মৃত্যুদণ্ড বা ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড, এসব অপরাধ কমাতে কতটা কার্যকর, সে পৃথক তর্কে না গিয়েও এই যে তাৎক্ষণিক ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা, তা কোনও আইন বা সংহিতা (কোড)গ্রাহ্য হতে পারে না। আইনের রাস্তায় কোনও অপরাধ প্রমাণে সময় লাগে, তা সে যত ন্যূনতমই হোক না কেন। এখন একটা সওয়াল প্রায়শই ওঠে, যে এই তাৎক্ষণিক শাস্তিদানের আকাঙ্ক্ষা আসলে বিলম্বিত বিচারের অতিপ্রতিক্রিয়া। ... ...
পার্থ গাছ আঁকছিল। এক বিশেষ আলোয় সে দেখেছে গাছকে যার তলায় রাতের বেলা হরিণ ঘুরছিল। রাতের বেলা বলে তখন গাছকে দেখা যায়নি, রান্নাঘরের জানলার পাতলা জালের ওপাশে দলে দলে হরিণ দেখা গেছে — চিতল হরিণ। ছবি আঁকছে দেখে বাঘা তাকে বলল,“সূর্যের আলোয় তোর মাথা ধরে যাবে। ছাওয়ায় বস।” পার্থ বলল,“ হ্যাঁ রোদে আমার মাথা ধরে যাবে। সরে যাচ্ছি। ” বাঘা বলল,“ সূর্যের আলো পড়লেই রোদ হয় আর গরম চেপে আসে তখনই তোর মাথা ধরবে। এই জঙ্গলের মধ্যে মাথা ধরে গেলে রোদ লেগে গেলে বড় মুশকিল।” একটা বিশেষ কোণ থেকে পার্থ গাছটা দেখতে পেল আর আলো এসে তাতে এমনভাবে পড়ল যে সে থাকতে না পেরে ছবি আঁকছে। সামনের রাস্তা দিয়ে একটা বাঁদর হেঁটে হেঁটে আসছিল, কুমু মালানি বনবাংলোর চাতালে বসে বসে দেখছিল বাঁদরের হাঁটা — রাস্তা দিয়ে। ... ...
গান্ধিজী ১৯৩৫ সালে তাঁর হরিজন পত্রিকায় চকচকে পালিশ করা মিলের চাল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন কারন ওই চাল খেয়ে ভারতবাসীর স্বাস্থ্যহানি হতে পারে। আজকে তাঁর কথা মিলে গিয়েছে। মধুমেহ রোগ ঘরে ঘরে। অন্যান্য কারণের সঙ্গে আগাছা নাশক গ্লাইফোসেটও দায়ী। বিভিন্ন খাবার ও জলের মাধ্যমে গ্লাইফোসেটের অবশেষ শরীরে প্রবেশ করে এবং ইনসুলিন তৈরির প্রক্রিয়াকে বন্ধ করে দেয়। সেটা মানুষের শরীরের উপর নির্ভর করে। অনেকের শরীরে হয় না বা দেরীতে হয়। তাছাড়া ওই বিষ কিডনির রোগ ও ক্যানসার সৃষ্টি করে। রেললাইনে ও সবজির ক্ষেতে ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। বিষমুক্ত খাবার নিয়ে কেউ সচেতন নয়। ... ...
এই মুহূর্তে বার বার একটা নাম শোনা যাচ্ছে। সোনাম ওয়াংচুক। অনেকেই হয়তো বলবেন যে লাদাখ নিয়ে নতুন রাজনীতির আবর্ত তৈরি হচ্ছে এই নামটিকে ঘিরে। কিন্তু যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেটা সফল হলে এবং বিভিন্ন জায়গায় আরও কয়েক দশক আগে শুরু হলে হিমালয়ের প্রকৃতি কিছুটা হলেও বাঁচত। ... ...
