কিউবার বিপ্লবকে নতুন আলোয় দেখার চেষ্টা করা আজ প্রয়োজন। তার বৈশিষ্ট্যকে অনুধাবন করে, তার প্রাণবস্তুকে আহরণ করে ভারতীয় বাস্তবতার সঙ্গে তাকে অন্বিত করার চেষ্টা খুব জরুরী। হয়তো সেই স্বপ্নসম্ভব রোমান্টিক আদর্শবাদের স্ফূরণের কাল আজ নেই, কিন্তু আদর্শবাদ আর শুদ্ধতার আবাহন, সংকীর্ণতার বিসর্জনের অনেক সম্ভাবনা রয়ে গেছে যার উৎসভূমিতে কিউবার সেই রূপকথাসম বিপ্লবের ইতিহাসমন্থন আমাদের ফিরে যেতে প্ররোচিত করে। ... ...
ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএম নেতা মানিক সরকার যদিও প্রচারে এসে তাঁর বক্তব্যে বার বার সাবধান করেছেন যে, বিজেপির ক্ষমতায় আসার মারাত্মক ভুল যেন না করা হয়। কারণ, ত্রিপুরার মানুষ এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন যে, বিজেপি ক্ষমতায় বসলে মানুষের কি পরিমান সর্বনাশ হয়। অমর্ত্য সেন সহ বহু বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞ পন্ডিত মানুষেরা সবাই বিজেপিকে প্রতিহত করাই প্রধান কর্তব্য বলে বার বার উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ভবি যে ভুলবার নয় এবং চোরের সাক্ষী মাতালের মতো জুটে গেল রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব। ... ...
গত পঞ্চায়েৎ নির্বাচনে স্বৈরাচারী কাজকর্মের চূড়ায় পৌঁছে গেছিলো শাসকদল হিসাবে তৃণমূল। বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েৎ-এর কদর্য ভাবনায় বিরোধীদের মনোনয়ন না দিতে দেওয়া থেকে বিরোধী সন্দেহে মানুষকে ভোট দিতে না দেওয়া, ছাপ্পাভোট, বুথ দখল এইসব কাজের ফলে সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ জমে উঠেছিলো। সেই সাথে আমফান ত্রান ও তার আগেকার নানান দুর্নীতি তো ছিলোই। কাজেই প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া ছিলোই তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু পাশাপাশি অন্য অনেক কাজের ফলে গ্রামীণ মানুষের কাছে তৃণমূলের গ্রহনযোগ্যতাও ছিলো সন্দেহাতীত। সেগুলো নিয়ে পরে আলোচনা করবো। ... ...
গত শতাব্দীর শেষভাগ থেকে লাতিন আমেরিকায় বিভিন্ন দেশে বামপন্থী নানা দলের অগ্রগতি এবং অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা লাভ গোটা পৃথিবীর বামপন্থার আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব সম্প্রতি পেরু এবং চিলিতেও এরকম কিছু অগ্রগতি লক্ষ করা গেছে । সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি এবং পূর্ব ইওরোপের সমাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পর এই দেশগুলিই হয়ে উঠেছে বামপন্থী এবং প্রগতিশীলদের ভরসাস্থল। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে রাষ্ট্র পরিচালনার বিংশ শতকীয় সমাজতান্ত্রিক মডেল অর্থাৎ তথাকথিত সর্বহারার একনায়কত্ব এদের রাষ্ট্র পরিচালনায় অনুপস্থিত। তার জন্য সাময়িক কিছু মূল্য চোকাতে হলেও শেষ বিচারে তা গণতন্ত্রের অন্তর্বস্তুকে রক্ষা করতে বেশি কার্যকরী। এটা আমাদের দেশের বামপন্থীদের উপলব্ধি করা উচিত। ... ...
জ্ঞানভাপি মসজিদ নিয়ে সাম্প্রতিক আদালতের রায় ঘিরে প্রতিক্রিয়া। ... ...
পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক নির্বাচনী ফলাফলের ভিত্তিতে বাম রাজনীতির ভবিষৎ। ... ...
চিকিৎসক পেটানো, গোটা ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাম্প্রদায়িক মোড়ে ঘুরিয়ে নিজেদের দায় মোচন অসম সরকারের। ... ...
গত ১৫/৫/২০২১ অর্থাৎ ঈদের ঠিক পরেরদিন শান্তিপুর থানার অর্ন্তগত বেলতলার বাবলাবন গ্রামে স্থানীয় শনি মন্দিরের গ্রিলে গোমাংস ঝুলিয়ে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। রাস্তা অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ, গ্রেফতার ও মারপিটের ঘটনাও ঘটে। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস শেল ও ফাটায়। এলাকায় এখন ও উত্তেজনা রয়েছে । এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এপিডিআর কৃষ্ণনগর শাখা ও শান্তিপুর জন উদ্যোগের পক্ষ থেকে ১৯/৫/২০২১ তারিখে একটি তথ্যানুসন্ধান করা হয়। ... ...
