কিভ নগরীর উত্তর পশ্চিমে একটি শহরতলির নাম ইরপিন । সেখান থেকে আর পাঁচ কিলোমিটার গেলেই বুচা । আমরা জানি ইউক্রেন যুদ্ধের প্রথম দিকে এই অঞ্চলে রাশিয়ান সৈন্যরা নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপরে অকথ্য অত্যাচার, বলাৎকার এবং লুণ্ঠন চালিয়েছে । বুচার রাজপথ ভরে গেছে শবে। মহামান্য লাভরভ বলেছেন ইউক্রেনের মানুষ নিজেদের লোককে মেরে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে । আমাদের সৈন্য ভদ্র শিক্ষিত মার্জিত। রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে এ আরেকটি পশ্চিমি চক্রান্ত।রাশিয়ানরা এই রণক্ষেত্র ত্যাগ করে আজ অনেকটা পুব দিকে চলে গেছে। রেখে গেছে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরবর্তী কালে ইউরোপের মাঝে অনুষ্ঠিত ক্রুরতম ধ্বংস ও হত্যালীলার ইতিহাস। ... ...
বামপন্থী কে? এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে কি বামপন্থী বলা যায়? এই নিয়ে তর্ক হচ্ছিল আমার এক পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে। সেই আলোচনার সুত্রে উঠে আসা কিছু ভাবনা একত্র করে লিখে ফেললাম। বলাই বাহুল্য, এই সব প্রশ্নের কোন নিশ্চিত উত্তর নেই। কিন্তু এই ধরণের প্রশ্ন নিয়ে কীভাবে ভাবা যায় তার একটি দিকনির্দেশ আছে। ভাবনা চলতে থাকুক। চরৈবতি! ... ...
কবিতা কৃষ্ণন নাকি টুইটে লিখেছেন, "সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ছিল একনায়কতান্ত্রিক, সংসদীয় গণতন্ত্রের চেয়ে ঢের খারাপ"। আমি টুইটার দেখিনা। হিন্দু তে দেখলাম ( **লিংক লেখার নিচে) । টুইটারের আড়াই লাইনে এইসব তত্ত্ব লেখার কী মানে জানিনা, অবশ্য গোটা পৃথিবীতেই রাজনীতি এখন রেটোরিক সর্বস্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব কিছু দেখিওনা, উত্তরও দিইনা। কিন্তু এইটা কবিতা কৃষ্ণন বলেই লিখতে হচ্ছে, কারণ, "প্রগতিশীল"রা একরকম করে আদর্শ পতাকাবাহক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই কবিতাকে উপস্থাপন করছেন। ফলে তাঁর বক্তব্যের কিছু ওজন আছে। এবং এটা ঠিক প্রেক্ষিতহীনভাবে একটা টুইট তুলে আনা নয়। হিন্দুতে দেখলাম, একই লাইনে কিছু কথাও বলেছেন। যেমন সোভিয়েত মডেলকে বিশ্বের খারাপতম একনায়কতান্ত্রিক মডেল হিসেবে দেখতে হবে। ... ...
এবার রাশিয়ান আক্রমণ প্রকট হলো দূর হতে নিক্ষিপ্ত রকেটের রূপে । তার কতগুলো ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থানে আঘাত হেনেছে তা সঠিক জানা যায় নি । তবে নিরাপদ আস্তানায় বসে ছোঁড়া রাশিয়ান অনেক রকেট বাহী বোমা দেখা দিয়েছে অসামরিক মানুষের ঘরবাড়ির জানলায়, দরোজায়, হাসপাতালে, গোশালায় । প্রতিদিন, প্রতি রাতে সশব্দে সেই সব রকেট নাগরিকের প্রাণ ও শিশুর নিদ্রা হরণ করেছে। যুদ্ধের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কবিহীন কোনো প্রকারের সামরিক গুরুত্ব হতে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন সাধারণ নাগরিকের জীবন এবং জানলা চুরমার দ্বারা সামগ্রিক গণভীতি উৎপাদনে সক্ষম মহামতি পুতিন দেশছাড়া করেছেন বহু মানুষকে। অন্য কোন উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে কিনা সেটা তিনিই জানেন। অধিকন্তু ন দোষায় বিধে রাশিয়ান করদাতার অর্থে কেনা অজস্র লক্ষ্যভ্রষ্ট রকেট আছড়ে পড়েছে যেখানে সেখানে, গোয়ালে, স্কুলের মাঠে , হাইওয়েতে, বনে বাদাড়ে । ... ...
আজকের নিউজ চ্যানেল ঘাটলেই ইরাকের সংঘর্ষের ব্যাপারটা নজরে আসবে। খবরগুলোতে যা বলা হচ্ছে তার সারমর্ম হচ্ছে, প্রভাবশালী শিয়া ক্লেরিক মুকতাদা আল সাদরের রাজনীতি থেকে পদত্যাগের পর তার সমর্থকরা বাগদাদের গ্রিন জোনে, মানে যেখানে প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস, পার্লামেন্ট, ডিপ্লোমেটিক ভবন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন আছে সেখানে ঢুকে পড়েছে। বাগদাদ ছাড়াও কারবালা, বসরা সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ চলছে। পুলিস বরাবরের মতই বিক্ষোভ থামাতে ব্যস্ত। ন্যাশনওয়াইড কারফিউ জারি করা হয়েছে। শেষ জানা খবরে ২৩ জন আন্দোলনকারী মারা গেছে। আন্দোলনকারীরা বলছে পার্লামেন্টের ডিজোল্যুশন চান, এই পার্লামেন্ট করাপ্টেড। যাই হোক, আসল পরিস্থিতি কী, কেন এই আন্দোলন, দেশটিতে কী সংকট চলছে তা জানতে একটু পিছিয়ে আপাতত ২০২১ সালের অক্টোবরের ইলেকশনে যেতে হবে। আর তারও কারণ খুঁজলে যেতে হবে সেই ইউএস ইনভ্যাশনে... ... ...
মুসলমান বা অন্য কোনো সম্প্রদায়গত পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতি দিয়ে হিন্দুত্ববাদকে পরাস্ত করা যাবে না। কেননা পরিচয়বাদী রাজনীতি একটা আরেকটাকে শক্তিশালী করে। হিন্দুত্ববাদকে পরাস্ত করতে পারে স্রেফ গণতান্ত্রিক রাজনীতি। ... ...
বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি খুব স্পষ্ট করে দেখিয়ে দেয়, যে, ধর্ষকরা পরিষ্কারভাবেই দুই গোত্রের। এক দল নির্ভয়াকান্ডের ধর্ষক, বা হায়দ্রাবাদ কান্ডের অভিযুক্ত, যারা নিন্দিত, ধিকৃত, দেশজুড়ে ঘৃণার পাত্র। জেলের কয়েদিরাও তাদের পিটিয়ে দেয়, পুলিশ পারলে এনকাউন্টার করে দেয়। পাবলিক রাস্তায় নামে, পারলে থুথু দেয়, এবং দেশজোড়া উল্লাসের মধ্যে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়, খুব এবং ধর্ষণে অভিযুক্তদের। আর আরেকটা গোত্র হল কাঠুয়াকান্ড বা বিলকিস বানোর ধর্ষকরা। তাদের সমর্থনে মিছিল হয়, পারলে বেকসুর খালাসই করে দেওয়া হত। কোনোক্রমে কারাগার অবধি পৌঁছলে সেখান থেকে কায়দা-কানুন করে ফিরিয়ে আনা হয় এবং ফিরলে ফুলমালা দিয়ে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। ... ...
স্বাধীনতা উৎসবে দেখলাম অনেক তরুণ উজ্জ্বল মুখ । তারা বাড়ির কাছে না হলেও স্থানীয় স্কুলে জায়গা পেয়েছে। গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হলে পুরো দমে লেখা পড়া শুরু হবে, ইংরেজি শেখানোর স্পেশাল ব্যবস্থা সহ। ইতিমধ্যে কোন কোন স্কুল বা পৌর সভা তাদের নানান ক্যাম্পে নিয়ে গেছে – সমুদ্রের ধারে অথবা বনের ভেতরে সেখানে তারা এ দেশের ছেলে মেয়েদের সঙ্গে মেলা মেশা করার সুযোগ পায় বাধ্য হয় ইংরেজিতে বাক্যালাপ করতে । তারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। মায়েরা সংসারের । এই কলরব মুখরিত হলঘরে , ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসের উৎসবে অনুপস্থিত পুরুষেরা । স্বামী বাবা ভাই কাকা ইউক্রেনের কোথাও অস্ত্র হাতে বনে বাদাড়ে শত্রুর মুখোমুখি হয়েছেন , কেউ ট্যাঙ্ক বা সাঁজোয়া গাড়ি চালাচ্ছেন। নিয়মিত খবর জোটে না। ... ...
প্রশ্ন তুলেছেন মহামতি পুতিন। তাঁর এক সাম্প্রতিক ভাষণে তিনি বলেছেন: জার মহান পিটার যখন উত্তরের যুদ্ধে জয়ী হলেন, তিনি এমন কিছুর অধিকার নেন নি যা অন্যায্য ছিল । সেন্ট পিটারসবুরগ প্রতিষ্ঠার পরে বহু ইউরোপীয় শক্তি মনে করেছিল পিটার সুইডেনের অংশ দখল করেছেন । সেটি অসত্য । এই অঞ্চলে বহু বছর যাবত স্লাভিক মানুষ বসবাস করেছেন। এখন যদি প্রশ্ন ওঠে কেন মহান পিটার নারভা অভিযান করেন ? এর উত্তর সহজ। তিনি তারই দখল নিয়েছেন যা স্লাভিক যা একান্তই রাশিয়ার নিজভূমি ... ...
আজ যখন ১৩৭ বছরের প্রাচীন এই দলটির পুনর্জাগরণের কথা বলা হয় তখন নেতৃত্বের পরিবর্তনের কথা অথবা পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলা হয় বড় জোর। কিন্তু দলীয় নীতি বা মতাদর্শের কথা বলা হয় না। কংগ্রেসে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষ ছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রচুর বিতর্ক ছিল, কিন্তু তাই বলে কংগ্রেসের কোনো মতাদর্শ ছিল না একথা ভাবা ভুল। কংগ্রেসকেও তার উত্তরাধিকারকে আবিষ্কার করতে হবে, মানুষকে ভরসা জোগানোর জন্য। এই উত্তরাধিকার মানে পারিবারিক কোনো অনুষঙ্গ নয়, মতাদর্শের উত্তরাধিকার। ... ...
রাশিয়ানরা সম্প্রতি উত্তরের নরডস্ট্রিম পাইপ লাইনের কল বন্ধ রেখেছিলেন কি সব যন্ত্রপাতি সারাবেন বলে । দিন দশেক বাদে কল খুলেছেন কিন্তু গ্যাস আসছে খুব কম । মহামতি পুতিন জানেন ইউরোপের বাতি, ইউরোপের ঘরের গরম জল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। খেলা এই তো সবে শুরু। এখন এই গ্রীষ্মকালে সূর্যদেব উষ্ণতা বিতরণ করে যাচ্ছেন । তবে মাঘ মাস খুব দূরে নেই। মিত্র দেশ জার্মানির অবস্থা সবচেয়ে জটিল – রাশিয়ান গ্যাসের অভাবে তাদের কল কারখানা অবধি বন্ধ হতে পারে । এস্টোনিয়া থেকে রোমানিয়া অবধি যখন পারা শূন্যের অনেক নিচে নেমে যাবে তখন মহামতি পুতিন তাদেরও সিধে করে দেবেন । ইউক্রেন নিয়ে আর বাঁদরামি করো না । ... ...
