শুধু অপহরণ নয়, দিগ্বিদিক ছেয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসেও। চারিদিকে এখন সন্ত্রাসের বিষবাষ্প, সূর্যের সোনারোদ ঢেকে যাচ্ছে সন্ত্রাসবাদের বিতিকিচ্ছিরি পলিউশনের মেঘে। উত্তরবঙ্গে গন্ডার খুন? সন্ত্রাসবাদীদের অপকীর্তি। চিড়িয়াখানায় বিরল প্রজাতির উটপাখির ডিম উধাও হয়েছিল দশ বছর আগে? আগে জানা যায়নি, সন্ত্রাসবাদীরা করেছিল। দীঘায় সমুদ্রের ধারে তিন বাক্স অব্যবহৃত কন্ডোম পাওয়া গেছে? সন্ত্রাসবাদ ছাড়া আবার কি? দিনে দুপুরে ইস্টিশানে মেয়ে অ্যাথলিট ইভটিজিং এর বিরুদ্ধে গলা তুলতে গিয়ে রামধোলাই খেয়েছে? ... ...
চাদ্দিকে এখন অপহরণ অপহরণ হাওয়া। লোকে গপগপ করে চা আর লেড়ো বিস্কুট সহযোগে সাতসকালে গিলছে তাজা নিউজপ্রিন্ট,খবরের কাগজের পোয়াবারো, হাইটেক তদন্ত করে শিগগিরিই ভারত্ন পুরষ্কার পেতে চলেছে বঙ্গের পুলিশ। পাব্লিকেরও মস্তির শেষ নেই, এইফাঁকে শিখে নেওয়া যাচ্ছে অপহরণের নতুন নতুন কায়দা, শার্লক হোম্স টোম্স ছাড়ুন, স্বপনকুমার, হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, স্বয়ং স্বপনকুমার অব্দি গোয়েন্দা গপ্পে এইরকম অপহরণের কাহিনী লিখতে নির্ঘাত ভির্মি খেতেন। ... ...
গরু দুই প্রকার। যে সকল গরুরা গোয়ালে থাকে তাদের গৃহপালিত গরু বলে। আর যারা বনে থাকে তাদের বলে বন্য গরু। যথা বুনো মোষ। বুনো গরুরা খুবই অসভ্য। অন্যদিকে গৃহপালিত গরুরা খুব শান্ত প্রকৃতির। তারা সাতে পাঁচে থাকেনা। তারা খায় দায় জাবর কাটে আর দুধ দেয়। গৃহপালিত গরুরা সমাজবদ্ধ জীব, গৃহপালিত গোরুর পালকে গোপাল বলা হয়। প্রতিটি গোপালেরই একজন করে রাখাল থাকে। তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়। কোনো কোনো গোয়ালে অবশ্য দুষ্ট রাখালও দেখা যায়। দুষ্ট রাখালদের নিয়ে অনেক বই লেখা হয়েছে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় এ বিষয়ে পথীকৃত। দুষ্ট রাখাল ও শিষ্ট গোপালের দ্বান্দ্বিক সম্পর্কের সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যাপক শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়ের "গোপাল রাখাল দ্বন্দ্বসমাস" বইটিও উল্লেখযোগ্য। ... ...
সংবাদে প্রকাশ, যে মেয়েদের হোস্টেলে জনৈকা ছাত্রী তার পুরুষ বন্ধুকে নিয়ে প্রবেশ করার অপরাধে হোস্টেল এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির সুপ্রাচীন জীর্ণ ভবনে যেহেতু ঐতিহ্যপূর্ণ বাস্তুঘুঘুদের বাসস্থান, অতএব, আমরা এই মূহুর্তে ভুলে যাব, যে ছেলে এবং মেয়েদের আলাদা খোঁয়াড়ে ভরে রাখাটা প্রাগৈতিহাসিক একটি প্রথায় রূপান্তরিত হতে চলেছে সারা বিশ্ব জুড়ে, ভুলে যাব, যে এই অ্যান্টি ব্যারাকিং মুভমেন্ট ... ...
চাদ্দিকে এখন অপহরণ অপহরণ হাওয়া। লোকে গপগপ করে চা আর লেড়ো বিস্কুট সহযোগে সাতসকালে গিলছে তাজা নিউজপ্রিন্ট,খবরের কাগজের পোয়াবারো, হাইটেক তদন্ত করে শিগগিরিই ভারত্ন পুরষ্কার পেতে চলেছে বঙ্গের পুলিশ। পাব্লিকেরও মস্তির শেষ নেই, এইফাঁকে শিখে নেওয়া যাচ্ছে অপহরণের নতুন নতুন কায়দা, শার্লক হোম্স টোম্স ছাড়ুন, স্বপনকুমার, হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, স্বয়ং স্বপনকুমার অব্দি গোয়েন্দা গপ্পে এইরকম অপহরণের কাহিনী লিখতে নির্ঘাত ভির্মি খেতেন। ... ...
প্রথমে অযোধ্যা তার পরে লন্ডন এবং সব শেষে বান্দোয়ানে উপর্যুপরি বোমাবিস্ফোরণে যারা বিস্মিত হয়েছেন, যাঁরা শখের গোয়েন্দাগিরি করে এই উপর্যুপরি বিস্ফোরণের কার্যকারণ সন্ধানে মাথার ঘাম পায়ে ফেলছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে, যে এগুলি মূলত: প্রাকৃতিক ঘটনা। এবং প্রতিটি প্রাকৃতিক ঘটনারই কিছু বিধিদত্ত সময় থাকে। শীতকালে শীত পড়ে বর্ষাকালে বৃষ্টি। ভাদ্রমাসে কুকুররা পথে নামে, আর স্বরস্বতীপুজোয় ইশকুলের ছোঁড়া-ছুঁড়িরা। একমাত্র পূজাবার্ষিকী প্রসবের সময়েই কবি গর্ভযন্ত্রণায় ছটফট করেন, অন্যান্য সময়ে নিয়ম করে থলে হাতে বাজারে গিয়ে বেগুনের দরদাম করে থাকেন। সুধীজন জেনে খুশি হবেন যে এগুলি নিছকই প্রকৃতির নিয়ম। ... ...
রক ভিজে গেছে বলে চায়ের দোকানে বর্ষার দিনে গুলতানি করছেন? পাড়ার মোড়ে হেজিয়ে হেজিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন? পাশের বাড়ির মেয়ের স্কার্টের দৈর্ঘ্য নিয়ে আলোচনায় অরুচি এসে গেছে? জীবনে উত্তেজনার নতুনতর খোরাক খুঁজছেন? হাতে প্রচুর সময়, কিন্তু তা দিয়ে কি করবেন জানা নেই? কিচ্ছু ঘাবড়াবেননা। ফোকটে দেশসেবা করার মোক্ষম সুযোগ এখন আপনার সামনে। দুনিয়াময় চতুর্দিকে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে ভাইরাস,ব্যাকটেরিয়া, ম্যালেরিয়ার মশা, প্লেগের ইঁদুর, আর গুচ্ছের সন্ত্রাসবাদী। ছারপোকা টিপে মারার দক্ষতায় ধরুন আর মারুন। সময়ও কাটবে সন্ত্রাসবাদও ঢিট হবে আর দেশসেবক হিসাবে আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে পৃথিবীর ইতিহাসে। ... ...
তবে যে শুনিয়াছিলাম পুলিশ হইল শান্তিরক্ষক? তবে যে শুনিয়াছিলাম উহাদের কাজ সুকঠিন? তবে যে শুনিয়াছিলাম উহাদের অস্ত্র ব্যবহারের নির্দিষ্ট বিধি আছে? ইহাও শুনিয়াছিলাম যে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হইলেই আত্মরক্ষার্থে আক্রমনকারীকে আঘাত করিতে পারে, কিন্তু শান্তিরক্ষকদের, এমনকি আক্রান্ত হইলেও, আত্মরক্ষার্থে অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম নাই? ভুল শুনিয়াছিলাম সন্দেহ নাই। কিভাবে জানিলাম? পুলিশকর্তার বাণী শ্রবণ করিয়া। সংবাদে প্রকাশ লবণ হ্রদ উপনগরীতে একদল উন্মত্ত আন্দোলনকারী বিদ্যুৎ বিভাগের হেডাপিস আক্রমণ করিলে শান্তিরক্ষকরা গুলি চালায়। ... ...
এ দেশের মায়ের নাম নদী, বাপের নাম গদি। যুগে যুগে চারণ কবি গান গেয়েছেন - "রাম তেরি গঙ্গা ময়লী হো গয়ি-ই-ই-ই-"" আর তাতে রামের বয়ে গেছে। তিনি কি আর গঙ্গার জলে কুলকুচি করতে যাবেন? "বাঙালী লেখক" সন্দীপন লিখেছিলেন দেশের সত্তর ভাগ লোক যে জল পান করে তাতে ওদের অন্তত: একবার ছোঁচাতে রাজি হওয়া উচিত - বা, এই রকম কিছু। ""বা-লে""র কথায় কান দিতে হলে অবশ্য মাথার দুদিকে দুটো কান থাকা আশু প্রয়োজন, আর কে না জানে গদিতে বসার প্রাথমিক শর্ত ও-দুটোকে প্রবেশদ্বারের বাইরে রেখে আসা? কিন্তু মাইরি, বেঁচে থাকা ক্যান্টার করে দিল গ্লোবালাইজেশন আর তার মাসতুতো ভাই প্রাইভেটাইজেশন। ... ...
তিনকাল গিয়ে দ্রোহকালে ঠেকে। মাথায় ঘোমটা দিতে গিয়ে পোঁদের কাপড় সরে যেতে দেখা । রেখো মা দাসেরে - ধুর শালা তোর দাস! দাস ক্যাপিটাল মায় গণতন্ত্র নামে জগন্নাথের হ্যদেশে চুনকি দিয়ে "কামলিস' দাদা বলে দিলে কিনা ভাই হবে রাজা! এসো জন বসো জন ধন্য ধন্য করি। তাও রক্ষে, বলে বসেনি,""আমি যখন ছোট ছিলুম রোমেল দাদার হাত ধরে যুদ্ধু করতে যেতুম''! একে রামে রক্ষে নেই সু¤গ্রীব দোসর। আবার আমাদের এই শান্তশিষ্ট পশ্চিমব® বসে ব্যারিকেড গড়ে তুলতে হত। জনগণ জনগণ করে চুলদাড়ি পাকিয়ে ঘাটে যাবার সময় হল বুঝি, কিন্তু তা বলে একি ভীমরতি । ... ...
টালিগঞ্জের নায়করা অফিস টাইমে মেট্রোরেলে চড়ে বিক্ষোভ দেখাতে গেছেন, তাঁদের জন্য মেট্রোরেলের চাট্টি কামরা বে আইনী ভাবে সংরক্ষিত ছিল, যাত্রীরা সেখানে উঠতে গেলে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি বলে যাঁরা বাজার গরম করার চেষ্টা করছেন, তাঁরা চক্রান্তকারী। জনমানসে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই তাঁদের একমাত্র কাজ। তাঁরা ভুলে গেছেন, নায়করা হলেন জাতির মুখ। ফিল্মে রোমান্স এবং অ্যাকশন করে তাঁরা জগৎ উদ্ধার করেন। একাই একশ জনের মহড়া নেন, পিটিয়ে দেশের শত্রুদের প্যান্টুল খুলে দেন, সোজা কথা? সত্যি কথা বলতে কি, তাজমহল, শচীন তেন্ডুলকার আর বলিউড ছাড়া দেশে আছেটা কি? পার্লামেন্ট আর রাষ্ট্রপতিভবন? ছো:। ... ...
বাপ-পরদাদা যখন মাতৃগর্ভে তারও আগে থেকে, আমরা আছি দাদা। সেই কবে সেকেন্দার কাকু যখন হেলেদুলে এসেছিল, আমরা লাইন দিয়ে পিছন পেতে দিয়েছি। ক্যাঁত শব্দে সীলমোহর প্রাপ্তি এবং হাতে হাতে শোধ - যেমন চলাও তেমনি চলি, যেমন বলাও তেমনি বলি। অথচ শালা ঐ বিশ্বাসঘাতক পুরু! হতচ্ছাড়া শুধু লাইনে এল না তা নয়, বলে বসলে কিনা, ""ঘুঘু দেখেছ ফাঁদ তো দেখনি! আমার মাটিতে গাড়ু হাতে বসতে এলে আমিও ক্যাঁতাব!'' অত:পর,-""গওয়া হ্যায়, চাঁদ তারে গওয়া হায়'' এবং কাকু শেষ অব্দি "বাপি বাড়ি যা' কেস হয়ে ফুটে গেল। কিন্তু আমরা তো আর ফুল নই যে ফুটে উঠে দোলে দোদুল দোলে। ... ...
