এই যে বৈদিক সাহিত্যর কথা আমরা বলি, কি কি তার উপাদান? কবে রচিত হয়েছিল বিভিন্ন সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, উপনিষদ, বেদাঙ্গ, পুরাণ, তন্ত্রসাহিত্য ? মহাকাব্যগুলি কোন সময়ের রচনা আর ধ্রুপদী সংস্কৃত সাহিত্যের সূচনাই বা কবে ? ... ...
উত্তরপ্রদেশের এক স্কুলে কার্লা হার্প এবং প্রিয়াঙ্কা পান্ডে একটি বিশেষ সমীক্ষা করেন। সমীক্ষার জন্য গৃহিত স্থিতিমাপ গুলো ছিল ভিন্ন রকমের। বিশেষ এক শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের বুদ্ধ্যঙ্ক পরিমাপ করা হয়। পরিমাপের আগে কাউকেই মনে করিয়ে দেওয়া হয় নি কে ব্রাহ্মণ, কে অব্রাহ্মণ বা কে অন্ত্যজ। দেখা যায় জাত ও গোত্রধর্ম নির্বিশেষে সবার বুদ্ধ্যঙ্ক প্রায় সমমানের। অন্ততঃ পরিসংখ্যানগত কোন তফাৎ নেই। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঐ ছাত্রছাত্রীদের বার বার মনে করানো হয় তাদের জাতি ও গোত্রধর্ম পরিচিতি। আবার বুদ্ধ্যঙ্ক পরিমাপ করতে গিয়ে দেখা যায় অন্ত্যজদের গড় বুদ্ধ্যঙ্ক অনেকটা নীচে নেমে গেছে। এই সমীক্ষা থেকে যেটা উঠে আসছে যে আর্থসামাজিক বৈষম্যের পাশাপাশি ব্যক্তির দক্ষতার ঘাটতির ক্ষেত্রে অন্যতম বড় প্যারামিটার হল জাতি বৈষম্য এবং তদুপরি ব্যক্তির জাতিগত মনোসামাজিক অবস্থান। ... ...
গত ১৬ ই ফেব্রুয়ারি রায়গঞ্জ মধ্য মোহনবাটি গ্রন্থাগারে ছিল গল্প পাঠের আসর। পঠিত গল্পগুলি নিয়ে আলোচনা করলেন আলোচক পুরুষোত্তম সিংহ ... ...
আধুনিক বৃহৎ প্রযুক্তি-নির্ভর চিকিৎসা বিজ্ঞান জনসাধারনের জীবনের বিনিময়ে এর পরিধিকে ক্রম-বিস্তৃত, ক্রম-প্রসারিত করতে চাইছে। পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র medicalized হয়ে উঠছে অর্থাৎ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, রোগা হওয়া থেকে মোটা হওয়া, বিবাহ থেকে সন্তান ধারণ করা সবকিছুই চলে আসবে মেডিসিনের নজরদারিতে – সবকিছুর শেষ কথা হবে মেডিক্যাল ওপিনিওন, পরিচালজের স্থানে থাকবে মেডিসিন। কিভাবে ঘটে এই medicalization? সে এক মর্মন্তুদ, অতি আগ্রাসী যুদ্ধ – বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলোর তরফে। অতি বিস্তৃত এর জাল – পৃথিবীর প্রতিটি দেশে, ব্যতিক্রমহীনভাবে। ... ...
পোস্ট কলোনিয়াল সময়ে রান্নাঘর মেয়ে পুরুষ সবার জীবন থেকেই উঠে গেল। পড়ে রইল রেস্তোরাঁ, টেক অ্যাওয়ে, রেডি টু ইট, প্যাকেজড ফুড, রান্নার লোক প্রমুখের তৈরী রান্না। অ্যালিয়েনেশন ঘটল টোটালি। রান্নার প্রক্রিয়ায় যে আনন্দ আছে, এটা যে সবাই মিলে ভাগ করে নিয়ে করার মত জিনিস, খেতে যতটা ভাল লাগে, রান্না করতেও ততটাই ভাল লাগা উচিত, এসব কথা পাশ্চাত্যকে আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন সামিন নোসরতের মত অনেকে। আমাদের কবে ভ্রমমুক্তি ঘটবে কে জানে। ... ...
প্রাচীন ভারতের সাহিত্যের সবকিছুই কি সংস্কৃত ভাষায় রচিত? বেদের ভাষা বৈদিক আর কালিদাসের মেঘদূত এর ভাষা সংস্কৃত। বুদ্ধদেব উপদেশ দিতেন পালি ভাষায়। বৈদিক, সংস্কৃত, পালি এগুলির মধ্যে সম্পর্ক কী? পার্থক্যই বা কী? ... ...
না না ঝগড়াঝাঁটির কোনো দরকার নেই। একটু মন দিয়ে কথাক'টি শুনে, ভদ্রভাবে যা বলার বলে দিলেই হলো। তা নয়, ধুমকেতুর মতো ছুটে এসে ভাঁটার মতো চোখ ঘুরিয়ে, 'নিজের হয়নি তো, তাই এতো বড় বড় কথা', এসব বলার দরকার নেই। আমারও নিজের হয়নি, আপনারও না। নিজের হলে তখন যুক্তিবুদ্ধি খাটে না, মানুষ হয় পাগল নয় পাথর হয়ে যায়। সে অবস্থা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগে। অনেকের আবার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরো খুনের নেশা চড়ে ; তবে কেউ কেউ পারে অপরাধীকে ক্ষমা করে দিতে। আমাদের দেশেই আছে এমন উদাহরণ। ... ...
ইংরেজি অনুবাদে ছিন্নপত্রাবলীর এই চিঠি পড়ছিলাম কিছুদিন আগে। আজ সারাদিন গান নিয়েই কাটলো। গীতবিতান পড়তে পড়তে গাইতে গাইতে আটকে গেলাম ওই 'বড়ো বেদনার মতো' তে এসে। ছিন্নপত্রাবলী নিয়ে বসলাম। কতো যে গানের উদ্ভাস চিঠিগুলোতে! কতো গানে সুর বসাবার কথাও আছে যেসব গানগুলির অধিকাংশের স্বরলিপি করেছেন দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই গানের বাণী আর এ গানের প্রেক্ষাপটে লেখা চিঠির মধ্যে একটা বেশ মজার বৈপরীত্য আছে। ছিন্নপত্রাবলীর ১০৬ সংখ্যক চিঠিতে এই বৈপরীত্যই ... ...
২০১২ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড জানিয়ে দিয়েছে যে ফিল্ম এবং টেলিভিশনে সর্বাধিক চিত্রিত সাহিত্যিক মানব চরিত্র হিসাবে বিশ্বরেকর্ড হোমসেরই। হোমস পর্দায় এসেছেন সাকুল্যে ২৫৪ বার (২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী)। ড্রাকুলা ২৭২ বার চিত্রিত হয়ে অবশ্য হোমস-কে বীট দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে ‘মানব’ চরিত্র নিয়ে – ভূত প্রেত, জীন-পরি নিয়ে নয়। ১৮৮৭ সাল থেকে ৭৫ জনেরও বেশী অভিনেতা শার্লকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। গিনেস আরো আগ বাড়িয়ে জানিয়ে দিয়েছে হোমস নিজেই এক ‘সাহিত্যের প্রতিষ্ঠান’ – অবশ্য কথাটা খুব একটা বাড়িবাড়ি নয়। ... ...
পল ডিরাক - তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার জগতে এক প্রকান্ড জ্যোতির্ময় বটবৃক্ষ! কিন্তু,কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় মৌলিক যুগান্তকারী গবেষণা করা সত্ত্বেও প্রায় হাতছাড়া হচ্ছিলো তাঁর নোবেলভাগ্য! নোবেলবাবু নিজের নামে প্রাইজ দেওয়ার জন্য যেসব শর্তাদি চাপিয়ে গেছিলেন তা ফিজিক্সের ক্ষেত্রে বেশ গোলমেলে আকার নিয়েছিলো। মানবসভ্যতার উপকার বলতে ফিজিক্সের ফিল্ডে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারই বুঝে নিয়েছিলো নোবেল কমিটি। ... ...
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কী হয়েছিল তা সকলের জানা। ভাষার প্রশ্নে এক বিন্দু আপোষ না করে রক্ত ঝড়িয়ে অধিকার আদায় করেছিল মানুষ। অধিকার আদায়ের এই পথ পরবর্তীতে বাংলাদেশ নামক একটা দেশের জন্ম দেয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় ঠিক সময়ে যা করার দরকার তা সে সময়ের সকল মানুষ তা করেছে। যে সময় প্রতিবাদে ফেটে যাওয়ার দরকার তখন প্রতিবাদে আকাশ কম্পিত করেছে। বিনিময়ে যখন জেলে যেতে হয়েছে তখন জেলে গিয়েছে, যখন রক্ত দিতে হয়েছে তখন রক্ত দিয়েছে। জীবন দেওয়ার সময়ও পিছুপা হয়নি কেউ। আমরা আজকে ওই সময়ের প্রতিবাদী প্রত্যেকটি মানুষের কাছে চির ঋণী। ভাষা হল, স্বাধীনতা পেলাম সকলই আমাদের আগের প্রজন্ম আমাদের জন্য করে দিয়ে গেছে। আমরা সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছি শুধু। অমূল্য এই সম্পদ গুলো যখন আমাদের হাতে এসেছে তখন আমরা কী করছি? স্বাধীনতার মর্যাদা বা রক্ত দিয়ে পাওয়া ভাষার মর্যাদা কতটুকু রেখেছি আমরা? ... ...
পরোয়ানাহীন মৃত্যুভূমিতে বেঁচে আছি। তাই বলে বিক্রি কমে নি চারিদিকে ... ...
বাংলাদেশ গতকাল এক অভূতপূর্ব কাণ্ড করে ফেলেছে। ক্রিকেট বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা ভাল খেলছি কিন্তু খেললেও ফলটা আসাছিল না হাতে, কালকে সেই অধরা ফল ধরা দিয়েছে। ... ...
'গহনারবাক্স' বিরতির আগে পর্যন্ত দারুণ ছিল। হুট করে সেখানে 'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ' টেনে আনা এবং কিছু আরোপিত বিষয় খানিকটা জোর করে গুঁজে দেবার কারণে ভালো হতে হতেও শেষ পর্যন্ত সেটা ভালো লাগেনি তেমন। পরেরটা ছিল 'আরশিনগর'। ওফফ! বার বার নিশ্চিত হওয়ার আর্জি জেগেছিল 'আরশিনগর' দেখতে দেখতে, সিনেমাটা কি আসলেই অপর্ণা সেনের! পরেরটা নিয়ে আমার ব্যাপক ব্যাকুল প্রতিক্ষা আর আশা ছিল। 'সোনাটা(Sonata)'। ভাগ্যিস শাবানা আজমি ছিলেন এটাতে। নইলে পর্দার অরুণা চরিত্র, যেটা পরিচালক স্বয়ং করেছিলেন, সে চরিত্রের আরোপিত কাঠিন্য দর্শক হিসেবে এই নাদানকে কেমন একটা দমবন্ধের অনুভূতি দিয়েছে সারাক্ষণ। অথচ অপর্ণা কত পছন্দের একজন! শাবানা আজমির চরিত্রটা 'সোনাটা'র প্রাণভোমরা বিশেষ। যাঁর উপস্হিতি দর্শকের জন্য স্বস্তিময় ছিল। ... ...
চিঁড়ের টিআরপি হাই! বেচারা সাতেপাঁচে না থাকা চিঁড়ে কস্মিনকালেও ভাবেনি যে তাকে একদিন অনুপ্রবেশকারীর খাবারস্বরূপ চিহ্নিত হতে হবে। যে চিঁড়ে কিনা বাঙালির মধ্যপ্রদেশ ঠান্ডা রাখার জন্য বিখ্যাত তাকে নিয়েই আজ বাজার গরম এক মধ্যপ্রদেশীয় বিজেপি-বর্গীর কৃপায়। বর্গীটির সম্ভবত জানা নাই যে বাঙালির সঙ্গে চিঁড়ের সম্পর্ক আজকের নয়। ... ...
যাঁর নাম কৈলাস তিনি যে এমন কেলেঙ্কারি করে ছাড়বেন সে কি রীনাদির মানিকমামা জানত? বাঘামামা, এ যে এক্কেরে ডিটেকটিভ কেস!! অতএব এনকোয়ারি বলছে, কেলে মানেই কেলেঘাই নদী। যেথায় অবলীলায় ঘাই মারে কেলে কেলে কালবোস, মানিকদার বাবার কবিতার ফর্সা বিষ্টু বোস, মাঝারি উজ্জ্বল সন্তু ট্যাংরা ও শ্যামলা পুঁটি রায়। ... ...
"যে দেশে এক্কেবারে চলতি ভাষাতেই টুরিস্টকে বলা হয় ‘মুসাফির’ তার রোদ্দুর তো আলাদা হবেই।" - আর যে বইয়ের শুরু এমন আশ্চর্য বাক্য দিয়ে, তার কাছে পাঠকের প্রত্যাশা ভিন্ন হতে বাধ্য। এই বাক্য অতিক্রম করে, ফয়েজ-এর অসামান্য কটি পংক্তি পার হয়ে আমরা পৌঁছোই এক তরুণী কবির মৃত্যুতে - দুর্ঘটনায় মৃত্যু - যে কবির কবিতা লেখক আবিষ্কার করেন খাস ওয়াশিংটন ডিসি-তে বসে - মার্কিন দেশ ও ইরান!!! ... ...
এ বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসটা আমাদের সামনে একটু অন্য রকম। এই যে উত্তমপুরুষ বহুবচনটা দিব্যি ব্যবহার করে ফেললাম, স্পষ্টই বুঝতে পারবেন, এ আমরা-র আবরণ ঢাকা আজকের জাতীয়তাবাদের জমিতে। বেশ কিছু বছর পর এমন এক ২৬ জানুয়ারির সামনে আমরা উপনীত, যা ক্যালেন্ডারের স্থাণুবৎ লাল দাগের দিনের থেকে অনেক বেশি গুরুত্ববহ। ... ...
সেই জানার ভিত্তিতে আজ বোধ হয় বলতে পারি, স্বাধীনতা উত্তরকালে সমস্ত দেশ জুড়ে এত বৃহদাকার ঐক্যবদ্ধ গণ আন্দোলন আর হয়নি। ১৯৭৪ সালের ২২ দিনের রেল ধর্মঘট মাথায় রেখেও বলছি। দেশ ব্যাপী রেল সংযোগের কারণেই সেই সংযোগ হারিয়ে সারা দেশ উত্তাল হয়েছিল। রেল কলোনিগুলিতে এক দিকে চলেছিল জিআরপি সিআরপিএফ প্যারামিলিটারি পুলিশের দাপাদাপি, রেলের কর্মচারীদের ঘর থেকে টেনে তুলে নিয়ে গাড়ি চালানোর চেষ্টা। অপরদিকে ঘর ছাড়া পলাতক রেল কর্মীদের সঙ্গে আমাদের রাতের অন্ধকারে সাইকেলে বা পায়ে হেঁটে গোপন ডেরায় গিয়ে গিয়ে যোগাযোগ স্থাপন, খবরের লেনদেন, অভুক্তদের খাদ্য পানীয় বিতরণ। সেই সব দিনের সেই গরম রক্তের চাষ উঠতি যৌবনে আমাদের অনেককেই স-মগজ মেরুদণ্ডী করে তুলেছিল। ... ...
রাজনীতি আসলে ঢপের কেত্তন! সেখানে সবাই সবার চেয়ে বেশিমাত্রায় মানুষের পক্ষে বলে প্রমান করতে চায় নিজেদের। আসলে যে যার নিজের পক্ষে; কয়েকটা বেশি ভোট টানার মাধ্যমে ক্ষমতাদখল করে সদলবলে পাঁচ বছর ক্ষীর চাটার পক্ষে। ফলত এর টিকি তার হাতে, তার টিকি আবার অন্য একজনের হাতে অবস্থা হয়ে বসে থাকে প্রায়শই। আপাতত যা বোঝা যাচ্ছে, সকল টিকিই দিল্লি গিয়াছে, ফলে পুতুল নাচের আসর জমেছে ভালো। এবং টিকি বেয়ে বেয়ে যেহেতু যাতায়াত করা যায় তাই দিল্লিকে রোম বললেও ভুল বলা হয় না। এরই মধ্যে সবে মিলে আবার কে কখন কার পাতলুনের দড়ি ধরে টেনে দেওয়া যায় সেই ফন্দি ফাঁদছে। প্রতিপক্ষের বিশ্বাসযোগ্যতা খানিক কমিয়ে দেওয়া গেলে খানকয়েক বেশি ভোট জুটতে পারে, এই আর কি! এর মধ্যে অন্য কোনো অভিসন্ধি, ওই জনগণ-টনগণ, ওইসব নেই। ... ...