জামু ছেলেটা খায় খুব তৃপ্তি করে, যাই দেন সব চেটেপুটে খেয়ে নেয় শুধু মাছটা ছাড়া। মাছ দিলে কেমন যেন খিমচে খিমচে মাছ ছাড়ায় কাঁটা থেকে, খেয়াল করে দেখলে ওর অস্বাচ্ছন্দ্য নজরে পড়ে বৈকী। তা হিন্দী কথা যারা বলে, তারা অনেকেই মাছটাছ মোটে খায় না জানেন সরলা। কিন্তু এ ছেলে ঠিক নিরামিষাশি তো নয়। একদিন মাংস হয়েছিল, ইতস্তত করে জিগ্যেস করেছিলেন মাংস খাবে কিনা? শুনে মুখটা খুশিতে ঝলমলিয়ে উঠেছিল, খেয়েওছিল ভারী তৃপ্তি করে। মাংস খায় যখন নিশ্চিন্তেই মাছ দিয়েছিলেন সরলা। হয়ত ওদের কানপুরে মাছ পাওয়া যেত না, তাই খেতে শেখে নি ভাবেন আর চেষ্টা করেন ডাল তরকারি বেশি করে দিতে। মাছটা নাহয় আর দেবেন না ওকে, ভাবতে নিজের কাছেই মাথা হেঁট হয়ে যায় তবু না ভেবে পারেন না – ছেলেটা মাছ না খেলেও একটু সাশ্রয় হয় বৈকি। বাড়ির কথা কিছুই বলতে চায় না ছেলে, জিগ্যেস করলেই ওর চোখ মুখ কাঁদোকাঁদো হয়ে যায় আর খুব অস্থির হয়ে ওঠে, একদিন না খেয়েই দৌড়ে চলে গেছিল, তারপর থেকে খুব সাবধানে ওর সাথে গল্প করেন। ঝুনু টুনুকেও বলে দিয়েছেন বাড়ির কথা জিগ্যেস না করতে। তা বাদে কতশত গল্পও যে জানে ছেলে! দিল্লীতে থাকার সময় রোজ নাকি সকালে উঠে স্টেশানে চলে যেত, সেখানে গিয়ে ট্রেনে উঠে জায়গা রাখত। পাকিস্তান থেকে আসা ট্রেন ফিরতি যাবার জন্য ছাড়ত অনেক পরে – ততক্ষণ জামুরা দলবেঁধে উঠে জায়গা দখল করে বসে থাকত। পরে পাকিস্তানযাত্রী সব ‘রহিস আদমী’রা এলে তাদের কাছে পাঁচ টাকা করে নিয়ে সিট বিক্রি করে দিত। ... ...
তার গ্রাম মৌচুরিয়ার সেই বন্ধুর নাম বুধন টুডু। বুধন নকশাল ছিল। কলকাতার বাবুদের সঙ্গে বেলপাহাড়ির দিকে বিপ্লব করতে গিয়েছিল। বাবুরা কেউ ধরা পড়েছে, কেউ ফিরে গেছে বাড়ি। বুধনকে পুলিস খুঁজছিল অনেকদিন। কিন্তু পাত্তা করতে পারছিল না। সে খুব বুদ্ধিমান। বার বার পুলিশকে ধোঁকা দিয়েছে। ধরতে পারলে জেলে ঢুকিয়ে দেবে। মেরেও ফেলতে পারে। সে কোথায় থাকে, কোথা থেকে গ্রামে ফেরে, তা পুলিশের খোঁচড় বুঝে উঠতেই পারে না। তার দেড় বিঘে জমিন আছে চাষের। সেই জমিই তাকে টেনে এনেছিল গ্রামে। ধান কাটার সময় গত অঘ্রানে এসেছিল। তখন পুলিস টের পায়নি। যখন খবর গিয়েছিল, সে কাজ সেরে পালিয়েছিল। এই বর্ষার দিনে চাষের টানে আবার ফিরে এসেছিল। গ্রামের চাষিবাড়ির ছেলে, প্রায় ভূমিহীন বুধন। জমি পাবে ভাত পাবে, তাই শহরের বাবুবাড়ির ছেলেদের কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাড়ি ছেড়েছিল। বিপ্লবের স্বপ্ন ভেঙে গেছে। বাবুবাড়ির ছেলেরা ফিরে গেছে শহরে। ... ...
আর ছিল চাঁদা মাছ। মাথায় পাথর থাকতো। থাকতো তারার চিহ্ন। আর ছিল পুঁটি। নানা রকম আকারের। বড় বা মাঝারিগুলো পদোন্নতি পেয়ে আলাদা হতো চুনোমাছ থেকে। পুঁটি মাছ ভাজা, চচ্চড়ি, ঝাল, টক--সব ভাবেই খাওয়া হতো। আর দেদার হতো পুঁটি শুঁটকি। সেগুলো ক্যানেলের ধারে ক্যানেলের পাড়ে বেশি হতো। আশ্বিন কার্তিক মাস জুড়ে। সারা রাত ধরে লোকে ক্যানেলের পাড়ে সাপের ভয় এড়িয়ে আড়া বসাতো। রাতে আড়া পাহারা দিত। তাতে শোল, চ্যাং, ল্যাঠা মাছও পড়তো্। চ্যাং বোড়া বলে একটা সাপ ছিল বিষাক্ত। চ্যাং মাছের মতোই দেখতে। আমি ভয়ে কোনোদিন খাই নি। সাপের মতো দেখতে ভেবে ল্যাঠা মাছও খেতাম না। শোল মাছ দেখি শহরে খুব দামি। ... ...
এদিকে শেবার রানির মন উথাল পাথাল। সে আগ্রহী। সে ভয়ানক কৌতূহলী। সে শান্তি পায় না। সে জানতে চায় সেই রাজাকে। প্রজ্ঞা তো হৃদয়ের অলঙ্কার! এও তো একরকমের যুদ্ধ যাত্রা। মননের যুদ্ধ। মেধার যুদ্ধ। চাতুর্যের কৌশলী তির। জ্ঞানের শাণিত তরবারি। মগজাস্ত্র! রানি ভাবে, এই যাত্রা কি খুব সহজ? মোটেই নয়। ইতিহাসে এমন যুদ্ধযাত্রার হদিশ কি পেয়েছ কখনো আলমিত্রা? পনেরশ মাইলের এক দীর্ঘ মরুপথ। সে পথ এঁকে বেঁকে গেছে আরব মরুভূমির গভীর প্রদেশ দিয়ে, নোনা সাগরের তীর ঘেঁষে মোআব, জর্ডন, কানানের ফসলের খেত আর আঙুর বাগানের ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে উঠে গেছে জেরুজালেমের পাহাড়ে। দুইমাসেরও বেশি সময় চাই। ... ...
সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট স্থানীয় মহিলাদের বেকিং কম্পিটিশন। তা নিউজিল্যাণ্ড বেকিং এর সবচেয়ে তুখোড় উদাহরণ পাভলোভা আর পাই। আমাদের যেমন রোল, পাটিসাপটা, সিঙারা, যাকে সাদা বাংলায় পথের খাবার বা স্ট্রীট ফুড বলা যেতে পারে, নিউজিল্যাণ্ডের স্ট্রীট ফুড বলতে যদি কিছুকে নির্দেশ করতে হয়, সে হবে পাই | যে কোন মাংস (বীফ, পর্ক, ল্যাম্ব, মুরগী, মাছ, মায় মেটে) এবং শাকসবজি আর মিশিয়ে রান্না করে পাইয়ের খোলের মধ্যে ভরে দিন; তারপর তার ওপরে চীজ কুরিয়ে বা কেটে পরতে পরতে রাখুন, এবার পাইয়ের ময়দার খোলের “ঢাকনা” বন্ধ করে দিন, বন্ধ করার পর ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে ৩০ মিনিট রেখে বেক করুন | পাই তৈরী। ... ...
আমি খেজুর চাচার তাঁতঘর পাড় হয়ে থানার ঘাটের দিকে হাঁটা শুরু করি। তাঁতঘরে একজন দু'জন তাঁতী এরইমধ্যে চলে এসেছে। মাকুরের খটাস খটাস শব্দ সকালের বাতাসে কেমন উদ্দেশ্যহীনভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। আমি মনিপিসির জন্য আর দেরী করি না। দ্রুত হাঁটতে থাকি থানার ঘাটের দিকে, মনিপিসিটা কিচ্ছু বোঝে না। ডলি ফুপুদের বাড়ি থেকে গন্ধরাজ ফুল নিতে হবে তো আমার। কিন্তু থানা ঘাটের মোড় আসতেই মনিপিসি গলা চড়ায়, মনি ওদিকে না, আগে কলমি ফুল নিয়ে আসি চল্। আমি চোখে প্রশ্ন নিয়ে তাকাই। উত্তরে শুধু মনিপিসিকে অনুসরণ করার ইঙ্গিত পাই। আমি পায়ে পায়ে থানা ঘাটের ঠিক পাড়ে এসে দাঁড়াই। ওটা নদী নাকী পুকুর আমি ঠিক বুঝতে পারি না। ... ...
পরীক্ষকের মুখে কোন বাক্যি নেই, পাতা ওলটাচ্ছেন। আমি বললাম আমার ইসরায়েলি ভিসার কাগজটা ওর ভেতরেই আছে আর যদি ব্রিটিশ ভিসা খুঁজছেন আমি সেই পাতাটা খুলে দেখাতে পারি। নিরুত্তরে চোখ তুলে তাকিয়েই আবার পাসপোর্টে মনোনিবেশ করলেন। এতো মন দিয়ে আমি দস্যু মোহন বা দীপক চ্যাটারজির বিশ্বচক্র সিরিজের বই পড়ি নি। পিছনের ভদ্রমহিলাকে আমার সুটকেসটি দিয়েছিলাম আমার অনুমতির অপেক্ষা না রেখে তিনি সেটি খুলে দেখেছেন। ... ...
আমার বাবার মুখে শ্রদ্ধেয় কয়েকজন নেতার নাম উচ্চারিত হতো। মুজফ্ফর আহমেদ, আবদুল হালিম, পি সুন্দরাইয়া, হরেকৃষ্ণ কোঙার এবং নাগি রেড্ডি। পি সুন্দরাইয়া ১৯৭৬-এ পার্টি সংশোধনবাদী হয়ে যাচ্ছে বলে চিঠি লিখে পার্টির সাধারণ সম্পাদক পদ ও পলিটব্যুরো সদস্যপদ ছেড়ে দেওয়ায় কষ্ট পান। জনসঙ্ঘের সঙ্গে হাত মেলানোয় ছিল মূল আপত্তি সুন্দরাইয়ার। বাবা অবশ্য ইন্দিরা জমানার অবসানে প্রাণপণ লড়ে যান। ... ...
পলাশীর যুদ্ধের ঠিক আগে সিরাজ কাশিমবাজার কুঠি দখল করে সেখানকার সবাইকে গ্রেপ্তার করেন, সেই বন্দি বাহিনীর মধ্যে হেস্টিংসও ছিলেন। রেশমের ব্যাবসার কাজ দেখতে দেখতে এ দেশের অনেক কিছুই রপ্ত করে ফেললেন। গড়গড়িয়ে বাংলা আর উর্দু বলতে শিখলেন। ফারসিও। এদেশটাকে তিনি ভালোই বেসেছিলেন। স্বদেশের থেকে একটু বেশি, এমনটা নিজেই বলেছেন। ... ...
তার পুব দিকের ঢালের উঁচুতে বড় বড় ওটের ঘাস জন্মেছে। ওই ঘাসবনের পরেই খাড়া পাহাড় সোজা নেমে গেছে কোশি নদীর পাড় অবধি। একদিন খাড়াই পাহাড়ের উত্তর দিকের গ্রাম থেকে একদল মেয়েবউ ওখানে ঘাস কাটছিল। হঠাৎ এক বাঘ তাদের মধ্যে এসে পড়ে, হুড়োহুড়িতে এক বয়স্কা মহিলা হুমড়ি খেয়ে পড়ে ঢাল বরাবর গড়িয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। বাঘটা যেমন হঠাৎ আসে তেমনই চিৎকার চেঁচামেচিতে রহস্যময় তার পালানো। খানিকটা ভয় কাটলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে মেয়েরা আর ঘেসো জমির ঢাল ধরে খানিকটা নেমে এক সরু ধাপিতে ওনাকে আহত অবস্থায় পাওয়া গেল। মহিলা কোঁকাতে কোঁকাতে বলেন তিনি মারাত্মক চোট পেয়েছেন। ... ...
আমাদের শুরুতেই দেখতে হবে, মেডেলের আশা আমাদের ঠিক কোন কোন খেলাগুলিতে ছিল। আসলে অলিম্পিক স্পোর্টসগুলি সম্পর্কে আমাদের ধারণা এতটাই কম থাকে, যে চার বছর ধরে খবরের কাগজের পাতায় তাদের দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়, উন্মাদনার কথা ছেড়েই দিলাম। অধিকাংশ ক্রীড়ামোদীই জানেন না – কোন খেলায় কে অলিম্পিকের যোগ্যতা মান পেরোচ্ছেন এবং কারা কারা অংশ নিচ্ছেন। এটা তো আর শুধুমাত্র ক্রিকেটকে আর মিডিয়াকে দোষারোপ করে কাটিয়ে দিলে চলে না। পাবলিক যা খায় মিডিয়া তাই-ই খাওয়ায়। আমরা এই পর্বে দেখে নেব, কারা কারা পদক পাবার সম্ভাবনা নিয়ে টোকিও গিয়েছিলেন। এবং তারপর একে একে ভিন্ন ভিন্ন খেলায় আমাদের পারফরম্যান্সের বিচার করার চেষ্টা করব, প্রস্তুতি সহ। ... ...
সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের সাহায্যার্থে অর্থবানের টাকার থলির বাঁধন আলগা করার আইনি নির্দেশ সব আব্রাহাম পন্থী ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। ইহুদি ধর্মে প্রথমে ফসলের, পরে আয়ের কিছু শতাংশ (দশ অবধি) অভাবী মানুষের সেবায় উৎসর্গ করার আদেশ পাওয়া যায় – এর নাম জেদেকাহ (আক্ষরিক অর্থে ন্যায়)। সবাই সমান উপার্জনে সক্ষম নন বলে অর্জিত ধন ভাগ করে নেওয়াটা ন্যায় বলে বিবেচিত হয়। প্রাচীন সমাজে আপামর জনসাধারণের জন্য সরকারি দাতব্য চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না -রাজা রাজড়ারা কর আদায় করে যুদ্ধু বাধাতেন। জনসেবায় কুয়ো খোঁড়া বা রাস্তা বানানোর কাহিনি ইতিহাসে পাওয়া যায় বটে তবে সেটি সবসময় প্রয়োজন অনুযায়ী সাধিত হত কিনা তা বিতর্কের বিষয়। অতএব দরিদ্র জনগণের ভরসা স্বচ্ছল জনগণ। এই দানের সদিচ্ছা স্বচ্ছল জনগণের ওপরে ছেড়ে না দিয়ে একটা ধর্মীয় আদেশ সেই দান ব্যবস্থাটিকে কায়েম করে। ... ...
২০১৯ - আমার দেখা প্রথম রমজানে ফুড ডিস্ট্রিবিউশনে বিএমডাব্লিউ, অডি, মার্সেডিজ চড়ে লোক আসছে ডোনেশন নিতে। যেমন পোশাকের জৌলুস, তেমন গয়না। মহিলারা সবাই বোরখা আর হিজাব। শরীরের যতটুকু দেখা যায় দামিদামি মণি-মুক্তো-হিরে। চড়া মেকআপ। আপাদমস্তক ব্র্যান্ডেড। তখনো রোহিঙ্গা ক্লায়েন্ট আমি দেখিনি। আমার জ্ঞানের পরিধি যতটা জানে রিফিউজি শব্দকে - তাকে গরিব হতে হবে। আমার রিফিউজি কলিগ আর এই ডোনেশন নিতে আসা মানুষদের সাথে ঐ সংজ্ঞার কোন মিল নেই। রোহিঙ্গা ক্লায়েন্টরা ওদের ধারেকাছে আসতে পারবে না। আফগানি, ইরানি ক্লায়েন্টের বাড়ি ঢুকলে সুন্দর গন্ধ। দারুন সব চায়ের সেট। অসাধারণ চা, পেস্তা, বাদাম, বিরিয়ানি, ফিরনি। রোহিঙ্গা ক্লায়েন্টের বাড়ি জুতোর জঙ্গলের পাশে রান্না, দুর্গন্ধ ভরা ঘর। দম বন্ধ হয়ে আসে। জুতোর পাশে বসি। পানের পিকের পাশে বসি। নিজেও পান খাই। ... ...
প্রথম যেদিন সাকিনা মেজদিকে ওইরকম থুতনি নিয়ে দেখল এবং মেজদির মুখে শুনল যে ওর ক্যানসার হয়েছে সে কী কান্না বুড়ির। শুধু বলে, “ও মা, তাহলে তো তুই বাঁচবি না রে মেয়ে৷” মেজদিই বরং ওকে সান্ত্বনা দিত। এরপরই সাকিনা বিবি এমন একটা কাজ করেছিল যা আমি কোনোদিন ভুলব না। মেজদিকে, যবেই আসত গোটা তিনেক করে ডিম দিত খেতে। পয়সা নিত না। কিছুতেই নিত না৷ বলত, “তোর শরীর খারাপ রে মেয়ে৷ রোজ খাবি একটা করে। দিশি ডিম। উপকার হবে৷” অবাক হতাম। এক হতদরিদ্র গ্রাম্য মহিলা কোন্ মনের জোরে এমন কাজ করতেন!! ... ...
সুতরাং আমরা এই লেখায় অন্তত কয়েকজন এমন ক্রীড়াবিদের নাম লিখে রাখি যাঁদের কথা শোনা যাচ্ছেনা। ধরা যাক দীক্ষা ডগরের কথা। গল্ফে অদিতি অশোকের পাশাপাশি ইনিও ফাইনাল রাউন্ডে খেলছিলেন। গল্ফেই উদয়ন মানে, অনির্বাণ লাহিড়ী পুরুষদের ইভেন্টে ছিলেন। ২০ কিমি রেসওয়াক ইভেন্টে ফাইনাল রাউন্ডে ছিলেন সন্দীপ কুমার, রাহুল রোহিলা, ইরফান থোরি (পুরুষ ), প্রিয়াংকা গোস্বামী এবং ভাবনা জাট (মহিলা )। মহিলাদের ডিসকাস থ্রো তে কমলপ্রীত ক'র । রোইং এ অর্জুন লাল এবং অরভিন্দ সিং। সেইলিং এ পুরুষদের ইভেন্টে বিষ্ঞু সার্ভানন, কে সি গণপতি, বরুণ ঠক্কর, এবং মহিলাদের ইভেন্টে নেত্রা কুমানন। শুটিং এ সৌরভ চৌধুরি। কুস্তির দীপক পুনিয়ার কথা আমরা তাও একটু আধটু শুনতে পেয়েছি, পঞ্চম স্থানে শেষ করায়। হাতে গোনা যে কয়েকজনের নাম এখানে লেখা হলো, এঁরা সবাই স্ব স্ব বিভাগে ফাইনাল রাউন্ডে উঠেছিলেন। এর বাইরে রয়ে গেলেন বহু ক্রীড়াবিদ, যাঁদের অনেকের নাম আর কোনদিনই প্রচারের আলো পাবেনা। প্রসঙ্গত ভারত এবার মোট ১২০ জনের দল পাঠিয়েছিলো, দেশের ইতিহাসে এর থেকে বেশি খেলোয়াড় আগে কখনো অলিম্পিকে অংশ নেন নি। ... ...
আমার শীতলপাটি মাড়িয়ে চলে যায় মনিপিসি। হাতে কোহিনূর ফুপুর রেখে যাওয়া সেই কাঁসার গ্লাস। যতই গোলেনূর দাদীর বাড়ির ভেতর ঢুকতে থাকে মনিপিসি, ততই আবছা হতে থাকে তার ছায়া। একটি জামবাটি ভরা মেশানো মুড়ি আর মুড়কি। দাদুর জন্য মায়ের হাতে। আর প্রায় তার সাথে সাথেই ঠাকুমার হাতে গুড়ের চা। শীতল পাটিতে আমার পাশেই জমে ওঠে সবার চা খাওয়া। ... ...
গোমিয়া জায়গাটা আমাদের বাংলার বাইরে। তখন বিহারে ছিল, এখন বোধহয় ঝাড়খন্ডে। সেখানকার খবরের ফলো আপ রিপোর্টিং কোলকাতার কাগজে দীর্ঘদীন ধরে বেরোবে আশা করাই অন্যায়। কলকাতার সমাধান না হওয়া কেসগুলোই কি আর হয়। তবে হ্যাঁ, সেই যে আগের বার বললাম, ‘বিবস্ত্র’ টিবস্ত্র কিছু খুঁজে পেলে হয়, বেশ কিছুদিন ধরেই হয়। ‘সংবাদপত্রের সামাজিক ভূমিকা’ বা এই ধরণের কিছু আর্টিক্ল লিখে পুরষ্কার পাওয়া যেতে পারে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কিন্তু এখন সংবাদ শুধুই বিক্রয় নির্ভর। আর শুধু সাংবাদিকরাই বা কেন, আমরা সবাই কেমন বিক্রয় নির্ভর হয়ে যাচ্ছি দিন কে দিন। বহুদিন আগে শোনা নচিকেতার গানটা মাথায় কেমন আটকে গেছে – “সবাই পণ্য সেজে, কাকে কিনবে কে যে, সারাদেশ জুড়ে সোনাগাছি। কেন বেঁচে আছি” – ... ...
দাল মে কুছ কালা হ্যায় যারা বলেন তাঁদের আমরা সামগ্রিকভাবে বংশীবাদক—হুইসলব্লোয়ার—আখ্যা দিয়ে থাকি, যুগে যুগে তাঁদের দেখা পাওয়া গেছে। খুব কম ক্ষেত্রেই তাঁদের কথা মানুষ শুনেছে। তবে এক্ষেত্রে বাজারি কানাকানির ভিত্তিতে মিউনিকের টনক নড়ে। তাঁদের তাড়ায় অতি দ্রুত রিয়েচকা বাঙ্কার তদন্তকারি অফিসাররা খাতাপত্র দেখে আবিষ্কার করলেন সব্বোনাশ, এডুয়ার্ড নদিলো বিগত চার বছর (১৯৯৮ থেকে) ডলারের দামের ভবিষ্যৎ নিয়ে ফাটকা খেলেছেন। অনেক লোকসান লুকিয়ে রেখেছিলেন বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রার ব্যাবসায়ের আবরণে—তাঁর বসেরা টের পাননি। ... ...
“দরকার হলে এক দেশ আবার পুনর্জন্ম নিতে পারে, কিন্তু দেশের সংস্কৃতি একবার ধ্বংস হয়ে গেলে তাকে পুনরায় উদ্ধার করা অসম্ভব”! তখনকার দিনের এক খুব প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ টি ভি সুং পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন এই কথা। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল যে ২০,০০০ ক্রেট (বড় বাক্স) ভরা দুষ্প্রাপ্য চীনের অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে প্যালেস মিউজিয়াম থেকে। সব কিছু প্যাকিং হয়ে যাবার পরে এবার অপেক্ষা – ঠিক কবে স্থানান্তর প্রক্রিয়া চালু করা হবে সেই নিয়ে নির্দেশ আসার জন্য মিউজিয়ামের স্টাফেরা অপেক্ষা করতে লাগলো। অবশেষে ৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৩৩ সালে নির্দেশ এল পরিবহন চালু করার। সকাল বেলা গোটা বারো চোদ্দ মোটর গাড়ী এবং ৩০০ মত রিক্স ঢুকলো ফরবিডেন সিটিতে। ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেল চরম – সবাইকে ব্যাজ দেওয়া, গাড়িতে স্পেশাল নাম্বারিং করা – এই করতে করতে রাত হয়ে গেল। রাত আটটার সময় তিয়েনমেন স্কোয়ারের সামনের রাস্তা, যেটা সেখান থেকে জেনগ্যায়াংমেন ট্রেন স্টেশনের দিকে গেছে সেখানে কার্ফু-র মত জারি করে দেওয়া হল। একমাত্র পারমিশন নিয়ে এবং স্পেশাল ব্যাজের লোকেরাই এই এলাকায় ঢুকতে পারত সেই রাতের বেলা। রাত নটার সময় সারি দিয়ে গাড়ি গুলি প্যালেস মিউজিয়াম থেকে রওয়ানা দিল স্টেশনের উদ্দেশ্যে, সেই গাড়ির সাথে যোগ দিল আশে পাশের একজিবিশন হল থেকে বোঝাই গাড়িগুলিও। ট্রেন স্টেশনে গিয়ে সব কাঠের ক্রেট বোঝাই হল ২১টা ট্রেনের বগিতে। ... ...
তবে সবার আগে উনুনে উঠলো জলভরা লোহার কড়াই। এতে বাঁধাকপি ভাপানো হবে। ঠাকুমা খুব ঝুরি করে বাঁধাকপি কাটছে, বাঁধাকপি যত ঝুরি করে কাটা হবে স্বাদ তত খেলবে এর। তবে আমার মনোযোগ বাঁধাকপিতে নেই। সব মনোযোগ ঠাকুমার হাতের শাঁখা-পলা এক অদ্ভুত ছন্দ তুলছে তাতে। ক্রমাগত সে ছন্দ আমার লোভ বাড়িয়ে দিচ্ছে, ও ঠাকুমা, এবার রথের মেলা থেকে আমাকে ঠিক এমন চুড়ি কিনে দিবা? ... ...