নবাবের শহরে সব কিছু মাপমতো। এধার ওধার হবার কোনো জো নেই। বাজপায়ীর মালিক নিজে এসে বলেন, শুধু আলুর সবজি কেন? মটর লাও, মটর। মাখোমাখো সুসিদ্ধ মটরের রসা আর সেই দেবভোগ্য কচুরি ফিরদৌসকে ভুলিয়ে দেবে, গ্যারান্টি! তেলতেলে, চুপচুপে, মশল্লায় বিজবিজে, কোনোটাই নয়। আরাম করে চোখ বুজে খেতে হয়। সেখান থেকে চটপট আবার আমিনাবাদ। আবার আমিনাবাদে কেন? কেন আবার? ফিরদৌসকে খুঁজতে বেরিয়েছি, আর মাথায় দোপাল্লি টোপি উঠবে না। তা হয় না। তবে কিনা আমিনাবাদ ভারী ঘিঞ্জি বাজার। বাজারের ভেতরে গাড়ি ঢোকে না। পায়ে হেঁটে টোপির দোকানের ঢুকি। নবাবদের শহর বলে কথা। এক জমানায় ফ্যাশন আর ইস্টাইলে রাজধানী দিল্লিকে টক্কর দিত! একবার চারকোনা টুপি চালু হল। তার নাম চৌঘশিয়া। তারপর পাঁচকোনা। মাথায় টুপি পরানোর জন্য কম মেহনত করেনি এই শহর। ... ...
উত্তর, মধ্য ও পূর্বভারতে খিচুড়ির পূর্বজর সন্ধানে ঘোরাফেরার পর এবার এবার উঁকিঝুকি বিন্ধ্যাচলের ওপারে। প্রাচীন কালে। আর ওমনি প্রবেশ এক পরমাশ্চর্য দুনিয়ায় — সঙ্গম সাহিত্যে। নীলাঞ্জন হাজরা ... ...
বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বই। পড়লেন দময়ন্তী এবং মো. সাইফুজজামান। ... ...
তাহলে অভিজিৎ সেনের এই দুটি উপন্যাসই মানুষকে তার নানা সম্পর্ক, নানা পরিপ্রেক্ষিতের মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়। রোদে সেদ্ধ চাল শুকোনোর মতো কলম দিয়ে উল্টেপাল্টে আউলা ঝাউলা করে ছাড়ে তার প্রতিটি প্রতিক্রিয়াকে। আদর্শ বা পূর্ণ মানবের দেহরেখা আঁকার কোনো চেষ্টাই করে না, অপূর্ণতা আর অসহায়তার রঙে চুবিয়ে তোলে আমাদের সমস্ত অস্তিত্ব। শেষ করে পাঠক ফুঁপিয়ে উঠতে পারে, কিন্তু সেজন্য তার লজ্জা হবে না। এই অপূর্ণতার অশ্রুই আমাদের ভবিতব্য! ... ...
সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটকের উত্তরসূরী হিসেবে বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, অপর্ণা সেন বা আরও পরে ঋতুপর্ণরা যখন আলোচনায় চলে আসেন, তখনও কিন্তু কিছুটা ব্রাত্যই রয়ে যান তপন সিংহের মতো কিছু পরিচালক! হ্যাঁ, তপন সিংহ হচ্ছেন সেই পরিচালক যিনি এপার আর ওপারের মাঝের সেই সবুজ, স্নিগ্ধ এক ভূখন্ড যেখানে রয়ে যায় অদ্ভুত এক ভালোলাগা এবং সে ভালো লাগা কেবলই এন্টারটেনমেন্টজনিত ভালো লাগা নয়, সে ভালো লাগায় রয়ে যায় চিন্তার কিছু স্পেস, শিল্পের কিছু অনিবার্য শর্তপূরণ! সম্ভবত 'দ্য হিন্দু' পত্রিকা তাঁর 'দাদাসাহেব ফালকে' পাবার পর তপন সিংহের সিনেমা নিয়ে লিখেছিল – 'Complex ideas through a simple narrative.....!' হ্যাঁ, সত্যি তিনি পারতেন। তাঁর ছবির সুদীর্ঘ তালিকা থেকে মাত্র একটি ছবিকে আলোচনায় আনতে চাই, উদাহরণ হিসেবেই, 'গল্প হলেও সত্যি'! কোনো এক আলাপচারিতায় তপন সিংহ একবার বলেছিলেন – 'আমার হতাশ লাগে এই ভেবে যে দর্শক ছবিটাকে শুধুই হাসির ছবি হিসেবে নিল'! একজন পরিচালক হিসেবে তো হতাশ হবারই কথা এবং ন্যায্য কারণেই। যারা সিনেমাটি দেখেছেন, আরেকবার ভাবুন তো, 'গল্প হলেও সত্যি' কি নেহাতই হাসির ছবি? নির্ভেজাল হাসি আর এন্টারটেইনমেন্ট? রবি ঘোষের অসামান্য অভিনয়ে বুঁদ হয়ে থাকতে থাকতে বাঙালি দর্শকের কি একবারও মনে হয়নি, আপাত হাসির আড়ালে সিনেমাটির এক অন্তহীন স্পেস তৈরির কথা? প্রথম যখন 'গল্প হলেও সত্যি' দেখি, বয়েস নেহাতই কম। সেসময় নির্ভেজাল হাসি নিয়েই মুগ্ধ হয়েছিলাম কিন্তু পরবর্তী সময়ে যখন সিনেমাটা বেশ কয়েকবার দেখি, অনুভব করেছি একজন কুশলী পরিচালক কীভাবে তৈরি করেন ভাবনার স্পেস!ইংল্যান্ডের পাইনউড স্টুডিও থেকে সরাসরি কলকাতা, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার থেকে পরিচালনায়, বাংলা সিনেমার দর্শক পেল এক পরিচালককে যিনি হেঁটে গেলেন মাঝের এক পথ বেয়ে। পাশাপাশি দু'টো পথেরই হাতছানি ছিল। বিস্তর আন্তর্জাতিক ছবি দেখার সুবাদে চলচ্চিত্রের বিভিন্ন ঘরানাগুলোর সঙ্গে ছিল তাঁর নিবিড় পরিচয়, অন্যদিকে তথাকথিত আপাত জনপ্রিয়তার হাতছানিও ছিল। দুটো রাস্তাকেই সহজে এড়িয়ে মাঝামাঝির যে পথ তিনি বেছে নিলেন তাতে ঝুঁকি নেহাতই কিছু কম ছিলনা। 'গল্প হলেও সত্যি' দেখতে দেখতে তপন সিংহ সম্পর্কে সেই মন্তব্য বোধহয় ভীষণভাবে অনুভব করি – " A magical union of liberate art and critical populism made Tapan Sinha middle-of-the road – Bengali Cinema. যাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে স্টোরিলাইন সেই ধনঞ্জয়ের আবির্ভাব থেকে সিনেমার শেষদৃশ্যে অদ্ভুত এক ধোঁয়াশার মধ্যে তার মিলিয়ে যাওয়া, পুরোটাই এক রহস্যময়তায় ঘেরা! কোথা থেকে এল ধনঞ্জয়, নানান প্রশ্নে তার হেঁয়ালি মাখানো উত্তর, একসময় চলেই বা গেল কোথায়, কোনো উত্তরই যনো প্রাত্যহিক বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনা, কিন্তু ভীষণভাবেই প্রাত্যহিকতায় গড়ে ওঠে এ কাহিনীর নির্মাণ, চরিত্র, আঙ্গিক! ... ...
বাংলা সিনেমা ভুল বুঝতে পেরেও, ভাঙবে তবু মচকাবে না। ‘বলো দুর্গা মাঈকী’ নামেও নাকি একটা ছবি হয়েছে! ‘ঢাকের তালে’ বলে একটা গান শুনতে পাই মাঝেমাঝেই। তবে যে কথা বলছিলাম, ‘অনুসন্ধান’ একটা বিগ ব্রেক। অমিতাভ বচ্চন বাংলা ছবি করলেন। বাংলা বললেন। “আমি বলছিলাম কি” বাক্যবন্ধ সুপার ডুপার হিট হল এবং তিনি ঢাক বাজিয়ে মায়ের সামনে নাচলেন। রাখী আনন্দ-র সিল্ক শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে রইলেন। কালীরামের ঢোল ফাটল। দুর্গাঠাকুরের চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই লোকে বচ্চনবাবুকে বেশি দেখল, আমজাদ খানকে বেশি দেখল। তাঁরও এটি প্রথম বাংলা ছবি। বাংলা বোল। অর্থাৎ মহামায়া-কেন্দ্রিক ছবি থেকে বেরিয়ে এসে দুর্গাপূজাকে একটা এলিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করার জায়গা তৈরি হল। ‘অনুসন্ধান’ একটা ব্যাপার ছিল। তাতে দুর্গাপূজার আয়োজন, বাঙালিয়ানা বোঝানোর জন্য যতটা, তার থেকে বেশি বচ্চনসাহেবের নাচ দেখানোর জন্য। ... ...
স্বাধীনতার সংজ্ঞা বদল হয় মধ্যরাতে। জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চায়। চর্চার কণ্ঠ রুদ্ধ হতে থাকে। কিন্তু সংকট যখন সমাগত, তখন মুক্তি থাকে প্রসরমান অনুশীলনের স্বাধীনতায়। ভাষণে নয়, নয় প্রতিশ্রুতিতে। লিখছেন শুভময় মৈত্র। ... ...
আলমুদেনা গ্রান্দেস। দীর্ঘ স্বৈরাচার থেকে সদ্যমুক্ত স্পেনের সাহিত্যে ঘটিয়েছিলেন নারীদৃষ্টিকোণের বিস্ফোরণ। ‘লুলুর নানা বয়স’ নামক উপন্যাসে। সমালোচক ও সাধারণ পাঠক উভয়েরই সমাদৃত এই লেখক। বহু পুরস্কারে ভূষিত। তাঁর লেখালিখিতে মেলে সাহিত্যিক বেনিতো গালদেস ও ডেনিয়েল ডেফো এবং চলচ্চিত্রকার লুই বুনুয়েলের ছায়া। লিখছেন জয়া চৌধুরী ... ...
‘মিয়া’ শব্দের অর্থ হতে পারে, জ্ঞানী, ভদ্রলোক, মহাশয়, এইরকম। কিন্তু মিঞা পয়েট্রি যাঁদের কথা বলে, তাঁদের ‘মিয়া’ বলে তাচ্ছিল্য করা হয়। অপাক্তেয় যেন। তাঁদের অস্তিত্বই যেন অবাঞ্ছিত । সেই তাচ্ছিল্যকেই হাতিয়ার করে, তাচ্ছিল্যের অপসংস্কৃতিকে বৌদ্ধিক স্তরে চিহ্নিত করে দেয়ার থেকেই নিজেদের ‘মিয়া’ বলে ঘোষণা করে দেয়ার কবিতাই মিঞা পয়েট্রি। নিজেদের কথাটি সংগবদ্ধ করে মিঞা’র আসল অর্থও জানিয়ে দেয়া। ... ...
এসব শুনতে বলছি কেন? কোন মেডিক্যাল কলেজের ঝামেলা বা কে মার খেল বা কে হোস্টেল না পেল তাতে আপনার আমার দিন গুজরানে সরাসরি কিছু যায় আসে না তো ঠিকই, কিন্তু আসতেও তো পারে কখোনো। হঠাৎ করে আপনার নিজের বা কাছের কারোর শরীর খারাপ তো হতেই পারে। এমনই অবস্থা, যে মেডিক্যাল কলেজের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এ (CCU) তে ভর্তি করতে হল। জানেন এই CCU এর ডেপুটি ইনচার্জ কে? এমন একজন ডাক্তার, যিনি ২০১৬ সালে এমবিবিএস পাশ করেন। CCU এর কাজ, অর্থাৎ ক্রিটিকাল কেয়ারে কাজের জন্য প্রথামত কোনো বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ডিগ্রী তার নেই। উপরন্তু তিনি পাশ করার পর বড়জোর দুবছর রোগী দেখেছেন (যদিও এই দুবছরে কতদিন ডিউটি দিয়েছেন তার খবর যদি আপনি সঠিক ভাবে নেন তাহলে আপনি বাকরুদ্ধ হবেন এ নিশ্চিত) । ... ...
ডোকরার কাজে বিশেষ ধরনের মোম লাগে। মোম দিয়ে নকশার বিষয়টা বুঝতে পারছিলাম না আমরা। প্রবীণ শিল্পী অশৈল্পিক চারজনকে হাতে কলমে দেখিয়ে দিলেন। সরু সুতোর মতো মোম দিয়ে কচ্ছপের ছাঁচের পিঠে নকশা করলেন। জ্যান্ত কচ্ছপের পিঠে যেমন ছোপ দেখা যায় তার একটা ছাঁদ। মোম দিয়ে চোখ তৈরি করলেন। ছাঁচের নকশার জন্য বিভিন্ন আকার লাগে। গোল, তিন কোণা। শিল্পী প্রথমে সেই কেন্দু কাঠের টুকরো দিয়ে মোম পিষে লম্বা, চ্যাপ্টা করে নেন। তার পর মাপ অনুযায়ী কেটে নেন। কেন্দু কাঠের টুকরো দিয়ে মোম পেষাইয়ের পদ্ধতিটা বাবালা আর ইন্দ্রর চেনা লেগেছিল। ওদের কথায়, সোনার কাজে যে দলনা মেশিন ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে এর মিল রয়েছে। সেটি যন্ত্র, ডোকরার দলনা কেঠো। ... ...
মুম্বাই এটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। মার্চের শেষ হপ্তাতেও পজিটিভ কেস পাওয়া যাচ্ছিল কেবল উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত এলাকাগুলিতে। হয় তারা বিদেশ প্রত্যাগত বা বিদেশ থেকে আসা কারো সংস্পর্শদোষে দুষ্ট। কিন্তু এই একমাস বাদে ছবিটা সম্পূর্ণ পালটে গেছে। পশ এলাকা গুলিতে রোগী ক্রমশ কম, গরীব বেশি পজিটিভ। এখন ধারাভিতে ৩৪৪, কিন্তু বড়মানুষদের ওয়ার্ডগুলি থেকে মাত্র ৬৫ টি কেস রিপোর্টেড হয়েছে। বস্তিগুলির ঘর ছোট, গাদাগাদি বেশি, জল কম, কমন টয়লেট। করোনার মহা স্ফূর্তি। পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ যে BMC পুলিশকে বেছে বেছে বস্তিগুলিকে সিল করে দিতে বলেছে। আমি /আপনি হলে বাড়ি ফেরবার জন্য মরিয়া হয়ে পড়তাম না ? বসে থাকতাম কবে রাজ্য কেন্দ্রের নির্দেশে নোডাল অথরিটি গড়ে আটকে পড়াদের লিস্ট বানাবে, সেইজন্য ? ... ...
অবশ্য চায়ের অর্ডারে এখন আর তার কোনো আফশোস নেই৷ অবাক হতে হয় এমন আইডিয়া দেখে, গরম চায়ের সাথে চমকপ্রদ গল্প পরিবেশনা যেন চোখের সামনে অভিনীত কোনো দৃশ্য৷ একটাই আক্ষেপ, গল্পটা বেশ ছোট৷ সব কিছু নিখুঁতভাবে শেষ হবার আগেই যেন মঞ্চে পর্দা পড়ে গেল। অনেকটা যেন সেই অণুগল্পের মতো। ... ...
১৯৮৯ সালে পিনোচেতের একনায়কতন্ত্রে দাঁড়ি টানার পর চিলি দেখেছে গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের মেলবন্ধন। কারণ একেবারে সহজ। পিনোচেত রাজত্বে বড়লোক গরিবের যে পাঁচিল, তা তো আর একদিনে ভাঙার কথা না। তাই গণতন্ত্র যেমন বৃষ্টিধারার মত সবার মাথায় পড়ল, তেমনভাবে কিন্তু দেশের সম্পদ চটজলদি জনগণের মধ্যে ভাগ হল না। ... ...
মালতীর বাড়ীতে এক তুতো দিদির বিয়ে। বিয়ে বাড়ীর লাখো কথা, হট্টগোল, খাওয়া-দাওয়া, আত্মীয়-কুটুম সে এক এলাহি ব্যাপার! কিন্তু সব ছেড়ে মালতীর চোখ পড়ল দুটো জিনিসে। প্রথমতঃ বিয়ের সব দায়িত্ব দিদির বাবা-মা’র অথচ বিয়ের কার্ডটি বাড়ীর এক অনুপস্থিত দাদুর ( বাবার জ্যাঠামশায়ের ) নামে। আশ্চর্য এই কারণে যে যৌথ পরিবার হলেও নাহয় কথা ছিল – কিন্তু সেসবের পাট চুকেছে বহুদিন আগে। এখন সব যার যার নিজের সংসার। তাই দিদির রোজকার খাওয়া-ঘুম-পড়াশোনার দুনিয়ায় তিনি কোথায়? অথচ এটাই নাকি নিয়ম! আর সেই প্রসঙ্গে শোনা গেল, দিদিকে সম্প্রদান করবেন দিদিরই আরেক প্রবাসী জ্যেঠু। এ তো আরও বড় অনুপপত্তি! ... ...
আগে ঈদ মানেই ছিলো নতুন জামার মোহ। পাড়ার কার জামাটা সবথেকে সুন্দর তার কম্পিটিশন। রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই সন্ধ্যে বেলায় নিউয়ের আবদার শুরু হতো... আম্মু আমরা কবে ঈদের বাজার করবো? সবার জামা হয়ে গেলো আমাদের এখনো হয়নি। আম্মু বলতো আগে আগে জামা কিনে নিলে সবাই দেখে ফেলবে তাই একটু দেরী করেই কিনতে হয় মা। কিন্তু এখন বুঝি, আম্মু আসলে ছোটো শিশুদের বুঝতে দেয়নি এখন টাকাপয়সার টানাটানি, আব্বুর হাতে টাকা না আসলে কি করে জামা কিনে দেবে? এখন ভাবি আমরা কি স্বার্থপর ছিলাম তখন। কখনও ভাবিনি আব্বু আম্মু ঈদে নতুন কি জামা কিনলো? নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আমার আম্মু তখন পুরোনো শাড়ীতেই ঈদ কাটাচ্ছে কিংবা খুব বেশি হলে একটা সূতির ছাপা শাড়ী। আব্বু বেচারার তো কিনে দেওয়ার কেউ ছিলো না। নিজের জন্য বোধহয় ঈদে কিছু কিনতোও না। এখন আমার আব্বু আম্মু দুজনকেই আমরা দুইবোন নতুন জামাকাপড় কিনে দিই... কিন্তু সব জিনিষের একটা বয়স থাকে । আমার আম্মু আজকে আর হয়তো নতুন চুড়ি বা শাড়ী দেখে উচ্ছ্বসিত হবেনা যতটা আজ থেকে কুড়ি বছর আগে হতে পারতো! ... ...
এমনকি মহামারী-জনিত সম্পূর্ণ অভূত পূর্ব সংকট পরিস্থিতিতেও পশ্চিমবংগে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে এক্তিয়ার প্রশ্নে রাজনৈতিক কুনাট্য ঘটেছে , এবং ঘটে চলেছে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমর্থক, স্থূল অর্থে আত্মপ্রচার এ আগ্রহী রাজ্যপালের কোন নিন্দাই যথেষ্ট না, এবং রাজ্য সরকার গুলোর ঘাড়ে সমস্ত কাজ ও নিন্দার ভার দেওয়ার পরিচিত কেন্দ্রীয় পরিকল্পনাটিও নতুন না। একই সংগে রাজ্য সরকারের সং্ক্রমণ এর তথ্য সংক্রান্ত বিষয়ে অযাচিত নিয়ন্ত্রন অবিশ্বাস্য মুর্খামি মাত্র। কিন্তু এই প্রসংগে মেডিয়ার ভূমিকা বা সংবাদ গ্রাহক হিসেবে আমাদের ভূমিকাটিকে কি একটু আয়নার সামনে দাঁড় করানো উচিত? গণতন্ত্রে ক্ষমতার চাপান উতোর এর নাটকীয়তার বিবরণ এবং চর্চা কি আমাদের সত্যিই কোন কাজে লাগছে? ... ...
"স্টিফেন হকিং এর কোনো বই পড়তে গেলেই বোঝা যায় যে উনি একজন দুর্দান্ত শিক্ষক। ওঁর ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম পড়তে গিয়েই সেই অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। কোনো জটিলতম বিজ্ঞানের তত্বকে সহজভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা,সরস পরিবেশন এবং অন্তর্দৃষ্টি—এসবই তাঁর সম্পদ। ্মৃত্যুর আগে লিখিত সর্বশেষ বই ব্রিফ আনসারস টু দ্য বিগ কোয়েশ্চেনসও তার ব্যতিক্রম নয়। দু একটি দুরূহতম জায়গা ছাড়া প্রায় সবটাই সাধারণ পাঠকের বোধগম্যতার ভিতর নিয়ে আসতে পারেন তিনি। সাধে কি আর ব্রিফ হিস্ট্রি বেস্ট সেলার হয়েছিল।" পড়লেন সন্দীপন মজুমদার। ... ...
মিয়া কোতু। আফ্রিকার মোজাম্বিকে বংশানুক্রমে বসবাসকারী শ্বেতাঙ্গ পোর্তুগিজ। পোর্তুগিজ ভাষার শ্রেষ্ঠ আধুনিক সাহিত্যিকদের অন্যতম। পোর্তুগাল ও ব্রাজিলের যুগ্ম ভাবে দেওয়া পোর্তুগিজ সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরস্কার কাময়েঁশ (২০১৩) সহ বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত। অ্যানিমিস্ট রিয়ালিজম শৈলীর লেখক। তাঁর সেরা উপন্যাস ত্যারা সুনাম্বুলা (স্বপ্নচারী দেশ)। ১৯৭৫-এ মোজাম্বিকের স্বাধীনতা ও পরবর্তী কালের রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের প্রেক্ষিতে লেখা এক নিরন্তর খোঁজের কাহিনি। পড়লেন পোর্তুগিজ ভাষার শিক্ষক ও তরজমাকার ঋতা রায়। ... ...