এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মকবুল ফিদা হুসেন - জন্মদিনের শ্রদ্ধার্ঘ্য

    Bishan Basu লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১০৮৭৬ বার পঠিত
  • বিনোদবিহারী সখেদে বলেছিলেন, “শিল্পশিক্ষার প্রয়োজন সম্বন্ধে শিক্ষাব্রতীরা আজও উদাসীন। তাঁরা বোধহয় এই শিক্ষাকে সৌখিন শিক্ষারই অন্তর্ভুক্ত করে রেখেছেন। শিল্পবোধ-বর্জিত শিক্ষা দ্বারা কি সমাজের পূর্ণ বিকাশ হতে পারে?” (জনশিক্ষা ও শিল্প)

    কয়েক দশক পরেও, পরিস্থিতি বদলায় নি। হয়তো, কিছুটা অধঃপতনই হয়েছে।

    শিল্প বা শিল্পীর প্রতি সাধারণ মানুষের অবজ্ঞা বা অনীহা চোখে পড়ার মতো। তথাকথিত শিক্ষিত মানুষও, যাঁরা এমনকি বিভিন্ন তাত্ত্বিক বিষয়ের চর্চা করে থাকেন, তাঁরাও রীতিমতো গর্বের সাথে বলে থাকেন, মডার্ন আর্ট নিয়ে আমি ইন্টারেস্টেড নই। সত্যি বলতে কি, ছবিটবি আমি তেমন বুঝি না, এই কথাটা বেশ আঁতলেমি করে বলা যায়। আর এর থেকেই বোঝা যায়, চিত্রশিল্প বিষয়ে আমাদের অবজ্ঞার শিকড় ঠিক কতোখানি গভীরে।

    অথচ, শিল্পশিক্ষার প্রয়োজন শুধুমাত্র শিল্পী তৈরী করার জন্যে নয়। শিল্পরস অনুভবের জন্যেও এই শিক্ষা সমান জরুরী। আমাদের প্রাত্যহিকতার মাঝেই যে সুন্দর লুকিয়ে থাকতে পারে, তার অনুধাবনের জন্যে কিছুটা আর্ট এপ্রিসিয়েশনের দীক্ষা থাকা জরুরী। নান্দনিকতার বোধ ছাড়া মানুষ কি সম্পূর্ণ হতে পারে!!

    সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে, কোনো জায়গায় কোনো বন্ধু বেড়াতে গেলে, তার কয়েকশো ছবি আমাদের দেখা হয়ে যায়, বা বলা ভালো, দেখে ফেলতেই হয়। সেই সুন্দরের অভিঘাত কয়েক সেকেন্ড মাত্র। আমাদের মেঘ ঢেকে যায় লক্ষ জিবি ডিজিটাল জাঙ্কে। যিনি ছবি দেখলেন, আর যিনি বেড়াতে গিয়ে ছবি তুলে আনলেন, দুজনের কারোরই মনের মধ্যে, সেই সুন্দরের দীর্ঘমেয়াদী কোনো প্রভাব রইলো কি?

    তা-ই যদি থাকতো, তাহলে আমাদের পারিপার্শ্বিক কি এমন অবাধে ছেয়ে যেতে পারতো কুৎসিত অসুন্দরে?? বেমানান অট্টালিকা গজিয়ে উঠতে পারতো কি হেরিটেজ বিল্ডিং-এর পাশে? শতাব্দীপ্রাচীন সৌধের গায়ে লাগানো যেতো মন্ত্রীর পছন্দের রঙের পোঁচ?

    শিল্পকে ভালোবাসাও তো এক আজন্ম সাধনা। অবনীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, “দুই ধরণের সাধনা থেকে এক দল হল আর্টিস্ট অন্য দল হল রসিক। আর্টিস্ট হবার তপস্যা এবং আর্ট বিষয়ে সমঝদার হওয়ার সাধনা - দু দিকেই রস উপভোগের সঙ্গে অনেকখানি কর্মভোগ জড়ানো রইলো তবে হল মানুষ পাকা আর্টিস্ট বা পাকা সমঝদার। এই দুই দল, আর্টিস্ট ও সমঝদার - এরা দুজনেই ক্রিয়া করছে বিভিন্ন রকম কিন্তু ফল পেতে চলেছে এক। রস পাওয়া নিয়ে কথা - খেলা করে রস, খেলা দেখে রস।” (রস ও রচনার ধারা - বাগীশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী)

    অবন ঠাকুর কথিত সাধনা যদি কিঞ্চিৎ জটিল হয়, নিদেনপক্ষে নিয়মিত শিল্পকলা দেখার অভ্যেসটুকু থাকলেও, অন্তর্নিহিত নান্দনিকতার বোধখানা জাগ্রত হয়, আশেপাশের জগৎটা দেখার নজর বদলে যায়, তার লাভও কিছু কম নয়।

    পশ্চিমী দেশে শৈশব-কৈশোর থেকেই বিভিন্ন আর্ট গ্যালারী দেখাতে নিয়ে যাওয়ার চল রয়েছে। সে দেশের ছিমছাম মনোমুগ্ধকর শহর রাস্তাঘাট ইত্যাদির পেছনে, আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি, এই অভ্যেসের ভূমিকাও কম নয়।

    দুর্ভাগ্যজনক, আমাদের দেশে, সুপ্রাচীন শিল্প-ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও, আমরা শিল্প বিষয়ে চূড়ান্ত নিস্পৃহ। আমরা একগাদা পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে তৃতীয় শ্রেণীর সিনেমা দেখতে মাল্টিপ্লেক্স যাই, আরো একগাদা পয়সা খরচ করে পপকর্ন কিনি, তবু বছরভর পসরা সাজিয়ে বসে থাকা আর্ট গ্যালারী যাওয়ার কথা ভাবি না। কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে ইন্টিরিয়ার ডিজাইনার দিয়ে ড্রয়িং রুম সাজাই, তবু সামান্য কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে উঠতি প্রতিভাবান শিল্পীর ছবি সংগ্রহ করে সেই দেওয়াল আলো করি না।

    যাক গে, এতো গৌরচন্দ্রিকা যে প্রসঙ্গে, সেই কথায় আসা যাক।

    আজ হুসেন, অর্থাৎ মকবুল ফিদা হুসেনের জন্মদিন।

    স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষের সবচেয়ে জনপ্রিয় চিত্রকর, খুব সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণও বটে, তাঁর জন্মদিনটির উল্লেখমাত্র নেই কোনো মিডিয়ায়।

    ১৯১৫ সালে, আজকের দিনটিতে জন্ম হয়েছিলো তাঁর। মহারাষ্ট্রের পান্ধারপুরে, যদিও শিকড় গুজরাটেই। শৈশবেই হারান মা-কে। মাদ্রাসায় ক্যালিগ্রাফি শেখার সময় আগ্রহ জাগে চিত্রশিল্পে। বাড়ি থেকে পালিয়ে মুম্বাই। তাঁর আঁকা ক্যানভাসের চেয়ে কিছু কম বৈচিত্র‍্যপূর্ণ নয় তাঁর জীবন।

