এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • স্মৃতি মেদুরতা

    M
    অন্যান্য | ১৩ মার্চ ২০০৯ | ৩৯৯২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • d | 117.195.36.66 | ১৪ জুন ২০০৯ ১৯:০১407269
  • আধাঘুম আধাজাগা অবস্থায়ই শুনতে পাচ্ছিলাম টবৎ টবৎ করে বৃষ্টির ফোঁটাগুলোর ঝরে পড়ার আওয়াজ। একবার পিটপিট করে দেখি, বাইরে সব ঘুরঘুট্টি অন্ধকার। জল জমেছে ...... জল জমেছে     কি মজাআআ     আজ ইশকুলে যেতে হবে না। কিন্তু মা ঠিক উঠে গেছে দেখো। তার মানে মা আজও যাবে। আবার বালিশে মুখ গুঁজে দিই     আরেকটু ঘুমানো যাবে আজ। কিন্তু ........ কতটা জল উঠল? গেটের স্ল্যাব তো নিশ্চই ডুবেছে একটা দুটো সিঁড়িও ডুবেছে কি? সিঁড়ি ডুবলে বারান্দায় বসে বসেই নৌকোগুলো ছেড়ে দেওয়া যাবে। পোঁওঁওঁওঁ করে শ্রীদুর্গা মিলের সাইরেন বাজতে শুরু করল ....... দুবার করে বাজছে , তারমানে পোনে ছটা।

    *****************************
    আগের দিন রাত্তিরে যখন ঘুমোতে গেছিলাম, তখন বৃষ্টির জোর বেড়েছে, শুরু হয়েছিল সন্ধ্যে থেকেই। রাত ন'টা বাজতে না বাজতেই কারেন্ট চলে যেতে পারে এই আশঙ্কায় মা খেতে দিয়ে দিল। আর সত্যি সত্যিই হাওয়ার জোর একটু বাড়তেই কারেন্ট চলে গেল। সেই যে গেল .... এই সকালবেলাও আসে নি। মা খুঁজেপেতে একটা "সিন্থেটিক শাড়ি' বের করে করে পরে ইশকুল গেল, আমাকে আর ভাইকে আজ যেতে হবে না। মা বেরোবার সময় বারেবারে বলে গেছে বারান্দায় না বসে, ঘরে বসে অঙ্কগুলো যেন করে রাখি। ভ্যাট!, আমি এখন বারান্দায় বসে জল দেখবো।

    দুটো সিঁড়ি দুবেছে ....... বাগান, রাস্তা, নর্দমা সব একাকার। লুঙ্গি, পায়জামা, শাড়ি, ধুতি হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে সবাই জল ভেঙে ভেঙে যাচ্ছে। সোমবাড়ীর ওদিকের কতগুলো মেয়ে কলসী নিয়ে গাতুদের বাড়ী গেল জল ভরতে। গাতুদের বাড়ীটা একটু উঁচু, ওদের টিউবওয়েল জলে ডোবে না। তাই জল জমলেই সব্বাই ওদের বাড়ী থেকে জল নেয়। লালবাড়ীর টিউবওয়েলও উঁচু .... কিন্তু ওদের টিপকল একটা ঘরের মধ্যে। সেই ঘরে আবার চাবি দেওয়া থাকে ..... তাই যে কেউ যখন তখন এসে গেট খুলে জল নিয়ে যেতে পারে না।
  • d | 117.195.36.66 | ১৪ জুন ২০০৯ ১৯:৫০407270
  • ঈঈঈঈঈঈঈ কত্তগুলো কেন্নো উঠেছে বারান্দায়। আবার একটা এই লম্বা কেঁচোও উঠেছে। আমি আর ভাই মিলে ওদের আবার জলে ফেলতে থাকি। এই বৃষ্টির মধ্যেই ছবির মা এসে ঘর মুছে, বাসনমেজে দিয়ে গেল। আজ তো তো কুয়োতলা ডুবে গেছে, তাই ভেতরের বারান্দার ধাপিতে বসেই মাজল। বলে গেল আজ আর দুপুরে আর বিকেলে আসবে না। বৃষি্‌তটা অল্প একটু কমেছে, ইশ্‌শ্‌শ খুব ইচ্ছে করছে জলে নেমে জল ঠেলে ঠেলে একটু হাঁটতে ...... কিন্তু দুউউর দিদা চোখ পেতে বসে আছে ঠিক মা'কে বলে দেবে আর পিট্টি পড়বে। যাদবদের বাড়ীর ছেলেগুলো কেমন মশারি নিয়ে মাছ ধরতে বেরিয়েছে। রিতাদের বাড়ী মনে হয় জল উঠেছে ঘরে। মলিদের বাড়ীও তাহলে ঘরে জল ঢুকেছে ..... ইশ্‌শ ওদের এখন চৌকিতে উথে বসে থাকতে হবে সবসময়। ওদের ঘরে জল ঢোকে বলেই চৌকীর প্রত্যেকটা পায়ার নিচে ৩টে করে ইঁট দেওয়া। আবার অন্ধকার করে বৃষ্টি নামল।

    মা আজ তাড়াতাড়ি চলে এসেছে, ইশকুলে তো মেয়েরা কেউ আসে নি, তবু নাকি ২ পিরিয়ডের আগে ছুটি দেওয়া যাবে না। বড়্‌দিদিমণি বলেছেন। একদম ভিজে গেছে মা। সিঙ্গারা, জিলিপী আর ফুলুরি কিনে এনেছে। আজ দুপুরে খিচুড়ি হবে। সাথে লঙ্কাভাজা, দিমভাজা, আলুভাজা, ডালের বড়া .... আর ..... আর ..... আমের আচার। খেয়েদেয়ে দস্যু মোহন অমনিবাস নিয়ে শোবো।

