এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • সমকামিতা : একটি সমীক্ষা

    pi
    অন্যান্য | ২৯ আগস্ট ২০০৯ | ৫০৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • arjo | 24.42.203.194 | ৩০ আগস্ট ২০০৯ ২২:৩৬413644
  • তাইলে সার্ভেতে ক,খ,গ,ঘ দিয়েছই বা কেন? আর এটাকে সার্ভেই বা বলছ কেন? অ্যানোনিমাস টই বললে হয় না?
  • arjo | 24.42.203.194 | ৩০ আগস্ট ২০০৯ ২৩:৫৩413645
  • মানে যে ক,খ,গ, ঘ গুলো করল তার কথা ভাবছিলাম। :)
  • pi | 128.231.22.89 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ ০১:৩৩413646

  • http://news.rediff.com/report/2009/sep/09/delhi-child-commission-moves-sc-against-gay-sex.htm

    The Delhi Commission for Protection of Child Rights has approached the Supreme Court, challenging the Delhi High Court's verdict decriminalising homosexuality, on the ground that it would adversely affect children's rights.

    The commission, in its petition, contended that gay sex would have an adverse impact on the psychological, physical and mental development of children.

    The petition is likely to be taken up on September 14 when the apex court would hear similar petitions filed by others challenging the high court's verdict.

    The apex court had earlier issued a notice to the Centre on a petition filed by a Christian body, a disciple of Yoga guru Ramdev and astrologer Suresh Kumar Kaushal, seeking a stay on the high court verdict legalising gay sex, on the ground it will have a catastrophic effect on the society's moral fabric.

    All the petitioners have sought setting aside of the July 2 high court verdict legalising gay sex between consenting adults, which was earlier a criminal offence punishable with up to life imprisonment.


    পিনাকীদা, ঐ লাইনটা আরেকবার পড়ো।
    গে সেক্স ডিক্রিমিনালাইজ্‌ড হলেই যাঁরা মনে করছেন সমাজের মরাল বুনট ছারখার হয়ে প্রলয়কাল উপস্থিত হবে, সেরকম কত মানুষ আছেন দেখছো তো। এতো জাস্ট কিছু নমুনা। 'সেভ ফ্যামিলি ফাইন্ডেশন' জাতীয় সংস্থা থেকে এ নিয়ে প্রতিবাদের বহর বা অন্যান্য বিভিন্ন ফোরামে এনিয়ে লোকজনের মন্তব্য ( বা এখনো অব্দি এই সার্ভে তেও আসা কিছু কিছু মন্তব্য :)) পড়লে টের পেতে এই রায় টা বাস্তবে জাস্ট একটা অ্যাক্টকে লিগালাইজ করেনি, ধাক্কা দিয়েছে আরো অনেক জায়গায়। সমকামিতা সে অর্থে সমাজে ইল্লিগাল তো ছিল না , সমকামিতা আইনত ক্রিমিনাইজড ছিল না, ছিল খালি গে সেক্স।
    কিন্তু সামাজিকভাবে তো এটাকে ক্রিমিন্যালাইজ্‌ড করে রাখা হয়েছিল/( এখনো) হয়েছে ও । গে সেক্স ক্রিমিন্যাল অফেন্স করে রাখার মধ্যে দিয়ে সেই সামাজিক হ্যারাসমেন্ট একটা বৈধতা পাচ্ছিল, এটা মানবে তো ? নইলে আজ ঐ অ্যাক্ট টা খালি ডিক্রিমিনালাইজ্‌ড হলে এমন সমাজ গেল-গেল রব উঠতো না !
  • pi | 72.83.103.132 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১১:০২413647
  • শুধু রামদেব বাবাকে বলে আর কী হবে ! :)
    সেদিন রঞ্জনদার সাথেই বোধহয় অন্য একটা টইতে কথা হচ্ছিল। এখনো কতজন, কত 'প্রগতিশীল' লোকজনে মনে করেন, 'ও তো অসুখ' ! এমনকি পরিবারে কি পরিচিতদের মধ্যে কারুর সমকামী পরিচয় প্রকাশ্যে আসার পর বলতে শুনেছি, ও একটা বয়েসে এমনি হতে পারে, বয়স হলে, কি থেরাপি টেরাপি করালে ঠিক 'ঠিক হয়ে যাবে '! :)

    http://timesofindia.indiatimes.com/india/Gay-sex-is-an-unnatural-disease-Azad/articleshow/9103511.cms
  • siki | 123.242.248.130 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১২:১৮413648
  • ইয়ে, বলছিলাম কি, আমার এক বন্ধু আছে এখানে। গেলবছর ওকে আমাদের "অন্য যৌনতা'র একটা কপি দিয়েছিলাম পড়তে। পরে ওর সাথে কয়েক মিনিটের আলোচনা হয়েছিল এই নিয়ে।

    আগে বলে নিই, বন্ধু আর তার বৌ (মানে দুজনেই আমাদের স্কুলের বন্ধু) দুজনেই পোস্ট ডক্টরেট জেনেটিক্‌স, জিনোটেকনোলজি ইত্যাদি নিয়ে।

