দাল মে কুছ কালা হ্যায় যারা বলেন তাঁদের আমরা সামগ্রিকভাবে বংশীবাদক—হুইসলব্লোয়ার—আখ্যা দিয়ে থাকি, যুগে যুগে তাঁদের দেখা পাওয়া গেছে। খুব কম ক্ষেত্রেই তাঁদের কথা মানুষ শুনেছে। তবে এক্ষেত্রে বাজারি কানাকানির ভিত্তিতে মিউনিকের টনক নড়ে। তাঁদের তাড়ায় অতি দ্রুত রিয়েচকা বাঙ্কার তদন্তকারি অফিসাররা খাতাপত্র দেখে আবিষ্কার করলেন সব্বোনাশ, এডুয়ার্ড নদিলো বিগত চার বছর (১৯৯৮ থেকে) ডলারের দামের ভবিষ্যৎ নিয়ে ফাটকা খেলেছেন। অনেক লোকসান লুকিয়ে রেখেছিলেন বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রার ব্যাবসায়ের আবরণে—তাঁর বসেরা টের পাননি। ... ...
“দরকার হলে এক দেশ আবার পুনর্জন্ম নিতে পারে, কিন্তু দেশের সংস্কৃতি একবার ধ্বংস হয়ে গেলে তাকে পুনরায় উদ্ধার করা অসম্ভব”! তখনকার দিনের এক খুব প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ টি ভি সুং পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন এই কথা। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল যে ২০,০০০ ক্রেট (বড় বাক্স) ভরা দুষ্প্রাপ্য চীনের অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে প্যালেস মিউজিয়াম থেকে। সব কিছু প্যাকিং হয়ে যাবার পরে এবার অপেক্ষা – ঠিক কবে স্থানান্তর প্রক্রিয়া চালু করা হবে সেই নিয়ে নির্দেশ আসার জন্য মিউজিয়ামের স্টাফেরা অপেক্ষা করতে লাগলো। অবশেষে ৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৩৩ সালে নির্দেশ এল পরিবহন চালু করার। সকাল বেলা গোটা বারো চোদ্দ মোটর গাড়ী এবং ৩০০ মত রিক্স ঢুকলো ফরবিডেন সিটিতে। ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেল চরম – সবাইকে ব্যাজ দেওয়া, গাড়িতে স্পেশাল নাম্বারিং করা – এই করতে করতে রাত হয়ে গেল। রাত আটটার সময় তিয়েনমেন স্কোয়ারের সামনের রাস্তা, যেটা সেখান থেকে জেনগ্যায়াংমেন ট্রেন স্টেশনের দিকে গেছে সেখানে কার্ফু-র মত জারি করে দেওয়া হল। একমাত্র পারমিশন নিয়ে এবং স্পেশাল ব্যাজের লোকেরাই এই এলাকায় ঢুকতে পারত সেই রাতের বেলা। রাত নটার সময় সারি দিয়ে গাড়ি গুলি প্যালেস মিউজিয়াম থেকে রওয়ানা দিল স্টেশনের উদ্দেশ্যে, সেই গাড়ির সাথে যোগ দিল আশে পাশের একজিবিশন হল থেকে বোঝাই গাড়িগুলিও। ট্রেন স্টেশনে গিয়ে সব কাঠের ক্রেট বোঝাই হল ২১টা ট্রেনের বগিতে। ... ...
তবে সবার আগে উনুনে উঠলো জলভরা লোহার কড়াই। এতে বাঁধাকপি ভাপানো হবে। ঠাকুমা খুব ঝুরি করে বাঁধাকপি কাটছে, বাঁধাকপি যত ঝুরি করে কাটা হবে স্বাদ তত খেলবে এর। তবে আমার মনোযোগ বাঁধাকপিতে নেই। সব মনোযোগ ঠাকুমার হাতের শাঁখা-পলা এক অদ্ভুত ছন্দ তুলছে তাতে। ক্রমাগত সে ছন্দ আমার লোভ বাড়িয়ে দিচ্ছে, ও ঠাকুমা, এবার রথের মেলা থেকে আমাকে ঠিক এমন চুড়ি কিনে দিবা? ... ...
মনিপিসি কলেজের জন্য আজ বের হলো না। আর ঠাকুমার কাঁথাগুলোও কাঠের বাক্সে থেকে গেলো। একে তো হাটবার তার উপর মনিপিসির ব্রতের দিন। উনুনের আঁচ নিভলো না আজ। তবে উনুনে আমিষ ওঠার আগেই ঠাকুমা নিরামিষ পদ করে নিতে চায়। ব্রতশেষে লাল আটার রুটি দিয়ে মনিপিসি ঝিঙে বাসন্তী খাবে। ... ...
জীবন চলমান। কাদামাটির রাস্তা গিয়ে মেশে পিচে অ্যাসফল্টে। প্রকৃতির হাওয়া কেড়ে নেয় বিদ্যুতি বাতাস। তার মাঝেই উঁকিঝুঁকি দেয় জোনাকিরা। হাতছানি দিয়ে ডাকে গ্রামীণ স্বপ্ন। আন্তরিকতা আর সৌজন্যের তফাৎ বুঝতেই কেটে যায় অনেকটা সময়। কাদামাটি আর ইটপাথরের সংশ্লেষময় সময়ের বৃত্তান্ত। ... ...
দেশভাগ বিষয়টি কোনো রাতারাতি ঘটে যাওয়া আকস্মিক ঘটনা নয়, অনেকদিন ধরেই একটু একটু করে তার প্রেক্ষিত তৈরি করা হয়েছিল – ঠিক সেইরকমই, সেই সময়ের ভারতীয় শিল্পীদের কাজে তার যে প্রতিফলন রয়েছে তাও ঠিক একদিনের ঘটনা নয়। .... আশ্চর্যের ব্যাপার হল, বাংলার নাটক, সাহিত্য, ফটোগ্রাফি এবং চলচ্চিত্রের মধ্যে দেশভাগের বিষয়টির যে জোরালো উপস্থিতি, তা কিন্তু চিত্রকরদের কাজের মধ্যে নেই। দেশ ভাগ হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ বাস্তু হারিয়ে শেষ সম্বল নিয়ে এপার বাংলায় চলে আসছে – এমন দৃশ্য আমরা সমকালীন ফোটোগ্রাফ এবং কিছু পরে নির্মিত চলচ্চিত্রে দেখতে পেলেও খুব কম শিল্পীই এই বিষয় নিয়ে সরাসরি ছবি এঁকেছেন। চিত্রকলা এমনই এক দৃশ্যভাষা, যেখানে কেবলমাত্র চোখে দেখা দৃশ্যের একটা চটজলদি ডকুমেন্টেশন করে দিলেই চলে না, শিল্পীর নিজস্ব ভাবনা, মনন এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিশ্লেষণ কাজের অঙ্গ হয়ে যায়। চলচ্চিত্রের মত ন্যারেটিভ মিডিয়াম নয় বলেই, চিত্রকলার ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং যথেষ্ট ম্যাচিওরিটি দাবি করে। ফলে চিত্রকরদের কাজে আমরা দেশভাগ যতটা পেয়েছি, তার থেকে অনেক বেশি পেয়েছি তার রাজনৈতিক এবং আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতের অনুসন্ধান। .... ... ...
আমাদের চারদিকে সারাক্ষণ খড়মড়ে মত বাস্তব ছড়িয়ে আছে। কাগজে, রুপোলী বা সোনালী পর্দাতেও। আমি তাদের সাথে কথা বলি। অন্য সবার মত। কথা বলি, হাঁটি একসাথে কিছুটা, কখনো কখনো তাদের বাড়ি লৌকিকতা করতে যাই। কিন্তু ওদের আমি ভালোবাসিনা। কঠোর বাস্তব, তাকে আমি ভালোবাসিনা। সমাজের খাতায় আমার অনেক রকম নাম লেখা আছে। বোকা, ভিতু, ক্যাবলা, অসুস্থ মস্তিষ্ক, এইসব। তবু আমি ঐ তাদের ভালোবাসি। কোমল অবাস্তব গল্পদের। রূপকথা, উপকথা, লোককথা, পুরাণ। তাতেও খড়মড়ে আছে, ধারালো, ছুঁচলো, টগবগে গরম, এসব আছে। তবু কেমন যেন মনে হয় জলের ভেতর দিয়ে শোনা শব্দের মত হয়ে যায় ওরা। নরম, ফিসফিসে। আমার মনে হয়। আমি অবাস্তব গল্পদের ভালোবাসি। রূপকথাদের । ... ...
আরতুরোস বললে, ‘দেখতে থাক। পাঁচ মিনিটের বেশি যদি লাগে, হোটেলে ফিরে গিয়ে আমার পয়সায় বিয়ার খাওয়াব। কৌতূহল বেড়ে গেল। বিয়ারের জন্য নয়। সপরিবারে পরায়া গাড়িতে কারো লিফট পাওয়া অসম্ভব মনে হচ্ছিল। তিরিশ বছর আগে জার্মানিতে হাত দেখিয়ে লিফট জোগাড় করার ভীষণ চল ছিল। নিজে করেছি। তবে সেটা অটোবানে। শহরে নয় -সেখানে সরকারি পরিবহন ব্যবস্থা আছে, আমেরিকার মতন নয়। কথ্য জার্মানে বলা হয়, বুড়ো আঙ্গুল (প্যার দাউমেন) দেখিয়ে সফর করা। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অনিশ্চয়তার কারণে হয়তো জার্মানিতে এই যানযাত্রার পদ্ধতি প্রায় বিলীন এখন। ... ...
সুবিনয় রায়ের গান শুনতে গিয়ে দেখলাম সেখানে বিভূতিভূষণ উপস্থিত। " কী অচেনা কুসুমের গন্ধে" জেগে উঠছে ছবি, আর আমি ভাবছি একের পর এক মৃত্যুমিছিলের কথা। যে মানুষ চলে গেলেন, তাঁদের যাওয়া নয়, তাঁদের সঙ্গে সামান্য কিছু কথা, দেখা, কয়েকটি মুহূর্ত। ছোটবেলার বন্ধু, বন্ধুদের বাড়ির লোক চলে গেলেন খুবই অলক্ষ্যে। আরো এমন অনেক মানুষ যাঁদের চিনিনা। কিন্তু শোক ছাপিয়ে এই ভাবনা প্রবল যে এই এঁদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে সেইসব জমানো মুহূর্তেরা থেকে গেল। এইসব যখন হয়েছে, তখন ভাবিনি কোন কোন পথের বাঁকে আনন্দময় স্মৃতি জমে উঠছে। হেলায় কুড়িয়ে বইয়ের ভাঁজে রাখা সেসব ফুলই অপূর্ব রূপ নিয়েছে এখন। ... ...
‘রাইডিং দ্য ওয়াইল্ড হর্স মেডিটেশন’ আমি আর কখনো করিনি। ঐ পাঁচদিন আমার শরীরের, মনের ওপর যে ছাপ ফেলেছিল – তার জের সামলে উঠতে পারছিলাম না। আমি বুঝতে পেরে গেছিলাম, যে জীবনকে আমি এতদিন যা বলে জেনে এসেছি, তা ঐ পাঁচদিনে একেবারে শেষ হয়ে গেছে। সেই ‘আমি’ শেষ হয়ে গেছে তার সঙ্গেই। আমি বুনো ঘোড়ার পিঠে উঠতে গেছিলাম। বুনো ঘোড়ারা আমাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। ঐ ধুলোর মধ্যে এখন রয়েছি পড়ে ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের ক্রিচারের মত এই ‘আমি’। নিজের অচেনা। নতুন। হ্যাঁ, ঐ বুনো ঘোড়া আমার জন্মদাতা। ... ...
বেগম কোম্পানি সাহেবের রাতের খানায় রাখবেন রোগনি রোটি, শামি কাবাব, বড় ডেগচিতে সারা রাত জারানো মাংস আর শালগম দিয়ে বানানো শাবডেগ। সঙ্গে মাহি পোলাও। ভাগীরথীর টাটকা মাছের পোলাও, কাঁটা ছাড়া, সুগন্ধি মশল্লায় জাফরানে আর গোলাপজলে আদুরে মখমলি মাছ ফিরিঙ্গি জিভে জমবে ভালো। বেগমের ইচ্ছে ছিল বারো ঘন্টা ধরে তরিবৎ করে বানানো সাত খানা পরত দেওয়া মিঠি পরোটাও রাখা হোক। হ্যাঁ, তাও হচ্ছে বৈকি শেষ পর্যন্ত! ... ...
কাকতালীয় ঘটনার সঙ্গে অপহরণের কোনও আপাত সম্পর্ক নেই, তবে এই কাহিনিতে আছে। আসলে পুরো ধানাই পানাই জুড়েই কাকতালীয় ঘটনার ছড়াছড়ি। সব এখানে লেখা সম্ভব নয়, তবু কিছু তুলে দিলাম। আমার এক বন্ধু, তার নাম বাবলু, ভাল নাম বি- আচ্ছা থাক। বাবলুই চলুক। আমি নিজের বাড়িতে ফোটো ল্যাব বানানোর আগে ওর বাড়িতে ছবি প্রিন্ট করতে যেতাম। ডার্ক রুমটা ছিল ছাদের ওপর। ছবি ছাপার সঙ্গে সঙ্গে গপ্পো গুজবও চলত সমানে। ওর আসল নামটা যেমন উল্লেখ করলাম না, বাড়িটা কোথায় ছিল, সে প্রসঙ্গও এড়িয়ে যাচ্ছি সঙ্গত কারণেই। ... ...
হাতের বাতি দোলাতে দোলাতে পুব-মাথা থেকে শুরু করে বিল্ডিঙের পশ্চিম-মুখো চলেছিল বিল। বারোটার ঘণ্টা শুরু হতে হতেই ও সেই আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে হপস্কচ খেলার ভঙ্গিতে প্রতিটা ঢং শব্দের সঙ্গে কল্পিত ছক লাফাতে লাফাতে পার করল। কেউ দেখলে ভাবত এই মোটা মুচওয়ালা মুশকো জোয়ানটা করছে কী? আর ওর আট বছরের মিয়নো বউ সিমোন দেখলে কী বলত? কে কী বলল বা ভাবল তাতে বিলের ঠ্যাঙা। রাতের অন্ধকার যেমন কিছু ভয় জুটিয়ে আনে, তেমনি অনেক ভান-ভণিতাও ছেড়ে চলে যায়। এই যেমন, রাত একটার ঘণ্টা বাজার সময়, সে যদি পুব দিকে থাকে তাহলে ক্যাপ্টেন বার্কের গ্রে হাউন্ড জ্যাকের মত গলা উপরে তুলে একটা গম্ভীর ডাক ছাড়ে। দিনে দিনে গলাটা জ্যাকের মত সুরে খেলছে। ভাবলেই গর্বে বিলের বুক ভুঁড়ি ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যায়। এমনি-ধারা নানান খেলা দিয়ে নিজেকে জাগিয়ে রাখে বিল গেন্স। ... ...
"যে অংশটুকু বাকি ছিল এই কাহিনির, লিখে গেলাম। এই কাহিনিকে মরে যেতে দিও না। আলো হাতে, প্রেম বুকে নিয়ে, চোখে স্বপ্ন নিয়ে, হৃদয়ে সাহস নিয়ে আমরা সবসময় মানুষের পাশে পাশেই থেকেছি। তাপিতকে শান্ত কর। ভ্রান্তকে পথ দেখাও আলমিত্রা। তোমার কাছে এসে যেন লোকে শান্তি পায়। মাছি হয়ো না, মৌমাছি হও। তুমি স্বেচ্ছায় আমার পথ বেছে নিয়েছ। আমি চলে যাবার পর থেকেই শুরু হোক তোমার পথ চলা। শেবার রানির বাকি কাহিনি লিখে গেলাম। রানির মত হও। একাকী, সাহসী, ব্যতিক্রমী, নির্জন । " ... ...
মাসিদোনিয়াতে তাঁরা জনসংখ্যার পঁচিশ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী স্রেভেনকোভস্কি বললেন জনশ্রুতি এই যে মাসিদোনিয়ান সরকার তাঁদের মৌলিক অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছেন, আলবানিয়ান ভাষা শেখানো হয় না, ছেলে মেয়েদের আলবানিয়ান নাম দেওয়া নিষিদ্ধ, সরকারি দফতরে, আর্মিতে চাকরি জোটে না। ক্লিনটন সরকার এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কিন্তু আপনাদের জানাতে পারি এটি সম্পূর্ণ অসত্য। মুশকিল হলো প্রধানমন্ত্রী স্রেভেনকোভস্কি এমন সব রাজনৈতিক ইসু তুলে ধরলেন যার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানা ছিল না। ... ...
ইন্দ্র বিশ্বাস রোডের বাসাবাড়ি ছিল প্রায় এক মেসবাড়ি, জংশন ষ্টেশন। তখনো পূর্ব বঙ্গের লোকের আসায় বিরাম নেই। এপারে এসে আমাদের ফ্ল্যাটে সাময়িক আশ্রয় নিয়ে বাসা খুঁজে কাজ খুঁজে চলে যেতেন। অত ভীড়ে পড়ব কোথায় ? কে পড়া দেখায়? সকলেই কথা বলছে, হাসছে, গল্প করছে। ক্লাস নাইনে সায়েন্স পেলাম। নাইন থেকে টেনে উঠতে গিয়ে সেকেন্ড কলে পাস করলাম। খুব খারাপ। ভয়ে আমার বউদির ভাই গটুদা, যে দিল্লি থেকে পাস করে কলকাতায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ত আমাদের ফ্ল্যাটে থেকে, এক বুদ্ধি দিল। প্রগ্রেস রিপোর্টের নম্বরের কালি ব্লেড ঘষে তুলে বেশি নম্বর লিখে দেওয়ার কাজ দুজনে মিলে করলাম। এবং ধরা পড়ে গেলাম বাড়িতে। ... ...
বেশ ক’বছর আগের কথা। তা বছর পনের তো হবেই। পুরী বেড়াতে গেছি। সঙ্গে স্ত্রী আর ছেলে। মেয়ে পরীক্ষা ছিল বলে যায়নি। ওখানে গিয়েই মনে হল, ওড়িষার যে সব ভাল ভাল জায়গাগুলো আমি আগে দেখেছি, সেগুলো এদের ঘুরিয়ে দেখাই। ছেলের মা অবশ্য আগেও অনেকবার পুরীতে এসেছে, তবে পুরীর বাইরে খুবজোর কনারক অবধি গেছে। ছেলেতো এই প্রথম এল। নাকের বদলে নরুণের মত মেয়ের বদলে আর একটা মেয়ে পেয়ে গেলাম। আমাদের পাশের ঘরে তাদের পরিবার উঠেছে, আলাপও হল। বললাম, আমি তো একটা গাড়ি নেবই, তুই যাবি আমাদের সঙ্গে? সেও রাজি। চারজনে বেরিয়ে পড়লাম। ... ...
মুর্শিদাবাদের কেল্লা নিজামতের ভেতরে ছোট ছোট নানান দর্শনীয় বিষয় ছিল যার অধিকাংশই আজ নষ্ট হয়ে গেছে, বিশেষ করে কেল্লার ভেতরের যেসব দৃষ্টি নন্দন বাগান ছিল আজ সেসব গভীর জঙ্গলে ঢাকা পরে আছে, যেমন আজ সেদিনের কেল্লার ‘মহল সেরা’ এলাকায় গেলে দেখা যাবে একটি বিরাট অঞ্চল জঙ্গলে পরিণত হয়েছে অথচ নবাবী আমলে এই এলাকাতেই ছিল দেশ বিদেশের দামি সুগন্ধি ফুলের বাগান, আজও অবশ্য সেই জঙ্গলের ভেতরে নবাবী আমলের কিছু ফুলের গাছ দেখা যায়। ... ...
শিলাবৃষ্টি ছিল তরাইয়ের শীতকালে উপরি পাওনা। এ শিল আবার আমাদের দক্ষিণবঙ্গের মত মিহি শিল নয়, যে ছাতা মাথায় কুড়োতে বেরিয়ে পড়লাম। রীতিমতো তাগড়া তাগড়া শিল, মাথায় পড়লে আর বেঁচে ফিরতে হবে না। বরফের বড় বড় চাঙড় পুরো। সেকেন্ড ইয়ারেই বোধ হয় দেখেছিলাম শ্রেষ্ঠ শিলাবৃষ্টি। আধঘন্টার মধ্যে হস্টেলের সামনে বিশাল ফাঁকা সবুজ ক্যাম্পাস পুরো সাদা হয়ে গেল। শিলের সাইজ দেখে কেউ বেরোতে সাহস পায় নি। একজন বোধ হয় বেরিয়েছিল, প্রথম শিলের আঘাতেই তার ছাতা ছিঁড়ে ফুটো হয়ে গেল। ... ...