    সাইকেল গেলে ছিঁইইইস করে কেমন একটা আওয়াজ হয়! জল কেটে যাবার আওয়াজ। এমনি একটা ছিঁইইইস আওয়াজের পরেই গ্লবাৎ খ্‌লবাৎ করে আওয়াজ আর মাছধরা ছেলেগুলো হইহই করে উঠল। একদৌড়ে বারান্দায় গিয়ে দেখি শ্রীদুর্গা মিলের একজন লোক সাইকেল চালিয়ে যেতে যেতে ভুল করে নর্দমার মধ্যে গিয়ে পড়েছে। সাইকেল শুদ্ধ বেকায়দা পড়ে কেমন আটকে গেছে। অনেক কষ্টে তাকে তোলা হল। অত যে হইহই চারিদিকে, কিন্তু মোটা-কাক আর সরু-কাক কেমন বাবাইদের আমগাছে বসে চুপচাপ ভিজছে দেখো .... কোন ভ্রূক্ষেপই নেই! আহা ওদের তো এখন বাসা নেই, বাসা বানাবে সেই শীতকালে .... নারকোল গাছে থাকে .... এত বিষ্টিতে বেচারার আমগাছে এসে বসেছিল, যদি একটু কম ভেজে এই আশায়। তা দুজনেই ভিজেটিজে এক্বারে চুপসে গেছে। শালিখ আর দোয়েলগুলো কোথায় কে জানে! চড়াইগুলো তো ঠিক কারো না কারো ঘুলঘুলিতে ঢুকে বসে আছে।
  • Bratin | 117.194.98.140 | ১৪ জুন ২০০৯ ১৯:৫১407271
  • বেলুড় বিদ্যামন্দিরের স্মৃতি এখন ও অমলিন। চির কাল ই আমি একটু ঘুম কাতুরে। প্রথমেই গিয়ে দেখি পাঁচ টায় ঘন্টা। তর পরে আবার ৫:২৫ আর ৫:৩০ এ প্রেয়ার । কোন রকম এ ঘুম চোখে ধুতি পঞ্জাবি পড়ে ঢুলতে ঢুলতে "কে ও ই এলো রে কামারপুকুর এ" করা । ( পরে অবশ্য পায়জামার ওপরে ধুতি পড়া রপ্ত করি; তাতে Net টাইম অনেক ট কমে যায়। শেষের দিকে মোটামুটি ৫:২০/৫:২৫ এ ঊঠতাম।) গানে আমাদের সন্দীপ নন্দ। আর কৃষেন্দু সেনগুপ্ত। ওরা না ঘুমিয়ে প্রানপনে গান করতো ।আর আমরা মন দিয়ে ঢুলতাম।

    সময়ের সঙ্গে একেবারে নিজেকে বেঁধে ফেলা। ৫:৪৫ এ চা বিস্কুট আনতে যাওয়া।বেশীর ভাগ দিন ই হয়ে উঠত না।রুম-মেট রা মাঝে মাঝে দয়া করে এনে দিত টিফিন। কারন ,প্রেয়ার করে আরেক টু গড়িয়ে নিতাম। মাঝে মাঝে সেই গড়িয়ে নিতে গিয়ে "স্টাডি আওয়ার" মায়া হয়ে যেত। ভালো মানুষ হারাধন দা আমাকে ঘরে ডাকতে আসতেন। আমি আজ "মাথা ব্যথা" কাল 'পেট ব্যথা" বলে কাটিয়ে দিতাম। অবধারিত ফল হিসাবে সঞ্জীবন মহরাজের ঘরে ডাক পরত। উনি মানুষ ট চমৎকার। শুধু অসমাপিকা ক্রিয়া র একটু বেশি ব্যবহার করতেন । যেমন "আরে তোরা এমন করতে থাকতে থাকলে আমি কি করি বলতো? আমাকে তো প্রিন্সিপাল মহারাজ কে জানাতে হবে।"....
  • Lama | 117.194.229.12 | ০২ এপ্রিল ২০১১ ০০:৫৩407272
  • নদী ছিল।

    সত্যি সত্যি ছিল। আমাদের বাড়ি থেকে হাঁটাপথ। নদীর এপাড়ে আমাদের বাড়ি, রানাদের বাড়ি, মিঠুদাদাদের বাড়ি। আর ওপারে টিলা আর ধানক্ষেত।

    বৈশাখ মাসে হাঁটুজল থাকত না। তবে সারাবছরই মাঝখানে একটা চড়ামতো পড়ে থাকতো, তাতে একটা ভাঙাচোরা ঘরও ছিল। সেই ঘরে কখনো কাউকে ঢুকতে বা বেরোতে দেখি নি।

    আমাদের সেই নদী-নদ্যৌ-নদ্য: ছোটবেলায় সর্বসাকুল্যে তিনবার সেই নদীতে স্নান করার অনুমতি পেয়েছিলাম। কিন্তু তখন সাঁতার জানতাম না।

    মাঝে মাঝে কারা যেন অনেক বাঁশ আঁটি করে বেঁধে ভেলার মতো ভাসিয়ে নিয়ে আসতো অনেক দূর থেকে। ক্লান্ত হয়ে পড়লে সেই বাঁশের আঁটিতে নিজেরাই চড়ে বসত।

    তারপর দাঙ্গা বেঁধে গেল। কারা যেন মানুষ মেরে মুন্ডুকাটা লাশ ভাসিয়ে দিতে শুরু করল নদীর জলে। আর বাবার আদেশে আমাদের বিকেলে নদীর ধারে বেড়ানো বন্ধ হয়ে গেল।