এই বাহাত্তর সালেই বরফির সাথে শ্রুতি ঘোষ, অধুনা মিসেস সেনগুপ্তের দেখা। দার্জিলিংয়ের রাস্তার। বরফি তখন দামাল দস্যি যুবক, সাইকেলে বিহার করে, গাড়ির কাচে চুল আঁচড়ায়, বাচ্চা ছেলের চকলেট কেড়ে খেয়ে নেয়, বগল বাজিয়ে নাচে, ঘন্টাঘরের ডগায় চড়ে কাঁটা ঘোরায়। কী কিউট না? এমন ছেলের প্রেমে না পড়ে কি থাকা যায়? অ্যাঁ? শ্রুতি দার্জিলিংয়ে আসা ইস্তক বরফি তার পিছনে পড়ে ছিলো। টয় ট্রেনে যেতে যেতে, খাওয়ার প্লেটে কল্পনার গোলাপ রেখে, চিঠি লিখে বরফি তার প্রেম নিবেদন করলো। তারপর দুজনে বন্ধু হয়ে গেলো এবং ঘোড়ায় চেপে ঘুরতে বেরোলো। এরপরে তারা সাইকেলে এবং টয়ট্রেনেও চেপেছিলো। তারপর একদিন শুভলগ্ন দেখে চুমু খেয়ে তারা পাকাপাকি ভাবে প্রেমে পড়ে গেলো। ... ...
আমার কাছে আসে তো টাকা বদলে ডলার নিতে। কার কাছে কী টাকা দেখলেই সব বুঝি। কান এঁটো করে একচোট হাসল ডক্টর। রেখেও যায় ওদের টাকা, আমি ওদের হয়ে সুদে খাটাই। এবার লোকটার আসল ব্যবসাটা বোঝা গেল। গোবিন্দর আরো শোনার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আক্রাম আলি পেছন থেকে খালি গুঁতাচ্ছিল। অবশ্য কথায় কথায় দেরি হয়ে যাচ্ছে অনেক। ওরা বেরোচ্ছিল, লোকটা পিছন থেকে ডাকল। শোন, শোন। যে পথে যাচ্ছো সেখানে পাউন্ডে দিলে ঘাঁটা পড়ে যাবে তোমাদের। তার চাইতে আমার এখানে ডলার বানিয়ে নিয়ে যাও। কথাটা সত্যি। লোকটার কাছ থেকে পাউন্ড ভাঙ্গিয়ে দশ দশ ডলার হাতে নিয়ে বেরোল দুজনে। বোঝা গেল এটা লোকটার সাইড ব্যবসা। কিংবা এটাই আসল, দোকান খুলে রেখেছে শুধু লোক টানার জন্য। ডক্টর লোকটা বেরোবার আগে আর একবার মনে করিয়ে দিল জাহাজ থেকে পালালে তাদের জীবনটা কেমন বেবাক ভাল হয়ে যেতে পারে। আক্রাম দাঁড়িয়ে থেকে দোকানির কথা শুনতে না চাইলেও, রাস্তায় বেরিয়ে সেই কথা তুলল আবার। জুইতোর কথা কইছে গোবিনদা, জায়াজো আর না গেলে কিতা ওয়? কথা কইবার বেলা খুব সওজ রে, অতো সুজা বিষয় নায় মনো রাখিস; যুদি একবার পুলিশোর আ'তো পড়স, তে কিতা অইবো? কেনে, তুমরার ক্লাবার সাব কিতার লাগি? তান আ'তো রেজগি ধরাই দিলেই অইবো। ওয়, তুমরার ওউ ক্লাবার সাব অখনও টিকিয়া আছে নি দেখ, মরিয়া মাটির মিশি গেছে! বাপ নাই তে কিতা অইছে, পুয়া ভাতিজা তো বেটার আছে; তারার চলাফিরাত কুনু উঁচনিচ দেখছো নি কুনু দিন? ... ...
১৪ কোটি রেশনের ব্যাগে তাঁর ছবি ছাপা হচ্ছে, ৫ কোটি পোস্টকার্ডে লেখা হচ্ছে ‘ধন্যবাদ’। তারপর দেশের নানান প্রান্তের বিভিন্ন বুথের অন্তর্গত পোস্ট অফিস থেকে সেই পোস্টকার্ড ঠিক সময়মত যাতে তাঁর কাছে পৌঁছয়, তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে, তাঁর দল এবং সরকারের পক্ষ থেকে। দেশের ৭১টি গঙ্গা-সংলগ্ন ঘাট পরিষ্কারের কর্মসূচী নেওয়া হয়েছে, কারণ তিনি ৭১ বছরে পদার্পণ করবেন। তিনি যে সে মানুষ নন, তিনি আমাদের প্রধান সেবক নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদি। ... ...
পার্মাফ্রস্ট বলে প্রকৃতিতে একটা ব্যাপার আছে যা স্থলভাগের প্রায় ২৪% এলাকা জুড়ে এর অবস্থান করে । পার্মাফ্রস্ট মানে মাটির নিচে সহস্র-অযুত বছর ধরে জমে থাকা চিরবরফ অঞ্চল। এই হিম-মৃত্তিকাই ধারণ করে আছে মানব সভ্যতার আদিম অস্তিত্বকে। এর বুকেই দাফন আছে বরফ-যুগের প্রাণীদের হাড়-কঙ্কাল, এমনকি কিছু গাছপালার অংশও। এগুলি এতটাই গভীর এবং পুরু বরফের স্তর যে, সাইবেরিয় অঞ্চলের বাসিন্দারা মাটি খুঁড়ে ঘর বানিয়ে তাতে শার্কের মত বৃহৎ প্রানীর মাংস অব্দি সংরক্ষণ করে বছরের পর বছর ধরে । বিজ্ঞানীরা বলছেন যে এই বরফও নাকি এখন দ্রুত গলে যাচ্ছে । কেননা, বিশ্ব-উষ্ণায়ণের জেরে এই সব অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়ছে লাগামছাড়া হারে। ২৩ জুন, ২০২০ জানা গেল যে, রাশিয়ার মস্কো থেকে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর মেরুবৃত্তের অন্যতম শীতলতম এলাকা ভেরখোয়ানস্ক শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এখানে সচরাচর লোকজন বছরের বেশরভাগ সময়ে মাইনাস ৫০ ডিগ্রির তাপমাত্রায় জীবনযাপন করতে অভ্যস্ত । বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অংশে অনেক দ্রুত বরফ গলে যাচ্ছে, তাও ধীরে ধীরে নয়, প্রায় রাতারাতি। ... ...
আইএমএফ এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের চাপে প্রতিটি দেশের, বিশেষ করে গরীব দুর্বল ও ছোট দেশগুলোতে, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। এর জায়গা নিয়েছে কর্পোরেট হেলথ সেক্টর যেখানে স্বাস্থ্য নেই, রয়েছে বহুমূল্যে কেনা স্বাস্থ্য পরিষেবা। এ কারণে আফ্রিকার দেশগুলোতে এবোলা মহামারির চেহারা নিয়েছিলো যখন তখন স্বাস্থাকর্মীদের বেশিরভাগের কাছে একটি গ্লাভস কিংবা মাস্কও ছিলো না। এখনো ইতালি, স্পেন, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, আমেরিকার মতো দেশে জনস্বাস্থ্য উপেক্ষিত হবার বিষময় ফল ২০২০-র পৃথিবী দেখছে। ... ...
টিয়েছানারা বিপদের হাত থেকে বাঁচলে কী হবে! বিপদে পড়েছে মধুমালতী নিজে। আশাপাশে যত পাখপাখালি আছে, যাদের ডিম ফুটে ছানা বেরনোর সময় হয়ে এলো বলে, তারা সব মশারির অর্ডার দিয়ে গেছে। বুলবুলি, ময়না, ফিঙে আরও কতজনা। মধুমালতীর আপত্তি নেই মশারি বুনতে, কিন্তু মুশকিল হল হাত তো মোটে আটটা। তাই দিয়ে কতই বা বুনবে সারা দিনমান। শুধু তাই নয় জাল বোনার সুতোতেও এবার টান পড়ছে। সুতো তৈরি করাও তো মুখের কথা নয়। ... ...
মহাকাব্যের পুনঃকথনের জন্য কারিয়ের এই বিচিত্র রচনারীতি চয়ন করেছেন যাতে আখ্যানের একাধিক স্তরের স্পর্শে-সংঘাতে পুরাতন কাহিনি সঞ্জীবিত হয়। ব্যাসের কল্পনায় কাহিনি তৈরি হয়ে ওঠে; স্রোতা ও দর্শক দুই ভূমিকাতেই কিশোর ও গণেশ; কিশোর ভবিষ্যতের মানুষ তথা পুরাকাহিনির পাঠক; ব্যাস এই কাহিনির নির্মাতা-রচয়িতা; মাঝে মাঝে তিনি তাঁর চরিত্রদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন, কখনও বাধাও দেন, আবার তাঁদের আচরণ বিচারেও প্রবৃত্ত হন। রচয়িতার সৃষ্টিকর্মে কখনও কুশীলবেরা স্বতঃপ্রবৃত্ত, স্বাধীন চরিত্র হয়ে ওঠে, কখনও রচয়িতার কল্পমায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে সেই মায়ালোকের অন্তর্গত হয়ে যায়; সেই মায়াবৃত্তান্ত তখন দৃশ্যকাব্য। ... ...
মালয়েশিয়ার সমুদ্র তীরবর্তী সব শহরেরই সমুদ্রের ধারে পেয়ে যাবেন আপনি স্ট্রিট-ফুড বা হকার-ফুড, যা সত্যিকারের প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সন্ধ্যে নামার পর। প্রায় সারি দিয়ে বিচের ধার ঘেঁসে আপনি অসংখ্য ফুড-স্টল পেয়ে যাবেন। অনেকে লাইভ বারবিকিউ করছে দেখতে পাবেন। খুবই সিম্পল ব্যাপার – সাধারণ টেবিল একদম সার দিয়ে বসানো, তাতে প্লাস্টিকের টেবিল ক্লথ দেওয়া। যাতে তাড়াতাড়ি টেবিলের টার্ন-ওভার হয় – আপনার খাওয়া শেষ হল, টেবিল ক্লথ পাল্টাবার কোন চাপ নেই। কেউ এসে প্লেট উঠিয়ে নিয়ে ঝটপট করে মুছে দিল টেবিল – আপনি বসে পড়লেন। প্লেট-ও খুব সিম্পল। আপনাকে একটা প্লেট দিয়ে যাবে – বেশির ভাগ সময়েই এগুলো প্লাস্টিকের – আর সাথে দেবে ন্যাপকিনে জড়ানো একটা চামচ এবং কাঁটাচামচ। ... ...
আজকের গল্প ভিয়েতনামের সেই লাঙ-কো টাউ এলাকার ফ্লোটিং রেস্টুরান্টে খেতে গিয়ে। বড়ই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জায়গা – ভৌগোলিক ভাবে দেখতে গেলে এই জায়গাটা হচ্ছে মধ্য-ভিয়েতনামের একদম পূর্বদিকে, লাপ-আন লাগুন এবং ভিয়েতনাম-সি এর মাঝখানে। এই গোটা এলাকাটাই সি-ফুড এর জন্য বিখ্যাত। আপনি ওই ফ্লোটিং রেস্টুরান্টে খেতে গিয়ে অবশ্যই যা ইচ্ছে খেতে পারেন সি-ফুড ছাড়াও – কিন্তু সি-ফুড না খেলে জার্নি অসম্পূর্ণ থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস। কত সিম্পল ভাবে রান্না করে সি-ফুডে স্বর্গীয় স্বাদ আনা যায়, তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া না এলে ঠিক বোঝা যায় না। এখানে বেশ কিছু ফ্লোটিং রেস্টুরান্ট আছে – তবে লাঙ-কো কিন্তু বিখ্যাত তার সেই বিস্তৃত সাদা বালির বিচের জন্যও। তা দেখতে অপরূপ – গোটা জায়গাটা আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে ছোট ছোট পাহাড়ের মতো থাকায়। এখানেই কিছু দূরে আছে বাখ-মা্ ন্যাশনাল পার্ক – পাহাড়ের আশেপাশে কিছু উঁচুতে উঠলে আপনি পেয়ে যাবেন প্যানোরামিক ভিউ! দেখে চক্ষু জুড়িয়ে নিতে পারেন খাওয়া দাওয়ার পরে – ... ...
যেহেতু অস্তিত্ব নিছক একক নয়, সামূহিক – ‘কে আমি’ থেকে পৌঁছে যাই ‘কে আমরা’: এই জিজ্ঞাসায়। পারিবারিক পরিচয়েও নিহিত রয়েছে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরম্পরা, রয়েছে বৌদ্ধিক ঐতিহ্যের আলো-ছায়া, রয়েছে চিৎপ্রকর্ষ অর্জনের দীর্ঘ ইতিহাস। এতে কত অজস্র উচ্চাবচতা, কত নতুন সূচনাবিন্দু। এসব ভাবতে গিয়ে দেখি, জাতিসত্তার বিচিত্র হয়ে ওঠায় ‘আমি’ ও ‘আমরা’-র অভিজ্ঞান অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পৃক্ত। ভাষাই জাতির পরিচায়ক, ধর্ম কখনই নয়। ... ...
সেই পাচক মাশরুম, শৈবাল আর শামুক দিয়ে তৈরি চমৎকার খাবার বানিয়ে সেই বিধবার নজর কেড়ে নিল৷ অনেকে বলে সে সেই খাবারের মধ্যে নেশা বা সম্মোহন সৃষ্টিকারী কিছু মেশাত। অবশ্য এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায় না। ... ...
মণিশংকর মুখোপাধ্যায় ওরফে শংকর। অসাধারণ প্রসাদগুণ তাঁর লেখনীতে। বিপুল তাঁর জনপ্রিয়তা। নিটোল গল্প বলেন। কখনো ঝুঁকি নেন না। নাগরিক সমাজের কয়েকটি স্তরকে খুব ভালোভাবে চেনেন। চারপাশের মানুষগুলিকে খুঁটিয়ে দেখার ক্ষমতা তাঁর আছে। তাঁরা কী পড়তে চান, তিনি তা জানেন। তাই পরিবেশন করেন। লিখেছেন রাহুল দাশগুপ্ত ... ...
মহামারীর মধ্যেও অন্যান্য এমারজেন্সি কিন্তু থেমে নেই। এনারাই পড়েছেন সবচেয়ে সমস্যায়। আজকে একজন বয়স্ক মহিলা এসেছিলেন তার স্বামীর কোলোনোস্কোপি রিপোর্ট নিয়ে। রিপোর্টে ক্যন্সারাস গ্রোথ ধরা পড়েছে। বায়োপ্সি রিপোর্ট এখনো পেন্ডিং। রেক্টাম থেকে ব্লিডিং হয়েই যাচ্ছে। যাকে দেখাচ্ছিলেন তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। নার্সিংহোমে ফোন করেছিলেন, তারা লকডাউনের পরে যোগাযোগ করতে বলেছেন। ওই মহিলা আব্দালপুর থেকে চার কিলোমিটার হেঁটে আমার বাড়িতে এসেছেন। কোনো ভ্যান, রিকশা পাননি। ওনার একমাত্র ছেলে পুনেতে আটকে আছেন, আসতে পারছেন না। কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, 'ডাক্তারবাবু, আপনি শুধু ওষুধ দিয়ে এই লকডাউন শেষ হওয়া পর্যন্ত ব্লিডিংটা বন্ধ করে দিন।' ... ...
এই মানুষটাই নিজের সন্তান ও সন্তানসমদের ভাল থাকার জন্য ভারতীয় সংবিধানের ৩৭৭ ধারা রদ করার জন্য সবকিছুকে অতিক্রম করে ভারতীয় সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে লিখিত আবেদন করতেও পিছপা হননি। কেউ কিছু বললে বলতেন, সমাজ আবার কী? সমাজ তো আমি আর তুমি, সমকামী বিষমকামী বুঝি না, গর্ভে থাকা সন্তান ছেলে না মেয়ে নাকি অন্য কিছু জানার দরকার নেই, সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতেই মায়েরা চায়। আর তাই সন্তানের পাশে দাঁড়ানোয় এতটুকু পিছপা হননি যে মানুষটা, তিনি আমার গর্ভধারিণী ভেবে আজ নিজের পিঠটা নিজেই চাপড়াই। ... ...
মানুন না মানুন,আমরা সকলেই সংস্কারপন্থী। কেউ সু-এর আর কেউ কু-এর। আর পঞ্জিকা এই দুই-কেই ধারণ করে। সেই কাল থেকে এই কাল পর্যন্ত। বিজ্ঞাপন এই সংস্কারের বাহন। আমাদের জীবনযাপনের দৈনন্দিনতায় যে ওঠাপড়া ছড়িয়ে থাকে, তার হিসেব পাওয়ার একমাত্র সহজলভ্য উপায় বিজ্ঞাপনসেবন। এতে শরীর ও মন স্বতঃই চাঙ্গা থাকে। অঙ্গে অঙ্গে রংমশাল জ্বলতে থাকে। কী ছিল বঙ্গে, তা কী হয়েছে এই অঙ্গে, এর এক সচিত্র ধারাবিবরণ বিজ্ঞাপন মারফত যেমন যেমন পাওয়া যায়, তেমন তেমন সাজিয়ে দিলাম। ... ...