    শোনা যায়, বাড়ি থেকে পালিয়ে মুম্বাইয়ের ফুটপাথে যখন থাকতেন তিনি, তার উল্টোদিকে একটা বড়ো বিলবোর্ড আঁকা হচ্ছিলো। বিলবোর্ড আঁকিয়েরা দুপুরের খাবার খেতে যান রঙ-তুলি ফেলে। ফিরে এসে দেখেন, তাঁদের কাজ শেষ করে রেখেছেন, ফুটপাথে থাকা একটি ছেলে। হ্যাঁ, কোনো গ্রিডের ব্যবহার ছাড়াই, বিলবোর্ড আঁকা শেষ।

    জানি না, এই ঘটনা সত্যি, না কি নিছকই মিথ। হুসেন মানুষটাই তো মিথে ঢাকা। লার্জার দ্যান লাইফ। জীবনের প্রতি মুহূর্তে, যিনি চমকে দেবেন আমাদের।

    শৈশবে মা-হারানো যিনি আজীবন খুঁজে যাবেন নিজের মাকে। অন্য নারীর মধ্যে। আর, যেহেতু মায়ের মুখ তাঁর মনে পড়ে না, তাই তাঁর ক্যানভাসের নারীদের মুখাবয়ব, ফেসিয়াল ফিচার্স রয়ে যাবে অনির্দিষ্ট অস্পষ্ট, আমরণ।

    রাজ্যসভার সেলিব্রিটি সাংসদ হিসেবে, যিনি মৌন থাকলেও (সব সেলিব্রিটি সাংসদই তো মুখে কুলুপ এঁটেই থাকেন), নিজের অভিজ্ঞতা ছবির ভাষায় সাজিয়ে তার নাম দেবেন সংসদ উপনিষদ।

    বলিউডি ফিল্মের বিজ্ঞাপন আর বিলবোর্ড এঁকেই তাঁর প্রথম জীবন কেটেছিলো। আর, তার প্রভাব স্পষ্ট হুসেনের বাকি জীবনের ছবিতে। বৃহদায়তন ক্যানভাসে কাজ, দ্রুত লম্বা তুলির আঁচড়, কয়েকটি তুলির টানেই ছবিকে স্পষ্ট ভাষা দেওয়া। হ্যাঁ, কোনো এক জায়গায়, হুসেন মিনিমালিস্ট, অসম্ভব নিজস্ব রঙ-আঙ্গিকের ব্যবহারের পরেও।

    দুশো বছরের ঔপনিবেশিক শাসনের অনিবার্য অঙ্গ, নিজস্ব অতীত ঐতিহ্য বিষয়ে শ্রদ্ধা হারানো, বা হারাতে বাধ্য হওয়া৷ ভারতবর্ষও ব্যতিক্রম নয়। দেশজোড়া স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম অংশ হিসেবেই শুরু হয় আমাদের অতীত শিল্প-ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারের শিল্প-আন্দোলনও। বেঙ্গল স্কুল অফ আর্টের এই শিল্প রেনেসাঁ-র পুরোধা ছিলেন অবনীন্দ্রনাথ। তাঁর ছায়া রয়ে যায় কয়েক দশক জুড়ে।

    স্বাধীনতা প্রাপ্তির সাথে, দেশভাগ দাঙ্গা অনিশ্চয়তার মুহূর্তে, প্রয়োজন হয় নতুন শিল্পভাষার। আর, তাছাড়া, বেঙ্গল স্কুলের প্রাচ্য আঁকড়ে অতীতচারিতার সময় তখন বিগতপ্রায়। পশ্চিমে, ইম্প্রেসানিজম কিউবিজম মডার্নিজম সুররিয়ালিজম নিত্যনতুন পরীক্ষানিরীক্ষার স্রোত আছড়ে পড়ে এই দেশেও। প্রসঙ্গত, উল্লেখ করি, ভারতীয় ছবিতে আধুনিকতা আনার একটা বড়ো কৃতিত্ব রবীন্দ্রনাথের। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, তিনি তেমন করে আধুনিক এক শিল্প-আন্দোলনের জন্ম দিতে পারেন নি। হয়তো একেবারে শেষ বয়সে ছবি আঁকা শুরু করেছিলেন, সেই জন্যেই, শিল্পের অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায়, চিত্রশিল্পে রবীন্দ্রপ্রভাব বৃহত্তর ক্ষেত্রে অনুপস্থিত।

    ফ্রান্সিস নিউটন সুজা আর মকবুল ফিদা হুসেনের নেতৃত্বে সৃষ্টি হয় নতুন এক যুগের। তৈরি হয়, বোম্বে প্রোগ্রেসিভ আর্ট গ্রুপ। পরবর্তীকালে যাঁরা এই গ্রুপে যোগ দেন, তাঁরা সকলেই আধুনিক ভারতীয় চিত্রকলার কিংবদন্তী। তায়েব মেহতা, আকবর পদমসি, রামকুমার, সৈয়দ রাজা, কৃষেণ খান্না সবারই উত্থান এই প্রোগ্রেসিভ আর্ট গ্রুপ থেকেই। এঁরা প্রত্যেকেই স্বক্ষেত্রে স্বরাট, এবং ভারতীয় ছবির আন্তর্জাতিক বাজারের, অন্তত আর্থিক অঙ্কের হিসেবে, অনেকটাই এঁদের সুবাদে।

    আশ্চর্য এইটাই, যে, একই আর্ট গ্রুপের অন্তর্গত থাকলেও, এঁরা প্রত্যেকেই নিজস্বতা রাখলেন অটুট। এঁদের মধ্যেও, হুসেন অনন্য, কেননা পাশ্চাত্য চিত্রাঙ্কন রীতির সাথে দেশজ লোকশিল্পের আঙ্গিক বা দেশীয় কন্টেন্ট এমন করে মেলাতে সফল হওয়া, প্রায় নজিরবিহীন।

    বিনোদবিহারী বলেছিলেন,
    “শিল্প-সৃষ্টির মোটামুটি তিনটি পথ -
    ১. সমাজের ব্যাপক তাৎপর্য সম্বন্ধে চেতনা।
    ২. সমকালীন অবস্থা-ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত শিল্পের আঙ্গিক।
    ৩. ধ্যান-ধারণার পথে স্বতঃস্ফূর্ত জ্ঞানের সাহায্যে শিল্পসৃষ্টি।
    এই তিনটি আদর্শ একে অন্যের পরিপূরক বললে ভুল হবে না।” (শিল্প-জিজ্ঞাসা)

    এই তিনটি পথেই সিদ্ধিলাভ করার প্রায় অনন্য নজির হুসেনের। আর, তার সাথে, ছবি আঁকার সবকটি মাধ্যমেই তাঁর অনায়াস, অলৌকিক দক্ষতা।

    যাক সে কথা, হুসেনের জীবন বা তাঁর চিত্রকলা নিয়ে বিশদ আলোচনা এই শ্রদ্ধার্ঘ্যের উদ্দেশ্য নয়। সেই জ্ঞান বা পাণ্ডিত্যও আমার নেই।