    প্রায় তিরিশ পঁয়ত্রিশ বছর পর উইকিম্যাপিয়াতে ছোটবেলার পুরনো শহরের নাম দিয়ে টাইপ করলাম।
    কি আশ্চর্য! নদী এখনো আছে।

    আর বাঁশের আঁটি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কারা যেন।
  • Lama | 117.194.229.12 | ০২ এপ্রিল ২০১১ ০১:৪২407273
  • আবার্তুল্লাম
  • pharida | 122.163.97.160 | ০২ এপ্রিল ২০১১ ১২:০৭407274
  • জ্জিও লামা। লেখাগুলো দারুণ। আমি মিস করে গেছিলাম।
  • i | 124.169.159.70 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১০:৫৬407275
  • প্রবীণেরা আঠাশ বছর আগের কথা এইখানে ল্যাখেন দেখি।
  • Abhyu | 97.81.103.39 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১১:১৫407276
  • আঠাশ বছর আগে?

    তখন আমি কেজি টুতে পড়ি। এক বছর স্কুল করা হয়ে গেছে। আর ভয় করে না স্কুলে যেতে, বরং ভালই লাগে। তবে দাদা আর আমার সঙ্গে স্কুলে আসে না, এটা মোট্টে ভালো না। ক্লাস ফাইভে সবাই বড় হয়ে যায় তো, তাই তাদের ডে সেকশানে যেতে হয়।
  • d | 14.96.167.169 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১২:৪১407277
  • লিখিঅব? লিখি?
    তুই লেখ না ছুঁড়ি।
  • bb | 117.195.162.45 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৩:৫৩407279
  • '৮৩ তে পড়তাম ক্লাস নাইনে। থাকতাম দক্ষিণ কলকাতায় যেখানে টিভি ছিল তখন পাড়া প্রতি ২-৪টি। প্রতিবেশীর টিভিতে ছিল সবার অবাধ অধিকার।
    বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল আর ফাইনাল মনে আছে দেখেছিলাম সাদাকালো টিভিতে। দুটি খেলার মধ্যেই স্যাটালাইট না মেলার জন্য ছিল বিরতি।
    খেলা দেখেছিলাম পাড়ার সবাই মিলে মনে পড়ে সেমিফাইনালে সন্দীপ পাতিলের বব উইলিসকে মারা পরপর ৪টি চার।
    ফাইনালে মনে আছে শ্রীকান্তের রবার্টসকে হাঁটুগেড়ে মারা চার। ১৮৩ করার পর সবাই মুষড়ে পড়ে ছিলাম।
    বলবিন্দার সান্ধুর বলে গ্রীনিজের বোল্ড দিয়ে যাত্রা শুরু। মধ্যে ছিল বিরতি, যখন রিচার্ড মদনলালকে প্রচুর মারছিল আর তারপর সেই বিখ্যাত কপিলের ক্যাচ।শুনেছিলাম রেডিওতে।
    তারপর টিভি ফিরে এলে মহিন্দারের বিখ্যাত স্লো মিডিয়াম ফাস্ট বোলিং। স্লিপে গাভাসকারের নেওয়া ক্যাচ, যশপাল শর্মার ফিল্ডিং।
    আর পরের দিন স্টেট্‌সম্যানের হেডিংএ কপিলের বিখ্যাত সহাস্য মুর্তি।
    জনান্তিকে- ইংরাজি শেখার প্রথম সোপান হিসাবে তখন বাড়ীতে শুধুই ইংরাজী কাগজই নেওয়া হত :(
  • bb | 117.195.162.45 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৪:২৬407280
  • তখনও ক্রিকেট ছিল ভদ্রলোকের খেলা। সেমিফাইনালে সন্দীপ পাতিলের সেটা ছিল হাফসেঞ্চুরির সুযোগ তাই ক্যাপ্টেন উইলিইস সবাইকেই অফে নিয়ে বোলিং করে ছিল শেষবল টা।
    অবশ্য তখন অত ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশন ছিলনা।
  • i | 124.169.159.70 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৬:০৪407281
  • ডি কেন ছোটাইকে লিখতে বলে? ছোটাই কি প্রবীণ? সে হোলো গে -নব্য যুবা-গোঁফ গজিয়েছে কি গজায় নি।
    ৮৩ র কথা সে কি জানে!
  • d | 14.96.34.96 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৬:৩৭407282
  • নব্য যুবা? আবার গোঁপও গজিয়েছে?
    | তা বেশ|
  • aka | 24.42.203.194 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৭:১৭407283
  • না না সন্দীপ পাতিলকে ৫০ করার সুযোগ নয়, সেকালে ইংলণ্ডের অধিকাংশ মাঠেই কোন ফেন্স ছিল না। খেলা চলতে চলতে বা শেষ হলে লোকে হুড়হুড় করে মাঠে ঢুকে পরত। উইলিস যখন দেখল হার অনিবার্য তখন সবাইকে একদিকে নিয়ে এসেছিল। যাতে লোকের অত্যাচার থেকে বাঁচা যায়। পাতিল শটটা মারার পরেই সবাই দে দৌড়।

    তখন আমি ক্রিকেট বুঝতাম না, তখন আমি টেনিস দেখতাম - বিয়র্ণ বর্গ, কোনর্স, ম্যাকেনরো আর ওদিকে ক্রিস এভার্ট লয়েড। বিশ্বকাপ থেকেই ক্রিকেট দেখা শুরু, এরপরেই বেনসন অ্যাণ্ড হেজেস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইন্ডিয়া টুর, ইন্ডিয়ার ইংলন্ড টুর ইত্যাদি ইত্যাদি। টেনিস চলে গেল দ্বিতীয় সারিতে।
  • nyara | 122.172.202.81 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৯:০৫407284
  • bb-র মতনই আমি তখন নবম শ্রেণী, শাড়ি পরিনা যদিও তখনো। সল্ট লেকে বাস। বাকি সব bb-র লেখার 'ঐ'।
  • ranjan roy | 122.161.206.124 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৯:১২407285
  • আমার ছোটবেলায় ক্রিকেট মানে বাবার রেডিওতে কমেϾট্র শোনা।
    আমরা পিয়ার্সন সুরিটা, ভিজিয়ানাগ্রাম( আসলে মহারাজা , বিজয়নগরম্‌) এদের নাম শুনতাম, ইংরেজি বুঝতাম না। অগত্যা পরের দিনের আবাপ ও স্বাধীনতা
    পড়া, স্টেটস্‌ম্যান থেকে ছবি কেটে খাতায় সাঁটা।
    সেবার জেরি অ্যালেকজেন্ডারের টিম এসেছে।
    ওপেনার হান্ট ও হোল্ট, গ্যারি সোবার্স, রোহন কানহাই। আগুনে বোলার রয় গিলক্রিস্ট ও ওয়েসলি হল। এরিক অ্যাটকিন্সন। সোনী রামাধীন তখন স্পিনের জাদুতে সদ্য ইংল্যান্ডের তুষ্টি করে এয়েচেন।
    নতুন এক ছোকরা স্পিনার এসেছে তার নাম
    ---- ল্যন্স গিবস্‌!
    সেকালে ইন্ডিয়ান টিম ম্যানেজমেন্ট ছিল সামন্তপ্রভু দের হাতে। বরোদার গায়কোয়াড়, অন্ধ্রের ভিজি-- এদের বোলবোলাও। ফলে প্রত্যেক ম্যাচে ক্যাপ্টেন বদল হত।
    অফ স্পিনার গোলাম আমেদ--যাতা! নন-প্লেয়িং ক্যাপ্টেন।
    প্রায় প্রত্যেক ম্যাচে মাঠে ক্যাপ্টেন রইলেন-- পলি উম্রিগর। ভারতের সোবার্স। বোলিংয়ে মিডিয়াম পেস ও স্পিন দুটৈ দরকার মত করতেন। মিডল অর্ডারে বেশ নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান।
    তখন সৌরভের মতই লালা অমরনাথকে ফর্মে থাকা সঙ্কেÄও বসিয়ে দেয়া হল।
    তখন ভাল ফার্স্ট বোলার সব পাকিস্তানে চলে গেছে।
    মহম্মদ নিসার- লাল সিং দের জমানা শেষ। ভারতের শেষ ফার্স্ট বোলার বঙ্গসন্তান শুঁটে ব্যানার্জি ভিলাইয়ে থাকেন।
    পাঁচটা টেস্টে ভারত তিনটে গোহারা গোহারা হারল। ইডেনে যা তা রকম ইনিংস ডিফিট। কানহাই ২৫৬, সোবার্স ও কলি স্মিথ সেন্‌চুরি।
    ভারতের এক ইনিংসে বিজয় মঞ্জরেকর , অন্যটায় উমরিগর চল্লিশের কাছাকাছি করেছিলেন।
    দুটোয় কোনরকমে ড্র।
    একটা ম্যাচের জন্যে ভিন্নু মানকড়কে আনা হল। ব্যাটে-বলে পুরনো জাদুর কিছু দেখালেন। স্পিন বোলিংয়ে তখন উঠছেন সুভাষ গুপ্তে।
    অসাধারণ লেগ স্পিন ও গুগলি। পরপর কয়েকটা সিজনে বেশ কয়েকবার ন' উইকেট।
    কুমব্লে'র সেই একবার দশ উইকেট বাদ দিলে কবে ভারতীয় স্পিনার আট উইকেট নিয়েছে মনে করুন দেখি?
    কিন্তু তখনো একবঙ্গসন্তান তাঁর টেকনিকের জোরে আর হেলমেট ছাড়া আগুনে ফাস্ট বোলিংয়ের মুখোমুখি হওয়ার সাহস দেখিয়ে বিদেশি দের শ্রদ্ধা আদায় করেছিলেন। ওপেনার পঙ্কজ রায়।
  • ranjan roy | 122.161.206.124 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ১৯:৩৫407286
  • তখন ভারত বিদেশিদের সঙ্গে কোন ম্যাচ জিতবে এমন আশা করা দুরাশা ছিল। যদিও ইন্ডিভিজুয়াল ট্যালেন্ট ছিল।
    ড্র করলে বলা হত-- দারুণ খেলেছে। আজকের বাংলাদেশের টিম ধরুন।
    ( তখন শ্রীলংকা নামক দেশটি ক্রিকেট খেলতে শেখেনি। সেটা আশির দশকে কনট্র্যাক্ট বেসিসে গ্যারি সোবার্স ওদেশে থেকে দিলীপ মেন্ডিসদের তৈরি করেন।)
    এরপর গায়কোয়াড়ের নেতৃত্বে ভারত গেল ইংল্যান্ডে খেলতে, যেন পিকনিকে গেছে।
    পিটার মে- টম গ্রেভনির ইংল্যান্ড, কলিন কাউড্রের ইংল্যান্ড। তখনো লক-লেকারের স্পিনার জুটি( টনি লক- জিম লেকার) জীবনের শেষ স্পেল খেলছে।
    স্ট্যাথাম-ট্রুম্যান ফুলফর্মে আর টাইসন বুড়ো হচ্ছেন।
    ভারত উড়ে গেল। ইংল্যান্ডের পত্রিকা ভারতের ফিল্ডিংয়ের সমালোচনা করে বললো-- মাঠে পাগলা ষাঁড় ছেড়ে এদের প্র্যাকটিস করানো উচিত।
    সুভাষ গুপ্তে ছাড়া তেমন কেউই দাগ কাটতে পারলেন না। অত ক্যাচ না ছাড়লে উনি আরও ম্যাজিক দেখাতে পারতেন। শেষে ক্রিকেট ছেড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে ব্যবসা করতে গেলেন।
    এরপর অস্ট্রেলিয়া এল ভারতে। সে কি টিম। ক্যাপ্টেন টপ স্পিনার ও অল রাউন্ডার রিচি বেনো।
    ওপেনার ম্যাকডোনাল্ড। বোলিংয়ে ডেভিডসন, মেকিফ, আগের ছায়া শরীর রে লিন্ডওয়াল।
    ওয়ান ডাউন নীল হার্ভে ( অসম্ভব ভালো স্লিপ ফিল্ডার), তারপর নরম্যান ও'নীল। ওকে তখন মিডিয়া দ্বিতীয় ব্র্যাডম্যান বলছে।
    ওরা যথারীতি ভারতকে ধো দিয়ে, বিশেষত: ইডেনে।
    কিন্তু কানপুরের গ্রীন পার্কের ম্যাটিং উইকেটে মির‌্যাকল্‌ হল। অফ স্পিনার যেশু প্যাটেল একটিই ম্যাচ খেললেন। কিন্তু সেকন্ড ইনিংসে নয় উইকেট নিয়ে ওদের ১০৪ রানে আউট করে ভারতকে জেতালেন।
    সেই কোন জবরদস্ত বিদেশি টিমকে ভারত প্রথম হারালো।
    তারপর একাত্তরে ওয়াড়েকরের টিম স্পিনার ত্রয়ীর জাদুতে ইংল্যান্ডের মাটিতে, প্রথম বিদেশের মাঠে।
    সেসব আনদ-উত্তেজনা আজও ভুলিনি।
    সে তুলনায় আজকের জেতার আনন্দ যেন ছেলের বিয়েতে বাবার আনন্দ।
    আগের গুলো নিজের বিয়ের আনন্দ।:))))))
  • d | 219.64.146.132 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২০:১৫407288
  • ১৯৮৩ আমার মাধ্যমিকের বছর। জুনেই রেজাল্ট বেরিয়েছে। তখন অ্যাডমিট কার্ড, মার্কশিটের খোপ খোপ করা কপি কিনতে পাওয়া যেত ১০ পয়সা করে এক এক পিস। সেই কপি কিনে তাতে আরিজিনাল মার্কশিট দেখে নম্বরগুলো, নাম রোল নাম্বার হাতে লিখে অ্যাটেস্ট করিয়ে আনতে হত। বিভিন্ন স্কুল কলেজে অ্যাপ্লাই করার জন্য এবং ভবিষ্যতের কথা ভেবে এরকম কপি অনেকগুলো করে অ্যাটেস্ট করিয়ে রাখা হত। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের দিন এরকম কিছু কপি করতে গিয়ে আমি প্রচুর কাটাকুটি করি, যা দেখে পরে আমাদের স্কুলের বড়দি নিশ্চিত হয়ে গেছিলেন যে ভবিষ্যতেও আমার দ্বারা বিশেষ কোন মহৎ কার্য্য হয়ে উঠবে না। এইসব খেলাফেলা আজেবাজে হুজুগ নিয়েই মত্ত থাকব। অসামান্য ভবিষ্যৎদ্রষ্টা ছিলেন নি:সন্দেহে।

    আমাদের পাড়ায় তিনটে বাড়ীতে টিভি ছিল আর সক্কলে মিলে সেই তিনটে বাড়ীতেই দেখা হত। আমি আর আমার ভাই (তখন বছর দশেক বয়স) বড়মামার সাদাকালো টিভির সামনে বেশ থাপু হয়ে বসে সেমি ফাইনাল আর ফাইনাল দেখেছিলাম। সেমি ফাইনালে যশপাল শর্মার ছয় মারা দেখে লাফিয়ে উঠতে গিয়ে রাণু চায়ের কাপ ভর্তি ট্রে'র সাথে ধাক্কা খেয়ে গায়ে চা পড়ে বেশ একখানা কেলো ঘটিয়েছিল। মহিন্দর অমরনাথ সম্ভবত: মম হয়েছিলেন। আমার দাদু বলত 'মহেন্দ্র অমরনাথ' আর পাড়ার রঞ্জুদা 'জিমি অমরনাথ'। রঞ্জুদা এমন র‌্যালা নিয়ে বলত যেন এই তো জিমির সাথে প্র্যাকটিস করে এলো-- টাইপ হাবভাব। আমরা মুগ্‌ধ চোখে শুনতাম। ;-) সন্দীপ পাতিলের পরপর ৩ টে চার মারাও মনে আছে।

    ফাইনালে ভারত টসে হেরে ব্যাট করতে যায়। আমার মামারা এবং পাড়ার কাকু টাকুরা সব্বাই নিশ্চিত ছিলেন যে আগে ব্যাট করে ভারত কিছুতেই জিতবে না। তখন আলোচনার একমাত্র বিষয় হারটা যেন একটু সম্মানের সাথে হয়। শ্রীকান্ত বোধহয় ৩৫ রান করেন আর সেই ... সেই 'জিমি' অমরনাথ ২৬। আর বোধহয় সন্দীপ পাতিল ২৫-২৬ মত করে। বাকী সব ধড়াদ্ধড় পড়তে থাকে। মার্শাল, হোল্ডিং গার্নার আর একজনে যেন কে ... পুরো গাঁক গাঁক করে ভারতের উইকেটগুলো ফেলে দেয়। ১৮৩ তে নটেগাছ মুড়ানোর পরে আমরা সবাই দু:খ দু:খ মুখে বারান্দায়, উঠোনে ঘোরাঘুরি করছিলাম। বোলিঙেও মহিন্দার অমরনাথ ভারতের ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। ১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট, তখন প্রায় অকল্পনীয় লেগেছিল। হ্যাঁ স্যাটেলাইট বিভ্রাটে কপিলের সেই বিখ্যাত ক্যাচ তখন দেখতে পাই নি।

    তারপর মাঝরাতে গোটা পাড়া রাস্তায় নেমে যাওয়া, মস্ত মস্ত মশাল (এখানে বলে রাখি, আমাদের পাড়ায় অধিকাংশই ইস্টবেঙ্গলের সাপোর্টার, তাই মশাল প্রায় সারা বছরই চাইলেই পাওয়া যেত) আর পটু, অপটু হাতে আঁকা কপিলের বিশাল বিশাল পোস্টার নিয়ে পাড়া প্রদক্ষিণ। রবীনকাকু মিষ্টির দোকান খুলিয়ে রসগোল্লার খান কয় হাঁড়ি নিয়ে এসে বিলি করলেন। কালিপটকা, চকোলেট বোম, ড্রাম মায় ঝাঁঝ ঘন্টা, কাঁসি পর্যন্ত বাজিয়ে চলা আধঘন্টা ধরে ...... কপিলের শ্যাম্পেন খোলার দৃশ্য দেখে দিদার ভুঁরুতে কোঁচ আর 'তাইন' (দাদু) যে প্রশ্রয় দিয়া দিয়া পুলাপানগুলির মাথা খাইতাস্যান এইটা সজোরে ঘোষণা, কপিলের কাপ হাতে নিয়ে ছবি ---- এইসব তো ইতিহাস, ম্যাক্রো অথবা মাইক্রো

    এর কিছুপরে ভারত বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে বিচ্ছিরিভাবে হারে। তখন যুগান্তরে ছড়া বেরিয়েছিল
    ফিরিয়ে দিচ্ছি বিশ্বকাপ
    মাপ করে দে লয়েডবাপ
    .....
    ইত্যাদি।
  • ranjan roy | 122.161.206.124 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২০:২১407290
  • থ্যাংকু অর্পন।:)) এই টেকনোলজির সঙ্গে আর পারা গেল না।
    কিন্তু একটু এঁড়ে তক্কো করি, বাঙালভাষায় কান্ডামি?
    আমি যেটা তুলে ধরতে চাইছিলাম--- ২০০৪ এর পরে কেউ পায়নি, মানে গত সাত বছরে।
    আর ভাজ্জি দশবছরে মাত্র একবার। প্রতিবছরে অতগুলো টেস্ট ম্যাচ খেলে!
    তখন ওরা বছরে মাত্র একটিই সিরিজ খেলতো, কখনো দুটো। কোন কোন বছরে কোন বিদেশি টিম আসতো না এমনো হোতো।
    আর অত বাজে ফিল্ডিং!
    পাতৌদির আগে ভারতীয় ফিল্ডিং এর মান খুব খারাপ ছিল।
    আজকের মত ফিল্ডিং সাপোর্ট পেলে মানকড়-গুপ্তেরা কি করতেন ভাবো।
    ধর রঞ্জন রায় কে যদি একই পরীক্ষায় ইউনিভার্সিটি দশবার বসতে দেয় তালে মেরিট লিস্টে নাম আসার সম্ভাবনা একটু বেড়ে যাবে কি না!
  • Arpan | 112.133.206.18 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২০:৩৭407291
  • আরে রঞ্জনদা আপনি লিখুন। আমি ফুটকাটা থামাই। :-)

    গুপ্তে আর চন্দ্রশেখরের কীর্তির কথা ছোটবেলা থেকেই জানি। আর মাঁকড় তো শোনা যায় কপিল লেভেলের ছিলেন।

    আপনি একটু বেদীর কথা লিখুন তো। সত্যি কি দারুণ কিছু বোলার ছিলেন যে এই জেনারেশনের প্লেয়ারদের হাতে মাথা কাটেন? এদিকে পারফর্ম্যান্স তো একদম সাদামাটা।
  • Arpan | 112.133.206.18 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২০:৪৫407292
  • আরেকবার ফুট কাটি। :-)

    দমু, ৮৩-এর পরে ও:ইন্ডিজ ইন্ডিয়া ট্যুরে এসে ধরাশায়ী করে ছেড়েছিল। প্রতিশোধের আগুন জ্বালিয়ে ছেড়েছিল। মার্শালের বলে গাভাসকারের হাত থেকে ব্যাট পড়ে গেছিল। তারপরের টেস্টে গাভাসকার অনবদ্য একটি সেঞ্চুরি করেন। বোধহয় ব্র্যাডম্যানের সেঞ্চুরির রেকর্ড টাচ করেন। আমার দেখা ওটাই গাভাসকারের সেরা ইনিংস।