শিক্ষিত মধ্যবিত্তের তাহলে কী হবে? অ্যাবানডানড? যারা এই দুঃসময়েও পার্টিকে ভোট দিল, পাশে দাঁড়াল, তারা অপাংক্তেয়? তা অবশ্যই নয়। কমিউনিস্ট পার্টির প্রাথমিক অভিমুখ অবশ্যই গরীব, মেহনতি মানুষ - কৃষক, শ্রমশিল্পী - কিন্তু মধ্যবিত্ত মানুষ তার বাইরে পড়ে না। বহু মধ্যবিত্ত পরিবার আসলে নামেই মধ্যবিত্ত, শ্রেণীগতভাবে তাদের অবস্থান নিম্নবিত্তের থেকে খুব একটা ভাল নয় - এটা ভুললে চলবে না। কিন্তু "শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ" না হলে এই মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ কোথায়? এই প্রশ্নটাও, আবারও, প্রশ্নটা যত কঠিন, উত্তরটা তত নয়। বৃহৎ শিল্প মধ্যবিত্তের কর্মসংস্থান বাড়ায় বলে যে মিথ প্রচলিত আছে, সেই মিথ বার্স্টিং করার সদিচ্ছের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এই প্রশ্নের সহজ উত্তর। ... ...
এবারের ভোট শুধুমাত্র পার্টি, দলীয় কর্মী, সমর্থক আর কিছু সুবিধেবাদীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এবারের ভোটে বিপুল ভাবে সামিল হয়ে পড়েছিল সিভিল সোসাইটি বা সুশীল সমাজ।বিজেপির মত আগ্রাসী হিন্দুত্ববাদী শক্তিকে রুখে দেওয়ার প্রয়োজনটা অনুভূত হয়েছে সেই সিভিল সোসাইটির অন্দর থেকেই। ... ...
যেটা চিন্তার সেটা হলো এই দর্শন, এই রাজনীতি। ইরাক যুদ্ধের সময় বুশ সিন্ড্রোম বলে কুখ্যাত হয়েছিলো যে উক্তিটি – “যদি তুমি আমার বন্ধু না হও, তবে তুমি আমার শত্রু”। এক সাম্যাজ্যবাদীর যে দর্শন মানায়, তাতে যদি বামপন্থী বলে দাবী করা কেউ আস্থা রাখে, তবে বুঝতে হবে সমস্যা গভীরে। এ দর্শন সাম্রাজ্যবাদ তথা ফ্যাসীবাদের দর্শন, যে তার মদমত্ত অহংকারে বন্ধু চিনতে ভুল করে, বা বলা ভালো বন্ধু চিনতে অস্বীকার করে। এ দর্শন বাম বলে কথিত পরিসরে জোরেশোরে মান্যতা পাচ্ছে মানে এ রাজ্যে বিজেপি ভোটে যতই হারুক, সে তার “কার্বন ফুটপ্রিন্ট” ছেড়ে গেছে। আজ না হলে তা বিষবৃক্ষ হয়ে ওঠার আগেই তাকে নির্মূল করে ফেলার কাজে সচেষ্ট হতে হবে। ... ...
অতএব পেনসিল কী বলে দেখা যাক। পেনসিলের কাজ হিসাব করা - সেই কারণে সাট্টার হিসাবরক্ষককে পেনসিলার বলা হয়। তা পশ্চিমবঙ্গে যে সাট্টা খেলাটা হল, তার হিসাব তাহলে কী দাঁড়াল? নাটশেলে - ১। তৃণমূল কংগ্রেস সমস্ত অ্যান্টি ইনকাম্বেন্সির প্রেডিকশন তুচ্ছ করে বিপুল ভোটে জয়ী; ২। বিজেপি প্রবলভাবে পরাজিত হয়েও প্রধান বিরোধী শক্তি, বস্তুত একমাত্র বিরোধী শক্তি (বিধানসভায়); ৩। বামেরা, সিপিএম এবং জোটসঙ্গীরা আরও একবার প্রত্যাখ্যাত - এবারে সম্পূর্ণভাবে। অঙ্ক সহজ এবং ম্যান্ডেট এতটাই স্পষ্ট যে মেনে না নিয়ে আমার মত ঘোর সিপিএম সমর্থকেরও উপায় নেই। ... ...
সরকারের দায়িত্বহীনতায় এখনো যদি ধর্মীয় দলাদলির উর্ধ্বে উঠে প্রশ্ন না তোলা হয় নাগরিক সমাজ থেকে, সামনে দুঃসহ দিন অপেক্ষা করছে। বেঁচে থাকার তাগিদে সরকারকে চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য বাধ্য করতে হবে। এভাবে নাগরিকদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার অধিকার কোনো নির্বাচিত সরকারের নেই। ... ...