এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  আলোচনা  বিবিধ

  • NGO পাঁচালী

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৬ আগস্ট ২০২৪ | ২৬৫ বার পঠিত
  • ngo পাঁচালি 1 | ngo পাঁচালি 2


    গৌরচন্দ্রিকা

    স্বাধীন ভারতের শুরুতে উন্নয়নের কাজকর্ম নিয়ে কথা উঠলে আগে শোনা যেত দুটো সেক্টর — পাবলিক এবং প্রাইভেট। এখন যুক্ত হয়েছে আরও একটি নাম এনজিও বা নন-গভর্মেন্ট সেক্টর।
    আশা করা হয় এদের কাজকর্মে সরকারি লালফিতাশাহী খুব কম হবে, প্রাইভেট সেক্টরের মত কস্ট এফিশিয়েন্ট হবে। আবার এরা সরকারি সেক্টরের মত ডেভলপমেন্ট ওরিয়েন্টেড হবে, প্রাইভেট সেক্টরের মত প্রফিট-ওরিয়েন্টেড হবে না। অর্থাৎ তারা দুটো সেক্টরের ভাল গুণগুলো আত্মসাৎ করবে, খারাপটা বাদ দেবে।

    এসবের ফলে সাধারণ জনমানসে এনজিও বলতে যে ছবি তৈরি হয়েছে সেটা আনন্দমঠের সন্ন্যাসী না হোক, অন্ততঃ রামকৃষ্ণ মিশন বা ভারত সেবাশ্রমের সন্ন্যাসীর কাছাকাছি। কাজেই এনজিওর কর্মী বা কর্মকর্তাদের গাড়ি চড়তে দেখলে আমাদের চোখ কপালে ওঠে। প্লেনে চড়া? স্যাক্রিলেজ মশাই।

    কারণ, সব এনজিওকে এক গোত্রে ফেলা বা এক রঙে দেখার পূর্বাগ্রহ। আচ্ছা, এনজিও’র ও রকমফের আছে? আছে বৈকি। মুখ্যতঃ দুরকম — এজিটেশনাল (আন্দোলনকারী) এবং ডেভেলপমেন্টাল (উন্ননয়নমুখী)।

    ২ এনজিও’র জাতবিচার

    ২.১ এজিটেশনাল (আন্দোলনকারী)

    এঁরা সমাজের বিভিন্ন অংশের স্বার্থ- মুখ্যতঃ পরিবেশ এবং মানবাধিকার নিয়ে আন্দোলন করে থাকেন। এবং যেকোন সরকার — কংগ্রেস, বিজেপি বা বাম সরকার — এঁদের নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে থাকে।

    তারা এদের আটকাতে গ্রেফতার করা ছাড়াও প্রধান যে কাজটা করে তা হল বিরূপ প্রচার করে জনমানসে একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করা। তারও দুটো রকম আছে।
    প্রথমটি উন্নয়নবিরোধী বলে লেবেল লাগানো, অথবা মাওবাদী, বিদেশের টাকা খেয়ে দেশের সর্বনাশ করছে — এমন বলে দেয়া।

    বামেরা গোড়া থেকেই এনজিও আন্দোলনের প্রতি বিরূপ। তাঁদের মতে এরা সংস্কারবাদী। কিছু পাইয়ে দিয়ে “শোষিতের শ্রেণীঘৃণা” ভোঁতা করে দেয়। এরা বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদের পঞ্চম বাহিনী। সি আই এ বা ক্রিশ্চান মিশনারীদের থেকে টাকা পায়।

    যেমন নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনে সর্দার সরোবর পরিযোজনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে মেধা পাটকর হলেন লোক খ্যাপানো উন্নয়ন বিরোধী। ভীমা কোরেগাঁও সমাবেশে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ কৃষ্ণা ভরদ্বাজের মেয়ে সুধা ভরদ্বাজ – যিনি বস্তারে নারীশ্রমিকদের নিয়ে কাজ করছেন — হয়ে গেলেন মাওবাদী। ঝারখন্ডে আদিবাসীদের মধ্যে কয়েক দশক ধরে কাজ করা অশীতিপর বৃদ্ধ ফাদার স্ট্যান স্বামী বিনা বিচারে মুম্বাইয়ের জেলে মারা গেলেন।

    অরুন্ধতী রায় এবং গৌতম নওলাখা আর হুইল চেয়ারে বসে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি পড়ানো অধ্যাপক সাঁইবাবার কথা ছেড়েই দিলাম। দু’দশক আগে ছত্তিশগড়ে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি নিয়ে গবেষণা করা ডাক্তার বিনায়ক সেনের নাম অনেকের মনে পড়বে। রায়পুর শহরে তাঁর এনজিও’র নাম ছিল “রূপান্তর”।

    কংগ্রেসের ডাকসাইটে নেতা চিদাম্বরম তখন কেন্দ্রে হোম মিনিস্টার। তেনার কৃপায় গান্ধীবাদী ডঃ সেন জেলে রইলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলেন। হাইকোর্টে জামিন হয়নি। সুপ্রীম কোর্টে গিয়ে রেহাই পেলেন।

    আরেকজন সুপ্রীম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এম সি শীতলবাদের নাতনি তিস্তা শীতলবাদ। উনি কমব্যাট কমুনালিজম বলে একটি এনজিও এবং পত্রিকা চালাতেন। গুজরাতের দাঙ্গায় যতগুলো কেসে বিচার হয়ে কিছু শাস্তি হয়েছে তার পেছনে পরিশ্রম তিস্তার। কিন্তু গ্রহের ফেরে তাঁকেও সুপ্রীম কোর্টের হস্তক্ষেপ না হওয়া পর্য্যন্ত জেলের ভাত খেতে হয়েছে।

    আরেকজন আছেন হর্ষ মন্দর। ছত্তিশগড়ে কমিশনার ছিলেন। ইস্তফা দিয়ে মানবাধিকার এনজিও চালাচ্ছেন। গুজরাতের দাঙ্গার পর ভারতসুন্দরী থেকে অভিনেত্রী( শ্যাম বেনেগালের ‘জুনুন’) এবং পরে সাআমাজিক কার্যকর্তা হওয়া নাফিসা আলীকে নিয়ে কারবাঁ-এ-মহব্বত পদযাত্রা শুরু করেছিলেন। এখনও বিভিন্ন দাঙ্গাপীড়িত অঞ্চলে পৌঁছে যান। সুপ্রীম কোর্টে পিটিশন করেন।
    সে যাকগে, এঁরা যা করছেন সব জেনেই করছেন, পরিণামও জানেন।

    কিন্তু মানবাধিকার বা পরিবেশ নিয়ে কথাবলা এনজিও মানেই কি খালি হল্লা পাকানো? এঁদের কি সিভিল সোসাইটিতে কোন অবদান নেই?

    আমি দ্বিমত পোষণ করি। কেন, নীচে বলছি।

    ২.২ আর টি আই এবং রাইট টু ফুড

    আজ গোটা বিশ্বে রাষ্ট্র একটি লেভিয়াথান, এক বিশাল আকার। প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে কোন কিছুই আর ব্যক্তিগত নেই। ‘বিগ ব্রাদার ইজ ওয়াচিং’ আজ বাস্তব।

    রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একা নাগরিক — ডেভিড গোলিয়াথ?

    এখানে সূচনার অধিকার আইন সরকারি সেক্টর ও তন্ত্রে জনতার টাকা লুঠ আটকাতে খুব বড় হাতিয়ার হয়েছে। গোড়ায় বামপন্থীরা নাক সিঁটকিয়ে ছিলেন। বাধা অবেক এসেছিল। আজকে একজন সাধারণ মানুষও এই আইনকে হাতিয়ার করে অনেক করাপশনের পর্দাফাঁস করছে।

    কিন্তু এর পেছনে আছেন এক মহিলা অরুণা রায় এবং তাঁর সহযোগী নিখিল দে।

    অরুণা রায় আই এ এস, সাতবছর প্রশাসনে কাজ করার পর ইস্তফা দিয়ে রাজস্থানে গড়ে তুললেন মজদুর কিসান শক্তি সংগঠন (এম কে এস এস)। সঙ্গে পেলেন এম আইটি থেকে পাশ করা নিখিল দের পরিশ্রম।

    পঞ্চায়েতের করাপশন থেকে শুরু হল তাঁদের জন-সমাবেশের কাজ। ড্রাফট করলেন আর টি আই অ্যাক্টের খসড়া। এছাড়া পরে মনমোহন সিং এর সময় পরামর্শদাতা হিসেবে খসড়া বানালেন সবার জন্যে রাইট টু ফুড অ্যাক্ট। আজ ভারতে গোদামে গম বা ধান পচবে আর রাস্তায় লোক না খেয়ে মারা যাবে এর সম্ভাবনা খুব কম।

    ২.৩ ডেভেলপমেন্টাল (উন্ননয়নমুখী)

    এঁরা সরকারের সঙ্গে কোন সংঘর্ষ এড়িয়ে চলেন। এঁদের কাজ সরকারের উন্নয়ন নীতি এবং বঞ্চিত জনসাধারণের মাঝে একটি সেতু তৈরি করা।

    দেখুন, সরকারের অনেক উন্নয়নমূলক যোজনা রয়েছে। বেশিরভাগই ফাইলে বন্দী, জনগণ জানে না তাহারা কী হারাইতেছে। সেগুলো যদি রূপায়ণ হয়ও তা সুষ্ঠুভাবে হয় না।শুধু লালফিতের ফাঁস নয়, নিতান্ত অবহেলায় এই কাজগুলো করা হয়।

    আমলাতন্ত্র বাস্তবিক স্টেকহোল্ডারদের অভিমত নেয় না, তাদের পাত্তা দেয় না। কিছু কাজ করলে তার ভাবটা যেন অনুগ্রহ করছে।
    দুটো উদাহরণ দিচ্ছি।
    কংগ্রেসের সময়ই এসেছিল ‘নির্মল গ্রাম’ যোজনা। মানে, গ্রামে সেপ্টিক ল্যাট্রিন বানিয়ে দেয়া যাতে লোকে মাঠে পায়খানা না করে।
    যোজনা কেন ব্যর্থ হল?
    গ্রামসভাকে ইনভল্ভ না করে পাইকারি হারে ঠিকাদারকে বানাতে বলা হল। আমি যে কটা (গোটা পাঁচেক) দেখেছিলাম তাতে ঠিকমত উবু হয়ে বসা যায়না। হয় ছাত মাথায় ঠেকে যায়, ২.৪ নয় অগভীর পিট।
    মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট (এম এইচ এম)।
    সার্ভে করে দেখা গেছে গ্রামের দিকে আদিবাসী এলাকায় মেয়েরা নাইন-টেনে উঠলে পড়া ছেড়ে দেয়। কারণ দারিদ্র্য নয়। তাহলে সে বাড়ির ছেলেরা আগে ছেড়ে দিত। কারণ হল, স্কুলে মেয়েদের জন্য আলাদা বাথরুম বানানো হয়নি। দরকারই মনে করা হয়নি।
    অথচ, ইকো-ফ্রেন্ডলি বাথরুম শস্তায় বানানো সম্ভব। আমরা ইংল্যান্ডের ওয়াটার-এইড সংস্থার সাহা্য্যে বেশ কিছু কোরবা জেলায় আদিবাসী এলাকার স্কুলে বানিয়েছি। আর দরকার ক্লাস সিক্স থেকে টিচারের সাহায্য নিয়ে মেয়েদের মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন নিয়ে সঠিক স্বাস্থ্যবিধি শেখানো।

    ২.৪ ফেক এনজিও

    সন্ন্যাসীদের মধ্যে যেমন ভেকধারী ফেক সাধু আছেন, যাদের কাজ অলৌকিক শক্তির ভড়ং দেখিয়ে লোক ঠকিয়ে পয়সা রোজগার, তেমনই এনজিওদের মধ্যে বেশ কিছু (সংখ্যায় বেশি) সংগঠন রয়েছে যাদের কাজ ভড়ং দেখিয়ে সরকারের থেকে ফান্ড আদায় করা এবং ফিল্ডে কিছু স্যাম্পল খাড়া করে ম্যানেজ করা।
    এদের কী করে চেনা যাবে?

    দু’ভাবে।

    এক, ফিল্ডে গিয়ে সময় নিয়ে ইনস্পেকশন। এরা শহরের কাছে বা উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পন্ন গ্রামে দু’একটা ভালো কাজ দেখাবেন। বাকি সব কাজ অনেক ইন্টিরিয়রে।
    সেগুলো দেখতে চাইলে বলবে — আজ আমাদের একজন ছুটি নিয়েছে। অথবা আজ ওখানে লোক্যাল পরব আছে, লোকজন মদ খেয়ে টুন, গিয়ে লাভ হবে না।
    তাতেও যদি আপনি দমে নাযান তো শুনতে হবে — রাস্তাঘাট খুব খারাপ। যেতে অনেক সময় লাগবে। গিয়ে রাত্তিরে ফিরতে পারবেননা। থাকার ভালো ব্যবস্থা নেই। মশা, সাপখোপের উপদ্রব। পরের বার দেখিয়ে দেব, বা ছবি তুলে পাঠিয়ে দেব।
    আপনিও হাল ছেড়ে নিজের বিবেককে চোখ মেরে ফেরত চলে যাবেন। খুব বেশি হলে রিপোর্টে এক লাইন কশনারি নোট দেবেন।
    এরা ইনস্পেকশনে কেউ এলে যত্ন আত্তি খুব করে। ভাল হোটেলে রাখা, ভাল খাওয়া দাওয়া, লাক্সারি কার ভাড়া করে দেয়া ইত্যাদি।
    এমনি এক এনজিও’র মহিলাকে জানি যাঁর মটোঃ ‘জঙ্গল মেঁ মোর নাচা কিসনে দেখা!’
    বনের ভেতরে ময়ূর নাচল কিনা দেখছে কে!

    দুই, অডিটে ভাল করে দেখতে হবে বাজেটে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কস্ট (ওভারহেড, স্টাফ স্যালারি ইত্যাদি) আর বাস্তবিক প্রোজেক্ট কস্টের রেশিও কী।
    অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কস্ট মোট বাজেটের ২০% এর বেশি হওয়া উচিত নয়। একটি সর্বভারতীয় নামকরা এনজিও’র বাজেটে যাকে বলে খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি। সেমিনার আর মিটিং এবং অনারেরিয়াম দিতে দিতেই এদের বাজেট ফুরিয়ে যাই, কাজ হয় ঘন্টা! এরা জমকালো অফিস চালায়। অফিসের গাড়ি বলতে জীপ নয়, লাক্সারি কার!

    তিন, এদের প্রমোটারবর্গের সম্বন্ধে ভাল করে খোঁজ নেয়া দরকার। অধিকাংশ এই জাতীয় এনজিও’র পেছনে একজন হাইলেভেলের পলিটিক্যাল বা প্রশাসনের লোক থাকেন। এখানে কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্টের ব্যাপারে খেয়াল করা দরকার।

    চার, এইধরণের এনজিওরা সাধারণতঃ খুব বড় প্রাইভেট সংস্থা (স্যার দোরাবজী টাটা বা উইপ্রো’র আজিম প্রেমজী ফিলান্থ্রপিক ফাউন্ডেশন) থেকে অথবা নামজাদা বিদেশি ফান্ডার (ওয়াটার এইড, পল হ্যামলিন) –এদের থেকে ফান্ড নেয় না।
    বেশির ভাগ ফান্ডিং নেয় রাজ্য সরকারের থেকে গ্র্যান্ট, খুব বেশি হলে নাবার্ড থেকে।
    কারণ, নামকরা প্রাইভেট ফান্ডিং এজেন্সিরা কড়া করে কোয়ার্টার্লি অডিট করে। তাতে ফিল্ড এবং হিসেবপত্তর দুটোই দেখে।

    আজ এই পর্য্যন্ত।

    কাল লিখবো কিছু ভাল এনজিওর কথা এবং এনজিও চালানোর বাস্তব সমস্যাগুলো নিয়ে।
    ngo পাঁচালি 1 | ngo পাঁচালি 2
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অরিন | 119.224.61.73 | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ০০:৪৩743601
  • খুব ভাল সিরিজ শুরু হয়েছে । একটা সামান্য টাইপো ("অবেক"); বাদ দিলে ঝরঝরে লেখা, এনজিও নিয়ে আপনার টাইপোলজিকে কুর্ণিশ!
  • NRO | 165.124.84.35 | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ০৫:১১743602
  • উচ্চস্তরের - high class primer লিখেছেন। Very informative. পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। 
     
    আমি যা শুনেছি বা পড়েছি : 1) বড়ো বড়ো international agency like Red Cross OxFam থেকে শুরু করে মাঝারি অনেক non-profit organization এর financial mis-management, high overhead ইত্যাদি problem reported and documented হয়েছে। Lady Fergie র foundation এ নাকি 84% overhead ছিল, just 16% went to actual charity. ছোট NGO তে কি হয় জানি না। 2) Generally speaking, most international funding আসে হয় Rich Western nations or wealthy individual দের থেকে নয়তো middle eastern petro-rich nation থেকে। উভয় ক্ষেত্রেই strings are attached মানে নারী পুরুষে বিভেদ করা চলবে না বা minority affairs এ খরচ করতে হবে ইত্যাদি ধরণের শর্ত থাকে যা implement করতে গেলে অনেক সময় নাকি conflict arise করে। 
  • Supriyo Mondal | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ০৯:১৮743603
  • রন্জনবাবু, আপনার লেখাটা যে বাস্তব পরিস্থিতিতে কাজ করে লেখা সেটা বুঝতেই পারছি। গত 14 বছর ধরে (তারমধ্যে আমাদের কয়েকজন পঞ্চাশ পার করে গত 5.5 বছর ধরে কাজটায় আরও সময় দিতে চাকরির জগতকে টা টা বাই বাই করে চলে এসে) পশ্চিমবঙ্গের (মূলতঃ) গ্রামগঞ্জের অর্থনৈতিক ভাবে দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের অর্থনৈতিক & ক্যারিয়ার গাইডেন্সের কাজ করে আমার অভিজ্ঞতাও একইরকম। 
    আমরা শুরুতেই কয়েকটা বিষয়ে একমত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে
    1) আমাদের কোনও স্যালারি বা অ্যালাওয়েন্সের বা অফিসের কনসেপ্ট থাকবে না (পুরোপুরি ভলেন্টিয়ারি এবং বাড়ি থেকে অপারেট করা সার্ভিস)। 
    2) ফিল্ড ট্রিপের সময় গাড়ি বা পাবলিক ট্র্যান্সপোর্টের যে খরচটা হয় সেটা অ্যাকচুয়াল বেসিসে রিমবার্স করা হবে। সেটাও যতদূর সম্ভব নিজেদের গাড়ি ব্যবহার করা হবে যাতে শুধু ফুয়েল কস্টটাই আসে। হোটেল/খাওয়াদাওয়া ইত্যাদি নিজের খরচে। 
    3) আমাদের নন স্টুডেন্ট রিলেটেড যে খরচা সেটা রেনি ডে ফান্ডের ইন্টারেস্ট থেকে করা হবে। মানে স্টুডেন্টদের জন্য যে ফান্ড আসবে সেটা কোনওভাবেই অ্যাডমিশনিসস্ট্রেটিভ পারপাসে খরচা করা হবে না। 
    এখন আমাদের এই খাতে খরচটা মোট খরচের 3.5-4% এ থাকে।
    4) প্রথম দিন থেকে (মানে সোসাইটি হিসেবে রেজিস্ট্রেশনেরও আগের হিসাব) প্রতিটা খরচ অডিটেড হতে হবে। যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ খবর/ফাইনান্সিয়াল ডেটা সব ডোনারদের ফোরামে জানানো হবে।
     
    এখন ডোনারের সংখ্যা প্রায় 200 র কাছাকাছি পৌঁছেছে। বছরে প্রায় 35-36 লাখ টাকা আমরা বছরভিত্তিক প্রায় 190 জন স্টুডেন্টদের পৌঁছে দিতে পারি। মোট সাপোর্টেড স্টুডেন্ট সংখ্যা 500 ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অনেকেই এখন জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত & আমাদের ডোনার।
    গত কয়েকবছরে (করোনার পরে) আমরা রামকৃষ্ণ মিশন, ঝাড়গ্রামের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওখানে দুটো স্টাডি সেন্টার চালাচ্ছি। একই ভাবে বীরভূমের একটি স্থানীয় NGO সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে একটি সাঁওতাল গ্রামের স্টাডি সেন্টার।
  • Kishore Ghosal | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ১১:২৮743604
  • বাঃ এন জিও সম্পর্কে বেশ স্পষ্ট একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে। 
  • Ranjan Roy | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৪০743605
  • আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
     
    তবে বিশেষ ধন্যবাদ  এন আর ও'কে। কারণ আমি স্বভাবতঃ আলসে। আমাদের বাঙাল ভাষায় রাম- আইলসা!
    উনি না খোঁচালে উঠে বসে ভাবা শুরু করতাম না। আর না ভাবলে লিখতে পারতাম না।
     
    সুদীপ্ত একটি মডেলের কথা বলেছেন। এই মডেলে অনেকে কাজ করছেন।  তবে সব মডেলের মতই এরও সীমা রয়েছে।
    পরের কিস্তিতে সেসব নিয়ে কথা বলব। আমি ডায়ালগে বিশ্বাসী। কাজেই সুদীপ্তের মত অন্যরাও নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে ভাল লাগবে।
    অরিনদা এবং কিশোর গুরুচণ্ডালির পাতাতুতো বন্ধু হয়েছেন। ওঁদের উৎসাহ নিরন্তর।
     আর আমাকে বাবু নাবলে স্রেফ রঞ্জন বললে ভাল লাগবে, নইলে রঞ্জনদা।
     
    বাবু শুনলেই কেমন সমর সেনের 'বাবু কাহিনী' অথবা কালীঘাটের পটের কোঁচানো ধুতি পরা  বাবু মনে হয় আর হাসি পায়। 
  • Supriyo Mondal | ২৬ আগস্ট ২০২৪ ১৭:০৯743606
  • ওকে রঞ্জনদা। yes
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন