এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা  শনিবারবেলা

  • কাদামাটির হাফলাইফ

    ইমানুল হক
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ২২ জানুয়ারি ২০২২ | ২১৫৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৮ (৪ জন)
  • পর্ব ১-৩ | পর্ব ৪-৬ | পর্ব ৭-৯ | পর্ব ১০-১২ | পর্ব ১৩-১৫ | পর্ব ১৬-১৮ | পর্ব ১৯-২১ | পর্ব ২২-২৪ | পর্ব ২৫-২৭ | পর্ব ২৮-২৯ | পর্ব ৩০-৩১ | পর্ব ৩২-৩৩ | পর্ব ৩৪-৩৫ | পর্ব ৩৬-৩৭ | পর্ব ৩৮-৩৯ | পর্ব ৪০-৪১ | পর্ব ৪২-৪৩ | পর্ব ৪৪-৪৫ | পর্ব ৪৬-৪৭ | পর্ব ৪৮-৪৯ | পর্ব ৫০-৫১ | পর্ব ৫২-৫৩ | পর্ব ৫৪-৫৫ | পর্ব ৫৬-৫৭ | পর্ব ৫৮-৫৯ | পর্ব ৬০-৬১ | পর্ব ৬২-৬৩ | পর্ব ৬৪-৬৫ | পর্ব ৬৬-৬৭ | পর্ব ৬৮-৬৯ | পর্ব ৭০-৭১ | পর্ব ৭২-৭৩ | পর্ব ৭৪-৭৬ | পর্ব ৭৭-৭৮ | পর্ব ৭৯-৮০ | পর্ব ৮১-৮২-৮৩ | পর্ব ৮৪-৮৫ | পর্ব ৮৬-৮৭ | পর্ব ৮৮-৮৯ | পর্ব ৯০-৯২ | পর্ব ৯৩-৯৪ | পর্ব ৯৫-৯৬ | পর্ব ৯৭-৯৮ | পর্ব ৯৯-১০০ | পর্ব ১০১-১০২ | পর্ব ১০৩-১০৪ | পর্ব ১০৫-১০৬ | পর্ব ১০৭-১০৮ | পর্ব ১০৯-১১০ | পর্ব ১১১-১১২ | পর্ব ১১৩-১১৪
    আরে, কাদা না থাকলে মানুষ তো বেঁচেই থাকতে পারতো না। শস্য সব্জি কিছুই কি তেমন মিলত? ফুল ফল অনেক কিছুই? কাদা আর বালির মিশেলেই তো জীবনের যত মার প্যাঁচ।

    পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলের গ্রামজীবনের স্মৃতিচিত্রণ।


    পর্ব ৫০

    ডিসেম্বরের শেষ। মানিকতলা খালপাড়ে ২৩১ জন শিশু কিশোর কিশোরীকে আমরা পড়াই। সেখানে গেছি। ওদের নাটক শেখানো হবে। ন্যাশন্যাশ স্কুল অফ ড্রামার একজন শিক্ষার্থী সমেত কয়েকজন এসেছেন স্বেচ্ছায় শেখাতে। ওদের ডেকে হেঁকে জড়ো করতে গিয়ে দেখি, কয়েকজন রান্না রান্না খেলছে। ছেলেমেয়ে মিলে। গায়ে সোয়েটার কেউ পড়েনি। নিজে শীতকাতুরে। দেখে ভয় লাগে, ঠান্ডা লেগে যাবে। ওই পোশাক পরেই নাটকের প্রশিক্ষণে চলে এল। ওদের দেখে মনে পড়ল, আমরাও তো শীতের সন্ধ্যায় ঘেমে যেতাম লুকোচুরি খেলে। খড়ের গাদার আড়ালে। নিজেদের খড়ের কুটিতে ঢেকে নিতাম কেউ কেউ, যাতে খুঁজে না পায় বিপক্ষ দল। লুকোচুরি খেলা হত দলবেঁধে। এদল সেদল। ছেলে মেয়ে একসঙ্গে। সংখ্যা সমান সমান। বেশি হয়ে গেলে সে হত 'ঘোল-টপকা'। মানে দু’দলের হয়েই সে খেলবে। খেলায় কাউকে বাদ দেওয়া যায় কি? ওর মন খারাপ হবে যে। কমা বা দুর্বল খেলি/খেলোয়াড়কেও 'ঘোল-টপকা' করা হত। ওকে ছোঁয়া না ছোঁয়া সমান। খেলতে খেলতে খুব গরম লাগত। সোয়েটার বা চাদর খুলে ফেলা হত। জুতোর তো বালাই নাই। খেলার মাঝে অনেকেই ঘেমে নেয়ে একসার। খেলা শেষে গা মুছে বাড়ির ভয়ে সোয়েটার বা চাদরের খোঁজ। বাড়ি তো আর এভাবে যাওয়া যাবে না। পিঠে পড়বে ঘা কতক।

    আমাদের অনেকেরই শীতকাল জুড়ে ফাটা পা। কোনো কৃষকের পা মনে হত দেখে। আমাদের বলতে আমার বাড়ির মধ্যে আমার। অন্যরা সচেতন। যেকোনো সুবিধা বঞ্চিত বাড়ির ছেলেমেয়েদের জীবন কাটিয়েছি আমি। দেখতে কালো হওয়ার সুবিধা ও অসুবিধা দুইই ভোগ করেছি। সুবিধাই বেশি। সারাদিন টইটই কর। মাঠে ঘাটে বনে বাদাড়ে ঘোর। শুধু খাওয়ার সময় হাজিরা। তাও মাঝে মধ্যে এদিক ওদিক খেয়ে নিতাম। আমাদের একটা ধান ভানার (ভাঙার) কল ছিল। তাতে একটা পাইপ দিয়ে গরম জল বের হত। সেই গরম জল একটা ড্রামে রাখা থাকত‌। গরম জলে পা ধুয়ে জুতো পরে বাড়ি ঢোকার নিয়ম।

    কিন্তু আমার জুতো প্রায়ই খুঁজে পাওয়া যেত না। কোথায় রেখেছি কে জানে!
    সমস্যা হত রাতে, বড়দার কাছে বৈঠকখানা ঘরে শুতে যাওয়ার সময়। দাদা ফিটফাট ধোপদুরস্ত। মেজো ভাইটি এক্কেবারে উল্টো। চুলের সিঁথির ঠিক নাই। জামার বোতাম দাঁতে কাটা। সোয়েটারে লুকোচুরি খেলার সাক্ষী দু-একটা কুটি-কে কি লেগে থাকতেই হবে!
    আর সবচেয়ে সমস্যা জুতো। সে তো নাই। ওদিকে দাদা ডাকছে। আর আমি? পাগলের মত জুতো খুঁজছি। এক পাটি কোনোমতে পেলাম তো আরেক পাটি নেই। দৈনিক এক কাহিনি। অন্যের জুতো যে পরে যাব, তারও উপায় নেই, পায়ে গলবে না, গললেও দাদা চিনে ফেলবে। ওহ্ কী যন্ত্রণা। এদিকে কয়েকজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জুতো যদি বা পাওয়া গেল, ফাটা পায়ের কী হবে?
    - 'তোকে না ভাল করে ঘষতে বলেছিলাম। বোরোলিনটা কোথায় হারালি?'
    - 'বোরোলিন লাগাসনি কেন?'
    বোরোলিন সবার প্রিয়, আমার দু’চক্ষের বিষ। বোরোলিন কি জুতো যে খুঁজলেই পাবো- সে কোথায় গেছে, সেই জানে! এইসব কথা মনে মনে।

    মুখ গুঁজে থাকি। এবং বুজে। চুপ করে গিয়ে একপাশে শুয়ে পড়ি। দাদা তো যেমন শোবে, ঘুমবে তেমন ভাবেই সারারাত। আমি তো এপাশ ওপাশ। এবং মাঝে মাঝে স্বপ্নেই গুলি ডাং মার্বেল ফুটবল। এবং বুঝতেই পারছেন সে সব হাত পা ছোঁড়াছুড়ির অনিবার্য ফল।

    আরেকটা জিনিস ছিল, আমার মত বেশ কিছু বালকের পায়ের বুড়ো আঙুলের পরের আঙুলটি রক্তাক্ত থাকত সবসময়। যা দেখি তাতেই লাথি। চলমান ফুটবলার সব। রাস্তাঘাটে ঘটিংয়ে (এক ধরনের ছোট পাথরের টুকর বা জমাট বাঁধা মাটিকে ঘটিং বলা হত) পা লেগে আঙুলের নখ উঠে যেত। গোটা শীতকাল রক্তাক্ত ওই আঙুল দুটি। মায়ের চোখে পড়লে ব্যান্ডেজ। তাতে সমস্যা বাড়ত। জল টল লেগে পেকে যেত। নবম শ্রেণিতে না ওঠা পর্যন্ত ওই সমস্যায় ভুগেছি। আমার মত একপাল ছেলে এ-রকম ছিল। আমি তাদের ফটিক সর্দার।

    পর্ব ৫১

    আমরা পৌষ মাস জুড়ে ফিস্টি করতাম। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত এর নাম ছিল পৌষালি। পৌষালি মানে নিজের নিজের ঘর থেকে চাল ডাল নুন তেল হলুদ লঙ্কা পেঁয়াজ নিয়ে এসে একসঙ্গে রান্না। মাংস হত কদাচিৎ। ঘুঘু বা চড়ুই বা কোনো পাখি মারতে পারলে। না হলে ডিমের ঝোল। ডিমও ম্যানেজ করা। আমি আর নজরুল বলে একজন তালপুকুরের পায়ে হাঁসেদের ডিম পাড়ার একটা জায়গা আবিষ্কার করেছিলাম। এক দু’দিন অন্তর ছয়-সাতটা ডিম পেতাম। কাদের হাঁস কে জানে।

    ১৯৭৭ এর পর প্রাথমিকে ইংরেজি ভাষার বিরুদ্ধে আন্দোলন হল, বাবুয়ানির বিরুদ্ধে কথা উঠল, 'সহজপাঠে' ভদ্রলোকদের নিম্নবিত্তদের তুমি বা তুই বলায় প্রশ্ন উঠল, কিন্তু ইংরেজিয়ানাও বেড়ে গেল।

    লোকে কথায় ইংরেজি মেশাতে শুরু করল নেতাদের দেখাদেখি। 'পৌষালি' প্রথমে ফিস্টি পরে ফিস্ট এবং আরো পরে পিকনিক হল। পোল্ট্রি ও ব্রয়লারের কারণে মাংস ঢুকে গেল ফিস্টে।
    আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটল।

    এক, খেতমজুর ধর্মঘট মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে। এতে অবস্থাপন্ন চাষিরা গোয়ালকাড়া আন্দোলন শুরু করলেন। খেতমজুররা দাবি করলেন, দু-টাকা মজুরি। দু-কেজি চাল। তখন মজুরি ছিল দিনে ৫০/৬০ পয়সা। অবস্থাপন্ন কংগ্রেসিরা মানলেন না। একজন আরেকজনের গোয়াল পরিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এর নাম গোয়ালকাড়া আন্দোলন। প্রায় দু’মাস চলে ধর্মঘট। তখন গাঁয়ে খেতমজুর বেশি। চাষি কম। বারো আনা মজুর, চার আনা মালিক।

    বাবার ওপর চাপ বাড়ল। খেতমজুরদের সংসার চলছে না। আমাদের ও আরো দু-এক ঘর থেকে সহায়তা করা হল। ঘরে চাপ বাড়ল, আর্থিক চাপ। তার পরিণতিতে ২৬ টাকা ৭৫ পয়সা দিতে না পারায় আমার স্কুলের মার্কশিট আটকে গেল। তখন ২৩/২৪ ডিসেম্বর রেজাল্ট বের হত। ক্লাসে প্রথম হওয়ায় মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের টাকা দিতে হত। বাকি ১৫ টাকা পরীক্ষা ইত্যাদির ফি। আরো কয়েকটি ঘটনা ঘটে।

    ক্ষমতার কেন্দ্র এখন সিপিএম। কংগ্রেসের লোকেরা ধর্মে ঢুকলেন। ক্লাবে রাজনীতি ঢুকেছে আমাদের গাঁয়ে অনেক পরে। কিন্তু বিচার আচারে রাজনীতি উঁকি দিচ্ছে। সে নিয়ে পার্টির সঙ্গে সংঘাত বাধছে বাবার। এদিকে মসজিদ নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে। ওদিকে দুর্গাপূজা শুরু হল। দু’দিকেই কংগ্রেসের লোক অথবা সিপিএম থেকে বসে যাওয়া লোক। আগে গ্রামে পূজা ছিল ওলাইচণ্ডী। হিন্দু মুসলমান সবার। এখন একটু আলাদা ঝোঁক এল। মসজিদ এবং দুর্গাপূজা পশ্চিমবঙ্গে কেন বেড়েছে তার সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ জরুরি। আগে ছিল শিব এবং পীরের মাজার রাজ। এখন এল দুর্গাপূজা ও মসজিদ জমানা।

    আরেকটা জিনিসও হল গ্রামে দারিদ্র্য কমতে শুরু করল। গ্রামের স্কুলে মেয়েদের সংখ্যা বাড়ল।
    মেয়েরা স্কুল গেলে বছরে দুটো করে স্কার্ট পাবে। সবুজ স্কার্ট সাদা জামা। জামার রঙ দেখা তখন আজকের মত শুরু হয়নি।

    তফশিলি ছাত্র ছাত্রীরা বছর শেষে ২৪০ টাকা পেতে শুরু করলেন। মাসে মাসে ২০ টাকা। আসত না। মার্চ মাসে ২৪০ টাকা। বাবার রোজগারও বছরে এত না। আট আনা মজুরি ছিল দিনে। সারা বছর কাজ নাই। তখন তো ১০০ দিনের কাজ, স্ব-রোজগার যোজনার কথা ভাবে নি দেশ। ১৯৭৭ এর পর এল কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি। ইঞ্জিরি নাম ফুড ফর ওয়ার্ক। মোরারজি দেশাই তথা জনতা সরকারের সিদ্ধান্ত। মাটি কাটা হল সেচ খালের। উঁচু করে দাগ রাখতে হত। সেটা মেপে সেই মোতাবেক গম দেওয়া। আজকের মত কাজ কর বা না কর সবার সমান মজুরি নয়।

    এই কাজ দেখতে আমরা ছোটরা ভিড় করতাম।

    কাজটা হচ্ছিল আমাদের জুনিয়র হাইস্কুলের পাশেই। আমাদের স্কুল ব্যাগে কাঁধে ঝুলত। পিঠে স্কুল ব্যাগ অনেক পরের ব্যাপার। নগরের সঙ্গে শহরের, শহরের সঙ্গে গঞ্জের, গঞ্জের সঙ্গে বাজারের, বাজারের সঙ্গে হাটের এবং এসবের সঙ্গে গ্রামের দুস্তর ব্যবধান ছিল।

    জুতো কেনা হত পৌষ মাসে‌ দোকানে গিয়ে। দুই খান করে জুতো। একটি শীতের জন্য কাপড়ের জুতো। আরেকটি বর্ষার বেল্ট দেওয়া। তবে স্কুলে মাস্টারমশাইরা ছাড়া কেউ জুতো পরে আসতেন না।

    কাজীপাড়ার মাস্টারমশাইয়ের ছেলে মুকুল ওরফে নুরুল আমিন, খুব ফিটফাট থাকত। ওর মা ওকে জুতো পরিয়ে স্কুল পাঠাল সপ্তম শ্রেণিতে। সে নিয়ে কী হাসিঠাট্টা। বাইরে না গেলে বা আত্মীয় বাড়ি না গেলে আবার জুতো কী!

    আমি তো এই সেদিনও গ্রামে গেলে খালি পায়ে হেঁটেছি। যদিও গ্রামে এখন আর খালি পায়ে হাঁটেন না। শিশু শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি সবার পায়ে জুতো। সরকার থেকে এখন বছরে দু'বার জুতো ও ইউনিফর্ম দেয়। আমাদের সময় জুতো পরা ছিল বাবুয়ানি।

    পুনশ্চ: আজ সকালে খবর পেলাম মন্টু মারা গেল। মন্টুর বাবা ছিলেন কবি ও লেখক। মন্টু খুব লম্বা ছিল। নাম ছিল লম্বু। মন্টু বুট পায়ে ফুটবল খেলত। কথা বলত এই ভাবে, শোন না বে।
    লুকিয়ে বিড়ি খেতে শেখে নবম শ্রেণিতে। সেহারা স্কুলে আমাদের সঙ্গে পড়ার সময়। মন্টুর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, নজরুলের অনেক লেখা গান রবীন্দ্রনাথের নামে চলে। এটা যে ঠিক নয়, মন্টুকে আমৃত্যু বোঝান গেল না। সুগারের প্রকোপে চোখটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। কালাম চলে গেছে মাস ছয়েক আগে। কালামের স্কুল জীবনের নিকটতম বন্ধু মন্টুও আজ চলে গেল। নজির চাচার ছেলে। বাবার মতই হাতের লেখাটি ছিল দেখার মত। খুব সুন্দর। মন্টু আর কালাম আমাদের প্রথম স্কুল পালানো সিনেমা দেখার টিকিটের বাড়তি টাকা জুগিয়েছিল। দেখতে গিয়েছিলাম, 'বাঞ্ছারামের বাগান'। বর্ধমান শহরের সবচেয়ে ভাল হল, রূপমহলে। গিয়ে দেখি নেই। শুক্রবার যে ছবি পাল্টায় কে জানে!

    'বাঞ্ছারামের বাগান' কর মুক্ত ছবি। একটাকা করে টিকিট। এরপর হিন্দি ছবি। আমি হিন্দি ছবি দেখব না। সবাই মিলে ছুটতে ছুটতে এক কিমি দূরে 'বিচিত্রা'। সেখানে সবসময় বাংলা ছবি। কলকাতার পূর্ণ, প্রাচী-র অনুসরণে। এবং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ছাড়া কারো গান বাজে না। গিয়ে দেখি তরুণ মজুমদারের 'দাদার কীর্তি'। কিন্তু তৃতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণি টিকিট শেষ। তৃতীয় শ্রেণি তখন ৭৫ পয়সা। দ্বিতীয় শ্রেণি একটাকা চার আনা। প্রথম শ্রেণি দু’টাকা। আর ব্যালকনি বেশ দামি। তিন টাকা বারো আনা।

    বাকিদের পকেটে তো এত পয়সা নেই। ত্রাতা হয়ে দেখা দিল মন্টু, কালাম, গোলাম রসুল। পরে দিলেই হবে। দেখি তো। দেখলাম। দেখে মহুয়া রায়চৌধুরীর ফ্যান হয়ে কেঁদে ভাসালাম। প্রেমের বিরোধী আমার মনে দোলা দিয়ে গেল ছবিটি। কালো মেয়ের ভক্ত হতে আরো সাহায্য করল।


    (ক্রমশঃ)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    পর্ব ১-৩ | পর্ব ৪-৬ | পর্ব ৭-৯ | পর্ব ১০-১২ | পর্ব ১৩-১৫ | পর্ব ১৬-১৮ | পর্ব ১৯-২১ | পর্ব ২২-২৪ | পর্ব ২৫-২৭ | পর্ব ২৮-২৯ | পর্ব ৩০-৩১ | পর্ব ৩২-৩৩ | পর্ব ৩৪-৩৫ | পর্ব ৩৬-৩৭ | পর্ব ৩৮-৩৯ | পর্ব ৪০-৪১ | পর্ব ৪২-৪৩ | পর্ব ৪৪-৪৫ | পর্ব ৪৬-৪৭ | পর্ব ৪৮-৪৯ | পর্ব ৫০-৫১ | পর্ব ৫২-৫৩ | পর্ব ৫৪-৫৫ | পর্ব ৫৬-৫৭ | পর্ব ৫৮-৫৯ | পর্ব ৬০-৬১ | পর্ব ৬২-৬৩ | পর্ব ৬৪-৬৫ | পর্ব ৬৬-৬৭ | পর্ব ৬৮-৬৯ | পর্ব ৭০-৭১ | পর্ব ৭২-৭৩ | পর্ব ৭৪-৭৬ | পর্ব ৭৭-৭৮ | পর্ব ৭৯-৮০ | পর্ব ৮১-৮২-৮৩ | পর্ব ৮৪-৮৫ | পর্ব ৮৬-৮৭ | পর্ব ৮৮-৮৯ | পর্ব ৯০-৯২ | পর্ব ৯৩-৯৪ | পর্ব ৯৫-৯৬ | পর্ব ৯৭-৯৮ | পর্ব ৯৯-১০০ | পর্ব ১০১-১০২ | পর্ব ১০৩-১০৪ | পর্ব ১০৫-১০৬ | পর্ব ১০৭-১০৮ | পর্ব ১০৯-১১০ | পর্ব ১১১-১১২ | পর্ব ১১৩-১১৪
  • ধারাবাহিক | ২২ জানুয়ারি ২০২২ | ২১৫৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুতপা দেব। | 2402:3a80:198e:57ec:878:5634:1232:5476 | ২২ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৪১502990
  • 'ঘোল টোপকা ' আমরা বলতাম দুধ ভাত। 'ও 'দুধ ভাত মানে সব খেলায় আছে সে কিন্তু out ও হয় না,আবার হিসাবেও নেই।
  • Emanul Haque | ২২ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৫৯502991
  • জানানোর জন্য ধন্যবাদ
  • reeta bandyopadhyay | ২২ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:২৪502993
  • অপূর্ব অপূর্ব এবং অপূর্ব.......এত ভালো লাগছে পড়তে ।
  • Emanul Haque | ২২ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:৩০502994
  • ধন্যবাদ @sutapa deb @reeta bandyopadhyay
  • আকিকুল ইসলাম | 223.191.53.37 | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ০০:০৬502995
  • বই আকারে আবার পড়বো পুরোটা। এমনিতেই আপনার লেখা অসাধারণ লাগে কিন্তু এ যেন মাটির গন্ধ লাগা ছেলেবেলাকে ছুঁয়ে যায়! আপনি লিখে যান আরও!
  • Sangrami Lahiri | 2600:387:5:807::58 | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৩:১৮503000
  • একেবারে অন্য ঘরানার লেখা। মাটির কাছাকাছি। সুন্দর। 
  • Emanul Haque | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ১০:৫৯503016
  • @Akikul Islam @Sangrami Lahiri ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
  • Ranjan Roy | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৩৮503036
  • আমরাও পার্কসার্কাসে ছাদে গিয়ে খেলার সময় বা গার্লস স্কুলে 'দুধ-ভাত' বলতাম। কেউ বয়সে ছোট বা বাড়তি-- নিয়ে নে, ও দুধভাত।
     
    ফুড ফর ওয়ার্ক বোধহয় ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রোগ্রাম ছিল। কিন্তু  মুজিবরের বাংলাদেশ সরকার বোধহয় ভারতের আগে এই প্রোগ্রাম নিজের দেশে শুরু করেছিল--এমনি কিছু মনে পড়ছে। তবে আজকাল স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গেছে। আমার ভুল হতে পারে।
  • Ranjan Roy | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৩৮503035
  • আমরাও পার্কসার্কাসে ছাদে গিয়ে খেলার সময় বা গার্লস স্কুলে 'দুধ-ভাত' বলতাম। কেউ বয়সে ছোট বা বাড়তি-- নিয়ে নে, ও দুধভাত।
     
    ফুড ফর ওয়ার্ক বোধহয় ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রোগ্রাম ছিল। কিন্তু  মুজিবরের বাংলাদেশ সরকার বোধহয় ভারতের আগে এই প্রোগ্রাম নিজের দেশে শুরু করেছিল--এমনি কিছু মনে পড়ছে। তবে আজকাল স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গেছে। আমার ভুল হতে পারে।
  • Ranjan Roy | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৩৯503037
  • ধেত্তেরি! ফের দু'বার!
  • Emanul Haque | ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ২২:৫২503041
  • ধন্যবাদ। দুধেভাতে ও বলা হতো। তবে ঘোলটপকা ছিল বেশি চালু।
    ভালো থাকবেন
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন