পের আঙ্গিক।
    ৩. ধ্যান-ধারণার পথে স্বতঃস্ফূর্ত জ্ঞানের সাহায্যে শিল্পসৃষ্টি।
    এই তিনটি আদর্শ একে অন্যের পরিপূরক বললে ভুল হবে না।” (শিল্প-জিজ্ঞাসা)

    এই তিনটি পথেই সিদ্ধিলাভ করার প্রায় অনন্য নজির হুসেনের। আর, তার সাথে, ছবি আঁকার সবকটি মাধ্যমেই তাঁর অনায়াস, অলৌকিক দক্ষতা।

    যাক সে কথা, হুসেনের জীবন বা তাঁর চিত্রকলা নিয়ে বিশদ আলোচনা এই শ্রদ্ধার্ঘ্যের উদ্দেশ্য নয়। সেই জ্ঞান বা পাণ্ডিত্যও আমার নেই।

    শিল্পীবন্ধু বা গ্যালারির সাথে যুক্ত মানুষ যাঁরা, তাঁদের কাছ থেকে কিছু গল্প শুনেছি। খ্যাতির শীর্ষে উঠেও, খালি পায়ে (তাঁর অন্যতম বিশেষত্ব) চাঁদনি চকের রাস্তায় হেঁটে সাবির হোটেলে চায়ে ডুবিয়ে পরোটা খাওয়ার গল্প। কিম্বা, মেট্রো রেলের সুবাদে গর্তে ভরা কলকাতায়, বহুতল বিল্ডিং-এর উঁচু তলায় কর্পোরেট বড়ো কর্তার পার্টি থেকে মুখ্য আকর্ষণ হুসেনের নিখোঁজ হয়ে, কাদায় ভরা খন্দ পার হয়ে মজুরদের ঝুপড়িতে মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ার গল্প। মিতবাক, মৃদুহাস্যময় মানুষটি, সাধারণ মানুষের সংস্পর্শচ্যুত হন নি কখনো। নতুন আঁকিয়ের প্রদর্শনীতে অনেকসময় পৌঁছে যেতেন, অপ্রত্যাশিতভাবেই। প্রশংসায়-উৎসাহে ভরিয়ে দিতেন পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের।

    বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিবাদে এক্সিবিশন করতে বলা হলে, আটচল্লিশ ঘন্টার নোটিশে, রাত জেগে, নাওয়া খাওয়া ছেড়ে, গ্যালারি ভরিয়ে তোলেন নতুন চিত্রকর্মে।

    আবার, দরাজ হৃদয় মানুষটি, স্রেফ ভালোবেসেই, গ্যালারির মালিককে দিয়ে যান তাঁর একগুচ্ছ অনবদ্য ড্রয়িং।

    দেশকে ভালোবাসতেন। খুব খুউউব গভীর আর নিবিড় সেই ভালোবাসা। ষাটের দশক থেকেই, পশ্চিমী উন্নত দেশ থেকে এসেছে নাগরিকত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ। নিলে, হয়তো, খ্যাতি ছড়াতে পারতো আরো বেশী দূর পর্যন্ত। সেই সত্তর দশকের শুরুতেই তো পিকাসোর সাথে যৌথ এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

    না, তিনি দেশ ছেড়ে যান নি।

    তিনি জানতেন, দেশ আর দেশের মানুষের মধ্যেই তাঁর শিকড়৷ সেই মাটির রসসিঞ্চন ব্যতিরেকে, তাঁর ছবি অসম্পূর্ণ, প্রাণহীন। দেশের সংস্কৃতি, অতীত ঐতিহ্যকে তিনি প্রকৃত অর্থেই আত্মস্থ করতে পেরেছিলেন। মিথ-পুরাণ-ইতিহাস সবকিছু থেকেই তিনি পেতেন তাঁর ছবির রসদ।

    দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া, বা তাঁকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা, ধর্মান্ধ অসহিষ্ণুতার এক অনন্য নজির। এই লজ্জা আমাদের।

    প্রবাসের নিঃসঙ্গতায়, মৃত্যুর আগের সপ্তাহেও, তিনি দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন। একটি বিকেল বা সন্ধ্যের জন্যে হলেও, নিঃশ্বাস নিতে চেয়েছিলেন ভারতবর্ষের বাতাসে।

    তাঁর স্বপ্নকল্পনার সেই ভারতবর্ষ তখন কী ভেবেছিলো?

    আজ, মকবুল ফিদা হুসেনের জন্মদিন।

    আসুন, তাঁর আঁকা ছবি দেখি।

    আসুন, ছবি দেখার অভ্যেস তৈরী করি। নতুন ছবি-আঁকিয়ের দিকে বাড়িয়ে দিই উৎসাহের হাত।

    এক অসহিষ্ণু অস্থির সময়ে দাঁড়িয়ে, আসুন, হুসেনকে, মনে রাখি।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১০৮৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • saikat | 342323.176.78900.204 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৫61976
  • পুনশ্চ পারী, নীরদ মজুমদারের লেখা। পরিতোষ সেনও লিখেছেন, যে লেখাগুলো নিয়ে পরে বই হয়েছিল, আবু সিম্বাল, পিকাসো ও অন্যান্য তীর্থ। অবশ্য ওনার বিখ্যাত বই, জিন্দাবাহার। ছোটবেলায় দেখা অদ্ভুত মানুষদের নিয়ে।
  • T | 340112.211.0123.204 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৫61977
  • হুতোদা কারেক্ট। ডিডিদা নির্ঘাত বিমল দাসের কথাই বলছেন। আমাদের হাওড়ার লোক :)
    আবু সিম্বাল, পিকাসো ও অন্যান্য তীর্থ পড়িচি।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.564512.73 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৫61992
  • বাংলা প্রকাশনা জগতে নূতনত্ব এনেছিলেন দিলীপ কুমার গুপ্ত- ডি। কে।। সিগনেট প্রেসের কর্ণধার। ছাপার ব্লক, ইলাসট্রেশন, প্রচ্ছদ সবকিছুতে। বাংলা সাহিত্যের সব শ্রেষ্ঠ কবি, লেখকদের সব শ্রেষ্ঠ বইগুলো সিগনেট প্রেস থেকে বেরিয়েছিল।

    সিগনেটের প্রেসের বইয়ের ইলাসট্রেশন করেছেন সত্যজিৎ রায়, শৈল চক্রবর্তী, পূর্ণেন্দু পত্রী।

    এ বিষয়ে ডিটেলে বলতে পারবেন @Rituparno Basu

    প্রতিক্ষণ গত বইমেলায় গগনেন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের ছবির বই (সমগ্র সেট), ২৫০০০ র তিনটে সেট ১০০০০ দিচ্ছিল।
  • শঙ্খ | 5645.112.0178.185 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৫০61993
  • গণেশ বাবাজি এখনো আছেন বহাল তবিয়তেই, হয়তো কিঞ্চিৎ বেশিই পপুলার। এই সেদিন সোমাদি ডেকেছিলো আকাদেমিতে, গিয়ে দেখলুম বেশ কিছু উঠতি রংবাজ অলরেডি বাবাজিকে ক্যানভাসে পাকড়াও করে ফেলেছেন।

    আলোচনা দারুণ লাগছে। চলুক।
  • | 670112.210.121223.162 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:০৭61994
  • ও ডিডি, সত্যজিতও প্রচ্ছদ করেছেন তো আপনার সময়ই হবে সেটা। আর ইলাস্ট্রেশান নিজের গল্পে বা সন্দেশে।
  • সৈকত | 238912.66.5656.75 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:০৯61995
  • মনে পড়ল, যে সত্যজিত রায়, শান্তিনিকেতনে পড়ার সময়েই ঠিক করে নিয়েছিলেন যে কমার্শিয়াল আর্টের দিকেই তিনি থাকবেন, পেন্টার হওয়ার ইচ্ছে তাঁর নেই। পরবর্তীকালে মারী সীটনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও ঐ কথা বলেছিলেন। কলাভবনের পুরো কোর্স না শেষ করেই মনে হয় কলকাতা ফিরে এসেছিলেন, তারপর সিগনেটে যোগ দেওয়া। দুপুরের দিকে -- মন্তব্য করেছেন যে ক্ষমতাবান ইলাস্ট্রেটররা ও পেন্টাররা কেন অন্য দিকের কাজকর্ম করলেন না। উত্তর দেওয়া শক্ত, যদি না সত্যজিতের মত স্পষ্ট মত পাওয়া যায়।

    তো এই প্রসঙ্গে ইলাস্ট্রেশন নিয়ে কয়েকটা কথ মনে এল। আমার বক্তব্য এই, ভুল হতে পারে, যে মোটামুটি চল্লিশের দশক থেকে আশির দশক অবধি ইলাস্ট্রেশনের যে স্বর্ণযুগ, সেই একই সময়ে বাংলা লেখালেখিরও এক বর্ণময় অধ্যায়। প্রচুর পরিমাণে পত্রিকা প্রকাশ পাচ্ছে, শুধু বিগ হাউসের পত্রিকাই নয়, তুখোর সব ছোট পত্রিকা আর তার সাথে অনেক প্রকাশনা সংস্থা। পাঠক টানার জন্যাই হয়ত, ছবিকে লেখার সাথে ব্যবহার করা হচ্ছে, ফলে ইলাস্ট্রেটরদের গুরুত্ব বাড়ছে, ফলে ক্ষমতাবান আঁকিয়েরা ঐ কাজে যুক্ত হচ্ছেন আর ইলাস্ট্রেশনের জগৎটা অসাধারন কিছু কাজ রেখে যাচ্চ্ছে। তেমনি কভার ডিজাইনে, যে রকমের বই প্রকাশ পাচ্ছে, ছোট প্রকাশনা থেকেও, কবিতা-গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ-রাজনীতি সব নিয়ে, তার সাথে সঙ্গতি রেখে কভার ডিজাইনে ঝোঁক পড়ছে। আমার ধরণা, সত্যজিত, পূর্ণেন্দু পত্রী বা খালেদ চৌধুরীর মুন্সিয়ানা নিয়েই আলাদা অলাদা করে লেখা/বই লিখে ফেলা যায়। প্রকাশনার জগতে এতখানি বদল ঘটে না গেলে, কেউ হয়ত ফাইন আর্টসের দিকেই চলে যেতেন।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.564512.73 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:২০61996
  • দিলীপ কুমার গুপ্ত ও প্রকাশনা জগতে তার অবদান নিয়ে সত্যজিৎ রায় ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাদের স্মৃতিকথায় স্মৃতিচারণ করেছেন।
  • সৈকত | 238912.66.5656.75 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৩০61997
  • প্রিন্ট নিয়ে আরও দু'চার কথা লিখে যাই। কালিঘাটের পটের যে প্রসার, অধুনাকাঅলে লুপ্ত হয়ে গিয়ে, প্রদর্শনীর অঙ্গ হয়ে যাওয়ার আগে, অনেক আগে যা ঘটত, সেটা এরকম যে কালিঘাট মন্দিরের দর্শনার্থীদের আসা যাওয়ার পথে, মন্দিরের কাছাকাছি ছবি বিক্রী হত। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা মানুষজন, ফিরে যাওয়ার সময়ে অন্য কেনাকাটার সাথে ঐসব ছবি/পট কিনে নিয়ে যেত, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঠকুর-দেবতার মোটিফ থাকত বলেই হয়ত, অথবা কিছু পরে যখন সমসাময়িক ঘটনা পটের ফ্রেমে উঠে এল, সেই সব ছবিও তাদের আকর্ষণ করত বলে। বলার কথা এই যে , পটের জনপ্রিয়্তার পেছনেও, এটাই আছে যে ছবিগুলো সাধারণ লোকের কত কাছাকাছি থাকছে, তাদের প্রায় দৈনন্দিনের মধ্যেই। যথেষ্ট পরিমাণে প্রিন্টের যোগান হয়ত, পুরোন বা নতুন আঁকিয়েদের ছবিগুলো, ছবির জগতটা বদলে যাওয়ার হাল-হদিশ, এসবের খোঁজখবর সাধারণ লোকের কাছাকাছি এনে দিতে পারত।
  • Bishan Basu | 7845.15.561223.37 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৩৩61978
  • আঃ, অসাধারণ। এমন চমৎকার আলোচনা শুরু হয়েছে, যে, নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দিতে ইচ্ছে করছে, এমন আলোচনার শুরুটি আমার হাত ধরেই, এই ভেবে।

    যামিনী রায় যে সময়ে দেড়শো দুশো টাকায় বিক্রি করতেন, হুসেনের ছবি সেই সময়ে তেমনই দামে বিক্রি হয়েছে। বিশ্বাস না হলে, একটু ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখে নিতে পারেন। গতবছর, পান্ডোলের অকশনে হুসেনের যে ছবি প্রায় পনেরো লাখে বিক্রি হয়, তার পেছনে হুসেনের স্বাক্ষর এবং তাঁরই স্বহস্তে রুপিস ওয়ান ফিফটি লেখা ছিলো। ছবিটি ষাটের দশকে আঁকা।

    কথাটা হচ্ছে, বাঙালী মধ্যবিত্ত ছবি কেনার ব্যাপারে তেমন একটা আগ্রহী ছিলো না কোনোকালেই। আশির দশকেও আটশো বা হাজার টাকায় গণেশ পাইনের ক্যানভাস আর্টমেলায় বিক্রি হয়নি। শান্তিনিকেতনে নন্দনমেলায়, সোমনাথ হোড়, রামকিঙ্কর বা নন্দলাল বসুর ছবি পঞ্চাশ একশো টাকায় বিক্রি হতো। কজন কিনতে গিয়েছেন!!

    যামিনীবাবুর মুখ্য ক্রেতা ছিলেন, কিছু উচ্চবিত্ত বাঙালী বাদ দিলে, মাড়োয়ারিরাই। কলকাতার ছবির বাজার, বা শিল্পীর রুটিরুজি তাঁরাই টিকিয়ে রেখেছিলেন। অপ্রিয় হলেও কথাটা সত্যি।

    আর, নামী শিল্পীদের ক্যানভাস, এখন, মধ্যবিত্তদের সামর্থ্যের বাইরে। এখন, ছবির দাম নির্ধারণ করে বাজার। ডিমান্ড-সাপ্লাইয়ের জটিল অঙ্ক। অতীতে শিল্পীর হাত থেকে ছবি কেনার যে সুযোগ ছিলো, তা এখন গ্যালারী বা অকশন হাউসের নিয়ন্ত্রণে।

    হুসেন, কিন্তু, চেয়েছিলেন, তাঁর আঁকা ছবি থাকুক মধ্যবিত্তের দেওয়ালে। খ্যাতির শীর্ষে থাকার সময়ও, তাঁর বিখ্যাত ছবির সেরিগ্রাফ বিক্রি করেছেন দু-তিন হাজার টাকায়। কিনেছেন কি মধ্যবিত্ত বাঙালী?

    সিমা বা অন্যান্য আর্ট গ্যালারী এফোর্ডেবল আর্ট বলে যখন আয়োজন করেন, তখন দশ বা বিশ হাজারে বেশ ভালো ছবি বিক্রি পাওয়া যায়। নামী শিল্পীদের খুব সাধারণ কাজ, বা উঠতি শিল্পীদের মেজর কাজ। কেনা দূরে থাক, দেখতেও যান কজন? পরেশ মাইতির জলরঙ ল্যান্ডস্কেপ বিক্রি হয়েছে পাঁচ-দশ হাজারে, কয়েক বছর আগেই। খুব সাঙ্ঘাতিক বিক্রি হয়েছে, এমন কিন্তু নয়।

    কাজেই, শুধুমাত্র দামের জন্যে মধ্যবিত্ত ছবি কেনেন না, সেইটা অতিসরলীকরণ। সমস্যাটা মানসিকতার। পরিচিত অনেক বন্ধুকেই নতুন ফ্ল্যাট সাজাতে দেখি, পনেরো-কুড়ি লাখ খরচ করে। বা তার চাইতেও বেশী। কিন্তু, একখানা ছবি টাঙানোর কথা তাঁরা ভাবতেও পারেন না। অনেকেই তো মাল্টিপ্লেক্সে সপরিবারে সিনেমা দেখতে গিয়ে হাজার-দুহাজার একদিনে উড়িয়ে আসেন। কিন্তু, দশহাজার দিয়ে বছরে একখানা ছবি কিনতে পারেন না।

    মধ্যবিত্ত বাঙালীর ছবি দেখার চোখ নেই, কেনার মানসিকতা তো দূরের প্রশ্ন। সেই আক্ষেপ নিয়েই, লেখার শুরু। ছবি দেখার অভ্যাস কিন্তু, মানসিকভাবে আপনাকে বদলে দিতে পারে অনেকখানিই। কমপক্ষে, চারপাশটা দেখার দৃষ্টিটা তো বদলে যাবেই। এই লেখার ক্ষেত্রে হয়তো, এই কথাগুলো বলা অপ্রাসঙ্গিক গৌরচন্দ্রিকা। কিন্তু, এই প্রশ্নগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং মূলস্রোতের আলোচনায় জরুরী।

    আরেকটা আক্ষেপ। এই লেখার উত্তরে, অনেকেই যেমন কমেন্ট করেছেন, তাইতে এইটুকু পরিষ্কার, যে, ছবি নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা আমার চাইতে বহুগুণ বেশী। অন্তত ডিডি-স্যারের ক্ষেত্রে এইকথা সর্বতোভাবে সত্যি। অনুনয় করছি, লিখুন, প্লীজ। লেখাটা জরুরী। এই বিষয় নিয়ে অনেক বেশী লেখালিখি আলোচনা জরুরী। আপনাদের এতো অভিজ্ঞতা, লেখেনও চমৎকার। লিখুন না, প্লীজ।

    আবারও, নমস্কার আর ধন্যবাদ সবাইকে।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.564512.73 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৫০61998
  • @Bishan Basu

    যামিনী রায় যে সময়ে দেড়শো দুশো টাকায় ছবি বিক্রি করতেন, হুসেনের ছবি সেই সময়ে তেমনই দামে বিক্রি হয়েছে।'

    যামিনী রায় (জঃ ১৮৮৭) ও এম এফ হুসেন (জঃ ১৯১৫) র মধ্যে প্রায় ত্রিশ বছরের ব্যবধান। এক প্রজন্মের। যামিনী রায়ের ছবি বিক্রিকে কিছুটা পপুলারাইজ করেছিলেন অ্যামেরিকানরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যে সব অ্যামেরিকান ডিপলম্যাট ও সামরিক বাহিনীর অফিসাররা কলকাতায় এসেছিলেন, তারা যামিনী রায়ের ছবি কিনতেন খুব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অর্থাৎ ঐ ১৯৪০- '৪৫, তখনই যামিনী রায়ের বয়েস প্রায় ষাট। উনি পুরো পঞ্চাশের দশকে, যখন তার ছবি বিক্রি বাঙালিদের মধ্যে তুঙ্গে, সেই সময়ও দাম রাখতেন ৩০/৩৫ থেকে ১০০ র মধ্যে।

    হুসেনের যখন ষাট, পঁয়ষট্টি অর্থাৎ ১৯৭৫- '৮০ তখন ওর ছবির বাজার দর আকাশ ছোঁয়া হয়ে গেছে। যামিনী রায় পরিণত বয়েসে যে দামে ছবি বিক্রি করেছেন, হুসেনের ক্ষেত্রে সেটা কল্পনাতীত।
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.82 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:১৮61999
  • আমি কিন্তু, ষাটের দশকে হুসেন একশো দেড়শো টাকায় ছবি বিক্রি করতেন, এই কথাই বলতে চেয়েছি।

    সেই সময়ে যামিনী রায়ের কাজও কাছাকাছি দামেই পাওয়া যেতো, খুব সম্ভবত।

    আশির দশকেও হুসেন, মধ্যবিত্তের আয়ত্তের মধ্যেই ছিলেন। ক্যানভাস না হলেও, কাগজের উরে কাজ, বা জলরঙ, কিম্বা ড্রয়িং, ২০০০ সালেও আকাশ ছোঁয় নি।

    হুসেনের সমতুল্য, সুজা তো দশ বছর আগেও জলের দরে বিক্রি হয়েছে। এখন তাঁর দাম আকাশছোঁয়া। ২০০০ সালের আশেপাশে, কলকাতায় সুজার প্রদর্শনীতে, খুব কম দাম সত্ত্বেও, একটিও ছবি বিক্রি হয়নি, অন্তত দুজন গ্যালারীর মালিক এমন আক্ষেপ করেছেন।

    আর, হ্যাঁ, ছবি ভালোবাসতে হলে, কিনতেই হবে, এমন মানে নেই। জন বার্জার সাহেব তো স্পষ্ট বিশ্বাস করতেন, আর্টের প্রাইভেট ওনারশিপ অন্যায্য এবং অন্যায়।

