আশির দশকের যাদবপুর মেয়ে হস্টেল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। ... ...
তাঁরা সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হলেন, পুণ্য ও পাপ এবং তার ফলে প্রাপ্য পুরষ্কার ও তিরষ্কারের ধারণা। তাঁদের উচ্চারিত প্রত্যয়ী মন্ত্রের ব্যাখ্যায়, কথকতায়, ধর্মকথায় কল্পনার জগতের দুয়ার খুলে গেছিল সাধারণ মানুষের মনে। তাঁরা আশ্চর্য হয়েছিলেন, অভিভূত হয়েছিলেন, এবং বিশ্বস্ত হয়েছিলেন। আমাদের ছোটবেলাতেও গ্রামের বাড়িতে দেখেছি, বাঁধানো ফ্রেমে আঁকা নরকভোগের রঙিন চিত্রপট। সেখানে যমদূতেরা চোরদের হাত কাটে, পরকীয়া প্রেমিক-প্রেমিকাদের লোহার কাঁটাওয়ালা স্তম্ভ জড়িয়ে শুয়ে থাকতে হয়, ফুটন্ত তেলে পাপীদের ভাজতে ভাজতে (deep fry) যমদূতরা মাথায় ড্যাঙস মারে, ইত্যাদি। ... ...
যাদবপুর মেয়ে হস্টেল আশির দশক। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। ... ...
আশির দশকের যাদবপুর মেয়ে হস্টেল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি। ... ...
“এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে” - কবিগুরু যখন এই কথাগুলি লিখেছিলেন, তখন কী তিনি ভারতের এই ইতিহাস জানতেন না? আমি নিশ্চিত, অন্ততঃ আমার থেকে সহস্রগুণ ভালোভাবে জানতেন। তবুও তিনি লিখেছিলেন, হতে পারে, তার একটিই কারণ – ব্রিটিশরাজের বিরুদ্ধে সাধারণ ভারতীয়দের ঐক্য দেখে তিনি আশ্চর্য হয়েছিলেন এবং স্বপ্ন দেখেছিলেন, স্বাধীন ভারত বুঝি বা এমনই থাকবে। কিন্তু কই, আমরা তেমন তো রইলাম না? কিন্তু কেন থাকতে পারলাম না? এই সাড়ে ছশ’ বছরের রাজতন্ত্র এবং প্রশাসনিক উচ্চমহলের আত্মক্ষয়ী নির্বোধ অহংকার আমাদের জীবন এবং ভাবনা- চিন্তায় যে চিরস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল, সেই অভিশাপই যে আমরা আজও বহন করে চলেছি। ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি। যাদবপুর মেয়ে হস্টেল। ... ...
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি। যাদবপুর। আশির দশক। ... ...
আসলে, পণ্ডিতদের পাণ্ডিত্য প্রদর্শনই যখন মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে ওঠে, তখন সহজ কথাগুলিও অস্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাতে অবশ্যই ষোল আনা লাভ হয় পণ্ডিতদের – মাঝের থেকে, তাঁদের দুর্বোধ্য মধ্যস্থতায় আমাদের মনের মানুষটি অনেক দূরের মানুষ হয়ে পড়েন। বিশ্বের সব ধর্মতত্ত্বেই মধ্যস্থ এই পণ্ডিতরা যদি না আসতেন, সাধারণের জীবনযাপন অনেক রম্য হয়ে উঠতে পারত। ... ...
অতএব দেখা যাচ্ছে, ভগবান যিশুর ভারতবাস যথেষ্ট ঘটনাবহুল। ইজরায়েলের আগেই, তিনি ধর্মপ্রচারের সূচনা করেছিলেন এই ভারতেই, অন্ততঃ বৈশ্য এবং শূদ্র বর্ণের অবহেলিত ও বঞ্চিত মানুষদের মধ্যে। যদিও তার ফল হয়েছিল মারাত্মক। ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়দের বিরুদ্ধে যাওয়াতে তাঁর এদেশেও প্রাণনাশের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। তাঁর নিজের দেশেই হোক অথবা ভারতে, সব দেশেই পুরোহিত সম্প্রদায় এবং রাজন্যবর্গদের চরিত্র যে একই, ধার্মিক ভারতে এসে অন্ততঃ এটুকু স্পষ্ট উপলব্ধি তাঁর হয়েছিল। ... ...
ইতিহাস ও ধর্মচর্চা করতে করতে খুব ক্লান্ত? তাহলে ছোটদের গল্প (ছো-গ) পড়ুন। ছুটির সময় স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়ানো বিহারি বিষুণদাদাকে মনে আছে? বাঁশের সরু কাঠি দিয়ে বানানো বিশাল ডুগডুগির মতো স্ট্যাণ্ডের ওপর সাজিয়ে বন-কুল, বিলিতি আমড়া, তেঁতুল বা কুলের আচার বেচতেন? আমাদের পছন্দ ছিল, বিট-নুন, কারেন্ট-নুন, আর মিঠে-গুঁড়ি ছেটানো বন-কুল। তার প্রধান কারণ ছিল বৃদ্ধ বিষুণদাদা - আমাদের ছোট্ট হাতের তালুতে একটুস খানি কারেন্ট-নুন ফাউ দিতেন। অবিশ্যি বনকুলের বীজ "ফুঃ" করে বন্ধুর কান টিপ করে ছোঁড়াতে আমি তেমন নাম করতে পারিনি কোনদিন। সেই বনকুল আর সেই ফাউ কারেন্ট-নুনের আমেজ পেতে পড়তে থাকুন "ছো-গ" ... ...
ক্লাসে আমি তখন তিন-চারটে নলওয়ালা চৌবাচ্চার জলে হাবুডুবু খাই। পিতা আর পুত্রের বয়েস গুলিয়ে পুত্রের থেকে পিতার বয়েস কম হিসাব করি। আর যে কোন সরল অঙ্কের সমাধান ২২ পূর্ণ ৩২৮ ভাগ ৮৩৭ করে অংকের মাষ্টারমশাইয়ের কানমলা খাই। ... ...