এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • স্মৃতি মেদুরতা

    M
    অন্যান্য | ১৩ মার্চ ২০০৯ | ৩৯৯৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • siki | 122.177.237.71 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ০৯:৫৬407217
  • :-) বেশ হচ্ছে।
  • Du | 117.194.203.174 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ১১:৪৬407218
  • আহা
  • Tim | 173.163.204.9 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ১২:৪০407219
  • স্মৃতিতে থাকলে কিনা আবাজ খাওয়ার ভয়, তাই। নইলে কেই বা সেইসব রঙচঙে দিনরাত্রী ভুলে থাকে? সেইসব আলো ও অন্ধকারে ঢাকা সময়? কৈ নেহি জি, কৈ নেহি।

    তা, যে কথা হচ্ছিলো। বাঁশের সাঁকো থেকে কংক্রিটের ব্রিজ। সাইকেল রিকশার যাতায়াতে মুখর সরু গলির ক্রমবিস্তার, মাটি খুঁড়ে তুলে আনা মানুষের খুলি। ডোবা, পুকুর ক্রমশ ভরাট হয়ে আসছিলো -- কিছু বা প্রাকৃতিক নিয়মে, কিছু বা সাংকেতিক রাজনীতির ফলস্বরূপ। আমরা যে ডোবাটায় ব্যাঙবাজি করতাম, (ব্যাঙবাজি বোঝেন তো, সেইযে চ্যাটালো ইঁটের টুকরো তেরছা করে ছুঁড়ে দিলে জলের ওপর দিয়ে তিড়িং বিড়িং করতে করতে ছুটে যায় --- সেই জিনিস) সেটা এক গরমের ছুটিতে শুকিয়ে কাঠ। শুকনো ফুটিফাটা গর্তটার বুকে আমাদের ছুঁড়ে দেওয়া ইঁটের টুকরো, পরিত্যক্ত সিগারেটের প্যাকেট থেকে পাওয়া রাংতা পাকিয়ে বানানো খেলনা বরশি, হাঁ-মুখ রবারের বল এইসব দেখে অদ্ভুৎ লেগেছিলো। পাশের মাঠে যখন ক্রিকেট-ফুটবল খেলতাম, তখন ঐখানে বল এসে পড়লে বিরক্ত লাগতো। সেই শাপশাপান্তের ফলেই কিনা কে জানে, ডোবাটা শুকিয়ে গেল।
    ডোবা গিয়ে তার বদলে এলো বিশাল বিশাল জলের পাইপ, নানা আকৃতির রড। সেসব স্তূপ করে রাখা থাকতো সরু গলিটার অর্ধেকটা জায়গা নিয়ে। ততদিনে সেই একফালি রাস্তা অনেক চওড়া হয়েছে। তারপর, সেই জলের পাইপগুলো আমাদের গিলে নিত বিকেল হলেই। দিব্যি একটা লুকোবার জায়গা, তখনও আমরা বেশ ছোট, কখনও কখনও লুকোচুরি খেলতাম আর ঐ পাইপগুলোর মধ্যে দিব্যি ঘাপটি মেরে বসে থাকা যেত। চতুর্দিকে অন্ধকার, শুধু দুদিকে দুটো বা একটা গোলমত আলোর টুকরো দেখা যেত তখন। পাশেই মাটি খুঁড়ে ডাঁই করে রাখা থাকতো, আধো অন্ধকারে সোঁদা গন্ধ আর স্যাঁতস্যাঁতে জায়গাটা বেশ লাগতো। পরে দেশ বিদেশের অনেক সিনেমায় সেরকম দৃশ্য দেখেছি। স্তূপ করে রাখা পাইপ একটা অদ্ভূৎ জিওমেট্রি, ছবির মত। তার গর্ভজাত অন্ধকার আরো সিনেম্যাটিক।

    তারপর কিকরে যেন ঘড়ির স্পিডটা বেড়ে গেল। দ্রুম দ্রুম করে মেট্রো ছুটতে লাগলো, প্রতিবার তার যাতায়াতে আমাদের বাড়ি ঠকঠক করে কাঁপত।মনার বাবা হঠাৎ করে মারা গেলেন, জয়ের মা ও। জয় তার আগে বাগানে নানারকম এক্সপেরিমেন্ট করতো, আমরা সমীহ করতাম আর ভাবতাম এ নির্ঘাৎ বড়ো হয়ে কেউকেটা হবে। কিন্তু সে একেবারে পড়াশুনোই ছেড়ে দিলো। কে একজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেল, কে একজন বিষ খেলো। আবার অনেক ভালো ভালো ব্যাপারও হয়েছিলো। সংস্কৃত, ফুটবল, সলমন-শাহরুখ-আমীর, কিউএসকিউটি-এম্পিকে এইসব যুগান্তকারী ঘটনা ক্রমান্বয়ে আমাদের নাড়িয়ে দিচ্ছিলো। তার আগেই আঁকার ক্লাসে প্রবল ঠেকবাজি শিখে নেওয়া গেছে।
    মোদ্দা কথা, মেট্রোর সাথে পাল্লা দিয়ে সাঁকো হলো মজবুত ব্রিজ, বাস চল্লো গাঁ গাঁ করে, বাড়ির অদূরে যেখানটা শুয়োরেরা কাদামেখে রোদে পড়ে থাকতো সেখানে একটা ছিমছাম সবুজ জমি গজালো, আরো কয়েক বছর পরে সেখানে জাপানের এম্ব্যাসি হবে। তীব্র হ্যালোজেনের আলোয় মাঠের রহস্যময় বটগাছটা বিপন্ন হয়ে পড়লো -- তার এতদিনের ভূতুড়ে সুনাম আর বুঝি টেঁকেনা। শেষে একদিন সত্যিই সেও শুকিয়ে কাঠ হয়ে রইলো। তক্কে তক্কে থাকা লোকেরা এসে কেটে নিয়ে গিয়ে সাফ করে দিলো তার তিলতিল করে গড়া সাম্রাজ্যের শেষ চিহ্নটুকু। আমরা কেউ বাবা মা ভাই বন্ধুর শোক ভুললাম, কেউ পরীক্ষায় ফেল করার জ্বালা। বারো বছর বিছানায় শুয়ে থেকে একটা মানুষ চলে গেল, যে কিনা রোজ গল্পের বই থেকে জোরে জোরে পড়ে শোনাতো সবাইকে, সে---টানা আটবছর একটাও কথা না বলে একদিন নেই হয়ে গেল --- বন্ধুদের দেখাদেখি আমিও সেটা মানিয়ে নিয়ে স্মার্ট হলাম। মানুষের মৃত্যু কখনও এত স্বস্তির হতে পারে, এর আগে দেখিনি।

    তারপর সবই চকচকে হলো, আলোকিত হলো। এত আলো হলো, যে ভালোভাবে আকাশ দেখা যায়নি আর কোনদিন।
  • kallol | 119.226.79.139 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ১৩:১২407220
  • টিমরে। বড় ছলছল করে দিলি।
    আস্তবলের মাঠটা আছে কি? অটল কি এখনো সেখানে ক্রিকোক্যা চালায়। করুণাময়ী পুরো পাল্টেই গেলো মেট্রোর ধাক্কায়। বহুদিন যাওয়া হয় না ওদিকে। এবার যাবো। এদিক দিয়ে নয়, ওদিক দিয়ে যাবো, এদিক দিয়ে ফিরবো।
    মানে, টালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে দীপ্তি সিনেমা (ওহো, এখন তো সেটা একটা হাসপাতাল) বাঁয়ে রেখে, ডানদিকে টালিগঞ্জ বাজার ছাড়িয়ে (টালিগঞ্জ বাজার নাকি টিপুর ছেলেদের পিলখানা ছিলো), আদি গঙ্গার ওপর টালিগঞ্জ ব্রিজ পেরিয়ে, বি এল শা রোড ধরে যাওয়া। বাংলুর কারখানা বি এল শা ডিস্টিলারি, পার হলে রাস্তার দুধারে অসংখ্য ছোটবড়ো কারখানা। তারপর ডানদিকে ইটভাঁটা ছাড়ালেই, বাঁদিকে শিরিটি শ্মশাণ। এরপর হঠাৎ করে করুনাময়ীর মোড় আর বাজার।
    আর ফিরবো তোদের পাড়ার পাশ দিয়ে। ভেঙ্গে যাওয়া এনটিওয়ান আর হারিয়ে যাওয়া কলকাতার এলিট রেসের মাঠের মধ্যে দিয়ে, এখন যেটা মেট্রোরেলের কার শেড। ওখানেই সীমাবদ্ধ ফিল্মের ঘোড়দৌড়ের শ্যুট হয়েছিলো।

  • Manish | 59.90.135.107 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ১৬:২৬407221
  • এই টইটা ব্যাপক ভালো লাগছে।
    একে শ্রেষ্ঠ টই হিসেবে পুরস্কৃত করবার জন্য মনোনিত করলাম।
  • T | 14.139.128.11 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ১৯:৪৩407222
  • ও মনীশবাবু, আমাদের ছোটোবেলাটাই শ্রেষ্ট সময়, শ্রেষ্ট হইহই টইটই।