    ছবি ভালোবাসুন। ভালোবাসার জন্যে ওন করতে হয় না।
  • সৈকত | 238912.66.0167.225 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:২৭61979
  • তবে, আমি আরও একটা জিনিস বুঝি না, যে, কেন এদেশে ছবির প্রিন্ট সেভাবে হয় না ? বিষানবাবু যেমন আগে বলেছেন যে ছবির সামনে গিয়ে না দাঁড়ালে ছবি বোঝা যায় না, খুবই সত্যি কথা, পরেশ মাইতির বিশাল একটা ক্যানভাসের কথা আজও মনে পড়ে, সিমার প্রদর্শনীতে দেখেছিলাম কয়েক বছর আগে, সে জিনিস প্রিন্টে ধরা যাবে না,কিন্তু যোগেন চৌধুরীর ছবির পরিবর্তন, প্রায় গলে যাওয়া লাইনগুলো অথবা ব্যাক্গ্রাঊন্ডের শত-সহস্র কাটাকুটি অথবা বেরিয়ে আসা চোখগুলো, আমি যদি এসবই মাথার ভেতরে ধরে রাখতে চাই, তাহলে প্রিন্ট না হলে উপায় কী ? যোগেনবাবু একটা উদাহরণ, কিন্তু এই যে ক্যালকাটা গ্রুপ, তাদের কাজ, মোটমাট কী দাঁড়াল, সেসব বুঝব কী করে ডিটেলে যদি নিদেন প্রিন্ট না পাই। কলকাতায় না হয়, সেরকম উচ্চ্মানের গ্যালারী নেই, কিন্তু যাও বা আছে, সেখানে প্রদর্শনী তো কম হয় না, যৌথ প্রদর্শনী হলে, সব আর্টিস্টদের অন্তত একটা করে ছবি নিয়েও কি প্রিন্ট করা যায় না। হয় কী ? আমি তো যানি না। না হওয়ার কারণটা কী, খরচ না ব্যবসাবুদ্ধির অভাব ?

    এই জন্য প্রিন্টের কথা লিখছি কারণ, একজন আর্টিস্টের কাজের ধারণা করতে গেলে অথবা একটা গ্রুপের কাজেরও, মোটমাট ব্যাপারটা বুঝতে গেলে এ ন্বা হলে কী উপায়। টার্নারের সেইসব বিশাল সীস্কেপ ব কনস্টবেলের সাসেস্কের ছবি, অভাবনীয় ব্যাপার সব, সে সব যদি ঘরে রাখতেও চাই, প্রিন্ট না হলে উপায় নেই। তেমনি, এদেশের ছবি, সতীশ গুজরাল বা ভূপেন কক্কর, অথবা এখানে হিরণ মিত্রর প্রায় বিমূর্ত সব ল্যাণ্ডস্কেপ, এগুলোর প্রসার হতে গেলেও, লোকের মধ্যে, নকল করাটা, প্রিন্টের মাধ্যমে জরুরী, যতই কেননা সেই জার্মান লেখকের বক্তব্য ছিল যে ক্রমাগত যান্ত্রিক পুনরুৎপাদনের যুগে চারুশিল্প তার মর্যাদা হারায় !!
  • -- | 781212.194.670123.11 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৩৪61980
  • বিমল দাস, সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়, রেবতীভূষণ আবাপতে। প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায়, বি. রায়, নারায়ণ দেবনাথ, ময়ুখ চৌধুরি, দিলীপ দাস, তুষার চ্যাটার্জি দেব সাহিত্য কুটীরে, ধীরেন বল শিশুসাথীতে, প্রতুল চন্দ্র লাহিড়ী অমৃতবাজারে, সত্যজিত রায় সন্দেশে, এরকম স্বনামধন্য ইলাসট্রেটরদের লিস্টি করলে গোটা কুড়ি-তিরিশের বেশি হবে না বোধহয়। কিন্তু বড শিল্পী, যারা ক্যানভাসে আঁকছেন তাঁদের ইলাসট্রেশনে আসতে দেখা গেল না। ভিসাভার্সা, অথচ দুটি মাধ্যমেই আলাদাভাবে দুদলই প্রবল শক্তিধর।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.564512.73 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৩৬62000
  • গণেশকে পপুলারাইজ করেছে অনেকে। তার মধ্যে মনে পড়ছে বসন্ত চৌধুরী, মল্লিকা সারাভাই। বসন্ত চৌধুরী তার সারাজীবনের গণেশ সংগ্রহ ইণ্ডিয়ান মিউজিয়ামকে দিয়ে গেলেন। সেই নিয়ে তার লেখা 'দেশ' এ বেরোল।

    মল্লিকা সারাভাই একটা কোরিওগ্রাফি করলেন, নৃত্যের তালে তার পায়ের ছাপে গণেশ আঁকা হত। সেই আঁকা নিলামও হত।

    যামিনী রায়ের আঁকা নিয়ে একটা ইন্টারেস্টিং আলোচনা হয়েছিল ঋতুপর্ণ ঘোষের বিখ্যাত ইন্টার্ভিউ সিরিজ 'ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি' তে। সস্ত্রীক সব্যসাচী চক্রবর্তী পর্বে। ফেলুদার বসার ঘরে একটা আস্ত যামিনী রায় ঝুলছে (সেটা অবশ্য সত্যজিৎ রায়ের আঁকা)। আলোচনা এরকম এগিয়েছিল ১৯৬৬ তে সৃষ্ট ফেলুদা যামিনী রায়ের ছবি কিনলেন কি ভাবে? তখন কি তার এত নামী শিল্পীর ছবি কেনার মত রোজগার ছিল! বাপ-মা মরা ফেলুদা থাকতেন তার কাকার সংসারে। তাহলে কি তার কাকা কিনেছিলেন? তার মানে স্ত্রী, পুত্র, ভাইপো নিয়ে বসবাস করেও তিনি যামিনী রায় afford করতে পেরেছেন!

    অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ এবং বেঙ্গল স্কুলের অন্যান্য শিল্পীদের ছবি মধ্যবিত্ত বাঙালির ঘরে থাকত না। সম্ভবও ছিল না। যামিনী রায় দিয়ে বাঙালীর দেওয়ালে ছবি আসতে শুরু করল।

    ইন্টার্ভিউয়ের লিঙ্কটা ইউ টিউবে আছে।
  • Bishan Basu | 7845.15.890123.251 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৫৪61981
  • প্রিন্ট নিয়ে কিছু কথা উঠে এসেছে। দারুণ।

    সিমা গণেশ পাইনের কাজ নিয়ে অসামান্য কিছু প্রিন্ট করেছে। কিন্তু, বাকি গ্যালারিতে তেমন দেখিনি।

    সোসাইটি অফ কনটেম্পোরারি আর্টিস্ট অনেকের এচিং নিয়ে প্রদর্শনী করেছেন। কিন্তু, মূলধারার ছবি নিয়ে প্রিন্ট দেখিনি।

    এখন অনলাইন কিছু সাইটে খুব উচ্চমানের প্রিন্ট পাওয়া যায়। কিন্তু, সেইখানেও, আধুনিক বাঙালী চিত্রকরদের কাজ অনুপস্থিত।

    বড়ো, উঁচুমানের প্রিন্ট থাকলে মূল ছবিটির স্বাদ, অন্তত দুধের স্বাদ ঘোল দিয়ে মেটানো যায়। দুর্ভাগ্যজনক, সেই সুযোগও অমিল।

    অবশ্য, এও ডিমান্ড সাপ্লাইয়ের গল্প। সাধারণ আটপৌরে মধ্যবিত্ত বাঙালী গ্যালারীমুখী হলে, প্রিন্টের দাবী করলে, গ্যালারীও আগ্রহী হবে, আশা করা যায়। সিমা তো বটেই, আকৃতি আর্ট গ্যালারীতেও প্রিন্ট, এমনকি উন্নত ক্যানভাস প্রিন্টিং-এর পরিকাঠামো রয়েছে। প্রথমে কাজ কিছু হলেও, এখন বন্ধ। চাহিদার অভাবে। যদিও, জিক্লি প্রিন্টিং-এর ব্যবস্থা শহরে নেই।

    আসুন, সবাই ছবি দেখি।

    গ্যালারীতে যাই। তবেই না, ছবি বা প্রিন্ট দুলভ হবে।
  • Bishan Basu | 7845.15.890123.251 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৫৫61982
  • প্রিন্ট নিয়ে কিছু কথা উঠে এসেছে। দারুণ।

    সিমা গণেশ পাইনের কাজ নিয়ে অসামান্য কিছু প্রিন্ট করেছে। কিন্তু, বাকি গ্যালারিতে তেমন দেখিনি।

    সোসাইটি অফ কনটেম্পোরারি আর্টিস্ট অনেকের এচিং নিয়ে প্রদর্শনী করেছেন। কিন্তু, মূলধারার ছবি নিয়ে প্রিন্ট দেখিনি।

    এখন অনলাইন কিছু সাইটে খুব উচ্চমানের প্রিন্ট পাওয়া যায়। কিন্তু, সেইখানেও, আধুনিক বাঙালী চিত্রকরদের কাজ অনুপস্থিত।

    বড়ো, উঁচুমানের প্রিন্ট থাকলে মূল ছবিটির স্বাদ, অন্তত দুধের স্বাদ ঘোল দিয়ে মেটানো যায়। দুর্ভাগ্যজনক, সেই সুযোগও অমিল।

    অবশ্য, এও ডিমান্ড সাপ্লাইয়ের গল্প। সাধারণ আটপৌরে মধ্যবিত্ত বাঙালী গ্যালারীমুখী হলে, প্রিন্টের দাবী করলে, গ্যালারীও আগ্রহী হবে, আশা করা যায়। সিমা তো বটেই, আকৃতি আর্ট গ্যালারীতেও প্রিন্ট, এমনকি উন্নত ক্যানভাস প্রিন্টিং-এর পরিকাঠামো রয়েছে। প্রথমে কাজ কিছু হলেও, এখন বন্ধ। চাহিদার অভাবে। যদিও, জিক্লি প্রিন্টিং-এর ব্যবস্থা শহরে নেই।

    আসুন, সবাই ছবি দেখি।

    গ্যালারীতে যাই। তবেই না, ছবি বা প্রিন্ট সুলভ হবে।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.9004512.202 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:৪৪61983
  • বাহ চমৎকার সব আলোচনা হচ্ছে। সবাই সবার ভাণ্ডার উজাড় করছেন।

    তবে @Bishan Basu 'নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে দিতে ইচ্ছে করছে, এমন আলোচনার শুরুটি আমার হাত ধরেই, এই ভেবে।' এই আত্মপ্রসাদ থেকে কিঞ্চিৎ প্রসাদ আমার মত vivacious flamboyant
    মানুষ কিছুটা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে নিচ্ছি। কাল আমি ছবির দামের প্রসঙ্গ তুলতেই না হুড়হুড় করে এত কমেন্ট পড়ল। (pun intended) :-P

    শানু লাহিড়ীর কথা উঠতে মনে হল, আমি একদম ছেলেবেলায় (ক্লাস টু- ফোর) রাজা বসন্ত রায় রোডে 'চিত্রাংশু' নামে যে আঁকার স্কুলে আঁকা শিখতাম, তার সঙ্গে শানু লাহিড়ী ও চিত্রভানু মজুমদার যুক্ত ছিলেন। আমাদের ক্লাস তারা কখনোই নেননি, তবে ওই আঁকার স্কুলে প্রতি শনিবার একটা গল্পের আসর হত। শানু লাহিড়ী সেটা কন্ডাক্ট করতেন। খুব সুন্দর গল্প করতেন। ওইখানেই আমাদের একবার বলেছিলেন যে ওঁকে রঙ আর তুলি দিলে উনি সারা শহর পেন্ট করে দেবেন। ঐ ক্লাসে গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও গল্প বলতে এসেছিলেন।

    চিত্রাংশু স্কুলটা চালাতেন ভবেশ দাশগুপ্ত। এই স্কুল তৈরি করতে সাহায্য করেছিলেন পটল বাবু (যামিনী রায়ের পুত্র অমিয় রায়), মৈত্রেয়ী দেবী, কমলকুমার মজুমদার।

    এখানে যখন প্রিন্টের কথা উঠল তখন বলি 'চিত্রাংশু' যামিনী রায়ের খুব ভাল প্রিন্ট বিক্রি করত। আমার কাছে বেশ কয়েকটা আছে। আমাদের বাড়ি্র দেওয়ালে যে চারটে যামিনী রায় ঝুলছে, সন ওখানকার প্রিন্ট। একটু দূর থেকে দেখলে ওরিজিনাল মনে হয়। সইটিও এত সুন্দর করে করা।

    ভবেশবাবু অনেককাল প্রয়াত। ওরা বইমেলায় স্টল দেয়।

    তবে ছবির বাজার বিশ্রীভাবে নষ্ট করেছে বাজে প্রিন্ট এবং এর জন্যে অনেকটাই কম্পিউটর দায়ী। এখন গড়িয়াহাটে, যাদবপুরেও ওই সব ভয়ানক তার ওপর ফটোশপ করা প্রিন্ট গুলো বিক্রি হয়।

    ছবি বিক্রির কথা উঠল যখন, তখন বলি দিল্লীর IHC র আর্ট গ্যালারিতে এক ছবি বিক্রেতা আমার এক budding painter বন্ধুকে বলেছিল, ছবি বিক্রীর বাজার খুব খারাপ। কলকাতা থেকে কত আর্টিস্ট যোগাযোগ করে, না চাইতে ছবি দিয়ে যায় কিন্তু কোনো বিক্রি নেই। কলকাতা থেকে নাকি একমাত্র ছবি বিক্রী হয় শুভাপ্রসন্ন'র। এটা ২০০৫ র কথা বললাম।
  • Bishan Basu | 7845.15.890123.251 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:৫৯61984
  • অর্জুন অভিষেকবাবু, কৃতিত্বের ভাগ দিতে, এমনকি পুরোটাও দিতে আপত্তি নেই, যদি এমন আলোচনার বলটি গড়ানো জারি রাখেন।

    যামিনী রায়ের ভালো মানের প্রিন্ট রাজ্য সরকারই প্রকাশ করে থাকেন। নন্দন সংলগ্ন স্টলে পাওয়া যায়। দাম খুবই কম। হরেন দাশের উডকাটের অসাধারণ প্রিন্টও সেইখানেই মেলে।

    আর, ২০০৫ সালে হলেও, শুভাপ্রসন্ন বাদে অন্য বাঙালি শিল্পীদের বাজার না থাকার খবরে চমকে উঠলাম। কেননা, পুরোনোদের কথা ছেড়ে দিলেও, লালুপ্রসাদ সাউ বা যোগেন চৌধুরীর ছবি বিক্রির বাজারে খুব ভালো চাহিদা। পরেশ মাইতি তো এই প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যে হট কেক।

    এখন অবশ্য শুভাপ্রসন্নের বাজার সম্পূর্ণ অন্তর্হিত। যোগেনবাবুর কিছু ছবি কোটি ছাড়িয়েছে। লালুবাবুর ছবি, মাপের কারণেও, সেই মাপের অঙ্কে পৌঁছায় নি। পরেশ মাইতি, শক্তি বর্মণ, জয়শ্রী বর্মণও কিন্তু ভালো দামেই বিক্রি হয়।

    যদিও, ছবির বাজারে দাম আর ছবির আর্টিস্টিক ভ্যাল্যু হাত ধরাধরি করে চলে বলে আমি বিশ্বাস করি না।
  • i | 891212.211.450123.25 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:০৬62001
  • একজন ইলাসট্রেটরের নাম না করলেই নয়-সুধীর মৈত্র। একদা রমাপদ চৌধুরী বলেছিলেন যে ওঁর লেখা জনপ্রিয় সুধীর মৈত্রর ইলাস্ট্রেশনের কারণে, ওঁর লেখার কারণে নয়।
  • i | 891212.211.450123.25 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১১:০৮62002
  • আর ছবিকে জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রকাশ কর্মকার আর আর্ট ফেয়ারের কথা একটু বলি। যা পড়েছি।

    প্রকাশ কর্মকারও চেষ্টা করেছিলেন - ফুটপাথে ছবির প্রদর্শনীও করেছেন। হিরণ মিত্রর লেখায় পড়েছি ষাটের দশকের শেষে ময়দানে, ভিক্টোরিয়ার উল্টোদিকে মুক্তমেলা হচ্ছে-এক দুপুরে ফার্পোর সামনে দেখা গেল তাসা বাজাতে বাজাতে একটা দল চলেছে ময়দানের দিকে-সেই দলে প্রকাশ কর্মকার, গলায় গাঁদাফুলের মালা, হাতে ছোটো হাতুড়ি-পিছনে দুজন কাঠের বাক্সে একটা বড়ো ক্যানভাসের ছবি আটকে হেঁটে চলেছে-যিশুর ছবি। হিরণ মিত্র আহত হয়েছিলেন সেই সময়-লিখছেন, ষাটের দশকে তখনও চিত্রকর্ম , অঙ্কন একধরণের ধার্মিক ক্রিয়া বলে মনে করা হত-এই ধর্ম পুজো নয়, 'শিল্প ঈশ্বরকে মান্যতা দেওয়া।' হিরণ মিত্র আরো লিখছেন, সেদিন প্রকাশ কর্মকারের অমন ভঙ্গি অনেককেই আহত করেছিল। লিখছেন,'তখনও বুঝি নি, জনগণের ভাষা, জনগণের রাস্তা, জনগণের উৎসবকে প্রকাশদা কতটা মান্যতা দিতে পেরেছিলেন।'

    [আরম্ভ পত্রিকা, মার্চ, ২০১৪]

    কলকাতা আর্ট ফেয়ারের উদ্যোগ নিয়ে বলেছেন পার্বতী মুখার্জী । বলছেন, একটা সময় ( ষাটের দশকে) লেখক কবিদের সঙ্গে শিল্পীদের ডায়ালগিং শুরু হ'ল- -'শীতের মদিরেক্ষণ ওষ্ঠে লেগে থাকে' নিয়ে পোস্টার করলেন প্রকাশ কর্মকার, 'বিপ্লবী তার সোনা রূপা ভালোবেসেছিল নিয়ে করলেন বিকাশ ভট্টাচার্য, দেখো সখা ভুল করে ভালোবেসো না নিয়ে যোগেন চৌধুরী। ইত্যাদি। তখন ভাবা হল, একটা বড় মেলা করলে কেমন হয়-শিল্পী লেখকদের কমন প্ল্যাটফর্ম-যেখানে ওপেন ইজেল থাকবে-লোকে দেখবে কিভাবে ছবি তৈরি হয়-তো, গৌরকিশোর ঘোষ, রবীন মন্ডল, সন্দীপন, অহিভূষন গেলেন কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র গোবিন্দ দে র কাছে-চার্লি চায়াপলিন স্কোয়ারের কাছে খালি জায়্গায় মাংসের দোকান তুলে মেলার ব্যবস্থা হ'ল। সে মেলায় খুব দামে ছবি বিক্রি করা হল।মেলায় বলা হ'ল, বিয়েতে আর শেষের কবিতা উপহার দেবেন না, তার বদলে একই দামের একটা ছবি বাঁধিয়ে উপহার দিন। মেলায় মূল শ্লোগান ছিল বসার ঘর্থেকে ক্যালেন্ডার নামিয়ে ছবি লাগান। নার্সিংহোমে বার্তা দেওয়া হ'ল-ছবি টাঙাতে চেম্বারে, বা যেখানে উদ্বিগ্ন আত্মীয়স্বজন বসে থাকে, সেইখানে-

    [পার্বতীর কথা; রাজেশ দে; নান্দীমুখ সংসদ;২০০৯]
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.784512.185 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:০০61985
  • @Bishan বাবু, কৃতিত্ব আপনার, তার সঙ্গে এখানে যারা আলোচনায় আগ্রহ সহকারে অংশ নিচ্ছেন, তাদের। আমি ঠাট্টা করছিলাম।

    ভাল প্রিন্ট বিক্রি হয় মুম্বাইয়ের National Gallery of Modern Art কয়েকমাস আগে ব্যাঙ্গালুড়ুতে গেছিলাম, সেখানকার NGMA তেও দেখলাম খুব ভাল প্রিন্ট বিক্রি হয়। বরোদায় Maharaja Fatehsingh Museum এও রবি বর্মার খুব ভাল ছবির প্রিন্ট বিক্রি হয়।

    কলকাতায় 'প্রতিক্ষণ' এবং 'Indian Society Of Oriental Art' এও ভাল প্রিন্ট পাওয়া যায়। রাজ্য সরকারের স্টলটার কথা জানতাম না।

    দিল্লীতে আমি যার কথা বলছি, তিনি একজন আর্ট ডিলার, কাজেই তার কাছে হয়ত অন্যদের খবর ছিল না। উনি নিশ্চয় অত বড় আর্ট ডিলার নন। এসবের অনেকরকম ব্যাপার নয়। শুভাপ্রসন্নের সবচেয়ে বিক্রি সবচেয়ে ভাল শুনে আমার শিল্পী বন্ধুটিও অবাক হয়েছিল।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.784512.185 (*) | ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:০৮61986

  • এম এফ হুসেনকে নিয়ে আরেকটি তথ্য জানতে ইচ্ছে করছে। ২০০৩ এ, হুসেনের ৮৮ তম জন্মদিনে কলকাতায় Galerie 88 তে একটি প্রদর্শনী হয়েছিল। কিন্তু তার আগে হুসেন বাঙালীদের সম্পর্কে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন যার জন্যে কলকাতার শিল্পী মহল তার প্রদর্শনী বয়কট করেছিল।