সুতরাং, হে বীর, সাহস অবলম্বন কর। সংসার সমরাঙ্গণে যুদ্ধ কর প্রাণপণ। ¢কন্তু দোহাই তোমার, ¢নর্দলত্বের ঢ্যামনা¢ম ছেড়ে পরে নাও কোন এক দলীয় বর্ম। ব্যস, তারপরে, হে বীর, কোন শালা তোমায় ঠেকাবে? এখন হইতে তোমার সকল কর্ম পা¢র্ট অনুমো¢দত। যাও, চ¢রয়া খাও। জ¢ম লও, কারখানা বানাও, ফÔÉ¡ট বানাইয়া প্রমোটা¢র কর, রাع¡ অবরোধ কর, বন্ধ কর - যাহা ইচ্ছা কর, খা¢ল ¢নর্দলী ক¢রয়ো না। স্বাধীন ¢চন্তা ক¢রয়ো না। পা¢র্টকে অনুসরণ ক¢রও। মনে রা¢খয়ো পা¢র্ট ভুল করে না। নেত«ব«ন্দ ঈশ্বরের দূত। প্রভু তাহাদের ভুল ক¢রবার ক্ষমতা ¢দয়া প্রেরণ করেন নাই। ... ...
বাঁদরামির জ্ঞানের নির্মাণে আর একটি জায়গা ছিল মানুষের সত্তা বা এসেন্স বা লোগোসের খোঁজ। প্রশ্নটা পুরোনো - "মানুষ' বলতে আমরা কি বুঝি? মানুষের শাঁসটা কি আর খোসাটাই বা কি (এখানে অবশ্য ধরে নেওয়া হচ্ছে যে শাঁস আর খোসা আলাদা বিষয়)? এই প্রশ্নের জবাবে পশ্চিম একটা ভাবনার স্ট্রাকচার বানায় যার নাম ডুয়ালিজম বা দ্বিত্ত্ববাদ। অনেক ডুয়ালিস্ট মডেলের সাথে আমরা পরিচিত, যেমন পুরুষ/নারী, প্রকৃতি/সংস্কৃতি, পূর্ব/পশ্চিম, মন/শরীর, আমি/তুমি, সুস্থ/পাগল, শাঁস/খোসা ইত্যাদি। এবার "মানুষ' নামের তাত্ত্বিক সমস্যাতে ফেরা যাক। মানুষ একদিকে যেমন জৈবিক, প্রাকৃতিক আবার সে একইসাথে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিও বটে। এখন প্রশ্ন হল এই ডুয়ালিটিতে কোনটা শাঁস, কোনটা খোসা? পশ্চিম বাছাই করে আমাদের বলে দিয়েছে যে দুর্গামূর্তির খড়ের গোঁজের মত জৈবিক সত্তাটাই মানুষের এসেন্স আর মূর্তির ওপরের রংচং আসলে সংস্কৃতি। মানুষের প্রকৃতি আসলে জৈবিক, বায়লজিকাল। এই স্বত:সিদ্ধ থেকে তাই বলা যেতেই পারে যে যেহেতু বাঁদর মানুষের পূর্বপুরুষ, তার মধ্যেও সেই একই জৈবিক বৈশিষ্ট্য থাকবে। অর্থাৎ মানুষ আর বাঁদরের হার্ডওয়্যারটা একই, পার্থক্য শুধু সফটওয়্যারে। তাই বাঁদরামির গবেষণা পশ্চিমি সাহেব-মেমদের আত্মানুসন্ধানের চেষ্টা (গবেষণা করা ব্যাপারটা প্রাকৃতিক না সাংস্কৃতিক?)। ... ...
এই তো মানবাধিকার নিয়ে এত হইচইয়ের পরেও, দেশে-বিদেশের অনেক চাপের পরেও বিনায়ক সেনের মতো একজন হাই প্রোফাইল লোকের যাবজ্জীবন কারাদন্ড কি হয়নি? দেশে-বিদেশে প্রচার করে, ফিল্ম শো করে, সই সংগ্রহ করে, কোনো বাপের ব্যাটা সেসব আটকাতে পেরেছে? মানবাধিকার কর্মীদের সমস্ত আঘাত তিনি বুক পেতে নিয়েছেন। মিডিয়ার সব ঝড়ঝাপ্টা সামলে দিয়েছেন। সমস্ত রাজনৈতিক বিরোধিতাকে উড়িয়ে দিয়ে জঙ্গলমহলকে খাঁকি পোশাক আর মিলিটারি বুটে মুড়ে দিয়েছেন। সবই তো মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য। এর পরেও,এত কিছু করার পরেও, তাঁর ক্ষমতার উপর এত অবিশ্বাস? তাঁকে লেঙ্গি মেরে এলাকা পুনর্দখলের চক্রান্ত? এ কি রেগে যাবার জন্য যথেষ্ট কারণ নয়? যথেষ্ট অবিশ্বাস, যথেষ্ট আঘাত নয়? পৌরুষ আর প্রেমে আঘাত পেলে মানুষ কত কিছু করে। আর এ তো ইংরিজি লেখায় সামান্য দুটো বাংলা শব্দ। হতেই পারে। ... ...
