দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মুরমানসকের ভূমিকা বিশাল। জার্মানদের রাশিয়া আক্রমণের পর এই বন্দর দিয়েই মিত্র শক্তি সাহায্য পাঠাতে থাকেন। লেনিনগ্রাদ ও স্টালিনগ্রাদের মত মুরমানসক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য একটি হিরো সিটি বা বীর শহর নামে পরিচিত। শহরের প্রায় চুড়োয় একটি বিশাল মূর্তি আছে, তার নাম আলইশা। সেটি সেই সংগ্রামের স্মারক। নিচের কোলা উপসাগরে বরফ ভেঙে সমুদ্রপথ পরিষ্কার করার প্রথম আণবিক শক্তি চালিত জাহাজ “লেনিন” বন্দরে নোঙর করা আছে। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে অনেক বরফের দেয়াল খনন করে ১৯৮৯ সালে লেনিন এখানে বিশ্রান্তি গ্রহণ করেছে। এতটা উত্তরে এলে সারা দুনিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন মনে হয়! সেটি হয়তো সঠিক নয়। আলইশা স্ট্যাচুর পদতলে দাঁড়িয়ে কল্পনাকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিলে মনে মনে হয়তো অনেক দূরে চলে যাওয়া যায় – এই তো সামনে কোলা উপসাগর, সেটি গিয়ে মিশেছে বারেনট সাগরে। সেখান থেকে একটু বাঁয়ে ঘুরলেই কানাডার সমুদ্রপথ। বছরে অন্তত পাঁচ মাস খোলা থাকে। এর নাম সুমেরু সেতু। মালবাহী জাহাজ যেতে পারে চার হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত ম্যানিটোবার চার্চিল বন্দরে। আর খাড়া উত্তরে গেলে মাত্র দেড় হাজার কিলোমিটার দূরত্বে উত্তর মেরু। পা আরেকটু বাড়ালেই তো খাঁটি উত্তর বা ট্রু নর্থ! ... ...
কিন্তু টিন গুদাম, দর্মা লাইন, এবং ২৪ নং বাড়িতে লুটের প্রেক্ষিত কী ছিল? আমরা জানতে পারি যে এর পিছনে এমন কিছু কারণ রয়েছে, যার শিকড় অনেক গভীরে প্রোথিত, আর রয়েছে ইন্ধন জোগানোর ঘটনা। ভাটপাড়া বিধানসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল বিজেপি এবং তৃণমূলের যুদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অর্জুন সিংহের ছেলে পবন সিংহের বিরুদ্ধে মদন মিত্রকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচনি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়। অর্জুন সিংহ ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজয়ী হওয়ার ফলে, তাঁকে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিতে হয়। আর তার ফলেই ভাটপাড়া বিধানসভায় বিধায়কের আসনটি খালি হয়। মদন মিত্রের কাছে এটা ছিল ‘ওয়াটারলুর যুদ্ধ’র সমান। ... ...
অনেকেই টেলি কন্সালটেশনের পর ভিজিট দিতে চাইছেন। তাঁদের সবিনয়ে বলছি, আমি নিজেই ফোনে এভাবে চিকিৎসা করার ঘোরতর বিরোধী। করোনার কাল কেটে গেলেই আবার ফোনে কোনো রকম ওষুধপত্র বলা বন্ধ করে দেব। অতএব এর জন্য আমাকে ভিজিট দেওয়ার প্রশ্নই নেই। এই লকডাউনের সময় বহু সেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রায় প্রতি এলাকাতেই মানুষের জন্য কাজ করছে। টেলিকন্সালটেশন বাবদ যে টাকা টুকু আমাকে দিতে চাইছেন, ঐ টাকা সেসব সংগঠনের হাতে তুলে দিন। ... ...
রিংয়ের খেলা দেখাবার পর সে এই দুই জাদুকরের সঙ্গে মঞ্চে প্রবেশ করত। সার্কাসের মাঝখানে জলপূর্ণ কাঁচের বাক্স রাখা হত, সহকারী ঝলমলে সাঁতারের পোশাক পরে তাতে ডুব দিত৷ তারপর জাদুকরেরা চকচকে লাল কাপড়ে ঢেকে তালা লাগিয়ে দিত বাক্সে। শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তের সাথে চলত উচ্চস্বরে বাদ্যঝঙ্কার৷ যখন দর্শকদের উত্তেজনা চরমে উঠত তখনই কাপড়টা সরিয়ে ফেলে দেখানো হত বাক্স খালি, কিন্তু সেটা যথারীতি তালাবদ্ধ৷ একই সময় ড্রামের আওয়াজের সাথে পেছনের পর্দা সরে সেই সহকারী মঞ্চে প্রবেশ করত সম্পূর্ণ শুকনো অবস্থায়৷ দর্শকদের বাঁধ ভেঙ্গে যেত করতালি ও উচ্ছ্বাসে। ... ...
লিপির ভালো লাগছিল এই নতুন ধরণের শনিবারগুলো- কত রকম ঘর দোর হয়; ঝাঁ চকচকে নতুন বাড়ি হয়তো - সে সব ঘরে ঢুকতেই রঙের গন্ধ পাওয়া যায়, নিঝুম সাদা দেওয়াল ড্যাবডেবিয়ে তাকিয়ে থাকে লিপিদের দিকে; আবার কিছু বাড়ি যথাবিহিত প্রাচীন, কাঠের মেঝেয় পেরেক উঠেছে, খেয়াল করলে দেওয়ালে হাইট চার্ট দেখা যায়- পেন্সিলের রেখা আবছা হয়ে এসেছে যদিও; পিছনের ঘাসজমিতে রঙ চটা কেনেল, লাল নীল বল, ঝুপসি গাছে লম্বাটে ফল ধরে আছে - কত কী ভেবে বাড়ি করে মানুষ, তারপর বেচে দেয়- ... ...
ভদ্রমহিলা উঠে দাঁড়ালেন। বললেন, 'যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে তখন কি করব? বাড়ির বাইরে তো বেরোতে পারবো না? না না..... এখন টেস্ট করা যাবে না। এমনিতেই কোথা থেকে টাকা জোগাড় করবো সেই চিন্তায় ঘুম নেই।' ... ...
‘কার আবেদনে আমি এখানে এসেছি জানেন? সুভাস চন্দ্র বসু। ১৯৩৮ সালে তিনি যখন কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন আবেদন করেছিলেন চিনের মুক্তিযুদ্ধে চিকিৎসক ভলান্টিয়ার চেয়ে। কলকাতায় আমাদের বিদায় নেওয়ার সময়ে হাত ধরে বলেছিলেন, আপনারা যাচ্ছেন এক পরাধীন দেশ থেকে আরেক পরাধীন দেশে। তাঁদের স্বাধীনতার লড়াইয়ে অংশ নিতে। তাঁদের জানাবেন এই মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যেক ভারতবাসী চীনাদের পাশে আছেন। আমাদের দেশও খুব তাড়াতাড়ি স্বাধীন হবে। তারপর স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এশিয়ার এই বিশাল দুটি দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন হবে।’ অন্য চারজন ভারতীয় চিকিৎসক দেশে ফিরে গেলেন। বিদায়ের সময় নতুন চীন সরকার তাঁদের বিপুল সংবর্ধনা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেন। ডাঃ কোটনিস থেকে গেলেন। তিনি যোগ দিলেন ডাঃ বেথুন আন্তর্জাতিক শান্তি হাসপাতালের প্রধান হিসাবে। ... ...
সেদিন বাজারের কাছে অনিলদার সংগে দেখা। দেখলাম আরো রোগা হয়ে গেছেন। হাতে একটা লাঠি। আমায় দেখতে পান নি।আমিই এগিয়ে গিয়ে কথা বললাম। খুব খুশি আমায় দেখে। বললেন - তোমার বৌদি চলে গেছে জানো। হঠাৎ তিন দিনের জ্বরে চলে গেল। একা হয়ে পড়েছি বড্ড, বুঝলে। চোখেও কম দেখি আজকাল। তাই বই পড়াও বন্ধ। তারপর একটু চুপ করে রইলেন, তারপর বললেন - আমি এখন এক বৃদ্ধাশ্রমে থাকি বাসু। না, স্ব-ইচ্ছায়। ছেলেটা নিজে দেখেই বিয়ে করলো এক সময়। আমায় বলতে পারছিল না। ওর মাকে বলে যে আমার শ্বেতী থাকাটা ওর হবু বৌএর পছন্দ নয়। আমরা সংগে না থাকলে সে বিয়ে করতে পারে। আমি বলি - বিয়ে করুক ও। কলকাতার দিকে ফ্লাট কিনুক। আমি কিছু টাকা দিচ্ছি। ... ...
তীরে এসে তো আর প্রেস্টিজ ডোবাতে পারিনা, তাই মুখে হিন্দি শেখা ডাকাবুকো অভিনেতার মত হাঁ হাঁ কিঁউ নেহি টাইপের ভাব করে ভেসে পড়তে হলো। এই অঞ্চলটা প্রায় একইরকম তবে বৈচিত্র্য আরো বেশি। মিনিট কুড়ি ধরে সেখানেও কুস্তি করে তারপর একসময় মুক্তি পেলাম। বীরের মত জল থেকে উঠে এলাম, মুখের ভাবটা আরো ঘন্টা দুই জলে থাকতে পারলেই ভালো হতো। শুনলাম ৫০-৫৫ বছরের ঐ ভদ্রলোক, যিনি সপরিবারে স্নরকেলিং করতে এসেছেন, তিনি অগাধ সমুদ্রে সাঁতার দিয়ে একটা কচ্ছপের পেছনে ধাওয়া করেছিলেন। তারপর এতদূরে চলে যান (এবং কচ্ছপটা এতই দ্রুতগামী) যে তাঁর ভয় হতে থাকে ফিরতে পারবেন না। অতঃপর বুদ্ধিমানের মত ফিরে এসেছেন। বুঝলাম যে লড়াইটা আদপেই সংস্কৃত আর হিন্দির না, বস্তুত তারা হলো "অলসো র্যান" ক্যাটাগরি। আসল হিরো হলো হলিউড, সেখানে সবই সম্ভব। কচ্ছপটা জোর বেঁচে গেছে। ... ...
সনতের ঘাড় মাথা পিঠ টনটন করছিল; চোখ লাল, মাথা ধরে আছে। কাল থেকে ডেস্কটপে ইসরোর সাইট আর টিভির স্ক্রিনে নজর রেখে যাচ্ছে অবিরাম। মন্টুর মা সকালে লুচি আর মোহনভোগ করেছিল, তারপর রান্না করে খাবার বেড়ে রেখে গেছে দুপুরে। এই মধ্যরাতে সেই বাড়া ভাত, আর মাছের ঝোল থেকে আঁশটে গন্ধ সনতের ঘরদোরে ছড়িয়ে পড়ছিল। পিঁপড়ে ধরেছিল বাসি লুচি, মোহনভোগে। গালে হাত বোলাল সনৎ – খোঁচা খোঁচা দাড়ি; ল্যান্ডিং হয়ে যাক, কালই সেলুন যাবে, চুল কাটবে, ফিটফাট হয়েই মিঠুর বাড়ি। ... ...
কর্পোরেট অফিস আর কলকাতায় পার্থক্য অনেক। কলকাতায় সোমেশ্বরই ছিল বস, অতএব সাধারণভাবে অফিসের চালচলন, ম্যানেজার আর অন্য কর্মচারীদের মধ্যে সম্পর্ক, ওঠাবসা ইত্যাদি, ঠিক নিয়ন্ত্রণ না করলেও সোমেশ্বরের রুচি আর পছন্দের ছাপও পড়ত তাতে। কর্পোরেট অফিস অন্য রকমের। সেখানে অনেক ডিপার্টমেন্ট, অনেক কমিটি, বিদেশী ভিজিটর্স, নানা রকমের প্রেজেন্টেশন আর পার্টি। বেশির ভাগ কাজের দিনগুলোতেই যেহেতু ট্যুরে থাকে সোমেশ্বর, অতএব নিজের কাজের বাইরের এসব ব্যাপারে ও থাকেই না প্রায়। মুম্বইতে থেকেও এক-আধটা সান্ধ্য পার্টিতে না গেলে চলে না, কাজেই সেটুকুই ওর জনসংযোগ। কিন্তু ওকে যে বিশেষ কেউ লক্ষ্য করে, তা-ও মনে হয়না। ... ...
শনিবার বাড়ি থেকে সরাসরি ডাক্তারের কাছে গিয়েছে মিঠু। বিপ্লব আর ছন্দা ওর সঙ্গে আজ; ফেরার পথে কেনাকাটা র প্ল্যান রয়েছে- পুজোর বাজার এখনই শুরু না করলে পরে বড় ভীড় হয়। আল্ট্রাসাউন্ড, এন্ডোস্কোপি হয়ে গিয়েছিল; টিস্যু স্যাম্পল কালেকশন হয়েছে । সমস্ত রিপোর্ট এখন গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্টের কাছে। আজও সেই কনকনে ঠান্ডা চেম্বার, অপেক্ষারত জনা পনের মানুষ, চশমা চোখে ছেলেটি আর তার কমপিউটার-ঘড়ির কাঁটা টিকটিক ঘুরছিল। -সেদিনও এতক্ষণ তোকে বসতে হয়েছিল? -হ্যাঁ "একা একা বসে ছিলি-ইশ, বড্ড স্লো না এই ডাক্তার" ছন্দা বিজবিজ করল। -স্লো কেন? যত্ন করে পেশেন্ট দেখেন- সময় লাগে। -বেশি দেরি হলে, আজ আর কেনাকাটা হবে না, সব বন্ধ হয়ে যাবে। শনিবার না? পাঁচ নম্বরে ডাক পড়ল মিঠুর। ডাক্তার আজ গম্ভীর। মাথা নামিয়ে মিঠুর রিপোর্ট দেখছিলেন। "সব রিপোর্ট এসে গেছে" এই বলে সামান্য থামলেন ডাক্তার "ভালো তো সব?" ছন্দা আগ বাড়িয়ে বলল। মুখ তুলে তাকিয়ে চশমা ঠিক করলেন ডাক্তার। ... ...
"যে অংশটুকু বাকি ছিল এই কাহিনির, লিখে গেলাম। এই কাহিনিকে মরে যেতে দিও না। আলো হাতে, প্রেম বুকে নিয়ে, চোখে স্বপ্ন নিয়ে, হৃদয়ে সাহস নিয়ে আমরা সবসময় মানুষের পাশে পাশেই থেকেছি। তাপিতকে শান্ত কর। ভ্রান্তকে পথ দেখাও আলমিত্রা। তোমার কাছে এসে যেন লোকে শান্তি পায়। মাছি হয়ো না, মৌমাছি হও। তুমি স্বেচ্ছায় আমার পথ বেছে নিয়েছ। আমি চলে যাবার পর থেকেই শুরু হোক তোমার পথ চলা। শেবার রানির বাকি কাহিনি লিখে গেলাম। রানির মত হও। একাকী, সাহসী, ব্যতিক্রমী, নির্জন । " ... ...
আমি আলপনা,আলপনা মন্ডল,প্রথাগত অর্থে অশিক্ষিত। দাদার সংসারে ক্লাস ফোর এ ছাত্রবন্ধু কিনে দেয়নি বলে অভিমানে লেখা পড়া ছেড়ে ৯বছর বয়েসে কলকাতা পালিয়েছিলাম।আর পড়াশোনা হয়ে ওঠেনি , আমি আর কোনদিন ছাত্রবন্ধু কিনে উঠতে পারিনি। আমার কম্পিউটার নেই,চালাতেও পারিনা, আধুনিক ফোনও নেই (তবে জিও আছে) এমনকি আপনাদের এই সভায় আমার প্রথম পোস্ট টি লিখতেও কেউ আমাকে সাহায্য করছেন। তবে শিখে যাব,পারবই। গুরুচণ্ডা৯ নাম দেখে আগ্রহ জেগেছিল, কিন্তু গ্রুপে সবাই দেখলাম বামুন/কায়েত তবুও আমার মত চণ্ডাল -অশিক্ষিতা কে জায়গাবদল করবার আমার কথা বলবার সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ। আমাদের কথা কেউ মনেও রাখেনা। আমি এখনও নিজে কম্পিউটার চালাতে জানিনা, কম্পিউটারে কী করে টাইপ করতে হয় জানিনা। আধুনিক ফোন নেই তবে জিও আছে । আমি বলি,ব্যাঁকা ট্যারা করে রুল টানা কাগজে লিখি, কাটি, মুছি, কেউ আমাকে সাহায্য করেন,তিনি সাজান গোছান, আমাকে পড়ান, মতামত নেন তারপর পোস্ট করেন। এখনো আমি পুরোপুরি লেখিকা নই কিন্তু কথা আমার । আমার নিজের জীবনের । ... ...
এই ভূগোলের বাইরেও একটা ভূগোল আছে। সে ভূগোল জঙ্গলের মানুষকে নিয়ে। সে ভূগোল যে অঞ্চলের সেই অঞ্চলের যে কোন জায়গা ধরে কিছুক্ষণ হাঁটলেই শাল-মহুয়ার জঙ্গল, ছোট-বড়ো পাহাড়, লালচে মাটি যার অনেকটাই কাঁকুড়ে, অজস্র তিরতিরে ছোট ছোট নদী-ঝোরার গুনগুনানি, আর কালোকোলো বেঁটেখাটো মানুষ – আপনি মাইলের পর মাইল হাঁটুন – এই একই দৃশ্য – মাইলের পর মাইল। কতো মাইল? কতো মাইল আমি ঠিক ঠিক জানিনা, কিন্তু অনেকটাই। এখান থেকে হাঁটতে শুরু কোরে বাঁকুড়া-মেদনীপুরের ভেতর দিয়ে ঢুকে যান সিংভূমে; ঘাটশিলা-জামশেদপুরের কারখানাগুলোর দক্ষিণে এসে ময়ূরভঞ্জ-কেওনঝর-সম্বলপুর হয়ে পশ্চিমে গিয়ে পৌঁছিয়ে যান সুন্দরগড়-রায়গড়-সরগুজা, তারপর আবার পূবের দিকে এসে পালামৌ-হাজারিবাগ-রাঁচি-গিরিডি-সাঁওতাল পরগণা দিয়ে ধানবাদ হয়ে ফিরে আসুন এই পুরুলিয়ায়। ... ...
সেই ছোট থেকেই একটা রেটরিকাল প্রশ্ন শুনে আসছি - ন্যাড়া বেলতলায় যায় কবার? এসক্যাম্ব্রিয়ন সমুদ্রতটে পৌঁছে প্রশ্নটা মর্মে এসে বিঁধলো। বিশাল সমুদ্রতট, সাদা বালি দিয়ে ঢাকা। সমুদ্র যত নয়নাভিরাম, ততই ভীতিপ্রদ। জায়গায় জায়গায় বেজায় ঢেউ, দুয়েকজন সার্ফিং করছেও দেখা গেল। তার ওপরে দেখলাম বিস্তর লোক, প্রায় কার্নিভ্যালের মত আবহাওয়া। দিনটা শুক্র বা শনিবার নয়, সম্ভবত বুধবার। এত লোকের কি কোন কাজ নেই, কি জ্বালা ! মনটা দমে গেল, মানসচক্ষে দেখতে পেলাম আমায় খাবি খাওয়া অবস্থায় জল থেকে তুলে নিয়ে আসা হচ্ছে, তীরের লোকেরা হেসে খুন। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত দেখলাম স্নরকেলিং এর বাকি সদস্যদের। ... ...
দুর্যোগ কেটে গেলে পাড়ার আড্ডায়, চায়ের দোকানে কারও কারও কথায় অভিমান ঝরে পড়ত, ‘সে দিন আমি এত করে যেতে চাইলাম, তোমরা রাজি হলে না৷' কেউ বলতেন, ‘রাতবিরেতে দরকার হলে আমায় ডেকো৷ রাতে আমি তো জেগেই থাকি। এক দিন না হয় হাসপাতালে বা শ্মশানে রাত জাগব।' তেমন একজনকে এক দিন বললাম, ‘কাকু, আপনাকে তো ফার্স্ট ট্রেনে অফিস ছুটতে হয়৷ আপনি কী করে হাসপাতালে রাত কাটাবেন!’ দার্শনিকসুলভ জবাব এল, ‘জীবনটা অফিস আর বাড়িতেই থমকে আছে বুঝলি৷ মাঝেমধ্যে রুটিন বদল করা ভালো৷ একটু হাসপাতাল-টাসপাতাল গেলে মন্দ কী?’ ... ...
প্রধানমন্ত্রী তখন গুজরাটে। বরাবরের মতোই তিনি দারুন ভাষণ দিচ্ছিলেন। তার আট বছর ধরে করে যাওয়া জাতির সেবাকার্যের প্রশংসা করছিলেন। তিনি বলেন, "আমি আট বছরে ভুল করেও এমন কিছু হতে দিইনি, এমন কিছু করিনি যা আপনাকে বা দেশের কোনো নাগরিকের মাথা নত করাবে"। প্রধানমন্ত্রীর এই মিথ্যেটা আগের সবকটাকে ছাড়িয়ে গেছে। কথাটা শুনে গত আট বছরের আটটি ছবি আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল। ... ...
পপুলিজমের বৈশিষ্ট্য, যেখানে সঠিক-বেঠিকের হিসেবের থেকেও মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা বেশি প্রয়োজনীয়। কন্তের বিরুদ্ধে একগাদা বিতর্ক, মূলত তাঁর সিভিতে যেসব ডিগ্রির উল্লেখ আছে সেগুলো নিয়ে। মোদীর entire political science-এর মতো মোটা দাগের মিথ্যা না, মমতা ব্যানার্জির জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাস্যকর দাবি নয়, সুচারু অর্ধসত্য আর মিথ্যা দিয়ে সাজানো কন্তের ফোলানো সিভি। অন্যদিকে স্পেনের পাবলো ইগলেশিয়াসের Podemos পার্টি আঞ্চলিক রাজনীতি (যার শিকড় কিনা ভাষা ও সংস্কৃতিগত ভাবে স্বীয় স্বীয় অঞ্চলের এবং আলাদা) হাইজ্যাক করে নির্বাচনে কিস্তিমাত করেছে। তারা এখন তৃতীয় বৃহত্তম দল। যেসব আঞ্চলিক, প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোট নিজেদের দিকে টেনে এনে তারা জিতেছে সেই ইস্যুগুলো তাদের নিজস্ব কর্মসূচির নয়, সেই আন্দোলনগুলিতে তারা কস্মিনকালেও অংশ নেয়নি। ... ...