একথা অনস্বীকার্য যে আজকের ইসলামি দুনিয়ায় সঠিক বৈজ্ঞানিক মনোভাব এবং যুক্তিবাদের চর্চায় ঘাটতি আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই শ্লথতা এবং কূপমণ্ডুকতার পৃষ্ঠপোষক রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কায়েমী শক্তির মেলবন্ধন । অথচ অতীতে সমস্ত ধর্ম,সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞান থেকে শেখার মনোভাব দেখিয়েছেন ইসলামি পণ্ডিতরা।সবাই পাশ্চাত্যের সংজ্ঞা অনুযায়ী সেকুলার হবেন না, সাংস্কৃতিক কারণেই তা সম্ভব নয় এটা আমাদের বুঝতে হবে। বিজ্ঞান এবং ধর্মের মধ্যে, যুক্তিবাদ এবং আবেগের মধ্যে কিছুটা সমন্বয় এবং যেখানে সেই সমন্বয় সম্ভব নয় সেখানে তাদের নিজস্ব স্বাধীন ক্ষেত্র সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার। ... ...
এমন বেশ কিছু জায়গা ছিল যা আমাকে স্পর্শ করে গেছে। আমি আরও বেশি কিছু চাইছিলাম। ছবির নাম যখন ডাংকি তখন আমার চাওয়া তো অপরাধ না, তাই না? এই ছবির নাম অনায়াসে 'হার্ডি সিং কী প্রেম' কথা রাখা যাইত, রাখলেই পারতেন, আমিও কোন আগ্রহ দেখাইতাম না। কিন্তু নাম রাখলেন ডাংকি আর ডাংকিই আড়ালে থেকে গেল, এইটা কেমন কথা! ... ...
পরপর দুটি স্মৃতিকথা পড়া হয়। প্রথম বাশারাত পীর লিখিত ‘কার্ফ্যিউড নাইট’ এবং সেই সূত্রে রেফারেন্স পেয়েই বিপ্রতীপের আখ্যান রাহুল পন্ডিতা লিখিত ‘আওয়ার মুন হ্যাজ ব্লাড ক্লটস’। পীরের লেখা আমাকে আমূল কাঁপিয়ে দিয়ে যায়। আফস্পা নামক আইনটি এবং সেই রক্ষাকবচের আড়ালে কাশ্মীর বা মণিপুরে ভারতীয় সেনার দানবীয় রূপের কিছু কিছু কথা জানা ছিল, জানা ছিল না এই ভয়াবহ অত্যাচার আর অবিশ্বাসের আবহাওয়ার। জানা ছিল না সরকার তথা সেনাবাহিনী অথবা সন্ত্রাসবাদী তথা স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীর এই দুই পক্ষের মধ্যে কোন একটির আওতায় থাকতে বাধ্য প্রতিটি মানুষ। জানা ছিল না এমনকি পক্ষাবলম্বনের পরেও সেই পক্ষের মধ্যে থাকতে পারে অজস্র ছোট পক্ষ যাদের মধ্যের বাদানুবাদে যেকোন মুহূর্তে বিপন্ন হতে পারে মানুষের সর্বস্ব। প্রায় নির্লিপ্ত ভঙ্গীতে পীর লিখে গেছেন কাশ্মীরের অসহায় বিপন্ন দিনরাতের জ্বলেপুড়ে যাওয়ার কাহিনী। পন্ডিতা নিজে কাশ্মিরী পন্ডিত, লেখা সত্যি বলতে কি বড় বেশী পার্টিজান, খুব যে ভাল লেগেছে পড়তে তা নয়, কিন্তু এ বইও আমার জন্য আই ওপনার। কাশ্মীরি পন্ডিতদের আতঙ্ক ও অসহায় পলায়ন ঠিক এভাবে জানা ছিল না। ... ...
কিন্তু কথা হল, সব চ্যানেল-ট্যানেল কিনে ফেলেও, অপছন্দের সিনেমাকে আটকে, এজেন্সি দিয়ে ভয়-টয় দেখিয়েও গোদীবাবুর ঠিক শান্তি নেই। পিছনে পাপ লেগে থাকলে যা হয়। এখনও দুচাট্টে লোক এদিক সেদিক খুচরো ট্যাঁফোঁ করে চলেছে, কে কখন বলে দেয় 'রাজা তুই ন্যাংটো' তার ঠিক নেই। এই আমার মতো কিছু তেএঁটে আছে, যারা মিডিয়ার শত প্ররোচনাতেও গোদীবিরোধিতা থেকে কিছুতেই নড়বেনা। তাদের থামাতে এবার এসে গেছে ভারতের নতুন সম্প্রচার বিলের খসড়া। পাশ হলে তার আওতায় এসে যাবে প্রায় সবকিছু। টিভি, কেবল তো ছিলই, ওটিটি, ইন্টারনেট, সমাজমাধ্যম। খুব সম্ভবত এই লেখাটা, নতুন বিল এলে 'সম্প্রচার'এর আওতায় পড়বে। এসব কাপড় খুলে দেওয়া লেখা, তাই বিলে বলা আছে, খবর বা সাম্প্রতিক বিষয়ে সম্প্রচার করতে হলে সব্বাইকে 'নিয়ম' বা কোড মেনে চলতে হবে। কী নিয়ম? না, সেটা বলা নেই। সরকার বা কর্তৃপক্ষ যখন যা ঠিক করে দেবে তাই। নইলে জেল-জরিমানা, সবই আছে। ... ...
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রবাসী বাঙালিরা কটা অনুষ্ঠান করে, এবং বাংলাদেশের প্রবাসী বাঙালিরা কটা অনুষ্ঠান করে? তুলনা করলে স্তম্ভিত হয়ে যাবেন। ... ...
টাইম মেশিনে চড়ে এই পৃথিবীর কোন শহরে ফিরে যেতে পারি, যাবো বার্লিনে । ঝরিয়া, পাইকপাড়ার বাড়িতে বসে বাল্য, যুবা কাল থেকে গত শতাব্দীর ইতিহাসের যে পর্ব এবং স্থানটি আমাকে আকৃষ্ট করে রেখেছে সেটি তিন দশকের বার্লিন। এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে পতন ও অভ্যুদয়ের ঘনঘটা আর কোথাও চোখে পড়ে নি । ওয়ান্স আপন এ টাইম নয়, এই সময়কালকে যেন ধরা ছোঁয়া যায় , এই তো সেদিনকার কথা! নিতান্ত ভাগ্যক্রমে ইতিহাসের এই ঘুরন্ত রঙ্গমঞ্চের সেট, উইংস,তার পিছনের দৃশ্য পট শুধু চোখে দেখি নি , মঞ্চের মাঝখান দিয়ে হেঁটেছি –কথা বলে ইতিহাস , ভিলহেলমস্ত্রাসেতে বিসমার্কের অফিস যেখানে বসে তিনি আফ্রিকা খণ্ড খণ্ড করছেন, হিটলার ওই ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে মশাল যাত্রা দেখছেন , তিরিশে জানুয়ারি ১৯৩৩, এক নম্বর ঊনটার ডেন লিনডেনে আডলন হোটেল , পারিসার প্লাতস, গ্রুনেভালডের পথ যেখানে রাথেনাউ প্রাণ হারালেন, ফ্রিডরিখস্ত্রাসে স্টেশন, আপোলো থিয়েটার, আলেক্সান্দার প্লাতস , কুডামে সুবেশ নরনারী : বার্লিন অলিম্পিক স্টেডিয়াম এখনও দাঁড়িয়ে , এই তো আজকের সন্ধ্যায় বিসমার্ক আলেতে জ্বলবে আলবার্ট স্পেয়ারের ডিজাইন করা পথবাতি। ... ...
সিংরাই দেখে বাচ্চাটা টানা চিৎকার করছে। চেষ্টা করছে পুলিশের হাত ছাড়ানোর, পারছে না। কান্না পেয়ে যায় তার। চেষ্টা করেও চোখের জল আটকাতে পারে না সিংরাই। বুঝতে পারে না, এই যে এখন চোখে জল এল তার কারণ কী? এমন তো আগে হয়নি কখনও, অন্য কারও কষ্ট দেখে কান্না পায়নি তো কোনওদিন! যেদিন নিজের বাড়ি ভাঙা হচ্ছিল, সেদিন তো চরম আক্রোশ, ঘৃণা নিয়ে সে তাকিয়েছিল পুলিশ, ফরেস্ট ডিপার্টমেণ্টের লোকগুলোর দিকে, আর আজ অন্যের বাড়ি ভাঙা, বাচ্চাটার চিৎকার শুনে চোখে জল এল কেন? উত্তর খুঁজে পায় না সিংরাই, শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অবশ্য তার তো বয়স কম, অনেক বয়স হওয়া সব মানুষও কি আর বোঝে, যে তীব্রভাবে কাউকে ঘৃণা করতে পারে, একমাত্র সেই এমন ভালোবাসতে পারে, যে ভালোবাসা অচেনা কারও কষ্ট দেখলে চোখে জল নিয়ে আসে! কারণ, এও পদার্থ বিদ্যার সেই সূত্রের মতো, তীব্র ঘৃণার উল্টোদিকে আছে তীব্র ভালোবাসা! ... ...
মৃত্যুর পর মৃতদেহের মমি তৈরীর পদ্ধতি ছিল যথেষ্ট সময় আর খরচ-সাপেক্ষ। তাই ফারাও, তার পরিবার বা বিশিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া মমি বানানোর চল কম-ই ছিল। মৃত্যুর পর মমি তৈরীর পারদর্শী পুরোহিতের তত্ত্বাবধানে মামিফিকেশনের জন্য নির্দিষ্ট বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হত মৃতদেহ। সেখানে ‘ইবিউ’ নামক স্থানে দেহ ধুয়ে শুদ্ধ করে নেওয়া হতো। তারপর ‘পার নেফার’ নামক স্থানে শুরু হতো সেই দেহের সৌন্দর্য্যায়ন বা মামিফিকেশন। এর বিশদ বর্ণনা অধিকাংশটাই দিয়ে গেছেন গ্রীক পন্ডিত হেরোডোটাস। প্রথমে সরু আর সামনের দিকে বাঁকানো একটি যন্ত্র নাকের গর্ত দিয়ে ঢুকিয়ে মস্তিষ্ক কুরে কুরে বের করে নেওয়া হতো আর সেই ফাঁকা জায়গায় নল দিয়ে পাঠানো হত ক্ষয়রোধী জৈব রস আর সুগন্ধী। এরপর পেটের বাঁদিক চিরে বের করে নেওয়া হতো ফুসফুস, অন্ত্র, যকৃৎ আর পাকস্থলী, ভালো করে নুন মাখিয়ে সেসব রাখা হতো চারটি আলাদা ঢাকা দেওয়া পাত্রে (ক্যানোপিক জার)। এই চারটি পাত্র আবার চারজন দেবতা রক্ষা করতেন। তাঁরা হলেন দেবতা হোরাসের চার ছেলে – ইমসেতি, হাপি, দুয়ামুতেফ আর কেভসেন্যুফ। ... ...
ভাষাদিবসের দিনে এক পুরোনো গালগপ্পো ... ...
নতুন প্রজন্ম। রবীন্দ্রসদন চত্বর। ... ...
জীবন থেকে, রাজনীতি থেকে ধর্ম, স্পিরিচুয়ালিটিকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করলে রক্ষণশীলতার প্রতিক্রিয়া কীভাবে সমাজকে সম্পূর্ণ গ্রাস করে, তার প্রমাণ এই রামমন্দির। ... ...
টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই ( Geographical Indications ) পাওয়া নিয়ে দুইটা ভিন্ন যুক্তি শোনা যাচ্ছে। দুইটাই সঠিক কিন্তু প্রসঙ্গ ভিন্ন। একটা ভারত থেকে জোর গলায় প্রচার হচ্ছে, তা হচ্ছে টাঙ্গাইল থেকে বসাক গোষ্ঠী, যারা মূলত শাড়ি বানাত তারা ভারত চলে গিয়ে সেখান থেকেই শাড়ি বানাচ্ছে, প্রচুর বিক্রি হচ্ছে, একজন বসাককে ভারত সরকার পদ্মশ্রী পুরস্কারও দিয়েছে। দেশের সংখ্যালঘু অত্যাচার, হিন্দুদের বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়া এগুলা দিয়ে বলা হচ্ছে তোমরা তাড়িয়ে দিয়েছে এখন আর তাঁদের শৈল্পিক কৃতিত্বের ভাগ চাও কেন? আর দ্বিতীয় কথাটা হচ্ছে বাংলাদেশের নারীরা শাড়ি পরা কমিয়ে দিয়েছে! এইটাও সত্য, আমার চোখের সামনে শাড়ি পরা নারীর সংখ্যা কমতে দেখছি। বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া শাড়ি পড়ে না এখন অনেকেই, যারা এক সময় শাড়ি ছাড়া আর কিছুই বুঝত না। ... ...
অনেক সময় অপবিজ্ঞানকে সূক্ষ্মভাবে বিজ্ঞানের মোড়কে মুড়ে দেওয়া হয়। যেমন, পৃথিবী সব জিনিসকে নিজের দিকে টানে, তাই তারা পৃথিবীতে এসে পড়ে – কোনো প্রাচীন শাস্ত্রে এরকম কথা লেখা থাকলেই, নিউটনের অনেক আগে আমরা মহাকর্ষ সূত্র আবিষ্কার করেছি—এটা প্রমাণ হয় না। পৃথিবীতে আপেল এসে পড়ে, কারণ পৃথিবী আপেলকে টানে—এটা গুহামানবরাও বলতে পারত। ব্রহ্মাণ্ডে সব টানাটানিই যে একই সূত্রের ফল—সেটা নিউটনই প্রথম দেখান, আর বিজ্ঞানের যে কোনো সূত্রের জন্যে এই সার্বজনীনতাই মূল কথা। ... ...
‘এই বয়সেই মানুষ মারা শুরু করেছিস? সারেঙ্গায় খুনটা কে করেছে?’ এসডিপিও মির্জা’র প্রশ্নে কিছু বলে না সিংরাই। সে জানে সারেঙ্গায় সিপিএম নেতা খুন হয়েছে, কিন্তু সেটা এমসিসি নয়, করেছে জনযুদ্ধ। কিন্তু তা বলল না সে, চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। ‘তুই নাকি এখানে কাজের খোঁজে এসেছিস, তা কী কাজ করবি এখানে?’ কথা বলতে বলতেই চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ায় এসডিপিও। এবারও চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে সিংরাই। ‘হাতের আঙুলগুলো টেবিলের ওপর পেতে রাখ।’ একটুও না নড়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে সিংরাই। ‘কী হল, হাতটা রাখ টেবিলে,’ চিৎকার করে ওঠে খাতরার এসডিপি। ভয়ে ভয়ে বাঁ হাতটা এগিয়ে হাতের চেটোটা ওপর দিকে করে টেবিলের ওপর রাখে সিংরাই। টেবিলের পাশে দাঁড় করানো লাঠিটা নিয়ে কালো টি শার্ট, নীল জিন্স এগিয়ে আসে। ওর হাতের পাতাটা উল্টে দেয়, তারপর লাঠিটা রাখে সিংরাইয়ের আঙুল চারটের ওপর। সিংরাই কিছু বুঝে ওঠার আগেই সিংরাইয়ের কড়ে আঙুলটা উল্টে দেয় জোরে। মট করে একটা আওয়াজ হয় শুধু, পাট কাঠির মতো ভেঙে যায় সরু কড়ে আঙুলটা। আঃ করে চিৎকার করে ওঠে সিংরাই, যন্ত্রণাটা ছড়িয়ে পড়ে গোটা হাতে, হাত থেকে শরীরে। হাতটা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না। লাঠিটা শক্ত করে সিংরাইয়ের আঙুলের ওপর চেপে রেখেছে মির্জা। চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসে সিংরাইয়ের। ... ...
বীরেন শা'য়ের বাড়ীর দুইঘর ভাড়াটে নাকি গিয়ে সাতুদের দোতলায় উঠেছে। এদিকে দাদুদের গোয়ালঘরেও ভালই জল উঠেছে, প্রথমদিন তো লালি আর আকাইম্যা সারাদিনরাত দাঁড়িয়ে রইল। পরেরদিন ভোররাতে লালি কেমন অদ্ভুত আওয়াজ করে ডাকতে লাগল। তখন দাদু গিয়ে ওদের দড়ি ধরে এনে দাদুদের দিকের ভেতরের বারান্দায় তুলল। সে বেচারাদের কি ভয় সিঁড়ি দিয়ে উঠতে, অর্ধেক সিঁড়ি তো জলে ডোবা, তড়বড় করে আসতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে আকাইম্যা একেবারে দাঁড়িয়ে গেল শক্ত হয়ে, কিছুতেই নড়েচড়ে না। দাদু শেষে ওকে পাঁজাকোলা করে বারান্দায় তুলে দিল। লালি বেচারীর শিগগিরই বাছুর হবে, পেটটা ফুলে একেবারে ঝুলে গেছে, প্রায় মাটি ছুঁইছুঁই। খুব কষ্ট করে বারান্দায় উঠল। বারান্দার কোণায় ছোট গামলা করে ওদের জাবনা দেবার ব্যবস্থা হল। লালি উঠেই সেই যে বসে পড়ল, সারাদিনে আর উঠে দাঁড়াল না। শেষে দাদু আর দিদা সন্ধ্যের আগে অনেকক্ষণ ধরে ছোবড়ার আগুন জ্বালিয়ে লালিকে সেঁক দেওয়ার পরে বেচারী একটু ধাতস্থ হয়ে জাবনায় মুখ দেয়। পরেরদিনটাও লালিরা বারান্দায়ই রইল, তার পরের দিন জল অনেক নেমে গেল; উঠোনে আধহাঁটু, গোয়ালে গোড়ালি ভেজে কি ভেজে না। লালি আর আকাইম্যা আবার গোয়ালে ফেরত গেল। বারান্দায় দুই বোতল ফিনাইল ঢেলে ধোয়া শুরু করল বড়মামীমা। লালির জন্য গোয়ালে একটা ভাঙা দরজা পেতে দেওয়া হল, যাতে শুকনো জায়গায় বসতে পারে। পাড়া থেকে কারা যেন জিটিরোডে গিয়ে ইলেকট্রিক অফিসে খবর দিয়ে এল। এই সময় শুরু হল উঠোনে মাছের আনাগোণা। এদিকে শ্রীপল্লীর মাঠের পেছনের অংশের পুকুরটা ভেসেছে, ওদিকে শ্রীদুর্গা মিলের পুকুর। এই শিউলি গাছের গোড়া বাটামাছের ঝাঁক তো নারকেল গাছের গোড়ায় কইমাছ কানে হাঁটছে। বাবু, সুবীর, রতন, বুম্বারা ছেঁড়া মশারি, গামছা আর মাটির হাঁড়ি নিয়ে হইহই করে সারাপাড়া জুড়ে মাছ ধরে বেড়াচ্ছে। বুড়ীর মা মাসি আজ কাজে এসেছে, পেয়ারাগাছের সামনে থেকে খপ করে একটা মাঝারি সাইজের শোলমাছ ধরে ফেলল। বড়মামীমা মাছ কাটতে কাটতে মা'কে বলে 'কালিয়া করব, ওদের জন্য দেব, আগেভাগেই ওদের ভাত খাইয়ে দিস না দিদি।' ভাই শুনতে পেয়ে মুখ বেজার করে, ও মাছ খেতে একদম ভালবাসে না। ছবিমাসি দিদাকে বলে ‘মাসিমা আফনে রান্ধেন, আফনের রান্ধা কালিয়ার সোয়াদ মুহঅ লাইগ্যা থাহে।' দিদা হাসিহাসিমুখে বলে ‘হ বৌমা তুমি অন্যটি দ্যাহ, মাছটা আমি দেখ্তাসি।' ... ...
মধ্যশিক্ষাপর্ষদের সাইট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যবোর্ডের বাংলা মাধ্যম মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২৭৬৮ খানা। হিন্দি মাধ্যম ১১৬, ইংরিজি মাধ্যম ৪৫। সব মিলিয়ে মোটামুটি ধরুন ৩০০০। সিবিএসইর সাইট অনুযায়ী, সিবিএসই অনুমোদিত বিদ্যালয় ৪৫০। আইসিএসইর সাইটে পরিসংখ্যান পাইনি, অন্যত্র দেখলাম শ চারেক। দুটো যোগ করে, মোটামুটি ধরুন ১০০০। অর্থাৎ কিনা পশ্চিমবঙ্গের চারভাগের একভাগ স্কুলই কেন্দ্রীয় বোর্ডের। ... ...
ভিয়েনা ভ্রমণ ... ...
গ্যোর......হাঙ্গেরিয়ান রাপসডি ... ...
এই সব দেখেশুনেই ডাক ছেড়ে বলতে ইচ্ছে হয় - হরি হে মাধব - তোমা বিনে কোথায় যাবো? ... ...
সন্দেশখালির ওপর কিছু ভিডিও দেখে, রিপোর্ট পড়ে গুরুর ভাটে ১২.২.২৪/২০:৩৯ অরণ্য লিখলেন - “দিনের পর দিন গ্রামের মেয়েদের জোর করা হত রাতে তৃণমূলী গুন্ডাদের সাথে সময় কাটানোর জন্য। কথা না শুনলে স্বামী, পরিবারের লোকদের মারধর। এ জিনিস বোধহয় বাংলা আগে দেখে নি”। এটা পড়ে ১৯৭৫এ মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ছবি ২০১৮তে বাড়িতে বসে ল্যাপটপে দেখার প্রতিক্রিয়া মনে পড়লো। রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ, নিজে ঐ পরিস্থিতিতে থাকলে কীই বা করতে পারতাম ভেবে অসহায়তার অন্তে গ্ৰামবাসীদের প্রতিবাদে ফেটে পড়া দেখে - “বেশ হয়েছে” - গোছের ভিকারিয়াস প্লেজারের অনুভব। সিনেমাটা দেখে মোবাইলে কিছু ভাবনা ডায়েরি লেখার মতো লিখে রেখেছিলাম। এসেছিল কিছু পার্শ্বপ্রসঙ্গ। সন্দেশখালিতে অরণ্য উল্লিখিত ঘটনার প্রেক্ষিতে থাকলো সেই লেখাটি ... ...