    আমি তখন কলকাতায় থাকতাম না কিন্তু আনন্দবাজার কিনতাম। মনে আছে ছবি বেরিয়েছিল জনশূন্য গ্যালারিতে হুসেন গালে হাত দিয়ে বসে আছেন।
  • একক | 3445.224.9002312.45 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:০২62005
  • গ্রিক দের পোড়ামাটির ঘোড়া তেও কিন্তু ওরকম বেঁটে বেঁটে পা আর লম্বাটে গলা :) ভাস্করের বউ এর সেন্টার অফ গ্রাভিটি না কাঠামোহীন মাটির মূর্তির সেন্টার অফ গ্রাভিটি কার তাগিদে বেঁটে পা , তা বোধ হয় আরেকটু অনুসন্ধানের অবকাশ রাখে ।

    তবে আলোচনাকে একটা প্রডাক্টিভ খাতে বইয়ে দেবার জন্যে ছোটাইকে ধন্যবাদ। কতটা নিজের দেখা -কতটা প্রথাগত নান্দনিকতার শিক্ষা , এটা জরুরি তর্ক ।
  • সমুদ্র সেনগুপ্ত | 342323.233.2334.192 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১০62024
  • এই একটা বিষয়ে আমার আক্ষেপ আছে। মফস্বল শহরে বড় হয়েছি। সেখানে কোনও আর্ট গ্যালারি তখন ছিল না। স্কুলের আঁকার টিচার এর কাছে বুঝেছিলাম নিঁখুত অনুকরণ টাই ছবি আঁকার শেষ কথা। কলকাতায় পড়তে এসে নাটক দেখলাম, সিনেমা দেখলাম, গান শুনলাম। নন্দন চত্বরে ঘোরাঘুরি করলাম । কিন্তু ছবির প্রদর্শনী এর ধারে কাছে নেই। ছবি দেখার চোখ টাই তৈরি হলো না।

    নারায়ণ স্যান্যাল এর "আবার যদি ইচ্ছে কর" পড়ে খুব ভালো লেগেছিল। ভ্যান গগ ইত্যাদি। জাদুঘরের সামনের ফুটপাতে বিখ্যাত সব বিদেশি আঁকিয়েদের ছবির চমৎকার বই পাওয়া যেত। কয়েকটা কিনেওছিলাম। কনস্টেবল, টার্নার। ব্যাস ওই পর্যন্ত। এই ছবি জিনিসটির প্রকৃত রস আস্বাদন এ জীবনে আর হল না।

    অবসর জীবনে বসু স্যার কে ধরবো। দে ভাই। দাদা কে একটু শিখিয়ে। ছোটভাই দাদার কথা ফেলবে না । টাট্টু ঘোড়া এর পিঠে চেপে ফিদা হয়ে যাবো।
  • i | 891212.211.450123.25 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৯62006
  • ভাস্করের প্রেমিকা ব্যাপারটা পার্বতীবাবুর কল্পনা। সম্ভবতঃ ।
    আসলে বাঁকুড়ার ঘোড়া নিয়ে পার্বতীবাবু উচ্ছ্বসিত ছিলেন। এখানে যামিনী রায়ের কথা এসেছে তাই লিখেই দি, পার্বতীবাবু যামিনী রায়ের ছবিতে কোনো বিস্ময় নেই বলেছেন। তখন আবারও ঐ ঘোড়া প্রসঙ্গ আনলেন। বলছেন, 'বাস্তবে ঐ ঘোড়ার কোনো প্রতিফলন নেই- ঘোড়ার গতিবেগ, পাওয়ার-এর মধ্যে নেই। হাঁটুটা স্টিল করা, বেন্ড করতে পারে না। দু নম্বর হচ্ছে এর বাটক অত্যন্ত ভারি এবং ইলঙ্গেটেড নেক। ... ঘোড়ার সমস্ত গুণ ধ্বংস করে বাঁকুড়ার শিল্পী ঘোড়া তৈরি করল, যেটা বাংলার ঘরে ঘরে আদৃত হয়ে গেল। সবচেয়ে বড় কথা তার কোনো আইডেন্টিটি ক্রাইসিস -ই হল না, ঘোড়া বলতে লোকের কোনো অসুবিধাই হল না। কী বিস্ময়কর না! এই বিস্ময় কিন্তু যামিনীবাবুর ছিল না।'

    পার্বতীবাবুকে আরো কোট করব পরে কোনদিন। ওঁর কথার সঙ্গে আমার চিন্তার অনেক মিল পাই। সব টা যে আঁকা ইত্যাদি নিয়ে-তাও নয়।
  • একক | 3445.224.9002312.45 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১৮62007
  • হ্যা , প্লীজ সময় সুযোগ মত পার্বতিবাবুর চিন্তা ভাবনা কোট করুন । বেশ ইন্টারেস্টিং আইডিয়া ।

    প্রসঙ্গত , শুধু বেঁটে পা , বেঁটে পা ও লম্বা গলার কিছু উদাহরণ থাকলো , তুলনামূলক আলোচনার তাগিদে ।

    মহেঞ্জদর :



    সাইপ্রাস



    গ্রিস



    সাইপ্রাস
  • একক | 3445.224.9002312.45 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৬62008
  • মানে খুব সোজা কোথায় তিনটে জিনিস কে এক বিন্দুতে এনে বুঝতে চাইছি ।

    ১ ) আর্ট অবজেক্ট এর বিবর্তন : এক্ষেত্রে ঘোড়া । অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন জাতের ঘোড়া পৃথিবী জুড়ে । মূর্তির যে রূপ দেখে আমরা রিভার্স ইঞ্জিনিয়ার করছি , নট নেসেসারিলি শিল্পী সেই সময়ে সেই ঘোড়াই দেখার সুযোগ পেয়েছেন । বেঁটে পায়ের পনি দেখার সুযোগ ছিল কী ?

    ২ ) আর্ট মেটেরিয়াল তথা টেকনোলজির বিবর্তন : এর মধ্যে ওই কাঠামো -পোড়া মাটি -সেন্টার অফ গ্রাভিটি মেন্টেন করা এইসব আসবে

    ৩ ) শিল্পীর নিজের একটা তাগিদ , অন্য চোখে দেখার । এবং সেটাকে ফর্ম এ ইনক্লুড করে দেওয়ার । এটা আবার সম্ভবত সমাজ ও ইতিহাস বিযুক্ত নয় , যদি দেখা যায় দলে দলে শিল্পী একই রাস্তায় হাঁটছেন । একজন হাঁসজারু ভাবলেন সে হলে আলাদা কথা ।

    এই তিনটে জিনিস কোথায় মেলে , তা বোঝার ইচ্ছে আর কী :)
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.82 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২১62009
  • আলোচনা যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাইতে আমার আর মন্তব্য করার এলেম নেই।

    তবে, আমি আর্ট এপ্রিসিয়েশনের দীক্ষা বলতে, প্রথাগত আর্ট স্কুলের শিক্ষার কথা বলতে চাইনি। বাগীশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলীতে অবনীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন, দেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় শিল্পবোধ চিরকালই ছিলো, ঔপনিবেশিক শাসনে তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।

    আমাদের অতীতের নগর বা আর্কিটেকচার সুষমামন্ডিত। কিন্তু, একই কথা বিগত কয়েক দশকের দেশজ আর্কিটেকচার নিয়ে বলা যায় কি?? শিল্পবোধের অভাব এক্ষেত্রে একটা সমস্যা।

    বাঁকুড়ার ঘোড়া প্রসঙ্গে, আমার মতামত। আমার জন্ম বিষ্ণুপুরে। জীবনের একটা বড়ো সময় কেটেছে সেইখানেই। শহুরে মানুষের টু নাইটস থ্রি ডেজ প্যাকেজপ্রসূত শিল্পবোধ দেখে ঈষৎ ক্লান্ত। (একই কথা, হয়তো, শান্তিনিকেতনের খোয়াইয়ের হাটের আকস্মিক বাউলপ্রেমী কলকাত্তাইদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য)!

