যাচ্ছি উত্তরাখণ্ডে, আমরা তিনজন। আমি, অমিতাভ দা আর তিতলি। প্ল্যান কিছুটা এইরকম – দিন দশেকের আশ্রমিক জীবন কাটানো। প্রথমে আলমোড়া, তারপর মায়াবতী, আর সবশেষে শ্যমলাতাল। প্রথম ও শেষ জায়গায় আমাদের ঠিকানা হবে রামকৃষ্ণ মিশনের দুটি আশ্রম; আর মায়াবতীতে নিশিযাপনটুকু বাদ দিলে বাকি সময়টা কাটবে অদ্বৈত আশ্রমে। ... ...
ঋষিকেশকে বিদেশীদের মধ্যে আরো জনপ্রিয় করেছে ষাটের দশকের শেষদিকে বিটলসদের এখানে আগমন। বিটলসরা এসেছিলেন মহেশ যোগীর কাছে 'ট্রান্সেন্ডেন্টাল মেডিটেশন' শিখতে। আশ্রমটা ছিল সরকারের থেকে লিজে নেওয়া জায়গা। লিজ শেষ হয়ে যাবার পর পুরো আশ্রম পরিত্যক্ত হয়ে যায় এবং প্যান ট্রিনিটি দাসের মত হিপি শিল্পীরা ঢুকে ভাঙা বাড়িগুলোর সর্বত্র গ্রাফিত্তি করে যেতে থাকে। এতদিন রাজাজী জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল ধীরে ধীরে খেয়ে নিচ্ছিল আশ্রমের ভাঙা ঘরবাড়ি। সরকার জায়গাটা ঘিরে দিয়েছে যাতে বন্য জন্তু না ঢুকে পড়ে। কিছু কিছু বাড়ি সারানো হয়েছে। ... ...
নেদারল্যান্ডস বা হল্যান্ডের কথা বললে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা তো মাথায় আসেই, তার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায় অ্যানা ফ্র্যাঙ্কের কথাও। ক্লাস সেভেন বা এইটে কোনোভাবে হাতে এসেছিল সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অনবদ্য অনুবাদে ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরী’। আমারই বয়সী একটি মেয়ে, যে বয়সে আমরা স্কুলে যাচ্ছি, ক্রিকেট-ফুটবল খেলছি, কেউ আঁকছি, কেউ গান গাইছি, কেউ বা তবলায় হাত পাকাচ্ছি, সেই বয়সেই, অ্যানা নামের একটি মেয়ে লুকিয়ে পড়েছে অন্ধকার ঘরে, বাইরে বেরনো বন্ধ, স্কুলে যাওয়া, বন্ধুদের সাথে দেখা করা, খেলাধূলা, এমনকি গান-বাজনা পর্যন্ত বন্ধ, পাছে কেউ দেখে না ফেলে, পাছে কেউ শুনে না ফেলে। বাড়ির বাইরে থেকে বোঝার কোনো উপায় নেই যে ভেতরে কয়েকটা গুপ্ত ঘরে লুকিয়ে রয়েছে আটটা তাজা প্রাণ (ডুসেল, আরেক প্রতিবেশী অবশ্য পরে যোগ দেন)। পড়তে পড়তে আনা-র সঙ্গে যেন আমিও ঢুকে পড়েছিলাম সেই গুপ্ত কক্ষে, ভাগ করে নিচ্ছিলাম অজানা আশঙ্কার মুহূর্তগুলো! ... ...
তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়া গেল ঘন্টা খানেকের মধ্যেই। রুমের বাইরে পা রাখতেই বোঝা গেল, ইট'স কুল। কুল মানে একেবারে মহাকুল।বিশ্বকুল। বাপ্রে কুল। একে তো ছয় ডিগ্রি, তায় আবার কুয়াশা। কনকনে ঠান্ডা হাওয়া। কয়েক মিনিটেই জ্যাকেট, সোয়েটার, উলিকটের গেঞ্জি ভেদ করে কাঁপিয়ে দিল একদম। ... ...
হাঁটতে হাঁটতে হুট করে চোখে পড়ল ধবধবে সাদা এক দালান। দেখেই বুঝা যায় গথিক স্থাপনার এক অনন্য নজির এই দালান। কাছে গেলাম, দেখি সেন্ট পল ক্যাথিড্রাল। অপূর্ব সুন্দর গির্জা। আমার মফস্বল চোখ এত সুন্দর স্থাপনা খুব কমই দেখেছে। রনি, মজার কথা হচ্ছে গির্জায় ঢুকতে টাকা নিলো! কেমন বেশরিয়তি কারবার! মানুষ ঠিকমত ধর্মকর্ম করতে পারবে না? গির্জায় যেতে টাকা নিবে? দশ টাকা দিয়ে ভিতরে ঢুকলাম। সিনেমায় যেমন চার্চ দেখি আমরা তেমন একটা চার্চ। দা ভেঞ্চি কোডের শুটিং করা যাবে চোখ বন্ধ করে। আমি ভিতরে গিয়ে বসলাম। অল্প কিছু মানুষ। নীরবে প্রার্থনা করছে। মনে হল একজনকে জিজ্ঞাস করি যে উনিও দশ টাকা দিয়ে প্রার্থনা করতে আসছেন কি না। কিন্তু তা আর করা হয় নাই। আমি দেখি সারি সারি যে চেয়ার গুলো বসানো তার উপরে মুখোমুখি করে বড় বড় চেয়ারের সারি। দুই পাসেই আছে এমন। এবং সবচেয়ে দারুণ ব্যাপার হল এখানে এখনও ব্রিটিশ আমলের চিহ্ন ধরে রেখেছে। সমগ্র ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রধান প্রধান শহরের চার্চ প্রধানদের জন্য সংরক্ষিত জায়গা এগুলা। লাহোর, বোম্বে যেমন আছে তেমনই ক্যালকাটার পাসেই লেখা ডাক্কা! প্রতিটার জন্য আলাদা আলাদা পতাকা আছে। দারুণ লাগল দেখে। ... ...
উত্তরাখন্ড বেড়াতে গিয়েছিলাম ডিসেম্বরের ছুটিতে, তারই টুকিটাকি ঘটনা ... ...
আমাদের ঘুরে বেড়ানো। ... ...
লক্ষ্য করে দেখেছেন কি যে ইংরাজীতে এর বানান ‘Whiskey’ এবং ‘Whisky’ এই দুই ভাবেই লেখা হয় – মানে একটা ‘ই’ এর তফাত! টাইপো ভাবছেন বা ভাবছেন আমেরিকান ইংলিশ? না, আদপে ব্যাপারটা তা নয়। মনে রাখবেন এটা কোন আইন নয়, কিন্তু হুইস্কির ইতিহাসে আগে একটা কাষ্টম ছিল যে, ‘Whisky’ লেখা হত স্কচ্, কানাডিয়ান এবং জাপানীজ হুইস্কির জন্য। আর ‘Whiskey’ লেখা হত আইরিশ এবং আমেরিকার হুইস্কির ক্ষেত্রে। কিন্তু আজকাল অবশ্য সেই কনভেনশন আর মেনে চলা হয় না – ... ...
এরপর গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে খাজ্জিয়ারের ফটকের বাইরে ছেড়ে দিলেন। পুরো রাস্তাটা নির্জন থাকলেও এই জায়গাটায় একেবারে গাড়ির এবং মানুষের মেলা বসে গেছে। খাজ্জিয়ার একেবারে প্রাকৃতিক একটা গড়ের মাঠের মত। চারদিক কালাটপ বনাঞ্চলের পাইন দিয়ে ঢাকা। বৃষ্টির জল জমে মাঝখানে একটা ছোট হ্রদ। সেখানে অবশ্য এখন গরমকালে বড় বড় মানুষসমান ঘাসের ঝোপ জন্মেছে। বর্ষাকালের পর আবার জল বাড়বে ঘাসের ঝোপ ঢেকে যাবে। শীতকালে এই উপত্যকা বরফে ঢেকে যায়। কিছু থাকার জায়গাও হয়েছে এখন খাজ্জিয়ারের কাছাকছি। ... ...
উখীমঠের কিছু আগে থেকে রাস্তার চড়াই শুরু হল। এখান থেকে গুপ্তকাশীর রাস্তাও চলে গেল নদী পার হয়ে ওপারে। কেদারের পথ ঐদিকেই মন্দাকিনী বরাবর। এপাশ থেকে আমরা দেখলাম অপর পাশে পাহাড়ের গায়ে স্তরে স্তরে বাড়ি-ঘর নিয়ে সেজে ওঠা গুপ্তকাশী, ঠিক যেন কেউ আঠা দিয়ে খেলনা কিছু ঘরবাড়ি বসিয়ে দিয়েছে, এমন ঝুলে আছে বলে মনে হচ্ছে সেগুলো! আর পাহাড়ের গায়ে ধাপে ধাপে চাষ-বাসের উদ্যোগ। সবুজ উপত্যকা মাঝে মাঝেই বেশ কিছুটা পাহাড়ি ঢাল জুড়ে। আমরা ফেরার পথে উখীমঠ দেখবো, এখন সোজা চোপতা যেতে হবে। উখীমঠ থেকে চোপতার রাস্তার সৌন্দর্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। অপরাজিত-এ অপুর প্রণবকে লেখা চিঠির কথা মনে পড়ে “I enter it by the Ancient way, Through the Ivory Gate and Golden”! এই পথ ঐতিহাসিক পথ, এই পথ পুরাণের-ও পথ। ইতিহাস আর পুরাণ এসে মিলে যায় যেন এই পথে। শিব মহিষের রূপ ধরে পালিয়ে বেড়ান পঞ্চকেদারের পথে, পঞ্চপান্ডব তাড়া করে ফেরেন তাঁকে ধরবেন বলে, উমাপ্রসাদ, প্রবোধকুমার, জলধর সেনরা জীবনকে নতুন করে খুঁজে বেড়ান, মানুষ দেখেন, ইতিহাসকে জানার চেষ্টা করেন, জানিয়ে দেন আমাদের। আর আমরা ফিরে ফিরে এসে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করি সেসব বারবার, মানুষ, ইতিহাস, পুরাণ আর সর্বোপরি হিমালয়ের অতুলনীয় সৌন্দর্য-সম্পদ। তীর্থযাত্রার বা ধর্মকর্মের উদ্দেশ্যে বের হইনি, কিন্তু হিমালয় নিজেই যে তীর্থ, সে স্থান-মাহাত্ম্যে আর সৌন্দর্যে প্রতি মুহূর্তে মালুম হয়। ... ...
সকাল নটার সময় বন্দুক পাহাড়ে একগাদা জাদু ,হাতসাফাই দেখানোর দোকান। এটা মূলত বাচ্চাদের সময় কাটানোর জায়গা বোঝা গেল। বেশিরভাগ তামাশার দোকান তখনো খোলেনি। চাঁদমারিতে সাজানো ছিল রংবেরঙের বেলুন। পাশে দু তিনটে খেলনা বন্দুক সাজিয়ে রাখা। দোকানের লোকজন সেগুলোতে ছররা ভরছে। নীচের ম্যাল থেকে বন্দুক পাহাড়ে রোপওয়ে চলে। সেটাও এখনো চালু হয়নি। কুকুরগুলো কুয়াশাঘেরা মেঝেতে শুয়ে ঘুমোচ্ছে। ... ...
ট্রেন থেকে কিছুই মরুভূমি দেখা গেল না। স্টেশন থেকে বেরোতেই যেটা সহজেই বোঝা গেল - জায়গাটা বেশ নোংরা। অথচ জয়পুর উদয়পুরের মত এখানেও প্রচুর জার্মান আর অন্যন্য ইউরোপীয় পর্যটকদের ভিড়। সকালবেলা রাস্তাঘাট সরু , নোংরা এবং ঘিঞ্জি। কিছুদূর হেঁটে গেলে যোধপুরের বিখ্যাত ঘন্টাঘর। তাকে ঘিরে যোধপুরের প্রধান বাজার। সকালবেলা পেঁয়াজ কচুরি আর দুধের চা। কচুরির পুরের ভেতর পেঁয়াজ ছড়ানো থাকে বলে এরকম নাম। ... ...
ওড়িশার হেরিটেজ গ্রাম রঘুরাজপুরে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করে পটচিত্র তৈরী হয়। পুরানো কাপড়ের টুকরো তেতুলের বীজের গুঁড়ো ও কৎবেলের আঠার মিশ্রনের মাধ্যমে বিশেষ ভাবে তৈরী পাট্টার উপর প্রথমে চক এবং আঠার মিশ্রণে আঁকা হয় । ... ...
আইজল যাবার জন্য সড়কপথ নয় আকাশপথই শ্রেষ্ঠ। সস্তা এবং সময় সাশ্রয়ী। হাফলং থেকে আইজল যাওয়ার প্ল্যান করাটা আমার একেবারেই ঠিক হয় নি। মিজোরাম বেড়াতে গেলে খ্রীস্টমাসের সময় না যাওয়াই ভাল কারণ এই চার পাঁচদিন প্রায় গোটা রাজ্যই ছুটি কাটায়। যদিও আইজল শহরের আলোকসজ্জা বা উৎসবের আবহ সত্যিই চমৎকার। মিজোরাম যথেষ্ট বড় রাজ্য। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গার দূরত্বও যথেষ্ট আর রাস্তার অবস্থাও সর্বত্র ভাল নয়। অনেক জায়গায় রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। ফলে হাতে অন্তত এক সপ্তাহ নিয়ে না এলে বিশেষ কিছু দেখা হবে না। প্রকৃতি ঢেলে সাজিয়েছে মিজোরামকে, তাকে দেখার জন্য সময় নিয়ে আসতে হবে। ... ...
#একাকী_ভ্রমি_বিস্ময়ে ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ৮ … এটাকে চান্দেরী ভ্রমণ বৃত্তান্তের পুনশ্চঃ বলা যায় ....আমার প্রশ্ন শুনে করণ করুন ভাবে আমতা আমতা করে। করণের মতো মানুষের জীবনে বিশেষ কিছু না জেনেও দিব্যি চলে যায় তাই যেখানে এতদিন আছে সেই স্থানের নামটির তাৎপর্য জানার কৌতূহলও হয়নি ওর। শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত কোট - যা রোমিও জুলিয়েট না পড়েও কোথাও উদ্ধৃতি পড়েই জেনেছি - “What's in a name? That which we call a rose by any other name would smell just as sweet.” মনে হয় এমন খামচা মারা জানার আগ্ৰহ ওর নেই। ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ১১ … আমার চেহারা, পোষাক, হাবভাবে প্রথাগত ভক্তসূলভ ছাপ নেই। হয়তো সে জন্যই মুখ্যবাবা জানতে চান, এভাবে কষ্ট করে আশ্রমে থাকতে চান কেন? সুরয়ায়াতে লাল্লুকে দেখানো বেড়ালটা আবার ঝোলা থেকে বার করি। এমন যাত্রায় সেটাকে অনেকবার বার করতে হয়েছে। তবে বেড়াল দেখেও বাবা লাল্লুর মতো প্রভাবিত হলেন না। বাবার মুখভাব ক্রনিক আমাশা রুগীর মতো অপ্রসন্ন। তবু স্বরে কয়েক আউন্স সেন্টিমেন্ট মাখিয়ে বলি, যদি রাতটা এখানে কাটাতে আসি, মোহনী মহারাজের কৃপা থেকে বঞ্চিত হবো না তো? মূখ্যবাবা হয়তো এমন ছিনে জোঁকের পাল্লায় আগে পড়েন নি। নিস্তার নেই দেখে নিমরাজি ভঙ্গিতে অস্পষ্ট ভাবে মাথা নাড়েন। সেটাই আমি ভিসা অন এ্যারাইভালের প্রতিশ্রুতি ধরে নি। প্ল্যান-এ বস্তির টাইমকলের লাইনে বালতি রাখার মতো আশ্রমের যজ্ঞশালার বুড়ি ছুঁয়ে থাকে। আমি জোড়হস্তে নমস্কার করে বিদায় নিই। হোবো শৈলীতে ঘুরতে হলে গাত্রচর্মটা নাসিকাশৃঙ্গী প্রাণী গোত্রের ভাবলে কোনো সমস্যা হয় না। ... ...
ইতিমধ্যে ভারত স্বাধীন হবার পর পাশ্চাত্যের আধুনিকতা , কিউবিজম , বিমূর্ত [abstract] ইত্যাদি ভাবধারা আবার ভারতের শিল্পে ঢুকতে শুরু করে। এই সময় দিল্লি , কলকাতা , মাদ্রাজ এবং বোম্বাইয়ের মত বড় শহরগুলোতে শুরু হল প্রোগ্রেসিভ শিল্পীদের সঙ্ঘ। ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করল রঙের ব্যবহার। ছবি অনেক উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ... ...
রুদ্রপ্রয়াগ থেকে অগস্ত্যমুনির দিকে গাড়ি এগনোর সাথে সাথেই চারপাশের পাহাড়গুলো কেমন হঠাৎ ক’রে উঁচু হতে হতে আকাশ ছুঁয়ে ফেলছিল, ঘিরে ফেলছিল পাঁচিলের মত, বাঁক নেওয়ার মুহূর্তে মনে হচ্ছিল এরপর আর রাস্তা আছে তো? অলকানন্দার বাঁদিক ধরে চলতে চলতে অগস্ত্যমুনি পৌঁছনোর একটু আগে গাড়ির কাঁচে হঠাৎ একঝলক দুধসাদা পাহাড়ের অংশ, একেবারেই হতবাক করে দিয়ে আবার মিলিয়ে গেল। মেঘ বলে ভুল করার কোনো উপায় নেই, চারটে কোণ আর শিখরদেশের ট্রাপিজিয়ামের আকৃতিতে ওই এক ঝলকেই চিনিয়ে দিয়ে গিয়েছে সে নিজেকে; হ্যাঁ, চৌখাম্বা দর্শন দিয়েই তাহলে এ’যাত্রার শুরু; তখনো জানিনা, এরপর এ-যাত্রা যেখানেই যাই আকাশের গায়ে চৌখাম্বা লেগে থাকবে সফেদ-শুভ্র শিখরশ্রেণীর কিরীটে কোহিনূর-এর মতো! কিন্তু ওই একবারই, অগস্ত্যমুনির কাছে এসে বাঁদিকে কেদারের গিরিশ্রেণী দৃশ্যমান হলেও সামনের উঁচু পাহাড়-প্রাচীরে চৌখাম্বা আবার অদৃশ্য উখিমঠের কাছাকাছি আসা পর্যন্ত। পাহাড় কিভাবে প্রাচীর হয়ে তার ভয়ঙ্কর সুন্দর চেহারা নিয়ে দিগবিদিক জুড়ে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকে, গাড়োয়ালের হিমালয় তার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ! ... ...
"একা বেড়ানোর আনন্দে" - এই সিরিজে আসবে ভারতের কিছু জায়গায় একাকী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। এটি পর্ব - ৯ … বলি, কিছু মনে করবেন না হাফিজভাই, মুসলিম হয়েও আপনি তো এই হনুমান মন্দির সম্পর্কে অনেক খবর রাখেন! উনি বলেন, এখানে হিন্দু মুসলিম ভেদভাব নেই। বহুদিন ধরে আমরা মিলেমিশে আছি। এই দেখুন না খবর পেলাম ঐ মন্দিরে বার বার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। গতকাল পর্ষদের ইলেকট্রিসিয়ানকে ধরে খুঁজে বার করলাম এক জায়গায় লুজ কনেকশন ছিল। দাঁড়িয়ে থেকে তা ঠিক করালাম। তারপর উনি কপালে হাত ঠেকিয়ে বলেন, ছোটবেলা থেকে এই মন্দিরের কথা অনেক শুনেছি। স্থানীয়রা এই হনুমানজীকে খুব জাগ্ৰত বলে মানে। ... ...