বিগত তিরিশ বছরে নানান দেশের নানান ব্যাঙ্কিং প্যানেলে বহু জ্ঞানীগুণীর সঙ্গে একাসনে বসে ঘণ্টাখানেক বাক্যালাপ করে পাঁচজনের সঙ্গে আমিও ফিরিতে হাততালি কুড়িয়েছি। এইসব প্যানেল আমারই মত অন্যান্য ব্যাঙ্কের ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিঙের ফিরিওলা, কর্পোরেট প্রধান, সরকারি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের মাঝারি প্রবক্তা, খবরের কাগজের প্রতিনিধি (যাঁরা প্রশ্ন করেন কেতাবি, উত্তরের অর্থ অর্ধেক বোঝেন কিনা সন্দেহ) এমনি সব মানুষদের নিয়ে তৈরি হয়। নির্ধারিত অনুষ্ঠানের আগেই আমরা কনফারেন্স কল (জুম কল আসতে দেরি আছে) করে ঠিক করে নিই প্রশ্নাবলী কী হবে, কে কী বলবে। শ্রোতারা ভাবেন – চার-পাঁচ জন নারী পুরুষ একত্র বসে কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা বা বিষয়ের ওপরে কোনো গভীর তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ দ্বারা মহতী সিদ্ধান্তে উপনীত হচ্ছেন। ... ...
দুখানা বাঁদর। শেকল দিয়ে বাঁধা। শেকলের এক প্রান্ত আটকানো মেঝের সাথে। বাঁদরগুলো বসে আছে একখানা ছোট জানালার ওপরে। সম্ভবত জেলখানার কুঠুরি - অন্তত জানালার ধাঁচ তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাঁদরগুলো যেখানে বসে, সেই জানালায় ইতস্তত ছড়িয়ে আছে বেশ কিছু বাদামের খোলা - বাঁদরগুলো বাদাম খাচ্ছিল। আমি ছবিটা দেখছি এই জেলখানার কুঠুরির মধ্যে দাঁড়িয়ে। একখানা বাঁদর তাকিয়ে আছে আমার দিকে। বিষণ্ণ, সম্ভবত - অবশ্য সে আমার ভুলও হতে পারে। আরেকটি অন্যমনস্ক - মাথা ঝুঁকিয়ে তাকিয়ে আছে বাইরের দিকে - আমার সাথে চোখাচোখি হতে পারছে না তেমন একটা। ... ...
বামপন্থী দলগুলোও স্বাস্থ্যের বিষয়গুলোকে আন্দোলনের বিষয় হিসেবে নিয়েছেন এমনটা নয়—অথচ বহু ডাক্তার বামপন্থী দলগুলোর সদস্য বা সমর্থক হিসেবে ছিলেন বা আছেন। তাঁদের কাছ থেকে উচ্চ হারে লেভি নেওয়া, তাঁদের দিয়ে সংগঠনের সদস্য-সমর্থকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানো, কখনও সখনও তাঁদের দিয়ে আন্দোলনের সময় বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় চিকিৎসা শিবির চালানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে দলগুলো। তাঁদের স্বাস্থ্য আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে ব্যবহার করা হয় নি বললেই চলে। স্বাস্থ্য ভিক্ষা নয়, অধিকার—সেই অধিকার অর্জনের জন্য সংগ্রাম করতে হবে—এই ধারণা থেকে আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে ৭০ দশকের মাঝামাঝি, ৮০-র দশকের শুরু থেকে। ভারতের নানা কোণে চলা এই সব আন্দোলনগুলো নিয়ে এই আলোচনা—উদ্দেশ্য আন্দোলনগুলোর ইতিবাচক-নেতিবাচক দিকগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’-এর লক্ষ্যে এগিয়ে চলা। ... ...
তালাশ মাহমুদ ভ্রূ কুঁচকে বললেন, আপনে এসবে বিশ্বাস করেন? দ্বিজদাস বললেন, বিশ্বাস অবিশ্বাস পরের ব্যাপার। কিন্তু ব্যাপারগুলা তো আপনারই কাজের বিষয়। ঠিক কি না? তালাশ মাহমুদ বললেন, তা ঠিক। কিন্তু আমি যুক্তি দিয়ে বিচার করে সমাধান করতে চেষ্টা করি। সব সময় যে পারি সমাধানে যেতে এমন না। তালাশ মাহমুদ খেয়াল করলেন দ্বিজদাস একটু ইতস্তত করছেন। পুলিশের একজন বিভাগীয় প্রধান কালু সর্দারের খুনের জন্য এই গ্রামে এসেছেন তালাশ মাহমুদ বিশ্বাস করেন না। তার আসার অন্য কোন কারণ আছে। তালাশ মাহমুদ সেটা বুঝার চেষ্টা করছিলেন। দ্বিজদাস এই সময়ে বললেন, পৃথিবীতে ভালোর শক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে মাহমুদ সাহেব। সব আপনার যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। এই যুদ্ধটা না লাগলেও হতো। তাছাড়া আমাদের দেশের দিকেই দেখেন, কেমন অশান্ত পরিস্থিতি। ঢাকায় বড় ঝামেলা হবে আভাস পেলাম। স্যারের এই সময়ে ঢাকায় থাকা দরকার। স্যারকে অনুরোধ করলাম। কিন্তু তিনি এখানে একটা বড় আয়োজনে আটকা পড়ে গেছেন। আপনি কি উনাকে একবার রিকুয়েস্ট করবেন আমাদের হয়ে? তালাশ মাহমুদ বললেন, আমার কথা তো উনি শুনবেন না। আর এখানের আয়োজন একাই সামাল দিচ্ছেন। তাও, আমি বলে দেখব। ঢাকায় কী নিয়ে ঝামেলা হবে বলছেন? ... ...
দাদু মারা যাবার আগে অবধি মহালয়া মানে ভোরবেলা উঠে রেডিও চালিয়ে মা বাপির ঘুম ভাঙানো, তারপর টিভিতে আরেকপ্রস্থ দুর্গা অসুরের লড়াই, তার-ও-পর ছুটির আমেজে ... ...
কাকিমা বলছিল, আরে! শুকদেবের হাতেও মোটা কাঠ ছিল, কুড়ুলও ছিল। ঝামেলা শুরু হবার আগে সে কাঠ কাটছিল, চাইলেই সে সেগুলো ব্যবহার করতে পারত। কিন্তু সে তা না করে মাথা ঠান্ডা রেখে শুধু ঢালের মতো করে মোটা কাঠ দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে গেছে। নাহলে রক্তগঙ্গা দ্বিগুণ হতো, শানু! ... ...
এসকেলেপিয়াস, আমরা বোধ করি সবাই জানি, প্রাচীন গ্রিসের মেডিসিনের পৌরাণিক দেবতা। তাঁর মন্দিরে যাবার জন্য, অবশ্যই রোগমুক্তির উদ্দেশ্যে, এই আকুলতা। মন্দির, মঠ, চার্চগুলোতে আর্ত মানুষের নিরাময় করার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকত সে আদিম কাল থেকে। ইউরোপের উদাহরণে আবার ফিরে আসব। তার আগে ভারতের প্রথম আয়ুর্বেদ গ্রন্থ তথা শাস্ত্র বলে স্বীকৃত চরক-সংহিতারও সংকলনকালের সময়কালের কিছু আগে পরে (আয়ুর্বেদের সবচেয়ে মান্য গবেষক মিউলেনবেল্ডের মতে এ সময়কাল খুব বেশি হলে ১৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দের আগে হতে পারেনা, বা খুব বেশি হলে ১০০ খ্রিস্টাব্দ – মিউলেবেল্ড, A History of Indian Medical Literature, IA, পৃঃ ১১৪) বৌদ্ধযুগে কিছু হাসপাতালের হদিশ পাওয়া যায়। ... ...
একটা জিনিস খুব স্পষ্ট – কলকাতার প্রথম অ্যাকুইফারের উপরে ১০ থেকে ৫০ মিটার পুরু একটি অ্যাকুইটার্ড বা কর্দমের স্তর আছে, যা অপ্রেবেশ্য বা আংশিক প্রবেশ্য। এটি থাকার জন্য এবং কলকাতার অধিকাংশই কংক্রিট বা অ্যাসফল্টে ঢাকা বলে কলকাতার বৃষ্টির জল সরাসরি ভূগর্ভে প্রবেশ করতে পারে না বা পারলেও এত ধীরগতিতে, যে তা হিসাবের মধ্যে আসে না। তার মানে দাঁড়াচ্ছে, কলকাতায় এত যে বৃষ্টি হচ্ছে – তা কলকাতার কোনো কাজেই আসছে না। প্রায় সবটাই বয়ে চলে যাচ্ছে। উল্টে তা আবার জলমগ্নতার সমস্যা সৃষ্টি করছে। কলকাতায় তো বৃষ্টির জল ভূগর্ভে যেতে পারে না, তবে এই ভূগর্ভের অ্যাকুইফারগুলি পুষ্ট হয় কীভাবে? ... ...