    পার্বতীবাবুর মন্তব্য, ঘোড়া বানানোর প্রথম প্রজন্মের শিল্পীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে, কিন্তু তারপর যাঁরা বানিয়ে চলেছেন, তাঁরা তো নিছকই কপি করে চলেছেন। শিল্পী আর কারিগর গুলিয়ে ফেললে চলবে??

    শিল্প-ইতিহাসে চারুশিল্প এবং লোকশিল্পের ধারা নিজস্ব সৌন্দর্য এবং স্বকীয়তা নিয়ে চলেছে। যেমন চলেছে, লোকগান আর রাগসঙ্গীত। একের উদাহরণ টেনে অন্যটির বিচার অনুচিত বলেই মনে করি। হ্যাঁ, তারপরেও, কিছু অসামান্য প্রতিভার মানুষ হয়তো অন্যধারার ফুল মিলিয়ে নিজের নৈবেদ্যকে অপরূপ করবেন। তবু, দুই ধারার ব্যবধান থেকেই যায়।

    যামিনী রায়ের ছবির মধ্যে যিনি বিস্ময় পান না, তাঁর প্রতি, অসীম শ্রদ্ধার পরেও, আমার অকুন্ঠ সহানুভূতি রইলো। একেবারে পশ্চিমী ধারায় সার্থক পোর্ট্রেট, সিটিস্কেপ থেকে লোকজ আঙ্গিকের মিলনে নিজস্ব চিত্রভাষার জন্ম দেওয়া, আর শেষে রঙের বর্জনে ড্রয়িংভিত্তিক কাজ, একজীবনে তিনধারায় সার্থক কাজ করা শিল্পীকে, এক কথায় উড়িয়ে দিলে চলবে?
  • i | 891212.211.450123.25 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৬62010
  • আলোচনা হয়ত সামান্য কক্ষপথ বিচ্যুত হোলো, সেজন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

    পার্বতীবাবু যামিনী রায়ের সান্ঘাতিক সমালোচনা করেছিলেন। অবশ্যই এটি পার্বতীবাবুর মত। উনি অবনীন্দ্রনাথেরও প্রচন্ড সমালোচনা করেছেন।
    যে দৃষ্টিকোণ থেকে যামিনী রায়ের কাজের সমালোচনা করেছেন উনি সেগুলি আমার খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছিল আর ঐ পার্বতীর কথা বইটি চট করে পাওয়া যায় না , তাই সংক্ষেপে পার্বতীবাবুর বক্তব্য লিখছি। উনি ঠিক কি ভুল বলার আমি কেউ নই।

    পার্বতীবাবু যামিনী রায়ের 'অ্যাকাডেমিক স্ট্রং হাত' আর সার্থক শিল্পী হওয়ার সমস্ত প্রস্তুতি মুক্তকন্ঠে স্বীকার করেছেন। সমালোচনার কারণ মূলতঃ
    ১। যামিনীবাবুকে রূপ খুঁজতে হয়েছিল উনি আইডেন্টিটি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। সেই রূপ উনি পটের মধ্যে পেলেন। পটের মিনিমালিজম নিজের কাজে আনলেন। কিন্তু পটের মূল আধুনিকতা যেখানে তা হল পট দর্শককে স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে। যামিনীবাবু এই বিস্ময়্টুকু আনতে পারেন নি। 'নয়ননির্ভর। সেরিব্রাল নয়।'
    ২। ছবির কোনো ভিস্যুআল ডিস্ট্যান্স নেই। সব কোলে নিয়ে আদর করে দেখতে হবে।
    ৩।অ্যান্টিন্যারেটিভনেস, আনপ্রেডিকটিবিলিটি, অবচেতনতা, ভূতগ্রস্ত ইমেজ-ছিল না। 'শুধু স্কিল আর অ্যাকাডেমিক পদ্ধতিতে বড় আঁকিয়ে হলেই ছবি হয় না । যামিনীবাবুর ছবি যদি তাঁর ছেলেই এঁকে দিতে পারেন তবে আর যামিনীবাবুর কি দাম রইল?'
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.82 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০৮62011
  • না, না। আমি কিন্তু, একেবারেই, আলোচনা কক্ষচ্যুত হচ্ছে, এমন বলিনি।

    বরং, এমন অসামান্য আর্ট ডিসকাশনের সুযোগ সচরাচর হয়ে ওঠে না। বাঁকুড়ার ঘোড়া প্রসঙ্গে মহেঞ্জোদারো বা সাইপ্রাস নিয়ে যিনি ছবি পোস্ট করেন, বিষয়ের উপর তাঁর দখল প্রশ্নাতীত এবং তাঁর কমেন্ট থেকে অবশ্যই শেখার রয়েছে।

    আমি বলতে চেয়েছিলাম, বিষয়টার উপর এতো গভীর পঠন বা অনুসন্ধান আমার নেই।

    আড্ডা তো এক সূত্র থেকে শুরু হয়ে অনেক দূরে চলে যায়। আর, প্রতিটি মোড়েই থাকে বিস্ময়। সেই গঠনমূলক আড্ডার চল আর দেখিনা তেমনভাবে। গুরুচন্ডা৯-তে আমি নতুন। তাই, এমন অনবদ্য আড্ডায় সত্যিই চমৎকৃত।

    শেষের কথাটি প্রসঙ্গে বলি। শিল্পীবন্ধুদের মুখে শোনা কথা। ইউরোপের মিউজিয়ামের বাইরে অনেক শিল্পী বসে মাস্টারপিস কপি করেন। তাঁদের স্কিল, বিস্ময়কর। মূল মোনালিসা বা রেমব্রাঁ, নাকি তাঁদের কপি, কোনটা বেশী সুন্দর তাই নিয়ে ধন্দ জাগে। কিন্তু, তাঁরা কপিয়ার, এর বেশী কিছু নন।

    যামিনীবাবুর ছবি কপি করেছেন পটলবাবু, বেশ কথা। বিষ্ণু দের লেখায় পড়েছি, পটলবাবু নাকি বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কপির চক্করে তিনি প্রতিভার অপচয় করে বসলেন। আজও যামিনী রায় নিয়েই আলোচনা হচ্ছে, অমিয় রায় সেইখানে কোথায়??

    ওয়াল্টার বেঞ্জামিন যেমন বলেছিলেন, মেকানিকাল রিপ্রোডাকশনের যুগে, আর্ট মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ এসেছে। কিন্তু, ইতিহাস-স্পেস-টাইমে মূল আর্টের যে অবস্থান, সেই বিশেষ অবস্থানটি একক এবং অনন্য।

    সেইজন্যেই, যামিনীবাবুর হাতের কাজগুলি আর্ট, বাকিগুলো যোগ্য কপি, এইটুকুই।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন