এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  বাকিসব  মোচ্ছব

  • অথ বিবাহ-কথা

    স্বাতী রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ | ২৮৩৬ বার পঠিত
  • মালতীর ছোটবেলায় একটি পাড়াতুতো দিদি ছিল। ফিজিক্সে মাস্টার্স ডিগ্রি হোল্ডার, অসম্ভব সুন্দরী আর পারসোনালিটি-ওলা চেহারা – যখন শিরদাঁড়া টান টান করে সোজা হয়ে বসে ছাড়া গলায় গান ধরত, লক্ষ্মী যখন আসবে তখন কোথায় তাঁরে দিবি রে ঠাঁই, নেহাত বেরসিকেরও মনে হত সত্যিই বোধহয় মা লক্ষ্মী, মা সরস্বতী এক অঙ্গে নেমে এসেছেন। তার একদিন বিয়ে হল। অষ্টমঙ্গলায় বাপের বাড়ি এল এক মাথা সিঁদুর নিয়ে। পাড়ার অন্য মেয়েরা খুব হাসাহসি করল। ওর শ্বশুরবাড়ির নাকি নিয়ম ফুলশয্যার রাতে বরের পা ধুইয়ে মাথার চুল দিয়ে মুছিয়ে দিতে হয়। ছোট ছোট করে কাটা চুল নিয়ে পরম ব্যক্তিত্বশালিনী দিদিটিকে নাকি খুব নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে তখন। বেশ হয়েছে, যেমন ফ্যাশন করে ছোট করে চুল ছাঁটা! মালতীরই শুধু ভারী অবাক লেগেছিল! মাথার চুল দিয়ে পা মুছিয়ে দিতে হবে কেন? ওদের বাড়ীতে গামছা- তোয়ালে কিচ্ছু নেই?

    এতো সবে শুরু। কিছুদিন পরে মালতীর বাড়ীতে এক তুতো দিদির বিয়ে। বিয়ে বাড়ীর লাখো কথা, হট্টগোল, খাওয়া-দাওয়া, আত্মীয়-কুটুম সে এক এলাহি ব্যাপার! কিন্তু সব ছেড়ে মালতীর চোখ পড়ল দুটো জিনিসে। প্রথমতঃ বিয়ের সব দায়িত্ব দিদির বাবা-মা’র অথচ বিয়ের কার্ডটি বাড়ীর এক অনুপস্থিত দাদুর ( বাবার জ্যাঠামশায়ের ) নামে। আশ্চর্য এই কারণে যে যৌথ পরিবার হলেও নাহয় কথা ছিল – কিন্তু সেসবের পাট চুকেছে বহুদিন আগে। এখন সব যার যার নিজের সংসার। তাই দিদির রোজকার খাওয়া-ঘুম-পড়াশোনার দুনিয়ায় তিনি কোথায়? অথচ এটাই নাকি নিয়ম! আর সেই প্রসঙ্গে শোনা গেল, দিদিকে সম্প্রদান করবেন দিদিরই আরেক প্রবাসী জ্যেঠু। এ তো আরও বড় অনুপপত্তি! একটা অত বড় ধেড়ে মেয়ে, আইনতঃ সাবালিকা, পাঁচ-ছয় বছর ধরে প্রেম করে তারপর বিয়ে করছে, আর আবার সম্প্রদান কি? এ তো আদতে গন্ধর্ব বিবাহ, মানে এসব অনুষ্ঠান-টনুষ্ঠানেরই কোন মানে হয় না! তা তোমাদের যদি পয়সা বেশী হয়ে থাকে, লোক খাওয়াতে ইচ্ছে করে সে খাওয়াও, কিন্তু সম্প্রদান আবার কি? আর যাঁর সঙ্গে পাঁচ-ছ বছর পরপর একবার দেখা হয় কিনা সন্দেহ, তিনি কেন সম্প্রদান করবেন? এক যদি ধরো, ছোটবেলা থেকে খাইয়ে-পড়িয়ে আদর দিয়ে বাঁদর করে তোলার দৌলতে কারোর সম্প্রদান করার কিছু মাত্র অধিকার জন্মে থাকে, সে তো বাবা-মায়ের। এর মধ্যে এসব থার্ডপার্টি সিঙ্গুলার-নাম্বার আসে কোত্থেকে? ... শোনা গেল এও নাকি নিয়ম! বাড়ীর অর্থাৎ পিতৃবংশের সব থেকে বড় যিনি তিনি নাকি সম্প্রদান করবেন! এতো কথাতেও দমে না গিয়ে মালতী সোজা পুরোহিতকে ধরেছিল, সম্প্রদান কেন হবে? পুরোহিত এক উচ্চাঙ্গের হাসি হেসে বলেছিলেন, সম্প্রদান ছাড়া বিয়া হয় না, এইটাই zানো না , বো-কা মাইয়া!

    বাড়ীতে অনেকগুলো এমন এমন সব বিয়ে দেখে বোকা মালতীও ভারী অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছিল। নিজের বেলায় এ ঘাটে মাথা মুড়োন’র ইচ্ছে ছিল না মোটেই। ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়, বইএর বোঝায় কাঁধ বেঁকে যাওয়া ঘাড় নিয়ে ল্যাগবেগিয়ে রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে প্রেমিকপ্রবরকে বলত, “আমরা কিন্তু শুধু রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করব বুঝলি! শুধু গোটা কয়েক বন্ধু ডেকে নিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে চলে যাব। ব্যস বিয়ে করে ফেলব। যে পয়সাটা বাঁচবে, তাই দিয়ে মজাসে বই কেনা যাবে।“ কিন্তু ওই যে, woman proposes, man disposes। বিধাতাপুরুষ সবার অলক্ষ্যে এমন এক কিস্তিমাতের চাল চাললেন যে মালতী সব প্ল্যান ভেস্তে গেল – সামাজিক ভাবে বিয়ে করাটা নেহাতই বাধ্যতামুলক রকমের দরকার হয়ে পড়ল। অগত্যা। নতুন চাকরীতে ঢুকে একটা বিশাল বই-এর লিস্টি তৈরি হয়েছিল। শেষবারের মত সেটা দেখে নিয়ে বঙ্কিম রচনাবলীর পাতার ফাঁকে ঢুকিয়ে আলমারিতে চাবি দিয়ে দিল। যা সব খরচের বহর – এ লিস্টি আগামী অনেক বছরে আর বার করা যাবে না। হ্যাঁ, বাপের পয়সায় বিয়ে করা যাবে না – এদিকে পকেটের চেহারা দেখলে মেঠো ইঁদুরও দুটো ধান ফেলে যায়। তাই ডিল হল, হিজ হিজ, হুজ হুজ। মালতীর শাড়ী-গয়না, বন্ধুবান্ধবের দায় মালতীর আর বাবা-মার যা ইচ্ছে, তার খরচ বাবা-মার। বেগতিক দেখে সেটাই বাড়ির লোক মেনে নিল।

    এবার মাঠে নামল হবু শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। হবু শাশুড়ী খবর পাঠালেন, বর-কনের গোত্র এক – তাই মেয়েকে আগে একবার গাছের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। মালতী পড়ল মহা সমস্যায় – কি করে জানা যাবে গাছের গোত্র কি? এঁরা কি তবে গাছের ভাষা বুঝতে পারে? বাপরে কি ইনটেলিজেন্ট শ্বশুরবাড়ী! কিন্তু পরের সমস্যাটা আরো মারাত্মক! গাছকে বিয়ে করে তারপর তাকে ডিভোর্স না করে তো আর আরেকটা বিয়ে করা যায় না। এক সঙ্গে দুটো বর, বাপরে! তাই গভীর রাতে ফোন করে বলে দিল, বিয়েটা হবে- কিন্তু তোকে যে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে – এ যাত্রায় গাছের সঙ্গে বিয়ে হোক, তারপর কিছুদিন সংসার না করে কি আর বলা যায় ডিভোর্সের কথা! আর বলা যায় না, অবশ্য গাছকেই যদি ভালো লেগে যায় তাহলে তো আবার অন্য কথা! বেগতিক দেখে ফোনধারী বেচারী তাড়াতাড়ি নিজ দায়িত্বে বলে দিল, আরে না না গাছ এলো কোথা থেকে এর মধ্যে! দরকার হলে আমি চাট্টি ডালপালা মাথায় বেঁধে গাছ সেজে নেব।

    ইতিমধ্যে মালতী জোর গলায় সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে যে সালংকারা কন্যা সম্প্রদান করতে হয়, খুব ভালো কথা। এতকাল দাদা-দিদিদের বিয়েতে তো গয়নাগাঁটি পরেই সেজে-গুজে ঘুরে বেরিয়েছে, না হয় হলই ইমিটেশনের গয়না। তা বলে কি ফেলনা নাকি! নিজের বিয়ে বলে তার ব্যতিক্রম করা যায় না! তবে সব গয়নার গভীর পর্যালোচনা করে খুবই দুঃখের সঙ্গে ঠিক করা গেছে যে নেহাতই সাধের অক্সিডাইজড ঝুমকোগুলো বেনারসীর সঙ্গে ম্যাচ করবে না, তাই একটা অন্য গয়নার সেট পছন্দ করতে হয়েছে। হ্যাঁ বেনারসী একটা কেনা হয়েছে। সেটাও ওই যে কারণে ধর্ম মেনে বিয়ে করতে বাধ্য হওয়া, সেই কারণে। দোকানে দাঁড়িয়ে মালতী একবার মিনমিন করে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করতে চেষ্টা করেছিল যে বিদেশে যেমন টাক্সেডো ভাড়ায় মেলে, ওঁদের তেমন কোন বেনারসী ভাড়া দেওয়ার স্কীম আছে কিনা! নেহাতই বাড়ির লোকে ধাতানি দিয়ে চুপ করিয়ে দিল।

    ব্যস বিয়ের শাড়ী-গয়না রেডী যখন, বিয়ে করে ফেললেই হয়! দিনক্ষণও মিলে গেছে। একটা ছোট্ট সমস্যা দেখা গেল। বিয়ের পুরোহিতকে নিয়ে! হবি তো হ, ছেলেটি মালতীর বাবার স্কুলের ছাত্র। “ও বাবা, এ তো নিউটনের ল ভুল লিখত!” বাবা কিছু বলার আগেই মা বলে ওঠেন, “নিউটনের ল দিয়ে তো আর তোমার বিয়ে দেবে না মা, ও মন্ত্র তন্ত্র ঠিক জানে , আমি দেখে নিয়েছি। ” এবার নিশ্চিন্ত হয় মালতী। মা সংস্কৃতের ছাত্রী। মা যদি বলে, তাহলে ঠিক হ্যায়।

    যথাদিনে যথাক্ষণে মালতী সেজেগুজে রেডি। এদিকে বর বাবাজীও কোন রিস্ক না নিয়ে যথাসময়ের আগেই এসে হাজির। বিয়ে শুরু হয়ে গেল। শুভদৃষ্টি কমপ্লিট। এমনকি মায় মালতী বরের দিকে লাজুক লাজুক ভাবে তাকাচ্ছে তারও ছবি উঠে গেল চারদিক থেকে খচাৎ খচাৎ করে। এই বার বিয়ে করতে বসল। খানিক পরেই ভুল বুঝল নিজের। বিয়ে করতে বসল না। তাকে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাবা যখন বরের হাঁটু ধরে কিসব বিড়বিড় করে বলছেন, আর বরও নির্বিকার মুখে বসে রয়েছে, তখন মালতীর অহং-এর এক একটা পাক খুলতে লাগল। তারপর মালতীদের দুজনকে মুখোমুখি বসিয়ে পুরোহিত কিসব দুর্বোধ্য বক্তব্য বলে যেতে থাকলেন। মালতী একবার ভাবল, সবাইকে গোল করতে মানা করবে – যাতে ফুল কনসেন্ট্রেশনে মন্ত্র শুনতে পারে। তখনই মনে পড়ল একবার লোন নেওয়ার জন্য লোনের ফর্ম খুঁটিয়ে পড়ছিল। তখন লোনের এজেন্টটি বলেছিল, ম্যাডাম এই ফর্ম পড়লে আর ঠান্ডা মাথায় সই করতে পারবেন না। তার থেকে না পড়েই সই করুন। আপনার মানসিক শান্তি বজায় থাকবে। কি জানি বিয়ের মন্ত্র শুনে ফেললে যদি আর বিয়ে করতে ইচ্ছে না করে! তাই মালতী মনে মনে ভারী ভক্তিভরে যত প্রেম পর্বের গান মনে আসে তাই মনে আওড়াতে লাগল। এই বার সিঁদুরদান পর্ব। বর বাবাজী এতক্ষণ এদিক ওদিক চাইছিলেন আর হাই তুলছিলেন। এবার তিনি বেশ নড়ে চড়ে বসলেন। ভারী উৎসাহ নিয়ে তিন বার সিঁদুর পরিয়ে দিলেন। তারপর লজ্জাবস্ত্র দিয়ে ঢেকে দেওয়ার মুহুর্তে মালতীর নজরে পড়ল বরের মুখে যুদ্ধজয়ের হাসি। হাসিটা কোথায় যেন ঘা দিল! মনে পড়ল জন্ম থেকে শুনে আসতে থাকা যাবতীয় উপদেশাবলী!

    …. মেয়েমানুষের জন্মই বিয়ের জন্য। (ঠাকুমা)

    …. বলি পড়াশোনা তো শিখছ, রান্নাবান্না ঘরের কাজকর্ম কিছু শিখছ, নাকি পরে শ্বশুরবাড়ী থেকে বলবে বাপ-মায় কিছুই শেখায় নাই ? (ঠাকুর্দা)

    ….. পড়াশোনা করেছ ভালো কথা, কিন্তু তোমার চাকরী করার কি দরকার? তুমি চাকরী করলে আমার ছেলের দেখভাল কে করবে ? (হবু শাশুড়ী)

    … জানো তো আজকাল আর কেউ হাউস-ওয়াইফ বলে না, এখন হাউস-ম্যানেজার বলে। (হবু শ্বশুরমশাই )

    … মানিয়ে চলতে শেখ মা, বিয়ে হলে মানিয়ে চলতে লাগে। (দিদিমা)

    শুধু একটা ভারী চেনা গলা সেখানে এতদিন অনুপস্থিত ছিল। আজকের হাসিটা কি সেই শূন্যস্থান পূরণ করে দিল?

    মালতীর অহং এর শেষপাকটাও খুলে গেল। এরপর মালতী ভারী ফুর্তিতে সাতপাক ঘুরতে লাগল। এক এক পাক ঘোরে আর নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলে এই পুড়ে গেল আমার মাধ্যমিকের মার্কশীট; ওঁ স্বাহাঃ এই পুড়ে গেল আমার সঙ্গীত প্রভাকর ডিগ্রি ওঁ স্বাহাঃ এই পুড়ে গেল আমার হায়ার সেকেন্ডারীর মার্কশীট, ওঁ স্বাহাঃ এই পুড়ে গেল আমার ছবির খাতাগুলো ওঁ স্বাহাঃ এই পুড়ে গেল আমার গ্র্যাজুয়েশনের সার্টিফিকেট ওঁ স্বাহাঃ এই পুড়ে গেল আমার মাস্টার্সের সার্টিফিকেট ওঁ স্বাহাঃ এই পুড়ে গেল আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ওঁ স্বাহাঃ । যজ্ঞের বেদীর থেকে খপ করে লাফিয়ে উঠে আগুন মালতীর সবটুকু আমিকে খপ করে গিলে নিল।

    সেদিন গভীর রাতে বাসরঘরে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পরে মালতী চুপি চুপি বরবাবাজীকে খুঁচিয়ে ঘুম থেকে তুলে বলল, একটাকার কয়েন আছে? সে বেচারী অবাক হয়ে বলল, কেন? মালতী মধুর হেসে বলল, নিয়ম। জানিস না, বিয়ের রাতে বরের থেকে টাকা নিয়ে লক্ষ্মীর ঝাঁপিতে ফেলতে হয়। বর আর কথা না বাড়িয়ে অ্যাটাচি কেস খুলে পার্স বার করে একটা টাকা বার করে দিয়ে পাশ ফিরে নাক ডাকাতে শুরু করল। খানিক শ্যেন দৃষ্টিতে সে দিকে তাকিয়ে থেকে মালতী যখন নিশ্চিত হল যে তার কাছে এখন চরাচর লুপ্ত, তখন খাটের একটা কোণার চাদর হাত দিয়ে অনেকবার টান টান করে মালতী একটা এক্সপেরিমেন্টে ব্যস্ত হল, কাল সকালে যে ঘুম থেকে উঠবে সে আসলে কে? হেড হলে আজ রাতে নবজন্ম হওয়া, “ওয়াইফ অফ অমুক” মালতী আর টেল হলে এই সব কিছুকে ছাপিয়ে, কিছুতেই দাবিয়ে রাখতে না-পারা, বেড়ালের মত নটা প্রাণ-ওলা, আদি ও অকৃত্রিম মানবী মালতী। অনেকবার ঝঁকিয়ে টাকিয়ে টাকাটাকে আকাশে ছুঁড়ে দিয়ে প্রবল উৎকণ্ঠায় তার দিকে তাকিয়ে রইল মালতী।

    গরাদের বাইরের আধ- খাওয়া চাঁদটাও হুমড়ি খেয়ে পড়ল টাকাটা দেখতে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • বাকিসব | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ | ২৮৩৬ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    রিভিউ - Sushmita Datta
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • mila | 237812.58.0178.137 (*) | ১৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:৩০84032
  • স্বগোত্রে বিয়ের ক্ষেত্রে গাছের সাথে বিয়ে হয়না, পরিবারের অন্য কেউ (অন্য গোত্রের, যেমন পিসেমশাই, মেসোমশাই) কন্যাসম্প্রদান করেন :)
    গাছের সাথে বিয়ে হয় বৈধব্যের সম্ভাবনা থাকলে
  • সিকি | 342323.181.670112.216 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৭84040
  • প্রতিবাদ করেও ঘণ্টা হয়। করেছিলাম তো প্রতিবাদ। কী হল তাতে?

    লেখাটা চমৎকার। শুধু এই রকম ভাবা মেয়েদের ভাবনাগুলো মুখ ফুটে বেরোলেই শুনতে হয়, 'তুই বাপু সব জিনিসের মধ্যে নেগেটিভিটি খুঁজে বের করিস। কিছুর ভালো দেখতে পারিস না।
  • amit | 340123.0.34.2 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৫২84034
  • তথাকথিত অন্য গোত্র, কন্যা সম্প্রদান, গাছের সাথে বিয়ে সব গুলো প্রথাই কি আদ্যন্ত রিগ্রেসিভ আর উঠে যাওয়া উচিত নয় ? সেগুলোকে জাস্টিফাই করে কি লাভ ? লোকাচারের নাম করে এসব তো বহুকাল ধরে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে আছে
  • স্বাতী রায় | 90045.201.010123.171 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৬84035
  • এই সব রিগ্রেসিভ-টিভ একটু জাত- পাত-ঠিকুজী - কুষ্ঠি মিলিয়ে হওয়া বিয়ে বাড়ীতে বলে দেখুন না! বাপ-মা-ঠাকুরদা-ঠাকুমা ছেড়ে বর-কনেই রে রে করে উঠবে। যে দেশে ছেলেরা এখনো মা তোমার দাসী আনতে যাচ্ছি বলে বিয়ে করতে যায় আর মেয়েরা নিরবিবাদে মা-বাবার ঋণ শোধ করে শ্বশুরবাড়ী যায়, সে দেষের জন্য রিগ্রেসিভ কথাটার নতুন ডেফিনিশন প্রয়োজন।
  • amit | 340123.0.34.2 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৪84036
  • যারা বিয়ে করে তারা যদি নিজেরা প্রতিবাদ না করে, তাহলে এই জিনিস মেটার নয়, আর সেটা অনেককে করতে হবে, ১ -২ জন নয়।
    আমি নিজে বিয়ের সময় "দাসী আনতে যাচ্ছি" বা "তোমার ভাত কাপড়ের ভার নুলুম " এসব কথা কিস্যুই বলিনি আর বিয়ের সময় শশুরমশায়কে পা ধরতেও দিতে দিইনি। পুরুত মশায় বা একদুজন বৃদ্ধ আত্মীয় একটু গাইগুই করছিলেন বটে, সোজা বলেছিলুম রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করে নেবো , কারোর থাকার দরকার নেই । তারপর আর বিশেষ কেও বাওয়াল করেনি। আড়ালে কে কি বললো, কার কি মোজা ছেড়া যায় ।

    বই টি ওয়ে, আমার সম্মন্ধ করে বিয়ে, প্রেম নয়। সুতরাং ইচ্ছে থাকলে হয়তো উপায় হয়।
  • ন্যাড়া | 676712.137.89.35 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩০84037
  • এসব নিয়মের মানে বের করে, সিঁদুরের অর্থ বের করে সে নিয়ে ডিপ্রেসড হওয়া এখন খুব দুরস্ত হয়েছে। আমিও 'গাধা পিটিয়ে মানুষ' নাটকে গাধা সেজে খুব মার খেয়ে ডিপ্রেসড হয়ে পড়েছিলাম। শেষ অব্দি কে যেন বলল, "ওরে, এ তো নাটক, যার যা পার্ট বলে বেরিয়ে আসবি।"
  • স্বাতী রায় | 90045.201.010123.171 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৩84038
  • "যারা বিয়ে করে তারা যদি নিজেরা প্রতিবাদ না করে, তাহলে এই জিনিস মেটার নয়, আর সেটা অনেককে করতে হবে, ১ -২ জন নয়।" আর "ইচ্ছে থাকলে হয়তো উপায় হয়।" - এইটাই ,এইটাই হল কথা!

    তবে সবার মাঝে একলা হয়ে পথ চলার কষ্ট অনেক, এই যা!
  • sm | 2345.110.895612.39 (*) | ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৮84039
  • কবে থেকে বলে আসছি, এসব শাখা, সিঁদুর,নোয়া, শাড়ি ছেড়ে দিয়ে প্রোগ্রেসিভ হতে।হাতে 'বস' লেখা আংটি পড়ে থাকতে।ও, বস কি জানেন না? অক্ষয়কুমারের বস দেখে নিন।
  • ফুটকি | 2345.110.784512.45 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৪84041
  • যে কাজটা নিজে বিশ্বাস করি সেটা ভীষণ ডাঁট দেখিয়ে করে ফেলতে হয়। যেমন সিঁদুর না পরা, বিয়ের একমাসের মধ্যে শাঁখা পলা খুলে ফেলে তুলে দেওয়া, ননদের বিয়েতে ডানহাত খালি রেখেই বিয়ের কাজ করা ( স্টাইল বস্তুটি অনেক কষ্টে আনতে হয়)। এসব দেখে সামনের লোকজন খুব ঘাবড়ে গিয়ে ভাবে, আচ্ছা! এগুলোই মনে হয় স্বাভাবিক। নইলে এত কনফিডেন্স নিয়ে করে কি করে। তারা প্রতিবাদ করতেই ভুলে যায়।
    সব ক্ষেত্রে না হলেও, ছোটখাট ব্যাপারে এই পদ্ধতি খুবই কাজে দেয়। পরীক্ষা প্রার্থনীয়।
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৩84042
  • আর ওই মুঠো করে চাল নিয়ে পিছনের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া?
    হুঁ হুঁ বাবা, একজন বলেছিল, ওই চাল লুফতে পিছনে একজন জন্টি রোডসকে রাখা দরকার।

    ঃ-)
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৪84043
  • এই যে অদ্ভুত অপমানজনক সম্প্রদানের নিয়ম, ওই যে চুল দিয়ে পা মুছিয়ে দেওয়া, ওই যে হ্যানো ত্যানো হাজারো বখেরা ---সবটাই তো মন দিয়ে দেখলে বোঝা যায় এক ধরণের দাসত্বের চুক্তি, গৃহদাসত্ব, যৌনদাসত্ব, গর্ভদাসত্ব।
    রেজিস্ট্রি করে, নিজেদের শপথ নিজেরা পাঠ করে বিয়ে করার, রীতিমতন বৈধ, আইনী বিয়ে করে ফেলার অপশন সমাজে এসে গিয়েছে বহু বছর।
    সাম্প্রদানিক, চালছোঁড়া, চুলমোছা বিয়ে টিয়ে গুলো তো এতদিনে যাদুঘরে থাকার কথা!!!
    তা হচ্ছে না কেন?
    মনে হয় এর পেছনে ওই লোনের ফর্মের মতন ব্যাপার। লোন যখন নিতেই হবে, তখন ভেবে লাভ? দশরথের মতন চোখকান বুজে সই করে ফিনিশ । ঃ-)
  • | 2345.107.23900.19 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩২84048
  • নিজের কথা বলতে পারি ব্যাঙ্ক দূরস্থান পার্সেও তখন বিশেষ কিছু থাকে না টেনে মেনে বাসভাড়া। কখনো বা দুই এক স্টপেজ হেঁটেও মারতে হয় পরের স্ল্যাবের ভাড়াটার জন্য। আর ডিগ্রিও আমার কিস্যুই নাই তেমন। তা তাতেও ব্যাড অ্যাস হওয়া আটকায় নি। আর সকলের রাস্তায় না হাঁটলে একা হওয়া অবধারিত। তো কি আর করা।
    আমাদের সাবিত্রীদিদি, আমাদের বাড়ি কাজ করতেন, স্বামী খেতে দেয় না মারে প্লাস।অন্য কার সাথে গিয়ে থেকে আসে তাই একদিন মাতাল বরকে ধাক্কা মেরে মাটিতে ফেলে হাতের শাঁখা পলা ঠুকে ঠুকে ভেঙে ফেলেছিলেন। আর পরেন নি।

    আত্মবিশ্বাস যার থাকে তার থাকে। তাকে দেখে একজনও উদ্বুদ্ধ হলেও অনেক।
  • স্বাতী রায় | 781212.194.90078.91 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩২84044
  • জাদুঘরে কে পাঠাবে? কমার বদলে ক্রমশঃ হুজুগ বাড়ছে! আর তার সাথে তাল মেলাচ্ছে কনস্যুমারিজম - সম্পদের বিজ্ঞাপণ আর ভুলভাল আচার -আচরণ দুয়ের মধ্যে কোনটা যে অধিকতর রিগ্রেসিভ সেটাও ভেবে দেখার।

    আর রিচ্যুয়াল নিয়ে কথা বলছি বটে, রিচ্যুয়াল পালটায়। সময়ের সঙ্গে, মানুষের সঙ্গে। কিন্তু মানসিকতাটা? বড় বড় ব্যাপার ছেড়েই দিলাম, ছোট ছোট ব্যাপারে যেগুলো ফুটে বেরোয়?

    বাড়ীতে সাকুল্যে চারজন লোক - শাশুড়ী, ননদ, বর আর নতুন বিয়ে হওয়া বৌটি আর ডাইনিং টেবিল টি ছয়জনের। শেষের তিনজন একেবারে সমবয়সী। বর আর বৌ টি সকাল চারটের সময় উঠে রওনা দিয়ে বাড়ীতে এসে পৌঁছেছে; পথের গণ্ডগোলে রাস্তায় খাবার জোটেনি সেদিন - তুমুল ক্ষুধার্ত দুজনেই। তাও ননদ আর বরকে আগে খেতে দেওয়া হয়। তারা খেয়ে উঠলে তবে বৌ আর শাশুড়ী। বাড়ির বৌ সবার সঙ্গে বসে খাবে কি করে? ননদ আর বরেরও মনে হয় নি এতে কোন সমস্যা আছে। পঁচিশ বছর আগের ঘটনা। মজাটা হল এই কদিন আগেও ঘটনাটা শুনে এক আধুনিকা সদ্য-শাশুড়ী এর মধ্যে কোন সমস্যা দেখেন নি। কি জানি, আমিই হয়তো বেশী ভাবি!
  • স্বাতী রায় | 781212.194.8934.110 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:১৬84049
  • এই আত্মবিশ্বাসী কন্যাদের ( দ + সাবিত্রী) কে শ্রদ্ধা জানালাম.
  • স্বাতী রায় | 781212.194.8934.110 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:১৬84050
  • এই আত্মবিশ্বাসী কন্যাদের ( দ + সাবিত্রী) কে শ্রদ্ধা জানালাম.
  • | 453412.159.896712.72 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:২৬84045
  • ক্রমাগত ঠিক কাজগুলো করে চলা, অফেন্সিভ প্রথায়/কথায় আপত্তি জানানো ছাড়া আর উপায় দেখি না। আমিও সেই ছোট্টবেললায় অতিরিক্ত ঝামেলা মারধোর এড়াতে অঞ্জলী দেবার সময় হাতে ফুল নিয়ে মনে মনে গালি দিতাম। এদিকে সেই বয়সে জানতামই সাকুল্যে দুটো গালি মোটে 'কুত্তি মাগী' আর 'হারামি মাগী' তা সে দুটৈ দুগগা সরস্বতীদের দিকে তাকিয়ে বলতাম। লোকজন ভাবত এইত্তো কেমন মন্ত্র বলে যাচ্ছে। পরে আট্টু বড় হয়ে বললাম আমি কিন্তু মন্ত্র বলি না। তা তাতে একটু ঘ্যাঁওম্যাও হলেও মোটামুটি ঐ 'যাগগে ঠাকুরের সামনে দাঁড়াচ্ছে তো' এমনি ভাব। তারপর একেবারে অস্বীকর করা শুরু করলাম। যাবই না প্যান্ডেলে। বা গেলেও চুপচাপ তাকিয়ে থাকব অন্য দিকে। এইবার লোকের কানে জল ঢুকলো। এইবার শুরু হয়েছিল প্রকৃত অত্যাচার মারধোর করে পথে আনার চেষ্টা :-)

    তো, সেই থেকেই বুঝে গেছি যা করছি তা যেন লোকে একদম স্পষ্ট বোঝে যে কী করছি আর কেন করছি। লেসন লার্ন্ট যাকে বলে আর কি।

    এই খাওয়াদাওয়ার টেবিলে আগে ছেলেদের এইটে নিয়ে রিমি বহুদিন আগে লিখেছিল, গুরুতেই কিছু লোকে কি রে রে করে এলো! কদিন আগে সিস্টারহুডে একজন দুঃখ করে লিখেছিলেন একই অবস্থা নিজের মায়ের কাছে বেড়াতে এসেও হয়েছে। তিনি রাগ করে সাদা ভাত তরকারি টরকারি ছাড়া খেয়ে উঠে গেছেন। তখন অনেকে বললেন তা^রা এমন অবস্থায় হয় নিজের হাতেই নিজের জন্য নিয়ে খেয়ে ফ্যালেন। নয়ত স্পষ্ট বলেন যে তাঁকেও একই সাথে দিতে হবে, নাহলে এইখানে তিনি আর থাকবেন না/আসবেন না।

    তো, আমি তাই বলে, মেয়েরা একটু ব্যাডায়াস হোক।
  • ¥ | 457812.254.013412.243 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:০১84046
  • ফুটকি উবাচঃ “ননদের বিয়েতে ডানহাত খালি রেখেই বিয়ের কাজ করা”।
    কিন্তু সোনায় মোড়া লোহার শেকল তো পরে বাঁ হাতে! সে হাত খালি না করা গেলে কি লাভ?
  • স্বাতী রায় | 781212.194.8934.110 (*) | ২১ নভেম্বর ২০১৮ ১০:০৩84047
  • সে নাহয় আমার আপনার পকেটে দুটো ডিগ্রি আছে, ব্যাংকে দুচারটে পয়সাও আছে - আমরা খারাপ হওয়াটাও অ্যাফোর্ড করতে পারি. আর অবশ্যই আপনি বাঁচলে বাপের নাম.