    সব্বার লেখা পড়ে মুগ্‌ধ হলাম। বিশেষ করে Tim এর। দ্রুত মনখারাপ হয়ে গেল।
  • Nina | 12.149.39.84 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ২২:০১407223
  • টিম্ভাই জ্জীও ও ও ও
    মনটাকে এমন করে নাড়িয়ে দিলি---পেছনের সেই ফেলে আসা---ভুলে যাওয়া--না না নিরন্তর ডাকতে থাকা দিনগুলির কথা ---সেকি শুধু আনে ব্যাথা ?!
    নাতো! তবে যে আমার সেই কবে দেখা এক অপরূপ পবিত্র প্রেমের ছবি --আধো আঁধারে আধো জাগরণে--সেতো শুধু ছিলনা ছবি----আজো যেখানে শুনি প্রম--জেগে ওঠে , জ্বলজ্বল করা সেই মুহুর্ত্তের ছবি--
    সে ছিল এক ছায়াঘেরা গ্রাম --সেখানে বেড়াতে গেছিল কিছু শহুরে মানুষ---ছিল তারা তাদের পুরোহিতের বাড়ী। মাটির দোতালা বাড়ী , সযত্নে নিকোনো --উঠানের চারিপাশ ঘিরে ঘর, ঘরের কোলে টানা বারান্দা --তাকি কি বলে চক-মিলানো--জানিনা।
    গ্রামের সেই বাড়ীতে যযমানেদের খুব খাতিরে রাখা হয়েচিল---সেই দলে ছিল দুটি কিশোরি মেয়ে---একটির বয়স ১৩, অন্যটির ১৭ --আর তাদের গ্রাম দেখাবার ভার পড়েছিল পুরোহিতের ২২ বছর বয়সি ছেলেটির ওপর যে কিনা কলকাতর কলেজে পড়ত! এইই ২২ সের সঙ্গে ঐ ১৭র বেষ ভাব আগে থেকেই---তাদের বাবারা গ্রামতুতো বন্ধু ছোটবেলাকার---আর ১৩--সে নতুন ---গ্রামে নতুন, পরিবেশে নতুন--সে শুধু হাঁ করে চেয়ে থাকা এক মুগ্‌ধ বালিকা---যত সুন্দর সেই গ্রাম তত সুন্দর সেখানের পুকুর, গাছপালা --আর মানুষগুলি---কি অনাবিল হাসি , কি খোলামেলা পরিষ্কার স্বচ্ছ মন--তাদের গ্রামের দিঘীটার মতন--আর সেই বউটি!
    হ্যাঁ তো, সেই ২২ সের একটি ফুটফুটে সুন্দর ডুরে শড়ি ঘেরা মোমের পুতুলের মতন বউ--সেও বোধহয় ১৭ ই!
    সারা দিন তারা চরকির মতন ঘোরে গ্রামের রাঙাধুলোয় রাঙিয়ে আপাদ-মস্তক---আর সেই ২২ আর ১৭ --কি আমোদ ই না করে দুটোতে কত হুটোপাটি--কত গালগপ্প! ২২সের বউটি কিন্তু বাড়ীতে ঘোমটার আড়ালে এ কাজ সে কাজের পায়ে পায়ে ঘোরে শুধু---
    ১৩ ভাবে--২২ কেন তাকে সঙ্গে নেয়না?! ২২ কি তবে শহুরে১৭ কে বেশি ভালবাসে? দ্বন্দ! কষ্ট! ১৩র।
    খেতে বসলে যেন গ্রামের সেই বধু১৭ খুব যত্ন করার চেষ্টা করে সেই ২২ কে ( নকি এ সবই ১৩র মনগড়া ভাবনা--ভাবতে ভালবাসার বাতিক ) বলে সে ২২ কে অস্ফুট স্বরে
    চাড্ডি ভাত দি ই
    শহুরে ১৭ কেন হি হি করে হাসে আর বলে নিবি গোপালদা চাড্ডি ভাত---চাদ্দি আরও--হি হি হি
    ২২ একটু কি কুংকড়ে যায় , একটু বেশি রুক্ষ্‌ক্ষ স্বরেই বলে না! বধু ১৭র মুখে কি একটু চায়া? কে জানে!
    একি্‌দন আসে সেই রাত---গ্রামের সেই ঘননীল ভেলভেটের মতন রাত ---চারিপাশে কেমন সব নানা রকমের ডাক---ঝিঁ ঝিঁ --শন্‌শন --আর কতকি
    সবাই ক্লান্ত--যে যার ঘরে ---১৩ হঠাৎ দেখে নীচে সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসছে এক মোমের পুতুল--লাল হলুদ ডুরে শাড়ি ঘেরা এক বেতসলতা--হাতে লন্ঠন --তার নরম আলোয় ১৭র মুখ হয়ে গেছে সোনার বরণ ---
    ১৩ চেয়ে আছে---সেই মোমের পুতুল ঢোকে তার ঘরে----২২ দাঁড়িয়ে জনলায়---১৭ এগিয়ে আসে কাছে ---২২ তার হাতের লন্ঠনটি এক হাতে নেয়--অন্য হাতে তার কোমর ধরে কাচে টানে--
    ১৩ মুগ্‌ধ হয়ে দেখে শুধু দেখে--ভুলে যায় সরে যেতে --ভুলে যায় চোখ সরাতে--
    সামনে জানলার ফ্রেমে
    একটি প্রেমের ছবি--আধো আঁধারি---কি অপূর্ব্ব--কি অমলিন! বাহ!
    ১৩ র মন ভরে যায় আনন্দে--এই তোপ্রম --পবিত্র প্রেম--কি সুন্দর সেই ছবি!
    সেই কবেকার দেখা--আজও যেন গা শিরশির করে ওঠে ---------
  • Nina | 12.149.39.84 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ২২:১০407224
  • শহুরে ১৭ শুধুই স্কার্ট ব্লাউজ ---ডুরে শাড়ি শুধু বউ১৭--গুলাইবেন্না--আমার ত্রুটি ক্ষমা করেন :-)
  • Somnath2 | 207.239.86.106 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ২২:৪৮407225
  • Tim এর লেখা পড়ে খুব মন খারাপ হয়ে গেলো .. ছোটোবেলার কথ মনে পড়লো, মেট্রো আসার আগে পুরনো টালীগঞ্জের ছবি । আপনি কি আস্তাবলের মাঠ, নানুবাবুর বাজার , চন্ডীতলা এলাকায় থাকতেন?
  • Tim | 198.82.29.117 | ১০ নভেম্বর ২০১১ ২৩:১৭407227
  • কল্লোলদাকে,
    আস্তাবলের মাঠ আছেও, আবার নেইও। চারিদিকে পাঁচিল তোলা মাঠ। মাঠের আবার পাঁচিল হয়? হতে পারে? এখন সেখানে রূক্ষ জমি, কাঁকুড়ে মাঠ আস্তাবল। আসলে জমিটা কেমন পোড়ো হয়ে গেছে।

    আস্তাবলের তো পাশের মাঠ, সাদা বাংলায় যারে কয় সাপোর্টিং অ্যাক্টর , আসল মাঠ ছিলো মালীর বাগান ( হয়ত কল্লোলদা ওটাই মিন করেছে)। কোন সে মালী জানিনা, তবে অমন ভালো মাঠ আসেপাশে অল্পই ছিলো। ঐযে ""জগদ্বিখ্যাত"" টালিগঞ্জ অগ্রগামীর মাঠ, তারও হৃদয় খুঁড়ে কংক্রিটের চিরস্থায়ী ক্রিকেটীয় আস্তানা বানানো ছিলো। অনূর্দ্ধ্ব ১৬ না এইরকম একটা কি আইএফএ'র ট্রফি খেলতে গিয়ে মনে আছে স্পাইক ভেঙ্গে আহত হয়েছিলো আমাদের সেন্টার হাফ। অন্যদিকে তানিয়াদিদের পাড়ার ( আমার মামার বাড়ির পাড়াও বটেক) ভরাট মাঠে বন্যার মত জল জমতো বিষ্টি হলেই। ঐজন্য কিনা জানিনা, খেলাধুলোর কালচারটা বড়ো কম দেখেছি খাস চন্ডীতলার ছেলেপুলেদের মধ্যে।
    তো, মালীর বাগানে এসব ঝামেলা ছিলোনা। দিব্যি ঘাসে ভরা সমতল মাঠ, চারিধারে বিস্তর বসার জায়গা। এখন অবশ্য সেসব নেই। নব্বইয়ের গোড়ার দিকে একটা চুক্তি হলো টালিগঞ্জ স্পোর্টস কাউন্সিল আর সরকারের মধ্যে, যে ঐ মাঠ কোনদিন অধিগৃহীত হবেনা। কিন্তু নব্বই এর শেষের দিকে ( ঠিক মনে নেই, সামান্য আগে পরে হতে পারে) সেখানেই ইঁট বালি সিমেন্ট জড়ো করা হলো। মেট্রো সম্প্রসারন দ: চব্বিশ পরগণাকে ডেকে নিলো আরো কাছে, আর কোল্যাটেরাল ড্যামেজ হিসেবে মরে গেল মালীর বাগান।
    অটলদার কোচিং ক্যাম্প এখনও আছে। দাদাযুগ, আইপি এল, অশোক দিন্দা ইত্যাদি বিস্ফোরণের পর এখন অন্তত ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্প উঠে জাওয়ার ভয় নেই। অথচ কেউ খেয়াল করেনা যে অতদিনে ফুটবল ক্যাম্প উঠে ইতিহাস হয়ে সেই ইতিহাসে ছাতাও পড়ে গেল। ময়দানের হেভিওয়েট ফুটবলারেরা আসতেন সেখানে, কখনও প্রধান অতিথি হয়ে, কখনও গোল্ড কাপে খেপ খেলতে। কেউ বা পরে তারকা হয়েছেন, আগে ওখানেই আড্ডা দিতেন, হালকা প্র্যাক্টিস করতে আসতেন। এমনকি বিদেশিরাও। এমেকা-চিবুজারকে মনে আছে? সুখেন সেনগুপ্ত? তুষার রক্ষিত হয়ত অতটাও ভুলে যাওয়া নাম নয় এখনও। শান্তি মল্লিক, কুন্তলা ঘোষদস্তিদারের কথা কেউ জানে কিনা আমার ঘোর সন্দেহ। বা জানলেও হয়ত মনে রাখেনি আজ।
    স্টেফি গ্রাফ ছেলেদের সাথে প্র্যাক্টিস করতেন শুনে যখন বাঙালী বিস্মিত হয়, তখন বুঝি -- বিস্মরণের চেয়ে বড়ো অসুখ হয়না।
  • Tim | 198.82.29.117 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ০০:৪৬407228
  • আরে সোমনাথের পোস্ট দেখিনি। হ্যাঁ। ঐযে কল্লোলদা লিখেছে, মেট্রো কারশেডের কাছে।
  • Somnath2 | 207.239.86.106 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ০১:৩৬407229
  • টিম : হুঁ বুঝলাম যে আপনি ঐ চত্বরের লোক । তবে চন্ডীতলার ছেলেপুলেরা তো দিব্যি খেলাধুলা করতো ভরাট মাঠ জলে ভেসে গেলেও :-) তাতেই তো বেশি মজা হত । ছোটোবেলার অনেক স্মৃতি ফিরে এলো .. পালাই এবার ..ওদিকে সোসন চলছে । মাঝে 2 ঢুঁ মেরে যাবো।
  • Tim | 198.82.29.117 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ০১:৪৯407230
  • আরে না খেলতো তো বটেই, কিন্তু আমার বন্ধুবান্ধবেরা ( ঐ চত্বরের) সব কেমন গম্ভীর জ্ঞানী টাইপের, সারাদিন বইপত্তর পড়তো। চন্ডীতলার অন্য দিকটা তো খেলাধুলোর খনি। উদয়ন সংঘ, অগ্রগামীর দিকে সব ডানপিটেদের আখরা ছিলো। আমরা অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে যেতাম। সে ক্ষি রাইভালরি!

    ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট, অটলকাকুর বাড়িও তো ভরাট মাঠের কাছেই। তাই আমার হালকা চালে বলা বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিলুম। :-)
  • Somnath2 | 207.239.86.106 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ০৩:০১407231
  • ক্ষোনো চাপ নেই। আমিও হালকা চালেই বল্লাম। চন্ডীতলায় খেলতে আর আড্ডা মারতেই যেতাম, নিবাস আরো দক্ষিনে wireless পার্কের দিকে। আপনি লিখে জান , পড়ে ভালো লগলো।
  • Sumit Roy | 67.242.141.24 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ০৮:০০407232
  • নিনা: সাধু, সাধু। মধুর স্মৃতি, মেদুর স্মৃতি। ১৩র ট্রেনিং খুব ভালো হয়েছিল তা এখনকার ২৯-এর সবুজ মন দেখলেই বোঝা যায়। লেখো, লেখো আরো লেখো।

  • kallol | 119.226.79.139 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ০৯:২০407233
  • শান্তি মল্লিক আর কুন্তলা ঘোষদস্তিদার। মনে রাখে না কেউ। মনে রাখেনি লোপামুদ্রা আর রীতাকেও। ঘটনাচক্রে কুন্তলা ছাড়া আর তিনজনই চেৎলা-কালীঘাটের মানুষ।
    শান্তি ফুটবল, লোপা ক্রিকেট আর রীতা অ্যাথালেটিকস। রীতা প্রায় আমাদেরই বয়সী বা একটু ছোট, ফলে ওর রোজকার লড়াই আমি দেখিনি। কিন্তু শান্তি আর লোপার লড়াই খুব কাছ থেকে দেখেছি।
    নিম্নবিত্ত বাড়ির মেয়ে ফুটবল খেলছে এমন আজগুবী ব্যাপার কস্মিনকালেও কেউ ভাবে নি কালীঘাট রোডের মল্লিক পরিবারে। দিনের পর দিন ছোলা ভেজা চিবোতে চিবোতে দৌড়ে ময়দান (পরের দিকে সাইকেলে)। আর হাড়ভাঙ্গা প্রাকটিস কালীঘাট মাঠে। শান্তি একা নয়। কলকাতা ও শহরতলী থেকে আরো অনেকেই আসতেন। তবু তার মধ্যে শান্তিই ফুটবলে একমাত্র মহিলা অর্জুন।
    আজও কলকাতা গেলে দেখা হয় সকালে। আমরা একই সাথে লেকে যাই, আমি মর্ণিং ওয়াকে, শান্তি এভিনিউ সম্মিলনীর বাচ্চাদের কোচিংএ।
    লোপারা মধ্যবিত্ত। তাই শান্তির মতো অর্থনৈতিক প্রতিকুলতা ততো ছিলো না। কিন্তু লোপাকে লড়তে হয়েছে অন্য ময়দানে। ঘটনাচক্রে লোপা পুরুষালী আর লোপার ভাই (নামটা একদম ভুলে গেছি) মেয়েলী। কতো যে কুৎসিত ঈঙ্গিত ওদের দুজনকে নিয়ে ছোট্টবেলা থেকে ওরা সয়েছে। আমাদের কেওড়াতলার মোড়ে স্রেফ কানচাপাটি দিয়ে বন্ধ করা হয়েছিলো সেসব। কিন্তু কোথায় কোথায় বন্ধ করব? ওদের তো ক্রিকেট আর নাচের জন্য সারা কলকাতাই ঘুরে বেড়াতে হতো। একসময় নিজেরাই শিখে গেছিলো, নোংরামীকে উপেক্ষা করা। লোপাদের সাথে ততো দেখা হয় না আর।
    আমার দেখা দুজন লড়াকু মানুষ।
  • Tim | 128.173.38.135 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ১২:০৭407234
  • চেতলা কালীঘাট অঞ্চলের একটুখানি গন্ধ আমাদের রক্তেও আছে। বাবা-কাকাদের জন্ম ওখানে। সাহানগর স্কুলের কাছে। এই স্কুলে পীযুষকান্তি সরকার ইংরেজি পড়াতেন একদা। বাবার কাছে শুনেছি কালীঘাট-চেতলা ও শ্মশ্মান এলাকার গল্প। ডানপিটেমির এক এক তাজমহল। এই ধরেন, সাত বছর বয়সের কেউ বাড়ি থেকে ""ঘুরতে ঘুরতে"" খিদিরপুর চলে গেল। রাত দুটোর সময় তার বাড়ির লোক খিদিরপুর থানায় তাকে পায়, সে তখনও কান্নাকাটি না করে দিব্যি রসগোল্লা খাচ্ছে। এরকম একবার নাকি কেউ ময়দানেও চলে গেছিলো, কি ভাগ্য যে তাকেও পুলিশে উদ্ধার করে আনে।

    তখন কোন কোন বাড়িতে কড়া শাসন, ঘড়ির কাঁটা এদিক ওদিক হলেই বেদম প্রহার। আমাদের বাড়িও এরম ছিলো। বাবার কাছে শুনেছি, দূরে কোথাও খেলা থাকলে ফিরতে দেরি হলে আর বাড়ি না গিয়ে কেওড়াতলা শ্মশ্মানে ঘুমিয়ে পড়তো তখন। সেখানে একটা ভাঙাচোরা ঘর ছিলো, একটা বারোয়ারি তক্তপোষ ছিলো আর ছিলো স্যাঁতস্যাঁতে কিছু লেপকম্বল। দরজার পাল্লা নেই, তবে তাতে তেমন অসুবিধে হতনা। গল্পের মত এইসব সময় আমি কখনও দেখিনি।

    শান্তি মল্লিকের কথায় মনে হলো ঐ এলাকার খেলাধুলোর জগতের অনেককেই কল্লোলদা চিনবে। টালীগঞ্জের এই অংশটা এক সময় ফুটবলারদের আঁতুড়ঘর ছিলো। সুশীল ভট্টাচার্য্য একা হাতে বেশ কটা ফুটবল কোচিং ক্যাম্প শুরু করেছিলেন। সম্পূর্ণ অবৈতনিক এইসব সেন্টারে ছেলেরা সপ্তাহে সাতদিন প্র্যাক্টিস করতো কোচেদের তঙ্কÄ¡বধানে। এইসব কোচেরা কেউ কেউ তখনও খেলেন নানান ছোটবড়ো ক্লাবে, আবার কেউ কেউ অবসর নিয়েছেন সদ্য। আমরা তাদের ডাকনামেই চিনতাম। ঝোটনদা, শম্ভুদা, বুবলাদা এইরকম সব নাম। কেউ হয়ত এরিয়ান, কেউ মিলন সমিতি। ঐ আঁতুড় থেকেই কেউ কেউ তারকা হয়ে যেত। এক টুর্নামেন্টে পেনাল্টি সেভ করে স্নেহাশিস চক্রবর্তী ওরফে ফুচিদা মোহনবাগানে চলে গেল। রাজুদা সুব্রত কাপে বিস্তর ভালো খেলে কাগজে হেডিং হলো। মেট্রো সম্প্রসারণের জন্য যেখানে ওভারব্রিজটা কারশেডের দিক থেকে বাঁক খেয়ে কুঁদঘাটের দিকে চলে যায় গঙ্গার পাড় বরাবর, সেইখানে রাজুদারা একটা বিশাল বস্তিতে থাকতো। সেখানে শংকর, কিশোর, অরুণ-বরুণ যমজ ভাই এরাও থাকতো। ভারত কেন বিশ্বকাপ ফুটবলে খেলেনা আপনি বুঝবেন এইসব বস্তিতে এলে।

    সুশীলস্যার কলকাতা ময়দানে খুব বিখ্যাত মানুষ। শান্তিদি, কুন্তলাদি এঁরা সম্ভবত ওনার নিজের হাতে তৈরী। আমরাও শান্তিদির সাথে প্র্যাক্টিস করতাম এক সময় ফি রবিবার। ঐ আস্তাবল সংলগ্ন মাঠেই। ক্লাসের শেষে সবাইকে জড়ো করে স্যার খানিকক্ষণ কথা বলতেন আমাদের সাথে। এমনি সাধারণ কথা, গল্পগাছা। খালি বলতেন ভালো প্লেয়ার চাইনা আমার, ভালো মানুষ হলেই হবে। এখন কোথায় আছেন, কেমন আছেন জানিনা। কিছুদিন আগে আবাপ ছবি দিয়েছিলো সংবর্ধনার।
  • kallol | 119.226.79.139 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ১৪:৪৭407235
  • রাসবিহারী-কালিঘাট অঞ্চলের এভিনিউ সম্মিলনী আর বাবুদা। এই দুটো নাম ভারতীয় ফুটবললে কি দিয়ে গেছে তার হিসাব দিতে গেলে একটা আস্ত গুরুচন্ডা৯ লাগবে। পিন্টু শুর, সুভাস, সুকল্যান, প্রশান্ত ব্যানার্জি, তুষার রক্ষিত এদের কথা তো সকলেই জানে।
    পাগলা অমিত বা গোপাল। চিরকাল ভাতৃ সংঘে। আমি নিজের চোখে দেখেছি, নিজের কানে শুনেছি - মোহনবাগান-ভাতৃ খেলার পর চুনী পিন্টু শুরকে বলছেন - ছেলেটা সিরিয়াসলি খেলেনা কেন। ওরা দুপায়ে যা ডজ তা আমারও ছিলো না। একদম খেলতে চাইতো না। ওকে গ্যাস খাওয়াতে হবে। যেমন করে হোক তাতিয়ে দিতে হবে। তবে সে খেলবে, নইলে খেলার দিন স্রেফ হাওয়া হয়ে যাবে।
    মলয়। এ ছেলে নকশাল-টকশাল না করে খেললে হয় ভাষ্কর নয় শিবাজী কেউ একটা মহমাডানে খেলতো।
    তানু। আঁতেল হতে গিয়ে প্রশান্ত ব্যানার্জির কপালে শিকে ছিঁড়লো।
    আর ছিলো হোয়াইট বর্ডারের রঞ্জুদা। আমাদের চেয়ে অনেকটা বড়। ব্রিটানিয়ার হয়ে পুণায় গেছিলো কি একটা ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট খেলতে। নাদকার্ণীকে শেষ চার বলে চারটে ছক্কা মেরেছিলো। রঞ্জুদাকে নাদকার্ণী নিজের টেস্ট ক্যাপ দিয়ে দিয়েছিলো।
    সুশীল ভট্টাচার্য, সুশীল সিংহ, ল্যাংচা মিত্র এঁদের কথা তো আস্তে আস্তে সবাই ভুলেই যাবে।
  • kallol | 119.226.79.139 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ১৪:৫৬407236
  • হ্যাঁ টিম, তোর বাবা-কাকার জন্ম সাহানগর স্কুলের কাছে, কোথায়? টালিগঞ্জ রোডের ওপর নাকি প্রতাপাদিত্য প্লেসে নাকি আর কোথাও? সাহানগর স্কুল বিখ্যাত দুজনের জন্য। একজন পীযুষকান্তি, অন্য জন শ্মশান স্বপন। পীযুষদা ওকে পড়িয়েওছেন।
  • Tim | 198.82.23.208 | ১১ নভেম্বর ২০১১ ২২:২৩407238
  • কল্লোলদা, গোপাল ব্যানার্জি লেন। সাহাবাড়ির রেফারেন্স দিতে বললো বাবা। আরো বললো, টালীগঞ্জ অঞ্চলের প্রাণতোষ, সুব্রত (ডাকনাম গাড্ডু) এদের তুমি চিনলেও চিনতে পারো। চেনো ? :-)
  • madhuchhanda paul | 219.64.145.236 | ২৬ নভেম্বর ২০১১ ১৪:১৪407239
  • আমাদের কলাকেন্দ্র । ......... কলাকেন্দ্র আমাদের নাচশেখার স্কুল ।অআমাদের আনান্দনিকেতন । সাধারন টালির চালে ছাওয়া সেই স্কুলের সামনে খানিকটা খোলা জায়গায় একটা বড়ো গাছের নিচে সিমেন্ট দিয়ে গোল করে বেদী করা ,গেরুয়া রঙের দেওয়ালে সুজাতা আর বুদ্ধদেবের fresco আমাদের ড্রইং মাস্টারমশাই অমলদার করা।অবাঁশের কঞ্চির বেড়া দিয়ে ঘেরা আমদের কলাকেন্দ্র । যেন একটা আশ্রম । ভেতরে তিন চারটে ঘর .সবচেয়ে বড়ো ঘরটা নাচের ক্লাস । প্রিন্সিপ্যাল বঙ্কিম দা। শান্তিনিকেতন থেকে পাশ করে আসা আরেকজন ছবি আঁকার মাস্টারমশাই ।অআমাদের বাড়িতে বিয়ের সময় মাঝে মাঝে আল্পনা দিয়ে দিয়েছেন । অপূর্ব সেই আল্পনা । নাচ শিখতাম মণিপুর থেকে আসা দেবেন্দ্র সিংঅএর কাছে । খুব স্নেহ করতেন আমায় , বাড়িরনামের সঙ্গে একটা বাবু যোগ করে ডাকতেন । ছিলেন ক্লাসিকাল গানের রামপ্রসাদ জি ,মুখে সবসময় পান। ,দরাজ গলায় গান গাইতেন ,মজার মজার কথাও বলতেন । ,ছিলেন সেতারের কপিলদা । খুব মিষ্টি হাত ছিল সুন্দর দেখতে ছিলেন আর ছিলেন জয়ন্তী দি বাটিক আর ছুঁচের কাজের জন্য ।,শান্তিনিকেতন থেকে আসা সাদামাটা দেখতে । উড়িষ্যার লোক । শান্ত ছিলেন খুব । কপিলদা একদম উল্টো । অনেক কথা বলেতেন । সেই জয়ন্তীদি আর কপিলদার প্রেম হল । বেশ গোলমাল হল শহরে । কপিলদারা গোঁড়া মৈথিলী ব্রাহ্মণ । আমাদের বাড়ী ওদের রাখা হল নিরাপদে থাকবে বলে। , আমাদের বাড়ীর ডানপিঠে ,ডাকাবুকো ছেলেদের কেউ ঘাঁটাতনা বড়ো একটা ।অতারপর আস্তে আস্তে মিটেও গেল গোলমাল। ,সরস্বতী পুজো হত খুব যত্ন করে একবার মনে আছে পুজোর পর অল্প ফল আর বোঁদে পড়ে আছে আর তখনও অনেকে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে প্রসাদের জন্যে ,গোবিন্দ দা বলে একজন আমার আর আমার এক বন্ধু র হাতে প্রসাদের থালা ধরিয়ে দিয়ে বললেন “ শুন , মিঠিমিঠি হঁসনা থোঢ়ি থোঢ়ি দেনা ।"সেই মতই কাজ হল । পুজো হয়ে যাওয়ার পর ভোগের খিচুড়ি খেয়ে আমরা ঠাকুর দেখতে বেরতাম । কনকনে শীত পড়া শহরে শীত যাই যাই করেও যায়নি তখনও ।অআমাদের সেই শুকনো হাওয়া বয়ে যাওয়া শহরের রাস্তা । কোথাও এতো চড়াই যে উল্টো দিক থেকে কেউ এলে , একটু একটু করে দেখতে পাওয়া যায় । কোথাও একদম ঢালু । অনেক দূর পর্যন্ত যেতাম হাঁটতে হাঁটতে । সঙ্গে বড় একজন কেউ থাকতেন । ঠাকুর আর কটা হত ! বেড়ানটাই আসল উদ্যেশ্য । বাড়ী থেকে এ সুযোগ পাওয়া যেতনা । একবার গেলাম নৌ লাক্ষা কোঠি দেখতে । বাড়ীটা করতে নাকি ন’লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল । সেই সময় অনেক টাকা । অনেকটা জায়গা নিয়ে বাড়ী ।অকেউ থাকেনা , লোকে বলে ভুতের বাড়ী ।অনির্জন দুপুরে ফাঁকা জায়গায় ঐ বিশাল বাড়ী দেখে সত্যি গা ছমছম করেছিল সেদিন ।

    । মাঝে মাঝে ফাংশান হতো । বন্ধু রীতা অগ্রবালের কৃষ্ণের একটা soloperformance থাকতো । খুব সুন্দর করতো ও । মনিপুরি কৃষ্ণের পোশাক আর তার সঙ্গে ময়ূর পাখা লাগান ভারী মুকুট। প্রত্যেক বার মাথাব্যথা করতো ঐ মুকুট পরার জন্যে , কিন্তু কিছুতেই অষুধ খেতে চাইতনা ,ওরা নেচারোপ্যথী করে , এলোপ্যাথী করবেনা । অমলদা ধমক দিয়ে খাওয়াতেন । যে কোন অনুষ্ঠানে আমাদের সাজাতেন অমল দা । একবার মনে আছে কারো ওপরে খুব রেগে ছিলেন ঐ অবস্থায় এসেছেন আমাকে সাজাতে হাতে রঙ নিয়ে এত জোরে থাবড়ালেন যে আমার চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে গেছে, তখন এক ধমক আমায়" কাঁদছিস যে রঙ ধুয়েযাবেনা ?"বছরে একবার ২৬শে জানুয়ারী সারা বিহার নাচের প্রতিযোগিতা হত পাটনায়। রিহার্সালের জন্যে সময় বেশী পাওয়া যেতনা । তখন এনুয়্যাল পরীক্ষা ডিসেম্বারে হত । শেষের দিকে সেলাই , ড্রয়িং , মাটীর কাজ এই সমস্ত । পড়াশোনার পরীক্ষা শেষ হলেই আমরা রিহার্সাল সুরু করতাম । সকাল আটটা থেকে সুরু হত । কলাকেন্দ্র থেকে স্কুল বেশী দূর ছিলনা ।অসকালে রিহার্সালের পর স্কুলে চলে আসতাম । বাড়ী থেকে খাবার পাঠিয়ে দিত , স্কুলে খেয়ে নিতাম । স্কুল থেকে আবার কলাকেন্দ্র । পাটনা যাওয়ার সময় ট্রেনে খুব মজা হত নাচের ক্লাশের বন্ধুরা অনেকেই স্কুলেরও বন্ধু ।অসারা রাত জেগে বকবক করতে করতে যাওয়া । বড়দের বকুনি মাঝে মাঝে ঘুমনোর জন্যে । পাটনা পৌঁছে আমরা বঙ্কিমদার বন্ধু মহারথী জির কোয়ার্টারে উঠতাম , । দুটো ঘর দিতেন ওঁরা আমাদের। একটা ছেলেদের অন্যটা মেয়েদের জন্যে । দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর বেরিয়ে যাওয়া হত অনুষ্ঠানের জন্য ,রাতে ফেরার সময় বাইরে থেকে খাওয়া দাওয়া করে এসে ঘুম,পরদিন সকালের ট্রেনে বাড়ী। এর মধ্যে একটাই দু:খ,লম্বা হওয়ার জন্য আমার কোন দিন মেয়ে সাজা হয়নি । m.p.
    ````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````

  • jhumjhumi | 117.194.239.103 | ২৬ নভেম্বর ২০১১ ২৩:১৩407240
  • সাড়ে চার কি পাঁচ বছরের ছোট্টো মেয়ে, বায়না জুড়েছেবাবার সাথে যাবে।বাবা যাবেন কর্মস্থলে। মা পুঁচকে দুই ভাই বোনকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন।মেয়ে কিছুতেই কোনো কথা শুনবে না।অনেক বোঝানো সত্বেও তার এক গোঁ। অবশেষে বাবা বলেন,ঠিক আছে চলুক। মা একটু আপত্তি করলেন,শেষে হাল ছেড়ে দিলেন। মেয়ে তো মহানন্দে নাচতে নাচতে চললো।প্রথম দু'দিন বেশ ভালো কাটলো খেলা ধুলো করে। তৃতীয় দিন সকাল থেকে মন খারাপ,বিকেল বেলায় চোখ ছলছল। বাবা কাজ করছিলেন,মেয়ে চুপটি করে এসে তার পাশে বসে। বাবা বলেন "কি রে খেলতে যাবি না?' মেয়ে মাথা নাড়ে। এক কাকু ডাকেন আয় বেড়াতে যাচ্চি,মেয়ে যায়না। সন্ধ্যা হয়, একটু সংকোচের সঙ্গে সে বাবা কে বলে "বাপি আমরা কবে বাড়ি যাবো'? বাবা বোঝেন সব,মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন "আর দুটো দিন'। দুটো দিন যেন আর কাটে না। অবশেষে বাড়ি ফেরে, জেঠিমারা বলেন বেশ মেয়ে তুই,মা কে ছেড়ে দিব্যি কাটিয়ে এলি।মা বলেন,"মাএর চেয়ে বাবার উপর টান বেশি যে'।মেয়ে লজ্জায় বলে্‌ত পারে না,মায়ের জন্য তার ভীষন মন খারাপ করছিল।পালিয়ে যায় এক ছুটে।
  • jhumjhumi | 117.194.227.59 | ২৭ নভেম্বর ২০১১ ১৬:০৪407241
  • বাবা মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করতে নিয়ে গিয়েছেন। নার্সারি ওয়ান এর বইপত্তর দেখে মেয়ে বেঁকে বসে,কিছুতেই সে ওসব আর পড়বে না। ওসব বই তার আগেই পড়া হয়ে গেছে,নতুন বই চাই। রীতিমতো জেদ ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। বিপন্ন বাবা মাস্টারমশাই এর দিকে তাকান কি করবেন বুঝতে না পেরে। মস্টারমশাই তাকে বলেন,"বেশ ,তোমার যদি পড়া হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে আমার প্রশ্নএর উত্তর দাও দেখি'-এই বলে বেশ কিছু প্রশ্ন করেন, সেও চট্‌পট উত্তর দেয়। মাস্টারমশাই আর কথা না বাড়িয়ে তাকে নার্সরি টু তে ভর্তি করে নিলেন। ক্লাসের মধ্যে সে একা মেয়ে,বাদবাকি সব ছেলে। সকলেই তার ভালো বন্ধু। একেশ্বরী হওয়ার সুবিধে অনেক। চিকু ক্লাসে হজমোলা বড়ি নিয়ে এসেছে,সকলেই একটু করে চায় (তখন হজমোলা আমাদের কাছে দুর্লভ বস্তু),চিকু কাউকে দেবে না। পিটি ক্লাসে লাইন করে দাঁড়িয়ে আছে সবাই, হঠাৎ চিকুর ফিসফিসে গলা,"হাতটা বাড়া তাড়তাড়ি'। হাত বাড়াতেই সেই হজমোলার গুলি। এমনি করেই অন্যরা ভাগ পাক বা না পাক সে ভাগ পায় বিভিন্নজনের কাছে। ক্লাস থ্রি তে পড়ার সময় একটি নতুন মেয়ে ভর্তি হল তাদের ক্লাসে। মেয়েটা এই নতুন সহপাঠিনীকে কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। কে জানে বোধহয় রাজ্যপাট হারানোর ভয়ে! দেখা গেলো রোজই তাদের ঝামেলা লাগে।এদিকে নতুন জন বেশ তুখোড়,আর সে মোটেও ঝগড়া করতে পারে না।একটু পরেই তার দম ফুরিয়ে যায়। কিন্তু অবাক কান্ড! তার হয়ে তখন পুরানো বন্ধুরাই ঝগড়া করতো।এ ঝামেলা অবশ্য বেশীদিন চলে নি।কিছুদিন পর মেয়েটি চলে যায়।
  • jhumjhumi | 117.194.227.59 | ২৭ নভেম্বর ২০১১ ১৬:৫৩407242
  • স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বাঁদিকে পড়তো এক বিরাট মাঠ,তারপর আম, সেগুন, অর্জুন এর মতো বড় বড় গাছের বাগান,আর ডান দিকে ছিল পলাশ বাগান। জায়গাটা ছিল বেশ নির্জন। গরমের দিনে স্কুল থেকে ফেরার সময় দেখত মাঠে শুকনো পাতাগুলো গরম হাওয়ায় পাক খেয়ে উঁচু স্তম্ভের মতো তৈরি করেছে। কখনো বা আমবাগানের থেকে ভেসে আসছে পিউ কাঁহা বা কুহু কুহু। সেই সঙ্গে মেয়েটিও সেই ডাক ডেকে চলে,এক সময় পাখি বিরক্ত হয়ে চুপ করে যায়। কোন কোন দিন দেখতে পায় নীলকন্ঠ পাখি উড়ে যাচ্ছে, কি সুন্দর সেই আকাশি নীল রং! হাঁ করে চেয়ে থাকতো সে।
    বাড়িতে সঙ্গী ছোটো ভাই, যত ভাব তত আড়ি। মারামারিতে ভাইএর সাথে পারতো না, তাই ভাই কিছু করলেই মাকে নালিশ করে বকুনি খাওয়াতো। ভাইও ছাড়তো না,দিদি যদি একটু ভুল কিছু করেছে, অমনি চেঁচিয়ে উঠতো-""ইম্মাআআ,ওমাআ দেখ-ও-ও,দিদি কি করলো-ও-ও-ও''। আবার দুপুর বেলায় মা ঘুমিয়ে পড়লে,দুধের সর চুরি কিংবা কুচো নিমকি চুরি করা সবেতেই ভাই টি সঙ্গী।
  • jhumjhumi | 117.194.241.62 | ২৭ নভেম্বর ২০১১ ১৮:১৪407243
  • এক দিন দুপুর বেলা মা ঘুমিয়ে পড়েছে,ভাই ও মনে হচ্ছে ঘুমোচ্ছে, মেয়েটি চুপিচুপি উঠে পড়ে। ক'দিন আগে নারকেল বিস্কুট খেয়ে তার ভারি ভালো লেগেছিল। ঠিক করলো নারকেল বিস্কুট বানাবে। জানা ছিল বিস্কুট তৈরি হয় ময়দা দিয়ে। আটার কৌটো থেকে খানিকটা আটা নেওয়া হল (আটা আর ময়দার পার্থক্য জানতো না সে), চিনিও নিলো,নইলে মিষ্টি হবে না। এখন প্রশ্ন নারকেলের গন্ধ হবে কি করে? কেনো,নারকেল তেল তো আছে! নারকেল তেল ঢালা হল। এমন সময় পেছনে ভাইয়ের গলা,"কি করছিস রে দিদি?' এই রে,এবার কি হবে!! ভাইকে তখন দলে টানার চেষ্টা। "চুপ,নারকেল বিস্কুট করছি,তুইও পাবি'। ভাই তখন মহা উৎসাহে দিদির সাথে যোগ দেয়। নারকেল তেল দিয়ে আটা মাখা হল, গোল গোল চ্যাপ্টা করে বিস্কুটের মতো বানানো হল। হঠাৎ ভাই বললো,"বিস্কুট তো শুকনো হয়, এটা যে কেমন তেলতেলে?' দিদি বিজ্ঞের মত বলে "আরে রোদে শুকোলে ঠিক হয়ে যাবে।' সে বিস্কুট যে কি হয়েছিল সেটা বলা বাহুল্য।:-))
  • madhuchhanda paul | 14.96.108.205 | ০৯ ডিসেম্বর ২০১১ ১৪:২৪407244
  • শহরের বাইরে বাবা একটা ছোট বাড়ী করেছিল । প্রায় এক বিঘে জমির ওপর গোটা দুই বেশ বড়ো ঘর ।অবড়ো চওড়া বারান্দা , মোটামুটি বড়ো উঠোনের একদিকে রান্নাঘর , অন্যদিকে বাথরুম ইত্যাদি । আর বাকি জমিতে কাগজি লেবু, পেয়ারা এই রকম কিছু গাছ । আর দুটো খুব বড় রক্তকরবীর ঝোপ । বাকিটা খালি পড়ে থাকা জমি । একটা অনেক বড় গাছ ছিল ছিল , সেটাকে আমরা জিওল গাছ বলতাম । গাছটা ছিল কুঁয়োর পাড়ে । ছোট ছোট ডাল পাতা সমস্ত ছাঁটা । বেশ ওপরে ইংরেজী ভি অক্ষরের মত দুটো ডাল তার মাঝখান দিয়ে একটা প্রমান মাপের বাঁশ পার করিয়ে দেওয়া , মোটা দিকটায় একটা বস্তায় বালি ভরে বাঁধা ,ভারী করার জন্যে আর সামনের দিকটায় একটা লম্বা দড়ির আগায় একটা বালতি জাতীয় কিছু বাঁধা ,ঠিক বালতি নয় তলাটা দুদিক থেকে এসে সরু হয়ে গেছে । ওটা ছিল কুঁয়ো থেকে জল তোলার জন্যে ।অদড়িটা ধরে টেনে জলের পাত্রটাকে কুঁয়োয় ডুবিয়ে দিলে জল ভরে যাওয়ার পর পরিশ্রম ছাড়াই জল শুদ্ধ পাত্রটা ওপরে উঠে আসে। এটাকে লাটাখাম্বা বলতাম । উর্দুবাজারের বাড়ীতে কলের জল ছিলনা ,কাজের লোক ঐভাবে জল তুলে কলঘরের চৌবাচ্চা ভরে রাখতো ।অজমিতে জল দিত। ইলেকট্রিকের আলো ছিলনা । হ্যরিকেন জ্বলত । আমরা তিন ভাই বোন আর মা থাকতাম আর আমাদের লোম ওয়ালা , লম্বা কানের টোগো । দিদিও আসতো শ্বশুরবাড়ি থেকে । বেশ আনান্দেই কাটত সময় ।
    আমরা সেই বাড়িতে মাঝে মাঝে গিয়ে থাকতাম । কোনকিছু না থাকা গায়েই লাগতনা ।
    একবার প্রায় ১ বছর ছিলাম ওখানে ।অমার শরীর খারাপ যাচ্ছিল । খোলা মেলা পরিবেশে থাকার জন্যে গিয়ে- ছিলাম । ওখান থেকেই স্কুল করেছি ।অকিছুদুর গিয়ে রিক্সা পাওয়া যেত।

    সেবার শীতকালে দাদাএক বন্ধুকে নিয়ে এসে তুলল বাড়িতে, নাম সুধাংশু ।অতখন বোধহয় দাদার বয়স ১৭/১৮ হবে । শুধাংশুদা অনেকটাই বড় দাদার থেকে । টি . বি হয়েছে তার । দুস্থ খুব ।অআমাদের বাড়ীতে থাকবে । পুষ্টিকর খাবার খাবে আর আমাদের জ্যাঠতুত দাদাদের দিয়ে চিকিৎসা করাবে । আর সব কিছুতে রাজী হলেও মা বাড়ীতে থাকতে দেওয়ার ব্যপারে একবারে বেঁকে বসলো । এক বাড়ীতে ঐ রকম ছোঁয়াচে রুগীকে মা থাকতে দিতে রাজী হলনা । শৈশবে পিতৃহীন সন্তানদের ওপর , বিশেষ করে দাদার ওপর মার যথেষ্ট দুর্বলতা ছিল ।আনেক সময় অনেক অন্যায্য কথা মেনে নিলেও এ বারে মা অনড়। একবারে জমির শেষ প্রান্তে একটা টালির ঘর ছিল যদি কখনও মালি রাখা হয় মনে করে , যদিও রাখার দরকার হয়নি বাইরে থেকে এসে কাজ করে দিত চাষি । ঘরটা ভালৈ । শুকনো খটখটে । খোলামেলা তো ঐখানে মা ব্যবস্থা করে দিল থাকার । দাদাও কোথা থেকে একটা দড়ির খাটিয়া জোগাড় করে ঐঘরেই নিজের বিছানা পাতলো । মা কিছুই বললনা ।অকিন্তু পুষ্টিকর খাওয়া দাওয়, খোলামেলা জায়গায় থাকা কিছুতেই কোন উন্নতি হলনা সুধাংশুদার শরীরের । শেষে হাসপাতালে দেওয়া হল । সেখানেই মারা গেলো দাদার সেই বন্ধু । দাদা কদিন গুম হয়ে রইল । কিছুদিন পরে বন্ধুর একটা ছবি বাঁধিয়ে নিয়ে এল । নিচে লেখা “যে ফুল না ফুটিতে/ ঝরিল ধরণীতে / যে নদী .........” খুব অবাক লেগেছিল ।অমাত্র ক’দিন আগে দেখাছি , ওদের ঘরের সামনে রোদে বসে দুজনে কথা বলছে বা দাদা পড়ছে , সুধাংশুদা খবরের কাগজ পড়ছে। সেই মানুষটা কিকরে নেই হয়ে গেলো বুঝতে সময় লেগেছিল।

  • madhuchhanda paul | 14.99.35.69 | ২৬ ডিসেম্বর ২০১১ ১৭:৪৮407245
  • আমাদের শহরের শীত গ্রীষ্ম ~~~~~~~

    বিহারে আমাদের শহরে শীত আর গ্রীষ্ম দুটৈ খুব প্রবল ভাবে আসতো । এখন যেমন কলকাতাতেও খুব বেশী গরম পড়ে আমাদের ছোটবেলায় কিন্তু আমরা তেমন দেখিনি ।
    কলকাতার গরম মোটামুটি সহ্য করার মত ছিল । আর আমাদের তো গরম তেমন লাগতইনা ,আমাদের শহরের তুলনায় গরম কম পড়ত বলেই হয়তো !
    গরমের ছুটি পড়ার আগে বেশ কিছুদিন মর্নিং স্কুল হত । বেলা সাড়ে দশটায় ছুটি হয়ে যেতো স্কুল । দুপুরে বাড়ীর সবাই তাড়াতাড়ি কাজকর্ম মিটিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিত । সারা দুপুর লু চলত গরম হাওয়ার , সঙ্গে ধুলো উড়ত চারিদিক অন্ধকার করে । আওয়াজ হত হূঊ.................................। যখন ছোট ছিলাম, মনে আছে - ছোটকাকীমা আমাকে তার উঁচু খাটে তুলে দিয়ে , খেলনার আলমারি থেকে (তখন ছোট ছোট মেয়েদের বিয়ে হয়ে যেত । খেলার করার বয়স যায়নি তখনও । সঙ্গে অনেক খেলনা দেওয়া হত । একটা আলমারিও খেলনা রাখার জন্যে । আমার মারও ছিল । ) খেলনা বার করে দিয়ে ঘর থেকে বেরতে বারন করে ঘরের দরজা ভেজিয়ে দিয়ে খাওয়া দাওয়া করতে যেত । যখন আরও খানিকটা বড় হয়েছি আমাদের এক জ্যাঠতুত দাদা খুব রাশভারী লালুদা।অপ্রায় আমার বাবার কাছাকাছি বয়স ।অচেম্বার থেকে বাড়ী এসে আমাদের মানে আমরা যত জন ছোট আছি সবাইকে তার ঘরে ঢোকাত । নিজে থাকতো খাটে আর আমরা বড় সতরঞ্চিরতে মাটিতে । কেউ কারো দিকে ফিরে শোবেনা , কথা বলবেনা । আমরা মেয়েরা একদিকে শুতাম , আমাদের নিয়ে সমস্যা ছিলনা । ছেলে গুলো কথা বলত । মাঝে মাঝে লালুদার হুঙ্কার শোনা যেতো “কে কথা বলছে ? দেয়ালে মাথা ভটাভট করে ঠুকে দেবো।” অবশ্য কখনও কাউকে শাস্তি দেয়নি । হুঙ্কারেই কাজ হতো। আমরা বড় হওয়ার পর লালুদার এই কথাটা নিয়ে হাসাহাসি করেছি । দুপুরটা ঘরে আটকে রাখা জরুরী ছিল ।অবাইরে বেরোলে লু লেগে যাওয়ার ভয় ।

    বিকেলে ঘর থেকে বেরোলে দেখতাম , বারান্দার মাঝখান দিয়ে হাওয়া বয়ে গেছে আর বারান্দার দুপাশে হাওয়ার সঙ্গে আসা ধুলো জমে আছে ঢিপি করে । বিকেলে বারান্দা ধুতে হতো।
    রাতে আমরা অনেকেই ছাদে শুতাম । দুদিকে দুটো ছাদ ছিল । ছোট ছাদে বাড়ীর ছেলেরা আর অন্যটায় আমরা মেয়েরা শুতাম । সন্ধ্যেবেলা ছাদে বালতি বালতি জল ঢেলে ঠাণ্ডা করতে হতো। মা কখনই ছাদে শুতনা পিসিমাও না। ছোটকাকীমা , জ্যাঠাইমা, বড়বৌদি এরকম আরও কারো সঙ্গে ঘুমতাম আমরা । দূষণ ছাড়া পরিস্কার আকাশ । নক্ষত্র পরিস্কার দেখা যেতো । কালপুরুষ , সপ্তর্ষি মণ্ডল ।অপুর্নিমার কাছাকাছি এলে চাঁদের আলো এতো জোরাল হতো যে মনে হতো জোর পাওয়ারের বাল্ব জ্বলছে । একবার কোন একটা ধুমকেতু দেখা গিয়েছিল ক’দিন ধরে মনে পড়ে ।
    গরম কালের মজা ছিল আম খাওয়া । ভাঁড়ার ঘরের চৌকির তলায় শ’ দরে কেনা আম চটের ওপর বিছিয়ে রাখা থাকতো । রোজ সকালে পিসীমা সেখান থেকে তৈরী আম বেছে রান্নার বালতির জলে ভিজিয়ে রাখতো । তারপর সময় মত বোঁটার দিক থেকে খানিকটা কেটে আমাদের হাতে ধরিয়ে দিত ,আমরা ছাড়িয়ে খেয়ে নিতাম ।অএকরকম ছোট আম খেয়েছি , বলতাম বিজু । পাকা আম ফুটো করে চুষে খেতে হতো । ছোটকাকীমা কাঁচা আম ছেঁচে কাসুন্দি আরও কিছু দিয়ে মেখে দিয়ে যেতো শালপাতার ঠোঙা বানিয়ে তার মধ্যে করে । না চাইতেই । মনে আছে এই সময় ঝুড়ি করে আম পাঠানো হতো বিভিন্ন কুটুম বাড়ীতে । অনেক বছর পর কলকাতায় আমার দিদির শ্বশুরমশাই হাতে একটা আম দিয়ে বলেছিলেন “ তোমাদের দেশের আম , আঁটী পুঁতেছিলাম । বেশী ফলেনা কিন্তু খুব মিষ্টি ।’’

    শীতও আসতো খুব দাপটের সঙ্গে । মোটামুটি কালীপূজোর সময় থেকেই ঠাণ্ডা পড়ে যেতো । কার্ত্তিক মাসে নাকি লেপ বার করতে নেই তাই আশ্বিন মাসেই একবার লেপ গায়ে দিয়ে রাখা হতো । তার মানে কার্ত্তিক মাসেই লেপ গায়ে দেবার মত ঠাণ্ডা পড়ে যেতো । হূ...হূ করে ঠাণ্ডা হাওয়া দিত উত্তর থেকে । ঠোঁট ফেটে যেতো মনে পড়ে । মা সারাক্ষণ চটি পায়ে দাও আর গরম জামা পরো বলে হাঁকা হাঁকি করতো । ঐ দুটো জিনিষই পরতে ভালো লাগতনা ।
    বড়দিনের ছুটি বেশ লম্বা হতো । আমরা প্রায় সারাদিন ছাদে রৌদ্রে থাকতাম । দুপুর বেলা ছাদে মাদুর পেতে মাথায় বালিশ দিয়ে জ্যাঠাইমা বেশ আয়েশ করে শুত আর ছোট কাকীমা গল্পের বই পড়ে শোনাত ।অএই দৃশ্য রোজকার ছিল । আর আমি ছোটোকাকীমার একটু লালচে লম্বা চুল নিয়ে খেলা করতাম । চারগুছির বিনুনি করতাম , দুটো বিনুনি করতাম । কোনদিন একটুও আপত্তি করেনি , বিরক্ত হয়নি । কোনদিন লুডো খেলতাম । দিদি বউদিরা বুনত , সেলাই করতো ।অগল্প করতো । বড় বৌদি মাঝে মাঝে উঠে খানিক পায়চারি করে নিত নইলে ঘুম পায় আর সবাই জানে দুপুরে ঘুমলে মোটা হয়ে যায় লোকে !
    সকালে ছুটকি গয়লানি দুধ নিয়ে আসতো কেঁড়েতে করে তার ওপরে মাঠ্‌টা জমে থাকতো পুরু হয়ে । পিসিমা গোল গোল করে তার ওপর চিনি ছড়িয়ে আমাদের দিত । অমৃত ।
    শীতের সময় কোন কোন বার পিকনিক করতে যাওয়া হতো ।অবেশীর ভাগই দাদাদের কোন পেসেন্টের বাগান বাড়িতে । বিরাট বড় দল ।অদাদাদের বন্ধুরা থাকতো তাদের পরিবার নিয়ে ।অআর যেতাম মন্দার হিল । বাসে করে বংশীতে গিয়ে নামলেই সামনে পাহাড় দেখা যেতো ,মনে হতো এক দৌড়ে পৌঁছে যাব কিন্তু আসলে দুরত্ব অনেকটাই । একটা দুটো গরুর গাড়ী ভাড়া করা হতো । কেউ হাঁটত কেউ গরুর গাড়ীতে উঠত । বাস থেকে নেমে হাটিয়া থেকে চাল ডাল মাটীর হাঁড়ী ইত্যাদি কিনে নেওয়া হতো । খিচুড়ি রেঁধে খাওয়ার জন্যে । মন্দার হিলে দেখার মত অনেক জায়গা ছিল । বলা হয়ে থাকে সমুদ্র মন্থনের সময় এই মন্দার পাহাড় হয়েছিল মন্থন দণ্ড আর নাগরাজ বাসুকি হয়েছিলেন মন্থন রজ্জু । চিহ্ন স্বরূপ পাহাড়ের গায়ে সাপের আঁশের ছাপ দেখতে পাওয়া যায় । পাহাড়ের গায়ে অনেক উঁচুতে একটি অপূর্ব নিখুঁত মুখ খোদাই করা আছে । ওটা নাকি বিষ্ণুর মুখাকৃতি ,বিশ্বকর্মার শিল্প কীর্তি। সাধারণ মানুষের পক্ষে অত উঁচুতে কাজটী করা সম্ভব বলে মনে হয়না। এছাড়া আছে আকাশ গঙ্গা । পাহাড়ের ওপরে একটি গুহা । গুহার ভেতরে একটা সুড়ঙ্গ চলে গেছে , শেষ দেখা যায়না । সেটা বিশেষ বিশেষ সময় জলে ভরে যায় ।অআর আছে কিছু জলের কুণ্ড পাহাড়ের ওপর , পরিষ্কার টলটলে জল ভরা , একটার নাম মনে আছে শঙ্খ কুণ্ড । পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় পাশাপাশি দুটি মন্দির । একটি হিন্দু ও অপরটি জৈনদের । হিন্দু মন্দিরটী দর্পহারী মধূসূদনের । মন্দিরে ওঠা খুব কঠিন ছিল । জৈন ধর্মের দ্বাদশ তীর্থঙ্কর মন্দার পাহাড়ে নির্বাণ লাভ করেছিলেন বলা হয়ে থাকে। পাহাড়ের গায়ে একটি বিশাল বড় পায়ের ছাপ দেখা যায় । কেউ কেউ বলে থাকেন বিষ্ণুর পদ চিহ্ন কেউবা বলেন বেদব্যাসের ।

    কতো কথা মনে পড়লো লিখতে গিয়ে । আমরা বলতাম “মান্দার হিল”। এখন নিশ্চয় অনেক বদলে গেছে সব । হয়তো ভালো রাস্তা হয়েছে , আলো হয়েছে ,গরুর গাড়ী করে যেতে হয়না আর ।আনায়াসে পৌঁছে যাওয়া যায় “ মান্দার হিলে । ” আমার কিন্তু সেই মাটির অসমান রাস্তা দিয়ে যাওয়ার কথাই মনে পড়ে গরুর গাড়ী করে ঝাঁকুনি খেতে খেতে সন্ধের মুখে ফিরে চলা । গরুর গলার ঘণ্টার আওয়াজ টং টং, টং টং......
    `````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````````
  • madhuchhanda paul | 14.97.126.153 | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৪:৪৯407246
  • আজ পৌষ পার্বণ পিঠে পায়েস খাওয়ার দিন। আর আমার কিনা মনে পড়ছে এই বছর কলকাতায় আমাদের আবাসনের কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনের কথা ! কি আর করা ।

    মাদুর্গা তো এলেন ছেলে মেয়ে সাঙ্গ পাঙ্গ এমন কি বধ করার জন্য এক অসুরও আঁচলে বেঁধে। চার/ পাঁচ দিন ধরে সেকি উন্মাদনা সেকি উৎসাহ আমাদের আবাসনে । একবছর ধরে কেনা , পাওয়া , বাগানো পোশাকের সেকি ঝলমলানি । কে মা কে মেয়ে চেনার উপায় তো নেই-ই , মাঝে মাঝে দিদিমা ঠাকুমাও গুলিয়ে যাওয়ার যোগাড় ।

    বেঁচে থাক শাহনাজ হোসেনের প্রোডাক্ট , তোমাদের কল্যানেই তো জানলাম রিঙ্‌ক্‌লফ্রী ক্রিম কাকে বলে । বেঁচে থাক বিউটি পার্লার গুলো । সোনার কাঁচি সোনার চিরুনি হোক মা তোমাদের । চুল পাকা যে কাকে বলে ভুলতে বসেছি প্রায় । যেমন রঙ চাই তেমন করে দেবে তোমায় । ছেলেবেলায় মেমসাহেবদের সোনালি চুলের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকার দিন শেষ । কদিন পর ঢেঁকি, কুলো, যাঁতা , উনুন , হুঁকো এই সমস্ত কিছুর মত পাকা চুলও ইতিহাস হয়ে যাবে ।অছবি ছাড়া আর দেখা যাবেনা কোথাও । এইদিনের কথা ভেবেই তো কবি লিখেছিলেন “আমাদের পাকবেনা চুল গো, মোদের পাকবেনা চুল “ মহাপুরুষ ছিলেন । দিব্যদৃষ্টি পেয়েছিলেন দেখতে পেয়েছিলেন এখনকার দিন ।

    বলে নাকি মেয়েরা কুড়ীতেই বুড়ী এককুড়ীর জায়গায় তিন কুড়ী হল প্রায় বলুক তো কেউ বুড়ী !

    এদিকে দুবেলা একসঙ্গে পাতপেড়ে চর্ব্য চোষ্য খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলেছে প্রায় সবাই। (ব্লাউজ গুলো অল্টার করাতে না হয় ) । সারাদিন তো বসে বসেই কাটছে ।অহয় আড্ডায় বসা নয়তো অনুষ্ঠান দেখতে বসা । পাঁচ দিনের নানা রকম অনুষ্ঠান । ছোটদের করা , মাঝারি দের করা, বড়দের করা , এমনকি বয়স্ক মহিলাদের করা । তবে বলতেই হবে সবকটাই হয়েছিল যাকে বলে জব্বর ।

    তারপর তো মিটে গেলো দুর্গা পুজো । এবার পালা মা লক্ষীকে আবাহন করার । এদিকে সামনেই কালিপুজো । ডেকরেটারের লোকেরা প্যান্ডেলের বাঁশ, কাপড় খোলার জন্যে টানাটানি শুরু করে দিয়েছে । অন্য জায়গায় প্যান্ড্যাল বাঁধতে হবেনা? তার মধ্যে ছোটখাটো মা লক্ষ্মী যেন একটু কুণ্ঠিত হয়েই অধিষ্ঠিত হলেন ।

    দুপুর বেলা দেখা গেল তখনও চারিদিকে এলোমেলো অনেক হাবিজাবি জিনিষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে । একটি মাঝ বয়সি লোক পুজোর কদিন এসে কাজকর্ম করে দেয় তাকেও দেখা যাচ্ছেনা আসেপাশে । অবশেষে পুজোকমিটীর প্রেসিডেন্ট নিজেই একটা ঝাঁটা হাতে ময়দানে নেমে পড়লেন । ভাগ্যক্রমে সেটা চোখে পড়ে গেলো এক কর্মকত্রীর তিনি এসে ব্যপারটাকে টেক আপ করলেন । পাশদিয়ে যাচ্ছিল কাঠ মিস্ত্রিদের একজন । তাকে ডেকে পয়সা দেবার কথা বলে মাএর আশপাশ পরিস্কার করে দিতে বলা হল ।
    সে একটা মাটীর মালসায় খানিকটা জল নিয়ে পাশের দড়িতে কোন সহকর্মীর কেচে শুকোতে দেওয়া একটা হাফপ্যান্ট টেনে নিয়ে জায়গাটা মুছে পরিস্কার করে দিল । প্যান্টের মালিক কি করেছিল জানানেই !
    সন্ধ্যেবেলা আরতির সময় আবার জমায়েত । অনেকে একাদশীর দিনই বেড়াতে বেরিয়ে পড়েছেন তারা ছাড়া । মায়ের কাছে প্রাণ খুলে পার্থনা করতে হবেনা? “ ওমা , এবারে একটা নতুন গাড়ী আর , আর এ—ই ১৫/১৬ শ’ স্কোয়ার ফুটের ফ্ল্যাট , আর আর একটা প্রমোশন । ”
    তারপর , সবাই যার যার ফ্ল্যাটে ফিরে চলে গেলো । মালক্ষ্মী একলা বসে রইলেন প্যান্ডেল আলো করে । রাত যখন আরও গভীর হল নির্জন হয়ে গেলো চারিদিক । জ্যোৎস্নায় চরাচর ভাসিয়ে দিয়ে কোজাগরী পুর্নিমার চাঁদ আকাশ থেকে নেমে এসে বসলো মালক্ষ্মীর পাশে ।

    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

  • madhuchhanda paul | 14.97.126.153 | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ১৪:৫৮407247
  • ------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------- কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো ।

    আজ পৌষ পার্বণ পিঠে পায়েস খাওয়ার দিন। আর আমার কিনা মনে পড়ছে এই বছর কলকাতায় আমাদের আবাসনের কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনের কথা ! কি আর করা ।

    মাদুর্গা তো এলেন ছেলে মেয়ে সাঙ্গ পাঙ্গ এমন কি বধ করার জন্য এক অসুরও আঁচলে বেঁধে। চার/ পাঁচ দিন ধরে সেকি উন্মাদনা সেকি উৎসাহ আমাদের আবাসনে । একবছর ধরে কেনা , পাওয়া , বাগানো পোশাকের সেকি ঝলমলানি । কে মা কে মেয়ে চেনার উপায় তো নেই-ই , মাঝে মাঝে দিদিমা ঠাকুমাও গুলিয়ে যাওয়ার যোগাড় ।

    বেঁচে থাক শাহনাজ হোসেনের প্রোডাক্ট , তোমাদের কল্যানেই তো জানলাম রিঙ্‌ক্‌লফ্রী ক্রিম কাকে বলে । বেঁচে থাক বিউটি পার্লার গুলো । সোনার কাঁচি সোনার চিরুনি হোক মা তোমাদের । চুল পাকা যে কাকে বলে ভুলতে বসেছি প্রায় । যেমন রঙ চাই তেমন করে দেবে তোমায় । ছেলেবেলায় মেমসাহেবদের সোনালি চুলের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকার দিন শেষ । কদিন পর ঢেঁকি, কুলো, যাঁতা , উনুন , হুঁকো এই সমস্ত কিছুর মত পাকা চুলও ইতিহাস হয়ে যাবে ।অছবি ছাড়া আর দেখা যাবেনা কোথাও । এইদিনের কথা ভেবেই তো কবি লিখেছিলেন “আমাদের পাকবেনা চুল গো, মোদের পাকবেনা চুল “ মহাপুরুষ ছিলেন । দিব্যদৃষ্টি পেয়েছিলেন দেখতে পেয়েছিলেন এখনকার দিন ।

    বলে নাকি মেয়েরা কুড়ীতেই বুড়ী এককুড়ীর জায়গায় তিন কুড়ী হল প্রায় বলুক তো কেউ বুড়ী !

    এদিকে দুবেলা একসঙ্গে পাতপেড়ে চর্ব্য চোষ্য খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলেছে প্রায় সবাই। (ব্লাউজ গুলো অল্টার করাতে না হয় ) । সারাদিন তো বসে বসেই কাটছে ।অহয় আড্ডায় বসা নয়তো অনুষ্ঠান দেখতে বসা । পাঁচ দিনের নানা রকম অনুষ্ঠান । ছোটদের করা , মাঝারি দের করা, বড়দের করা , এমনকি বয়স্ক মহিলাদের করা । তবে বলতেই হবে সবকটাই হয়েছিল যাকে বলে জব্বর ।

    তারপর তো মিটে গেলো দুর্গা পুজো । এবার পালা মা লক্ষীকে আবাহন করার । এদিকে সামনেই কালিপুজো । ডেকরেটারের লোকেরা প্যান্ডেলের বাঁশ, কাপড় খোলার জন্যে টানাটানি শুরু করে দিয়েছে । অন্য জায়গায় প্যান্ড্যাল বাঁধতে হবেনা? তার মধ্যে ছোটখাটো মা লক্ষ্মী যেন একটু কুণ্ঠিত হয়েই অধিষ্ঠিত হলেন ।

    দুপুর বেলা দেখা গেল তখনও চারিদিকে এলোমেলো অনেক হাবিজাবি জিনিষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে । একটি মাঝ বয়সি লোক পুজোর কদিন এসে কাজকর্ম করে দেয় তাকেও দেখা যাচ্ছেনা আসেপাশে । অবশেষে পুজোকমিটীর প্রেসিডেন্ট নিজেই একটা ঝাঁটা হাতে ময়দানে নেমে পড়লেন । ভাগ্যক্রমে সেটা চোখে পড়ে গেলো এক কর্মকত্রীর তিনি এসে ব্যপারটাকে টেক আপ করলেন । পাশদিয়ে যাচ্ছিল কাঠ মিস্ত্রিদের একজন । তাকে ডেকে পয়সা দেবার কথা বলে মাএর আশপাশ পরিস্কার করে দিতে বলা হল ।
    সে একটা মাটীর মালসায় খানিকটা জল নিয়ে পাশের দড়িতে কোন সহকর্মীর কেচে শুকোতে দেওয়া একটা হাফপ্যান্ট টেনে নিয়ে জায়গাটা মুছে পরিস্কার করে দিল । প্যান্টের মালিক কি করেছিল জানানেই !
    সন্ধ্যেবেলা আরতির সময় আবার জমায়েত । অনেকে একাদশীর দিনই বেড়াতে বেরিয়ে পড়েছেন তারা ছাড়া । মায়ের কাছে প্রাণ খুলে পার্থনা করতে হবেনা? “ ওমা , এবারে একটা নতুন গাড়ী আর , আর এ—ই ১৫/১৬ শ’ স্কোয়ার ফুটের ফ্ল্যাট , আর আর একটা প্রমোশন । ”
    তারপর , সবাই যার যার ফ্ল্যাটে ফিরে চলে গেলো । মালক্ষ্মী একলা বসে রইলেন প্যান্ডেল আলো করে । রাত যখন আরও গভীর হল নির্জন হয়ে গেলো চারিদিক । জ্যোৎস্নায় চরাচর ভাসিয়ে দিয়ে কোজাগরী পুর্নিমার চাঁদ আকাশ থেকে নেমে এসে বসলো মালক্ষ্মীর পাশে ।

    ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

  • বিপ্লব রহমান | 212.164.212.20 | ০৫ মে ২০১৩ ১৬:২৭407249
  • ফেবু থেকে আরো এক পশলা:
    _____________________

    Madhuchhanda Paul
    হেঁসেল বনাম মডিউলার কিচেন //

    আজকাল ফ্ল্যাট বাড়ীর রান্নাঘর গুলো হল আলাদীনের ভাঁড়ার ঘর । ছোট এক চিলতে ঘরে নেই কি ? তাও আবার নাগালের মধ্যে ! একটু ডানদিক ,বাঁদিক ,ওপরে ,নীচে হাত বাড়ালেই সব হাতে চলে আসবে । চাল ,ডাল ,তেল , নূন ,মশলা পাতি । থালা ,বাটি ,কড়া খুন্তি । চায়ের বাসন ,অতিথি আপ্যায়নের বাসন ইস্তক শীল নোড়া ,বঁটি । আর যদি একটু যায়গা বেশী থাকে তো সেই ঠাণ্ডা আলমারিটাও ।তাহলে তরিতরকারির জন্যেও চিন্তা নেই সেও হাতের নাগালের মধ্যেই । আবার সবকিছু কেমন ঢাকা ঢুকি দেওয়া । কত পাল্লা , দেরাজ ,কাঁচের পাল্লা । যত সব বিচ্ছিরি জিনিষ আড়ালে রাখনা ! এই যেমন , কালো কড়া খানা , তোবড়ান হাঁড়ী , ডেকচি সব আড়ালে রাখো ।তারপর সুন্দর সান্‌মাইকা লাগানো পাল্লা বন্ধ করে দাও ,দেরাজ চেপে দাও । দ্যখনদারী কাঁচের বাসন সাজিয়ে রাখো কাঁচের পাল্লার আড়ালে । সবাই দেখুক কেমন রুচি তোমার ।

    ভাবলেও গর্ব হয় একজন মহিলা হিসেবে , এক সময়ের বাড়ীর হতচ্ছেদ্দার ঘরটা নিয়ে কি বাড়াবাড়ি ।আজকাল মাথা ঘামাচ্ছে বহু বড় বড় মাথা । অনেক মাথাই পুরুষের ।যারা কিনা একসময় এই ঘরে উঁকিও দিতনা আজ তাদেরও টনক নড়েছে । নানান নামকরা কোম্পানির বিজ্ঞাপন কাগজের পাতায় , ইন্টারনেটে ,টি ভি তে রান্নাঘর নিয়ে । ছবি দেখলে মনে হয় আহা ! রান্নাঘরেই পড়ে থাকি সারাক্ষন । এতো সুন্দর করে রান্নাঘরকে সাজিয়ে গুছিয়ে দেবে তারা ! কিচ্ছুটি করতে হবেনা তোমায় শুধু পকেটটা ভরে রেখো ।খরচা আছে ! আর কি সুন্দর চকচকে একটা নাম ‘মডিউলার কিচেন’। হেঁসেলের এমন নাম ! ঠিক শুনছি তো ?

    সেই হেঁসেল গো যেখানে আমাদের মা ,জ্যাঠি ,কাকীরা কাটিয়ে গেছে তাদের শৈশব , যৌবন বার্ধক্য । একটা বেশ মোটামুটি বড় ঘর । টিমটিমে আলো , ধোঁয়ার রঙ ধরা দেওয়ালে কতক গুলো তাক । কোন তাকে বাসন পত্র কোনটায় বাটা মশলা পাথরের থালায় , ফোড়নের মশলা , নুন তেল। কোনটায় সেটা অবশ্য আঁশ তাক ।রান্না করা খাবার দাবার । ভেজা ভেজা মেঝে । গোটা দুই মাটীর উনুন , মাটী দিয়ে নিকানো । তার সামনে দুখানি পিঁড়ি পাতা । কয়লার গাঁ গাঁ করা আগুন জ্বলছে উনুনে । দু তিনটে জলের বালতি ।রান্নার জল থাকে তাতে । ভাঙ্গা কয়লা ভর্তি একটা পাত্র । আর বড় সংসার হলে একজন রান্নার ঠাকুর ।গায়ে হাফ হাতা গেঞ্জি ,পরনে ধুতি ,গেঞ্জির নীচ দিয়ে বেরিয়ে থাকা একগোছা পৈতে আর কদমছাঁট চুলে পুষ্ট শিখা এক খানি । তবে স্বপ্নেও ভেবনা বউয়েরা গিন্নিরা বামুনের হাতে রান্নাঘর ছেড়ে নিজেরা শুয়ে বসে সময় কাটাত ! রান্নাঘরে তাদেরও হাজির থাকতে হত । সারাক্ষন ।
    এমন সময় যে আসবে তারা কি জানতো ? মেসিনে বাটে ,গুঁড়োয়, তরকারি কাটে , খাবার গরম করে ঠাণ্ডা করে । আরও কত কি করে !

    বাড়ীতে হঠাৎ অতিথি এলে চিন্তা কি ? দুটো মিষ্টি বের কর হিম আলমারি থেকে , ক’টুকরো আম কেটে দাও । যদি ব্যাবস্থা করা থাকে ভেজে দাও ছোটখাটো কিছু । কাউকে দোকানে ছোটানর দরকার নেই । নেই লুচি ভাজার জন্যে ময়দা মাখার তোড়জোড় ।

    জয়হোক্‌ আধুনিক প্রযুক্তির । জয়হোক্‌ পুরুষের পরিবর্তিত চিন্তা ধারার ।

    বরোদা // ৪/ ৫/ ১৩
    Unlike · · Unfollow Post · 17 hours ago
    You, Moumita Ghosh and 8 others like this.

    Biplob Rahman মধুদি, আমি প্রজন্ম ‘৭১। ঢাকাতেই জন্ম, বেড়ে ওঠা।

    এমন কি আমার ছোট বেলাতেও ‘মিটসেফ’ বলে জাল দিয়ে ঢাকা এক বিশেষ আলমারির চল ছিলো। ইঁদুর-বেড়াল-পোকা-মাকড় থেকে খাবার-দাবার সুরক্ষিত থাকতো তাতে। মিটসেফের চারটি পায়া বসানো থাকতো ‘জলকান্দা’ নামক নকশাদার গোল গোল মাটির চৌবাচ্চায়। এতে পিঁপড়ে ইত্যাদির মিটসেফে প্রবেশের সুযোগ থাকতো না।

    আমরা ছোটরা যেন কোনোভাবেই মিষ্টান্ন বা আচার ইত্যাদি ভ্যানিশ করতে না পারি, সে জন্য ছোট আকৃতির পেতলের তালা দেওয়া হতো মিটসেফে। ...

    সে সময় বাসন-কোষন ছিলো কাঁসার, নয় তো খুব বড়োজোর মোটা করে রঙের প্রলেপ দেওয়া ভাড়ি টিনের [চলতি কথায় ‘চামকিন’] । এখনো মনে আছে, মাকে দেখতাম, কিশোরী কাজের মেয়েটিকে নিয়ে রোজ সকালে একগাঁদা কাঁসার থালা বাসন ছাই দিয়ে ঘষে চকচকে করে তুলতে। তেঁতুল পানিতে সেগুলোর ঔজ্জ্বল্য বাড়ানো হতো। অতিথিদের জন্য ছিলো চিনামাটির বাসনপত্র। আর ছিলো বোতল কেটে তৈরি করা এক সেট কাঁচের গ্লাস।

    রান্না ঘরটি ছিলো বিশাল। তখনো ঢাকায় গ্যাস চালু হয়নি। বিদ্যুত এলেও বিভ্রাট লেগেই থাকতো। সেই লো ভল্টেজ তো আছেই। দুচাকার ওপরে বসানো কেরিসিনের ড্রাম ঠেলে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরতেন ফেরিওয়ালা। মা রান্না করতেন কেরোসিনের চুলায়। রান্না ঘরের এক কোনে ’বহন যোগ্য’ মাটির চুলাও ছিল। রান্না ঘরেই মাদুর পেতে আমরা ছোটরা আহার করতাম।

    প্রতি গোধুলিতে [ঢাকার পরিবেশে তখনো কথাটি অচল হয়ে যায়নি। সিটি করপোরেশন নয়, মিউনিসিপ্যালটির ময়লা-আবর্জনা টানার জন্য তখনও কাজ চালানো হতো কয়েকটি গরুতে টানা গাড়ি দিয়ে। তো যা বলছিলা, গোধুলি বেলায় ] আমার নিত্য রুটিন ছিলো, বাড়ির ছোট, বড়, মাঝারি নানান আকৃতির হেরিকেনগুলোকে ন্যাকড়ায় মুছে ঝকঝকে করা। সেগুলোতে তেল ইত্যাদি ভরে তৈরি রাখা। ...

    ধীরে ধীরে বিদ্যুত নিরবিচ্ছিন্ন হলো। ঢাকায় হলো করপোরেশন। গ্যাস চলে এলো ঘরে ঘরে। এলো এলমুনিয়াম [প্রথমদিকে একে বলা হতো -- সিলভার], স্টেনলেস ও পরে প্লাস্টিক। মিটসেফ বিদায় নিলো। কাঁসার চল উঠে গেলো।

    মা এখন অনেক বৃদ্ধ। আমি নিজেই এখন মা’র কথা ধার করে নিজের ছেলেমেয়েদের বলি, ’ওরে, কালি সন্ধ্যায় ঘর ঝাঁট দিতে নেই’। অথবা খুট করে সুইচ টিপে নিজেই জ্বালিয়ে দেই ‘সন্ধ্যা বাতি।’...
    2 minutes ago · Edited · Like · 2

    Moumita Ghosh Amar mama-bari'te Khub boro ranna ghor chilo. Joint family chelo tokhon. Sob aksathe ranna, khaowa daowa cholto. Gas chelo na, 2to boro boro Unon typer chelo. Koyla, kath diye ranna hoto.
    7 hours ago vi
    _________
    https://www.facebook.com/groups/guruchandali/permalink/586783511339599/
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন