সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী সুইডেনের নোবেল কমিটি এই সর্বাত্মক নোবেল বিরোধিতায় খুবই বিব্রত। নোবেলজয়ীও ভারতীয়ত্বের এই হঠাৎ উত্থানে এমআইটিতে বসে থরথর করে কাঁপছেন। আর দ্বিতীয়বার নোবেল পাওয়ার সাহস তাঁর হবেনা, এমনকি একবার পাওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়েও নিতে পারেন বলেই ওয়াকিবহাল মহল আশাবাদী। ... ...
মহামন্ত্রী বেজায় সমস্যায়, কারণ তাঁহার নাকি বডি-শেমিং হইয়াছে। কলকাতার কোন এক পার্ক-সার্কাসে ফচকে ছোঁড়ারা তাঁর নামে কুশপুতুল জ্বালাইয়াছে। তাহাতে ক্ষতি নাই, ও তো কত লোকেই করিয়া থাকে। কিন্তু ব্যাটারা নাকি পুতুলটির ভিতরে পাশবালিশ পুরিয়া তাহার উপর কাগজ সাঁটাইয়া দিয়াছিলঃ মোটার ভুঁড়ি করব লিক / আমরা হলাম আঞ্চলিক। ... ...
রামচন্দ্র জানতেন, এবং বুঝতেন, জম্বুদ্বীপে পাকাপাকি সাম্রাজ্য বিস্তার করতে গেলে, পপুলার সাপোর্ট তাঁর দরকার। শুধুমাত্র গায়ের জোরে এই আসমুদ্র-হিমাচল দাবিয়ে রাখা বেশিদিন সম্ভব নয়। আজ লঙ্কা জয়ের দরকার হয়ে পড়েছে কারণ এই অযোধ্যাই হবে তাঁদের আর্য-সাম্রাজ্যের পরীক্ষাগার। কিন্তু দশরথ বা গৌতম মুনির মতন ওটাকেই মূল লক্ষ্য বলে রামচন্দ্র ধরে নেননি। কারণ কেউ জানুক বা না জানুক, এটা ঘটনা যে আর্যত্ব দিয়ে রামচন্দ্রের কিছু এসে যায় না। ওটা ততদিন-ই দরকার, যতদিন ক্ষমতার পক্ষে কাজ করবে। রামচন্দ্র বোঝেন ব্যবসা। ক্ষমতার ব্যবসা। যে বা যা তাঁকে ক্ষমতা এনে দেবে, তিনি তাকেই ব্যবহার করবেন। যেমন, এই মুহূর্তে, অযোধ্যার ক্ষমতায় নিজের গদি সুনিশ্চিত করতে হলে, লঙ্কা অভিযান দরকারি, আর তাই ব্যবহার্য। ... ...
এক যে ছিল পাখি। সে ছিল মূর্খ ও স্বাধীন। গান গাহিত, শাস্ত্র পড়িত না। লাফাইত, উড়িত, জানিত না কায়দাকানুন কাকে বলে, কাকে বলে গণতন্ত্র। রাজা বলিলেন, 'এমন পাখি তো কাজে লাগে না, অথচ বনের ফল খাইয়া রাজহাটে ফলের বাজারে লোকসান ঘটায়।' গুজরাতি মহামন্ত্রীকে ডাকিয়া বলিলেন, 'কখন পাকিস্তানিরা আসিয়া কী মন্ত্র দেবে ঠিক নাই। তার আগেই পাখিটাকে গণতন্ত্র শিক্ষা দাও'। রাজার ভাগিনাদের উপর ভার পড়িল পাখিটাকে শিক্ষা দিবার। ... ...
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কেন? প্রধানমন্ত্রী জানালেন, এতদিন ধরে এমনিই রাজ্যপালের শাসন চলছে। সেটা সিধে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গেই সম্পর্কিত। এর ফলে নানা উপকার হচ্ছে। ঝুলে থাকা প্রকল্প কাজে লাগছে। আইআইটি আইআইএম সব হুহু করে এগোচ্ছে। এবার সিধে কেন্দ্র-সরকার দায়িত্ব নিয়ে বাকিটাও ঝপাঝপ নামিয়ে ফেলবে। পরিবারতন্ত্র, বিচ্ছিন্নতাবাদ, সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতির যে জোয়াল মানুষের ঘাড়ে চেপে বসে ছিল, তা থেকে কাশ্মীরি জনতার এবার চিরমুক্তি। কাশ্মীরি জনতা এই ব্যবস্থা চেয়েছিল কিনা, দুম করে কেন্দ্রীয় সরকার এমন কাটাছেঁড়া করে ফেলতে পারে কিনা, সে নিয়ে অবশ্য তিনি কিছু বলেননি। একটি কথা বলেছেন, যে, এম-এল-এ, মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী সবই আগের মতই থাকবে। কিছুই বদলাবেনা। তাহলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আর রাজ্য আলাদা কীসে? সব রাজ্যকে ধরে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করে দিলেই তো হয়। প্রধানমন্ত্রী সেই নিয়ে কিছু বলেননি। কে জানে হয়তো পরিকল্পনা তেমনই। তবে এও বলেছেন, যে কাশ্মীরকে (লাদাখকে নয়), আবার তিনি রাজ্য বানিয়েও দিতে পারেন। যেমন ঝপ করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বানিয়ে দিতে পারেন, তেমনই। কী ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে বলেননি, তোমার বাঁচা-মরা আমার হাতে, আমি এমন শক্তিমান। আমার প্রচন্ড অভিমান। ... ...
ভারত-সরকার আয়োজিত 'দেশপ্রেমের গল্প লেখ' প্রতিযোগিতায় পরীক্ষার ফলাফল গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। আদিত্যনাথ ফার্স্ট হয়েছেন। একাই ৪০০ জঙ্গী মেরেছেন। দ্বিতীয় স্থানাধিকারী অর্ণব গোস্বামী ও অন্যান্য ভারতীয় মিডিয়া। তাঁরা মেরেছেন ৩৫০। তৃতীয় স্থানে অমিত শাহ। সভাপতি হয়েও ২৫০ র উপরে উঠতে পারেননি। ওদিকে সাংসদ আলুওয়ালিয়া বলেছেন জঙ্গী মারতে যাওয়াই হয়নি, ফাঁকা মাঠে বোম ফেলে ব্রহ্মতেজ দেখানো হয়েছে মাত্র। তিনি পেয়েছেন সান্ত্বনা পুরষ্কার। ... ...
না গুরুর বইয়ের কথা হচ্ছে না, সে তো না কিনলে আপনার ভদ্রসমাজে মুখ দেখানোর উপায় থাকবেনা। কিন্তু আর কী কিনবেন ঠিক করতে পারছেন না? বন্ধুবান্ধব নেট ঘেঁটে বইয়ের লিস্টি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে, আর আপনি ভ্যাবলার মতো হাঁ করে বসে আছেন? ঘাবড়াবেননা। কেবলমাত ডজনখানেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জেনে নিন, আপনার উপযুক্ত বই কোনটি। ... ...
দাদু মারা যাবার আগে অবধি মহালয়া মানে ভোরবেলা উঠে রেডিও চালিয়ে মা বাপির ঘুম ভাঙানো, তারপর টিভিতে আরেকপ্রস্থ দুর্গা অসুরের লড়াই, তার-ও-পর ছুটির আমেজে ... ...
এইভাবে হাজার লেখালিখি ও ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং-উত্তর চক্রাকারে একই যুক্তির বারংবার সম্মুখীন হয়ে চলার হতাশাতেই অর্জুনপুত্র অভিমন্যু নিজের কুরুক্ষেত্র অ্যাকাউন্টটি ডিঅ্যাক্টিভেট করতে বাধ্য হয়। তার পর মনের দুঃখে সে অধুনা হরিয়ানার আমিন গ্রামের কাছে দুর্গ বানিয়ে একা একা থাকতে শুরু করে। আর কোনোদিন সে কোনো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে প্রোফাইল খোলেনি। ... ...
জগৎ পারাবারের তীরে বিক্রম জগৎ পারাবারের তীরে লেগেছে কী ঝামেলা জুনের শেষ, জুলাই মাস ঝিলিক মরে স্বল্পবাস বাজিল বুঝি শীতের রাতে নিবিড় ভুভুজেলা ... ...
এইতো দিকে দিকে লোকেরা ওঁৎ পেতে দেখছে চোখ ফেঁড়ে বিশ্বকাপ পূর্ব আভাসে ও বিশেষ মতামতে বসছে নড়েচড়ে রক্তচাপ নিরীহ কবিবর থাকেনা সাতে পাঁচে ঘোরে না মাঠে ঘাটে দিন বেবাক ... ...
বিষভাবে-পীড়িত একদল ভগবতী-অন্বেষী সম্প্রতি দূরদর্শনে-সম্প্রসারিত-ফুটবল-ম্যাচ ও সাস-বহু-ধারাবাহিক সম্বন্ধে একটি দীর্ঘ তুলনামূলক গবেষণা প্রকাশ করিয়াছেন এই আখ্যানে তাঁহাদের সিদ্ধান্তেরই একটি ব্যাখ্যান পেশ করা হইল| লিখিবার সুবিধার্থে এই রচনায় ফুটবল ম্যাচকে 'ফু:' ও সাস-বহু-ধারাবাহিককে 'সাবধা' রূপে সংক্ষেপিত করা হইবে । ... ...
বীরেনবাবু ভূগোল পড়াইতেন। তিনি ম্যাপ লইয়া ক্লাসে আসিতেন। দেওয়ালে ম্যাপ টাঙ্গাইয়া তিনি একে একে ছাত্রদের ডাকিতেন এবং কোনো এক বিশেষ স্থান, নদী, রাজধানী, পর্বত ইত্যাদি খুঁজিতে বলিতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছাত্ররা ব্যর্থ হইত। তখন বীরেনবাবু সস্নেহে সেই বিফল ছাত্রকে কাছে ডাকিতেন এবং শুধাইতেনঃ 'ফুচকা খাইবি?'বলাই বাহুল্য, ভীরু ছাত্র মাথা নাড়িত। অতপর, বীরেনবাবু সেই ছাত্রের জুলফিদ্বয় দুই হাতের আঙুলে ধরিয়া উপরের দিকে আকর্ষণ করিতেন। তখন, সেই অসহায় বালক দুই পায়ের আঙগুলে ভর দিয়া মাধ্যাকর্ষণ অগ্রাহ্য করিয়া দন্ডায়মান হইত। নীচে নামিলে অধিক ব্যথার উদ্রেক হইবে। জুলফির আকর্ষণে পদযুগল মাটি ছাড়িয়া উপরে যাইলে অধিকতর যাতনা! এইরূপ ত্রিশঙ্কু অবস্থায় শাস্তিপ্রাপ্ত বালক ত্রাহি ত্রাহি রব ছাড়িত। ইহাতে হাস্যরসের উপাদান থাকিলেও সহপাঠীরা ইহাতে আদৌ কৌতূক পাইত না। ঘুঁটে পুড়িয়া যাইত, কিন্তু গোবর হাসিত না। শরতের আমলকী বনের ন্যায় বালকদিগের বুক আশংকায় দুরুদুরু করিত। না জানি কখন কাহার ডাক পড়ে? কাস্পিয়ান সাগর বা রাইন নদী চিহ্নিত না করিতে পারিলে অদৃষ্টে বীরেনবাবুর ফুচকা রহিয়াছে। ... ...
হিন্দুস্তানবাসী এই অধার্মিক শাসনকে সহজে মেনে নেয়নি। বাবর মারা যেতেই আর এক ধার্মিক বীর সুর শাহ দেহলি দখল করে নেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি তৈরি করেন হিন্দুস্তানের প্রথম হাইওয়ে, জিটি রোড। এই প্রকল্পের আদলেই পরবর্তীতে স্বর্ণ চতুর্ভুজ সড়ক মহাযোজনার সূত্রপাত হয়। দুঃখের কথা এই, যে, এই হিন্দু মহাপুরুষ বেশিদিন রাজত্ব করতে পারেননি। কালিঞ্জর দুর্গের কাছে সন্ত্রাসবাদীরা তাঁকে গান পাউডার দেগে হত্যা করে। পৃথিবীতে সেই প্রথম সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ। রাজস্থানের মরুভূমির এক মরুদ্যানের কাছে এই হামলা হয়েছিল বলে এর নাম ছিল ওয়েসিস অ্যাটাক। নাম বদলে এখন একেই বলা হয় আইসিস আক্রমণ। আইসিসের আক্রমণের প্রথম শহীদ সুর শাহ অযোধ্যার মন্দির পুনরুদ্ধার করতে পারেননি। কিন্তু খুবই রামভক্ত ছিলেন বলে তাঁর স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয় সাসারামে। সুর শাহের বংশধররাও গুজরাতে চলে যান। মোদী বংশের মত শাহ বংশও সেখানে খুব বিখ্যাত হয়। পরবর্তীকালে এই দুই বংশধররাই বাবরি মসজিদ ভেঙে গুঁড়িয়ে সমস্ত পরাজয়ের শোধ তোলেন। গুজরাতি এবং হিন্দি ভাষায় লিখিত 'বাল অমিত' গ্রন্থে এই দিগ্বিজয়ের সম্পূর্ণ বিবরণ পাওয়া যায়। ... ...
কিন্তু ঘটা করে এই একটা দিন কীসের উদযাপন? কেন উদযাপন? গত এক বছরে প্রায় প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে সকালটা তেতো হয়েছে এক বা একাধিক ধর্ষণের খবরে। চার থেকে আশি - কেউ তো বাদ নেই 'ধর্ষিতা' পরিচয়ে শিরোনাম হতে। হিসেব বলছে নাকি এক দিল্লিতেই গড়ে দিনে পাঁচটা ধর্ষণের 'কেস' পুলিশের কাছে নথিভুক্ত হয়। তাহলে 'কিন্তু-তবু-যদি-লোকে কী বলবে'র গেরোয় হাঁসফাঁস করা বাকি 'কেস'গুলোর খতিয়ান কেমন, ভাবুন তো! ধর্ষণ- শারীরিক নিগ্রহ আর ভারতীয় উপমহাদেশের যা বিয়ের কনসেপ্ট অর্থাৎ সম্পূর্ণ অচেনা (হালে অবিশ্যি ফোনে দু'দন্ড বাক্য বিনিময়ের পর বাপ-মায়ের দ্বারা বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক এর একখান গালভরা নাম দেওয়া গেছে : 'অ্যারেন্জ্ঞড কাম লাভ ম্যারেজ', এক্কেরে আচ্ছেদিন মার্কা ব্যাপারস্যাপার আর কী। রাজা বলেছেন দিন এসছে, উহাকে তোমরা, নালায়ক প্রজাগণ, সোচ্চারে বল 'আচ্ছে দিন' এবং ভাব, ভাবা প্র্যাকটিস কর যে এর থেকে আচ্ছেদিন তুমি জীবনেও দেখনি, দেখবে ঠিক love হবে, লাভ এই লাভ তো এটাও সেরকমই একখান ব্যাপার) একজনের গলায় সোনা-দানা-খাট-পালঙ্ক (ইহাদের পণ বলে না, ইহারা হল গিয়ে 'আপনার মেয়েকে সাজিয়ে গুছিয়ে দেবেন' এর কড়ি আঙুলে ফেলা ক্যারিকেচার)নিয়ে ঝুলে পড়ার পর শারীরিক-মানসিক ট্রমার রুটিনে এই একদিন আলতো শো-পিস পরানোর নামই কি উদযাপন?প্রথম মহিলা মহাকাশচারী, মহিলা রাষ্ট্রপতি, মহিলা পর্বতারোহী...এসব সাধারণ জ্ঞানের অসাধারণ মেয়েদের কথা তো সবার অল্পবিস্তর জানা অতএব অজানা কয়েকজন অতি সাধারণ মেয়ের কথাই না'হয় এখন বললাম। ... ...
সরাসরি শান্তিনিকেতন থেকে গুরুর প্রতিবেদন। ... ...
শীতের বাজারে পার্টি করবেন? আলুর চিপস আর নরম পানীয়? সাবধান। ওসব কিন্তু মোটা হবার মহৌষধ। বিষও বটে। নরম পানীয় এমন বস্তু, তা দিয়ে ঘষলে নোংরা টয়লেটও নাকি ঝকঝক করে। তবে কি কেবল ফাস্টফুড আর গরম পানীয়?নাঃ একদম না। অতিরিক্ত মদ্যপানে লিভারে সিরোসিস হবে। আর ফাস্টফুড যেমন অখাদ্য তেমনই অস্বাস্থ্যকর। দুমাসেই ফুলে ঢোল হবেন, শরীরে বাসা বাঁধবে হরেক রকম অসুখ-বিসুখ... ... ...
আয়োজনের শেষ নেই। হাইপের চোটে অস্থির। লাখে লাখে লোক। কার্নিভ্যালের থেকেও বেশি ভিড়, বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালকেও বলে কয়ে টেক্কা দেবে। পায়ের চাপে যা ধুলো ওড়ে, তা শারজার মরুঝড়ের কাছাকাছি...এ বস্তু দেখলে চোখ কপালে না ওঠাই অস্বাভাবিক ... ...
শুধু নিজের বই নিজে ছাপেনা, শুধুই নিজেদের গান নিজে গায়না, শুধু নিজের বই নিজে বেচেনা, নিজেরাই সমালোচনা করে, আহ্লাদে আটখানা হয়, গাল দিয়ে ধুইয়ে দেয়। নিজেরাই ফসল ফলায় নিজেরাই খায়, নিজেদের বর্জ্য নিজেরাই সার হিসেবে ব্যবহার করে আবার। এক কথায় সম্পূর্ণ স্বনির্ভর, ইমপোর্ট এক্সপোর্টের বালাই নেই। জুতো সেলাই থেকে ফেসবুক পাঠ পর্যন্ত এভাবে একঘাটে টেনে আনার মতো ক্ষমতাবান, এত উদ্ভট বাস্তুতন্ত্র বাংলায় আর কখনও হয়নি। ... ...
হিন্দি সিনেমার গান শুনে বাঙালি কেন উলুতপুলুত হয়, আপাতদৃষ্টিতে বোঝা মুশকিল। যে ঘরানার গানের শ্রেষ্ঠ লিরিক নাকি 'মেরা কুছ সামান তুমহারে পাস পড়া হ্যায়', অর্থাৎ কিনা 'আমার কিছু মালপত্তর তোমার কাছে পড়ে আছে' আর দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ লিরিক তর্কযোগ্যভাবে 'বিড়ি জ্বালাইলে', অর্থাৎ কিনা 'সিঁড়ির নিচে বিড়ির দোকান', সে গান শুনলে এমনিই ভদ্রজনের মাথা হেঁট হয়ে যাবার কথা। হিন্দি বলয়ের কথা আলাদা, ওদের এরকমই কপাল। ইউপি-বিহারে আধুনিক কালে কোনো জীবনানন্দ জন্মাননি। আর অতীতের গৌরব যা ছিল, সেসব স্টিমরোলার চালিয়ে কবেই ফ্ল্যাট করে দেওয়া হয়েছে। ব্রজবুলি বা মৈথিলির যে মাধুর্য তাকে র্যাঁদা মেরে বাতিল করেই আধুনিক হিন্দুস্তানির বাড়বাড়ন্ত। আর লক্ষ্ণৌ এর যে ডায়লেক্ট গায়ে -কাঁটা দেওয়া ঠুংরি গজল উৎপাদন করেছে একটানা, বাহাদুর শার সঙ্গে তাকে প্রাথমিকভাবে বার্মায় নির্বাসন দেওয়া হয়েছিল। দূরদর্শনের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম এসে তৎসম হিন্দুস্তানি দিয়ে কফিনে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিয়েছে। অভাগা হিন্দিবলয়ের অধিবাসীদের দুর্ভাগ্যে তাই খোঁটা দিয়ে লাভ নেই। সবই কপাল। কিন্তু বাঙালিরা কেন "আমার কিছু মালপত্তর (ওহো আহা), তোমার কাছে পড়ে আছে (ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ)" বলে আহা উহু করে বোঝা মুশকিল। ... ...