    দুজনকারই বক্তব্য ছিল, অন্য যৌনতা সংখ্যায় সমকামিতা নিয়ে ওভারঅল যে দৃষ্টিভঙ্গিটা তুলে ধরা হয়েছে, যে এটি ন্যাচারাল ব্যাপার, কোনও অসুখ নয়, ইত্যাদি প্রভৃতি ... পুরো বক্তব্যটাই অল্প জেনে পেশ করা হয়েছে। সমকামিতা অবশ্যই একটি জন্মগত জিনঘটিত অসুখ, এবং জিনোটেকনোলজিতে এর চিকিৎসা নিয়ে রীতিমত গবেষণা হচ্ছে, অনেকদূর এগনোও গেছে এর ওপরে। সমকাম কোনও অপরাধ নয়, এই ব্যাপারটার সঙ্গে একেবারে একমত তারা, কিন্তু সমকামিতা "অসুখ' নয়, এই ব্যাপারটার সঙ্গে তারা একেবারেই একমত নয়।

    আমার জ্ঞান কম, তাই তক্কো করতে পারি নি, তারাও বেশি ভাটায় নি, বলল, ডিটেলসে বললে তুই কিছুই বুঝবি না, কিন্তু আমাদের রিসার্চের বিষয়ের মধ্যে এটাও আছে, মোদ্দা বক্তব্য এটাও একটা অসুখ, এবং নিয়ারলি কিওরেবল ডিজিজ।
  • abastab | 61.95.189.252 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১২:৩৩413649
  • অসুখ কারে কয়? আমার হাঁটুতে ব্যাথা এবং তজ্জনিত কারণে সুখের অভাব হইল উদাহরণ। কিন্তু কারু কোন জেনেটিক সিগনেচারে বেশির ভাগ লোকের সাথে পার্থক্য থাকলে কি তাকে অসুখ বলা যায়? যদি সেই জেনেটিক সিগনেচার পাল্টানো সম্ভব তাহলে কি তাকে অসুখ সারানো বলব? মাইকেল জ্যাকসন কি এরকম কোন অসুখ সারাতে কালো থেকে সাদা হয়েছিলেন?
  • siki | 123.242.248.130 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৩:০৬413650
  • নো আইডিয়া। যাহা শুনিলাম তাহাই উগরাইয়া দিলাম :(
  • bb | 125.16.17.151 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৪:০৪413651
  • ইকি এই ব্যাপারে আমার কোনো ধারানা নেই, কিন্তু আপ্নার লেখা থেকে বুজ্‌হ্‌লাম যে সমকামিতা অশুখ ও হোতে পারে।
    তাই অনয়ে্‌দর কে 'প্রগতশীল' বলে যার দাগছেন তাদের বলি আরো এঅক্তূ অপেক্ষা কারাই ভালো। এই ব্যাপারে শেশ কথা বলাল্র সময় এখনো বোধহয় হয়নি
  • saikat | 202.54.74.119 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৪:৩০413654
  • ফেভির সাথে ক।

    ডিজর্ডার বলা যায়। অধিকাংশ মানসিক অসুস্থতাকেও আজকাল ঐ ডিজর্ডারই বলা হয়।
  • de | 59.163.30.2 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৪:৩৮413655
  • এইরে একখুনি ভাটে গু-ন-আ র এই লিংটা দিয়ে এলাম --

    জিনগত বৈশিষ্ট্যকে কি অসুখ বলা যায়? খুব কনফিউসিং!
  • kallol | 220.226.209.2 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৪:৩৯413656
  • তাহলে ""অর্ডার"" কি?
    অধিকাংশে যা করে তাইই ""অর্ডার""?
  • saikat | 202.54.74.119 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৪:৫১413657
  • ইয়েস, অধিকাংশ যা করে তাকেই অর্ডার বলে কারণ ডিজর্ডারকে আমাদের বড় ভয়।
  • siki | 123.242.248.130 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:০১413658
  • জানি না। নেচারের ল-এর সাথে যা খাপ খায় না তাকেই ডিসঅর্ডার বলা হচ্ছে হয় তো। নেচারের নিয়ম পুরুষ নারীর প্রতি আকৃষ্ট হবে অ্যান্ড ভাইসি ভার্সা, কারণ তাতেই প্রজাতির অস্তিত্ব সুনিশ্চিত হয়, বিবর্তন সুনিশ্চিত হয়। বংশধারা সুনিশ্চিত হয়। সমকামিতা মানে নেচারের এই নিয়মের বিরুদ্ধে যাওয়া, জেনেবুঝে নয়, জিনগত বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণেই এই নিয়মের বিরুদ্ধে যাওয়া। সেই জন্যেই একে ডিসঅর্ডার নাম দেওয়া হচ্ছে। কিংবা অস্বাভাবিকতা। সঠিক টার্ম কী আমিও জানি না।

    বন্ধুকে কি বলব একটা গাব্দা প্রবন্ধ লিখে দিতে এই বিষয়ে? ও যা ব্যস্ত আমি জানি না কত মাসে দিতে পারবে। :)
  • Ishan | 122.248.183.1 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:০২413659
  • দ্যাখেন, সমকামিতাকে জেনেটিক্সের লোকজন "ডিফেক্ট' বলতেই পারেন। চাইলে চিকিৎসাবিজ্ঞান, বা বিবর্তনের চালু দৃষ্টিভঙ্গী থেকেও "ডিফেক্ট' বলা যায়ই। কারণ বিবর্তন ইত্যাদির ধারণার পুরোটাই গড়ে উঠেছে প্রজনন এবং তার নানা ভ্যারিয়ান্টের উপরে। সমকামিতা এই "প্রজনন' এর ধারণাটাকেই চ্যালেঞ্জ করে। তাই এটা "খুঁত' তো বটেই।