এফএম প্রচার তরঙ্গে অনুষ্ঠান উপস্থাপনার জন্য সেই সময়, নয়ের দশকের মাঝামাঝি, ডেকে নেওয়া হল কলকাতা বেতারে ড্রামা অডিশন পাশ করা শিল্পীদের। প্রাথমিকভাবে কর্তৃপক্ষ ধরে নিলেন, যাঁরা আকাশবাণীতে শ্রুতিনাটক বিভাগে পরীক্ষা দিয়ে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাঁদের সঠিক বাংলা উচ্চারণ আর কণ্ঠস্বর নিয়ে কোনও দ্বিধা বা সংশয়ের কারণ নেই। এই প্রসঙ্গে জানাই, রেডিওর নাটক বিভাগে যাঁরা পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁরা সকলেই জানেন – বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস থেকে মাইকেল মধুসূদন দত্তের কাব্য হয়ে রবীন্দ্রনাথের নাটক অবলীলায় ছুঁয়ে যেতে হয় এই পরীক্ষায়। বিভিন্ন বাংলা শব্দের সঠিক উচ্চারণ শোনার জন্য চোখা কান পেতে থাকেন পরীক্ষকরা। আজও এই পরীক্ষা দুরূহ। এই পরীক্ষা-পারাবার পার হয়েও অবশ্য তারপরে অনেকে আর সেভাবে সুযোগ পান না অভিনয়ের খামতির জন্য, তবে সে প্রসঙ্গ এখানে গৌণ। এখানে মূল উপজীব্য, কণ্ঠস্বর, পরিবেশনা, উপস্থাপনা। .... শ্রোতাকে আকৃষ্ট করার মত বিষয় ভাবতে হবে, কথার মধ্যে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার গর্হিত অপরাধ, ইংরেজির ঝোঁকে বাংলা বলা অমার্জনীয়। অনুষ্ঠানের নাম ‘টক শো’। অবশ্যই ‘লাইভ’। তাকে নানান চেহারায় ‘কণ্ঠদান’ করতে এগিয়ে এলেন বাংলা ভাষার দক্ষ ‘কথাশিল্পী’রা। ইংরেজিতে তাঁরা ‘টক শো প্রেজেন্টার’, বাংলায় ‘অনুষ্ঠান উপস্থাপক’। হে পাঠক, লক্ষ্য করুন, ‘আর জে’ বা ‘রেডিও জকি’রা তখনও ঝাঁপিয়ে পড়েনি বাংলা সংস্কৃতিতে। ... ...
আপনি নাটক করলে লোক না হলে, টিকেট না বিক্রি হলে দর্শক তৈরি নয় বলে গাল না দিয়ে আয়নার সামনে প্র্যাকটিস করে দেখুন, আপনার না মাইরি ওটা হচ্ছে না l মানে নাটকটা l ফিরে যান, টু দ্য বেসিক, ফিরের থেকে শুরু করুন, লেগে থাকুন, হাল চাষুন, হলধরদের মত, দলকে পাপড়ি হিসেবে দেখুন, দলবাজির ক্ষেত্র নয়, দেখবেন, আপনার সীমিত ক্ষমতা নিয়েও আপনি কিছুদূর যেতে পারবেন l কিছু্দূর, কেননা যদি আপনি বয়স্ক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি সেই সোনার সময়টা ফেলে এসেছেন, যখন দিনে ১৫০০ স্কিপিং করে নাট্যতত্ত্ব পড়ে মহলায় যাওয়া আর সম্ভব নয়, শরীর দেবে না, আপনিও তো জানেন যে দেহপট সনে নট সকলি হারায় l মন খারাপ করবেন না, মন ভালো করুন, ভালো নাটক করার চেষ্টা করুন, দেখবেন আপনার নাটকেও একটু একটু করে লোক হবে l টিকেট কেটেই লোকে নাটক দেখবে l খিস্তি করতে হবে না l ... ...
বর্তমানে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট সংখ্যা (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী মিলিয়ে) ১৪ লাখের কাছাকাছি। এই সংখ্যা বজায় রাখতে প্রতি বছর ৬৫ থেকে ৮০ হাজার স্থায়ী সৈন্যের নিয়োগ প্রয়োজন। অগ্নিপথ প্রকল্পে প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার অগ্নিবীর নিয়োগ করা হবে এবং কিন্তু মাত্র ৪ বছরের জন্য। এরপর তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে বারো হাজারকে সেনাবাহিনীতে স্থায়ী চাকরি দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী, আজ থেকে ১৫ বছর পরে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট সংখ্যা ৪ থেকে ৫ লক্ষের মধ্যে নেমে আসবে। প্রতি বছর ৫০ হাজারের পরিবর্তে ১ লাখ অগ্নিবীর নিয়োগ করা হলেও ১৫ বছর পর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে প্রায় ৭ লাখ লোক অবশিষ্ট থাকবে। ... ...
শুরু হল ঐন্দ্রিল ভৌমিকের সিরিজ, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্য ধারনার অগ্রদূতদের নিয়ে - ফাদার অফ পাবলিক হেলথ। ... ...
থাইল্যান্ডে দোল নেই। কিন্তু নববর্ষের দিনে আছে জল ছোঁড়াছুঁড়ির খেলা। এপ্রিল মাসে বেজায় গরম। লাওস কামবোদিয়া থাইল্যান্ডের পথে ঘাটে সেদিন জল আক্রমণের ধুম পড়ে যায়; মারো পিচকারি! সেটা ছবিতে মাত্র দেখেছি। আমাদের এই মন্দিরে তার একটা ছোটো এডিশন আছে – এক ভিক্ষু ঝ্যাঁটা দিয়ে সবার মাথায় জল ছড়িয়ে দেন। দুঃখের বিষয় যে থাইল্যান্ড বা লাওসের স্টাইলে আমরা তাঁকে জল কামান দিয়ে আক্রমণ করতে বা তাঁকে পাল্টা ঝাপটা মারতে পারি না! নববর্ষের পরবের অন্য রিচুয়ালগুলি মোটামুটি অনুসরণ করা হয়ে থাকে ন্যাপহিলের অনুষ্ঠানে - যেমন প্রার্থনার পরে ভিক্ষুদের খাদ্য দ্রব্য দান। সকলে আনেন কিছু না কিছু, সার দিয়ে বসে থাকেন দানের জন্য, ভিক্ষু সেটি গ্রহণ করলে পরেই স্থান ত্যাগ করতে পারেন। অল্প বয়েসি ছেলে মেয়েরা বয়স্ক নারী ও পুরুষের পা ধুইয়ে দেন, পিতা মাতার গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক সেটি। পুণ্য অর্জনের আরেকটি পন্থা - বুদ্ধ মন্দির বা স্তূপ নির্মাণে শ্রমদান। মাঠের মধ্যে বালি দিয়ে তৈরি স্তূপ মন্দির আছে, দূরে এক কোনায় রাখা বালির পাহাড়; সেখান থেকে পাত্র ভরে কিছুটা বালি এই নির্মীয়মাণ মন্দিরে পৌঁছে দেওয়াটা একটা সিম্বলিক সহায়তা। নববর্ষের এই দিনে নতুন জামা পরা আবশ্যিক, নিজের বা পরিবারের জন্য অর্থ ব্যয় কম,দান বেশি এবং মদ্যপান বারণ! ... ...
তরমুজওয়ালা ভীত হয়ে বললেন স্যার এই ফসল নষ্ট হলে বাঁচবো কী করে ? পুলিশ টাকা আদায় করে ছাড়ছে। তরমুজওয়ালার ছিল ৩৮০ টাকা। ২০০ টাকা নিয়ে ছাড়ল। যা হয়ে থাকে তাইই হচ্ছে অনেক জায়গায়। এই অভিযোগ শুনেছি অনেক। সত্য মিথ্যা যাচাই করা যাবে না। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। তাঁদের বাইরে এইসব দুর্নীতিপরায়নরা আছেন। মহামারি, যুদ্ধ, বন্যার সময়ে, আপৎকালীন অবস্থায় দু’রকমই ঘটে থাকে। ভালো এবং মন্দ। বাংলাদেশে তো ত্রাণের চালচুরি নিয়ে কত সংবাদ বেরিয়ে আসছে। গরিব মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না। আমাদের এখানেও এই অভিযোগ কম নয়। এই উপমহাদেশে তা ঘটেই থাকে। এদেশে ওদেশে। কিন্তু আরো মর্মান্তিক ঘটনার কথা ভেসে এল। মানুষের আতঙ্ক কতদূর রক্তের ভিতরে প্রবেশ করলে এমন হতে পারে। বাংলাদেশে এমন ঘটেছে। এদেশেও তা ঘটতে আরম্ভ করেছে। ... ...
তোমাকে পড়ছি রাষ্ট্রদ্রোহী, তোমাকে খুঁড়ছি নিরন্তর যাওয়া-আসা সেও চলতেই থাকে, পুড়ে যায় পোড়ো মাটির ঘর ... ...
শব্দহীন সাইকেল আসে৷ বেল বাজেনি ক্রিং৷ বেল বেজেছে ক্রিং। ঘরঘর করে আহ্লাদে ডেকে ওঠেনি পোষ মাদীটা। টের পায় সাড়ে তিন বছর৷ খুলে দেয় কাঠের পৌনে চার ফুটে হুড়কা আর চেয়ার টেনে ছয় ফুট উঁচুতে লোহার ছিটকিনী৷ "আব্বু আসছে"৷ এইবার গলাগলি ঘুম- ফজর আমার.. ফিশফিশানি দুপুর আসে৷ রঙিন ফড়িং, বোয়ামে নীল চোপড়া মাছ! ঘুম আর ভলো লাগে না৷ মনেহয় দিনমান খেলি "ঘুঘু'র তোর তরকারি" খেলতে খেলতে জহর গড়িয়ে আছর৷ পালানো বাছুর। সুতো ছিড়া ঘুড়ি৷ সন্ধ্যায় রুলটানা খাতা বেঁকে বেঁকে যায়৷ ক্লাস ফাইভের পদ্য লেখার রোগ… ... ...
বয়ঃসন্ধির সকালে যখন মাথা ভরতি ভ্যাপসা গন্ধ নিয়ে ম্যামের খোলা পিঠ থেকে অন্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণে এসে থামত তখন তারা ডেকে উঠত। হয়তো পুরুষ চড়ুইটা। সঙ্গমহীনতার বিষাদে৷ ঘরবন্দি ভালোবাসা ছুঁয়ে দেখতে চাইত। পুরুষত্বকে বলিয়ান করতে চাইত। হিমালয়ে শীর্ষে তার পুরুষত্বকে রাখতে চাইত। যেখানে তার কামনার সবকটা রং ছুঁয়া যাবে। রঙধনুতে হেঁটে যাবে সংস্কারে আটকে পড়া সঙ্গিনীর নিশ্বাস পুঁজি করে। পরস্পরের রঙের আদানপ্রদান হবে তারাদের মাজারে। খসে পড়া তারা বয়সি মফস্বলে স্পর্শ এঁকে যাবে কামনার উৎকৃষ্ট সময়ে। যে সময় এখনও বার বার ফিরে আসে। ফিরে যায় কাঙ্ক্ষিত শৈশবের আটকে থাকা ভূগোলে। রাত নেমে আসে, বাড়ি ফিরে একটি নিঃসঙ্গ চড়ুই। ... ...
দেওচা-পচামিতে যেন এক অঘোষিত কার্ফু জাড়ি করা হয়েছে। লকডাউনে ত্রাণ দেওয়ার অছিলায় কিছু পোষা ‘বুদ্ধিজীবী’ অবশ্য নেমেছিল মাঠে। বলাবাহুল্য শাসক দল ও প্রশাসন ‘কোভিড বিধি’ ভঙ্গের অজুহাতে আটকায়নি তাদের। অথচ সমীক্ষক দল হোক বা অন্যদের প্রবেশ ছিল ‘নিষিদ্ধ’। প্রতিবাদীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি চলছে নির্দেশ অনুসারে। জীবন আর কতটা দুর্বিষহ করলে থামবে রাষ্ট্র? জানতে চাইছেন তাঁরা। ভয় দেখিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের বশে আনতে পারেনি সরকার। শাসক দলের গুন্ডারা পথে নেমেছে বহুদিন। তা সত্ত্বেও বশ্যতা মানেনি সাঁওতালরা। তাঁদের জীবন-জীবিকা-সংস্কৃতির ওপর আঘাত তাঁরা চাননা, জানালো ছোট্ট জমায়েত। পাথর খাদানের ধুলো আমরা খেয়েছি, আর ধুলো খাবোনা, বললেন অনিল সোরেন (নাম পরিবর্তিত)। প্রতিরোধে সাঁওতাল। ... ...