মেডিকেল কাউন্সিল প্রায় প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতির ছাপ রেখেছিলেন। ১৯৯৫ সালে এই সংস্থার প্রধান হয়েছিলেন ডাঃ কেতন দেশাই। তাঁর আমলে কলঙ্কের ছাপ আরো গাঢ় হয়ে উঠেছিল। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণের ভারপ্রাপ্ত পার্লামেন্টারি কমিট তাঁদের ৯২তম রিপোর্টে তীব্র নিন্দা করেছিলেন এই সংস্থার রীতিনীতি নিয়ে। রিপোর্টে অনেক বক্তব্যের মধ্যে থেকে উদাহরণস্বরূপ কয়েকটা উল্লেখ করা যায়, ১) ইণ্ডিয়ান মেডিকেল রেজিস্টারটি হালনাগাদ করা হয় না বহুকাল। রেজিস্টারে থাকা অনেকেই মারা গেছেন, অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন, খাতায় কলমে তাঁরা সবাই আছেন। ২) রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যাঁরা তারাও বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, এবং তাঁদের কারুর কারুর বিরুদ্ধে নিয়মবিরুদ্ধ কাজের অভিযোগ আছে। ৩) অভিযোগ আছে এরকম লোক জন কেবল এম সি আই র সদস্যপদে বসে আছেন তাই নয়, তাঁদের অপসারণের কোনো ক্ষমতাই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। পার্লামেন্টারি কমিটি এরকম আরো অনেক কিছুর প্রমাণ পেয়েই সংস্থাটি বিলোপ করার সুপারিশ করেছেন। ... ...
একদম হালআমলের শিল্পী এবং কবি। মেয়েটির জন্ম পাকিস্তানে, করাচীতে। ইউটিউব,ব্লগ,সোশ্যাল মিডিয়াতে অতি অভ্যস্ত। সমালোচকের বক্তব্য- "...নূর বলেছেন তাঁর নামের অর্থ, দিনের আলো। এই নাম,যথার্থ, কারণ তাঁর বইয়ের প্রতিটি লেখায় আছে এক আলোভরা জাদু। যা, আমাদের কাজ করতে, বেঁচে থাকতে, ভালোবাসতে প্রাণ জোগায়..." ... ...
ছাতা মাথায় দাঁড়িয়ে আছে উৎপল, আর কোদাল হাতে স্কুলের আটটা বাচ্চা লেগে যায় মাটি কাটার কাজে। আটটার মধ্যে তিনটে নেহাৎই দুবলা, ওদের দিয়ে মাটি কাটানো যাবে না। ওরা শুধু কাটা মাটি সরিয়ে সরিয়ে রাখবে। আর মেয়ে তিনটে পুকুর থেকে জল নিয়ে এসে মাঝে মাঝে মাটিতে ঢেলে মাটি নরম রাখবে। ঘন্টায় ঘন্টায় ছুটি, তখন প্রাণ ভরে জল খাওয়া, সঙ্গে মুড়কি আর বাতাসা। তিন ঘন্টার পর গরম ফেনা ভাত আর আলুভাতে। তারপর আবার কাজ, কিন্তু ঘন্টায় ঘন্টায় জল খাওয়ার ছুটিটা থাকেই। দুপুরে ভাতের সাথে ডাল থাকে, সঙ্গে একটা সবজিও। সন্ধ্যের আগেই কাজ শেষ। চানটান সেরে জামাকাপড় বদলিয়ে বাচ্চারা বসে ডাইনিং হলের মেঝেতে খেজুর পাতার চাটাই বিছিয়ে। পাশে একটা চেয়ার পেতে বসে জয়ি, এখন লেখাপড়ার সময়। লেখাপড়া কিন্তু এগোয় না বেশি দূর, ক্লান্ত বাচ্চারা ঢুলতে থাকে একটু পরেই। ... ...
তাহলে অভিজিৎ সেনের এই দুটি উপন্যাসই মানুষকে তার নানা সম্পর্ক, নানা পরিপ্রেক্ষিতের মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়। রোদে সেদ্ধ চাল শুকোনোর মতো কলম দিয়ে উল্টেপাল্টে আউলা ঝাউলা করে ছাড়ে তার প্রতিটি প্রতিক্রিয়াকে। আদর্শ বা পূর্ণ মানবের দেহরেখা আঁকার কোনো চেষ্টাই করে না, অপূর্ণতা আর অসহায়তার রঙে চুবিয়ে তোলে আমাদের সমস্ত অস্তিত্ব। শেষ করে পাঠক ফুঁপিয়ে উঠতে পারে, কিন্তু সেজন্য তার লজ্জা হবে না। এই অপূর্ণতার অশ্রুই আমাদের ভবিতব্য! ... ...
নিঝুম রাতের বেলা হেঁটে হেঁটে ফেরা। বোম্বে বাজারে ফেরার রাস্তায় ওই অন্য রাজ্যে কাজে যাওয়া বাঙালি ছেলে দেখলে চুরি-ছিনতাই-গালাগাল ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। আর এই সোনার কারিগরদের আর একটা প্রাপ্তি প্রায় কমন। সামান্য কিছু ভুলভ্রান্তি বা এধার ওধার দেখলেই পিঠে পড়বে মার। অবাঙালি শেঠ মালিকদের হাতে বা লাঠিতে পেটানি। সঙ্গে অবাঙালি মুখের অন্য ভাষার গালাগাল। ওই টাইট রুটিনে সোনার কাজের কারিগরি শিখতে শিখতে মইনুদ্দিন হয়ে উঠল পাকা কারিগর। ওর হাতদুটো ওই সোনালি ধাতুতে কারুকার্য তুলতে হয়ে উঠল পারদর্শী। মইনুদ্দিনের পড়াশোনার বুদ্ধিটা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের স্ট্যাম্পমারা রেজাল্টের ছাপা কাগজে ছাপ না ফেললেও বারবার সে বুদ্ধি ছাপ ফেলেছে ওর লেবার জীবনে। ... ...
দেশভাগের পর দখলি জমিতে কলোনি স্থাপনের সময়ই স্কুলের জন্য চারটি জায়গা চিহ্নিত করা ছিল৷ নিজেদের ঘর-বাড়ি তৈরির পাশাপাশি এর-ওর কাছ থেকে পাওয়া দানের টাকায় চলে স্কুল তৈরির কাজ৷ ‘বহিরাগত’ শিবপ্রসাদ নাগ কলোনি আর স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাদের সেই লড়াইয়ের কথা মনে রাখতেন৷ পয়সার অভাবে কারও পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে, মানতে পারতেন না৷ তবু ম্যানেজিং কমিটির সদস্যেরা, তাঁরা আবার কলোনিরই মানুষ, রোজগার বাড়াতে নিয়ম করলেন, মাইনে এবং পরীক্ষার ফি বকেয়া যাদের, তাদের মার্কশিট দেওয়া হবে না৷ চাপের মুখে হেড স্যার সে নিয়ম মানলেন৷ ফলে বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন দেখা গেল সব ক্লাসেই অর্ধেকের বেশিরভাগ ছাত্র অনুপস্থিত৷ ... ...
লেখক যত্ন নিয়ে দেখিয়েছেন যে ইংরেজ আসার আগে মোগল আমলে ভারতে বিচারপদ্ধতি কী ছিল ও কলোনিয়াল শাসক তাতে কী কী পরিবর্তন করল। উনি বিস্তারিত আলোচনা করে দেখাতে চেয়েছেন যে হিন্দু আইন কতটুকু শাস্ত্র মেনে তৈরি হয়েছিল বা তার কোন অংশটুকু সাহেবরা নিজেদের স্বার্থে বিকৃত করেছে এবং তার ফলে মেয়েরা এবং বিধবারা তাদের প্রাচীন প্রথায় যতটুকু সম্পত্তির অধিকার ছিল তাও হারিয়েছে। এবং সর্বশেষে এই আইন প্রণয়নে এবং তাঁর সংশোধনে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা ঠিক কী ছিল। ... ...
এক দিন কথায় কথায় শ্যামলদা বললেন, ‘চল যাই, গদাধর কর্মকারের সঙ্গে দেখা করে আসি৷’ মদ আছে, মাতলামো নেই, চরিত্রটা বেশ মনে ধরেছিল শ্যামলদার৷ পর দিন সাতসকালে গদাদার দোকানে হাজির হলাম শ্যামলদার ইচ্ছার কথা জানাতে৷ দেখি, চায়ের কাপে পাতি লেবু নিংড়ে রস বের করে এক চুমুকে রস মুখে পুড়ে পাড়া কাঁপিয়ে বললেন, ‘বোম বোলে’৷ শ্যামলদা তাঁর সাক্ষাৎপ্রার্থী হতে চাওয়ার হেতু শুনে বললেন, ‘কিন্তু আমি তো মদ ছেড়ে দিয়েছি৷’ বললাম, সে কী! কবে ছাড়লেন! বললেন, ‘দিনক্ষণ কি মনে থাকে৷ স্বপ্নে বাবা (মানে ত্রিনাথ ঠাকুর) কইল, অনেক খাইসস, আর না৷ এ বার ছাড়৷ ব্যাস, ছাইড়া দিলাম৷ নতুন নেশা লেবুর রস। রোজ সকালে একটা।’ বললাম, ‘আপনি যে বলেছিলেন, ডাক্তার বলেছেন, মদ ছাড়লেই বিপদ৷’ সহাস্যে বললেন, ‘ডাক্তার কি বাবার থিকাও বড় পণ্ডিত?’ ... ...
কখনো কখনো দুয়ের মধ্যে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন এক তৃতীয়জন, ‘লার্কিং ভেরিয়েবল’ অথবা ‘কনফাউণ্ডার’। চাদ্দিকে এর মেলাই উদাহরণ, এই যেমন আপনার মাইনেও বাড়ছে আর পাল্লা দিয়ে ব্লাড প্রেশার, হয়তো দেখা যাবে, মাইনে বাড়ছে বয়সের সাথে, রক্তচাপ-ও তাই ... আবার কিছু মাথামুন্ডু নেই এমন জিনিষেও কোরিলেশান বেশি হতেই পারে, Zআনতি পার না। আই-এস-আই-এর একটা মজার গল্প আছে এই নিয়ে। দেবপ্রিয়বাবুর কোর্স, মিড-সেমেস্টারে প্রশ্ন এসেছে, 'মানুষের উচ্চতাও যেমনি বাড়ছে, মাথার চুলের ঘনত্ব তেমনি কমছে ... ক্যায়সে?' আমার এক প্রিয় জুনিয়র দুর্ধর্ষ উত্তর লিখে এলো, 'লম্বা লোকের টাক সূর্যের অনেকটাই কাছে, সেখানে গরম বেশী, খুব ঘাম ... ঘেমো টাকে অল্প চুল যদি না-ই পড়লো, তা'লে আর ঘেমে লাভ কি?' (বলাই বাহুল্য, আসলে হাইট আর জেন্ডারের সম্পর্ক আছে, ‘জেণ্ডার’ এখানে লার্কিং ভেরিয়েবল।) ... ...
সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সৌন্দর্য কোনো জন্মান্ধ মানুষকে ব্যাখ্যা করে বোঝানো যেমন অসম্ভব, তেমনি, মন যদি সঠিকভাবে গ্রহণক্ষম না হয়, তা হলে রসপোলব্ধি দুষ্কর। ধীশক্তিও সাধারণভাবে বুদ্ধি বলতে যা বোঝায় তা নয়। ধীশক্তি বলতে বোঝানো হচ্ছে প্রজ্ঞা। প্রজ্ঞা দুর্লভ বস্তু, বোধ ও বুদ্ধির এক অতি উন্নত স্তরকে প্রজ্ঞা বলে। বুদ্ধি ও প্রজ্ঞার মধ্যে তফাতটা গুণগত, পরিমাণগত নয়। ধীশক্তির ফসল বিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদি। রসের ফসল সাহিত্য, সঙ্গীত, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। এটা খুবই আশ্চর্যের যে এই মাধ্যমগুলির উৎপত্তির মূলে যে সংস্কৃতি নামক জিনিসটি কাজ করছে, তা যে ‘জৈবিক’, নিছক আবেগের ব্যপার নয়, তা মানবসমাজ বহু যুগ পরেও বুঝতে পারে নি। ... ...
ইরফানুর রহমানের ‘‘ব্রেড অ্যান্ড রোজেস’’ সিরিজ থেকে অনুমতিক্রমে নেওয়া এক গুচ্ছ অনুবাদ কবিতা। ... ...
আমরা পাই সারগর্ভ উপদেশ, জ্ঞানের ফুলঝুরি, আমাদের কি করা উচিত ছিল, তার লম্বা ফিরিস্তি, ভবিষ্যতে কি শিক্ষা নেওয়া উচিত, নিজেকে কেমনভাবে পাল্টে নেওয়া উচিত, কি করলে এমনটা ঘটতো না। এ জেনে আমার কি লাভ? আমি কি পালটে ফেলবো এসব জেনে? আমি বিষ খেয়েছি, জেনে বা না জেনে, কিন্তু তোমার কাছে আমি শুধু একটু উপশম চাই। তার বদলে আমরা পাই, পুকুরে ডুবতে থাকা আপনাকে না বাঁচিয়ে, সাঁতার না জেনে আপনার পুকুরে নামা খুব অন্যায় হয়েছে, সেই মতামত, পুকুরের পাড়ে সাবধানে দাঁড়িয়ে থাকা লোকেদের থেকে। আর তারা কে? তারা বলে তারা আপনার বন্ধু। বলে, আমরা তোমার বন্ধু না হলে কি দরকার ছিল আমাদের সময় নষ্ট করে এইসব বলার। কিন্তু আপনি কি চান, আপনার কি দরকার, সেটা কেউ শুনেছে তাদের মধ্যে? ... ...
পখাল একটা বিরাট লেভেলার। রাজা প্রজা, ধনী নির্ধন, সাধু ভণ্ড, সৎ অসৎ, সাহসী দুর্বল, মন্ত্রী জনগণ সব্বাইকে এক পাল্লায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সেটা কী? নিঃশর্ত পখালপ্রীতি। এই একটিমাত্র বিষয় যেখানে কোন মতপার্থক্য চলবে না। রাজার ঘরে যে ধন আছে, টুনটুনির ঘরেও সেই ধন আছে! নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ, পখালরাজের চরণে। এমনকি স্বয়ং শ্রীজগন্নাথদেবও স্নেহ করেন তাকে। ... ...
সভা বসেছে। শেবার রানি এসেছে। অপরূপ মুক্তোর সাজ তার কালো দেহে। স্নাত, দীপ্র, গভীর। রাজা সলোমন সব সময়েই সুন্দর থাকেন। রানি অনুমতি নিয়ে শুরু করল তার প্রশ্নবাণ। শুরু হল শেবার রানির পরখপর্ব। এতদিন ধরে সে অপেক্ষা করেছে এই সময়ের জন্যেই। ধাঁধাঁ, হেঁয়ালি বা রানির যাচাই সবই জীবনকে ঘিরে। সম্পর্ককে ঘিরে। যাপন, বিবাহ, প্রেম। ঠিক রাজনৈতিক ছিল না সেই সব প্রশ্ন। বা অর্থনৈতিক। জীবনকে ঘিরেই ছিল তার প্রশ্ন ও প্রত্যাশা। ... ...
দানিশ বারবার বলেন, জীবন বিপন্ন করে তিনি ছবি তুলতে চান না। এমনকি আহত হওয়ার বিনিময়েও একটা ভালো ছবি তুলতে চান না। বলেন, একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাংবাদিক জানেন কীভাবে কনফ্লিক্ট জোন কভার করতে হয় নিজেকে বাঁচিয়ে। বন্দুক তাক করা উগ্র হিন্দুত্ববাদীর সামনে অনভিজ্ঞ সাংবাদিকরা ভুল করে চলে গেলে তিনি তাদের সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন, অসাধারণ এবং আর এস এস সন্ত্রাসের মুখ হয়ে ওঠা সেই ছবিটি তোলার থেকেও অক্ষত থাকা ও রাখাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি সবসময় নিজেকে ভয় পেতে শেখান, নইলে কখন এমন কিছু করে ফেলবেন যাতে শারীরীক ক্ষতি হবে। বলেছেন, তিনি যে অতিমানব নন, এটা নিজেকে ভুলতে দেননি কোনদিন। তাহলে কি ধরে নেব যে গড়পড়তা স্বার্থপর সংসারী মানুষের থেকে দানিশ সিদ্দিকি আলাদা কেউ নন? কিন্তু তাহলে দানিশের কর্মজীবনের প্রধান অ্যাসাইনমেন্টগুলো হিসেবে আঁটানো যাবেনা, যার মধ্যে মোসুলের যুদ্ধ, রোহিঙ্গা ক্রাইসিস, দিল্লির মব লিঞ্চিং, শ্রীলংকার বিস্ফোরণ এবং আফগানিস্তানের তালিবান আর আফগান সেনা সংঘর্ষ আছে। ... ...
এফিক্যাসি ৭০% মানে কিন্তু এটা নয় যে প্রতি ১০০ জন মানুষকে ধরে ধরে গুনলে আপনি দেখবেন ৭০ জন সংক্রমিত হয় নি আর ৩০ জন সংক্রমিত হয়েছে। এর মানে হচ্ছে টীকা নিলে আপনার সংক্রমণ থেকে বাঁচার সম্ভাবনা ৭০%। গুলিয়ে গেলো? বেশ। হাতে একটা কয়েন নিন। টস করলে হেড পড়ার স্বম্ভাবনা ৫০%। বেশ। পড়লো টেল। তাহলে কি পরের বার টস করলে হেড পড়তেই হবে? হাতে নাতে চেষ্টা করে দেখুন – এরকম কোন নিশ্চয়তা নেই। পরের বারেও হেড পড়ার স্বম্ভাবনা সেই ৫০%। আর একটা উদাহরণ। কোনো এক জটিল অপারেশন এর সাফল্যের হার ৯০% - যাকে এভাবেও বলা যায় প্রতি ১০ জনের মধ্যে একজন রুগী মারা যাবেন। বেশ, এবার যদি কোনো হাসপাতালে প্রথম ৯ জন রুগী ভালো হয়ে যান তাহলে কি দশম রুগীটির মৃত্যু ছাড়া গতি নেই? কাজেই ছোট পরিসরে কিন্তু এভাবে গুনে আপনি হিসেব মেলাতে পারবেন না। ওটা অঙ্ক নয়। এটা একারনেই লেখা, কারন অনেকেই হাতের আঙ্গুলে গুনে বলছেন ধুত ধুত – সব ঝুট হ্যায়। ... ...
সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের সাহায্যার্থে অর্থবানের টাকার থলির বাঁধন আলগা করার আইনি নির্দেশ সব আব্রাহাম পন্থী ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। ইহুদি ধর্মে প্রথমে ফসলের, পরে আয়ের কিছু শতাংশ (দশ অবধি) অভাবী মানুষের সেবায় উৎসর্গ করার আদেশ পাওয়া যায় – এর নাম জেদেকাহ (আক্ষরিক অর্থে ন্যায়)। সবাই সমান উপার্জনে সক্ষম নন বলে অর্জিত ধন ভাগ করে নেওয়াটা ন্যায় বলে বিবেচিত হয়। প্রাচীন সমাজে আপামর জনসাধারণের জন্য সরকারি দাতব্য চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না -রাজা রাজড়ারা কর আদায় করে যুদ্ধু বাধাতেন। জনসেবায় কুয়ো খোঁড়া বা রাস্তা বানানোর কাহিনি ইতিহাসে পাওয়া যায় বটে তবে সেটি সবসময় প্রয়োজন অনুযায়ী সাধিত হত কিনা তা বিতর্কের বিষয়। অতএব দরিদ্র জনগণের ভরসা স্বচ্ছল জনগণ। এই দানের সদিচ্ছা স্বচ্ছল জনগণের ওপরে ছেড়ে না দিয়ে একটা ধর্মীয় আদেশ সেই দান ব্যবস্থাটিকে কায়েম করে। ... ...
খাবার গল্প করতে গিয়ে সৌন্দর্য্য বোধের কথা উঠছে কেন? এটাই মূল কারণ – যদি নামী কোন ফ্রেঞ্চ রেষ্টুরান্টে খেতে যান, তাহলে সেটা নিজেই টের পাবেন। ধরুণ – একটা বিশাল স্টাইলের সাদা প্লেট দেবে – কিন্তু মাঝখানে ১০ গ্রাম মাংস, দুটো বীনসের দানা, এককাছি সবুজ পাতা চেরা। আর সেই মাংসের অর্ডার নেবার সময় আপনাকে ওয়েটার/ওয়ের্টেস সেই চিকেনের (যদি চিকেন অর্ডার করেন) বাল্যকাহিনী শোনাবে! চিকেন এই খেত, বনেবাদাড়ে খেলে বেড়াতো, তার মামারবাড়ি ওখানে, জবাই করার আগে সে এই এই জায়গা ভ্রমণ করেছে ইত্যাদি। প্রথম দিকে ঘাবড়ে যেতাম – এখন আলতো করে বলে দিই, চিকেনের জীবনগাথা শোনায় আমার ইন্টারেষ্ট নেই! ... ...
'খা খা বখ্যিলারে কাঁচা ধইরা খা/ তর শত্তুর রে খা তর সতীনরে খা...."। লোক পালা 'অরূণ বরুণ কিরণ মালা'র মত সাপ নিয়ে এমন কাহিনী ও গানের অভাব নেই বাঙালীর জীবনে। রাস্তার ধারে জমে ওঠা কোন মজমায় কান পাতলেই আজো শোনা যায় সর্প বশীকরণের কল্পিত যাদু ভরা দেশ "কামরূপ কামাখ্যা' কে নিয়ে ক্যানভাসারদের না না গাল গল্প। মনসা দেবী ও তার ভক্ত সর্পকূলের কথা ওরা নিজেদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে মিলিয়ে উপস্থাপন করে। ... ...
মতুয়াদের অসন্তোষ যে বিজেপি দলের বাংলা দখলের পথে সব থেকে বড় অন্তরায় হতে চলেছে এই আশঙ্কা করেই নরেন্দ্র মোদী ওড়াকান্দিতে গিয়ে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। তিনি মনে করছেন যে, মতুয়া বিধিমতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারলেই ভারতের মতুয়াদের মধ্যে একটি আলাদা আবেগ সঞ্চারিত হবে এবং মতুয়াদের সামনে রেখে বাংলা দখল সহজ হয়ে যাবে। ... ...