তাই নামিলেন নীচে। অবশেষে। ফ্লাইট দু মিলেনিয়াম লেট , অথচ আপেক্ষিকতার সূত্র মেনে জৈবিক ক্লকে দেবানন্দীয় স্থবিরতা। বেথলেহেমে প্রথম স্টপ। গন্তব্য নেতাজি আন্তর্জাতিক। চেলা বোঝায় রকেট থেকে এইসা ধোঁয়া- মনে হল, খোদ গড, রজনীকান্ত নকল করে ধূম ছেড়েছেন। বাঙ্গালী ভক্তদের কলকাকলিতে অশান্ত ওয়েটিং এরিয়া দেখে ঘোর সন্দ, যার নামে বিমানবন্দর তিনিই মুখ তুললেন বুঝি? হল না, টি আর পি স্কেলে মেগাতর ভাবুন। তৃতীয় ভুবন পরিদর্শনে ত্রিভুবনেশের পুত্র স্বয়ং হাজির!! যুগ বদলেছে। আকাশপথের পুরানো রুটে আজ একটার বদলে পঁচাশটি তারা। ছবি মেলাতে গিয়ে পদে পদে ঠকবেন। কল্পনাপ্রবণ আঁকিয়েদের কাজ দেখে ভেবেছিলেন, চে গুয়েভারা, চন্দ্রিল ভাট, আর জন লেননের ককটেল , তাই না? দূর, এ তো পাতি কদমছাঁট। তবে হ্যাঁ, সেই মায়াভরা চোখ, সেই শান্ত স্থির চলাফেরা, সেইই হাত তোলার মোলায়েম কায়দা। (এক প্রখ্যাত র:স: গায়িকা গলা ফসকে বিস্মবিষ্ট 'কা-লো?' থ্রো করেই ইনস্ট্যান্ট অপ্রস্তুত, মুদ্রাদোষের অজুহাতে শেষরক্ষে।) ... ...
তবে উপায়? বিকাশ প্রথমে ওয়াটার থেরাপির ধান্দা করলেন। দিনে আট গেলাস জল পেটে ঢুকতে লাগলো, মদ্যপান বন্ধ, আর প্রতি ঘন্টায় দুচোখে জলের ঝাপটা। এতে করে কোনও লাভ হল না, বার বার বাথরুম যাবার প্রয়োজন পড়ল, ঝাপটা দিতে গিয়ে জামা ভিজে একশা হল, সন্ধ্যায় ইয়ারবক্সীরা 'উল্লাস' বলার একটি সাথী আপাততঃ হারিয়ে সামান্য বিমর্ষ হলেন। রাতে ঘুম এল না। ঘুম আসার জন্য সানন্দায় কানে কানে পড়তে গিয়ে মাথাটা শেষে খেলল। বিকাশবাবু গোপনে ওনার সহধর্মিনীর প্রসাধন সামগ্রী হাঁটকে শসা, লেবু ইত্যাদি প্রাকৃতিক ভেষজ দেওয়া ক্রিম চোখে লাগাতে শুরু করলেন ও কদিনের মধ্যেই ক্রিম সরাতে গিয়ে ধরা পড়লেন। লাগিয়ে ফল হল কচু, হাতি আর ঘন্টা। চৌর্যের কোনও কারণ বাৎলানো দায় হল, গৃহিনীর মুখনাড়া সার হল, বিবিজান লবেজান করে দিলেন। কিছুতেই কিছু হল না দেখে মরিয়া বিকাশ খুব ভোরে উঠে আদা-মধু আর কল ওঠা ছোলা মুখে ফেলে দু-আঙুলে টেনে টেনে চোখের চামড়ার ব্যায়াম আরম্ভ করলেন। এতে তাঁর জীবনযাত্রা পূর্বের চেয়ে স্বাস্থ্যকর হল, তর্জনীর গাঁটে ব্যথা হল, কিন্তু চোখের কোনও রদবদল ঘটল না। হতাশ, ভগ্ন, ভীত, রোগগ্রস্ত বিকাশ সেন ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেন। ... ...
এতদিন মল প্রাঙ্গণে গিয়ে যাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়তেন, কী কিনবেন, আদৌ কি কিছু কিনবেন, নাকি কাঁধখোলা সুন্দরীদের দেখে-টেখেই বাড়ি চলে আসবেন, এই নিয়ে কনফিউশনে জর্জরিত হতেন, কফির দাম কেন দেড়শো টাকা আর চুল কাটতে ছশো টাকা দেবার কোনো মানে আছে কিনা এই নিয়ে মানসিক অন্তর্দ্বন্দ জীর্ণ হতেন, তাঁদের জন্য সুখবর। আর চিন্তা নেই। মুদ্রণের বাজারে এসে গেছে সুবিখ্যাত পত্রিকা গোষ্ঠীর নবতম অবদান - "কী কিনি"। নাম দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। "বিকিনি"র সঙ্গে ধ্বনিগত মিল থাকলেও আসলে এটি কোনো হেঁজিপেঁজি বস্তু নয়, যে কিনলেন, পরে ফেললেন আর কিস্তিমাত। এটি একটি সিরিয়াস অ্যাফেয়ার। "বিকিনি", নয়, "কী কিনি"। পরা নয় পড়তে হয়। রীতিমতো মাসিক পত্রিকা। লম্বা-চওড়া। আকারে মোটামুটি চোদ্দ ইঞ্চি বাই দশ ইঞ্চি। আর প্রকারে কেনাকাটার এনসাইক্লোপিডিয়া বিশেষ। ... ...
আর প্র্যাক্টিকালি সেটাই তো দরকার। জয়-বীরু কি চিরদিন তোদের আগলাতে থাকবে? আজ নয় কাল তো তোদের হাতেই হ্যান্ড-ওভার দিয়ে যেতে হবে না কি? তারপর গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠবে গ্রামরক্ষী বাহিনী। পাঠশালা-স্কুল-কলেজে, খেতে-খামারে, পথে-ঘাটে, হাটে-বাজারে, গাছের ডালে, খড়ের চালে শোভা দেবে উন্নততর বামের উন্নততর কমান্ডো ফৌজ। বন্দুক প্রশিক্ষণও তো সেই জন্যেই। তারপর আসুক না শালা মাওবাদী। সঙ্গে সঙ্গে দুরুম। শুধু তাই নয়, দৈনন্দিন জীবনের যেকোন সমস্যার অব্যর্থ সমাধান। ছেলে ভাত খেতে চাইছে না? দুরুম। ডালে নুন বেশী হয়েছে? দুরুম। পরীক্ষায় নম্বর কম দিয়েছে? দুরুম। ধার করে শোধ দেয় না? দুরুম। অনাহার-অপুষ্টি-অশিক্ষা-দু:খ-দারিদ্র্য-জ্বর-জ্বালা-যন্ত্রণা সবকিছু থেকে মুক্তি। দুরুম। দুরুম। দুরুম। ... ...
সোদপুর ব্রীজের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় রেলস্টেশনের সামনে অনেক উঁচুতে কংগ্রেসের বিশাল ব্যানার প্রথমেই আপনার চোখে পড়বে। সোনিয়াজীর হাস্যোজ্জ্বল ঘোমটা-টানা মুখ, হাত নাড়ছেন আমার -আপনার উদ্দেশ্যে, মনমোহনজীও আছেন, কিছুটা খাটো হয়ে। বেশ। ভালো কথা। কিন্তু নীচে-র লেখাটার যে মানে বোঝা গেল না, সেটা মোটেই ভালো কথা নয়। আমার পক্ষে, সম্ভবত: কংগ্রেসের পক্ষেও। একতা আর সদ্ভাবনা তো বুঝলাম, সুরক্ষাও বোঝা গেল, কিন্তু "ভীত-শান্তি'? এমন কোনো শব্দ কী শুনেছি এই বেঁটেখাটো বাঙালী জীবনে? ইহা কী বাংলা ভাষা? কে বলবে রে আমা-আ-য়? ... ...