খাবারের বাছবিচারে প্রতাপ রায় সাবেক কলকাত্তাইয়া। রয়ালের চাঁপ, সাবিরের রেজালা, নিজামের রোল, চাচার ফাউল কাটলেটে এমনই আস্থা যে সে জায়গায় অন্য কাউকে বসাতে পারেন না। তবে আশাভঙ্গও হয়। যেমন চাচার ফাউল কাটলেট। আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে যে আশাভঙ্গ প্রতাপ রায়ের হয়েছিল, আমার হল বছর তিন-চার আগে। চাচা তো ফুটপাত বদল করে উল্টোফুটে চলে এসেছে। সেজে উঠেছে নবসাজে। সে রূপ অবশ্য পাড়ার নতুন কাফে ডি তেলেভাজার থেকে থেকে কিছু ভিন্ন নয়। তবু এখনও ফাউল কাটলেটটি করে। কিন্তু সে শুষ্কং-কাষ্ঠং কাটলেট খেলে চাচার দোকানের ওপর শ্রদ্ধার থেকে অন্য কিছুর উদয় হয় মনে। শিককাবাব আর করে না। ... ...
গতকাল সিলেটে ৭নম্বর বারের জন্য T-20 এশিয়া কাল জয়ী ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের এই ১১জন 'উইমেন ইন ব্লু'র সবার নাম হয়ত আমরা অনেকেই জানি না। তাঁদের নাম তো বটেই সংক্ষেপে একটু জেনে নেওয়া যাক ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের শুরুর দিনগুলোর কথাও.... ... ...
সাধারণত অর্থনীতির নোবেল শুনলেই মনে হয় খুব জটিল কোন তত্ত্বকথা অথবা লম্বা লম্বা অংক। অংক ছাড়া অর্থনীতি হয় না এ কথা ঠিক। তবুও কিছু কিছু অর্থনীতির তত্ত্ব যা কিনা ভবিষ্যতে নোবেল পাবে, তার সাথে আমাদের দৈনন্দিন অর্থনৈতিক জীবনের টুকটাক যোগাযোগ আছে। অংক না কষেও সেগুলোর একটা ধারণা করা যায় বৈকি। এরকমই একটা বিষয় ব্যাংক ফেল করে সঞ্চিত টাকা খোয়া যাওয়ার সম্ভাবনা এবং তার থেকে পরিত্রানের উপায়। এই বিষয়ে কাজ করার জন্য ইকোনমিক সায়েন্সে ২০২২ সালে নোবেল মেমোরিয়াল পুরস্কার দেওয়া হল দুইজন বিশিষ্ট অধ্যাপক এবং প্রাক্তন ফেডারেল রিজার্ভ প্রেসিডেন্টকে। ... ...
ধরুন আপনি আঁকতে শিখছেন। আবার ধরুন আপনি বেড়েপাকা। তাই ধরে ধরে আইডিয়াল ঘোড়া না এঁকে একেবারে চক্ষু মুদে আঁকতে গিয়ে খচ্চর এঁকে বসেছেন। আবার ধরুন আপনি গান গাইতে চান। কিন্তু সারেগামা না সেধে একেবারে খাম্বাজ রাগিণী ধরতে গিয়ে এবারে স্টেজের উপর টম্যাটোর দোকান বসিয়ে দিলেন। কিংবা ভাবুন আপনি কর্পোরেট থ্রিলার লিখতে চান। অনেক আগে জয়েস পরেছিলেন। ইদানিং ম্যান্টল। তারপরেই কেমন গা ঘুলিয়ে উঠে ভক করে নামিয়ে ফেললেন সাহিত্যিক উদবমন। একবারে নয়। কিস্তিতে কিস্তিতে। ... ...
(আমার এ রচনা বিভিন্ন সিঁড়ি নিয়েই। হঠাৎ করেই একদিন অন্যমনায় ছিলাম। সে সময়ে মাথার মধ্যে ছোটবেলার আমাদের বাড়ির এক প্রাচীন আমলের সিঁড়ির নানান ঘটনা ভেসে উঠল অতর্কিতেই। ভাবলাম লিখেই ফেলি। এই নিয়ে গুগুল মামার শরণাপন্ন হতেই দেখলাম - ওরে বাবা, এই সিঁড়ি নিয়েই হয়তো একটা বিরাট রচনা নামিয়ে ফেলা যায়। সারা বিশ্বের নানান সিঁড়ি, সেগুলোর ইতিহাস, সবচেয়ে বড় কথা সেই আদিম যুগ থেকে কতই না পরিবর্তন হয়ে আজকের গতিমান লিফট থেকে এস্ক্যালেটর। আমারই চোখে দেখা কত কিছুই। স্মৃতির মননে ছোট বেলা থেকে কলেজ জীবন পেরিয়ে চাকরি জীবন। সব কিছুর সাথেই জড়িয়ে আছে এই সিঁড়ি।) ... ...
পাঞ্জাবের নকশাল কবি অবতার সিংহ সন্ধু পাশ মানে আসলে এক নিখাদ অনিঃশেষ আগুন..। পাঞ্জাবি ভাষার কবি হয়েও তিনি সার্বজনীন। স্বপ্নের-আদর্শবাদের- লড়াইয়ের- আবেগের- কবিতার- প্রেমের- জীবনের- জিজীবিষার সমার্থক সেই বিপ্লবী কবির ৫টি কবিতার বাঙলা অনুবাদ ও জীবনকথা সংক্ষেপে ধরা রইল এই নিবন্ধে। পাশ-এর সমস্ত স্বপ্ন ও সংগ্রামের রক্তিম আলো আর ওম দেশকালভাষার সমস্ত কাঁটাতার পেরিয়ে তাঁর কবিতার পংক্তি ছুঁয়ে বেঁচে থাকুক আবহমানকাল ধরে। ... ...
বহু যুগ ধরে বাঙ্গালী মেয়েরা লক্ষ্মীর আরাধনা করে আসছেন, এই শারদীয়া মাসে দিকে দিকে তাঁর নামে শঙ্খধ্বনি হতেই থাকবে। তবু যতই তাঁরা লক্ষ্মীর জন্য হৃদয়মাঝারে ঠাঁই করে রাখুন, লক্ষ্মী কি সেই আসনে এসে বসলেন? ... ...
বাংলার আকাশে বাতাসে এখন বড় বেশি উৎসবের গন্ধ। আশি ও নব্বইয়ের দশকে গণবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন বহু মানুষ। ঈশ্বর তত্ত্বের পাশাপাশি জ্যোতিষ, তন্ত্র-মন্ত্র, ধাপ্পাবাজির বিরুদ্ধে ঘরে বাইরে সরব ছিলেন তারা। দুর্গাপুজোর মত চার-পাঁচ দিনের ধর্মের গন্ধ মেশা জগঝম্প আয়োজনে হয় বইয়ের স্টল না হয় সম মনভাবাপন্ন মানুষজনের সঙ্গে আড্ডা মেরে সময় কাটিয়ে দিতেন ওরা। পুজোর বাজারেই এই নাস্তিকদের জন্য তৈরি হয়ে যেত আর একটা স্পেস। আজকের দিনে সেই জায়গাটাই গিয়েছে হারিয়ে। ... ...
হাসিমুখে তাকে বলে ফেলার সময়ই আমরা বুঝতে পারি যেন একটা জলাজমি চাপা পড়ে যাচ্ছে বুকের ভেতরে। তার উপরে হু হু করে বহুতল উঠে যাবে শীঘ্রই। এতগুলো বছরের বর্ষার কচুপাতায় জমে থাকা জল, নেউলের দৌড়, ইঁদুরের ডাক; --- এসবের আর কোনও সাক্ষী থাকবে না। জীবিতের শোক যে মৃত বহন করে না সে তো আমরা বহুকাল আগেই জেনেছি! জীবিতের ভেতরে মরে যাওয়া এই ছোট্ট অংশটিকেও জীবিত একাই বহন করে চলে আজীবন ... ...
শুরুতেই জানব, আগে কীকরে মিল দেওয়া হত। ওসব ছিল, একদম মাপে-মাপ মিলিয়ে, দুলে-দুলে পড়ার মতো করে। রবিঠাকুর লিখেছিলেন, আমাদের ছোটো নদী চলে আঁকে বাঁকে/ বৈশাখ মাসে তাতে হাঁটুজল থাকে। শঙ্খ ঘোষঃ দুপুরে রুক্ষ গাছের পাতার কোমলতাগুলি হারালে/তোমাকে বকব ভীষণ বকব আড়ালে। জয় গোস্বামীরঃ নাম লিখেছি একটি তৃণে/ আমার মায়ের মৃত্যুদিনে। কিন্তু এগুলি একে বোরিং, তায় কঠিন, তদুপরি চটক কম। কাজেই বাজারে এসেছে নতুন নতুন পদ্ধতি। জেনে নিন পদ্ধতিগুলি। ... ...
পাঞ্জাবের শহীদ নকশাল কবি অবতার সিংহ সন্ধু 'পাশ' - এর দু-টুকরো অসামান্য কবিতার বঙ্গানুবাদ। ... ...
এটা একবারের অভিজ্ঞতা হলে ছুটকো ছাটকা বিষয় বলে উড়িয়ে দেওয়াই যেত। কিন্তু ব্যাপারটা ধারাবাহিক। যখনই শাসক দলের কিছু সমালোচনা করা হয়, সিপিআইএম এর অনলাইন কিছু কর্মী দেখি ঝাঁপিয়ে পড়েন তার বিরুদ্ধে। না, সবাই না, বেশিরভাগও না, দক্ষিণ কলকাতার একটি অংশের কিছু উগ্র কর্মীবৃন্দ। এটা বহু সময় দেখেছি। বগটুইএর ঘটনায় নিজে লিখে দেখেছি। জয় গোস্বামীর 'দগ্ধ' বইটি আমরা প্রকাশ করেছি, তখন দেখেছি। ব্যাপর দেখে মনে হচ্ছিল বগটুই না, পশ্চিমবঙ্গে আলোড়ন ফেলা নিন্দনীয় একটাই ঘটনা ঘটেছে, যার নাম দগ্ধ। এই সব আক্রমণেরই মূল উপজীব্য একটাই। পছন্দমতো কেন প্রতিবাদ হচ্ছেনা। কেন 'শাসক দল' লেখা হচ্ছে। কেন ঘটনা দেখে দুঃখ হচ্ছে, 'প্রতিবাদে গর্জে উঠুন' কেন বলা নেই। সারা জীবনে বহু জিনিসে প্রতিবাদ ইত্যাদি করেছি। কিন্তু এই অদ্ভুত জিনিস কখনও দেখিনি, যে, যাঁরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে প্রতিবাদের আহ্বান করছেন, তাঁদেরই কর্মীবাহিনীর একাংশ সেটাকে বানচাল করে দিতে চাইছেন। এই ঔদ্ধত্য, কে কী বলবে, ঠিক করে দেবার মানসিকতা, কোথা থেকে আসে বলা মুশকিল। হয়তো একরকম অন্তর্ঘাতও হতে পারে। আমার জানা নেই। ... ...
কী করব বলুন, আদতে বীরভূম জেলার লোক তো, ঢেঁকিতে চড়ে সেখানকার আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময়ে নারদ মুনির কী অবস্থা হয়েছিল জানেনই তো। অ, জানেন না, তাইলে শুনুন। বেলা তখন দশটা হবে। প্রভু নারায়নের নাম জপতে জপতে বীরভূমের ওপর দিয়ে যাচ্ছেন নারদ। হঠাৎ সোঁ সোঁ করে একটা অদ্ভুত শব্দ। কী ব্যাপার? মেঘ করল নাকি? ঝড় এল? না তো, আকাশ দিব্যি পরিস্কার। ওদিকে সোঁ সোঁ আওয়াজটা হয়েই চলেছে। ভয় পেয়ে স্পিড বাড়িয়ে দ্রুত চলে গেলেন নারদ। নারায়নের কাছে গিয়ে সব খুলে বলে জিজ্ঞেস করলেন, “ওটা কিসের শব্দ ছিল?” ... ...
জীবদ্দশায় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী যেমন ভারতীয় উপমহাদেশ সহ গোটা পৃথিবীকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন, তেমনি এদেশের প্রায় সমস্ত অঞ্চলের সমস্ত বোলি'র চারণকবিদের সৃজনশীলতাকেও সুগভীরভাবে প্রভাবিত করেছিলেন তিনি। একদিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম আর অন্যদিকে গান্ধীবাবার সন্তসম জীবনভাবনা, একের পর এক অহিংস সত্যাগ্রহ আন্দোলন, স্বাবলম্বন ও সম্প্রীতির ডাক, আম জনতার মনে তাঁর প্রতি অপার ভালোবাসা ইত্যাদি সমস্ত বিষয়কে কেন্দ্র করেই চেনাজানা ধর্মীয় ও সামাজিক রূপকের কাঠামোয় এই পল্লীকবিরা রচনা করেছিলেন 'গান্ধীগীত' নামে জনপ্রিয় বহু শত লোকগান। গান্ধীগীতের এই অনন্য ধারাটির সূত্রপাত হয়েছিল সেই ১৯১৭র চম্পারণ এবং ১৯১৮র খেদার সত্যাগ্রহ আন্দোলনের অসামান্য দিনগুলোতে…. ... ...
পুজোর উৎসবের আতিশয্যে ভুলে না যাই, আজ গান্ধী জয়ন্তী। আততায়ীর গুলিতে প্রাণ হারাবার পরে গান্ধীজির প্রথম জন্মদিনটি পালিত হয়েছিল স্মরণে। আজ এত দশক বাদে জনচেতনার পরিসরে গান্ধী কি ধীরে ধীরে প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছেন? সরকারি-বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে গান্ধী-চর্চা কি তেমনভাবে কোথাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে? খবরের কাগজে চোখে পড়ল, কেন্দ্রীয় সরকারি তরফে গান্ধী এবং সঙ্গত কারণেই লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন মারফত শ্রদ্ধা নিবেদন। রয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য। আকাশবাণীর প্রভাতী অনুষ্ঠান 'প্রত্যহিকী'তে দিনটির বিশেষ তাৎপর্যের উল্লেখ, 'মৈত্রী' প্রচারতরঙ্গে 'সুচিন্তন' অনুষ্ঠানে গান্ধিবাণী এবং 'সঞ্চয়িতা' প্রচারতরঙ্গে রিলে করা হয়েছে দিল্লির হিন্দি অনুষ্ঠান। ওই পর্যন্ত। ইঙ্গিত স্পষ্ট, অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় গান্ধী আজ কার্যত ফিকে। ... ...
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে এতদিন একতরফা ভারতের আধিপত্য ছিল। এবার গ্রুপ পর্যায়ে তিন শূন্য গোলে হারায় ভারতকে বাংলাদেশ। পাকিস্তানকে হারায় আট শূন্য গোলে। সেমিতে ভুটান হারে আট শূন্য গোলে। ফাইনালে নেপাল হারে তিন এক গোলে। বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। এমন একতরফা খেলে টুর্নামেন্ট জিতল কোন দলটা? যাদেরকে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয় পেটের ভাতের জন্য। রূপকথা না? এই দলটার আট জন এসেছে একটা গ্রাম থেকে, নেত্রকোনার কলসিন্দুর গ্রাম, যেখানে অদ্ভুত ভাবে মেয়েরা দারুণ ফুটবল খেলে। যাদের নিয়ে কয়েক বছর আগে তৈরি করা হয় একটা প্রতিবেদন, যেখানে তাঁদের চাওয়া কি জানতে চাইলে মেয়েরা বলে ভাল করে খাওয়া! এক বেলা ভাল করে খাওয়ায় দিয়েন!! কারা আমাদের সাফল্যের মুকুট এনে দিয়েছে বুঝা যাচ্ছে? পাঁচজনের বাড়ি পার্বত্য চট্টগ্রামে। তাঁদের তো আরও সমস্যা। কোন কিছুরই স্বীকৃতি নাই। পাহাড়িদের তো মানুষই মনে করে না আমাদের সভ্য সুন্দরেরা। তাঁদের নাই ঘর বাড়ি, তাঁরা গেছে ফুটবল খেলতে! এই সব সমস্যার পরে আমাদের ঐতিহাসিক আদর্শ নারী বিরোধীরা তো আছেই, যারা প্রতিনিয়ত অশ্লীল, পাপ, রসাতলে গেল সমাজ বলে চিৎকার করছে। এদেরকে লাথি মেরে এগিয়ে যাওয়া, শুধু যাওয়া না, চ্যাম্পিয়ন হওয়া এইটার সাথে কিসের তুলনা দেওয়া যায়? আমার জানা নাই, সত্যিই জানা নাই। ... ...
- আমাদের বাড়িটা খুলে দিতে পারি? - মানে ঢুকতে ভিসা পাসপোর্ট লাগবে না? - স্টপ ইট। বলছি আমি একা মানুষ। নানান বাড়িতে ঘোরাঘুরি করে দান সংগ্রহ আর প্যাক করার চেয়ে ভালো হয় যদি সেই সব দান আমাদের বাড়িতে পৌঁছে যায়। তাহলে বাড়িতে বসে আমি আর কয়েকজন সেগুলো বেঁধে দিতে পারি। শুক্র থেকে রবিবার মায়াও সাহায্য করবে। - তাহলে চালাঘর আর সুইমিং পুলটাও খুলে রাখো। এখন কেউ কি আর জলে নামবে? ... ...
পিএফআই যে ঠিক কী 'দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র' করেছে, খবরের কাগজ তন্ন তন্ন করেও খুঁজে পেলামনা। অবশ্য এখন গণতন্ত্রের কারবারই আলাদা। সেই উপকথার গপ্পে ছিল, 'তুই না, তোর বাপ জল ঘুলিয়েছিল', সেখান থেকে একটা জিনিস বোঝা যায়, যে, খুব বদ হলেও, রাজা-বাদশারা ইচ্ছে হলেই কারো মুন্ডু কেটে ফেলতে পারতেননা। অন্তত একটা ফালতু অভিযোগ খাড়া করতে হত। এখন দারুণ গণতন্ত্রে সেই চক্ষুলজ্জাও উঠে গেছে। এমন সব দুর্দান্ত আইন বেরিয়েছে, যাতে, সব গোপন। তদন্ত তো গোপন বটেই, বিচারও চুপি-চুপি, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযোগও গোপন। আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ব্যাপারটা তো ক্রমে উঠেই যেতে চলেছে। খুব ইচ্ছে হলে করতেই পারেন, কেউ আটকাবেনা, কিন্তু আপনি কেন নির্দোষ সেটা বলবেন কীকরে, অভিযোগটাই তো জানা নেই। হয়তো বললেন, আমি তো চুরি করিনি, খুনও করিনি, কিন্তু তদন্তকারীদের খাতায় লেখা আছে, সুপ্রিম কোর্টের দিকে ট্যারা চোখে তাকিয়েছিলেন, ওইটাই অপরাধ। কিন্তু সেটা আপনাকে বলা যাবেনা। সে আপনি জানবেনই কীকরে, আর পাল্টা বলবেনই বা কীকরে। ... ...
প্রায় সকল অনার্য দেবতারাই এখন হিন্দু দেবতা। কিন্তু তাও দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক, দেবতাদের থেকে এখন সাধারণ মানুষের দূরত্ব বেড়ে উঠেছে বহুগুণ। আগে অনার্য মানুষরা দেবতাদের কাছে সরাসরি প্রার্থনা করতে পারতেন। কিন্তু এখন সে প্রার্থনার অনেক রীতি, অনেক পদ্ধতি, অনেক মন্ত্র, সে মন্ত্র আবার কোন আঞ্চলিক ভাষায় নয় – সে ভাষা দেবভাষা সংস্কৃত। আর এই সকল পূজার বিচিত্র বিধি-বিধান, বিভিন্ন দেব-দেবীর বিবিধ মন্ত্র যিনি জানেন, তিনিই পুরোহিত এবং তিনি অবশ্যই ব্রাহ্মণ। ... ...