    (ইদানীং অবশ্য জেনেটিক্স এবং বিবর্তনেরও নানাপ্রকার থিয়োরি বেরোচ্ছে শুনতে পাই, যারা "প্রজনন-কেন্দ্রিক' বিবর্তনের ধারাটাকে চ্যালেঞ্জ করছে। কিন্তু সেগুলো এখনও "মূলধারা' বোধহয় হয়ে ওঠেনি। আর এই নিয়ে ডিটেল আমি বলতে পারবনা। কারণ বিশদে জানিনা।)

    তবে, এর পরে একখানা কোশ্নো থেকে যায়।

    যৌনতা কি শুধু প্রজননের কারণে? গরুর যৌনতা আর মানুষের যৌনতা কি এক? মনে হয় এক নয়, কারণ, গরুর যৌনতা মূলত প্রজনন কেন্দ্রিক, আর মানুষের যৌনতায় "প্লেজার' এর একটা বড়ো ভূমিকা আছে। সেটা সম্পূর্ণতই মানবিক নির্মান। সেটাকে বাদ দিয়ে স্রেফ প্রজনন-কেন্দ্রিক যৌনতার কল্পনা করা আজকের যুগে অকল্পনীয়।

    তো এই ব্যাপারগুলো ঠিক জেনেটিক নৈতিকতার আওতায় পড়েনা। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং একে ডিফেক্ট ধরেই খেলা করতে পারে। কিন্তু সুখ-বনাম-অসুখ বিতর্কে জেনেটিক্সের কোনো জায়গাই নেই।
  • Ishan | 122.248.183.1 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:০৪413660
  • আরেকটা ডি: দিয়ে দিই। গরুর যৌনতা নিয়ে আমি বিশেষ কিছু জানিনা। "গরু' টা এখানে জাস্ট প্লেস হোল্ডার। ওর জায়গায় সাপ -খোপ-মুর্গি যা খুশি পড়তে পারেন। :)
  • fevi | 77.57.175.253 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:১২413661
  • এতোটা জোর না দিয়ে বললে ভালো হত ইশান। 5-HTT নামে একটা জিন ঠিক এই কাজটাই করে।

    ....The gene, known as 5-HTT, is involved with the transport of serotonin, a feelgood chemical, in the brain. The longer variant leads to more efficient release and recycling of the neurotransmitter
  • Ishan | 122.248.183.1 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:১৬413662
  • জিন নিয়ে আমি কিসুই জানিনা। ফলে ভুল হতেই পারে।

    কিন্তু ইংরিজি প্যারাটা পড়ে কিছু বুঝলাম না। এই জিনটি কি করে?
  • abastab | 61.95.189.252 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:১৭413663
  • প্রজননের দিক থেকে দেখলে কি নিষ্কাম ব্রহ্মচর্য কেও অসুখ বলে ধরা হবে? সাধু সাবধান!
  • dd | 59.97.120.176 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:২৩413665
  • বোতোলের মধ্যে জিন থাকে। আমি জিন জানি। টনিক দিয়ে খেতে ভালো।

    আরো অনেক রকমের জিন থাকে, যথা ভুত পরী জিন। তাদের ও অনেকে বোতোলে থাকে।

    কিন্তু সমকামিতা = সেক্ষ এবং সেক্ষ= প্রজনন এরকম দুটো অদ্ভুত সমীকরনকে একসাথে মিলিয়ে দেবার প্রচেষ্টাতাও তো বিলকুল খোকামী।
  • siki | 123.242.248.130 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:২৪413666
  • এইটা প্রবীর ঘোষ লিখে গেছিল।

    ব্রহ্মচর্য হল, জেনেবুঝে জোর করে বিবর্তনের প্রজননতত্‌ত্বের বিরুদ্ধে যাওয়া, তাকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়া। যেহেতু তা প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে যাওয়া, জেনেবুঝে, সেহেতু ব্রহ্মচর্যে কোনও এক্সট্রা গ্ল্যামার নেই। জাস্ট অ্যানাদার ওয়ে অফ লাইফ।

    অটলবিহারী বাজপেয়ি থেকে মমতা ব্যানার্জি, সবাই প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে গেছেন :)
  • saikat | 202.54.74.119 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:৩৪413668
  • প্লেজারও ঠিক মানুষের নির্মাণ নয়, সেও প্রকৃতিরই নির্মাণ - ফেভির দেওয়া প্যারাটার বক্তব্য মনে হয় এটাই।
  • Ishan | 122.248.183.1 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৫:৫৪413669
  • হতেও পারে। সত্যিই কি আর গরুরা যৌনতায় কিছু একটা পায়না? "আনন্দ' না পাক কিছু একটা লিচ্চয়ই পায়। শব্দের অভাবে সেটাকে নাহয় "5-HTTLPR' পায়ই ধরলাম। :)