অমিতাভ গুপ্ত একটা অসম্ভব ভালো লেখা লিখেছে রোব্বারের আনন্দবাজারে। য্দিও লেখাটার প্রতিপাদ্যের সঙ্গে আমি একমত নই, তার পরেও, বৈদ্যুতিন এবং সামাজিক মাধ্যম জুড়ে অজস্র চর্বিতচর্বণের মধ্যে, এ ধরণের বৌদ্ধিক লেখা পড়লে মগজের আরাম হয়। লেখাটা লম্বা, তবে তার যৌক্তিক মোটামুটি এইরকমঃ ১। ফেসবুক, বা সামগ্রিকভাবে সামাজিক মাধ্যমে অতি-দক্ষিণপন্থী দৃশ্য-শ্রাব্য-পাঠ্য বস্তুর সংখ্যা বাম-অতিবাম-মধ্য এদের যোগফলের চেয়েও বেশি। ২। এর একটা কারণ হল সামাজিক মাধ্যমের অ্যালগরিদম অতি-দ্ক্ষিণপন্থীদের সহায়তা করে বেশি (কেন, লেখক ব্যাখ্যা করেননি)। ৩। এর আরও একটা সম্ভাব্য কারণ আছে। একটা স্টাডিতে দেখা গেছে অতি-দক্ষিণপন্থায় বিশ্বাসীদের বৌদ্ধাঙ্ক, অর্থাৎ আইকিউ তুলনামূলকভাবে কম। সোজা বাংলায় বললে বোকাদের অতিদক্ষিণপন্থার দিকে টেনে আনা সোজা। কারণ, বুদ্ধি কম মানে পড়াশুনো কম, বহির্জগতে বীক্ষণ কম, চিন্তাভাবনার ক্ষমতা কম। ... ...
বুচা শহরের ভিক্টোরিয়া বললেন ছেলে মেয়েকে নিয়ে দু দিনের জন্যে হলেও ট্রেনে করে পোল্যান্ড যাবেন । ইংরেজ আশ্রয়দাতা বহন করবেন টিকিটের ব্যয় । তাঁর স্বামী ইয়ারোস্লাভ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ছুটি নিয়ে পশ্চিম সীমান্তের লভিভে এসে স্ত্রী পুত্র কন্যার সঙ্গে দেখা করে যাবেন । সেই সংক্ষিপ্ত মিলন ও বিরহের দৃশ্যটি মনে করতে চাই না । শুধুমাত্র চোখের দেখা দেখে পিতা ,স্বামী ফিরে যাবেন রণাঙ্গনে। ইয়ারোস্লাভ বিদ্যালয়ে ভূগোল পড়াতেন । কখনো বন্দুক হাতে ধরেন নি । অতি অল্প বয়েসে দেখা চন্দ্রধর শর্মা গুলেরির হিন্দি গল্পের ওপর আধারিত মণি ভট্টাচার্যের উসনে কহা থা ছবিটির কথা মাথার মধ্যে ঘুরে চলেছে সারাদিন । মনে পড়ে রেলওয়ে স্টেশনের সেই দৃশ্য- স্ত্রী পুত্র কন্যাকে প্লাটফরমে একবার দেখেই ফ্রন্টের ট্রেনে উঠছেন সৈন্যেরা। পটভূমিকায় বাজে মান্না দের কণ্ঠে সেই অমর গান – জানেওয়ালে সিপাহি সে পুছো , ওহ কহাঁ যা রহা হ্যায় । ... ...
ইউক্রেন যুদ্ধের পরে কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলি অবরোধ করে মহামতি পুতিন কেবল ইউরোপ নয়, গোটা আফ্রিকায় ফসল পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ওডেসা বন্ধ হলেও ট্রেন বা ট্রাক যোগে ইউক্রেন তার খানিকটা শস্য ইউরোপে পাঠাতে পারে। আমার শ্বশুরবাড়ির দেশ সেই পথেই গম কিনছে। কিন্তু মিশর নাইজেরিয়া লিবিয়া আলজেরিয়া কেনিয়া সহ আফ্রিকার আরও অনেক দেশ গভীর খাদ্য সঙ্কটে নিমজ্জিত হতে চলেছিল। গতকাল ইস্তানবুলে তুর্কী রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান এবং রাষ্ট্রসংঘের প্রধান গুতিয়েরেথের উপস্থিতিতে দুই যুযুধান পক্ষের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হল : কৃষ্ণ সাগরের বন্দর থেকে রাশিয়া তার অবরোধ তুলে নেবে আফ্রিকার খাদ্য সঙ্কট এড়ানো গেলো , আপাতত। ... ...
কেন্দ্রীয় সরকারের ধারাবাহিক কণ্ঠরোধের নানান আগ্রাসী প্রয়াস ... ...
ইউরোপের বাগী দেশগুলোকে টাইট দেবার বাসনায় পুতিন খুড়ো গ্যাসের কল খোলা বন্ধ করার খেলাটা খেলে যাচ্ছেন মাস চারেক ধরে। এবার পুরো দশ দিনের জন্য নরডস্ট্রিম পাইপলাইনে কুলুপ লাগালেন - মেরামতির কাজ চলবে বলে । ইতিমধ্যে বুলগারিয়া পোল্যান্ড সহ তিন বালটিক দেশ বলেছে চাই নে তোমার গ্যাস। জ্যাঠার দোকানে যাবো। কিন্তু কিছু দেশ হামলে পড়ে আছে। তাদের গাড়ি সারানো থেকে বানানো জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সব কাজে খুড়োর গ্যাস লাগে , নইলে দ্যাশ প্রায় অচল । ইউক্রেনে খুড়ো বিশেষ সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে বলে গ্যাস কিনব না ? এই সব অর্থনীতির আকার এতো বড়ো যে তারা হাঁচলে বাকি ইউরোপের সর্দি লাগার আশঙ্কা । অন্যদিকে গণতন্ত্র , ইউরোপিয়ান ভ্রাতৃত্ব বোধ ইত্যাদি যুক্তির ঠেলায় কতটা কম রাশিয়ান গ্যাসে জীবন যাত্রা নির্বাহ করা যায় তার কসরত শুরু হয়েছে জার্মানিতে। ভু রাজনীতিক ভাবনা বিজ্ঞ জন ভাববেন – আপাতত আম জনতা কি করতে পারে? ... ...
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে চার্চিল ও রুজেভেলটের আশিস মাথায় নিয়ে মহামতি স্টালিন যখন নিজের ইচ্ছেমত ইউরোপিয়ান মানচিত্রে রক্ত বর্ণ সংযোগ করছিলেন তাঁর চোখ পড়ল এই ছোটো দেশটির ওপরে । ওয়াইন ছাড়া তার আর কোন ধন সম্পদ নেই । দুর্জনে বলে তিনি রোমানিয়াকে সোভিয়েত সাম্রাজ্যের অন্তর্গত করতে চেয়েছিলেন । শেষ অবধি মস্কো থেকে কল কাঠি নেড়ে রোমানিয়াকে কুক্ষিগত করেই খুশি রইলেন । বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড় এই প্রবাদ বাক্যটির সত্যতা প্রমাণ করার জন্যেই হয়তো আরেক জুতো সেলাইয়ের মিস্ত্রি রোমানিয়াতে আবির্ভূত হলেন সে দেশকে সঠিক পথে চালনা করতে । জর্জিয়ান চর্ম শিল্পীর পুত্রের আত্মা চাউচেসকুকে দেখে নিশ্চয় সন্তুষ্ট হয়েছিলেন। ... ...
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সব কিছুরই টানাটানি । রুটি , কয়লা র্যাশনে পাওয়া যেতো , চকোলেটের র্যাশন ছিল ১৯৫৮ অবধি। বাড়ির বাথরুম অজানা বস্তু। মাঝে মধ্যে সার্বজনীন স্নানঘরে পয়সা দিয়ে গা ধোয়ার ব্যবস্থা। সেন্ট্রাল হিটিং অনেক দূরে তখন। যুদ্ধে ভাঙ্গা বহু বাড়ির মেরামত হয় নি। যুদ্ধ থেকে যারা ফেরেন নি ব্রিটিশ সরকার তাঁদের পরিবারকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছেন । লন্ডন অনেক দূরের শহর । জর্জ এবং জেনি অ্যাডামস নিঃশব্দে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের দিকে । না, কোন ইউনিসেফ বা অক্সফ্যামে টাকা পাঠিয়ে বিবেক পরিষ্কার করেন নি । নিজের হাতে টাকা বা সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন । ১৯৯৯ সালের ২৭শে আগস্ট বিবাহের সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে শেষ বারের মতো জর্জ অ্যাডামস জেনিকে নিয়ে গিরজে থেকে রাসটন লজ অবধি তাঁর প্রিয় সিলভার শ্যাডো রোলস রয়েস চালান । পরের দিন সেটি নিলামে তোলা হয় – সে যাবত প্রাপ্ত সমস্ত টাকা দান করেন। ... ...