জীবন যেদিকে নিয়ে যায় ... ...
"আ-আই হ্যাভ আ কোয়েরি।" মা তাকাল আমার দিকে। "তোমাদের… ডিভোর্স হল ফর দিস রিজন?” "মেনলি। একবার ওকে না বলে একটা এনজিওতে ডোনেট করেছিলাম বলেও প্রচুর ঝামেলা করেছিল।... আরও কিছু খুচরো প্রবলেম ছিল। তবে সে সব কম বেশি সব ফ্যামিলিতেই থাকে। তবে ওই… সব যোগ হয়ে ব্যাপারটা ক্রমশ পয়েন্ট অফ নো রিটার্নের দিকে চলে গেল। দুজনেই বুঝতে পারছিলাম কোনও টান আর নেই আমাদের মধ্যে। মিউচুয়াল ডিভোর্স হয়ে গেল। তুই তখন ছোট, ক্লাস ফাইভ, তাই আমিই তোকে পেলাম। তোকে আঁকড়েই বাঁচতে চেয়েছিলাম, কিন্ত…." ... ...
জীবন যেরকমই হোক ... ...
ছেলেটার মোবাইল বেজে উঠেছে। "হ্যাঁ স্যার বসিয়েছি… ঠিক আছে।" ফোন রেখে ছেলেটা বলল, "ওনারা ভিআইপি রোডে জ্যামে আটকে গেছেন। আপনাদের কোল্ড ড্রিংকস দিতে বললেন।" তৃষা বলল, "একটু খাবার জলও দেবেন।” ছেলেটা পাশের ঘরটায় ফিরে যেতেই স্বর্ণালীর প্রশ্ন, "ওনারা মানে কারা?" খোঁচা বলল, "আর একটু অপেক্ষা কর।" "না। ওনারা কারা? ডু উই নো দেম?" "জানি তোর অনেক প্রশ্ন আছে, বাট প্লিজ আর একটু ওয়েট কর,” বলল তৃষা। ... ...
প্রকাশকের সন্ধানে শুরু করছি আমার উপন্যাস ... ...
তার পরেরদিন সকালে আবার মা উঠিয়ে দেয় ঘুম থেকে, তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নিতে বলে, ভর্তি হতে যেতে হবে। আমি অবাক হয়ে ভাবি হিন্দু গার্লস কি এত সকালে ভর্তি নেবে? ওদের তো দুপুরে স্কুল, কিছু জিগ্যেস করার আগেই দাদু আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, সেই ভাগাড়পাড়ার স্কুলের দিকেই যাই আমরা। দাদু আমাকে নিয়ে ‘বালিকা শিক্ষা সদন জুনিয়র হাই' স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়, বিলবইতে লেখা ছিল নামটা, ইরাদিদিমণি হেডমিস্ট্রেস। কিন্তু এখানে কেন সেটা যদি কেউ একটু বুঝিয়ে দিত! জানুয়ারী মাসে তো তেমন ক্লাস হয় না, রোজই প্রায় দশটায় ছুটি। আমি বাড়ী ফিরে দেখি শুভ্রা, রিঙ্কু, শর্বরী, মিঠু, সাতুরা এ ওর বাড়ী গিয়ে ডাকাডাকি করে একজায়গায় হয়, তারপর একসাথে খুব মজা করতে করতে যায়, ইলু, শীলুও হীরালাল পালে ভর্তি হয়েছে এই বছর, ওরাও যায়। ওদের স্কুলে রোজ ড্রেস পরতে হয় না, বেশীরভাগ দিন ওরা পরিস্কার এমনি জামা পরে স্কুলে যায়, মাঝে মধ্যে সবুজ-সাদা স্কুলড্রেস পরে। আমার তো আর ওদের সাথে হইহই করে যাওয়া হয় না, আমি থেকে যাই ভাগাড়পাড়া স্কুলে ফেলের মধ্যে ফার্স্ট হয়ে। ... ...
"হোয়াট কাইন্ড অফ ড্রামা ইস দিস?" "আরে বাবা বেশিক্ষণ না,” খোঁচা বলল, “এ ড্রামা চলবে খুব বেশি হলে এক থেকে দেড় ঘন্টা।" "কী করতে চাইছিস?” “মেয়ে পাচারের বিজনেস শুরু করেছি। তোকেই ফার্স্ট পাচার করব।” হাত বাড়িয়ে খোঁচার মাথায় চটাস করে মারল স্বর্ণালী। “মারছিস কেন? ভাল লোকের কাছেই বেচব তোকে। ভেরি রিচ, তোকে সোনায় মুড়ে রাখবে।” এবার স্বর্ণালী খোঁচার চুল ধরে জোর টান দিল একটা। “এমন করলে কিন্তু কোনও গরীব লোকের কাছে বেচে দেব, তাতে যা লস হয় হবে,” বলল খোঁচা। অভিষেক হেসে উঠল। "খোঁচা থাম... ভয় পাস না সোনা," বলল তৃষা। ... ...
"চার জন আলাদা হয়ে খুঁজতে হবে, এক সাথে না," খোঁচা বলল। বলে একটু সরে দাঁড়াল, দোকানে আসা এক ভদ্রলোককে জায়গা করে দিতে। বছর ৫৫-র ভদ্রলোকের গায়ে ব্রাইট নীল রঙের শার্ট আর ফেডেড জিন্স, স্পোর্টস জুতোটা বেশ নামী কোম্পানির। পান কিনে ভদ্রলোক দোকান থেকে বেরিয়ে গেলেন। "সেই লোকটা," অভিষেক ফিসফিস করে বলল। "কোন লোকটা?" তিন জন প্রায় এক সঙ্গে জিজ্ঞেস করলাম। "আন্টির সঙ্গে যে লোকটা কথা বলছিল।" "তুই সিওর?" বলল তৃষা। "তাই তো মনে হচ্ছে, এই রকম ব্লু শার্টই ছিল ওনার গায়ে, প্যান্টটাও তো সে রকমই।" ভদ্রলোক হেঁটে যাচ্ছেন সামনে। একটা তিন তলা সাদা বাড়ির গায়ে একটা গ্যারাজ, সেখানেই ঢুকে গেলেন। ... ...
"কী বুঝলি?" বিশেষ কাউকে উদ্দেশ্য না করেই জিজ্ঞেস করল অভিষেক। ফোন থেকে চোখ না তুলে সারাক্ষণ কী করে থাকে ছেলেটা! "বোঝাবুঝির ব্যাপার নেই," বলল তৃষা, "দেখতে হবে সোনা নিজে কী চাইছে।” "কী চাইছে মানে?" আমি বুঝলাম না। খোঁচা বলল, "ও চাইছে কাকিমা প্রেম করছেন কি না সেটা যেন আমরা জানার চেষ্টা করি।" "আমরা কী করে জানব? স্বর্ণালী নিজেই জানে না।" আমি বললাম। তৃষা কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, তার আগেই স্বর্ণালীর মোবাইল বেজে উঠল। আন্টি ফোন করছেন।তৃষা ফোনটা নিয়ে রান্নাঘরের দিকে চলে গেল। "নির্ঘাত দেরি করে ফিরবেন, ওইখানে যাবেন,” বিরক্তির সঙ্গে বললাম। খোঁচা বলল, "তোর তাতে কী প্রবলেম?" আমি রেগে গেলাম। "আমার কী প্রবলেম মানে? আমি স্বর্ণালীর প্রবলেমকে আমি নিজের প্রবলেম বলে মনে করছি, তাই আমার গায়ে লাগছে।" ... ...
মে মাসের শেষের দিকে ইয়াশ নামক সাইক্লোন আসবে শোনা যাচ্ছে।ট্রপিক্যাল ডিস্টার্ব্যান্স। কিন্ত আরো বড় ডিস্টার্ব্যান্স আছে। আড়ালে আবডালে নয়। প্রকাশ্যে। পশ্চিমবঙ্গে ভোট আসছে। ভোট এলেই সুনন্দিতার ভীষণ টেনশন হতে থাকে। ইতিমধ্যেই ইলেকশন কেন্দ্র করে শীতলকুচিতে ফায়ারিং ও হত্যাকাণ্ড ঘটে গেছে। দিনহাটা থেকে শীতলকুচি আর কতটুকু দূর। ... ...
শারদ পূজায় জ্যান্ত প্রতিমার মজা আছে - কিন্তু প্রেস্টিজ পাংচারের ভয়ও থাকে... ... ...
মেঘলা মেদুর দিনে এক ব্যাংবাজির গল্প হয়ে যাক। ... ...
এই হাই রেস্ট্রিকটিভ ট্রিপল লকডাউন মোড চালু হবার আগেই অনিলের জীবনে তিনটি বেদনাবৃত্তান্ত ঘটে গেছে। অদিতির মৃত্যু। জনাথন চলে গেছেন। মারা গেছেন ফাদার ম্যাথ্যু। যিনি সুখে দুঃখে এই পরিবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। অনিলের সুস্থতা উপলক্ষ্যে, হোম কোয়ারানটাইন থেকে মুক্তি উপলক্ষ্যে যে ছোট্ট গ্যাদারিং হয়েছিল, ফাদার ম্যাথ্যু সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ... ...
মহাভারত মহাসাগর ছেঁচে বিভিন্ন মনিমুক্তো তুলে আনার প্রয়াস৷ বিভিন্ন চেনা, অচেনা গল্পের সমাহার এই ধারাবাহিকে৷ ক্রিটিকাল থেকে ভালগেট, সব গল্পই উঠে এসেছে৷ ... ...
সবকিছু ঘুরেফিরে যে কেন একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতেই ফিরে আসে ! কোভিড হানা দেবার আগে কে কবে এসব ভেবেছিল! সে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে। ত্রিদিবের বাড়ি আসার কথা দুদিন পরে। কী অগাধ আরামের মেজাজ সারাবাড়ি জুড়ে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন স্বাভাবিক হয়েছে ত্রিদিবের। তবে সিডেটিভ চলছে।ঘুমোচ্ছেন। ... ...
সোনার মুখে প্রশ্রয়ের মৃদু হাসি, অস্ফুট স্বরে বললেন, “পাগল, সত্যি সত্যিই আমার এ ছেলেটার মাথায় পোকা আছে!” ... ...
আজকের বাংলার পরিস্থিতিতে এ গল্পটা মনে পড়ল। ... ...
নাগরনো কারাজাখের যুদ্ধে যে আর্মেনিয়ানরা পালিয়ে এসে শরণার্থী হয়ে রাজধানীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বারো ঘন্টা শিফ্টে কাজ করে তাদের ভারতীয় রান্না করা খাবার, পিওর ইন্ডিয়ান ফুড সরবরাহ করছে পারভেজ আর তার পরিবার। ... ...
আরো একবার ঝড় এলে হুগলি নদী নোণাজলে ডুবে যাবে। ফ্লাড শেল্টার তৈরি হতে শুরু হয়েছে আবার। এই মানুনগুলির অভ্যেস হয়ে গেছে বাড়িঘর ডুবে গেলে শেল্টারে চলে যাওয়া। পরিবার, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি সব কিছু নিয়ে উঠে যাবে। কিছু মরবে। কিছু টিকটিক করে বাঁচবে। রূপম একটা ঝাঁকুনি দেয় ওকে। ... ...