নির্বাচিত ও চর্চিত চোদ্দোটি কবিতা। আলোচিত হয় সেগুলি রচনার ইতিহাস, রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতিসহ পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রেক্ষিত। এমনকি উদ্ধৃত নানা তরজমার মাধ্যমে বিকশিত হয় একই কবিতার বিবিধ পাঠও। সব মিলিয়ে উন্মোচিত হয় কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যের ভিন্নতর পাঠের দিক্নির্দেশ। সুমিতা চক্রবর্তী-সম্পাদিত একটি বই। পড়লেন ইমানুল হক ... ...
এ নয়, কুমুদি, অর্থাৎ জয়ন্তী অধিকারি, কেবল কেবলির কথাই লিখেছেন। আসলে তো তিনি কেমিস্ট্রির পন্ডিত। ডাকসাইটে বিজ্ঞানী। রীতিমতো গম্ভীর প্রবন্ধও লিখেছেন বিস্তর। গুরুতেই লিখেছেন উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারি, কাদম্বিনী গাঙ্গুলিকে নিয়ে। কিন্তু তিনি এমনই কেবলিময়, যে, চোখে দেখার আগে, এসব বিশ্বাস করা ছিল কঠিন। যেমন কঠিন ছিল বিশ্বাস করা, যে, কুমুদি আর নেই। জলজ্যান্ত জয়ন্তী অধিকারি হঠাৎই একদিন দিল্লি শহরে নেই হয়ে গেলেন। দিল্লি শহর দাঁড়িয়ে রইল শুধু খটখটে কুতুবমিনারকে নিয়ে। যিনি গেলেন, তিনি অবশ্য ডঃ জয়ন্তী অধিকারি। ডাকসাইটে বিজ্ঞানী। কেবলি তো অজর অমর অক্ষয়। তার মৃত্যু নেই। নামে কেবলি হলেও আসলে যে স্মার্ট, স্কলারশিপ পেয়ে রিসার্চ করে। কটকট করে কথার উত্তরও দেয়। সত্তরের দশকের সবুজ শাড়ি পরা সেই মেয়েটি কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের পাশ দিয়ে এখনও তো হেঁটেই যাচ্ছে, সবুজ শাড়ি পরেই। অবিকল একই রকম ভঙ্গীতে। ... ...
এই জীবনের তিনকাহন-এর প্রথমপর্ব, ‘বাপের বাড়ি’। লেখিকার জন্ম ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ-এ বাড়ি। ঠাকুরদা, ঠাকুমা, বাবা, জ্যাঠা, কাকা, পিসি সকলে মিলে বিশাল এক যৌথ পরিবার। চন্দননগরে সংস্কৃত টোল পণ্ডিতের বংশগত জীবিকা ছেড়ে শিক্ষা-চাকরির জন্য ঠাকুরদার কলকাতায়ন। তারপরে কলকাতায় বাড়ি বানিয়ে পাকাপাকি ভাবে বসবাস। বাবা-কাকা-জ্যাঠারা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বা আইনজীবী। বাড়ি ভর্তি ভাই-বোনেরা, আর আছেন গোপালজিউ। সেইজন্য বাড়িতে আমিষ খাবারের প্রচলন নেই। ভাই-বোনেরা মিলে বাড়িটাকে পুরো মাতিয়ে রাখে। কখনও থিয়েটার, কখনও হাতে-লেখা পত্রিকা প্রকাশ, আবার কখনও বা নিখাদ দুষ্টুমি। সঙ্গে বিজয়া, দোল, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার মতো চিরাচরিত উৎসব পালন তো লেগেই আছে। সেখানেও অবশ্য পারিবারিক বৈশিষ্ট্যের বিশেষ কিছু স্বাক্ষর আছে। অন্দরের অন্তর লেখিকার লেখায় এক নিরবচ্ছিন্ন চিত্রপটে ধরা দিয়েছে। ... ...
যেমন চিত্রণ-অলংকরণে, তেমনই ভাষার প্রয়োগে বৈচিত্র্যের অভাবিত-অপ্রত্যাশিত চমক সমগ্র বই জুড়ে অব্যাহত থাকে। মায়ামৃগবধের দৃশ্যে মায়াচরীদের নৃত্যসহ গীতে ‘সহসা আসি সহসা মিলাই/নয়ন ভুলায়ে মনেরে দুলাই/জাগায়ে দুরাশায় ডুবাই নিরাশায়—/হাওয়ায় হাওয়ায় সোনার ধূলার/ ঘূর্ণা বায়ে পায়ে পায়ে হারায়ে চলি—/নিরুদ্দেশে মরুমরিচীকা দলি নব নব সাজে/অভিনব দিনে রাতে—গহিন ছায়া রঙিন মায়াচরী’কুল আড়াল হয়ে যান পাণ্ডুলিপির পাতায় বন্ধ দরজার আগলে, আলতো বন্ধ দরজার পাল্লায় লেখা ফুটে ওঠে, ‘Behind Closed Doors Because...’ ... ...
উপন্যাস-এর নামটা আমাকে বুঝতেই দেয়নি ভিতরের খনিজের উপস্থিতি। প্রচ্ছদে যুবতীর ছবি দেখে মনে হয় কোনো রগরগে রবিবাসরীয়ের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছি। বুঝিনি এই অতি সংক্ষিপ্ত উপন্যাসের প্রতিটি লাইন এক বিরল জীবনদর্শনের মুখোমুখি করে দেবে আমাকে। এক অন্য ধরণের সত্যানুসন্ধান, সাধারণ খুনের মামলার প্রেক্ষাপটে যা এক যুবক যুবতীর উৎকেন্দ্রিক আরণ্যক ভালোবাসা থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে। তেলেগুতে এনক্রিপ্টেড, বাংলায় লেখা, সিডিতে সংরক্ষিত ডায়রি লেখনে বন্দী হয়ে থাকে সেই জীবনকাহিনী। আর কংকাল প্রেমিক-এর জীবন ও মৃত্যু রহস্য উন্মোচিত হয় নোংরা পরির হাতে। ... ...
নাট্যকারের প্রাণের সঙ্গে তাঁর নাটকও বেঁচে যায়। ঢাকায় বাংলা মুদ্রণযন্ত্র স্থাপিত হয়েছিল ১৮৫৯ সালে। সেখান থেকেই পরের বছর যুগান্তকারী নাটকটি প্রকাশিত হয়। দীনবন্ধু সরকারি চাকরিতে ছিলেন বলে প্রথমে তা প্রকাশিত হয়েছিল 'নীলকর-বিষধর-দংশন-কাতর-প্রজানিকর-ক্ষেমঙ্করেণ-কেনচিৎ-পথিকেনভিপ্ৰাণীতং' ছদ্মনামে। বহুদিন পর্যন্ত তিনি নিজের আসল নাম প্রকাশ করতে পারেন নি। ঢাকার বাড়িতে বসে সরকারি চিকিৎসক ও দীনবন্ধুর প্রিয় বন্ধু ডাঃ দুর্গাদাস কর রাত জেগে নাটকের প্রুফ সংশোধন করেছিলেন। বাংলার আধুনিক নাট্যধারার পথিকৃৎ মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমসাময়িক দীনবন্ধু মিত্র অবশ্য মাইকেল প্রবর্তিত পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক নাট্যরচনার পথে না গিয়ে বাস্তবধর্মী সামাজিক নাট্যরচনায় মনোনিবেশ করেন। এই ধারায় তিনিই হয়ে ওঠেন পরবর্তীকালের নাট্যকারদের আদর্শ স্থানীয়। ... ...
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন ‘সর্বশ্রেষ্ঠ মানব’। গোতম বুদ্ধ। তাঁর জীবন ও শিক্ষার মর্মের এক নিরন্তর যুক্তিবাদী খোঁজ। প্রাঞ্জল ভাষায় রচিত একটি সাম্প্রতিক বই। পড়লেন পালিভাষার অধ্যাপক জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় ... ...
মারিও বেনেদেত্তি। উরুগুয়ের সাহিত্যিক। লেখার জগত বহুধা বিস্তৃত। প্রবন্ধ, চিত্রনাট্য, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, গান রচনা, গান গাওয়া সব দিকে ছড়িয়ে আছে তাঁর প্রতিভা। রয়েছে একাধিক বহুল পঠিত ও প্রশংসিত উপন্যাস। তবে হিস্পানিক সাহিত্যে ছোটো গল্পের সম্রাট। ১৯৭৪-এ সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে নির্বাসনে থাকতে হয়েছে বহু বছর। লিখছেন স্প্যানিশ ভাষার শিক্ষক ও তরজমাকার জয়া চৌধুরী ... ...
খাভিয়ের সেরকাস। সাম্প্রতিক স্প্যানিশ সাহিত্যের অন্যতম প্রধান নাম। ম্যাজিক রিয়েলিজম-এর ধারায় বিশ্বাসী নন তিনি। বরং মনে করেন রিয়েলিজম-এর মাঝেই ঝিলিক দেয় ম্যাজিক। তাঁর লেখালিখি আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক। সেরকাসের বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস ‘সোলদাদোস দে সালামিনা’ (সালামিনার সৈনিকেরা) পড়লেন স্প্যানিশ ভাষার শিক্ষক ও তরজমাকার জয়া চৌধুরী ... ...
খুবই গোলমেলে অ্যাসাইনমেন্ট। ‘আমার জার্মানি’ বইটার রিভিউ করতে বসেছি। গোদা বাংলায় পুনর্বার দেখা (Review) কি দেখব, কোনখান থেকে দেখব। শুধু জার্মানি হলে কথা ছিল। স্টেট ব্যাঙ্কের চাকরি ১৯৭২ সালে। জলপাইগুড়ি বহরমপুর শ্যামবাজার ব্রাঞ্চে কাজ শেখা। তিন বছর বাদে দু-বছরের জন্য জার্মানির ফ্রাঙ্কফুট অফিসে বদলি। ফ্রাঙ্কফুটের প্রথমদিন একটি অসামান্য অবদান। পুরো লেখাটার মধ্যে ছড়িয়ে আছে রসিকতার মণিমুক্ত। যে লেখক নিজের দুঃখ নিয়ে নির্মল রসিকতা করতে পারে তার লেখনি কোন মার্গে উঠতে পারে এই অধম রিভিউ রাইটার তা কল্পনাও করতে পারেননি। আসার সময় হাতে ছিল ১২৫ ডলার তার মধ্যে ৫৫ ডলার নিজের সুটকেসের লাইনিংয়ের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন। হাতে পেনসিলের মতো করে ধরা ছিল ৭০ ডলার। হীরেন পৌঁছে গেলেন ফ্রাঙ্কফুর্টে কিন্তু সুটকেস পৌঁছলো না। নিজের অসহায় অবস্থার বিবরণে যে স্যাটায়ার লুকিয়ে আছে, তা এককথায় নান্দনিক। ... ...
সারা ভারত জুড়ে বছরভর যে মাইলের পর মাইল পদযাত্রা চলে এগুলো তারই সামান্য কয়েকটা টুকরো দেখলাম আমরা। এরকম আরো অজস্র হেঁটে-চলার, হাঁটতে হাঁটতে বসে পড়ার, পড়ে মরে যাবার নির্মম কাহিনী রয়েছে সমৃদ্ধ দত্তর লেখা ‘হাঁটার গল্প’ বইয়ে। এই লকডাউনে যারা হেঁটে গেল দেশজুড়ে তারা কজন পৌঁছল গন্তব্যে? কেমন ছিল সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরন্তর হাঁটার অপমানগুলোর কাহিনী? কত রকমের মাইগ্রেশান হয় দেশে? শিক্ষার নিরিখে একেবারে নীচের দিকে থাকা বিহার আর একদম উপরে থাকা কেরলে মাইগ্রেশানের হার এত বেশি কেন? কী সেই অন্তর্নিহিত সমীকরণ যার ফলে দলে দলে মানুষ বাইরে যায়? এইরকম নানা প্রশ্নের উত্তর এই বইতে খোঁজার চেষ্টা করেছেন লেখক। ... ...
গামছা-সুকানকে চিনতে হলে আপনি হাওড়া থেকে বর্ধমানের মেন লাইনের লোকালে চেপে বসুন। মেমারির গায়ে গায়ে একটি ছোট স্টেশন নিমো। আগে ছিল দুটো লাইন – আপ-ডাউন প্ল্যাটফর্ম, ইদানীং মাঝে একটা তিন নম্বর শুরু হয়ে লোকের ভোগান্তি বেড়েছে। কারণ, পুরুষানুক্রমে যে স্টেশন মাস্টারের দায়িত্ব সামলায়, সে হরদম অন্যমনস্ক হয়ে ভুল প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা করে। আর শেষ মুহুর্তে তার কোর্স-কারেকশনের পাল্লায় পড়ে বুড়োবুড়ি-মেয়েমদ্দ সবার হেনস্থা, দৌড়োদৌড়ি। তাই দৌড়তে দৌড়তে বাউরি বউ চেঁচিয়ে ঘোষণা করে – এবার গোপালকে ক্যাল দিতে হবে। নিমো গ্রামের গল্প - পড়লেন রঞ্জন রায়। ... ...
শুভদীপের প্রবন্ধগুলি কিন্তু সেইসব চলচ্চিত্রকারদের নিয়ে যাদের কাজ শৈল্পিক ভাবে নিপুণ। শুভদীপের প্রবন্ধে যেমন আছেন গোদার, বার্গম্যান, আন্তনিওনি, হিচকক, চ্যাপলিন তেমনই আছেন কিয়ারোস্তামি, ওজু, আমাদের সত্যজিৎ, মৃণাল এবং বর্তমান সময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার নুরি বিলজ সিলান। যে কোন সফল প্রাবন্ধিকের লেখনীর একটা নিজস্ব স্টাইল থাকে। শুভদীপের লেখনীর দুটি বৈশিষ্ট্য আছে। দ্বিতীয়টির কথায় আমরা একটু পরে আসছি। শুভদীপ কোন প্রবন্ধের শুরুতেই সাধারণত মূল বিষয়ে সরাসরি প্রবেশ করেন না। এখানে মূল বিষয় বলতে বলা হয়েছে চলচ্চিত্র বা চলচ্চিত্রকার সম্পর্কিত আলোচনা। লেখকের একাধিক প্রবন্ধই শুরু হয় কোন উদাহরণ/ উপমা বা কোন সংজ্ঞার ব্যাখ্যা- বিশ্লেষণ দিয়ে। যেহেতু প্রবন্ধগুলি সময়কাল অনুযায়ী সাজানো (বইয়ের সর্বপ্রথম প্রবন্ধ তার সাম্প্রতিকতম লেখা), তাই বোঝা যায় সময়ের সাথে লেখক এই স্টাইলটি রপ্ত করেছেন। ... ...
প্রবুদ্ধসুন্দর কর। বাংলা কবিতার ক্ষণজন্মা এই কবিতাপুরুষকে নিয়ে এতো তাড়াতাড়ি লিখতে হবে, ভাবনায় আসেনি। অথচ এই কাজটাই করতে হচ্ছে কঠিন সত্যকে মেনে নিয়ে। প্রবুদ্ধসুন্দর ও তাঁর কবিতা নিয়ে চর্চার অবকাশটুকু প্রবুদ্ধসুন্দর নিজেই কিছুটা সহজ সমীকরণে নির্ণয় করে গেছেন। উপরে উদ্ধৃত ‘বায়ডাটা’ শিরোনামে কবিতা থেকে তাঁকে চিহ্নিত করতে পারবেন একজন কবিতা পাঠক। ‘সংকর’ জাত প্রবুদ্ধসুন্দর তাই অবলীলায় লিখতে পারে, ‘বাবা বেগবান অশ্ব/ মা, উদ্ভট সংসারের ভারবাহী গাধা/ আমি খচ্চর, বাংলা কবিতা লিখি।’ ... ...
এ এক অদ্ভুত বই। পাতার পর পাতা উলটেও আমি ঠিক করতে পারিনি এ কোন বৃক্ষের ফুল, কোন জনরেঁ এর উৎস। প্রবন্ধ, ইতিহাস, রসনা-রেসিপি, ইদানীং ফুড-ব্লগ নামে যা জগত-বিখ্যাত, শিল্প ও শিল্পীর ওপর কিছু কথা, নাকি কেবলই মনোহরণ দাস্তান বা আখ্যানগুচ্ছ। সব কাননের ফুলের সুবাস পাওয়া যাবে এতে আলাদা করে, আবার প্রত্যেকটি মিলেমিশে একটি নিবিড় কথকতা! বাংলা সাহিত্যে এরকম আর কিছু আছে কি? ... ...
পেদ্রো পারামোর দেশ থেকে আলো আসে, যদি তারে নাই চিনি, আমার সদর পুরো খুলবে না আর! অচিন ডানায় মেলা প্রেমের আহার, নেশা, রণের আহার তুমি কাছে টেনে নাও, শিস দাও মধ্যরাতে মেধার মাতাল, অপরিচয়ের ক্ষতে আলিঙ্গন রাখো, ... ...
তবে বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দানীর উৎসে পাশ্চাত্যের ঋণ থাকলেও এ কথা মানতেই হবে, পিতৃতান্ত্রিক অপরাধ-সাহিত্যপরিসরে গোয়েন্দা হিসেবে নারীদের উঠে আসা একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছিল। আর এই উত্থান যে ধূমকেতুর মতো সহসা দেখা দিয়েই মিলিয়ে যাওয়ার মতো নয়, সে কথাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তার পরবর্তী দুই দশকেই। তাই কৃষ্ণা-শিখার মতো অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় মাতোয়ারা সম্পন্ন তরুণী কিংবা বিন্দিপিসি-সদুঠাকুমার মতো ঘরোয়া বয়স্কা মহিলা নন, ক্রমশ এই দুনিয়ায় আসর জাঁকিয়ে বসতে শুরু করলেন সেই মেয়েরা, যাঁরা পেশাগতভাবেই গোয়েন্দাগিরি বা অন্য কোনও বৃত্তিকে অবলম্বন করেছেন। অজিতকৃষ্ণ বসুর ডিটেকটিভ নন্দিনী সোম সায়েন্স কলেজ থেকে এক্সপেরিমেন্টাল সাইকোলজির স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানাধিকারিণী। ... ...
তুলনামূলক সাহিত্যের সঙ্গে তরজমার যে আত্মীয়তা তা মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো করে আর কেউ সম্ভবত দেখাননি। শুধুমাত্র ঘরের জানালা খুলে দিয়ে একটা মুক্ত এলাকা তৈরি করে তিনি সন্তুষ্ট থাকেননি। চেয়েছিলেন মননে স্বরাজ আনতে, তৃতীয় বিশ্ব বা এখনকার ভাষায় দুই-তৃতীয়াংশ বিশ্বের নানা স্তরীয় সমৃদ্ধ মায়াময় বাস্তবের আর পৃথিবীর অবদমিত মানুষের সংগ্রামের কাহিনি বাঙালি পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে। বিশ্বসাহিত্যের দরজায় এসে তিনি প্রশ্ন করলেন, কার বিশ্ব, কোন্ সাহিত্য? ... ...
ঋগ্বেদে কবি নেম ভার্গব ঘোষণা করেছেন, ইন্দ্র নেই, কারণ কেউ তাঁকে দেখেনি। চার্বাক দর্শন বস্তুজগৎকেই একমাত্র অস্তিত্ব বলে মনে করেছে। তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণ বলে, যতদিন জীবন আছে যজ্ঞ ক’রে যাওয়া উচিত, কারণ মৃত্যুর পর মানুষের কী হয় তা অজ্ঞাত। ‘বেদে সংশয় ও নাস্তিক্য’ গ্রন্থে সুকুমারী ভট্টাচার্য তুলে ধরেছেন বৈদিক সাহিত্যে প্রশ্ন, সংশয়, অবিশ্বাসের উত্তরাধিকার। লিখছেন ইতিহাসের অধ্যাপক কণাদ সিংহ ... ...