    বেনসন হেজেস সিরিজ, যেটায় শাস্ত্রী চ্যাম্পিয়ন অব চ্যাম্পিয়ন্স হয়ে অডি গাড়ি পেয়েছিল, সেইটাতে ভারত ও: ইন্ডিজের সাথে খেলেনি। তুমি বোধহয় ৮৩-র সিরিজটার কথা বলছ।
  • kc | 89.203.49.18 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২১:৩৪407293
  • সেই যে বার কালিচরণের ওয়েস্ট ইন্ডিজ কলকাতায় এসেছিল আমার বাবা আমাকে নিয়ে গেছিল ইডেন গার্ডেন্সে। তখন থেকেই ক্রিকেটের সব খবর রাখতাম, বলতে গেলে ব্যাঙের ছেলের মতই। আনন্দমেলা থেকে সবার ফোটো কেটে নিয়ে আলাদা অ্যালবাম ছিল। কলকাতা থেকে বহুদূরের আমাদের মফস্বল শহরে টিভি আসেনি। মানে দুএকটি বাড়িতে ছিল, তাতে আসত শুধু বাংলাদেশের টিভি। আমাদের পাড়ার এক ক্যাট খুকির ( আমার থেকে এক ক্লাস নীচে এক ইংরেজী মিডিয়ামে পড়ত) বাড়িতে সেই জাহাজের মত অ্যান্টেনা লাগান টিভি ছিল। ওদের বাড়ির লোকেরা সবাই ছিল কপিলদেবের ফ্যান। তখন সিপিএম কংগ্রেস খারাখারি একটু করে কমছে স্কুলের ছেলেদের মধ্যে তৈরী হচ্ছে কপিল-গাভাসকার দ্বন্দ। কিছু বাচ্চার চোখে চিরকালের মতন ভিলেন হয়ে গেছে পাওলো রোসি, জিকোকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য।

    সেই সময়ে এল বিশ্বকাপ ক্রিকেট, আমাদের সানিপন্থি বাড়ির লোকেরা বড়ই মুহ্যমান। গাভাসকার খেলতে পারছেনা বলে, বিরুদ্ধপক্ষের লোকেরা বলছে ঘোঁট পাকাতেই নাকি গাভাসকার খেলছেনা, ফাইনালে গাভাসকার আউট হতেই আবার কিছু লোক চিৎকার করে উঠল। ঐ ক্যাট খুকীদের বাড়িতে নাকি বাংলাদেশের টিভিতে খেলা দেখা যাচ্ছিল, কেউ নাকি দেখেও এসেছে যে আউট হবার সময় গাভাসকার নাকি হাসছিল। রাগে আমার আর তাদের বাড়িতে খেলা দেখতে যাওয়া হলনা। তবুও ভারত জিতল, তার থেকেও বেশি আনন্দ কপিল নাকি সানির সঙ্গে অনেক পরামর্শ করেছে যখন রিচার্ডস পেঁদিয়ে বৃন্দাবন দেখাচ্ছিল।

    সেই মাঝরাতে পাড়ার দাদা কাকাদের সঙ্গে এক বালকও ছুটে বেড়াচ্ছিল আনন্দে, সেই টিভিওয়ালা বাড়ির সামনেও ভিড়, মাসিমা সবাইকে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন, এমন সময় অবাক করে দিয়ে সেই ক্যাটখুকীর প্রশ্ন ''কৌশিকদা তুমি খেলা দেখতে এলেনা?''

    ভারতের জেতার আনন্দ না কি অন্য কোনও উত্তেজনায় জানা যায়না, শুধু একথা জানা যায় যে ক্লাস ফাইভে পড়া সেই সদ্য কিশোর সেই রাত্রিতে এক পাহাড়ি নদীর ধারে একটা কাঠের বাড়ির স্বপ্ন দেখেছিল। ভারত প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছিল।
  • Arpan | 112.133.206.18 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২২:০৩407294
  • সেই বাড়িটিতে ক্যাটখুকি থাকত?
  • ranjan roy | 122.161.206.124 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২২:২২407295
  • আরে একটু ইয়ার্কি মারছিলাম।
    বেদীর ব্যাপারে আমি একটু প্রেজুডিসড্‌।
    হয়তো টিভিতে সৌরভের ব্যাপারে যা-তা বলতো বলে।
    কিন্তু ও বল দারুন ফ্লাইট করাতো। এরিয়েল জিওমেট্রিতে ব্যাটসম্যানদের বিট করতো।
    তবু আমি তখনকার স্পিনারদের মধ্যে এরাপল্লি প্রসন্ন( বাংলার জামাই)কে সবচেয়ে আগে রাখবো। তারপরে বেদি, তারপরে ভেঙ্কটকে।
    ভেঙ্কটের বল ঘুরতো বেশি, অফ ব্রেক। ফ্লাইট বেদীর চেয়ে কম। কিন্তু প্রসন্ন? ফ্লাইট, আর্মার, ফ্লিপার--অনেক ভ্যারিয়েশন, অনেক বুদ্ধি করে বল করতো।
    ওকে সবচেয়ে ভাল ব্যবহার করতো পতৌদি। আজও মনে পড়ছে-- সম্ভবত: ১৯৬৯ এর শীতকাল। বিল লরির অস্ট্রেলিয়া এসেছে। ওপেনিং এ ওর সঙ্গে জুটি কিথ স্ট্যাকপোল, উইকেটকীপার। গিলক্রিস্টের মত মারতো, ইডেনে সুব্রত গুহকে তুলোধোনা করলো। । আর পেস বোলিংয়ে ম্যাকেঞ্জি নতুন এসে ইম্প্রেস করেছেন। তখন গাভাসকর, অমরনাথ, বিশ্বনাথ, একনাথ সোলকরেরা সবে এসেছেন। পাতৌদির সম্ভবত: শেষ বারের ক্যাপ্টেন্সি।
    কিন্তু চেন্নাইয়ের চীপকের মাঠে প্রসন্নের বোলিংয়ে অজ্জিরা ২৪ রানে ৬ উইকেট। তখন নতুন আসা ইয়ান রেডপাথ আর বোলার ম্যাকেঞ্জি খেলাটা ধরে টিপিক্যাল অস্ট্রেলীয় কায়দায় ভরাডুবি বাঁচালেন। ইন্ডিয়ান টিমের তখন আজকের মত কিলিং স্পিরিট ছিল না।
    আর একবার কোলকাতায় ইংল্যান্ডের টিমে টনি লক বুড়ো বয়সে এসেছেন। তখন ""নো বলের'' নতুন নিয়ম হয়েছে। অর্থাৎ ডেলিভারির সময় বোলিং ক্রিজ দু'পায়ের ফাঁকে থাকতে হবে।
    কিন্তু আমাদের ও টাইগারের ফেবারিট সেলিম দুরানী ( ব্যাটিং ও বোলিং, দুইয়েরই রানী) নতুন নিয়মে কিছুতেই রান আপটা অ্যাডজাস্ট করতে পারছিলেন না, খালি রান দিচ্ছিলেন। চার ওভারে ৪-০- ১৭-০। সবাই খিস্তি করছে। বোধহয় মাল টেনে এসেছে, টাইগার কেন যে বদলাচ্ছে না!
    কিন্তু খেলাটা উনি বোঝেন, আমরা না।
    তাই একটু পরে দুরানী লয়ে ফিরলেন। ফল ৭-২-২০-৩।

    ওই ফ্লাইটের ঘরাণার স্পিন আজ কোথায়?
    হরভজনরা অতটা স্কাই করাতে ভয় পান, ওয়ান ডে'র জমানায় মার খাবেন বলে।
    আসলে আমারই ভুল। তখন না ওয়ান ডে ছিল, না টিক-টোয়েন্টি!
    আজ যেমন মহাকাব্য সম্ভব না, লম্বা আলাপ-বোল-বিস্তার সম্ভব না। তেমনি বেদি-প্রসন্ন-মাঁকড়-গুপ্তে ঘরানার ফ্লাইটেড স্পিন সম্ভব না। এখন লেগ বা অফ স্পিনের চেয়ে লেগ-অফ ব্রেকের কদর বেশি। অজন্তা মেন্ডিসের কদর বেশি।
  • ranjan roy | 122.161.206.124 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২২:৩০407296
  • সেদিন এক কাঠবাঙালের সনে ক্রিকেট নিয়ে নিম্নরূপ আলাপন হল।
    --রঞ্জন, আপনিও ক্রিকেট ভাল বাসেন?
    --হ্যাঁ,
    -- কেন?
    -- মানে,বেশ এন্টারটেনিং স্পোর্টস্‌ তো!
    -- স্পোর্টস্‌? এইডারে কয় স্পোর্টস্‌? যার মাঝে কয়বার জল খাইতে ,সরবত খাইতে, চা খাইতে হয়, লাঞ্চ করতে হয়, তারে কয়েন স্পোর্টস্‌! না:, ভাবছিলাম আপনের কিছুডা বুদ্ধিশুদ্ধি আছে---।
  • Arpan | 122.252.231.10 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২২:৫৯407297
  • রঞ্জনদা, কেন বেদীর কথা জানতে চেয়েছিলাম একটু ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি।

    তার আগে বলি প্রসন্নর বোলিং স্ট্যাট দারুণ ইম্প্রেসিভ। ক্রিকইনফোর ইন্ডিয়ার অল টাইম ইলেভেনে প্রসন্ন আছেন, হরভজন নেই। তাড়াতাড়ি খেলা ছেড়ে না দিলে অনেক মাইলস্টোন পেরোতেন।

    অজন্তা মেন্ডিসের দৌড় শেষ হয়ে গেছে।

    এইবার বেদী। বেদীর প্রবলেমটা হল স্পিনের ব্যাপারে উনি গুরুঠাকুর। সব ব্যপারে শেষ কথা উনিই বলবেন। সৌরভকে ক্রিটিসাইজ করার কথা বলছি না। যেভাবে বছরের পর বছর ধরে উনি এই প্রজন্মের সবথেকে ভদ্র দুই ক্রিকেটারকে চাঁচাছোলা একতরফা আক্রমণ করে এসেছেন তাতে মানুষ হিসেবে খুব একটা ওপরে রাখতে পারছি না। সেই দুই ক্রিকেটারের একজন কুম্বলে, অন্যজন মুরলি। কুম্বলে ভদ্রতাবশত কখনো নাম করে উত্তর দেয়নি। কিন্তু মুরলি টেস্ট থেকে রিটায়ার করার পরে হিটব্যাক করে।

    নিচের লিংটা দেখুন। সঙ্গের রিলেটেড লিংগুলোয় গেলে পুরোটা ফলো করতে পারবেন।

    http://www.espncricinfo.com/srilanka/content/story/469491.html

    ওনার এরিয়েল জিওমেট্রি কি শেন ওয়ার্নের থেকেও ভালো ছিল?
  • dri | 117.194.243.181 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২৩:০২407298
  • বেদীর বোলিংএর রেকর্ডিং দেখার আমার খুব ইচ্ছে।
  • Arpan | 112.133.206.18 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২৩:০৩407299
  • আমি দেখেছি কিছু। ইএস্পিএনের আর্কাইভ থেকে পুরনো ম্যাচ মাঝে মাঝে দেখায়।
  • Arpan | 112.133.206.18 | ০৩ এপ্রিল ২০১১ ২৩:০৬407301
  • ইউটিউবে গোটাদুয়েক ক্লিপ আছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন