আরজামাস বলে একটা শহর ছিল। ছোট্ট শহর, অনেক দূরের, অন্য মহাদেশে। অনেক ছোটবেলায় চিনে ফেলেছিলাম। ভৌগোলিক দূরত্ব টের পাইনি।টের পেতে দেননি আর্কাদি গাইদার নামের এক রুশ লেখক। মেদিনীপুর জেলার আদি ও অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টির নেতা, কিংবদন্তীপ্রতিম দেবেন দাস, আমার দিদিকে ছোটবেলায় একটি বই উপহার দিয়েছিলেন। বইটির নাম- 'ইশকুল'। লেখকের নাম আর্কাদি গাইদার ... ...
একদিন দুঃসাহসের পাখায় ভর করে,ছুঁতে চেয়েছিলাম কবিতার শরীর ... ...
তুমি ভালবাসতে চেয়েছিলে।আমিও । ... ...
১৯৮৩ র শীতে লয়েডের ওয়েস্টইন্ডিজ ভারতে সফর করতে এলো। সেই সময়কার আমাদের মফস্বলের সেই শীতঋতু, তাজা খেজুর রস ও রকমারি টোপা কুলে আয়োজিত, রঙিন কমলালেবু-সুরভিত, কিছু অন্যরকম ছিলো। এত শীত, এত শীত সেই অধুনাবিস্মৃত কালে, কুয়াশাআচ্ছন্ন পুকুরের লেগে থাকা হিমে মাছ অবধি ঘাই মারতে ভুলে যেত। মাইরি! বললাম বটে লয়েডের ওয়েস্টইন্ডিজ, আসলে সেই শীতের মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলো ম্যালকম মার্শাল নামের এক তরুণ ফাস্ট বোলার। কোণাকুনি দৌড়ে এসে বাঁহাত টা সামনে তুলে দ্রুত ডেলিভারি করতেন। হৃৎকম্পন শুরু হতো আপামর ভারতীয় দর্শক ... ...
প্রতিদিন পণ করি, তোমার দুয়ারে আর পণ্য হয়ে থাকা নয় ।তারপর দক্ষিণা মলয়ের প্রভাবে, পণ ভঙ্গ করে, ঠিক ঠিকখুলে দেই নিজের জানা-লা। ... ...
মহাভারতের কথা অমৃতসমান ২চিত্রগুপ্ত: হে দ্রুপদকন্যা, যজ্ঞাগ্নিসম্ভূতা পাঞ্চালী, বলো তোমার কি অভিযোগ। আজ এ সভায় দুর্যোধন, দু:শাসন, কর্ণ সবার বিচার হবে। দ্রৌপদী: ওদের বিরূদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই রাজন। ওরা ওদের ইচ্ছা কখনো অপ্রকাশ রাখেন নি। আমার অভিযোগ শুধুমাত্র আমার পঞ্চস্বামীর বিরূদ্ধে। চিত্রগুপ্ত: হ্যাঁ কৃষ্ণা, তোমায় দ্যূতক্রীড়ার পণ রাখা ওদের উচিৎ কার্য হয় নি। দ্রৌপদী: সে অভিযোগ থেকে তো আমি ওদের কবেই মুক্তি দিয়েছি। সেই দিন মনে রাখলে আমাকে পুনরায় অগ্নিতে প্রবেশ করতে হত। ... ...
রামপ্রসাদ সেনের কাছে আরও এক বার ফিরে আসা গেল। কার্তিকে যখন পুরোনো বাংলা বছর শেষ হতে চলেছে স্মরণোৎসব আর আকাশপ্রদীপে, সর্বস্বশৃঙ্খলে বাঁধা ইতিহাসের ভেতর থেকে একটি-দুটি ভূত হানা দেয়। ভূত মানে অতীতস্মৃতি যেমন, বিশ্বচরাচরে উপ্ত জীবনদায়ী মৌলও তো, ততটাই। কার্তিকের শেষে মাঠে থরে থরে ধান, দুর্গাসপ্তমীর কলাবউ স্নান থেকে সবুজের যে অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল, তা খানিক পরেই স্মৃতির খাতায় চলে যাবে। রামপ্রসাদকে, আবারও, ঠিক এই মোকামেই মনে পড়ে যায়। তাঁর নিদানটি সহজ: মন কৃষিকাজ জানে না। মানবজমিন যদি ... ...
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের অস্তিত্বকে ড্রয়িংরুমসাহিত্য-প্রিয় বাঙালি তাঁর জীবৎকালে বিশেষ মেনে নিতে পারেনি। সন্দীপনের ভাষা এবং বিষয়বস্তু দুটোই এর জন্য সমানভাবে দায়ী। সুনীলসাহিত্যের পাঠক সন্দীপন পড়তে গিয়ে যতিচিহ্ন থেকে যতিচিহ্নে হোঁচট খেত, রসভঙ্গ হয়ে যেত তাদের। কাউকে কাউকে বলতেও শুনেছি, "সন্দীপন আমি কেনই বা পড়ব! সহজ করে লিখতে পারাটাও সাহিত্যিকের একটা গুণ এবং সুনীল সেইদিক থেকে অনেক মহান লেখক!" সন্দীপনের মৃত্যুর পর এদিকে, তাঁর সেই ভাষা নিয়েই একচোট হইচই হয়েছিল বটে! আহাহা, সোনালী ডানার ঈগল, আহা ... ...
জেনিফার যেরূপ বলিয়াছিল শশী সেইরূপ সাজিয়া আসিয়াছেন। বিশুদ্ধ বাঙালির বেশ। গিলে করা সাদা পাঞ্জাবি ও সঙ্গে ধুতি। বাড়তি, একটি ওড়নাসম রঙিন উত্তরীয় রহিয়াছে।জেনিফারের অদম্য বায়না শশীকে শুনিতেই হয়। চলো শশী, কতকাল ক্যালকাটা যাই নাই। মনে পড়ে শশী, ওখানেই প্রথম দেখা, সেই স্টেজ, সেই গ্রিনরুম, যেখানে দোঁহে প্রথম দৃষ্টিপাত। কী করে জানিলে ডিয়ার, আমার প্রিয় ফুল, প্রিয় রঙ, প্রিয় চকোলেট ও কেক। বড় মিস করি শশী সেসব দিন। চলো, এইবেলা ক্যালকাটা যাই। জেনিফারের কথা ফেলিতে পারা যায় না। তথাপি ... ...
"ইনসাইড আস দেয়ার ইজ সামথিং দ্যাট হ্যাজ নো নেম,দ্যাট সামথিং ইজ হোয়াট উই আর। "হোসে সারামাগো, ব্লাইন্ডনেস ***হেলেন - ঘড়ির কাঁটাটাকে এক ঘন্টা বাঁয়ে হেলিয়ে দিলে, সৌম্য তখনও বসেছিলো শিখরের পাশে। বাইরে একটা ভ্যাপসা গরম ছাড়ছে। জানালার নিচে হানিসাকলের ভারি উগ্র মিষ্টি গন্ধ ফ্লাই স্ক্রিনের মিহি জালি ভেদ করে ঢুকতে চাইছে নাছোড়বান্দা। ধাপে ধাপে নিচে নেমে যাওয়া বুরিম অ্যাভেন্যুর ওদিকে চীৎকার করছে রোদ। এখান থেকে আকাশ দেখা যায় না । ... ...
সেকালে কাঁসাই নদীতে 'সুতি' নামের একটা খেলা প্রচলিত ছিল। মাছ ধরার অভিনব এক পদ্ধতি, বহু কাল ধরে যা চলে আসছে। আমাদের পাড়ার একাধিক লোক সুতি খেলাতে অংশ নিত। এই মৎস্যশিকার সার্বজনীন, হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ে জনপ্রিয়। মনে আছে ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় একদিন নদীর কাছে গিয়ে দেখি আমাদের পাড়ার প্রতিবেশী জনাব রাজা সুতিতে একটি মাঝারি রুই তুললেন। মাছটিকে খেলিয়ে টেনে তুলে এনে মাছের খাবি খাওয়া ঠোঁট মুখের কাছে নিয়ে কীসব অদ্ভুত মন্ত্র বিড়বিড় করে জপতে লাগলেন। এইসব লোকাচার খেলারই অঙ্গ।যাই হোক, এবার নবমী ... ...
আজকে সরাসরি গুল গল্পতে চলে যাই। যাবার আগে দুটো কথা। কেউ কেউ লিখছেন মুখার্জি কমিশনে কী বলা হয়েছিল? কোন আমেরিকান গ্রাফোলজিস্ট এর রিপোর্টে কী আছে দেখেছেন কিনা? ইত্যাদি কিছু প্রশ্ন। আমি আগেও বলেছি আবার বলছি যে আপাতত মেনেই নিচ্ছি, যে গুমনামি বাবা যিনি নিজেকে নেতাজী বলে দাবী করছেন বা গুমনামি বাবা যাকে অনুজ ধর নেতাজী বলছেন তিনিই নেতাজী, এবার সেই গুমনামি ওরফে নেতাজী ওরফে ভগবানজী বা মহাকাল নিজের মুখে যা যা বলে গেছেন, সেগুলো কতখানি বিশ্বাসযোগ্য সেটাই কেবল আলোচনা করছি। গতকালই ... ...
আজ শুরুতেই একটু ইতিহাস নিয়ে চর্চা হোক। গুমনামির গুল গল্পে পরে আসছি। কেউ একটা বই লিখে দিলেই সেটা ইতিহাস হয়ে যায় না। অযোধ্যায় রাস্তায় অনেক চটি বই পাওয়া যায়, সেখানে অমুক সন্ত তমুক মহারাজ রাম ঠিক কোন জায়গায়, কবে কোন মুহূর্তে জন্ম নিয়েছিল,তার বিবরণ আছে। অবশ্যি নানান বই তে নানান বিবরণ। তাতে কি? তাদের সবাই দাবী করেন যে ঘোড়ার মুখ থেকে বার করা তথ্য, এসব বলে গেছেন অমুক মহারাজ, তমুক মহারাজ। এদের আবার নিজেদের মধ্যেও রোজকার ক্যাঁচাল। যেমন ঝগড়া গুমনামির ফলোয়ারদের মধ্যেও। একদল বলে ... ...
CONUNDRUM বই এর একটা মজা হল গুজব, মিথ্যে আর মাঝে মধ্যে ইতিহাস বলার একটা ভনিতা কে বজায় রাখা। যেখানে গুমনামি বাবা বলছেন উনি হো চি মিন কে যুদ্ধ শেখাতে গিয়েছিলেন, তার পরেই বলা হচ্ছে কে কে কখন গুমনামিবাবা কে হ্যানয় এ দেখেছেন, এরকম কে কে রাশিয়া তে দেখেছেন তার কথা আছে, কে কে চীনে দেখেছেন সেই গল্পো আছে, কখন তাকে বাঙলাদেশে দেখা গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রমাণ করার চেষ্টা যে গুমনামি বাবা যা বলছেন তার কিছুটা হলেও সারবত্তা আছে। এবং এসব গুজব নতুন নয়। নেহেরুর শেষকৃত্যের সময় ইনি ... ...
কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন যে এই গুমনামি র সঙ্গে আর এস এস - বিজেপির সম্পর্ক টা কোথায়?তাহলে একটু ইতিহাস দেখে নেওয়া যাক। ২২ ডিসেম্বর ১৯৪৯, রাত ৩ টের সময় আযোধ্যার আকাশে বিদ্যুৎ চমকালো। এবং বিদ্যুতের চেয়েও বেশি বেগে খবর পৌঁছে গ্যালো "রামলালা নিজেই অবতীর্ণ হলেন তাঁর জন্মভূমীতে", বাবরি মসজিদ কে ঘিরে সেখানকার হিন্দু সাধুদের যে দাবি ছিল তা হয়ে উঠল আর এস এস হিন্দু মহাসভার দাবী। সেই থেকে শুরু মন্দির ওঁহি বানায়েংগের আন্দোলন। আসল ঘটনা জানার পর পরেরদিন ই অযোধ্যা থানার ... ...
গুমনামি = নেতাজী = মহাকাল = গুমনামি। আমি বলছিনা একথা বলেছেন অনুজ ধর এবং তাঁর বই এ একে একে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে উনিই নেতাজী । তর্কের খাতিরে আমি মেনে নিয়েছি যে উনিই নেতাজী। তারপর গুমনামি বাবা যা বলেছেন (অনুজ ধর এর বই তেই মাত্র যা আছে) তা নিয়ে আলোচনা করছি, সঙ্গে কোন পাতায় তা লেখা আছে সেটাও উল্লেখ করছি। বই এর শেষ অধ্যায় এ তিনি একটা escape route রেখেছেন এই বলে যে উনি Post Trauma Stress Disorder এর রোগি ছিলেন, তাই মাঝে মধ্যে hallucinate (ভুলভাল দেখা বা শোনা) ... ...
অনুজ ধর আবার বলেছেন যে গুমনামি বাবা নেতাজী। আমরাও আপাতত মেনে নিচ্ছি উনি নেতাজী। আমাদের প্রশ্ন কেবল এই যে নেতাজী কি এইসব উদ্ভট গালগল্প বলতে পারেন? পাঠকরা খেয়াল করুন বিরিঞ্চি বাবার মত বা আমার মতে তার চেয়েও বড় এই জোচ্চর এই গুমনামি ওরফে মহাকাল ওরফে নেতাজী এক জায়গায় বলছেন “তিনি মুক্তি বাহিনী তৈরি করতে চান, যে বাহিনীতে মুসলমান আর কমিউনিস্ট রা থাকবেনা!” (পাতা ৩৮৫-৩৮৬) মরে গেলেও এই কথা নেতাজীর মুখ দিয়ে বের হবে এ কথা কোনো বাঙালি বিশ্বাস করতে পারে বলে আমার মনে হয় না, যদি না ... ...
আগেই বলেছি যে CONUNDRUM বইতে অনুজ ধর যেভাবে, যা যা যুক্তি দিয়ে গুমনামি বাবা কে নেতাজী বলে প্রমাণ করতে চেয়েছেন, আপাতত তার সবটা মেনে নিয়ে ধরে নিচ্ছি যে গুমনামি বাবা নেতাজী, নেতাজী গুমনামি বাবা। এবার সেই নেতাজী ওরফে গুমনামি বাবা ঐ বই তেই যা যা বলেছেন পাতা ধরে ধরে সেটাই তুলে ধরছি এবং পাঠকদের জিজ্ঞেস করতে চাইছি যে এই অর্বাচীনের মত কথা বলা কি নেতাজীর পক্ষে সম্ভব? আমি মনে করি অত্যন্ত নিম্নস্তরের জোচ্চরের পক্ষেই এভাবে এই কথাগুলো বলা সম্ভব। গত অধ্যায়ে আমরা দেখেছিলাম ... ...
আগের পর্বে দেখেছিলাম গুমনামি ওরফে নেতাজী ১৯৪৯ সালে চীন চলে আসছেন। আসার আগে নিকিতা ক্রুশ্চেভ এর সঙ্গে বসে অপেরা দেখে ফেলছেন (পাতা ৭৪০)। দেখে “দাশভাদানিয়া” মানে বিদায় বন্ধু বলে চীন চলে গেলেন। সেই বছরেই পয়লা অক্টোবর পিপলস লিবারেশন আর্মি মাও এর নেতৃত্বে চীনের ক্ষমতায়। তো ঠিক সেই সময়েই মাও এর সঙ্গে মোলাকাৎ হয়েছিল কিনা তা কিন্তু গুমনামি বাবা বলেন নি। অবশ্য নিকিতা র কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তিনি চীনে গেলে মাও এর কাছেই তো যাবেন। মোদ্দা কথা হল, দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে গেল। উনি মা ... ...
যদিও সরকারি ডিএনএ আর হাতের লেখা পরীক্ষায় ডাহা ফেল, কমিশনের রিপোর্টে clinching evidence নেই বলে পরিস্কার জানানো হয়েছে, যদিও নেতাজী পরিবারের অধিকাংশ সদশ্য বিরোধিতা করেছেন, যদিও আই এন এ র প্রায় কেউই মেনে নেন নি, যদিও ফরোয়ার্ড ব্লক দলের কেউই মেনে নেন নি তবুও আসুন তর্কের খাতিরে মেনে নিই যে CONUNDRUM বই এর লেখক যা প্রমাণ করতে চেয়েছেন তা সঠিক। অর্থাৎ নেতাজীই গুমনামি বাবা অথবা গুমনামি বাবাই নেতাজী। তাহলে এই বই এ সবথেকে সত্যি কথাগুলো কী ? কমিশন, প্রমাণ, তথ্য, এসব বাদ দি ... ...