এক চমৎকার উজ্জ্বল শনিবারে জন চল্লিশ মানুষ এসে বাগান আলো করে গেলেন । তাঁদের সবার পরিচয় এই সামান্য প্রতিবেদনে দেওয়া সম্ভব নয় । এঁদের অনেকের সঙ্গে আমাদের এই পরিচয় ইতিমধ্যেই বন্ধুত্বে পরিণত হয়েছে। ইউক্রেনের যুদ্ধ একদিন শেষ হবে । তখনও আমরা এমনি বাগানে বা গৃহকোণে পাশা পাশি বসে গল্প করব। যেমন আইরিশরা বলে এই দুনিয়াতে অচেনা অজানা কেউ নয় , সবাই তোমার বন্ধু, এতদিন দেখা হয় নি শুধু। ... ...
কার্ল-হান্সের সঙ্গে পুতিনের প্রথম সাক্ষাতের দিন সে তার রাশিয়ান ফলাতে গিয়েছিল। তাকে রীতিমত চমকে দিয়ে পুতিন পরিষ্কার জার্মানে জবাব দিয়েছেন। কার্ল- হান্স অবশ্য তাঁর অ্যাকসেন্ট শুনে খুব মজা পায়। পুতিনের জার্মান জাখসেন প্রভাব দুষ্ট - যে উচ্চারণ আমি স্টাডরোডার হাইকে ও তার পরিবারের লোকজনের মুখে শুনেছি। ওই যে কয়েক বছর পুতিন ড্রেসডেনে ছিলেন, এটা সেই সংসর্গের ফল! কার্ল-হান্স খাঁটি প্রাশিয়ান - তার মতো পরিশীলিত জার্মান খুব কম লোককে বলতে শুনেছি। সভ্য সমাজে সোয়েবিশ হেসিশের মতন জাখসেন ডায়ালেকটকে একটু নিচু নজরে দেখা হয়। ... ...
ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হবার আগেই রোদিকা গিয়েছিল কি কি দান এই সব দাতব্য প্রতিষ্ঠান গ্রহণ করতে পারে সে তথ্য সংগ্রহ করতে। সে জেনে এলো আমাদের গ্রামের কোন চ্যারিটি শপ জামা কাপড় আর নেয় না। বেছে কুচে তারা যা দোকানে রাখে তা যদি এক মাসের ভেতরে বিক্রি না হয়, সেগুলো পুড়িয়ে সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দোকানে মাল রাখার খরচা আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে দুধের হ্রদ, মাখনের পর্বত জেনে এসেছি – দুধ ফেলে দেওয়া হয়েছে, স্তূপীকৃত মাখন নষ্ট করা হয়েছে। চাষি তার দাম পেলো কিন্তু সেটা বাজারে গেলে দর কমে যাবে যে। মনে হয়েছে ক্ষুধার্ত আফ্রিকায় কি পাঠানো যেতো না? এই মহান ইউরোপীয় ইউনিয়নের ধ্যান এবং দর্শন অন্য মাত্রার। ... ...
ধেড়েখোকার প্রত্যাবর্তনের পর কিছুদিন রগড়ারগড়ি চলবে। তৃণমূল বলবে ,ঘরের কার্তিক ঘরে ফিরে এল। বিজেপি বলবে ,দুষ্ট গরুর চেয়ে শূণ্য গোয়াল ভালো। তথাগত রায় প্রায় থ্রিলারের ভাষায় টুইট করবেন, কে এস ডি এ গ্যাং ( কৈলাশ আর দিলীপ ছাড়া গ্যাংয়ের বাকি দুই সদস্যের নাম আমার মনে থাকে না) মমতা ট্রোজান হর্স ঢুকিয়ে ছিল বিজেপিতে। তবে এসব দুদিন বাদে থেমে গেলেও একটা ব্যাপার নিশ্চিত বামপন্থীদের নিজেদের মধ্যে এই নিয়ে বেশ কিছুকাল কামড়া কামড়ি চলবে। ... ...
জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেন খেলাধুলোর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই, থাকা উচিত নয়। কিন্তু এটাও তো সত্যি যুদ্ধ বাধানোর অপরাধে জার্মানি ১৯২৪, ১৯২৮, পশ্চিম জার্মানি ১৯৪৮ সালে, জাপান ১৯৪৮ সালে অলিম্পিকে যোগদানের অনুমতি পায় নি ; একই কারণে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে জার্মানির দ্বার রুদ্ধ ছিল – একমাত্র বিশ্বকাপ যেখানে জার্মানি খেলেনি। রাশিয়ার আফঘানিস্তান দখলের প্রতিবাদে ১৯৮০র মস্কো অলিম্পিক বয়কট করে পশ্চিমের কিছু দেশ ; বদলা নিতে ওয়ারশ চুক্তির দেশ গুলি (ব্যতিক্রম রোমানিয়া) লস এঞ্জেলস অলিম্পিক বয়কট করে। ... ...
আপনি চান আপনার হাজার ডলার। রাশিয়া বলছে দেবো না বলিনি, রুবেলে দেবো বলেছি। আপনি নেবেন না। অতএব আপনি বাজারে খোঁজ খবর করলেন। যে বন্ডের কাগজটি আপনি যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছিলেন সেটা রাশিয়ানরা না হোক অন্য কেউ কি কিনবে? যাঁদের মারফত আপনি এই মহামূল্য বন্ডটি কিনেছিলেন সেই জে পি মরগান বা গোল্ডম্যান জাখসকে ফোন করলেন। অবশ্যই আপনার টাকা বাঁচল কি ডুবল তাতে এঁদের কিছু এসে যায় না। আপনি প্রাপ্ত বয়স্ক নিবেশক – চোখ খুলে, জান বুঝকে টাকা লাগিয়েছিলেন। এখন তাদের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করলে তারা শুনবে কেন? তার মানে কি এঁরা হাত উলটে বসে থাকবেন? তা কখনো হয়? আপনি তাঁদের খদ্দের, খরিদ্দার প্রভুর সমান লেখা দেখেন নি কলকাতার দোকানে দোকানে? শ্যামবাজারে মায়ের সঙ্গে শাড়ি কিনতে গিয়ে কতবার দেখেছি। ... ...
চার্লি দুটি ছবি দেখালেন – বাবা মায়ের সঙ্গে তিন ছেলে মেয়ের, সুখের দিনের। তারপরে বললেন, এদের ঘর সংসার ছিল, বাড়ির সামনে পরশে গাড়ি না হোক, কাজ চালাবার মতন যান ছিল, আই ফোন না হোক, সস্তার চিনে আন্দ্রয়েদ ফোন ছিল। আপনার আমার মতন জীবন ছিল। বাবার কাছে খারকিভ স্টেশনে বিদায় নিয়ে এসেছে, সে বিদায় কি সাময়িক? কে বোঝাবে এই শিশুদের? ধন্য এই মায়েরা যারা বাঘিনীর মতো ছেলে মেয়েদের আগলে সামলে অদৃষ্টের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছেন (চ্যালেঞ্জিং দি ডেস্টিনি)। ... ...
নয়ই নভেম্বর উনিশশ উনননব্বুই : কাস্তে নয়, হাতুড়ি দিয়ে এমনকি খালি হাতে জনতা যখন বার্লিন বিভাজক প্রাচীরটি ধ্বংসের প্রয়াসে উন্মত্ত, ভ্লাদিমির পুতিন নামক এক কে জি বি অফিসার পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা এজেন্সি স্টাজিকে ফোন করে পাঁচ ট্রাক ভর্তি ফাইল আনিয়ে পেট্রল সহ তাতে অগ্নি সংযোগ করছেন। তার আগে অবিশ্যি (আপন ভাষ্য অনুযায়ী) মস্কোয় ফোন করেছিলেন। গভীর বেদনার সঙ্গে পুতিন বলেন, মস্কো নিশ্চুপ ছিল সেদিন। সেই পুতিন দশ বছরের ভেতরে রাষ্ট্রপতি হয়েই বলেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিনাশ বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড়ো ভূরাজনৈতিক বিপর্যয়। ... ...
ড্রেসনার ব্যাঙ্কে ট্রেনিঙের সময় কিছু মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো যারা কিশোর বয়েসে সারা রাত শুনেছেন শত্রু বিমানের, অ্যান্টি এয়ার ক্র্যাফট গানের, বোমার আওয়াজ। ভোরের আলো ফুটলে দেখেছেন নিজেদের, পাড়া পড়শির বাড়ির চাল, দেওয়াল উড়ে গেছে। রাস্তায় কলের পাইপ ফেটে জলের ফোয়ারা বইছে। সকাল হতেই শহরের পথে পথে পৌর সভার দমকল বাহিনী, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, কলের মিস্ত্রিরা বেরিয়ে পড়েছেন, পাইপ সারাচ্ছেন, বিদ্যুৎ সংযোগ করেছেন। নুরেমবেরগের হেলমুট বলেছিলেন বেলা নটার ভেতরে কলে জল আর ঘরের বিদ্যুৎ বাতি চালু হয়ে যেতো। জন জীবন প্রায় স্বাভাবিক! আমেরিকানরা দখল নেওয়ার পরে বোমায় বিধ্বস্ত নুরেমবেরগে এক মাস কলের জল বা বিজলি বাতি কোনটাই পাওয়া যায় নি। ... ...
ব্যাঙ্কাররা হরফান মউলা। কোনটাই ভালো ভাবে বোঝেন না। কিন্তু লোককে বোঝানো যে আমাদের কাজ নইলে ফি আসে কোত্থেকে? আমার খুঁজি সেলিং পয়েন্ট। এই বিশাল পরিমাণ ঋণের প্রস্তাব নিয়ে আমরা যখন লন্ডন ফ্রাঙ্কফুর্ট প্যারিসের বিভিন্ন হোটেলের কনফারেন্স গৃহে পথসভার আয়োজন করেছি তখন আমাদের গল্পটি এই- প্রমাণিত গ্যাসের সঞ্চয় বহু ট্রিলিয়ন কিউবিক মিটার, সুদূর সাইবেরিয়া থেকে চেক বা ইউক্রেন অবধি গ্যাস পাঠানো হয় তাদের নিজস্ব পাইপ লাইনে, ইউরোপে সেই গ্যাস কেনার জন্যে হামলে পড়েছেন খ্যাতনামা কোম্পানিরা যাদের সঙ্গে তাবৎ ইউরোপীয় ব্যাঙ্কের নিত্য ওঠা বসা। তৎকালীন হিসেবে এই বিরাট অঙ্কের অর্থ যোগাড় করতে আমাদের বিশেষ অসুবিধে হয় নি। ফ্রাঙ্কফুর্টে সেই ঋণে সই সাবুদের অনুষ্ঠানে কলার উলটে ঘোরাঘুরি করেছি। ... ...
দক্ষিণ পশ্চিম ইউক্রেনের ঝাপোরিঝিয়াতে আছে ইউরোপের সবচেয়ে বড়ো পারমানবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। পৃথিবীর দশটির একটি। তেরো বছরের মেয়ে একাতেরিনাকে (ক্যাথরিন) নিয়ে অলিয়েনা ঝাপোরিঝিয়া থেকে ট্রেনে দু রাত্তির কাটিয়ে পোল্যান্ড পৌঁছেছিলেন। একটি ক্যাথলিক গিরজেতে তিন রাত্তির বাসের অনুমতি পাওয়া গেছিল। কিন্তু ব্রিটিশ ভিসার খোঁজ নেই। এবার কোথায় যাবেন? কিছু বন্ধু বান্ধবের সূত্রে খবর পান সুইডেনের গোয়েটেবর্গে সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা আছে। ... ...
কেবল সিরিয়া ইরাক আফঘানিস্তান নয়, আপন দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণে উৎপীড়িত অন্য অনেক দেশের মানুষজন ব্রিটেনে আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছেন। এঁদের মধ্যে কিছু এসেছেন এল সালভাদোর থেকে। বিগত তিরিশ বছর যাবত সেদেশে চলেছে গ্যাং ওয়ারফেয়ার, বিভিন্ন দলের মধ্যে সশস্ত্র লড়াই। শাসন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। সে দেশের সঙ্গিন আভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সালভাদোরিয়ান শরণার্থীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেবার কথা ব্রিটিশ সরকার বিবেচনা করছেন। ইতিমধ্যে তাঁদের বসবাসের ব্যবস্থা হচ্ছে দেশের নানা জায়গায়। তাঁদের কেস খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। ... ...
প্রথম দলকে আপনি রোজ চোখে দেখেন, মুখ চেনেন, কিন্তু প্রায় কারোরই নাম জানেন না। দ্বিতীয় দলকে আপনি প্রায় কখনোই দেখতে পান না, জীবনে কখনো পাবেনও না – কিন্তু তাদের নাম আমি, আপনি সবাই জানি। কারণ, এই এক শতাংশ দেশবাসীর হাতে আছে দেশের মোট সম্পদের ৭০ শতাংশ। আর তার পরের ধাপের কুড়ি শতাংশ ভাগ্যবানের হাতে আছে প্রায় উনিশ শতাংশ সম্পদ। তাহলে হাতে রইল কি? পেনসিল? না দাদা – এগারো শতাংশ। ভাগীদার কজন? দেশের প্রায় আশি শতাংশ মানুষ ... ...
কোনো দেশ দখলের মহান ব্রতে যখন সৈন্য বাহিনী পথে নামে তাদের পিছু পিছু চলে সরবরাহ বাহিনী – রাঁধুনি খানসামা থেকে আরম্ভ করে মুচি মেথর। সৈন্যরা যেমন যেমন দুর্বার বেগে এগিয়ে যায় তার সঙ্গে তাল রেখে ডাল ভাত এমনকি দাঁত খোঁটার খড়কে কাঠিটি পর্যন্ত যোগান দেবার কনভেয়র বেল্টটি চালু থাকে। অভুক্ত সৈন্য বাহিনী যুদ্ধ জেতে না। আপন আপন রাশিয়া অভিযানের কালে নাপোলেওঁ এবং হিটলার এই সার সত্যটি অনুভব করেছিলেন। ১৯৪২ সালের ডিসেম্বরে শূন্যের পনেরো ডিগ্রি নিচে নেমে যাওয়া ঠাণ্ডায় যে জার্মান বাহিনী স্টালিনগ্রাদে লড়াই করছিল, তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনের দশ শতাংশ পৌঁছে দিতে অক্ষম হয় গোয়েরিঙের লুফতভাফে । ফলাফল আমাদের জানা। ... ...
বাংলায় যদি একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, তাহলে সমাজমাধ্যমে কী হয়? এখন যা হচ্ছে। সরকারপক্ষ, হয় চেপে যায়। নইলে বলে, দোষ আমাদের কেন হবে? মদ খেয়ে যদি কেউ খুন-ধর্ষণ কিছু একটা করে, তাহলে দোষ তো তাড়ির, তাড়ির না হলে নির্ঘাত খেজুর গাছের। পুলিশ তো আর গাছকে গ্রেপ্তার করতে পারেনা, ভারতীয় দন্ডবিধিতে তেমন ধারা নেই, তাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। যদি প্রশ্ন করেন, কিন্তু খুনটা তো আর গাছ এসে করে দেয়নি, খুনিকে ধরলেন না কেন? তখন তাঁরা অম্লানবদনে বলবেন, আরে খুন হয়েছে জানবে, তবে তো। আইন আইনের পথে চলবে। আগে অভিযোগ, তারপর তদন্ত। খুন হবার আগে, সেই বেটি থানায় এসে অভিযোগ করেনি কেন? কোথাও কেউ প্রপার প্রসিডিওর ফলো করবেনা, আর সব দোষ হবে প্রশাসনের? মামার বাড়ি? সংখ্যাগুরু বিরোধীরা, সেই শুনে বলবেন, দেকেচ, আগেই বলেছিলাম, হিন্দু খতরেমে। খেজুর গাছের দোষ সরকার তো দেখতে পাবেইনা, ও গাছ তো আরব থেকে এসেছে। এরা সমুদ্রের নাম দিয়েছে, আরব সাগর, এদের পুলিশ আরবী ঘোড়া চড়ে, এদের একমাত্র দাওয়াই হল কেন্দ্র। কেন্দ্র থেকে তিনশছাপ্পান্ন লাও, দিল্লি থেকে সিবিআই। মারবে এখানে, বডি পড়বে তিহারে। জ্যায় শ্রীরাম। যদি মিনমিন করে প্রশ্ন করেন, কিন্তু এদিকে তো বঙ্গোপসাগর, তাছাড়া ওদিকেও তো হাথরাস-টাথরাস কীসব হয়েছে, তখন সিবিআই ঠিক কী করছিল? রেডিমেড জবাব, বড়-বড় কথা বলবেন না, আপনি কি সেকু-মাকু না লিবারবাল? কাশ্মীরে যখন পন্ডিতদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? যখন আফগানিস্তানে বুদ্ধমূর্তি ভাঙা হচ্ছিল, আপনি কী করছিলেন? যখন নাইন-ইলেভেন হল, তখন... ইত্যাদি প্রভৃতি। ... ...
মার্চের মাঝে কলকাতা থেকে ফিরে দেখি আমাদের বাস ভবন ত্রাণ সামগ্রীর বৃহৎ গুদামে পরিনত হয়েছে। বাড়িতে তিল ধারণের জায়গা হয়তো আছে কিন্তু আমার নিজের স্থান অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ। চতুর্দিকে ছড়ানো কালো প্লাস্টিকের ব্যাগ, পেল্লায় সুটকেস। এখানে ওখানে শুকনো খাবারের প্যাকেট এমনকি দশ কিলো বাসমতী চালের বৃহৎ ব্যাগ! প্রতিদিন আসেন আরও মানুষ, দিয়ে যান ত্রাণ সামগ্রী। এখুনি নিকটবর্তী গ্রাম অ্যাশ ভেল থেকে দুজন এলেন – বব এবং পলিন, এখানে ত্রাণ সংগ্রহ হচ্ছে খবর পেয়েছেন কোথাও থেকে। ববের বয়েস আশি, ছিলেন ব্রিটিশ আর্মিতে (মালয়, সাইপ্রাস, জার্মানি) পলিন আটাত্তর, আর্মিতে নার্স। তাঁদের বিয়ে হয় হানোভারে, পুরনো আউডি চালিয়ে হনিমুনে গেছেন জালতসবুরগ। ... ...
সঠিক সংজ্ঞা গুলি মেনে নিলে আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে প্রথম গণহত্যার কৃতিত্ব জার্মানদের প্রাপ্য। স্থান জার্মান দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকা, আজকের নামিবিয়া, কাল ১৯০৪। হেরেরো নামের স্থানীয় উপজাতির বিরোধিতায় ক্ষিপ্ত জার্মান সেনাপতি লোথার ফন ত্রথা নামের এক সেনাপতি লিখিত আদেশ দেন – "হেরেরো জাতিকে সমূলে বিনাশ করতে হবে, শুধু বন্দুকের গুলিতে নয়, তাদের ঠেলে পাঠাতে হবে এমন অঞ্চলে যেখানে জল নেই। "আশি হাজার হেরেরো নিধনের সা পরে জার্মান কাইজারকে লিখলেন, "যেসব পুরুষ নারী ও শিশুকে পেয়েছি তাঁদের নির্মমভাবে (গ্নাদেনলোস) হত্যা করেছি। এদের কারো কাছে অস্ত্র ছিল না।" ফিল্ড মার্শাল আলফ্রেড ফন শ্লিফেন সমর্থনে বলেন, "একটা জাতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই – তাদের বিনাশ আমাদের লক্ষ"। হিটলারের বয়েস তখন পনেরো, গোয়েরিঙের এগারো, দুনিয়ার আলো দেখতে আইখমানের দু বছর বাকি। ... ...