    কিন্তু চারপাশের মাসি পিসি খুড়তুতো মামাতো ভাইবোনেরা যখন এই একই জাঁতাকলে পড়ে থাকে, বুঝেও বোঝে না কারণ সিস্টেমকে নস্যাৎ করতে যে দম লাগে সেটা তাদের নেই অথচ তার দায় নিজের জীবনে বওয়াটা আছে, তখন নিজের ওই তথাকথিত বাজে হয়ে সবার থেকে আলাদা হয়ে যাওয়াটা নিজেকেই ব্যঙ্গ করে যে !
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:০৭84051
  • হ্যাঁ স্বাতী, আপনার কথা বুঝতে পারছি।
    যাদের সংস্থান আছে, নিজস্ব জীবিকা ও অর্থবল আছে, তাদের পক্ষে যেকোনো সামাজিক নিয়ম এর বাইরে চলে যাওয়া সম্ভব। বস্তুতঃ প্রতিপত্তিশালী হলে, তাঁদের কথাতেই লোকে হ্যাঁ হ্যাঁ করবে, নতুন নিয়ম তৈরী করে নেবে। সেই "সাহেব ও মোসাহেব" কবিতার মতন, "হুজুরের মতে অমত কার? "
    কিন্তু ওইটিই হল চাবিকাঠি। ঐ অর্থ, ক্ষমতা, প্রভাব, প্রতিপত্তি।
    সে ক'জনের থাকে?
    আমাদের সমাজে বহু মহিলার কাছে আজও শ্বশুরবাড়িই আপিস, অন্ন বস্ত্র আশ্রয় দাতা। তো, তারা যে সেখানকার নিয়মকানুন মেনে চলবে, তাতে অবাক হবার কিছু নেই। এতে ঐ মহিলাদের বুদ্ধিবিবেচনা কম ভাবারও কোনো কারণ নেই।
    যারা আপিসে চাকরি করে অন্নসংস্থান করেন, তাদেরও তো আপিসের নিয়মকানুন মানতে হয়।
  • Nahar Trina | 89900.227.90012.5 (*) | ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:২৩84052
  • আচ্ছা এই যে গাছের সাথে বিয়ের প্রথা, সেটা কী শুধু মেয়ের বেলাতেই খাটে নাকি ছেলেরও বিয়ে দেয়া হয়? গাছ পুরুষ না নারী সেটা সনাক্ত করা হয় কী উপায়ে!
  • Atoz | 125612.141.5689.8 (*) | ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৩84053
  • গাছ তো সব নারী। শুধু তালগাছ আর পেঁপেগাছ এর পুরুষ গাছ দেখা যায় কালেভদ্রে। ওসব গাছে পেঁপে হয় না, তাল হয় না।
  • nabanita | 235612.79.565623.200 (*) | ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:৫৬84054
  • যাঁদের সংস্থান আছে আগে তারাই প্রতিবাদ করুন না, অনেক পরিবর্তনই সেখানে শুরু হয়। প্রায় কুড়ি বছর আগে শুধু রেজিস্ট্রী, নো শাঁখা, সিঁদুর, সম্প্রদান ও নো নাম বদলের বিয়েতে কান্না, ঝগড়া, রাগারাগি, সেন্টু সব হয়েছিল, কিন্তু at the end তেমনি ভাবেই বিয়েও করতে পেরেছিলাম। আজও কোনো অনুষ্ঠানে শুধু সধবা বলে invited হলে যাই না, কোনো কাজ সধবা ছাড়া চলবে না হলে part নেই না, সিঁদুর খেলায় অংশ নিই না। একটা মানুষের বেঁচে থাকা দিয়ে অন্যের জীবন নিয়ন্ত্রণ হবে ভাবতেই কেমন disgusting কাগে!

    লড়াই কঠিন , এখনো অপ্রিয় কথা শুনি - জবাবও দেই। নিজের সম্মান নিজের কাছে ঠিক রাখতে পারার জন্যে যে কোনো লড়াই লড়তে রাজি থাকতে হয়। না থাকলে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়, কিন্তু loss টা মারাত্মক।

    সমাজের পরিবর্তন - অত ক্ষমতায় কুলোয় না, তবে সেই যে ছোট বেলায় পড়েছি "আমার যেটুকু সাধ্য করিব তা আমি" তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলি।
  • Atoz | 125612.141.4589.119 (*) | ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ১০:৪৭84055
  • যার সংস্থান আছে, ক্ষমতা আছে, প্রভাব প্রতিপত্তি আছে, সে কেন কোনো কিছু বাদ দেবে? সে তো চতুর্গুণ করবে, সাতদিন ধরে ব্যান্ড পার্টি এনে দেড়লাখি কার্ড করে, তুমুল হৈচৈ খাওয়াদাওয়া, কোটি কোটি টাকার গয়নাপাতি, পাহারার পুলিশ --- আইনী বিয়ের একপর্ব, আচার অনুষ্ঠানের বিয়ের আরেক পর্ব---তাদের তো যত বেশি হয় তত আনন্দ। পারলে হাতীতে চেপে এসে পাঞ্জাবি নাচের পর্বও রাখে, রাজস্থানী ফুলের মন্ডপ থেকে যুদ্ধ করে কনে তুলে নিয়ে যাওয়া না কীসব আছে, সেসবও করে ।
    আর সিঁদুর খেলা? ডবল করবে আরও। কড়োয়া চৌথের চালুনি পর্যন্ত এনে ফেলবে। এইসব জিনিস সংস্থানওয়ালারাই তো বেশি করে।
  • স্বাতী রায় | 781212.194.5678.97 (*) | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:২৪84056
  • Atoz সেটাই হল কথা। যারা পারছেন, তাঁরা এখন প্রি-ওয়েডিং ফটো শুট দিয়ে শুরু করছেন। ব্যতিক্রম নেই বলছি না, তবে তাঁরা ব্যতিক্রমই। যাদের সম্বল নেই তাদের নিয়মটুকুর প্রতি আনুগত্যই সম্বল, ভয়েই হোক বা ভক্তিতেই হোক। যারা ভয়ে মানে, সেখানেও প্রতিবাদের কথাগুলো বার বার "ও কি আর আমাদের মত ঘরে মানায় " বা "তোর কি! তুই তো চাকরী করিস, আমি কিসের জোরে বলব রে" তে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসে।
  • pi | 4512.139.122323.129 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩২84061
  • আবাপরর খবরে ঐ মেয়েদের মানিয়ে নিতে শেখানোর , স্যাক্রিফাইস করতে শেখানো ইত্যাদি পড়ে একটা পুরানো প্রশ্ন মনে পড়ে গেল। এগুলো পরিবারে, সমাজে শেখানো হয় বটে, সিনেমা সিরিয়ালেও। কিন্তু স্কুলে ? পাঠ্যবইয়ে , কতটা ? ঐ রোল বিভাজনের স্টিরিওটিপিকাল ছবিপত্তর থাকা ছাড়া এরকম শিক্ষা কোথায় কীভাবে দেওয়া হয় ?
  • | 670112.210.894512.2 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০৮84062
  • ওব্বাবা আমাদের ছোট্ট মফস্বলে দিদিমণিরা মেয়েদের হেসেহেসে গল্প করতে রাস্তা দিয়ে যেতে দেখলেও আচ্ছাসে কথা শোনাতেন। বাড়িতে বা রাস্তায় গার্জেনদের দেখে নালিশ করা ইত্যাদি খুব ছিল। আমার সম্পর্কে রেগুলার কমপ্লেইন ছিল আমাদের ভাগাড়পাড়ার দিদিমণিদের যে আমি 'কি উদ্ধত', রাস্তায় ওঁদের দেখে মাথা নীচু করি না। সামনে দিয়ে মাথা সোজা রেখে বেরিয়ে যাই।

    এবার সে আমি বেঁটে বলেই হোক কি স্বভাবত 'উদ্ধত' বলেই হোক আমি দিব্বি মুচকি হেসে পরিচিতির ভাব করে বা ড্যবড্যাবিয়ে দেখে চলে যেতাম। আর মা মাঝে মাঝেই স্কুল থেকে এসে দুমাদ্দুম দু'ঘা দিয়ে নিত।
    এই যে অকারণেই অবনত হয়ে থাকো, নমনীয় হও এগুলোই তো মগজ একেবারে ধোলাই করে ছাড়ে।
  • | 453412.159.896712.72 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০১84057
  • "মানিয়ে নেওয়ার মন্ত্রটাই ব্যাধি’

    "পরিবারকে বারবার সমস্যার কথা জানিয়েছেন। প্রতি বারই উপদেশ দেওয়া হয়েছে, আর একটু ধৈর্য ধরতে। পরিস্থিতি প্রতিকূলে গেলে ‘মানিয়ে’ নেওয়ার পরামর্শই জুটেছে কপালে। কিন্তু ধৈর্য ধরা বা মানিয়ে নেওয়ার যে কী পরিণতি হতে পারে, বারবারই সেটা দেখা গিয়েছে।"

    https://www.anandabazar.com/calcutta/society-still-treats-woman-as-an-item-not-as-human-being-1.908438?ref=calcutta-new-stry
  • Kaktarua | 900900.230.237812.230 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১৭84063
  • বাবা রে Pi!! স্কুলে মগজ ধোলাই ছিল না!!! আমাদের একটা মোরাল সাইন্স ক্লাস ছিল ক্লাস ৯ অব্দি। যারা যারা হলি চাইল্ড এ পড়েছে সবাই জানে এই বিখ্যাত ক্লাস টার কথা। দুটো কাজ ছিল ক্লাস টার। এক প্রেম করা কত খারাপ বোঝানো, আর ভালো মেয়ে হওয়ার শিক্ষা। সেটা হলো ওই মুখ বুজে, মাথা নিচু করে, বেশি প্রশ্ন না করা। আমরা লাস্ট বেঞ্চে বসে খ্যাক খ্যাক করলেও কারো যে মগজ ধোলাই হয়নি সে কথা বলতে পারি না।
  • Swati Ray | 781212.194.6734.34 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৬:৫২84064
  • বাপরে পাই ! বই নিয়েই আমার ততটা কমপ্লেন নেই; হয়তো তখন জেন্ডার স্টিরিওটাইপটা এত কমন ছিল যে বইতে আলাদা করে চোখে পড়ে নি. কিন্তু স্কুলে যে সকাল সন্ধ্যে ভাল মেয়ে হতে শেখাত! আমার ভারী ইচ্ছে হত বড় হয়ে জেরোম কে জেরোমের খুড়োমশাই হতে , কিন্তু সবাই খালি বলত সীতা, সাবিত্রী সমান হও!

    তবে একটা ব্যাপারে আমি বিপের সঙ্গে একদম. আমাদের ছেলে মেয়ে দৃদলকেই কিন্তু বড্ড মানিয়ে চলা শেখান হয়. একেবারে ঠুলি পড়ান ঘোড়া হতে . মেয়েদের ক্ষেত্রে পরিমাণ টা বেশী এই যা!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন