এইবার এই চারটে অ্যামাউন্ট আলাদা আলাদা বাণ্ডিল করে একটা একটা খামে ঢুকিয়ে রাখো, জয়ি ড্রয়ার খুলে কতকগুলো খাম বের করে, আর রাবার ব্যাণ্ড। নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে উৎপল। জয়ি বলে, এদিকে এসো, আমার পাশে। উৎপল চেয়ার ছেড়ে উঠে জয়ি যেখানে বসে আছে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। জয়ি চাবি দিয়ে একটা ড্রয়ার খোলে, উৎপলকে বলে, এই টাকার বাণ্ডিলগুলো আর তোমার হিসেবের কাগজটা এই ড্রয়ারে রাখো। এবার চাবিটা দেয় উৎপলকে, ভালো কোরে চাবি দাও। চাবি দেওয়া হয়ে গেলে ওর কাছ থেকে চাবিটা নিয়ে নিজের ব্যাগে ঢোকায় জয়ি, বলে, টাকাগুলো ব্যাঙ্কে জমা দিতে হবে, ব্যাঙ্কে গিয়েছো কখনো? ... ...
ম্যানগ্রোভ যেভাবে বেঁচে ওঠে বেড়ে ওঠে, দুই মেরুপ্রদেশ বাদ দিলে পৃথিবীর সর্বত্রই যেখানে নোনাজল আছে, খাঁড়ি এলাকা আছে সেখানে ম্যানগ্রোভ আছে। ম্যানগ্রোভ নিজেই সেই ব্যবস্থা করে নিয়েছে, নদীর যদি একটুকরো চর পড়ে থাকে বা নদীবাঁধ যদি কাঁচা হয় তাহলে। যে প্রয়োজনীয় ম্যানগ্রোভগুলো বাঁধকে সুরক্ষা দিতে পারে, মাটিকে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে পারে, সেগুলো ম্যানগ্রোভ নিজেই করে নিতে পারে। তারপরেও গাছ লাগানোর প্রশ্ন আসছে? সেটার কারণ হচ্ছে ওই গাছগুলো আমরা কেটে ফেলি। আঞ্চলিকভাবে হোক আমাদের সচেতনতার অভাবে হোক আমরা গাছগুলো কেটে ফেলি ব'লে--- আবার সেখানে গাছ লাগানোর প্রশ্ন আসছে। ... ...
অনেকেই হয়তো জানেন না, পৃথিবীতে মাত্র দুটি অঞ্চল আছে, যার প্রায় পুরো বসতিটাই সমুদ্রতল থেকে অনেকখানি নীচে – একটি হল হল্যান্ড আর অন্যটি আমাদের সুন্দরবন। সমুদ্রের খুব কাছে হওয়ায় জোয়ার-ভাটায় সুন্দরবনের নদীগুলিতে জল ওঠানামা করে কুড়ি থেকে পঁচিশ ফিট। তাই সুন্দরবনের সে সমস্ত দ্বীপে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল, জোয়ারের সময় সেগুলো সবই চলে যায় জলের নীচে, জেগে থাকে শুধু গাছপালার মাথা। আর যে দ্বীপগুলোতে মানুষের বাস, জোয়ারের জল যাতে সেই দ্বীপগুলোকে ডুবিয়ে দিতে না পারে, সেই কারণেই প্রতিটি দ্বীপকে চারপাশে বেড় দিয়ে রাখে দেড় মানুষ বা দু-মানুষ সমান উঁচু বাঁধ। জোয়ারের জলের প্রবল চাপ ধারণ করে রাখে সেই বাঁধ। অতএব বোঝাই যাচ্ছে, একবার কোনো জায়গায় সেই বাঁধ ভাঙলে নোনাজল ঢুকে বেশ কয়েকটি গ্রাম আর কয়েকশো একর জমিকে ডুবিয়ে দেয়। এই কারণেই নদীবাঁধগুলোকে বলা হয় সুন্দরবনের লাইফ-লাইন বা জীবন-রেখা। ... ...
সপ্তম অধ্যায়ে লেখক বলছেন, সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ রূপে বিদ্যাসাগর ‘লাভ করেন অসীম দাপট, অবাধ ক্ষমতা ও একক কর্তৃত্ব’। তারপর বিদ্যাসাগর ওই কলেজে শিক্ষাসংস্কারের জন্যে যা করেছেন সেগুলোকে লেখক ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গবেষণাকে ভিত্তি করে আটটি বিন্দুতে বেঁধেছেন। তারপর ওই সংস্কারগুলোর নিজস্ব মূল্যায়ন করতে গিয়ে বেশ কিছু অজানা তথ্যের দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। আমরাও এ’ব্যাপারে লেখককে অনুসরণ করব। ... ...
আমার বাংলা সাদামাটা বাংলা। চাইলে যে সুমিতদা সেভাবেও লিখতে পারত তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ- বিভূতিভূষণের ‘পোনু’-কে নতুন ভাবে মার্কিন মুলুকে আত্মপ্রকাশ করিয়ে সুমিতদা-র লেখা এক গুচ্ছ ‘পোনুর চিঠি’। পুরোনো ‘অবসর’ আর অধুনালুপ্ত ‘আন্তরিক’ পত্রিকায় প্রকাশিত চিঠিগুলো ছিল ব্যাঙ্গ আর শ্লেষে পরিপূর্ণ! অত্যন্ত সুপাঠ্য সেই চিঠির একটাতে হোঁচট খেয়েছিলাম ‘পন্টক’ শব্দটা দেখে - ব্যবহার করা হয়েছে কোনও এক সম্মেলনে কয়েকজনকে উদ্দেশ্য করে। ... ...
আপ রুচি খানা? কে বলে মশাই? সব্বার আগে দরকার ভাই এটিকেট জানা। বিলেতে খানা খেতে খেতে কদাচ যেন না ওঠে বিশ্রী ঢেকুর। নাইজেরিয়ায় আবার খাবার নিমন্ত্রনে ব্যাঘ্র গর্জনে ঢেকুরই দস্তুর। বিলেতে চা বা স্যুপ পানে, সুড়ুৎ শব্দটুকু হওয়া মানে মহাসব্বোনাস। ওদিকে জাপানে, যাবতীয় পানে শোনা যাবে এমন হুসহাস, যেন শত অ্যানাকোন্ডায় ফেলছে নিশ্বাস। ইত্যাকার এটিকেট জেনে পাও গুড ম্যানার্স সার্টিফিকেট। দুনিয়ার কোনও দেশে নিমন্ত্রনে খেতে বসে পড়বে না ঢিঢি। শিক্ষা দিতে ইত্যাকার আচার, যথারীতি হেঁশেলে হুঁশিয়ার রয়েছেন ডিডি ... ...
ডেভিড লিভিংস্টোন। আফ্রিকায় বেপাত্তা। কিংবদন্তি মানুষটির খোঁজে আফ্রিকা পৌঁছেছেন মার্কিন সাংবাদিক হেনরি মর্টন স্ট্যানলে। জাঞ্জিবার থেকে শুরু হল আফ্রিকার গভীরে অভিযান। প্রথম লক্ষ্য বাগামোয়ো শহরে পৌঁছে পাক্কা দেড় মাস আটকে সেখান থেকে একে একে রওনা হয়েছে অভিযানের মোট পাঁচটি কাফেলা। চলছে অভিযানের মূল কাহিনি। স্ট্যানলের সেই বিখ্যাত সফরনামা ‘হাও আই ফাউন্ড লিভিংস্টোন’। এই প্রথম বাংলায়। এঅধ্যায়ে মাটামবুরু নামের জনপদ পার করে বিহওয়ানা পৌঁছনোর কাহিনি। তরজমায় স্বাতী রায় ... ...
Wittgenstein মনে করতেন দর্শন ও জীবন বা জীবনযাপন সম্পৃক্ত! এই জন্য তাঁর দর্শন Liberation-এর দর্শন বা মুক্তির দর্শন হিসেবেও পরিচিত। Russell-কে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘How can I be a logician before I am a human being?’। এখানে এসে পূর্ব-পশ্চিম কোথাও একটা মিলে যায়। আদি ভারতে যাজ্ঞবল্ক্য, গার্গী, মৈত্রেয়ীরা তাঁদের নিজস্ব পথে দার্শনিক সমস্যাগুলির সমাধান খুঁজেছিলেন আর বিংশ শতাব্দীতে পশ্চিমে আরেকজন মনীষী দার্শনিক তাঁর নিজস্ব প্রতিভায় পৌঁছলেন প্রায় সেই একই পথে! সম্ভ্রমের ব্যাপার হল Wittgenstein আমাদের দেশে আধুনিককালে যার সঙ্গে তাঁর চিন্তা ও বুদ্ধির সবচেয়ে বেশি সাযুজ্য খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি তথাকথিত কোনো দার্শনিক বা ধর্মগুরু বা সমাজসংস্কারক ছিলেন না, ছিলেন মূলত একজন কবি। প্রকৃতপক্ষে যে উপনিষদীয় ভারত রবীন্দ্রনাথের আধুনিক উদার ও সংস্কারমুক্ত মনের অনুপ্রেরণা ছিল তার সাথে এসে মিশেছিল পাশ্চাত্যের যুক্তিবাদ ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, অন্যদিকে যুক্তিবাদী ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন Wittgenstein-এর মধ্যে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি ছড়িয়ে দিয়েছিল উপনিষদীয় প্রজ্ঞা। মৃত্যুর আগে তাঁর বলে যাওয়া শেষ কথা ছিল, ‘Tell them I have had a wonderful life’। ... ...
প্রাথমিক ভাবে বিভিন্ন বোর্ডের বাংলা সিলেবাসের নির্মিতি অংশ নিয়েই আমার মনে এমন প্রশ্ন জাগে। ধরা যাক, সমার্থক শব্দ পড়াতে গিয়ে জলের প্রতিশব্দ শিখিয়েছি- অপ, সলিল,অম্বু, উদক, তোয়, পয়ঃ, নীর, পানি, ইলা ইত্যাদি। বা কন্যা শব্দের প্রতিশব্দ শেখাতে হয়েছে তনয়া, দুহিতা, আত্মজা, নন্দিনী, মেয়ে, দারিকা, ইত্যাদি। বা পৃথিবীর প্রতিশব্দ শেখাতে গিয়ে শিখিয়েছি- ধরা, ধরণী, বসুধা, ভূ, ধরিত্রী, মেদিনী, ক্ষিতি, জগত ইত্যাদি। এত সমার্থক শব্দ মুখস্থ করিয়ে পড়ুয়াদের লাভ কী! কিন্তু আমরা যারা পড়াই তাদের শেখাতেই হবে। অন্ধের মতো মুখস্থ করা ছাড়া ছোটোদের কাছেও কোন উপায় থাকে না! ... ...
২০১৭-র শীতকাল। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত’র কাছে আমার জানার ইচ্ছে একেবারেই সিনেমা ও সাহিত্যের শিক্ষার্থী হিসেবে। সেই ইচ্ছেই আমার জানতে চাওয়ার মধ্যে ধরা পড়েছে আশা করি। বেশ কয়েকবার বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁর গোলপার্কের বাড়িতে গেলেও এত প্রশ্ন করার দুঃসাহস আগে হয়নি। তিনি নিজেই এই দুঃসাহস জুগিয়েছেন প্রশ্রয় দিয়ে। এই কথোপকথন তাঁর অভিষিক্তার ফ্ল্যাটে বসে। প্রবল শরীর খারাপ নিয়েও অনেকক্ষণ সময় দিয়েছেন আর এর বাইরেও হয়েছে অনেক ব্যক্তিগত কথা। সেগুলো এখানে অপ্রয়োজনীয়। আর এই প্রথম প্রকাশ পাচ্ছে এই কথোপকথন, চিরতরে তাঁর হারিয়ে যাওয়ার বেদনা গায়ে মেখে। দ্বিতীয় কিস্তি। ... ...
একগুচ্ছ গদ্য। রবীন্দ্রনাথের। অধিকাংশই সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গে জবাব দেবার দায় থেকে রচিত। লেখাগুলি পূর্বে গ্রন্থিত। কিন্তু সহজলভ্য নয়। এ সংকলন এনে দিল আগ্রহীদের হাতের কাছে। পড়লেন সুমন্ত মুখোপাধ্যায় ... ...
কর্পোরেট নার্সিংহোম বা সরকারি হাসপাতাল নয়। পাড়ার একরত্তি চেম্বার। অতিমারির প্রবল প্রকোপেও খোলা। নিরন্তর লড়াই সেখান থেকেই। বিরল উদাহরণ। সেই লড়াইয়ের দিনলিপি। অভূতপূর্ব এক সময়ের অবশ্যপাঠ্য দলিল। একটি সদ্য প্রকাশিত বই। পড়লেন চিকিৎসক বিষাণ বসু ... ...
জাঁ-মারি গুস্তাভ ল্য ক্লেজিও। নোবেলজয়ী ফরাসি সাহিত্যিক। কিন্তু হৃদয়ে তাঁর আফ্রিকা। নিরন্তর লিখেছেন আফ্রিকান নানা জনগোষ্ঠীর ওপর ফরাসি ঔপনিবেশিক শক্তির মর্মান্তিক হামলার কথা। সংশয় প্রকাশ করেছেন ইওরোপীয় সংস্কৃতির মূল্য নিয়েই। আত্মজৈবনিক একটি প্রবন্ধসংকলন। পড়লেন পার্থপ্রতিম মণ্ডল ... ...
গত বছরে যে সব সূচক ধরে মাপা হয়েছিল, এ বছরে তার অনেক ক'টিই পরিত্যক্ত হয়েছে। আবার গত বছর রাখা হয়নি এমন কিছু সূচক এ বছরে এসেছে। আমরা আগে দেখতাম দারিদ্র্যরেখার নীচে অবস্থানকারী মানুষজনদের চিহ্নিত করার সূচক কোনো দুটি পর্বে এক থাকতো না। ফলে আগের বছরের গরিব এ বছরেও গরিব কি না তা বোঝার উপায় থাকতো না। কেবল বোঝা যেত এ বছর, ওঁদের মাপকাঠিতে কারা গরিব। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তারা জানাতেন এটা উন্নততর সূচক, অতএব অকারণে প্রশ্ন করো না। পরে দেখেছিলাম অমর্ত্য সেন, জঁ দ্রেজ রাও এই প্রশ্ন তুলেছিলেন। ... ...
অনেকেই টেলি কন্সালটেশনের পর ভিজিট দিতে চাইছেন। তাঁদের সবিনয়ে বলছি, আমি নিজেই ফোনে এভাবে চিকিৎসা করার ঘোরতর বিরোধী। করোনার কাল কেটে গেলেই আবার ফোনে কোনো রকম ওষুধপত্র বলা বন্ধ করে দেব। অতএব এর জন্য আমাকে ভিজিট দেওয়ার প্রশ্নই নেই। এই লকডাউনের সময় বহু সেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রায় প্রতি এলাকাতেই মানুষের জন্য কাজ করছে। টেলিকন্সালটেশন বাবদ যে টাকা টুকু আমাকে দিতে চাইছেন, ঐ টাকা সেসব সংগঠনের হাতে তুলে দিন। ... ...
রোজরোজ এইরকম সব কথা হয় ওর সাথে। কিন্তু আলাপ পুরো হচ্ছে না। রোজই দেখি লাল টিনের বোর্ডের ওপরে সাদা দিয়ে লিখে রেখেছে "নো সুইমিং", ইংরিজি আর হিব্রু দু ভাষাতেই। এ কী অনাছিস্টি কথা! সমুদ্রে নামবো না? বালির ওপরে বসে ঢেউয়ের শব্দের সব কথা বুঝতে পারি না। আমার শ্রবণেন্দ্রিয় মাছের মত, সারা শরীর জুড়ে। স্পর্শেন্দ্রিয় পার্শ্বরেখা মনে আছে? ভেতরে বড্ড ছটফটানি জমা হয়। "কেন মানা? মানা কেন জলে নামা?" জলের কোয়ালিটি কন্ট্রোলের ওপর খুব কড়াকড়ি ওখানে। নিয়মিত দূষণের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাতে পাশ না হলে বিজ্ঞপ্তি উঠবে না! থাকো এখন বসে হাত পা গুটিয়ে! ... ...
এদিকে শেবার রানির মন উথাল পাথাল। সে আগ্রহী। সে ভয়ানক কৌতূহলী। সে শান্তি পায় না। সে জানতে চায় সেই রাজাকে। প্রজ্ঞা তো হৃদয়ের অলঙ্কার! এও তো একরকমের যুদ্ধ যাত্রা। মননের যুদ্ধ। মেধার যুদ্ধ। চাতুর্যের কৌশলী তির। জ্ঞানের শাণিত তরবারি। মগজাস্ত্র! রানি ভাবে, এই যাত্রা কি খুব সহজ? মোটেই নয়। ইতিহাসে এমন যুদ্ধযাত্রার হদিশ কি পেয়েছ কখনো আলমিত্রা? পনেরশ মাইলের এক দীর্ঘ মরুপথ। সে পথ এঁকে বেঁকে গেছে আরব মরুভূমির গভীর প্রদেশ দিয়ে, নোনা সাগরের তীর ঘেঁষে মোআব, জর্ডন, কানানের ফসলের খেত আর আঙুর বাগানের ভেতর দিয়ে ধীরে ধীরে উঠে গেছে জেরুজালেমের পাহাড়ে। দুইমাসেরও বেশি সময় চাই। ... ...
হঠাৎ যুবকদের মধ্যে একজন জিজ্ঞাসা করে, এখানে যদি থেকে যেতে চাই আমরা দুদিন, কাছাকাছি অ্যাকোমোডেশন কোথায় পাবো? এখান থেকে বাঁ দিকে গিয়ে মাইল আষ্টেক দূরে বান্দোয়ান নামে একটা ছোট শহর আছে, সেখানে শুনেছি পি-ডব্ল্যু-ডি-র একটা ডাক-বাংলো গোছের কিছু আছে, খোঁজ করে দেখতে পারেন। বাঁদিকে না গিয়ে যদি ডান দিকে যান, তিন-চার মাইলের পর সাত-ঘুরুং নদীর কাছে একটা সরকারি ট্যুরিস্ট লজ গোছেরও আছে শুনেছি। এ ছাড়াও যেখানে বসে আছেন সেই চৌহদ্দির মধ্যে চারখানা ঘর আছে, তবে তা কী পছন্দ হবে আপনাদের? ... ...
সবটাই দামোদর নদের বালি উত্তোলন নিয়ে। ও হলো সোনার খনি। তিনি এক ব্যবসায়ীকে নিষিদ্ধ করেছেন চিঠি দিয়ে, সেই ব্যবসায়ী দিন পনের বাদে গাড়ি হাঁকিয়ে আমাকে এসে বলছেন, স্যার বলে পাঠালেন, কাগজপত্র, চালানে সই করে আমার কাজ শুরু করিয়ে দিতে। বললাম, স্যার চিঠি দিয়ে বন্ধ করেছেন, স্যার চিঠি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা রহিত না করলে তো আমি কোনো চালানে স্বাক্ষর করতে পারব না, লিজ অর্ডার দিতে পারব না। যাদব মশায় জোরাজুরি করতে লাগলেন। তিনি আমাকে হঠাৎ বলেছিলেন, আপনার বই কী বেরুলো স্যার, কত কপি ছাপা হয়, আমি কিনিয়ে নিবো। অপমানিত লেগেছিল। স্যরি। আপনি নিজেই তো বাংলা পড়তে পারেন না, আমি অফিসে বই বেচতে বসি না। তিনি না পেরে আবার জেলা সদরে ছুটলেন। বলে দিলাম, লিখিত অর্ডার যেন তিনি না নিয়ে আসেন। অফিসিয়াল চিঠি যেভাবে আসে, সেই ভাবেই আসে যেন। স্যার অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন, তাঁর পাঠানো ব্যবসায়ীকে আমি প্রত্যাখ্যান করায়। ... ...
২০১৭-র শীতকাল। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত’র কাছে আমার জানার ইচ্ছে একেবারেই সিনেমা ও সাহিত্যের শিক্ষার্থী হিসেবে। সেই ইচ্ছেই আমার জানতে চাওয়ার মধ্যে ধরা পড়েছে আশা করি। বেশ কয়েক বার বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁর গোলপার্কের বাড়িতে গেলেও এত প্রশ্ন করার দুঃসাহস আগে হয়নি। তিনি নিজেই এই দুঃসাহস জুগিয়েছেন প্রশ্রয় দিয়ে। এই কথোপকথন তাঁর অভিষিক্তার ফ্ল্যাটে বসে। প্রবল শরীর খারাপ নিয়েও অনেকক্ষণ সময় দিয়েছেন আর এর বাইরেও হয়েছে অনেক ব্যক্তিগত কথা। সেগুলো এখানে অপ্রয়োজনীয়। আর এই প্রথম প্রকাশ পাচ্ছে এই কথোপকথন, চিরতরে তাঁর হারিয়ে যাওয়ার বেদনা গায়ে মেখে। প্রথম কিস্তি। ... ...