    কিন্তু তার পরেও, মানবিক অনুভূতিগুলি সবই জিনে আছে, এটা মনে হয়, অনেকটা "সবই ব্যাদে আছে'র মতো ব্যাপার। জিনে লিচ্চয়ই কিছু আছে, কিন্তু সেটা স্ট্রিক্টলি ডিটারমিনিস্টিক না হওয়াই উচিত। এই প্রসঙ্গে সেই সুবিখ্যাত জিনোম প্রজেক্টের কথা মনে পড়ে গেল। দশ না ক বছর আগে সে নিয়ে কি হৈচৈ। কি, না আর কদিন বাদেই মানব চৈতন্যের আর কোনো কথাই অজানা থাকবেনা। মুছে যাবে সব ধূসর এলাকা।

    কিন্তু কোথায় কি, আজ আর সেই প্রোজেক্টের নামও কই শুনিনা। সেসব এখন জেনেটিক রূপকথার পার্ট হয়ে গেছে। বা কল্পবিজ্ঞানের গপ্পো।
  • saikat | 202.54.74.119 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৬:০৭413670
  • "না হওয়াই উচিত" কেন? মানে "উচিত" ব্যবহার করে কবি কী বোঝাতে চাইলেন?
  • pi | 72.83.103.132 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৬:১৪413671
  • সমকামিতা 'ন্যাচারাল' নয়, তাই অসুখ বা ডিজর্ডার যারা মনে করেন ( আমার মতে ন্যাচারাল না হলেও মনে করা যায় না। ), তাদের জন্য :

    http://www.mukto-mona.com/Articles/avijit/shomokamita1.htm
  • fevi | 77.57.175.253 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৬:২৪413672
  • পড়েছি আগে। দারুণ লেখা।
  • pi | 72.83.103.132 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৬:৩৪413673
  • অনেক বড় লেখা। ছাপা গুরু তে কিছু অংশ সম্পাদিত হয়ে বেরিয়েছিল ও।
    সিকি ও বাকিদের পুরোটাই পড়তে রেকো করব। এই নিয়ে প্রায় যাবতীয় যা গবেষণা হয়েছে, খুব সহজভাবে বোঝানো আছে।
    তবে বিশেষ করে গে জিনের কথা যখন এলৈ, এই জায়গাটা একটু তুলে দি :

    "...গে জিনের খোঁজে

    ১৯৯৩ সালে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথের সমকামী বিজ্ঞানী ডিন হ্যামার এবং এঙ্গেলা প্যাতাউচির একটি যৌথ গবেষনাপত্র বিজ্ঞানের সম্ভ্রান্ত জার্নাল ‘সায়েন্স’-এ প্রকাশিত হয় [9]। ডিন হ্যামারের সেই গবেষণাপত্রে শুধু সমকামী ধারাই নয়, সেই সাথে সমকামিতার উৎস হিসেবে ক্রোমোজমের মধ্যকার জেনেটিক একটি মার্কারের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে প্রকাশিত হয়। এই ব্যাপারটিকে পরবর্তীতে কিছু পত্রপত্রিকা এবং মিডিয়া ‘গে জিন’ বলে প্রচার শুরু করে, এবং এর ফলশ্রুতিতে পক্ষে বিপক্ষে নানা ধরনের বিতর্ক শুরু হয়। এই গবেষণাপত্রটি তাই খুব সতর্কভাবে পর্যালোচনার দাবী রাখে।

    ডিন হ্যামেরের আলোচিত গবেষণাতেও আগের অন্যান্য গবেষকদের মতই পরিবারের মধ্যে সমকামী ধারা খোঁজার একটি চেষ্টা করা হয়েছে; এবং এ গবেষণা থেকেও সেই একই উপসংহার বেরিয়ে আসে – পরিবারে সমকামী ভাই থাকলে সমকামী ধারা তৈরি হবার প্রবণতা বেড়ে যায় । হ্যামার তার গবেষণা থেকে যে ফলাফল পেলেন তা হল – যদি এক ভাই সমকামী হয়, তাহলে ১৪ ভাগ সম্ভাবনা থাকে অন্য ভাইয়েরও সমকামী হবার, আর ভাই সমকামী না হলে সমকামী হবার সম্ভাবনা থাকে শতকরা মাত্র ২ ভাগ। কিন্তু হ্যামার এ পর্যন্ত গিয়েই থেমে গেলেন না। তিনি সমকামী পরিবারের দূরবর্তী আত্মীয় স্বজনদের পারিবারিক ধারাও বিশ্লেষণে আনলেন। আর এটা করতে গিয়েই বেরিয়ে এলো অজানা এক নতুন একটি দিক। তিনি দেখলেন, সমকামী ছেলের মামাদের মধ্যে শতকরা ৭ ভাগ এবং ফুতাতো ভাইদের মধ্যে শতকরা ৮ ভাগ সমকামী প্রবণতা সম্পন্ন পাওয়া ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বাবার দিকে অর্থাৎ চাচা কিংবা চাচাতো ভাইদের মধ্যে সেরকম কোন প্যাটার্ণ পাওয়া গেল না।

    চিত্র: সমকামী পরিবারের দূরবর্তী আত্মীয় স্বজনদের পারিবারিক ধারা বিশ্লেষণ করে ডিন হ্যামার দেখলেন, সমকামী ছেলের মামাদের মধ্যে শতকরা ৭ ভাগ এবং ফুফাতো ভাইদের মধ্যে শতকরা ৮ ভাগ সমকামী প্রবণতা সম্পন্ন পাওয়া ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। তিনি ধারণা করলেন সমকামী প্রবণতা মায়ের দিক থেকেই জেনেটিক ভাবে প্রবাহিত হয়। (ছবিতে ক্লিক করে বড় করে দেখুন)

    তাহলে এর ব্যাখ্যা কি? সমকামী প্রবণতা কি তাহলে মায়ের দিক থেকেই জেনেটিক ভাবে প্রবাহিত হয়? ডিন হ্যামারের গবেষণা সে দিকেই ইঙ্গিত করে। আমরা জানি একটি ছেলের দেহে দু ধরণের ক্রোমোজম থাকে। একটি হল Y যা সে বাবার কাছ থেকে সরাসরি পায়, আর অন্যটি X ক্রোমোজম -যা সে পায় মায়ের দিক থেকে। কাজেই জেনেটিক প্রবণতা মায়ের দিক থেকে পরবর্তী প্রজন্মে প্রবাহিত হবার অর্থ হচ্ছে X ক্রোমোজমে তার ছাপ থাকা। হ্যামার এবং তার গবেষক-দল জানালেন X ক্রোমোজমের একদম প্রান্তসীমার একটি এলাকা – যাকে Xq28 হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, এটাই সমকামী প্রবণতা তৈরির জন্য দায়ী। হ্যামার ৪০ জন সমকামী ভাতৃযুগলের উপর পরীক্ষা করে দেখলেন তাদের মধ্যে ৩৩ টি যুগলের মধ্যে এই Xq28 মার্কারের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। ৭ টিতে পাওয়া যায় নি (বিষমকামীদের ক্ষেত্রে এই মার্কারটি ইত:স্তত বিক্ষিপ্ত থাকে)। বলা হল যদিও নমুনাক্ষেত্র খুব একটা বড় ছিলো না, তদুপরি ৪০ জনের মধ্যে ৩৩ জনে মার্কার খুঁজে পাওয়াটা আসলেই ‘স্ট্যাটিস্টিকালি সিগনিফিকেন্ট’ । এইটাই হল ডিনহ্যামারের সমকামিতা নিয়ে মাইলফলক গবেষনার সারসংক্ষেপ। তার পরীক্ষায় পাওয়া এই Xq28 মার্কারটি ‘গে জিন’ হিসেবে ‘প্রচারের আলোয় উঠে আসে। আর অনেকেই ডিন হ্যামারের কাজকে এভাবে ব্যাখ্যা করে দিলেন যে, ‘ক্রোমোজমের Xq28 এলাকায় একটি জিন পাওয়া গেছে যা সমকামিতাকে ত্বরান্বিত করে’...
  • pi | 72.83.103.132 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৬:৩৫413674
  • 'কিন্তু ব্যাপারটি মোটেই এত সহজ সরল নয়। এই ফলাফল খুব নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণের দাবী রাখে। প্রথম কথা হল ৪০ টি যুগলের মধ্যে ৭ টি যুগলে এই Xq28 মার্কারটি পাওয়া যায়নি। সমকামিতার প্রবৃত্তি তৈরিতে যদি Xq28 মার্কার থাকা ‘অত্যাবশকীয় নিয়ামক’ হতো, তাহলে ৪০ টি যুগলের স্যাম্পলের সবগুলোতেই এটি পাওয়া যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সেটা হয়নি। যদি ৪০টি স্যাম্পলের মধ্যে মোটামুটি ২০টিতে পাওয়া যেত, আর বাকি ২০ টিতে না পাওয়া যেত, তবে আমরা বলতে পারতাম সমকামিতার প্রবৃত্তির সাথে এই মার্কারের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু সেটাও হয়নি। মার্কার পাওয়া গেছে চার-পঞ্চমাংশ ক্ষেত্রে। ৪০টি স্যাম্পলের মধ্যে ৩৩টিতে মার্কার পাওয়ার ক্ষেত্রটি নি:সন্দেহে ফলাফলের পারিসাংখ্যিক গুরুত্বকে তুলে ধরে। ডিন হ্যামার হিসাব করে দেখিয়েছেন শুধুমাত্র সম্ভাবনার নিরিখে হিসেব করলে এমনি এমনি (নির্বিচারে) এটা ঘটার সম্ভাবনা ২০০ ভাগের মধ্যে ১ ভাগেরও কম। সে হিসেবে জেনেটিক প্রভাব থাকার প্রবণতাটাকে অস্বীকার করা হয়তো যাচ্ছে না, কিন্তু এটা কখনৈ শেষ কথা বলার নিশ্চয়তাও দিয়ে দিচ্ছে না। মোটা দাগে বললে, যেহেতু যমজ ভাতৃযুগলের দুজনই সব সময় সমকামী ভাবাপন্ন হয় না, সেহেতু মার্কার থাকলেই সমকামী হবে – এটা হলফ করে বলা যাচ্ছে না। আবার উল্টো দিক থেকে দেখলে, কোন মার্কার না থাকা সঙ্কেÄও ৭ টি ভাতৃযুগলে সমকামী প্রভাব পাওয়া গেছে। তার মানে, মার্কারের সাথে কিংবা জিনের সাথে সমকামী প্রবৃত্তির সরাসরি সম্পর্ক শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যাচ্ছে না।

    আর তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই মার্কারের সাথে জেনেটিক একটা প্রভাব আছেই, তবুও সেটি একটিমাত্র জিনের সাথে কখনৈ নয়। ডিন হ্যামার নিজেই সে কথা বলেছেন এভাবে –

    ‘কোন একটি জিনকে (এ পরীক্ষায়) পৃথক করা যায়নি। পরীক্ষার মাধ্যমে যা করা হয়েছে তা হল -- ক্রোমোজমের একটি অংশ সনাক্ত করা, যে অংশটি দৈর্ঘ্যে চার মিলিয়ন বেস যুগলের সমান। এই অংশটি সমগ্র মানব জিনোমের শতকরা ০.২ ভাগেরও ছোট, কিন্তু তারপরেও এই অংশটিতে অবলীলায় কয়েকশত জিন এঁটে যেতে পারে। এই এলাকায় নিয়ামক জিনটি খুঁজে বের করা অনেকটা খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজার মতই। সূঁচ পেতে হলে হয় আমাদের হয় আরো অনেক বেশী পরিবার দরকার হবে, অথবা সম্ভ্যাব্য সকল এলাকার ডি.এন.এ-র অনুক্রমের সম্পূর্ণ তথ্য জানা চাই’

    হ্যামার নিজে ১৯৯৫ সালে পরীক্ষাটি পুনর্বার পরিচালনা করেন হু, পাত্তাউচি এবং অন্যান্যদের সাথে মিলে। এই পরীক্ষাটি সম্পন্ন হয় ৩২ টি স্যাম্পল নিয়ে, এবং এর মধ্যে ২২ টি ক্ষেত্রে তিনি আগের পরীক্ষার মতই Xq28 মার্কার খুঁজে পেলেন । অর্থাৎ, শতকরা প্রায় ৬৮ ভাগ ক্ষেত্রে তিনি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারলেন যে, মার্কারের সাথে সমকামিতার একটা প্রচ্ছন্ন সম্পর্ক আছে। এ ছাড়া স্যান্ডার এবং প্রমুখের ১৯৯৮ সালের গবেষনায়ও ৫৪টি স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করা হয়, এবং এর মধ্যে শতকরা ৬৬ ভাগ ক্ষেত্রে সমকামিতার সাথে Xq28 মার্কারের সম্পর্ক পাওয়া যায় ।

    ১৯৯৯ সালে ক্যানাডায় জর্জ রাইসের নেতৃত্বে গবেষকের একটি দল ডিন হ্যামারের পরীক্ষাটিই করার চেষ্টা করলেন নমুনা ক্ষেত্র আরো বাড়িয়ে দিয়ে। এই পরীক্ষায় সমকামী ভাতৃযুগল সংগ্রহ করার জন্য কানাডার গে ম্যাগাজিন Xtraতে বিশাল বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, শেষ পর্যন্ত ৪৬ টি যুগল নিয়ে কাজ শুরু করা হয়। এই যুগলগুলো নির্বাচিত হয় ‘সমকামী সাক্ষাৎকারগ্রহণকারী’ (gayinterviewer) দের মাধ্যমে।
    এই পরীক্ষায় ৪৬ টি যুগলের মধ্যে মাত্র ২০টি যুগলে মার্কার পাওয়া গেল , পারিসাংখ্যিক হিসেবে যা অর্ধেকেরও কম। যদি সমকামিতার সাথে মার্কারের নিশ্চিত সম্পর্ক থাকতো তবে ৪৬টির মধ্যে ৪৬টিতেই মার্কার পাওয়া যেত। তা তো হয়ইনি, বরং যদি হ্যামারের মত ‘স্ট্যাটিস্টিকালি সিগনিফিকেন্ট’ ৬৮% ফলাফলেরও পুনরাবৃত্তির কথা বিবেচনা করি, তবে মার্কার পাওয়া যাওয়ার কথা ছিলো অন্তত ৩২ টি। যদি এলোপাথাড়ি ভাবে ঘটা সম্ভাবনার হার শতকরা পঞ্চাশভাগের কথাও চিন্তা করি, তাহলেও মার্কারের সংখ্যা আসা উচিৎ ছিলো ২৩টি। কিন্তু ২০টি মাত্র মার্কার পাওয়াকে কোনভাবেই কোন ধরণের সম্পর্কে ফেলা যায় না। কাজেই অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন এই পরীক্ষাটি Xq28 মার্কারের সাথে ‘গে জিন’ পাওয়ার আগের দাবীগুলোকে ভুল প্রমাণ করে দেয় । ক্যানাডিয়ান গবেষকেরা তার ফলাফল সম্বন্ধে উপসংহার টেনে বলেন,

    আমাদের ফলাফল হ্যামারের মূল পরীক্ষার ফলের সাথে এত পাথ্‌ক্‌য় কেন তৈরি করলো তা পরিস্কার নয়। … সে যাই হোক, আমাদের এই পরীক্ষার উপাত্ত যৌনপ্রবৃত্তির উপর Xq28 এলাকায় অবস্থিত একটি জিনের প্রভাব থাকার দাবীকে সমর্থন করে না। … (যদিও) এই ফলাফল জিনোমের অন্য কোন জায়গায় সমকামিতার উপর জিনের প্রভাবকে বাতিল করে দেয় না।

    এই ‘গে জিন’ পাওয়ার সাম্প্রতিক এই পরীক্ষাগত ব্যর্থতা অবশ্যই একটি ময়নাতদন্ত দাবী করে। সারা মিডিয়া জুড়ে ‘গে জিন’ নিয়ে এত হৈ চৈ হল, অথচ দুইটি বড় পরীক্ষায় দুই রকম ফলাফল বেরিয়ে এলো কেন? তবে কি হ্যামার পরীক্ষায় কোন বড় ভুল করেছিলেন, কিংবা ভাল ফলাফল পেতে ডেটা পরিবর্তন করেছিলেন? নাকি ক্যানাডিয়ান গবেষকেরা সমকামী যুগল নির্বাচনের সময় সনাক্তকরণে ভুল করেছিলেন? এই শেষ বিচারের ফয়সলা এখনো হয়নি। হ্যামার অবশ্য ক্যানাডিয়ীয় গবেষকদের ফলাফল প্রত্যাখান করেছেন এই বলে –

    ‘তারা (ক্যানাডীয় গবেষকেরা) প্রথমেই ধরে নিয়েছিলেন গে জিন বলে কিছু নেই, এবং তাদের পরীক্ষা ছিলো পক্ষপাত দুষ্ট, কারণ পরীক্ষকের একজন প্রথম থেকেই ‘গে জিন বলে কিছু নেই’ -- সেটা প্রমাণেই ত্‌ৎপর ছিলেন। তাদের সেই (সমকামবিদ্বেষী) মনোভাবেরই প্রতিফলন ঘটেছে তাদের পরীক্ষায়’

    তবে হ্যামার যাই বলুক না কেন গে-জিন নিয়ে পরীক্ষার ফলাফল একটা বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে আছে সাধারণ মানুষ এবং নিরপেক্ষ গবেষকদের কাছে। তাদের কাছে বিষয়টি এখনো ‘অমীমাংসিত মামলা’ই।
    তবে ‘অমীমাংসিত’ বলে ব্যাপারটিকে এড়িয়ে যাবার উপায় নেই। এ সংক্রান্ত গবেষণা কিন্তু থেমে নেই। জিনের পথ ধরে সমাধানের পথ খুঁজতে এবারে এগিয়ে এসেছে এপিজেনেটিক্স । এই এপিজেনেটিক্স উপরের সমস্যার একটা আকর্ষণীয় সমাধান হাজির করছে, যা ক্রমশ: বিজ্ঞানীদের কাছে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। তারা দেখেছেন, জিন কেবল একা একা কাজ করতে পারে না, কাজ করে পরিবেশ থেকে পাওয়া সংকেতের মিথস্ক্রিয়ায়। বৈদ্যুতিক বাতির সুইচের যেমন টার্ণ অন বা অফ করা যায়, ঠিক তেমনি পরিবেশ থেকে পাওয়া সংকেতের প্রভাবে জিনের সক্রিয়করণ (activation) বা নিষ্ক্রিয়করণ (deactivation) ঘটে । বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন মিথাইলেশন। দেখা গেছে আমাদের চারপাশের বহু কিছুই -পরিবেশ, খাদ্যাভাস, পানীয় বা ধূমপানে আসক্তি, মানসিক পীড়নসহ বহুকিছুতেই এই প্রক্রিয়াটি প্রভাবিত হয়। এই মিথাইলেশন হয় বলেই সদৃশ যমজ ভাতৃযুগলে জেনেটিক কোডে শতভাগ মিল থাকলেও তাদের আচরণে, মন মানসিকতায় কিংবা কাজকর্মে বিস্তর পার্থক্য থাকে অনেক সময়ই। মিথাইলেশনের প্রভাবে জেনেটিক কোডের একাংশ বা একাধিক অংশ টার্ণ অফ হয়ে যেতে পারে। কাজেই একই জেনেটিক কোড থাকা সঙ্কেÄও জেনেটিক সুইচের টার্ণ অন বা অফের কারণে একভাই বিষমকামী, আরেকভাই হয়ত সমকামী ভাবাপন্ন হয়ে উঠতে পারে। এ শুধু তঙ্কÄ কথা নয়, এই ধারণার স্বপক্ষে কিছুটা প্রমাণ পাওয়া গেছে সভেন বকল্যান্ডের গবেষণায়। তিনি যমজ ভাইয়ের ঠিক কোন জায়গায় জিন টার্ণ অন বা অফের কারণে প্রবৃত্তির পরিবর্তন ঘটে তার হদিস এখনো না পেলেও সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে দেখিয়েছেন, সমকামী ছেলের জন্ম দেয়া মায়ের এক্স ক্রোমোজমের সক্রিয়তা অন্য মায়েদের চেয়ে ভিন্ন হয়।

    কিন্তু কিভাবে একটি জিন পরিবেশের প্রভাবে সক্রিয় বা অক্রিয় হয়ে যায়? একটি ভাল উদাহরণ হতে পারে স্ট্রেস হরমোন করটিসোল। ইঁদুর নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, কর্টিসোল স্থায়ীভাবে জিনের একাংশকে নিষ্ক্রিয় (turnoff) করে দিতে পারে, এবং এর ফলে ইঁদুরের স্বভাবে পরিবর্তন ঘটে। মানুষের ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানীরা একই রকম ফলাফল লক্ষ্য করেছেন। তারা দেখেছেন, মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে মানবদেহে এই হরমোনের আধিক্য বৃদ্ধি পায়। চাপময় পরিবেশে বেশি দিন কাটালে দেহের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যায় – ফলে দেহ সহজেই সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হয় সে সময়। কিন্তু ‘ধান ভানতে শীবের গীতের মত’ এই কর্টিসোল নিয়ে পড়ে যাওয়া হল কেন? এই স্ট্রেস হরমোনের সাথে সমকামিতার কি কোন সরাসরি সম্পর্ক আছে? বিজ্ঞানীরা বলেন, থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। জার্মান ডাক্তার গান্টার ডর্নারের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চাপময় পরিবেশে যে সমস্ত মা গর্ভবতী হয়েছিলেন, তাদের সন্তানদের একটা বড় অংশ নাকি সমকামী হিসেবে গড়ে উঠেছিলো ইতিহাসের অন্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি । এমনকি ইঁদুর নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েও বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, যে সমস্ত ইঁদুরেরা গর্ভের সময় চাপময় পরিবেশে দিন কাটায়, তাদের সন্তানের মধ্যে পরবর্তীতে সমকামিতার আধিক্য তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। অনেক সময় আবার বিভিন্ন এলার্জিক প্রতিক্রিয়ায় দেহে টেস্টোসটেরোন হরমোনের (পুরুষ হরমোন) প্রতি সংবেদনশীলতা কমে যায়। যে সমস্ত মায়েরা সারা জীবনে অধিক সংখ্যক সন্তানের জন্ম দেয়, তাদের ক্ষেত্রে শেষের দিককার সন্তানদের জন্মের সময় এ ধরণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে বলে জানা গেছে। রে ব্ল্যানচার্ডের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কোন পরিবারে বড় ভাই থাকলে তার পরের ভাইদের সমকামী যৌনপ্রবৃত্তি তৈরী করার সম্ভাবনাকে শতকরা ২৮ থেকে ৪৮ ভাগ বাড়িয়ে দেয় । অর্থাৎ, একটি পরিবারে বড় ভাইদের সংখ্যা যত বেশী হবে, তত বেশি হবে পরবর্তী সন্তানের সমকামী হবার সম্ভাবনা (একে জনপ্রিয়ভাবে ‘ওল্ডার ব্রাদার ইফেক্ট’ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়)। কারণ দেখা গেছে, যত বেশি সন্তানের জন্ম হয়, তত বেশি মায়ের টেস্টোসটেরোন হরমোনের প্রতি এলার্জিক প্রতিক্রিয়াও বাড়তে থাকে। হরমোন নিয়ে এই সাম্প্রতিক পরীক্ষাগুলো গুরুত্বপূর্ণ হলেও কোন কিছুই আসলে নিশ্চিত নয়। বহু মহিলাই আসলে বিভিন্ন সময়ে চাপযুক্ত পরিবেশে সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন, কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের সবার সন্তান বড় হয়ে সমকামী হয়। আমার নিজের জন্মও হয়েছিলো একাত্তরের দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে,আমার বাবা যখন দেশের সীমান্তে ছিলেন যুদ্ধরত। এমন পরিস্থিতিতে জন্ম নিয়েও কিন্তু আমি সমকামী হিসেবে বেড়ে উঠিনি। কিংবা আমার জন্মের কারণে কোন ‘ওল্ডার ব্রাদার ইফেক্ট’ আমার ছোট ভাইয়ের উপরও পড়েনি । এমন উদাহরণ চারপাশে অজস্রই আছে। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় সমকামী সন্তানের জন্মদেয়া মায়েদের নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাদের প্রশ্ন করা হয়েছে যে, বিষমকামী সন্তানের জন্ম দেয়ার তুলনায় সমকামী সন্তানের জন্ম দেয়ার সময়টিতে কি তারা অধিক চাপযুক্ত পরিস্থিতিতে ছিলেন কিনা। তাদের মতামত থেকে এমন কোন আলামত পাওয়া যায়নি যে,সমকামী সন্তানের জন্মের সময় কোন চাপময় পরিস্থিতি তারা অতিবাহিত করেছিলেন ।অকাজেই মায়ের মানসিক চাপের সাথে সন্তানের সমকামিতার কোন প্রত্যক্ষ যোগসূত্র আসলে প্রতিষ্ঠিতই হয়নি। এ ছাড়া, গান্টার ডর্নারের মূল পরীক্ষার ‘উদ্দেশ্য’ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন মহলে। গান্টার তার গবেষণাপত্রে সমকামিতাকে ‘মানসিক প্রতিবন্ধিত্ব’ (psychicdisability) হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘অদূরভবিষ্যতে সমকামিতার বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে’।অতার এই মনোভাব নিয়ে বৈজ্ঞানিক মহলেই তুমুল প্রতিবাদ হয়েছে, তার সমকামিতার প্রতি বিদ্বেষমূলক মনমানসিকতাকে ইতিহাসের কলঙ্কজনক ইউজিনিক্সের (eugenics) সাথেও তুলনা করা হয়েছে [10]......"
  • Ishan | 122.248.183.1 | ০৫ জুলাই ২০১১ ১৬:৩৮413676
  • আসলে ঐটা ব্যক্তিগত অবস্থান। কোনো কিছু দ্বারা সমর্থিত নয়। তাই "উচিত' লিখলাম। :)
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন