এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • স্মৃতি মেদুরতা

    M
    অন্যান্য | ১৩ মার্চ ২০০৯ | ৩৯৯১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • M | 118.69.171.69 | ১৩ মার্চ ২০০৯ ১১:৫৭407192
  • একটা কি সাংঘাতিক শব্দ লিখলাম , মানে নিয়ে একটু ধেঁধে আছি,
    সবাই লিখো নইলে খুব কান্না পাবে, আমি পরে এসে পড়ে যাবো।
  • nyara | 64.105.168.210 | ১৩ মার্চ ২০০৯ ১২:২৬407256
  • আমি লিখব, আমি লিখব। সফটওয়্যার টেস্ট করতে পাতার পর পাতা আত্মজীবনীর খসড়া করেছি। এবার তার হিল্লে হবে।
  • nyara | 64.105.168.210 | ১৩ মার্চ ২০০৯ ১২:৫০407267
  • ছ বছর বাংলা বয়েজে পড়ে যখন বাংলা কো-এডে ভর্তি হলাম তখন আমি নেহাতই আনকোরা।
    একেবারে গ্রীন। প্রথম দিনই ক্লাসের বাঘা বাঘা ছেলেরা ইন্টারভিউ নিল। কোন স্কুল থেকে
    এসেছি, ক্লাসে কটা মেয়ে ছিল, নিরোধ কি, সত্যম শিবম সুন্দরম দেখেছি কিনা - এইসব।
    তারপরে গালাগালির ইন্টারভিউ। "তোর বাবা শুওরের বাচ্চা" বললে কি রিয়্যাকশন হয়, গান্ডু আর
    উদগান্ডুর মধ্যে কী তফাৎ, খানকি শব্দের ব্যুৎপত্তি কী ইত্যাদি। সে সব তো পাশ করে গেলাম,
    বোধহয় উইথ ডিস্টিঙ্কশনই। টিফিনের সময়ে লাইব্রেরির সামনের মাঠে রবারের বলের ফুটবল দলেও
    চান্স পেয়ে গেলাম। বেশ হইহই করেই কো-এড জীবন শুরু হয়ে গেল। সত্যি বলতে কি বয়েজ স্কুল আর কো-এড স্কুলের পার্থক্য তখনও অব্দি তেমন প্রকট হয়নি। তখনও শরীরে হর্মোন তেমন ঠেলা দিতে শুরু করেনি বলেই বোধহয়।

    তবে জাগতিক ব্যাপারে আমরা যে উদোমাদাচন্ডীচরণ ছিলাম, এরকম ভাবা ঠিক হবে না। বার্ডস
    অ্যান্ড দ্য বীজ সম্বধে আমরা সবাই পর্যাপ্ত জ্ঞান আহরন করে ফেলেছিলাম। কিন্তু সেসবের থেকে
    আলোচনার বিষয় হিসেবে গাভাসকার কি গৌতম সরকার কিম্বা এন্টার দি ড্রাগন অনেক বেশি
    ইন্টারেস্টিং ছিল। কেউ কেউ আবার বচ্চনের বাঁয়ে হাত কা খেলের প্রেমে পড়ে গেছে তখনই।
    'শান' আসব আসব করছে, 'অনুসন্ধান' বোধহয় এসে গেছে। বেশ কিছু ছেলে তখন সব কথাই বচ্চন
    স্টাইলে 'আমি বলছিলাম কি' বলে শুরু করত। 'জয়া' সিনেমা পেরিয়ে যাদের যাতায়াত ছিল,
    তাদের অনেকেই স্কুল-ফেরতা বিনটিকিটে 'জয়া'য় ঢুঁ মারা আর্ট করে ফেলেছিল। ম্যাটিনির
    হাফ-টাইমের পরে। ফলে 'ইয়াম্মা ইয়াম্মা'র সঙ্গেই ক্লাসে ঢুকে পড়েছে সুখেন দাসের অমর ছবি
    'প্রতিশোধ'-এর গান 'হয়তো আমাকে কারও মনে নেই'। মেয়েরা বোধহয় আমাদের থেকে বেশি
    পাকা ছিল। বোধহয়। ঠিক জানিনা।

    মেয়েদের সঙ্গে ইন্টার‌্যাকশন যে একেবারেই হত না, তা নয়। চল্লিশ ডিগ্রি গরমে, কাঠফাটা রোদে
    টিফিনে বল পিটিয়ে ক্লাসে ঢুকতেই অরূপ সঙ্ঘমিত্রার কাছে ল্যাং খেল। মানছি, সঙ্ঘমিত্রা ল্যাং
    মারব বলে ল্যাং মারেনি, কিন্তু অরূপ ল্যাং তো খেয়েছে। কাজেই অরূপ ঘুরে সঙ্ঘমিত্রার শীনে
    মারল টেনে এক লাথি। অরূপের বাবা পুলিশে কাজ করতেন। সেই পুলিশি ঐতিহ্যে অরূপ
    সারাটা স্কুল-জীবন সবুজ রঙের ক্যানভাসের পুলিশি জুতো পরে এল। অ্যায়সা মোটকা তার সোল,
    সলিড রবার। ওই জুতো পরে অরূপের ফুটবল খেলা নিষিদ্ধ ছিল। ওই জুতোর সঙ্গে চার্জ করে পারা
    যেত না বলে। তো অরূপ ওই কুখ্যাত জুতো পরে সঙ্ঘমিত্রার পায়ে গাঁতিয়ে একটা লাথি মারল।
    ব্যাথায় সঙ্ঘমিত্রার চোখমুখ কুঁচকে গেলেও একটু সামলে সেও অরূপকে জোরসে লাথি লাগাল।
    ব্যাস। লাগ, লাগ, লাগ, লাগ। পরের পাঁচ মিনিট অরূপ আর সঙ্ঘমিত্রার লাথি কম্পিটিশন চলল আর
    আমরা ছেলেরা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে অরূপকে উৎসাহ দিয়ে গেলাম। মেয়েরাও বোধহয় সঙ্ঘমিত্রাকে
    চিয়ার আপ করছিল। ঠিক মনে নেই।

    দুপুরে সবদিন ফুটবল খেলা যেত না। বল থাকত না বা মাঠ পাওয়া যেত না। সেসব দিন আমরা
    চোর পুলিশ খেলতাম। তারের পঁচিল ডিঙিয়ে বা সিঁড়ির ভাঙা কাঁচের জানলা গলে গিয়ে
    পেছনের অডিটোরিয়ামের ছাতে। সেই ছাতেই ছিল স্কুলের জলের ট্যাংক। শৈবাল একদিন ট্যাংকে
    হিসি করে দিল। আমরা পরের সাতদিন কেউ স্কুলে জল খেলাম না। খুব তেষ্টা পেলে সামনে
    বারিকদের বাড়ির প্যাসেজের কল থেকে গিয়ে জল খেয়ে আসতাম। স্কুলের বাকি কেউ জানত না। তাই
    অন্যরা হুহা সেই জলই খেল। স্টুডেন্ট-টীচার-হেডু সবাই।

    আমাদের ক্লাস সেভেনে টিচার হয়ে এলেন কৃষ্ণাদি। প্রচন্ড বেঁটে। এসে প্রথমদিনই গুচ্ছ ঘ্যাম
    নিয়ে ক্লাস ক®¾ট্রাল করতে গেলেন। টংকা বলল, 'ওরে এ তো বচ্চন পুরো। খালি বেঁটে।' সেই
    থেকে কৃষ্ণাদির নাম হয়ে গেল 'বেঁটে বচ্চন'। 'বেঁটে বচ্চন'ই আমাদের দেওয়া সব থেকে
    ইনোভেটিভ নাম। বাকি সব মোটামুটি অবভিয়াস। নিরুপমাদির চোখের গোলমাল ছিল বলে ওনার
    নাম হয়ে গেল টেরুপমা। শুভাশিসবাবু ক্লাসে এসেই গোঁ গোঁ করে নোট দিতেন বলে ওনার নাম
    হল 'নোটুবাবু'। সেই থেকে নুটুবাবু। নুটুবাবু ধারণা ছিল যে কোন ছাত্র বা ছাত্রী যদি
    ওনাকে হাসতে দেখে তাহলে আর মানবে না। তাই উনি ছাত্রছাত্রীদের সামনে কখনও হাসতেন না। কে
    যেন একবার স্কুল ছুটির অনেক পরে টিচার্স রুমে ঢুকতে গিয়ে নুটুবাবুকে হাসতে দেখে
    ফেলেছিল। তাই থেকে আমরা জানলাম নুটুবাবুও হাসেন। তো এই নুটুবাবু ক্লাস নাইন এ-র
    ক্লাস টিচার হিসেব একবার গণ গার্জেন কল করেছিলেন। স্কুলে গার্জেনদের গাদি লেগে গেল। আমরা
    দোতলায় ক্লাস নাইন বি থেকে খোরাক দেখলাম।

    এই করে ক্লাস সেভেন সুখে-দু:খে কেটে গেল। আমি হাফ-ইয়ার্লিতে লাইফ সায়েন্সে মাছের মতন
    দেখতে পায়রা এঁকে নব্বইতে সাঁইতিরিশ পেলাম। সংস্কৃতয় সত্তর। না, সংস্কৃত খাতায় ছবি আঁকতে
    হয়নি। মাছও নয়, পায়রাও নয়। কিন্তু প্রথম প্রশ্ন ছিল কোন একটা পাঠ্য গল্প 'নিজের ভাষায়
    গুছিয়ে লেখ'। আমি ভাবলাম, বাংলায় কি আর লিখতে দেবে? সে তো বড্ড সোজা। পরীক্ষা বলে কথা! নিশ্চয়ই সংস্কৃতে লিখতে বলেছে। তো মাস-ছয়েক-ফলম্‌-ফলে-ফলানি-পড়া আমি সংস্কৃত মনে করে নিজের ভাষায় গুছিয়ে লিখলাম। অনুভাদি খাতা বেরোনর সময়ে লাইব্রেরিতে ডেকে কিঞ্চিৎ ভালমন্দ শুনিয়ে দিলেন।
  • santanu | 82.112.6.2 | ১৩ মার্চ ২০০৯ ১৪:১৬407278
  • ক্লাস ১২, মিশনে পড়ি, শীতের দিন, সদ্য অগ্রাওয়াল ক্লাসের নতুন সেট এসেছে, উল্টে পাল্টে দেখতে দেখতে JR এর Chemistry ক্লাসটা ঝেড়ে কাটিয়ে দিলাম। তখন কি আর জানতাম .......

    মিশনের প্রিন্সিপাল বেশ খড়ুস এক জনি মহারাজ, ভাইস প্রিন্সিপাল ভারি ভালো অমল মহারাজ। কদিন জনি কোথায় গেছে তাই অমল মহারাজ বস। এদিকে JR কলেজের সবচেয়ে পুরোনো টীচার, অমল মহারাজ কেও পড়িয়েছেন আর ভালই পড়াতেন।

    তখন কি আর জানতাম যে সেই দুপুরেই, আমার মতো আরো বিভিন্ন কারণে ক্লাসের অর্ধেক ছেলে JR এর Chemistry ক্লাসটা ঝেড়ে কাটিয়ে দিচ্ছে।

    এবারের টা শোনা কথা - JR ক্লাস থেকে বেরিয়েই প্যাসেজে অমল মহারাজ কে দেখে বেশ চিল্লিয়ে বলেছিলেন," কি হে অমল, দুদিন জনি মহারাজ নেই আর ক্লাসে ছাত্র অর্ধেক! কি ভাবে চালাবে?"

    ব্যাস, বিকেল ৫ টার সময় হোস্টেল থেকে তলব অমল মহারাজের। ওনার ঘরের সামনে জটলা, তারপর বুক ফুলিয়ে আমি প্রথম ঢুকলাম। বসে আছেন অমল ও JR। মহারাজই কথা বললেন, শুনলেন না প্রায় কিছুই, হুকুম হলো গার্জেন নিয়ে এসে তবেই পরের কোন ক্লাস করতে পারবে। ডাকো গার্জেনকে।

    আরে ডাকবো কোথা থেকে তখন কি এমন ফোন ছিল? আর আমার বাড়ি ৫৪ নম্বর বাসের ৩ স্টপেজ পরে। আমি মুখ চুন করে হোস্টেলের খাতায় সই করে বাস ধরলাম। বাসে ছক করতে করতে এলাম, যদি সত্যি তাড়িয়ে দেয়, কাছের শান্তিরাম স্কুল থেকে as External, HS Exam দেবো। বালি বাজারে নেবে একটা দোকানে মা বালতি সারাতে দিয়েছিল, সেটা নিয়ে বিকেল ৬ টা নাগাদ বালতি হাতে বাড়ি ঢুকলাম।

    মনে নেই, মা আমার এমন অসময়ে আসা না হাতে বালতি না কালো মুখ - কি দেখে প্রথম প্রশ্ন করলেন, "তাড়িয়ে দিল নাকি?" আমি গম্ভীর মুখে বললাম - জানি না।

    পরের দিন, ১১ টা নাগাদ মা কে নিয়ে গেলাম অমল মহারাজের অফিসে। ঘরেই ছিলেন, আমাদের দেখে মা কে বললেন - আরে, আপনাকে নিয়ে এসেছে, কি যে করে, কোন মানে হয়, সব ভালো তো? এবার আমাকে - যাও, খাবার পর দুপুরের সব ক্লাস করবে। আমি তো পুরো ছবি।

    এরপর হস্টেলে গিয়ে বাকি গল্প টা শুনলাম। আগের দিন পরপর তিন চার জন কে গার্জেন কল করার পর JR বলেছিলেন, করো কি? গার্জেন দিয়ে কি হবে? ঠিকাছে, আমিই এদের ধমকে দিচ্ছি আর ঐ চার জন কে খবর পাঠিয়ে দাও গার্জেন টার্জেন ডাকতে হবে না।

    কিন্তু ততক্ষনে তো আমি বালতি হাতে বাড়ি।
  • a | 203.201.231.35 | ১৩ মার্চ ২০০৯ ১৪:৫৮407289
  • আআহাআ ন্যাড়াদা কি দিলে গো!!! সেই ইশ্‌কুলের ছেড়ে আসা দিন আর লোকেদের কথা!!! সেই লাস্ট বেন্‌চ, যেখানে আমরা চার মূর্তি কেলাসের ভালো ছেলে হয়েও "সবহারাদের মাঝে" বসতুম, গানের আসর, সেই ভালো লাগার মেয়েটির পরের রোল নাম্বার হয়ে পরীক্ষায় পাশে বসার সুখ!!!

    অনুভাদি, বেশ দেখতে ছিলেন (আমার ফেভারিট অবিশ্যি নন্দিতা দি,ন্যাড়াদা দেখেছো কি? না বোধহয়)। তো তার মেয়েকে আরো ভালো দেখেতে ছিল, আমাদের ২ বছরের সিনিয়র। ফলে, অনুভাদির সর্বজন স্বীক্রত নাম হয়ে গেল "মা"। যেই উনি টীচার্স রুম থেকে বেরোতেন, মনিটর সিগনাল দিত আর গান শুরু হত, "কতদূর আর কতদূর" । আর অনুভাদি যেই ক্লাসে ঢুকছেন, পুরো ক্লাস তখন কোরাসে ".... বলো মাআআ" ।।
  • shyamal | 24.117.80.243 | ১৩ মার্চ ২০০৯ ১৭:৫৮407300
  • রবিনবাবু আমাদের ক্লাস নিতেন না, শুধু বছরে বার দুয়েক আসতেন বদলি টিচার হিসেবে। কোন টিচার না এলে। তা ওনার অসাধারণ একটা গুণ ছিল, ক্লাসে এসেই ঘুমিয়ে পড়তেন। আর ছেলেরা যাতে গোলমাল না করে, এই তোদের মধ্যে কে রিলে করতে পারিস? ওসমান হাত তুলল। আয়, তুই আমার পাশে দাঁড়িয়ে রিলে কর। তোরা কথা বলবিনা, চুপ করে শোন। বলে ঘুমিয়ে পড়লেন।
    আর ওসমান শুরু করল, হিয়ার কামস নাদকার্নি, বোলস টু কাউড্রে, গুড লেন্থ বল, কাউড্রে প্লেস ফরওয়ার্ড ডিফেন্সিভলি। বল গোজ টু কভার, নো রান।

    কেউ কেউ রিলে শুনল, বাকীরা কাটাকুটি বা অন্য কোন খেলা করতে লাগল।
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৩ মার্চ ২০০৯ ২০:২৩407311
  • ন্যাড়া তোবা তোবা। তবে শুভাশিষবাবুকে আমি হাসতে দেখিছি। সেবারে মহালায়ার দিনে স্কুল থে বক্রেশ্বর নে গেছিলো, এস্কার্শন। শুভাশিষবাবু, চায়নাদি,অলোকবাবু গেছিলেন গাইড হয়ে। সে যাত্রায় শুভাশিষবাবু কে বেমালুম হাসতে দেখিচি। কিন্তু সে আরেক গপ্প। বাস খারাপ হয়ে সুঁড়কির লরিতে ভ্রমন।
  • Blank | 59.93.209.35 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ০০:৪০407322
  • স্মৃতি খুঁজতে খুঁজতে ভাবতে বসি যে কত টা ছোট বেলা মনে আছে আমার। সেই কত্ত কত্ত দিনের আগের ছোট বেলা গুলো (আমার আবার অনেক গুলো ছোট বেলা ছিলো), তখনো ইস্কুলে ভর্তি হই নি (হয়তো)। ভট্টাচায্যি পাড়ায় আমাদের ভাড়া বাড়িটা থেকে আমার মনে থাকা বেলা শুরু। একতলা ছোট্ট বাড়ি, নীলচে সাদা চুন মাখানো দেওয়াল, তার মধ্যে ছোট্ট ছোট্ট গর্ত। সেগুলোতে আঙুল দিলে গুঁড়ো গুঁড়ো বালি পরে নীচে। অনেক ক্ষন খোঁচালে বালিগুলো নীচে পরে কেমন ছোট্ট ছোট্ট পাহাড়ের মতন দেখতে হয়ে যায়। আঙুল দিয়ে সেই ছোট্ট পাহাড়টাকে ভাঙতে কি মজা। এর ই মধ্যে একদিন আমার আর্কিমিডিসিয় উল্লাস, জানলা দিয়ে বাইরে হিসি করলে যে কয়েক ফোঁটা ভেতরে এসে পরে, তার ওপরে বালি ফেল্লে সেগুলো কেমন টুক করে হাপিস হয়ে যায়।
    একটা বড় গামলা ছিলো আমার। ঘুম থেকে উঠে, কলতলায় মুখে ধুয়ে, অথবা বলা ভালো জোর করে আমার মুখ ধুইয়ে দেওয়ার পর আমি ঐ গামলাটা টেনে নিয়ে বসতাম। ওর ভেতরে আমার সমস্ত সম্পত্তি রাখা। একটা ছবি ওলা রামায়ন, তার জটায়ু পাখীটা খুব ইন্টারেস্টিং লাগতো আমার। খান দুই তিন চাঁদ মামা, একটাতে বড় একটা সিংহের ছবি ছিল, অসুরদের সাথে যুদ্ধ করছে। একটা হাসি খুশির মলাট, একটা লোক ঝুড়ি তে করে বেহালা বিক্রি করছে। অমনি একটা বেহালাও আমার ছিল, কিন্তু সেটা কোনোদিন বাজাতে পেরেছি কিনা মনে নেই। মনে হয়, আমার মনে থাকা বেলা শুরু হওয়ার আগেই সেটার সমস্ত তার আমি খুলে দিয়েছিলাম। একটা ছিল বড় কমলা ফুটবল, যার গায়ে এ বি সি ডি ইত্যাদি। যদিও সেগুলো দেখে কোনোদিন অক্ষর চেনা টেনার ইচ্ছে আমার হয় নি। অনেক গুলো জীব জন্তু ছিল, প্লাস্টিকের। তার মধ্যে কোনো একটা ছাই রঙের জন্তুকে আমি চিবোতে ভালবাসতাম। ওটার প্লাস্টিকের গায়ে দাঁতের দাগ পরে যে। আর একটা স্লেট ছিল, দাদু আবার সেই স্লেট টা মাঝে মাঝে কয়লা দিয়ে মেজে দিতো। স্লেট পেনসিল ছিল কয়েক টুকরো আর ছোট ছোট রঙীন চক।
    ওহ, একটা বড় CRP পুতুল ছিলো। যদিও সেটার মুন্ডু আমি খুলে নিয়েছিলাম অনেক দিন আগেই। যার মুন্ডু খোলা যায় তার মুন্ডু থাকার দরকারটা কি অ্যাঁ? সে তো আমার একটা লাল বাস ও ছিলো যেটার খালি নীচের অংশটা আমার গামলায় থাকতো, ওপরেরটা আমি কবে ঠুকে ঠুকে খুলে দিয়েছিলাম। অন্ধকার ঘরে ঐ নীচের অংশটা জোড়ে জোড়ে মাটিতে ঘষলে সেটা থেকে চিক চিক আগুনের ফুলকি বেড়ুতো। এর থেকে অবশ্যই এটা ভাবার কোনো কারন নেই যে আমি অন্ধকার ঘরে একা একা বসে থাকতাম। কারেন্ট অফ হয়ে গেলেই খুব ভয় পেতাম আমি। তবে ঘরে মা থাকলে কোনো ভয় নেই আর। রাত্তিরে ঘুমুনোর আগে অব্দি আমার পিঠ চুলকে দিতে হতো। অবশ্যই আমার ঘুম পাড়ানোর বেশী দায় আমার মায়ের ছিল। রাতে ঘুম ভেঙে গেলেই আমি রাতের সব খাবার ওয়াক করে তুলে দিতাম। যতক্ষন ঘুমিয়ে থাক ততক্ষন সেফ। সেই সময়ে আমি খালি চায়ে ডোবানো ন্যাতন্যাতে বিস্কুট খেতে ভালবাসতুম।
    একটা টিভি ছিল তখন বাড়িতে, সাদা কালো মনে হয়, কারন সেই টিভির দরজা ছিলো। তবে টিভির প্রতি তখনো কোনো উৎসাহ আমার ছিলো না। ওটা উঁচু টেবিলে রাখা, আমার হাতের বাইরে। বরং বাবার টেপ রেকর্ডারটা বেশ পছন্দের ছিল আমার। সুইচ গুলো আমি টিপতে পারতাম। আর কেমন সুন্দর একটা সুইচ টিপলে আর একটা সুইচ ওপরে উঠে যায়। আর পট পট করে আওয়াজ হয়। কোনো কোনো ভালো রবি বারে ঐ টেপ রেকর্ডারটা আমার হাতের নাগালে আসতো। তবে সে সব সৌভাগ্য খুব কম হয় আমার। এমনি এক রবি বারে দুপুর বেলা, বাবা আমায় তেল মাখিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো যে আমার কোন নামটা পছন্দ। খান তিন চারেকের মধ্যে আমি দ্বীপায়ন নামটা বেছেছিলাম। বাকি গুলো মনে নেই (তখন কি আর জানতুম যে সুখের জীবন শেষ হতে চললো আমার )।
    সবচেয়ে মজার দিন গুলো ছিলো যেদিন করে মিলি দি দাদুর কাছে পড়তে আসতো। পড়া শেষ হলেই মিলিদি আমার সাথে একটু খেলতো। আর সে বড় মজার খেলা। একটা বড় শুকনো নারকেল পাতার ওপর আমাকে বসিয়ে টানতো মিলিদি। ঐ নারকেল গাড়ি চড়াটা আমার খুব পছন্দের ছিল। আর পছন্দ ছিল মিলিদির সাথে বসে শুকনো পেঁপে পাতা গুঁড়ো করে চা পাতা বানানো তে। হাতে দিয়ে চিপলেই পাতাগুলো কেমন গুঁড়ো গুঁড়ো বাদামী চা।
    তবে এসব দেখে ভাবার কিছু নেই যে আমি পড়াশুনো করতাম না। প্রতিদিন সন্ধে বেলা ১ থেকে ১০ অব্দি বলতাম, একটা পাতলা বই এর কয়েক পাতাও পড়তাম। সেগুলো তো পড়ার বই। আর তার পর সারা সন্ধে থেকে বাড়ির মেঝে জুড়ে চক দিয়ে আঁকা ছবি। ব্যান্ডেজ বাঁধা বাঘ, প্যাকাটির মতন চুল ওলা সিংহ। জটায়ু পাখী আর তার থেকে অনেক ছোট একটা রথে চরে বসে থাকা খুব খুদে খুদে সীতা আর রাবন। এছারা দেওয়াল জুড়ে ছিলো একানড়ে। ঠ্যাং জুলিয়ে বসে। কেন যে অত একানড়ে আঁকতুম কে জানে। বেগুনি একানড়ে, সবুজ একানড়ে। এমনি রামধনু রঙের একানড়ে কোথও পাবে না আমাদের বাড়ি ছারা। তখন থেকেই আমার প্রতিভা ফুটে বেড়োচ্ছিল আসোলে :)
  • d | 117.195.40.123 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ০০:৪৯407333
  • কিন্তু "দ্বীপায়ন' থেকে "দ্বৈপায়ন' এ রূপান্তরিত হলি কিকরে?
  • Binary | 198.169.6.69 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ০০:৫৪407193
  • ব্ল্যাংকিটা দারুন লিখেছে। তবে পিঠচুলকে দেওয়ার আরামটা-ও মনে আছে, ওকে জিনিয়াস বলতে হবে।
  • Blank | 59.93.209.35 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ০১:১৬407204
  • সেতো নাম চুরির গপ্প। সে আলাদা কেস।
  • Blank | 59.93.209.35 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ০১:১৮407215
  • আর পিঠ চুলকে দেওয়া মনে থাকবে না কেনো? ওটা ছারা ঘুমোতুম না যে
  • gaza | 72.130.158.122 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ২৩:৫৪407226
  • আমি লিখে্‌ত সুরু করলে গুচো র ১ টেরাবাইট জায়্‌গা খাবে।।। জায়্‌গা আছে?
  • M | 118.69.154.199 | ১৫ মার্চ ২০০৯ ০৭:২৮407237
  • আমার ও, কাল সিঙাপুর এয়ারপোর্ট এ পাঁচঘন্টা অবস্থান, তখন ও লিখে ফেলতে পারি।
  • M | 203.123.1.37 | ১৬ মার্চ ২০০৯ ১৬:২৭407248
  • একটা ছোট্ট ঘটনা বলে পালাই, দোকানগুলো দুহাত বাড়িয়ে এখন আমায় ডাকছে কিনা, একবার খুব ছোট তখন , ভাই হাঁটছে টলোমলো করে, আমি ওর থেকে দেড় বছরের বড়, আমার আদরের ভাগাভাগিতে চুড়ান্ত বিরক্ত হয়ে ছোট টেবিলে আদর করে তুলে বসিয়ে দিয়ে এক ঠ্যালা মেরে ফেলে দিলাম, আর রক্তারক্তি কান্ড, তাপ্পর অবিশ্যি বেশ কিছুক্ষন আমায় খুঁজে পাওয়া যায়নি।
  • Arijit | 61.95.144.123 | ১৬ মার্চ ২০০৯ ১৬:৪৫407252
  • সতেরো আঠারো বছর আগে একটা পুঁচকি মেয়ে আমার কোলে চড়ে রাজ কাপুরের সিনেমার গান শুনে ঘুমতো। একটু যখন বড় হল তখন আমি খেতে বসলে কোলের কাছে এসে বসে হাত পেতে বলতো "আমাকে একটু দাও'। কখনো কিছু করতে পারলো না - হয়তো বল্লুম "এই তুই এটা পারলি না' - বলতো "আমি ছোতো তোওওও'।

    সেই মেয়েটা আজ উচ্চ মাধ্যমিক দিতে গেলো। দিদির মেয়ে - শ্রী। আগে ডাকা হত গদাই বলে। ও নিজেই বলতো "আমার নাম শ্রী/শবনম/গদাই' :-)

    যত বড়ই হোক না - ওই "আমাকে একটু দাও' আর "আমি ছোতো তো' - এইগুলোই মাথায় থেকে যাবে।
  • kali | 160.36.240.194 | ১৭ মার্চ ২০০৯ ০০:৫৫407253
  • আমার ঘরের ঠিক বাইরেটাতে একটা চালতা গাছ ছিলো। সাদা সাদা ফুল চালতা গাছের।একেবারে গাছ ঝেঁপে আসে, গরমের দিনে, না বসন্তে..... ঠিক মনে নেই।ফুলেদের কাব্য আছে কিনা আমি জানিনা। থাকলে এই চালতা ফুলগুলো তাতে উপেক্ষিতা। অথচ কি সুন্দর মোলায়েম সাদা বড় বড় পাপড়ি ওদের,কি হাল্কা একটা সুন্দর গন্ধ। ঐ রকম গন্ধে স্বপ্ন তৈরী হয়। কিম্বা ঐ রকম বয়সে হয়তো.... কি জানি?

    চালতা গাছে হনুমান আসতো ফল খেতে। একদিন আমাদের গরাদহীন জানলা দিয়ে ঘরে ঢুকে এলো। শুভ্রার টেবিল থেকে একটা কমলালেবু নিয়ে, শাশ্বতীর বিছানায় নোংরা পায়ের দাগ লাগিয়ে, আমার আকাশী ফ্রেম দেওয়া আয়নাটাকে মাটিতে আছড়ে ভেঙে পালিয়ে গেলো। মেয়েরা সবাই খুব হাঁউমাউ করেছিলো। রত্নাদি শুনতে পেয়ে এসে গম্ভীর মুখে সব দেখে গেলেন। পরের দিন,নাকি পরের সপ্তাহে মিস্তিরি এসে সব জানলায় সবুজ রং করা শিক লাগিয়ে দিয়ে গেলো। হনুমান ওর চকচকে কাঁচের গুলির মত চোখ দিয়ে চুপচাপ শুধু দেখছিলো সব। আমার ভাঙা আয়নার টুকরো-টাকরা শান্তা মাসী ঝাঁট দিয়ে ফেলে দিয়েছিলো। ছোট ছোট দাগ-ছোপেদেরও, আয়নার কাঁচে,ফ্রেমে থাকতো। ওরা অনেক গল্প বলতো আমাকে। ক্লিমকা বলে ছুলিমুখো ছেলেটার কালো রুটি দিয়ে বাঁধাকপির স্যুপ খাবার গল্প, সমুদ্রের ধারে মারিয়া ফিয়োদরোভ্‌নার নড়বড়ে কাঠের বাড়ির গল্প, মাথায় হলুদ রুমাল বাঁধা সোনালী লোম শেয়ালী দিদির গল্প, সব্বাই সেইদিন থেকে এক্কেবারে হারিয়ে গেলো। শান্তামাসী ওদের ঠিকানার কোন খবরই রাখেনা।

    ফেব্রুয়ারীর মাসে একদিন মস্ত হলুদ চাঁদ উঠলো চালতার ডালপালা জুড়ে। সব মাসেই এক দিন না একদিন উঠতো, আমি দেখতামনা অত। সেদিন দেখেছিলাম। সেদিন এমনি চাঁদ দেখতে হয়। খুব একলা একজন চাঁদকে, ওর চুপচাপ চোখে নরম মোমের মত অচ্ছাভ ব্যথাকে দেখতে হয়। জানলা জুড়ে কালো কালো ডালপালার থেকে তখন নি:শব্দ দীর্ঘশ্বাস ঝরে। সবাই যখন বনে চলে যায়, ঠিক এই রকম দিনে, চাঁদটাকে দেখতে হয়, সাদা হয়ে যাবার আগেই।

    একটা কালোকোলো পাখি থাকতো গাছটায়। ময়না পাখি। বড্ড চুপচাপ। খালি মাঝে মাঝে আর্ত স্বরে চেঁচিয়ে বলতো 'জ-অ-ন, জ-অ-ন'। সবাই বলতো কারু পোষা ময়না পালিয়ে এসেছে। নয়তো ময়না পাখি কিছু চালতা গাছে বাসা করেনা। হয়তো ওর মালিকের নাম ছিলো 'জন'। পালিয়ে এসেছে, সবাই বলতো। আমার শুধু মনে হতো ওর কাছ থেকেই পালিয়ে গেছে কেউ,ওর 'জন'। নি:শব্দ গরম দুপুরে, ভীষণ মেঘ করা সন্ধ্যেয়, নিঘুম তারা তারা রাত্তিরে হঠাৎ হঠাৎ ওর বুকফাটা ডাক শুনতাম 'জ-অ-ন, জ-অ-অ-ন'। এমনি করে ডাকলে না ফিরে এসে কি করে পারিস রে 'জন'?
    কিম্বা হয়তো সেখান থেকে আর ফেরা যায়না। খু-উ-ব চেষ্টা করলেও।তাইই? 'জন'?

    একটা পুরো বছর ছিলাম ঐ ঘরটায়। তারপর আরো অনেক ঘরে থেকেছি। তার আগেও অনেক ঘরে। কিন্তু স্মৃতি আর মেদুরতা এই দুটো কথা পরপর বলতেই আমার চালতা গাছের কথাই মনে আসে কেন?
  • shrabani | 124.30.233.101 | ১৭ মার্চ ২০০৯ ১৫:৪৮407254
  • এ সেই মেয়েটা, সেই যে কবে অনেক অনেক ছোটোবেলায় ভিখারী কে "ভিক্কিরি" আর ফেরিওয়ালাকে "বিক্কিরি" বলে সবার হাসি কুড়োত। আসলে নিজের মনেও এ দুটোর ডিফারেন্স নিয়ে ধন্দ ছিল যে! দুজন ই তো দরজায় এসে দাঁড়াত, ভেতরে ঢুকতো না। দুজনের সঙ্গেই মা চৌকাঠের এপার থেকে কথা বলত।
    আর সেই যে এক ঝমঝম বৃষ্টির দিনে বাড়ীময় খিচুড়ীর গন্ধ, দুয়ারে বাঁটুলপিসী মাছ ভাজছে, ফেরিওলাটা তার ফুটো ফুটো কালো রঙচটা ছাতা মাথায় দিয়ে বার দুয়ারে তার কাপড়ের গাঁটরিটা যেই না নামিয়েছে, খুশীতে লাফাতে লাফাতে "বিক্কিরি বিক্কিরি", করে চেঁচাতে চেঁচাতে দৌড়তে গিয়ে চৌকাঠে পা আটকে এক্কেবারে পপাত চ। পুরো তুলোর বান্ডিলটা লাল, মায়ের শাড়ীও, নিজের আকাশী ফ্রকটাও। দক্ষিণাকাকু এসে কিসব করে রক্ত ধরিয়ে সাদা ব্যান্ডেজ করে দিল। বোধহয় ছুঁচও ফুটিয়েছিল, খেয়ালই করেনি। সেই থেকে পাসপোর্টে চিরদিনের জন্য কাট মার্ক অন দি চিন হয়ে গেল। তবে পরের দিন থেকেই আবার চাঙ্গা, আর মজা হল মা রোজ ড্রেসিং করে ব্যান্ডেজ টা ঘুরিয়ে মাথার মাঝখানে একটা ফুল করে দিত।

    মামার বাড়িতে গেলেই সবাই একটাই গান শুনতে চাইত, "লাজে রাঙা হল কনে বৌ গো", বাঁটুলপিসীর শেখানো। ঘুরেফিরে ঐ দুলাইনই গাইত, তবে সে আর কদিন।অচিরেই মায়ের শেখানো "লালঝুঁটি কাকাতুয়া"য় চড়ে পুরো গানে প্রোমোশন।
    বিকেলে খেলতে গিয়ে সবচেয়ে প্রিয় ছিল মাঠের মাঝে ল্যাম্পপোস্ট একহাতে জড়িয়ে বাঁইবাঁই করে ঘোরা। বড়রা দেখলে বকত, মাথা ঘুরে পড়ে যাবিনা। বৌ বসন্তে যে নিতনা দিদিরা, দুধেভাতে করে রাখত। সম্বলদা দেখলেই বলত, "পানকৌড়ি, পানকৌড়ি ডাঙায় উঠোনা, তোমার শাশুড়ী বলে গেছে বেগুন কুটোনা"। পানকৌড়ি নামটা মন্দ লাগত না কিন্তু শাশুড়ীর ব্যাপারটা ঠিক মন:পুত হতনা। শাশুড়ী বর এসব ঠিক ভাল শব্দ নয়, পাঁচজনের সামনে উচ্চারন করা যায়না বলেই মনে হত।
    কখনও কখনও আবার মাঠে কারুর বাড়ীর কাজের জন্যে জমা বালির স্তুপ মিলে যেত। সেদিন তো সন্ধ্যা হয়ে গেলেও বাড়ির দিকে পা উঠতোনা। কি করে উঠবে, পা তো বালির মধ্যে ঢোকানো, ঘর বানাতে। এদিক ওদিক থেকে ফুল ঘাস পাতা কাঠি নিয়ে এসে ঘর সাজানোর কম্পিটিশন চলতো। বাড়ি ফিরলে মা চুল আঁচড়ে আঁচড়ে ব্যথা করে দিয়েও সব বালি বেরতো না, রাতে বালিশে বিছানায় বালি। এইসব এক্সট্রীম কেসে শাস্তিস্বরুপ পরের দিন মাথায় শ্যাম্পু। সকালে মায়ের হাতে শ্যাম্পুর বোতল দেখতে পেলেই পাড়া জানিয়ে এমন চিল চিৎকার শুরু করত, অনুষ্ঠানের শেষেও সারাদিনই প্রায় সে গোঙানির রেষ রয়ে যেত, যতক্ষণ না সন্ধ্যেয় বাবার কাছে এই অন্যায়ের নালিশ হচ্ছে। তবে খালি শ্যাম্পুর বোতল খুব পছন্দের ছিল, তার ঢাকাটা খুলে ওপরে ডিমের খোলা দিয়ে চোখ এঁকেটেকে মুখ বানিয়ে, কাপড় পরিয়ে ফুলদি "মিস হ্যালো" বানিয়ে দিত। সেটা নিয়ে কিছুদিন খেলা হত, এই যদ্দিন ডিমের খোলার মুখ টেকে তদ্দিন আর কি!

    অনেক রঙচঙে ছবির বই ছিল তবে প্‌ড়ার কষ্ট করতে ঠিক ভালো লাগত না। গল্প শুনতেই বেশী ভাল লাগত, আর গল্প বলার লোকের কি কমতি ছিল নাকি। কাজের মাসি, আলতাপিসী, মাছমাসি যেই আসত তার কাছেই গিয়ে বসে উষ্টুম ধুষ্টুম বকবক করত। মাছমাসি মাঝে মাঝে আবার কচুপাতায় মুড়ে কি নিয়ে আসত, বলত "জলমাগুর নাওনা মা জলমাগুর। খেলে গায়ে রক্ত হবে"। মা হাসত, "ওসব গেঁড়ি গুগলি এবাড়ীতে কেউ খাবেনা মা, ও তুমি নিয়ে যাও।" কাজের মাসির কোলে বসে তার ভাগ থেকে চায়ে ডোবানো বাসি রুটির টুকরো একটা প্রিয় খাদ্য ছিল। অবশ্যই মায়ের চোখ এড়িয়ে।
    এছাড়া বাড়ির লোক তো ছিলই গল্প বলতে। গল্প ছাড়া খাওয়া ঘুম কিছুই হতনা। ভাত খাওয়াতে গিয়ে মা মাখা ভাতকে ভাগ করে নাড়ু বানিয়ে থালায় সাজাত। তখন ওটা আর থালা নয়, ফুটি বাগান। একটা বাচ্চা শেয়াল এসে একটা একটা করে ফুটি খেয়ে যেত। মাকে প্রতিবারেই চেঁচাতে হত, "ঐ ঐ আবার একটা ফুটি খেয়ে গেল রে শেয়ালটা, হায় হায়"। সারাদিনে শোনা গল্পগুলোতে অনেক র ঙ চড়ত, বিশেষ করে দুপুরবেলায়। মা পাশে নিয়ে ঘুমোতে শুত। মায়ের ঘুম ধরলেই সোজা জানালায়, শিকের মধ্যে দিয়ে পা ঢুকিয়ে পা দুলিয়ে দুলিয়ে বিড়বিড় করে গল্পগুলো সাজানো হত। একেক দিন একই গল্প একেক রকম হয়ে যেত।
    বেলগাছটায় নাকি ব্রহ্মদত্যি থাকত। সে কে, কি করে ঠিক জানা ছিলনা তবে গাছটার দিকে তাকালেই গা শিউরে উঠত। আর ছিল ছ চোখীর মা। রাতে না ঘুমোলেই সে আসে। অন্ধকারে ছাতে উঠলেই দুরে তার চোখের জ্বলা নেভা দেখা যেত।
    তারপরে স্কুলের পালা। অমনযোগী বলে নালিশ আসত, আসলে ক্লাসের জানালা দিয়ে যে আকাশ দেখা যেত, খোলা মাঠ আর ঝুরি নামানো বট। সেইসব দিক থেকে চোখ সরানৈ মুশকিল ছিল। একবার পরীক্ষার শেষে সাদা পাতা দেবার পর থেকে পরীক্ষার সময় ছোড়দা স্পেশাল পারমিশন নিয়ে জানালার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকত, বাইরে তাকালেই ইশারায় অ্যানসার পেপারের দিকে দেখিয়ে লিখতে বলত।

    তারপরে একটু কম ছোটোবেলায় প্রবাসে। আস্তে আস্তে গল্প শোনা থেকে পড়ার দিকে ঝোঁক বাড়ল। শুরু হল জন্মদিনে বই চাওয়া ও পাওয়া। রূপকথা গুলো দুরে গিয়ে কমিকস এসে গেল জীবনে। সাতটা টিনটিন নেওয়ার পর সেই জন্মদিনে আগাথা ক্রিস্টি চাইল সে। তখন তার লাফিয়ে লাফিয়ে বড় হওয়ার ছোটোবেলা। ক্লাস নাইনে এসে যখন বলল এবছর এম বি দেওয়া হোক, ধিক্কারে কান পাতা দায়! সে বুঝলনা দোষটা কোথায়, ক্লাসের সবাই তো দুবছর আগে থেকেই এম বি শুরু করে দিয়েছে।
    বাংলা বইয়ের সঙ্গে সম্পর্কটা ক্ষীণ হলেও একেবারে যায়নি। সেই ছোটো থেকেই লাল রেক্সিনে বাঁধানো সুকুমার রচনাবলী প্রিয় বই। তাছাড়া আর একটা ব্যাপার ছিল। ভাইবোনের ঝগড়ায় কাজ দিত সুকুমারের সব চরিত্ররা। ঝগড়ার সময় কি আর রোজকারের কথাবার্তায় ব্যবহৃত শব্দগুলো দিয়ে ভাব প্রকাশ করা যায়, জোরদার অন্য আনইউজুয়াল কিছু লাগে, এই গালাগালির মত। অথচ গালাগালি সেভাবে জানা নেই, কেউ জানলেও মুখে আনার কথা ভাবাই যায়না। একবার আরো ছোটতে তাদের কোনো একজনের মুখে শকার শুনে মা সারাদিন মুখে কুটোটি কাটেনি। অতএব ঝগড়ার সময় হুঁকোমুখো হ্যাংলা, হাঁসজারু, রামগড়ুর এসবই ভরসা। তারা জানে ওগুলো বড়দের হিসেবে খারাপ কথা নয় তবু সময়ে ওগুলোকে ওরা নিজেদের মত করে খারাপ বানিয়ে নেয়।
    একবার দেশের বাড়ী গিয়ে আর একটা মজার ব্যাপার হল। ওখানে আবার বাড়ীর ছেলেমেয়ে কুচোকাঁচা থেকে একটু বড়, সবার একটা করে বর বা বউ আছে। ঝগড়ার সময় বা ঝগড়ার ট্রিগার পয়েন্ট হিসেবে বাড়ীর এইসব মনোনীত জামাই ও বধূদের নাম ব্যবহার হয়।
    যেমন কুমকুমের বর হল এক বুড়ো বোবা মুসলমান ভিখারী। কথা বলতে পারেনা, ভিক্ষে চাইতে মুখ দিয়ে একটা এবে এ এ করে আওয়াজ বার করে। তাই তার নাম হল এবে বুড়ো। কুমকুম একে দেখলেই লুকিয়ে পড়ে, বাড়ির কোনো কোনো বড়রাও কখনও এ নিয়ে একটু মজা করার লোভ সামলাতে পারেনা। তাই এবে এলে জেঠাইমা কুমকুমের মাকে ডেকে বলে,
    "ও সেজবউ জামাই এসেছে যে, একটু বেশী করে চাল আনিস।" ঝগড়া হলেই কুমকুমের দিকে তাকিয়ে, "এবে এবে এবে...." বললেই প্রায় বন্দুকের গুলির সমান প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়।

    এইভাবেই তার বর হল বয়সের গাছ পাথর না থাকা কানা শম্ভু। বলাই বাহুল্য বাড়ির জামাইরা বেশীর ভাগই ভিখারী, বধূমাতারা পাগলী। বাংলায় চুর কানা শম্ভু একটা একতারায় টং টং করে কোনোরকমে খকখক কাশির ফাঁকে "একবার বিদায় দে মা" র এক লাইন শেষ করে। সে আবার ক্ষুদিরামের দিদির বাড়ীর পুকুরধারের চালাঘরে থাকে, যে সে ব্যাপার, এ গানে তার কপিরাইট!
    ফুলদির বর হল একটু উচ্চ গোত্রের,গোরুর ডাক্তার। একটা শতখানেক তাপ্পি মারা হাঁটু অবধি ঝুলের নোংরা ধুসর কোট আর ঢলঢলে প্যান্ট। মাথায় তালিমারা টুপি। এসেই সামনে যাকে পায় তার হাত ধরে নাড়ি দেখতে শুরু করে দেয়, তারপরেই মাটির ওপর কাঠি দিয়ে অং বং প্রেসক্রিপশন লেখা। কেন যে তার নাম হল গোরুর ডাক্তার কে জানে! তবে সে ছিল ব্যস্ত মানুষ, কালে ভদ্রে আসত। এলে পরে ছোটদের মধ্যে একটা সাড়া পড়ে যেত।
    ছোড়দার বউ ছিল এদের তুলনায় একটু কম বর্ণময়, বিমলী ক্ষেপী। গ্রামের যে কোনো সে¾ট্রাল প্লেসে দাঁড়িয়ে গলা তুলে বাছা বাছা গালাগালি দিত আকাশের দিকে তাকিয়ে, কাকে কে জানে, বোধহয় উপরওয়ালাকেই। সে গলার এমনই জোর যে দুর দুর বাড়িতে শোনা যেত।

    সেবারে ফিরে গিয়ে ঝগড়ার ভোক্যাবে একটু পরিবর্তন হয়ে গেল। সুকুমারের চরিত্ররা আবার স্বমহিমায় ফিরে গেল আর ভাইবোনের তু তু ম্যয় ম্যয় এ কানাশম্ভু, বিমলী, গোরুর ডাক্তার ইত্যাদি দের আগমন হল। আর একটু বড় হয়ে যখন বায়োলজি শুরু হয়ে গেছে তখন রাগের মাথায় একে অন্যকে প্রোটোজোয়া, অ্যামিবা, বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া যেমন ডিপ্লোকোকাস নিম্যুনে এসব বলে ডাকারও বিধি ছিল।
  • siki | 122.160.41.29 | ১৭ মার্চ ২০০৯ ১৬:০৬407255
  • এম বি-টা কী? ঠিক বুঝলাম না।
  • saikat | 202.54.74.119 | ১৭ মার্চ ২০০৯ ১৬:৪০407257
  • mills and boon

    কম বয়সের মেয়েদের দ্বারা পঠিত অতি বিখ্যাত রোমান্স নভেলের সিরিজ।

    আরো জানুন: http://en.wikipedia.org/wiki/Mills_and_Boon
  • agantuk | 128.48.203.91 | ০৮ এপ্রিল ২০০৯ ২২:৩৩407258
  • এটা খুব ছোটোবেলার কথা নয়, কলেজ জীবন, কিন্তু আমার এখন যা বয়স তাতে কলেজ লাইফ নিয়ে সহজেই স্মৃতিমেদুর হওয়া যায়।

    তো, আমি আগে কোনোদিন আই এস আইএর নামই শুনিনি। আমার এক বন্ধু, তার নাকি একা পরীক্ষা দিতে খুব খারাপ লাগে, সে নিজের সাথে আমার জন্যেও একটা ফর্ম নিয়ে এল। তারপর ইন্টার্ভিউ, কোয়াড্রাটিক ইক্যুএশন নিয়ে কি একটা প্রশ্ন ছিল, এদিকে আমি এক্কেবারে ক'অক্ষর গোমাংস, তার মধ্যেই হেভি ঘ্যাম নিয়ে বললাম, বাট ইফ এ ইক্যুআলস জিরো দেন ইট ইজ জাস্ট এ স্ট্রেট লাইন, তাতেই বোধহয় চান্স পেয়ে গেলাম।

    প্রথম সপ্তাহে আমার টাইফয়েড না ডাইরিয়া কি যেন হল, সেরে উঠে যখন জয়েন করলাম অজিত দাতে মিষ্টি হেসে বলল, ইন জে এম'স ক্লাস উই আর জাস্ট বিল্ডিং দা নাম্বার সিস্টেম, শুনে তো আমার খুব টেনশন, সিস্টেম বিল্ড করা হয়ে গেছে, এবার তো আর কিছুই বুঝবো না। সেই জোসেফ ম্যাথুর কাছেই সেমেস্টার পরীক্ষার খাতা (এটা লিখতে গিয়ে মনে পড়ল, প্রোবাবিলিটি খাতা শুনে একবার অজিত দাতে বলেছিল, প্রোবাবিলিটি ক্যায়সে খায়েগা?) নিয়ে গেলাম, বললাম স্যার টেল মি অনেস্টলি ডু ইউ থিংক আই হ্যাভ এনি ট্যালেন্ট য়্যাট অল, অর য়্যাম আই জাস্ট ওয়েস্টিং মাই টাইম হিয়ার। জে এম নিপাট ভদ্রলোক, কোনোদিন কারো নিন্দা করেন নি, তাঁর ভুরুর ওপর বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখলাম, শেষে শুকনো গলায় বললেন, ইয়োর হ্যান্ডরাইটিং ইজ ভেরি গুড। তারপরেও তো তালেগোলে সাত বছর কাটিয়ে দিলাম, এমন কি আমার একটা রেকর্ডও ছিল, প্রতি সেমে আমি কোনো না কোনো পেপারে হাইয়েস্ট, যদিও সাবজেক্টগুলো সবই এলেবেলে, যেমন ইলেক্টিভ বায়োলজি (যাতে সাতজন টীচার আর আমরা দু'জন ছাত্র), ইন্ডাস্ট্রিয়াল এঞ্জিনিয়ারিং (যাতে ৯০ এর ওপর পাওয়া শক্ত, কিন্তু ৮০-র নীচে পাওয়া আরো কঠিন) ইত্যাদি।

    এর মধ্যে কত কি হয়ে যাবে। এনেসেন শাস্ত্রী একদিন য়্যাডভান্সড য়্যালজেব্রা ক্লাসে আমাদের দাঁত মুখ খিঁচিয়ে বলবেন, য়্যানিমালস! অনেক পরে বোঝা যাবে উনি আসলে বলছিলেন, থিংক অফ গ্রুপস য়্যাজ য়্যালজেব্রাইক য়্যানিমালস, পজটা পড়েছিল মোক্ষম জায়গায়। য়্যাডভান্সড ডিজাইন ক্লাসে একটা ম্যাট্রিক্সের নাম C* দেখে পাগলটা হেসে কুল পাবে না, খালি সবুজ বোর্ডটা দেখাবে আর বলবে, হাসপাতালে থাকে, হাসপাতালে থাকে। (এই পাগলটাই নাকি আবার একদিন এম ওয়ানে মাল্টিভেরিয়েট পড়াবে, প্রথম দিন ক্লাসে ঢুকে জানাবে, আমি তোদের সব নতুন জিনিষ পড়াব, নিন্দুকে বলে তার কারন নাকি পাগল কোনো পুরোনো জিনিষ জানেই না।) 'ষন্ড যদি ষাঁঢ় হয় গন্ড তবে কি' বলে আমরা নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি করব, অনিমিখ চুপচাপ শুনবে, আর অনেক পরে চায়ের দোকানে বসে গাঁড়, গাঁড় বলে লাফিয়ে উঠবে। আমি মালবিকাকে জিগ্যেস করব, বিজয়ার কোলাকুলি মেয়েদের করা যায় কিনা, ও মিষ্টি হেসে বলবে বাড়ি থেকে জেনে এসে তোমাকে জানাব, আর তীর্থদা আমাকে খুব বকে দেবে। বিটুতে কোনো মেয়ে নেই বলে একদিন সেকেন্ড ইয়ারের ছেলেরা খুব দু:খ করবে, আর আমরা বলব, এতে চিন্তার কি আছে, একটু অপেক্ষা কর, সামনের বছর তোরা যখন থার্ড ইয়ারে উঠবি আর মালবিকারা সেকেন্ড ইয়ারে উঠবে তখন বিটুতে অনেক মেয়ে হবে। নিধান 'আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে'র অনুবাদ করবে 'ফাইভ মেন অব মাই ভিলেজ নো মাই নেম'। আর একদিন নাকি সুরে আবৃত্তি করবে 'আবার আসিব ফিরে...হয়ত মানুষ নয়' আর তাই শুনে যশোবন্ত বলবে, তার জন্য আবার আসার দরকার কি আছে, সে তো নিধান এখনই মানুষ নয়। আবার মাঝরাতে র‌্যান্ডম নম্বরে ফোন করে বিরক্ত করায় ওদিক থেকে যশোবন্তকে বাঁদর বলা হলে ও নির্বিকার উত্তর দেবে, না না, একি বলছেন, তছাড়া বাঁদররা তো রাতে ঘুমোয়; আর একদিন রাত্রে তীর্থদা আর একজনকে বলবে, আপনার খুব মাথা গরম হয়ে গেছে, আপনি এবার জল খেয়ে পেচ্ছাপ করে ঘুমিয়ে পড়ুন। ইন্দ্র ওর প্রাণ দিয়ে তৈরী করা সমীক্ষা লাইব্রেরি হোজোর হাতে দিয়ে দিল্লি চলে যাবে, আর কয়েকদিনের মধ্যেই তিতিবিরক্ত হোজো বই চাইতে এলেই বলবে, পয়সা না দিলে কিচ্ছু খুলব না। সোমাদিকে নিয়ে গান বাঁধা হবে, হয়ত সোমারই জন্যে/হয়েছি প্রেমে যে বন্য/যে যাই বলুক অন্যে/ফিজিক্স নিয়েছি তাই। দেবাশীষদা রবি ঠাকুরের সুরে কথা বসাবে, আবার মোরে ঘিরেছে এমওআন/নাকের চোখের জলে ডাকে বান/য়্যাসাইনমেন্ট দিলাম এদের কি যে/নিজের অংক কষতে নারি নিজে। আমরা পিকে তপস্বীর ক্লাসটেস্টে পটকা ফাটাব, নিধান ভীমের লিনিয়ার য়্যালজেব্রা ক্লাস থেকে হঠাৎ 'স্যার, বোর লাগছে' বলে ছুটে পালিয়ে যাবে, কিংশুক রাহুলদার ক্লাসে একেবারে উইদাউট প্রোভোকেশন হাত পা ছুঁড়ে গলা ছেড়ে গান করে উঠবে। অমিত আর কিংশুক দিল্লীতে আইএসওর সময় হরিদ্বার বেড়াতে যাবে, ফিরে এলে সম্ভ্রম এবং বিরক্তি মেশানো গলায় অমিত বলবে, বাপ রে, এক পান্ডা হামলোগকো পাকড়া, লেকিন কিংশুক হ্যায় না, পান্ডা কো বহুত ফান্ডা দে দিয়া। বিবেক প্রাণ পাগল হয়ে যাবে, চিরু পাগল হবার ভান করবে, নিরুপমদা বলবে বাঁকুড়ায় কু-টা না থাকলে শুনতে খুব খারাপ লাগে। বিবেক ম্যাঙ্গিপুডি বি স্ট্যাটের পাঁচটা সেম করার পর একদিন ক্যাজুয়ালি ডিগ্রী নিতে এসে খুব অবাক হয়ে দেখবে সবাই তখনো ক্লাস করছে, সিক্সথ সেমেস্টার চমৎকার চলছে।

    এসবই অনেক দিন আগেকার কথা, তারপর জীবন গিয়েছে চলে আমাদের অলমোস্ট কুড়ি কুড়ি বছরের পার। কিন্তু এখনো মাঝে মাঝে স্বপ্নের মধ্যে খুব উদ্বেগ হয়, মনে হয় অনেক দিন ক্লাসে যাই নি, এবার হয়ত গিয়ে কিছুই ঠিক চিনতে পারবো না, দেখব সব বদলে গেছে, আমি - সেই নিধান যেমন বলেছিল - হাঁউট হয়ে গেছি। ঘুম থেকে উঠেও প্রথমে খুব খানিকটা গোলমাল লাগে, তারপর আস্তে আস্তে সামলে নিই, দাঁত মেজে অফিস যাই।
  • arjo | 168.26.215.13 | ০৮ এপ্রিল ২০০৯ ২২:৪৬407259
  • চমৎকার। একেবারে হৃদয়ের নেবারহুডে ধাক্কা খেল।
  • AB | 135.214.154.104 | ০৮ এপ্রিল ২০০৯ ২৩:১৫407260
  • এই আগন্তক কে আমি লিচ্চয় চিনি
  • AB | 135.214.150.104 | ০৮ এপ্রিল ২০০৯ ২৩:২৬407261
  • ও, বলতে ভুলেছি কি চমৎকার মিল...

    আমি যে স্বপ্ন টা প্রায়শই দেখি সেটা হল আবার আমাকে H.S অথবা B.SC পরীক্ষা দিতে হচ্ছে এবং অবশ্যই আমার কোনো প্রস্তুতি নেই....

    আরো interesting যে স্বপ্নের মধ্যে নিজেই নিজেকে অনুযোগ করি "আমিতো M.STAT পাস করে গেছি, তাহলে আবার কেন'?
  • pepe | 165.91.215.25 | ০৮ এপ্রিল ২০০৯ ২৩:৫৯407262
  • এ জাতীয় স্বপ্ন আমিও দেখি :)
  • ranjan roy | 122.168.69.54 | ০৯ এপ্রিল ২০০৯ ০৫:২৮407263
  • বরানগর রামকৃষ্‌ণ মিশন। ক্লাস টেনের পরই আমাকে টিসি ধরিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
    আজও স্বপ্ন দেখি--- পরীক্ষার হলে বসে আছি। কোশ্চেন পেপার এল, সব কমন পড়েছে। কিন্তু লিখতে পারছি না। কারণ আমি গেঞ্জি গায়ে বসে আছি। কি করে যেন হোস্টেল থেকে ন জামা না পরে ক্লাসে এসেছি। স্যারেরা আমাকে দেখছেন, কিছু বলছেন না। এবং আমি লিখতে পারছি না।
    কিন্তু যেদিন খুব গাঢ় ঘুমে থাকি, সেদিন ক্লাস থ্রি-ফোরের ছাত্র হয়ে ঘুরে বেড়াই ""শিশুবিদ্যাপীঠ গার্লস+ স্কুল''এ।পার্কস্‌সার্কাসের কর্নেল বিশ্বাস রোড্‌। ক্লাসরুমে জানালায় দোলে ভারী নীল পর্দা।বেঞ্চিতে গর্তকরে টিনের দোয়াত ফিট করা। নিবের্সঙ্গে হাতল লাগানো কলম। লাল বা নীল সুলেখা কালির বড়ি দোয়াতে ফেলে কালি বানাই, লিখি।
    শতদলদি পড়াচ্ছেন---""থামগুলো সব ভারী ভারী, দালান-কোঠা সারি, সারি।''
    আমি অন্যমনস্ক, বাইরে ফেরিওয়ালার ডাক। ক্লাসে মনিটর মিনতি বলে সুন্দরী মেয়েটি( বাচ্চাদের সৌন্দর্য্যানুভূতি বেশ তীব্র হয়), অমাকে কড়া চোখে দেখছে, বোধহয় ক্লাসে পরে কমপ্লেন করবে।
    আমার চোখ খুঁজছে প্রতিভাদিদিদিমণির মেয়ে শিপ্রাকে। ওর কচুপাতার মত তে-কোণা লম্বাটে মুখ, ঠোঁটের ওপর একটা ফুলো-ফুলো ভব, যেনি্‌পঁপড়ে কামড়েছে।
    এসবই হারিয়ে যাবে, আমার কান্না পাচ্ছে। বাবা ভিলইয়ে নতুন চাকরি জয়েন করেছে। শুনছি আগামী মাসে আমাকে ভিলাই বলে জায়গাটায় হিন্দি স্কুলে ভর্তি করে দেবে। আমার কান্না পাচ্ছে।
  • Bratin | 117.194.96.121 | ০৯ এপ্রিল ২০০৯ ০৬:০২407264
  • স্কুল দিয়ে ই শুরু করা যাক। আমি উত্তরপাড়া গর্ভমেন্ট স্কুলে পড়তাম। মর্ণিং সেকশান রোজ বাবা স্কুল পৌঁছে দিতে যেতেন। উপরি প্রাপ্তি ছিল বাবা রাস্তায় যেতে যেতে একটা গল্প বলতেন । এই ভাবে ই বিশ্ব-সাহিত্যে কে ভালো লাগার প্রথম শুরু।

    সুধাংশু স্যার এক বার আমার আঁকা এক "জবা ফুল" দেখে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তর "জবা-ফুলত্ব" নিয়ে। বরাবর ই আমি দুর্ধর্ষ আঁকতাম। আরেক বার খাতা জমা দিয়ে বেরচ্ছি এমন সময় বাঁসুরি দি বললেন "ব্রতীন , এটা কি টিয়া পাখি হয়েছে নাকি ট্যাঁপা পাখি"।দোষের মধ্যে পাখির মাথা টা কিঞ্চিত তুবড়ে গিয়েছিল। স্কুল এ ক্লাসের ফাঁকে দীপাঞ্জন,শন্তসরণ,সুদীপ আর আমি প্রচুর দাবা খেলতাম আর নানা রকম opennings নিয়ে পরস্পরকে ফান্ডা দিতাম। ক্লাশ সেভেন এক বার বাঁদরমি করর জন্যে আমাদের ৪ জন কে হেড স্যারের ঘরের সামনে নিল ডাউন করিয়ে দিল।এক জন অফিস স্টাফ মাঝেমঝেই এসে থ্রেট দিচ্ছিল । "তোমাদের TC লেখা হচ্চে"। তখন আমরা আমদের ভবিষ্যত নিয়ে যারপরনাই চিন্তিত। বছরের মাঝখানে কোথায় ভর্তি হব। বাড়ি তে কেমন পিটুনি জুটবে এই সব নিয়ে । তারি মধ্যে তারক বলল "আমার চিন্তা নেই। মা পালপাড়া গার্লসে পড়ান ওখানে ঢুকে যাবো"।
  • bb | 125.16.17.152 | ০৯ এপ্রিল ২০০৯ ০৮:৪৯407265
  • এই স্বপ্নটা খুব interesting কেননা আমিও চাকুরি জীবনের বেশ কিছুদিন পর্যন্ত এই রকম স্বপ্ন দেখতাম। এখন চেষ্টা করেও পারিনা। এক জায়গায় পড়েছিলাম এই পরীক্ষা হলে বসে আছি,সব জানি আর উত্তর লিখতে পারছিনা ইত্যাদি আসলে permonce anxietyথেকে হয়। ডি: ইহা ঐ performance নহে, এবং আমি পিসি-চলো-জাই এর ছাত্র নই। এখানে কেউ এই বিষয়ে আলোকপাত করলে খুশি হব।
  • Bratin | 117.194.99.56 | ০৯ এপ্রিল ২০০৯ ২০:৫৪407266
  • আমি আবার মাঝে মাঝে এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখি। HS পাস করে গেছি। MTech ও কিন্তু । মাঝে BSc পাস করতে পারি নি । আমাকে univ থেকে বলেছে এবারে ই last chance; এর মধ্যে যদি BSc পাস করতে না পারি তাহলে আমার আগের HS টা বাতিল হয়ে যাবে। কি চাপ।

    BScresult ভালো হয় নি। অবচেতন মনে হয়তো সেটা থেকে থাকবে । তাই এই অদ্ভুত স্বপ্ন। :-))
  • pi | 69.255.233.93 | ১৫ এপ্রিল ২০০৯ ১৩:৩২407268
  • সেই দূরদর্শনে নববর্ষের বৈঠকী আড্ডা শোনার জন্য ইস্কুলের দিনগুলোর থেকেও তাড়াতাড়ি উঠে পড়া, আর অনুষ্ঠান শুনে প্রতিবারের মতই সেই নাক সিঁটকানো ... তা হোক। ভাল কিছু ও তো ছিল। সেই সেবার , 'শূন্য হৃদয়পদ্ম নিয়ে যা' লাইনটা যেমনি আসছিল, জলের উপর একটা লত্‌পত করতে থাকা পদ্মফুলের উপর ক্যামেরা ফোকাস করছিল,দেখে আমাদের কি হাসি, কিন্তু ঐ চক্করে ধীরেন মিত্তিরের গলায় ঐ অমন পদ্মার ঢেউ রে ও তো শোনা হয়ে গেল ! :)

    তারপর এট্টু বেলা হল কি হল নি, মা র হাতে তৈরি করা সুতীর নতুন ফ্রক গলিয়ে পাড়া চরতে বেড়ানো, ক্লাবের থেকে মিষ্টির প্যাকেটে বরফি , গুঁজিয়া আর বোঁদে, দুপুরবেলা খাসির মাংস ভাত,তাতে ইয়াব্বড় বড় আলু :)
    খেয়েদেয়ে নাকি ঘুমোতেও হবে, নৈলে সন্ধেবেলা স্টেজে উঠে গান গাইবো যখন, তখন পু-উ-রো পেত্নীর মত লাগবে। মা বলেছে। সকাল থেকে রোদে পুড়ে টো টো করে ঘুরে বেরিয়েছি যে।

    ছাই ঘুমুবো। চোখটা বুঁজে একটু মটকা মেরে পড়ে থাকতে হবে, মা ঘুমানো অব্দি।
    কিন্তু ঐ ফুলস্পীডে চলতে থাকা পাখার হাওয়া ঠিকমত গায়ে না লাগার অস্বস্তি নিয়েই কখন যে সত্যি চোখ লেগে গেছে, টের পাই চটকাটা ভেঙ্গে যেতে।
    একটু ঠান্ডা হাওয়ার ঝলক লাগতে।
    চেয়ে দেখি, যে ভয়টা ছিল আমাদের , কদিন ধরে, ঠিক তাই।
    ঈশেন কোণে মেঘ জমেছে।
    কালবোশেখী এল বলে।
    এবার আমাদের ফাংশন ! :((

    কি হাওয়া , কি হাওয়া ..., দৌড়ে গিয়ে রান্নাঘরের জানলা দিয়ে দেখি, স্টেজের ত্রিপল তো উড়ে গেল বলে ! :((
    পই পই করে সুজয়কাকুরা বলেছিল আসলামদাকে। ম্যারাপটা মজবুত করে বাঁধতে। নিশ্চই ফাঁকি মেরেছে।
    কিন্তু এবার কি হবে !
    জানলা দিয়ে চীৎকার করে ওবাড়ির তিনতলায় গুড্ডিকে ডাকি। বারান্দায় বেরিয়ে আসে, ধুতি পড়েই। জুতা আবিষ্কারের গোবুচন্দ্র। ধুতি পরে ফাইনাল স্টেজ রিহার্স্যালের কথা ছিল যে একটু বাদেই। বলে, ফাংশন কি আর তাইলে হবেই না !
    বৃষ্টি ও নেমে পড়েছে। কি বড় বড় ফোঁটা। :(
    কেঁদেই ফেলি এবার ।
    মা চেঁচাচ্ছে, শিগ্গির জানলার পাটি বন্ধ কর, ছাঁট আসছে !

    হ্যালো, হ্যালো মাইক টেস্টিং ওয়ান টু...
    ঠিক শুনছি তো ! :o
    জানলাটা ফাঁক করি । অন্ধকার। মেঘের না। সন্ধে নামার একটু আগের।
    বৃষ্টি ই বা কৈ ! :)
    বাপিদারা একটা বড় ত্রিপল জোগাড় করে ফেলেছে, তার উপরে চেয়ারগুলো পাতা হবে তাইলে আর কাদা লাগবেনা।
    আর এমনকি, স্টেজটাও তো উড়ে যায়নি বলেই মনে হচ্ছে ! :)
    সাড়ে ছটার ঘন্টা।
    উফ, কি দেরিটাই না এবার করে ফেল্লাম !
    কখন ই বা গানগুলো একবার প্র্যাকটিস করবো, কখন ই বা সাজবো .. কত্ত কাজ .... পালাই !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে প্রতিক্রিয়া দিন