    শিল্পীবন্ধু বা গ্যালারির সাথে যুক্ত মানুষ যাঁরা, তাঁদের কাছ থেকে কিছু গল্প শুনেছি। খ্যাতির শীর্ষে উঠেও, খালি পায়ে (তাঁর অন্যতম বিশেষত্ব) চাঁদনি চকের রাস্তায় হেঁটে সাবির হোটেলে চায়ে ডুবিয়ে পরোটা খাওয়ার গল্প। কিম্বা, মেট্রো রেলের সুবাদে গর্তে ভরা কলকাতায়, বহুতল বিল্ডিং-এর উঁচু তলায় কর্পোরেট বড়ো কর্তার পার্টি থেকে মুখ্য আকর্ষণ হুসেনের নিখোঁজ হয়ে, কাদায় ভরা খন্দ পার হয়ে মজুরদের ঝুপড়িতে মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ার গল্প। মিতবাক, মৃদুহাস্যময় মানুষটি, সাধারণ মানুষের সংস্পর্শচ্যুত হন নি কখনো। নতুন আঁকিয়ের প্রদর্শনীতে অনেকসময় পৌঁছে যেতেন, অপ্রত্যাশিতভাবেই। প্রশংসায়-উৎসাহে ভরিয়ে দিতেন পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের।

    বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিবাদে এক্সিবিশন করতে বলা হলে, আটচল্লিশ ঘন্টার নোটিশে, রাত জেগে, নাওয়া খাওয়া ছেড়ে, গ্যালারি ভরিয়ে তোলেন নতুন চিত্রকর্মে।

    আবার, দরাজ হৃদয় মানুষটি, স্রেফ ভালোবেসেই, গ্যালারির মালিককে দিয়ে যান তাঁর একগুচ্ছ অনবদ্য ড্রয়িং।

    দেশকে ভালোবাসতেন। খুব খুউউব গভীর আর নিবিড় সেই ভালোবাসা। ষাটের দশক থেকেই, পশ্চিমী উন্নত দেশ থেকে এসেছে নাগরিকত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ। নিলে, হয়তো, খ্যাতি ছড়াতে পারতো আরো বেশী দূর পর্যন্ত। সেই সত্তর দশকের শুরুতেই তো পিকাসোর সাথে যৌথ এক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তিনি।

    না, তিনি দেশ ছেড়ে যান নি।

    তিনি জানতেন, দেশ আর দেশের মানুষের মধ্যেই তাঁর শিকড়৷ সেই মাটির রসসিঞ্চন ব্যতিরেকে, তাঁর ছবি অসম্পূর্ণ, প্রাণহীন। দেশের সংস্কৃতি, অতীত ঐতিহ্যকে তিনি প্রকৃত অর্থেই আত্মস্থ করতে পেরেছিলেন। মিথ-পুরাণ-ইতিহাস সবকিছু থেকেই তিনি পেতেন তাঁর ছবির রসদ।

    দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া, বা তাঁকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা, ধর্মান্ধ অসহিষ্ণুতার এক অনন্য নজির। এই লজ্জা আমাদের।

    প্রবাসের নিঃসঙ্গতায়, মৃত্যুর আগের সপ্তাহেও, তিনি দেশে ফিরতে চেয়েছিলেন। একটি বিকেল বা সন্ধ্যের জন্যে হলেও, নিঃশ্বাস নিতে চেয়েছিলেন ভারতবর্ষের বাতাসে।

    তাঁর স্বপ্নকল্পনার সেই ভারতবর্ষ তখন কী ভেবেছিলো?

    আজ, মকবুল ফিদা হুসেনের জন্মদিন।

    আসুন, তাঁর আঁকা ছবি দেখি।

    আসুন, ছবি দেখার অভ্যেস তৈরী করি। নতুন ছবি-আঁকিয়ের দিকে বাড়িয়ে দিই উৎসাহের হাত।

    এক অসহিষ্ণু অস্থির সময়ে দাঁড়িয়ে, আসুন, হুসেনকে, মনে রাখি।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ১০৮৭৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dd | 90045.207.3456.98 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:১২62025
  • আমার মুষকিল হয়েছে যে সবই ভুলে যাই বা তার থেকেও খারাপ ,একটা false memory হয়ে যায়, ফলে ভুল ভাল রেফারেন্স দিয়ে দেই। তাই আর কোনো বই পত্তরের নাম কোরবো না।

    যামিনী রায়কে নিয়ে তর্ক খুবই প্রাচীন। অনেকটা কাঁঠালের মতন - জনতা পরিষ্কার দুই ক্যাম্পে বিভক্ত।

    পটশিল্পীরা - সে কালিঘাট তো বটেই,যাদুপট,যমপট - সবেতেই শিল্পীরা কিন্তু থেমে থাকেন নি। তাদের বিষয় মানে বাংলায় যাকে content বলে তাতে নব্য বাবু বিবি,এলোকেশী হত্যা , মেছো বেড়াল, সাহেব সুবো - সবই এসেছে। সদ্য বাজারে আসা তেল রং দিয়েও এঁকেছেন কয়েকজন।

    কিন্তু যামিনী বাবু,সেই নিতম্বিনী সুন্দরী, মা ও ছেলে, গরু ও বাছুর - এই কয়েকটা সীমিত বিষয়ের বাইরে আর যান নি। (এটা শোনা কথা) তিনি একট স্টেটমেন্ট দিতে চাইছিলেন। পটুয়াদের মতন প্রজন্ম ধরে একই ছবি বারবার এঁকে যাওয়ার ঐতিহ্য। তাই তার ছেলে এঁকে দিলে তাতে নিজের স্বাক্ষর দিতে ভ্রুক্ষেপ করতেন না - কেনো না পোটোরা বংশ পরম্পরায় সেই মতনই করতেন।

    তা হবে। ইওরোপেও তো ঐ রকমের "আন্দোলন" হতো। সেই সময়ের সেই গ্রুপের শিল্পীরা একই থিওরী মেনে (ইম্প্রেসনিস্ট, পয়েন্টিলিজম, এক্ষপ্রেসনিস্ট ইঃ ইঃ) ছবি আঁকতেন। জ্যাকসেন পোলাক বুক ফুলিয়ে ক্যানভাসে হাতও দিতেন না। তার অ্যাসিস্টেন্টরা বালতি ভরে রং ছুঁড়ে দিতো, কখনো তার উপর মটর সাইকেল চালিতে দিতো। উনি খালি নির্দেশ দিতেন কোনখানে ক্যান্ভাস শেষ হবে - ব্যাস।
  • i | 891212.211.450123.25 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:১৫62012
  • বাঁকুড়ার ঘোড়া প্রসঙ্গে মহেঞ্জোদারো বা সাইপ্রাস নিয়ে যিনি ছবি পোস্ট করেন তিনি আমাদের একক। তাঁহার দিকে চাহিয়া আমাদেরও যারা এত বছর এখানে আড্ডা দি-তাদেরও বিস্ময়ের সীমা নাই।

    আপনি আরো লিখুন।
    আমারও লিখব যে যার মত।
  • একক | 3445.224.9002312.45 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:২৩62013
  • ছোটাই যে পয়েন্টগুলো লিখলেন লাস্ট এর পোস্ট এ সেগুলো কিন্তু বেশ ভাবনার খোরাক যোগাচ্ছে । আমি পার্বতিবাবুর লেখা পড়িনি , এই প্রথম জানার সৌভাগ্য হলো । পয়েন্টগুলো খানিকটা ইউরোপিও ছবি দেখার চোখ থেকে বলা হলেও , বেশ গুরুত্বপূর্ণ । এই নিয়ে আপনারা প্লীজ ইলাবোরেট করুন ।

    আমার সামান্য বুদ্ধিতে যেটুকু মনে হলো যে , পার্বতী যামিনিবাবুর ছবির মধ্যে যুগসন্ধিক্ষণের কন্ট্রিবিউষণ খুঁজছিলেন । যেটা পাননি বলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন । বাংলার পটচিত্র কোনদিন ই গুহাচিত্র বা ধরুন জাপানীজ স্ক্রোল আর্ট এর গোত্রের জিনিস ছিল না । পট ছিল সত্যি আদর করে কোলে নিয়ে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকার বস্তু । যামিনী সেই আদরের ধন কে ক্যানভাসে তুললেন ,সেই অবধি ঠিক আছে ,কিন্তু নিজের কী যোগ করলেন ? যুগসন্ধিক্ষণের উন্মাদনা -উদ্দেশ্যহীনতা কিছুই সেখানে প্রভাব ফেলল কী ?

    মানে ধরুন .........জাপানীজ স্ক্রোল , আপনি এর প্রভাব দেখতে পাবেন ওসামু তেজুকার স্কেচে । গোটা জাপানের ছবি দেখলে ওই ধারাটা ফল্গুর মত বয়ে চলেছে ওদের মডার্ন আর্ট এর মধ্যেও । অথচ আমাদের পটশিল্প ? উঁহু , আবার যামিনী সরে যেতেই আমরা ইওরোপের হাত ধরলুম , কারন পট আমাদের যুগ কে ধরতে সমর্থ হলো না । তো এই জায়গায় হয়ত , যামিনী একটা বিশাল ফ্যাক্টর হতে পারতেন যদি শিল্পী হিসেবে আরো পরীক্ষানীরিক্ষা করতেন , রিস্ক নিতেন । হয়ত । এগুলো সবই ,হয় তো ।

    আমার এরকম মনে হলো কথা গুলো পরে । ক্ষোভ একেবারে অসঙ্গত নয় । তবে এসব নিয়ে গুছিয়ে তুলনামূলক লিখতে গেলে অনেক পড়াশোনা দরকার যেটা আমার নেই :/
  • dd | 90045.207.3456.98 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:২৪62026
  • সে সময়ের যারা "ইন্ডিয়ান আর্ট" আঁকতেন বা "ফোক" তাঁদেরও দেখেছি ফর্মের সাথে সাথে কনটেন্টেও একটা সীমা এসে গেছে। একটা লুপ - তাতেই আটকা পড়ে আছেন।

    ইন্ডিয়ান আর্ট মানেই সেই মিথোলজি, ছোটো গাছে হিউজ ময়ুর, বাঁশী হাতে ঘন নীল কৃষ্ণ, সামনে হলুদ ঘাঘড়া পরা কয়েকজন নায়িকা - এরই নানান ভেরিয়েশন।

    আচ্ছা, নাম করেই বলি। সে সময়ের (সেভেন্টিজ) শিল্পী সীতেশ রায় ফোক আর্টের ফর্ম মেনেই কাগজে ছবি আঁকতেন, গুঁড়ো রং জলে গুলে। তাঁর বিষয়ও ছিলো সীমিত। রাখাল বালক, মা ও ছেলে, এইসব। কিন্তু শেষের দিকে কিছুটা বিষয় বৈচিত্র আনবার চেষ্টা করেছিলেন। টিউবয়েলের সামনে দাঁড়িয়ে জল প্রত্যাশী পরিবার,শহরের কিছু দৃশ্য, এ রকম।

    সন্দীপ সরকার তার শো দেখে লিখেছিলেন "জীবনবোধ সীমিত"। সেটা ওনাকে খুব আহত করেছিলো।হয়তো বদলাতেও পারতেন কিন্তু অল্প বয়সেই মারা যান।

    এটা আমারও অদ্ভুত লাগতো। ফর্মে মিনিয়েচার মানলেই বা কী? বিষয়টাকেও কেনো গন্ডী বেঁধে ফলতে হবে ? ফোক আর্টের ফর্মে কি নাগরিক জীবন আঁকা যায় না ?
  • T | 340112.211.0123.203 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৩62014
  • বিষাণ বাবু, ঐ ঘোড়ার পোস্ট যাঁর, উনিই গুরুর 'ডন'। ছোটাইদি য্যামন বলেচেন। :)
    আচ্ছা, কিন্তু পার্ব্বতীবাবুর সমালোচনাগুলো ইন্টারেস্টিং।
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.82 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৫62015
  • প্লীজ, একটু গাইড করে দেবেন, সময় সুযোগমতো।

    আমি নতুন। নাদান।

    ডন-কে না চিনে ফালতু ওপরচালাকি ফটরফটর করে বেকুব বনবো শেষে।

    প্লীজ, সবাইকে, করজোড়ে নিবেদন। একটু গাইড করবেন এই নব্য আড্ডাবাজকে।

    নয়তো, শেষে,

    কোথায় খাপ খুলেছো শিবাজি
    এ যে পলাশী....

    এই হালত, এই মধ্যবয়সে চাইছি না।
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.82 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৬62016
  • আগের কথাগুলো সিরিয়াসলি বললাম।

    একটু মাথায় রাখবেন। সাহায্য করবেন।
  • র২হ | 7845.15.9006712.191 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৭62027
  • ফোক ফর্মে নাগরিক জীবন, বা সমসাময়িক জীবন, এইটা আমার খুব আগ্রহের জায়গা; আর প্রকৃত ফোকে তো সেটাই হয়; কদিন আগে একটা মধুবনীর ওয়ার্কশপের ছবি দেখছিলাম, মানে শহুরে ওয়ার্কশপ নয়, ওই পরম্পরাগত গ্রামের শিল্পীদের।

    শহরে যা আসে তাতেই একটু ফেক যোগ হয়, ফোক-এ ও তাই, এরকম মনে করি।
  • b | 562312.20.2389.164 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৪৯62017
  • ইয়ে। কোনো শহরে বা গ্রামে, পীরতলায় যে ঘোড়াগুলি মানত করা হয়, সেগুলো-ও ওরকম। লম্বা গলা, বেঁটে পা।
  • | 670112.193.235612.132 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৫62018
  • ধ্যাত! নতুন মানুষকে ঘাবড়ে দিচ্ছে খামোখা। না না বিষাণ আপ্নি লিখে চলুন আপনার মত। খামোখা ভয় টয় পাবেন না। যে যার আগ্রহের বিষয়ে ঠিক ঝাঁপিয়ে আসবে কথা বলতে।

    আর ঐ টি, 'ডন' তো তোকেও বলেছিল ঐ নিকটা। তোর লেখার উচ্চারণ নকল করে ভেঙচে। তুই টোপ গিলে এগোলি না দেখে মিইয়ে গিয়ে পাইয়ুএর পিছনে লাগল। শুধু একককে বললে হব্যা!

