যে জনসমাজের জন্য দুর্বার তা যাতে তাঁরাই দেখভাল করতে পারেন, অর্থাৎ জনগোষ্ঠীর দ্বারাই পরিচালিত হয় তাঁদের সংগঠন সে বিষয়ে প্রথম থেকেই ছিলেন তৎপর। এখন গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দ্বারা যৌনকর্মীরা তাঁদের মধ্য থেকে সচিব, সভাপতি ইত্যাদি নির্বাচিত করেন। ভোট হয় সেখানে, যৌনকর্মীদের নিজস্ব ভোট। পৃথিবীর ইতিহাসে যা যথেষ্ট ব্যতিক্রমি বলা যায়। যৌনকর্মীদের অর্জিত অর্থ যাতে সঞ্চিত থাকে, সুরক্ষিত থাকে তার জন্য সমবায় গড়ে তোলার প্রচেষ্টা আর এক ইতিহাস। চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্নাতক এবং গণস্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা মানুষ হয়েও ডাঃ জানা এবিষয়ে তৎপর হন। যৌনকর্মীদের সমবায় ব্যাঙ্ক আদৌ হওয়া উচিত কিনা তা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তুমুল বিতর্ক হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৯০-এর মাঝামাঝি আইনের কিছু অংশের পরিবর্তন করতে হয়। দুর্বার অনুমতি পায়। ... ...
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনে কেজরিওয়ালকে হারানো সম্ভব হয়নি। তাই তাঁকে গদি থেকে নামানোর জন্য অন্য উপায় অবলম্বন করতে হয়েছে - ঘোষণা হয়ে গেলো যে বিজেপি-নিযুক্ত লেফটেন্যান্ট-গভর্নর এখন একাই দিল্লির 'সরকার', জনগণের ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসা আম আদমি পার্টিকে কাজ করতে হবে তাঁর হুকুম মাফিক। আর তাছাড়া যে সমস্ত রাজ্যে বিজেপি সরকার নেই, সেই প্রত্যেকটি রাজ্যের রাজ্যপাল আর তাঁদের ওপরে থাকা দেশের রাষ্ট্রপতির ধমনীতেও তো বয়ে চলেছে গোলওয়ালকারেরই রক্ত। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একএকজন আরএসএস প্রাক্তন। তাই কানহাইয়া বা উমার খালিদের মতন অপ্রিয় প্রশ্ন করা ছাত্র-ছাত্রী আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে দেখা যাবে না আজ থেকে দশ বছর পর। ... ...
৭ মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন ঘোষণা করছেন যে আমরা অতিমারির শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি; ৩০ মার্চ বলছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে; ২৭ এপ্রিল বলছেন সরকার মারির মোকাবিলায় শারীরিক ও মানসিক ভাবে অনেক বেশি প্রস্তুত, সারা দেশে যখন খোলা আকাশের নীচে লাইন দিয়ে চুল্লি জ্বলছে তখন নির্লজ্জ ভাবে মিথ্যা বলছেন যে বেড, অক্সিজেন, ওষুধের কোনও অভাব নেই; ২৯ এপ্রিল গর্ব করছেন মৃত্যুহার সারা বিশ্বে ভারতেই সবচেয়ে কম (১.১১%); পরের দিন আবার গর্ব করছেন যে ২.৬৯ লক্ষ মানুষ আরোগ্য লাভ করেছে, ২.২৮ কোটি মানুষ টীকাকরণের জন্য নাম লিখিয়েছে এবং আবারও নির্লজ্জ ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন যে কোনও রাজ্য সরকারের কাছে টীকা মজুত নেই। এর সাথে আছে হিমালয়সম দম্ভ, স্বেচ্ছাচারিতা এবং হিরো সাজবার উদগ্র বাসনা। ২৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বের কাছে ত্রাতা সাজলেন। নাটকীয় ভঙ্গিতে ঘোষণা করলেন যে, ভারত বহু দেশকে টীকা সরবরাহ করে পৃথিবীকে সর্বনাশের হাত থেকে রক্ষা করেছে। তিন মাসের মধ্যে দেখা গেলো টীকার অভাব এতোই প্রকট যে নিজের দেশের বরিষ্ঠ নাগরিকদেরই দু ডোজ দিতে পারা যাচ্ছে না। তিনি এতোই বেপরোয়া, বাংলার মসনদ দখলে এতোই মত্ত যে ১৭ এপ্রিল যখন কোভিড ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে তখনো নির্বাচনী সভায় সদম্ভে দাবি করলেন যে এতো মানুষ এর আগে কোনও সভায় তিনি দেখেননি। ... ...
বীরচন্দ্রের মৃত্যুর পরে ১৮৯৬ সালের শেষে মহারাজা রাধাকিশোর সিংহাসনে বসেন চল্লিশ বছর বয়সে। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথেরই সমবয়সী। দুজনের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রগাঢ় বন্ধুত্ব। রাধাকিশোরের রাজত্বের ছমাস কাটতে না কাটতেই ১৮৯৭ সালের প্রবল ভূমিকম্পে ত্রিপুরা সহ গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফলে করুণ আর্থিক অবস্থার মুখোমুখি হয় রাজ্য এবং তার মধ্যেই রাজপারিষদদের স্বার্থপর আচরণে দেখা দেয় চরম বিশৃঙ্খলা। রাধাকিশোরের একান্ত অনুরোধে তাঁকে সমস্যা থেকে উদ্ধার করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ভেবে অবাক হতে হয়, সাহিত্যের নান্দনিক বৃত্তের বাইরে বেরিয়ে এসে বিরাট ধৈর্যের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ বন্ধুকে রাষ্ট্রশাসনের কূটিল বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, নিজে ত্রিপুরায় হাজির হয়ে শাসন ব্যবস্থার নানা ত্রুটি বিচ্যুতি লক্ষ্য করে উপযুক্ত বিশ্লেষণ সহ একটি গোপন নোট পাঠান রাজার কাছে। তাতে রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে কবির বিচক্ষণতার পরিচয় মেলে... ... ...
জরুরি অবস্থা চলাকালীন ১৯৭৫ সালের অগাস্ট মাসে পদত্যাগ করেন সিপিআই(এম)-এর প্রথম সাধারণ সম্পাদক পি সুন্দরাইয়া। দলের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের কাছে লেখা ঐ মাসের ২২ তারিখের চিঠিতে তাঁর পদত্যাগের যে দশটি কারণ উল্লেখ করেছিলেন তার প্রথমটিই ছিল জনসংঘ ও আরএসএস নিয়ে পার্টির অবস্থান। তিনি এই দুই শক্তিকে সাথে নিয়ে জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করার যে পার্টি লাইন তার বিরোধী ছিলেন। এমনকি তিনি আরএসএস কে ‘আধা সামরিক ফ্যাসিস্ট’ বলেও অভিহিত করেন। যদিও এর শিকড় আরো গভীরে, অবিভক্ত কমুনিস্ট পার্টির প্রথম সম্পাদক পিসি যোশিও স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই এই মৌলবাদীদের নিয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পার্টির মধ্যেই তীব্রভাবে সমালোচিত হন। এই দোদুল্যমানতা থেকেই কিছুকাল পূর্বেও জাতীয় স্তরে কংগ্রেস ও বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রাখায় অটল ছিল সিপিআই(এম)। সুতরাং ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে আব্বাসকে সাথী করে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বাড়ানোর বাসনা কোনো ভাবেই বিস্ময়জনক তো নয়ই বরং তাদের ঐতিহাসিক ভূমিকার সঙ্গে যথেষ্ট সংগতিপূর্ণ। ... ...
করোনা প্রতিরোধের নাম করে মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিলকে এড়িয়ে খোলা হয়েছিল " PM Care Fund"- যার পরিচালক মন্ডলী শাসকদলের কার্যকর্তায় ভর্তি। উঠেছে ৩৫ হাজার টাকা। ব্যবসায়ীরা কর ছাড়ের জন্য ঐ তহবিলে ঢেলে অনুদান দিয়েছেন। সে টাকা কোথায় গেল? ভারতের ১৩৮ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৪০% এর বয়স ১৮- এর নীচে। বাকি রইলো ৮৪ কোটি নাগরিক। ১৫০টাকা (বর্তমান বিক্রয়মূল্য?) করে ডোজ দিতে খরচ হয় ২৫,২০০ কোটি টাকা। এই টাকা কি ভারত সরকারের নেই! ২০২১ শে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বাজেটে মোট বরাদ্দ প্রায় ২.২০ লক্ষ কোটি টাকা। তার মধ্যে ৩৪ হাজার কোটি কোভিড টীকার জন্য। P. M. Care এ আরো ৩৫ হাজার কোটি। এই সত্তর হাজার কোটি টাকা থেকে ২৫ হাজার কোটি বার করা কি অসম্ভব? আরও আশ্চর্যের বিষয় নিধিরাম সর্দার রাজ্যগুলির দিকে দায়িত্ব পুরো ঠেলে দেওয়া হল, তাদের সরাসরি একটা বেসরকারি সংস্থার থেকে টীকা কিনে নিতে বলা হলো অগ্রিম অর্থ দিয়ে। অথচ টীকার সামগ্রিক উত্পাদন ও বন্টনে রাজ্যের কোনো হাত নেই। বর্তমানে যে হারে দুটি ভ্যাক্সিন উত্পাদন হচ্ছে, তাতে সবাইকে টীকা দিতে গেলে দেড় বছর সময় লেগে যাবে। তার মধ্যে তৃতীয়( বুস্টার) ডোজের দরকার হবে কিনা কে জানে ! প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকার ৬০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন যা নাগরিকদের করের টাকা। যুক্তি ছিল জনস্বার্থ। এখন পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য আদার পুনাওয়ালা আবার সাহায্য চাইছেন। অথচ মানুষ টীকা কিনবে সাত থেকে দশগুণ দামে (যদি ক্ষমতায় কুলোয়)। এরা কি সাধারণ ভারতবাসীকে দিয়ে লাশবিপণি খুলে বসেছেন? ... ...
আমরা এই মেয়েদের ঘৃণা করি, সমাজের পাঁক বলে ভাবি। ডাক্তারবাবু আর তাঁর দুর্বার মহিলা সমণ্বয় কমিটি মাত্র ২৪ বছরের সময়সীমায় আমাদের এই নজর অনেক পাল্টেছিলেন। নারী, মা এবং মানুষ, যৌনকর্মী জীবনের এই তিন অধ্যায় নিয়ে গুরুতে এবং অন্য জায়গাতেও অনেক লিখেছি। ডাক্তারবাবুর সদিচ্ছায় ব্যক্তিগত ভাবে এই লড়াইকে খুব কাছ থেকে দেখতে পেরেছি। তাই আমি এই নারীদের অত্যন্ত সমীহ করি। আদ্যন্ত লড়াকু না হলে এইরকম একটি নিষ্ঠুরতম পেশায় টিঁকে থাকা অসম্ভব, আরো অসম্ভব সমমনাদের নিয়ে এইরকম একটি সংগঠনে সামিল হওয়া ও তাকে এইভাবে সফল করে তোলা। ... ...
এ তনু ভরিয়া — দর্শন আপাদমস্তক। লেখক অরিন্দম চক্রবর্তী। দেহকে আরও ভালোভাবে বুঝে নেওয়ার তাগিদে তার দার্শনিক বিচার-বিশ্লেষণ। দার্শনিক প্রশ্ন তোলা ও তার উত্তরে দার্শনিক যুক্তিবিন্যাসই বইটির অবলম্বন। পড়লেন দর্শনের অধ্যাপক অমিতা চট্টোপাধ্যায় ... ...
গোরা। রবীন্দ্রনাথের এ উপন্যাস প্রকাশিত ১৯১০ সালে। ইতিহাসের নিরিখে বঙ্গভঙ্গ রোধ আন্দোলনের সময়ে। যদিও কাহিনির প্রেক্ষিত ১৮৮০-র দশক। ১৮৫৭-র ভারতীয় মহাবিদ্রোহের আড়াই দশকের মধ্যে। প্রকাশের ১১০ বছর, কাহিনির প্রেক্ষিতের প্রায় দেড়শো বছর পরে একুশ শতকের ভারতে এ উপন্যাসের প্রাসঙ্গিকতা অমলিন। লিখছেন রাহুল দাশগুপ্ত ... ...
১৯৬৯। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ‘শঙ্খ স্যার’-কে প্রথম দূর থেকে মুগ্ধ হয়ে দেখা। পরবর্তী বহু দশকে নানা উপলক্ষে চেনা-জানার সুযোগ। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনকালে বেশ কাছের মানুষ হয়ে ওঠা। তবু থেকে গিয়েছে কিছু খটকাও। স্মৃতিচারণে মীরাতুন নাহার ... ...
ও-জে-সিম্পসন নিজের স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন, বহুদিন ধরে বহুল-চর্চিত ট্রায়াল হয় তার, সে ট্রায়ালের সম্প্রচার হয় সারা আমেরিকা জুড়ে টেলিভিশনে। এবং আশ্চর্যজনকভাবে, প্রথমবার ট্রায়ালে গুচ্ছ গুচ্ছ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ছাড় পেয়ে যান ওজে। প্রসিকিউশন প্রমাণ এনে দেন ওজে নিজের স্ত্রীকে মারধোর করতেন, কিন্তু ডিফেন্স অ্যাটর্নি অ্যালান ডেরশোউইজ সওয়ালে বলেছিলেন, তাতে কী? প্রতি ২৫০০-এ নির্যাতনকারীর ১ জন খুন করেন শেষমেশ। জুরির লোকেরা একটু বেইজ থিয়োরেম জানলেই দেখতে পেতেন এই তথ্য বরং প্রমাণ করে যে ওজে সিম্পসনের দোষী হওয়ার সম্ভাবনা ৯০% এর উপরে! ... ...
রোগীরা সবাই শেষে একটাই প্রশ্ন করেন, ‘ডাক্তারবাবু, ভয় নেই তো?’ উত্তর দিতে গিয়ে ইদানীং মেজাজ হারাচ্ছি। বলছি, ‘আমি জ্যোতিষী নই।’ এই প্রথম মাঝে মাঝে অন্যদের দেখে হিংসে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমি যদি ডাক্তার না হয়ে অন্য কিছু হতাম, বেশ হতো। বাড়িতেও সকলের মুখ ভার। রাতে ফিরে যেটুকু সময় বাড়িতে থাকছি সেটুকু সময়েও অজস্র ফোন। একটা ফোনে কথা বলতে বলতে তিনটে মিসকল হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই হাসপাতালে বেডের জন্য, অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য, ভ্যাকসিনের জন্য ফোন করছেন। এসব ব্যাপারে আমার কিছু করার ক্ষমতা নেই বলতেও খারাপ লাগছে। আমি সারাদিন রোগী দেখে বাড়ি ফিরে স্নান করি। ফোনের ঠ্যালায় স্নান করতে করতে রাত বারোটা বাজছে। ... ...
পলাশীর যুদ্ধের ঠিক আগে সিরাজ কাশিমবাজার কুঠি দখল করে সেখানকার সবাইকে গ্রেপ্তার করেন, সেই বন্দি বাহিনীর মধ্যে হেস্টিংসও ছিলেন। রেশমের ব্যাবসার কাজ দেখতে দেখতে এ দেশের অনেক কিছুই রপ্ত করে ফেললেন। গড়গড়িয়ে বাংলা আর উর্দু বলতে শিখলেন। ফারসিও। এদেশটাকে তিনি ভালোই বেসেছিলেন। স্বদেশের থেকে একটু বেশি, এমনটা নিজেই বলেছেন। ... ...
ওই কচি বয়েসে স্কুলের পরীক্ষা পাশের পর মেয়ে যেদিন বললো কলেজে পড়বে না ও, ছবি আঁকবে আর ছবিই আঁকবে শুধু, সেদিন মেয়ের কেরিয়ার পরিকল্পনার একটা অস্পষ্ট ইঙ্গিত পেয়েছিলো হেমন্ত। ঠিক ঠিক যে ব্যাপারটা বুঝেছিলো, তা নয়। ততদিনে জয়ির তুলির সাথে বন্ধুত্ব আর তুলির বাবার প্রায়-মেয়ে-হয়ে-ওঠার ব্যাপারটা জেনেছে ও। ওরা অনেক বড়লোক, অনেক লেখাপড়া জানে; ভেবেছে ওদের সংস্পর্শে নিজের সম্বন্ধে যে পরিকল্পনা করেছে জয়ি, সেটাকে বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। শক্তি চট্টোপাধ্যায় নামের এক কবির সাথে কথা বলে যেদিন জয়ি পাড়ি দেয় কলকাতায়, ও আপত্তি করার কোন কারণ খুঁজে পায়নি। শুধু নিজের জমানো সামান্য টাকা আর বুকভরা আশীর্বাদ ছাড়া ওর কিছুই দেবার ছিলো না মেয়েকে। ... ...
কবিতাপ্রয়াসী হিসেবেই শুধু নই, একজন পাঠক হিসেবে মনে হয়, কবিতা ও কবিতা সংক্রান্ত ভাবনাবিশ্বের যে যুগলবন্দি তিনি তৈরি করেছিলেন ধারাবাহিক ভাবেই, তা আমাদের খোলা হাওয়ার বাঁচতে শেখায়। কারণ একপ্রকার ভাবনাগত দৈন্যের মধ্যে আমরা পড়ে গেছি। এ সময় শঙ্খ ও অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের মতো কবিদ্বয় আমাদের জন্য যা রেখে গেছেন, তাই আমাদের আগামীদিনের সহায় হয়ে উঠতে পারে। দুজনকেই আমরা হারিয়েছি খুব অল্প ব্যবধানে। অথচ দুজনেই তাঁদের চলে যাওয়ার কয়েক মাস আগে পর্যন্ত তাঁদের সৃষ্টি ও ভাবনায় আমাদের সমৃদ্ধ করে গেছেন। ... ...
ইহুদি মতে ঈশ্বর আদি ঘটক। তিনি স্থির করেন কার সঙ্গে কার বিবাহ হবে (রব নে বানাই জোড়ি স্মরণ করুন)। কিন্তু তিনি তো আর এই দুনিয়ার সব জায়গায় হাজির থেকে এতো মানুষের মধ্যে যোগাযোগ করাতে পারেন না। তাঁর আরও হাজারটা কাজ আছে। অতএব মর্ত্যভূমিতে এই মহান ব্রতটি সম্পন্ন করার ভার নিয়ে যিনি অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি হলেন শদখেন, ঘটক। ... ...
সাধারণভাবে তামিলদের দুর্নীতি নিয়ে তত সমস্যা নেই। জনতা জানে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল দুর্নীতিগ্রস্ত, এবং সে নিয়ে তাদের খুব কিছু যায় আসে না। এ ব্যাপারে কামাল হাসানের উদাহরণ উপযুক্ত হতে পারে। তিনি স্বচ্ছ রাজনীতির কথা বলেছিলেন, বলেছিলেন বিকল্প রাজনীতির কথা। তিনি নিজে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন, তাঁর দল একটি আসনও পায়নি। তাঁদের প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ২.৫ শতাংশ। ... ...
এআইএডিএমকে-র এই ফল কিন্তু আগামী দিনে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তামিল রাজনীতিকে। নানাভাবে। পশ্চিমবঙ্গে যেমন দুই প্রধান দল মিলে ভোট পেয়েছে ৮৬%-এর মত, তামিলনাড়ুতেও ছবিটা একই রকমের। সেক্ষেত্রে দুই প্রধান জোট ভোট পেয়েছে ৮৫%-এর বেশি। দুই প্রধান দ্রাভিড়িয়ান পার্টির মধ্যেই তাই প্রধানত ওঠাপড়া করেছে তামিল সমর্থনের ভিত্তি। ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। চলছে সিম্বামওয়েন্নি থেকে উগোগো অঞ্চলের চুন্যো জনপদের উদ্দেশে বেরিয়ে ভয়ংকর মাকাটা জলা-অঞ্চল পার হয়ে এবারে এক বিপুল জনহীন প্রান্তর পার করার কথা। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
দক্ষিণ ইওরোপের আইবেরিয়ান উপদ্বীপের দেশ। প্রাচীন রোম সাম্রাজ্য, মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন, প্রাক-আধুনিক ঔপনিবেশিক শক্তি, আধুনিক কালে দীর্ঘ স্বৈরতন্ত্র ওপরে গণতন্ত্রের মিশ্রণে বিচিত্র রঙিন সংস্কৃতি। ঠিক পর্যটক হয়ে সাইট-সিয়িং নয়। কখনও শিক্ষার্থী, পরে তরজমাকার হয়ে এদেশের নানা শহরের অন্দরমহলে উঁকি-ঝুঁকির অভিজ্ঞতা। একিস্তিতে কুইম্ব্রা ও তার আশপাশ। প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্য থেকে মধ্যযুগীয় পোর্তুগালের দুনিয়ায় ঘোরাফেরা। ঋতা রায় ... ...