    আবারও বিষাণ, ঘাবড়াবেন না :-)
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.9004512.14 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৩৬62019
  • পার্বতী যামিনী রায় সম্পর্কে যাই বলে থাকুন, যামিনী রায় একজন প্রতিষ্ঠান।

    ওর সমসাময়িক নন্দলাল বসু, অসিতকুমার হালদার সেই হাইটে উঠতে পারেননি।

    ওর ছবিগুলোর একটা বিশাল গুণ হল, ছবিগুলো নন-সেরিব্রেল।

    যামিনী রায়ের ছবি পটল বাবু আঁকতেন, এটা হাস্যকর। মাঝে একটা নিউজ চ্যানেল কাকে খুঁজে পেয়ে প্রচার করেছিল, একজন পটুয়া যামিনী রায়ের ছবি ফরমাশ মত এঁকে দিতেন। যামিনী বাবু সই করে নাকি বেচতেন।

    যেমন কয়েকজনের দাবী লালন ফকিরের গানের খাতা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ চুরি করে ভাইকে দেন। ঃ-))))

    পটলবাবুর দুটো ছবি ভবেশ দাশগুপ্তের বাড়িতে দেখেছি।

    একটা ইম্প্রেশনিস্ট স্টাইলে আঁকা ।

    যামিনী রায়কে নিয়ে বুদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে'র প্রবন্ধ আছে।
  • অর্জুন অভিষেক | 342323.223.9004512.14 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৫৩62020
  • Bishan বাবু, "বিষ্ণু দের লেখায় পড়েছি, পটলবাবু নাকি বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। কপির চক্করে তিনি প্রতিভার অপচয় করে বসলেন। আজও যামিনী রায় নিয়েই আলোচনা হচ্ছে, অমিয় রায় সেইখানে কোথায়??"

    রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ভাল ছবি আঁকতেন, তার চেয়েও ভাল উড কার্ভিং করতেন, সেরামিক নিয়ে দারুণ এক্সপেরিমেন্ট করেছেন।

    আপনি নিশ্চয় এই বইটার কথা জানেন, RPG 'ঠাকুরবাড়ির চিত্রকলা' নামে একটি বই প্রকাশ করেছিল। আমার বাবা বইটা কিনেছিলেন। বইটা খুব সম্ভবত এখন আর পাওয়া যায়না।

    ওখানে সবচেয়ে বেশী ছবি স্বাভাবিক ভাবেই অবনীন্দ্রনাথের। কিন্তু অন্যান্যদেরও সংখ্যায় কম হলেও ইন্টারেস্টিং কালেকশন। গগনেন্দ্রনাথের কালেকশনটা সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং লেগেছে আমার।
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.82 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:১২62021
  • অর্জুন অভিষেকবাবু, না বইখানা আমার দেখা হয় নি।

    চেষ্টা করবো যোগাড় করে দেখে নিতে।

    ঠাকুরবাড়ির বাকিদের চাইতে গগনেন্দ্রনাথ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও ভিন্ন পথের যাত্রী। তাঁর সঠিক মূল্যায়ন, আজও হয়েছে বলে মনে হয় না।

    সম্প্রতি বসু বিজ্ঞান মন্দির ও রবীন্দ্রভারতীর যৌথ উদ্যোগে একটি প্রদর্শনী হয়। তাইতে গগনেন্দ্রনাথের একখানা ছবি ছিলো, অনন্য। আলোছায়া আর কিউবিজম নিয়ে পরীক্ষা।

    গতবছর, গ্যালারী ৮৮-এ গগনেন্দ্রনাথের ব্যঙ্গচিত্রের প্রদর্শনীও অসাধারণ। ধর্মের নামে মানুষকে ঠকানো বা মালিকের শ্রমিক শোষণ নিয়ে যে সব কাজ ছিলো, তা এখনও কনটেম্পোরারি মনে হয়।

    সময়ের সাপেক্ষে, তিনি ছিলেন, অনেক এগিয়ে। দুর্ভাগ্য, সমকাল বা ভবিষ্যৎ, তিনি তেমন মনোযোগ পেলেন কই!!
  • একক | 3445.224.9002312.52 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:৫৬62022
  • গগনেন্দ্র নিয়ে কেও লিখুন । একদিকে তাকিয়ে ডুবে যাওয়ার মত পেইন্টিং , আরেকদিকে ব্যঙ্গচিত্রে কিউরিয়াস সব স্টোরিলাইন !! ওনার ওই "রেসপেকটিং উওম্যান " মনে আছে ? ওই সময় দাঁড়িয়ে মেল গেজ কে ধরছেন ব্যঙ্গচিত্রে , যা নিয়ে আজকের দিনে কথা হয় ।
  • i | 891212.211.450123.25 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:০৬62003
  • 'আমাদের প্রাত্যহিকতার মাঝেই যে সুন্দর লুকিয়ে থাকতে পারে, তার অনুধাবনের জন্যে কিছুটা আর্ট এপ্রিসিয়েশনের দীক্ষা থাকা জরুরী।'

    এই ব্যাপারে আমার মতামত আলাদা। আজ যখন পার্বতী মুখার্জের বইটি তাক থেকে নামিয়েছি, সেখান থেকেই উদ্ধৃত করি?

    'গ্রামের বাড়ি বানাতে গেলে কোথায় বেড়া দিতে হবে, কিভাবে ছাউনি দিতে হবে, দেওয়ালে আল্পনা আঁকতে গেলে কোথায় রেখা টানতে হবে, কোথায় স্পট একথা সে রক্তচচলের মধ্যেই শুনতে পায়। এজন্য তাকে রিচার্ড পড়তে হয় না, ব্রেতো পড়তে হয় না, অ্যারিস্টটলের শিল্পতত্ত্ব পড়তে হয় না। যে বাঁকুড়ার ঘোড়া তৈরি করেছিল, তাঁকে কি কিছু পড়তে হয়েছিল? সে শুধু দেখেছিল তাঁর প্রেমিকার নিতম্ব, তার ভীতু স্বভাবের বৌটিকে ভালো লেগেছিল যাঁর সুন্দর লম্বা গলা ছিল। এইরকমভাবে সে ভেবেছিল, আমার যে ভালোলাগার জিনিস, তা যেন আমার কাছ থেকে চলে যেতে না পারে, তার হাঁটুই বন্ধ করে দিয়েছিল.. এইভাবে সে এক অদ্ভূত মায়াজাল তৈরি করেছিল ঘোড়ার, যা দৃশ্যত আমরা কোথাও দেখতে পাই না, যা বাস্তবে নেই, সেই বাঁকুড়ার ঘোড়া বাংলার ঘরে ঘরে আদৃত হয়ে গেল। এই ঘোড়া সে নিজের ভিতরই খুঁজে পেয়েছিল, তার রক্ত চলাচলের মধ্যে কান পেতে শুনতে পেয়েছিল... এটা শুনতে গেলে .... এতটাই অনুভূতিপ্রবণ হতে হবে যেন একটা পিঁপড়ে চলাচলও চোখ না এড়ায়।'

    [পার্বতীর কথা; রাজেশ দে; নান্দীমুখ সংসদ;২০০৯]
  • i | 891212.211.450123.25 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:২৫62004
  • আর একটা কথা মনে পড়ল,
    ছোটোবেলায় জ্ঞান হওয়ার পর থেকে নিজেদের বাড়িতে বা অন্য অনেকের বাড়ির খুব সাদামাটা চুনকাম করা/ নোনাধরা দেওয়ালে (মধ্যবিত্ত)যামিনী রায় ছাড়াও বি প্রভার আঁকা এবং গগনেন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত সিঁড়ির ছবি দেখতাম। এগুলি সম্ভবতঃ ললিতকলা আকাদেমি এবং বিশ্বভারতীর থেকে কেনা প্রিন্ট ছিল (?)।
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.95 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪২62028
  • গগন ঠাকুর নিয়ে লেখার ইচ্ছে হয় না, এমন নয়। কিন্তু, নিজের জ্ঞানগম্যির অভাব থাকলেও, কিছুটা কান্ডজ্ঞান রয়েছে। তাই, বিষয় নিয়ে এতো কম জেনে ঝাঁপ দিতে সাহস হয় না। এমনিতেও, তথ্য পাওয়া মুশকিল। আর, হ্যাঁ, সত্যিই উনি সময়ের চেয়ে এগিয়ে, আধুনিক।

    যামিনী রায় প্রসঙ্গে। ওঁর ফোক-পট আশ্রিত আঙ্গিকের পূর্ববর্তী পর্যায়ের পোর্ট্রেট-ল্যান্ডস্কেপ-সিটিস্কেপ, আশা করি, সবাই দেখেছেন। সেইখান থেকে শুরু করে ওঁর শিকড়ের দিকে গমন।

    যামিনী রায়ের জার্নিটা কিন্তু খুব ইন্টারেস্টিং। এক কথায় উড়িয়ে দেওয়াটা, বোধহয়, ঠিক হচ্ছে না।
  • Bishan Basu | 7845.15.9001223.95 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০৭62029
  • যামিনী রায়ের যে সময়টা সেইটা খেয়াল করলে, লোকশিল্পের আঙ্গিক চারুশিল্পে প্রয়োগের নজির তেমন একটা ছিলো না। পশ্চিমী ধাঁচে আঁকার সময়েই তাঁর মনে হয়েছিলো, দেশজ পদ্ধতি বিনা একটা দেশের শিল্পপদ্ধতি হতে পারে না। আরেকদিকে, নন্দলাল বসু, সাধারণ মানুষ অন্ত্যজ মানুষকে ছবির থীম করতে থাকলেন।

    এঁদের পথ ধরেই, পরবর্তীতে প্রকাশ কর্মকারের অসম্ভব শক্তিশালী লাইন ড্রয়িং-ভিত্তিক কিছু কাজ হতে পারলো। পটের আঙ্গিক নিয়ে অসামান্য লাইনের কাজ যামিনীবাবু শুরু না করলে, শেষের দিকে উনি তো রঙ ছেড়ে স্রেফ খয়েরী ড্রয়িং-ভিত্তিক কাজ শুরু করেন, এর শুরু যামিনী রায় না করলে, প্রকাশ কর্মকার আসতে পারতেন কি?

    কাজেই, বাংলা তথা দেশের শিল্প ইতিহাসে, যামিনী রায় একজন উজ্জ্বল মাইলফলক, এইটা অস্বীকার করার কোনো জায়গা, বোধহয়, নেই।
  • dd | 670112.51.2323.243 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০৭62030
  • যা রা তো নিঃসন্দেহে মাইলস্টোন।
    সাকসেসের সাথে তর্কো হয় না কি? আর যা রা শুধু বিক্রীর দিক দিয়েই সার্থক তো না, মধ্যবিত্ত বাঙালীর ঘরে পিপলির অ্যাপ্লিক আর্ট,কালী ঠাকুরের মুখের ছাঁচ, বহুকাল আগে কেনা, বর্ত্তমানে কান ভাঙা বাঁকুরোর ঘোড়া আর ক্বচিৎ কোনো ক্যালেন্ডারের ছবির সাথে একমাত্র চারুশিল্প যা থাকতো তা যামিনী রায়ের ছবিই। সেই দিক দিয়ে "ছবি টবি বুঝিনারে বাপু"দের মধ্যেও - সম্রাট তিনিই।

    গগনেন্দ্র,অবনীন্দ্র,যা রা - এঁয়ারা সবাই পথ নির্দেশক। গগন বাবুতো কিউবিজম নিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন ক্যানভাসে, প্রাক পিকাসো যুগেই। যদিও তাঁর ওয়াশের ছবিগুলিই অনেক বেশী প্রচারিত।

    আমার অস্বস্তি হয় যে যা রা শিখরে পৌঁছেও আর নতুন কিছু করলেন না। ঐ এক যায়গাতেই থেমে গেলেন, অথচ যারা সত্যিকারের পটো, তাঁরাও চেষ্টা করছিলেন ঐতিহ্যের গন্ডী পার হতে।
  • একক | 3445.224.9002312.52 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫০62031
  • এখানে তর্ক টা আদৌ যামিনী বাবু কে ছোট বা বড় করার নয় । তিনি তাঁর জায়গাতেই থাকবেন । কিন্তু তাঁর জায়গা থেকে কতটা কোন দিকে পা রাখতে পারতেন বলে মনে হয় , বা প্রতিভা থেকেও লং টার্ম দিশারী হলেন কী হলেন না , সীমাবদ্ধতা কোথায় , তাই নিয়ে । শিল্পী কোন রাস্তায় হাঁটবেন সেটা তাঁর ব্যাপার । আবার , দর্শক শিল্পীকে কোন কোন ভূমিকায় বেশি করে চাইবেন সেই অধিকার ও তো আছে :))

    শিল্পসমালোচনার উদ্দেশ্য কখনই কোনো মাইলস্টোন কে ছোট করা বা টেনে নাবানো নয় । ওই জায়গাটা অলরেডি পেয়েছেন বলেই সমালোচানার যোগ্য নইলে কে কবে পথের ধারের নুড়িপাথর নিয়ে মাথা ঘামিয়েছে বলুন । কিন্তু দেখবেন , সব মাইলস্টোন এ দুরত্ব লেখা থাকে .......হঠাত এক জায়গায় এসে মাইলস্টোন এ স্পিড লিমিট লেখা হতে থাকলো , এরপর সেই কালচারটা ইনক্লুড হয়ে গ্যালো , এই হলো ব্যাপার :) এইভাবে মাইলস্টোন এ মাইলস্টোন এ পার্থক্য হয়ে যায় আর পথ ও পথিকের প্যারালাল উদ্বর্তন ঘটতে থাকে , পথিক তখন মাইলস্টোন এর কাছে হয়ত রাস্তার অল্টিচিউড কত সেটাও আশা করে :) এগুলো করে মাইলস্টোন কে অস্বীকার করা হয়না মোটেই বরং পথ ও পথিকের মধ্যে পারস্পরিক উদ্বর্তনের ধারা , যা এক্ষেত্রে শিল্পের ধারা ,তাকেই মান্যতা দেওয়া হয় ।
  • Bishan Basu | 7845.15.780123.119 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৬:৫৪62032
  • বাঃ, চমৎকার বলেছেন একক।

    ডিডি-সাহেব এবং একক দুজনের কথা প্রসঙ্গে।

    আমার মনে হয়েছে, একটা বয়সের পর, বাণিজ্যিক সাফল্য শিল্পীকে ভোঁতা করে দেয়। এবং, নতুন পথে চলার পথে সংশয়ী করে তোলে।

    প্রথম পর্যায়ে পোর্ট্রেট এঁকে বাণিজ্যিক সাফল্য পেলেও, যামিনী রায় নতুন পথে হেঁটেছিলেন, নিজেকে নতুন করে আবিষ্কারও করেছিলেন। কিন্তু, পরবর্তীতে, বাণিজ্যিক সাফল্যের নিরাপত্তা কি তাঁকে সাবধানী করে তুলেছিলো? নাকি, নতুন পথে হেঁটে দেখার উৎসাহ হারিয়েছিলেন তিনি? তাহলে, শেষের দিকে, রঙহীন খয়েরী ড্রয়িং-ভিত্তিক কাজগুলি কিসের লক্ষ্যে? আপনারা সবাই সেই কাজগুলিও দেখুন। থীমের দিক থেকে সাঙ্ঘাতিক আলাদা না হলেও, আঙ্গিকের দিক থেকে এক নতুন নিরীক্ষা তো বটেই।

    হ্যাঁ, সাফল্যের মুহূর্তে আরো এক্সপেরিমেন্টাল হওয়া যায়। লজিক তা-ই বলে। কিন্তু, বাস্তবে ঘটে বিপরীতটা।

    সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা ভাবুন। অসামান্য স্কিল। কিন্তু, একঘেয়ে ডেকোরেটিভ ডান্ডিয়ার বাইরে বেরোতে পারলেন না।

    অথবা, পরেশ মাইতি। জলরঙে আঁকলে রিয়্যালিস্টিক ল্যান্ডস্কেপ আর ক্যানভাসে এক্রিলিকে আঁকলে সেই কিউবিজম মেশানো মানুষের মুখ অথবা সিটিস্কেপ। এর বাইরে কাজ কই? এই অল্প বয়সেই বাণিজ্যিক সাফল্যের নিরাপত্তায় বুঁদ!!

    বাণিজ্যিক সাফল্য কি শিল্পীর পক্ষে অভিশাপ?? একটু মেলোড্রামাটিক শুনতে লাগলেও, কথাটা কি খুব ভুল?
  • সৈকত | 238912.66.1256.118 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৮:৩৩62033
  • 'গগন ঠাকুরের সিঁড়ি' নামে, দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি উপন্যাস লিখেছিলেন, ১৯৬০-৬১ সাল নাগাদ 'বিংশ শতাব্দী' নামে পত্রিকায় এগারোটি অধ্যায় প্রকাশ হওয়ার পরে, লেখাটি অসমাপ্ত অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায়। দেবেশ রায়, পরে, দীপেন্দ্রনাথ মারা যওয়ার পরই হয়ত, পরিচয়-তে সেই লেখাটা ছাপিয়েছিলেন।কয়েক বছর আগে, উপন্যাস সমগ্রতে লেখাটি এসেছে, শেষের আরও কয়েকটি অধ্যায় সমেত, হয়ত লেখাটি সমাপ্ত হয়। কিন্তু আমার মতে লেখাটি তাও অসমাপ্ত, শুধু যেভাবে হঠাৎ করে শেষ হচ্ছে সেই জন্যই নয়, লেখাটির বিষয়ের কারণেই।পুরো উপন্যাসটি নিশানাথ নামে এক যুবকের চিন্তাস্রোত, পরিবার-মানুষজন-চারপাশটা-রাজনীতি, সব কিছু নিয়ে এক সর্বগ্রাসী মত ও অমত। আর কল্পিত এক বিচার্সভায় তার উপশ্থিতি। আমার মনে হয়েছিল, নিশানাথ, তার পরিবেশ, সে যা দেখছে, সব কিচুই যে সে মনে করছে প্রায় নিরবয়ব, স্থানুতা পাচ্ছে না সেসব, ফর্মলেস, জোর করে যেন খাড়া করে রাখা হয়েছে সেসব, এই বোধের জন্যই, তার চিন্তাগুলো কখনই সমাপ্তি পাবে না, অতএব উপন্যাসটি অসমাপ্তই থাকব !! বেশ কয়েকবার ভেবেছি উপন্যাসটির নামটি নিয়ে। উপন্যাসের মধ্যে গগন ঠাকুরের অবশ্য কোনো উল্লেখ নেই, নিশানাথ ছবিও দেখেনা। পরে বুঝেছি, নামের সাথে উপন্যাসের বিষয়ের অন্বয় স্থাপন করতে গেলে, উপন্যাসটির নামটি হতে পারত, 'গগন ঠাকুরের সিঁড়ির মত নিশানাথের চিন্তাভাবনা'। গগনেন্দ্রনাথের ছবিতে সিঁড়িগুলো যেমন, ক্রমাগত এক তল থেকে আর এক তল, আলোছায়ার খেলা, একটার পরে যেন আরো একটা থাকবে, উঁচু-নীচু, কক্ষ থেকে কক্ষান্তরের আভাস যেন বা, নিশানাথের চিন্তাগুলোও তেমনি, যেন তাদের তল খুঁজে পাওয়া যায় না।
  • Ishan | 2390012.189.892312.13 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:০১62034
  • এই উপন্যাসটা পড়ি নি। কোথায় পাওয়া যাবে? কোনো আইডিয়া?
  • সৈকত | 238912.66.1256.118 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:০৩62035
  • হয়ত এসবই অপ্রাসঙ্গিক। প্রাসঙ্গিক এটাই যে গগনেন্দ্রনাথেরও একট বেঙ্গল স্কুল/রিভাইভালিজম-এর পর্যায় ছিল। মনে করি ১৯১০ নাগাদ অবধি। তার পরে ক্রমশঃ ছবির ভাষা বদল হয়ে যাওয়া, কাকতালীয় নয় যে পিকাসো ১৯০৭ নাগাদ এঁকে ফেলছেন, 'অ্যাভিয়্ননের মেয়েরা', কিউবিস্ট যুগের সূচনা হয়ত বা, সেজান ও গঁগ্যার ছবির বড় করে প্রদর্শনী হচ্ছে, ১৯০৬/০৭ সাল নাগাদ, চিত্রভাষা চিরকালের মত বদলে যাচ্ছে। এদেশে এসবের প্রভাব বা খবর কিভাবে এসে পৌছচ্ছে, জানা নেই, তবে অনুমান করি, ছবির জগতের এই ঘোরতর পরিবর্তন, গগনেন্দ্রনাথকে একরকম মুক্তি দিয়েছিল। ন্যাচারালিস্ট ঢঙের যে ছবি আঁকা হচ্ছিল, যা মূলতঃ দ্বিমাত্রিকই, কিউবিজম ইত্যাদির ফলে গনন ঠাকুর মনে হয়, স্পেস, বস্তুর তল, আলো/ছায়া ইত্যাদি নিয়ে নিজের মত করে আঁকতে পারছিলেন, নিজের ছবির জগতও প্রায় পুরোটাই বদলে গেল।

    রক্তকরবীর সেট, সিঁড়ি আর ঘরের ছবি, দ্বারকাপুরী নাঅমে ছবিটা যা সেজানের শেষের দিকের ল্যাণ্ডস্কেপের কথা মনে পড়ায়, বা কোথাও হয়ত এশারকে। এইসব ছবিতে আধুনিক ছবির ফর্মকে গগনেন্দ্রনাথের নিজের মত ব্যবহার। নিজের মত বলছি এই কারণে, যে কিউবিস্ট ছবির যা প্রধাণ বৈশিষ্ট্য, বস্তুকে বস্তু হিসেবে না রেখে, জ্যামিতির আকারগুলোই প্রধান করে তোলা, এবং তার ফলে বস্তুকে আর চিনতে না পারা, ক্রমশঃ যা ছবিকে নিয়ে যাবে ন্যারেটিভ থেকে বিমূর্ততার দিকে, পিকাসোও নয়, হয়ত ব্রাকের ছবিতে এইরকম খুব গভীরে গিয়ে কাজ বেশী পরিমাণে - ছবির এইরকম রূপ গগনেন্দ্রনাথের ছবিতে নেই। ছবিগুলোতে মোটামুটি সব কিছুই চিনে নেওয়া যায়, কিন্তু প্রথাগত ছবির থেকে অন্যভাবে। অতখানি ভাঙচুর করা একা গগন ঠাকুরের পক্ষে নিশ্চয় সম্ভব ছিল না, তখন ছবির যা জগত, এখানে, সেই কারণে, চারপাশের বাস্তবতা ইত্যাদির জন্য, হয়তবা নিজের ইচ্ছেও ছিল না। আর বন্ধু-বান্ধব থাকলেও, যারা একই রাস্তার লোকজন তাহলে হয়ত এঁকেও ফেলতেন !! এসবই অনুমান, নিজের কথায় বা লেখায় ছবির ব্যাপারে গগনেদ্রনথের মতামত সেরকম কোথাও পাইনি।
  • সৈকত | 238912.66.1256.118 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:০৭62036
  • ঈশানঃ

    আমার কাছে যে উপন্যাস সমগ্র আছে, সেটা অফবিট প্রকাশনার। প্রায় দশ বছর আগে গল্প/উপন্যাস সমগ্র ছাপিয়েছিল। এখন পাওয়া যায় কিনা জানিনা, অফবিটের স্টল বইমেলাতেও দেখিনা। দীপেন্দ্রনাথের রিপোর্টাজ সমগ্র বার করেছিলো মনে হয়, একুশ শতক থেকে, খোঁজ করতে পার।
  • Ishan | 2390012.189.892312.13 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:২০62037
  • অফবিট স্টল দেয় তো। গত বছর খেয়াল নেই, কিন্তু দু বছর আগেও দেখেছি। চিনিও মোটামুটি। দেখি কোনোভাবে যদি খোঁজ নেওয়া যায়।
  • T | 342323.176.90056.56 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৯62039
  • কিউবিজমে জ্যামিতিক আকারগুলো জ্বলজ্বলিং এবং সেই সংক্রান্ত অ্যাবস্ট্রাক্টের দিকে গন্তব্য ছাড়া আরেকটি বিশেষ ব্যাপার থাকে যে একই অবজেক্টের একই সঙ্গে বিভিন্ন পার্স্পেক্টিভ থেকে ড্রয়িং, মানে কম্পোজিশনকে কিংবা অবজেক্টকে তার বিবিধ ন্যারেটিভ থেকে দেখার প্রয়াস কিংবা মুক্তি ইত্যাদি। তাই না? এছাড়া খ্যাল করবেন যে, গগনেন্দ্রনাথের কিউবিস্ট ঘরাণার ছবিগুলোতে লাইটম্যাপটা হচ্ছে ভার্টেক্স, যেটা কিউবিজমের মূল ব্যাপারের সঙ্গে একেবারে খাপে খাপ। বা একমাত্রা এগিয়েই বলব। কোয়েক থ্রী (কম্পিউটর গেম) যারা খেলেচে তারা অবশ্যই বুঝবে যে এই ধরণের লাইট কী পরিমাণ নির্মোহ ব জাতীয় অ্যাটমস্ফিয়ার তৈরী করে। একটা স্যাডিস্টিক, নির্মম, খুন খারাপি মূলক নির্লিপ্ততা তৈরী হয়। অথচ এ জিনিস উনি ব্যবহার করছেন অবচেতনকে বোঝাতে। ঋষিসূলভ ব্যাপার স্যাপার। ওঁকস।
  • dd | 670112.51.0123.77 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০৯62040
  • "একটা বয়সের পর, বাণিজ্যিক সাফল্য শিল্পীকে ভোঁতা করে দেয়। এবং, নতুন পথে চলার পথে সংশয়ী করে তোলে।" - বিষাণ লিখলেন।

    সে তো সর্বত্রই। কালকের বিদ্রোহী আজকের প্রতিষ্ঠান। ছবি এঁকে সংসার চালানো তো একেবারে হালের ব্যাপার। কজন শিল্পী কোনো রকম চাকরী ছাড়াই ফুলটাইম দিতে পারেন ছবির পিছনে?
  • | 340123.99.121223.133 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩62041
  • আলোচনা টার জন্য বিষাণ বসু এবং সকলকে ধন্যবাদ।

    সৈকত (২য়) , থ্যাংক্স। আমি জীবনে উপন্যাস টা তো পড়ি ই নি, নাম ও শুনি নি। কোথায় পাবো কি করে পড়ব। একটু হেল্প করলে ভালো হয়।

    ছবির মেটাফর ব্যবহার হয়েছে, মানে কেন্দ্রীয় থিম টাই ঐ, এরকম বেশি উপন্যাস আমার হেবি লাগে, কিন্তু দুটো ছাড়া মনে করতে পারছি না কিসু পড়েছি। খ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন