ছাত্র-ছাত্রীরা সড়ক নিরাপত্তা ও বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে মানুষ হত্যার বিচার চেয়ে সরকারের কাছে নয় দফা দাবি জানায়। তারা রাজধানীর মিরপুর, উত্তরা, ধানমন্ডি, সাইন্সল্যাব, গুলশান সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ এলাকার মহাসড়ক অবরোধ করে এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় তারা লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন বাস ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তারা মহাসড়কের প্রত্যেকটি গাড়ির লাইসেন্স, ড্রাইভারের লাইসেন্স চেক করা শুরু করে। লাইসেন্স না দেখাতে পারলে তারা গাড়িগুলোর চাবি রেখে দেয় এবং বাজেয়াপ্ত করে। লাইসেন্সহীন ড্রাইভারের বিরুদ্ধে ট্রাফিক সার্জেন্টের মাধ্যমে মামলা দেয়। ... ...
এখন সরব নয় গাছের পাতারা আর সামান্য বর্ষায় ঝোলে ঝালে অম্বলে দিনযাপনের পর মনে কিছু নেই তার ঠিক কোন কথাগুলি ভেসে গেল জলে? এখন কয়েকদিন ধরে বাসাগুলো সারাবে পাখিরা ফের গুটি গুটি কুটোকাঠি জুড়ে বর্ষার শেষে পিঁপড়েরা অফিসে বেরোবে নতুন পাতারা স্কুলে এল আগমনী সুরে। বর্ষার জলে গাছের অন্তর কেঁপে ওঠে এখন সহজ রস শিরায় শিরায় ছমছমে হয়ত শব্দ পায়, উচ্চারিত অদৃশ্য ঠোঁটে শ্যাওলার কাঁথা পেতে ধরে যত জল জমে। প্রতি বর্ষায় গাছ আয়ু থেকে বেড়েছে বয়েসে যতখানি হারিয়েছে, তত বেশি জল ভালবাসে। পড়তে থাকুন, এই বর্ষার কবিতাগুচ্ছ। ... ...
যারা মানুষকে দেশহীন, কালহীন, নামগোত্রহীন ক'রে নোম্যানসল্যাণ্ডে ছুঁড়ে ফেলে, নন-এন্টিটি করে দেয়; সেইসব হিংস্র রাজাকার বাহিনীর উদ্দেশে ... ...
প্রশ্ন উঠতে পারে, এই ছোট ছেলেমেয়েদের রাস্তাদখল আর কর্তৃত্বের অধিকার কে দিল? আসলে এই অধিকার দিল তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আর মালিকানাবোধ। তারা এখন বড়দের শেখাচ্ছে এইদেশের মানুষ প্রজা নয়, তারা নাগরিক, নাগরিকের অধিকার লুন্ঠিত হলে তা প্রতিষ্ঠার অধিকার ও দায়িত্ব তাদের আছে। এই দেশের মালিক এই দেশের মানুষ, কিছু লোভী ব্যক্তি আর নিপীড়ক গোষ্ঠী নয়। বড়রা যদি এই মালিকানা দাবি করতে না পারেন, তাহলে ছোটরাই এগিয়ে এসে বড়দের পথ দেখাবে। আসলে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যে গণজাগরণ ঘটেছিল, সেটি ছিল প্রজন্ম ’৭১র বিদ্রোহ। মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় প্রজন্ম সেদিন যুথবদ্ধ হয়ে পথ দেখিয়েছিল দেশকে। আর এখন যারা আন্দোলন করছে, এই ছোটরা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের তৃতীয় বা চতুর্থ প্রজন্ম, যাদের হাতে আগামীতে দেশের স্টিয়ারিং থাকলে, কখনোই পথ হারাবে না বাংলাদেশ! ... ...
মাছ জাতীয় জলের প্রাণীদের মাইক্রোবের আক্রম্ণ থেকে রক্ষা করার জন্য কৃত্রিম পুকুরে অল্প পরিমাপে ফর্মালিনের ব্যবহার প্রচলিত। তবে এই সব ব্যবহারেই লিখিত বিধিনিষেধ যা অনেক স্বীকৃত গবেষণা দ্বারা উপলব্ধ, সেগুলো মেনে চলে কাজ করার বিধিনিষেধ আছে। এই ধরণের বেশিরভাগ রাসায়নিক হাওয়ার অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে আর তা সূর্যের আলোতে ও খুবই অল্প পরিমাণে বিশেষ কিছু মেটাল আয়নের সহযোগিতায় তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে যেতে থাকে। এই প্রয়োজনীয় মেটাল আয়নগুলি ট্রেস মেটাল, যেগুলোকে আমরা প্রয়োজনীয় মিনারেল বলে থাকি সেগুলো সাধারণতঃ আমাদের জলে থাকে। সেজন্য এই ফর্মালিন যুক্ত মাছ হাওয়া ও জল মুক্ত অন্ধকার প্যাকিংএর বাক্সে বরফের সঙ্গে রাখার চেষ্টা চলে। বরফ যে কোনো সাধারণ জৈবরাসায়নিক প্রক্রিয়াকে এমনকি পচনকেও মন্থর করে তোলে। খুব বেশি পরিমাণ ফর্মালিন ব্যবহার করা শক্ত, কারণ এটা সাধারণ তাপে ফর্মাল্ডিহাইড হিসেবে হাওয়ায় পৌঁছে গিয়ে তীব্র ভাবে মানুষের শরীরে প্রতিক্রিয়া করতে থাকে এবং ত্বকে জ্বালা, শ্বাস নিতে কষ্ট, বমি ভাব,চোখে জ্বালা ও জল পড়া ইত্যাদি উপসর্গ সঙ্গে সঙ্গে শুরু হতে পারে ।এছাড়া এর তীব্র গন্ধ অসহ্য আর যারা মাছের পচন রোধে এটা ব্যবহার করছে তাদেরও স্বাস্থ্যের বারোটা বাজিয়ে দিতে থাকে। ... ...
পুরো রাজনীতি আজকে দক্ষিণ দিকে ঝুঁকে পড়েছে। দেশে বলুন বা আন্তর্জাতিক স্তরে, দক্ষিণপন্থী প্রবণতা হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সাহেব থেকে বৃটেনের ব্রেক্সিটওয়ালারা থেকে আমাদের খাঁটি স্বদেশি মোদি সরকার – হক্কলে ভূমিপুত্র রাজনীতির ডালে দক্ষিণমুখী বাসা বেঁধেছেন। আসাম ব্যতিক্রম নয়। আসাম আন্দোলনের সময়ে কিন্তু ছবিটা এরকম ছিল না। বামপন্থীরা হিংস্র জাতীয়তাবাদীর স্রোতের প্রতিকূলে গিয়েছিলেন, নিজের রাজনীতি রাখার ধক দেখিয়েছিলেন। বিনিময়ে পার্টি (সি পি আই, সি পি এম – দুই পার্টিই) বহু কমরেডের শাহাদত স্বীকার করেছিল। আজ বছর চল্লিশ পরে দলগুলোর সেই তাত্বিক বা ব্যবহারিক ক্ষমতা দেখা যাচ্ছে না যে একটা ঠিকঠাক রাজনৈতিক লাইন নিতে পারে। ... ...
প্রথম দফায় অনশন চলাকালীন যখন একের পর এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ছে এবং কোনো সরকারি মেডিক্যাল টিমকে পাওয়া যাচ্ছে না তাদের দেখভালের জন্য সেই অবস্থায় ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার আব্দুল রাজ্জাক। তাঁরই উদ্যোগে ডাক্তার আসে জিকেসিআইইটিতে। আন্দোলনের শুরু থেকে তিনি নৈতিক ভাবে ছাত্রছাত্রীদের পাশেই ছিলেন। হঠাৎ শোনা যায় আব্দুল বাবুকে জিকেসিআইইটি থেকে সরিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এনআইটি দুর্গাপুরে। স্বভাবতই ছাত্ররা এই খবরে ষড়যন্ত্রের আভাস পায়। আবারও তৈরী হয় আন্দোলনের পরিস্থিতি। এনআইটির তৎকালীন ডিরেক্টর শ্রী অশোককুমার দে-র বক্তব্য অনুযায়ী অবশ্য এর সমস্তটাই অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ... ...
২০১৭ সালে বিজেপি যখন থেকে অরণ্যের ওপর আদিবাসীর অধিকারের শতাব্দী প্রাচীন আইন বদলাবার জন্য কোমর বাঁধল, কিন্তু বিরোধী দলগুলির মিলিত প্রতিবন্ধকতায় এখনই সেই আইনের কোন সংস্কার করতে পারল না , তখন থেকেই পাথালগড়ি আন্দোলনের ভাবনাচিন্তা। প্রায় একই সঙ্গে ২০০ আদিবাসী গ্রাম সামিল হয় এই বিদ্রোহে , আরও ছত্রিশ হাজার গ্রাম শীগগিরি যোগ দেবে বলে আন্দোলনকারীদের আশা ছিল ,কিন্তু তার আগেই নেমে এল অকথ্য দমনপীড়ন একটি গণধর্ষণকে কেন্দ্র করে । সেটায় বিস্তারিত যাবার আগে পাথলগড়ি নিয়ে আরও দু চার কথা । ... ...
আচ্ছে দিনের বাজারে অবশ্য সবসময় উন্নয়নের হিসেব রাখা মুশকিল। কখন কোথা দিয়ে বিকাশ হয়ে যাবে, টেরটিও পাবেন না। ভাববেন আমের বাজারদর যাচাই করবেন, সরকারপক্ষ আপনার হাতে ধরিয়ে দেবে আমলকী ফলনের বার্ষিক হিসেব। যেমন ধরুন, কর্মসংস্থান। বিরোধীপক্ষ সরকারের কাছে জানতে চাইলেন গত চার বছরে কত নতুন চাকরি সৃষ্টি হয়েছে। মোদীজি তার উত্তরে কতজন বছরে পাশ করে ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, সি এ হচ্ছে তার হিসেব দিয়ে দিলেন। নাও, এবার ঠ্যালা সামলাও। তাই বলছি, হিসেব মেলানোর চেষ্টা না করাই ভালো। ... ...
তিরিশে জুলাই, সোমবার, গনি খান চৌধুরী ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি-র ছাত্র সংগঠন জিকেসিআইইটি স্টুডেন্ট'স ইউনিটি-র উদ্যোগে মালদা মেন্ পোস্ট অফিসের কাছে ফোয়ারা মোড়ে বিকেল চারটে থেকে একটি পথসভার আয়োজন করা হয়। এই সভার উদ্দেশ্য ছিল ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা বছরের পর বছর কিভাবে জিকেসিআইইটি কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রতারিত হয়ে আসছে সেই কাহিনী মালদা শহরের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। - একটি প্রতিবেদন। ... ...
মেডিক্যাল কাউন্সিল, প্রত্যেকটা রাজ্যে একটা করে মেডিক্যাল কাউন্সিল আছে আর একটা মেডিক্যাল কাউন্সিল আছে ন্যাশানাল লেভেলে। ন্যাশানাল লেভেলে যে মেদিক্যাল কাউন্সিল সেটাকে বলা হয় মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া আর প্রত্যেকটা রাজ্যে একটা করে স্টেট মেডিক্যাল কাউন্সিল থাকে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এই স্টেট মেডিক্যাল কাউন্সিলের নাম হচ্ছে West Bengal Medical Council. মেডিক্যাল কাউন্সিলের যে কাজ, স্টেট মেডিক্যাল কাউন্সিলের যে কাজ সেটা প্রধানত হচ্ছ যে MBBS বা আধুনিক চিকিৎসার যে অন্যান্য ডিগ্রী বা ডিপ্লোমাধারী যে ডাক্তাররা আছেন তাদের একটি রেজিস্টার মেন্টেন করা আর এছাড়া ডাক্তাররা নিয়মনীতি মেনে কাজ করছে কি না সেটা দেখার দায়িত্ব স্টেট মেডিক্যাল কাউন্সিলের ওপর। ... ...
আসামের সর্বাঙ্গীন উন্নতিতে হিন্দু-মুসলমান বাঙালীর একটা বিরাট অবদান রয়েছে। কিন্তু অসমীয়া রাজনীতিবিদেরা চিরকাল সাধারণ অসমীয়াকে বুঝিয়ে এসেছে বহিরাগতরাই আসামের দুর্গতির মূল কারণ। তাদের বিতাড়ন করতে পারলেই এই জমি, এই জলজঙ্গল, এই প্রাকৃতিক অকৃপন সম্পদ, ভাষা-ধর্ম সব কিছুতে আমাদের প্রভুত্ব চলবে। যে করে হোক আমাদের সংখ্যাগরিষ্ট প্রমান করতে পারলেই কেল্লা ফতে। আর তার জন্য প্রয়োজন এদেরকে যত বেসী সংখ্যায় বিতাড়ন। কিন্তু দেশভাগের পর উদ্বাস্তু স্রোত, একাত্তরে খানসেনার দাপটে আতংকিত হিন্দু মুসলিম শরণার্থী আর পরবর্তী সময়ে খেপে খেপে নিজস্ব ও সামাজিক- অর্থনৈতিক কারণে কখনও মুসলিম, কখনও হিন্দু অনুপ্রবিষ্ট হয়েছে আসামে। ... ...
দাবী ছিল ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘটনাস্থলে এসে অ্যাফিলিয়েশনের বিষয়টি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সাথে কথা বলতে হবে। ৫ ঘন্টার ওপর অবরোধ চলার পরও ডিএম সাহেব আসেননি। তার বদলে ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন মালদা সদরের তৎকালীন সাবডিভিশনাল অফিসার শ্রী সন্দীপ নাগ। ছাত্রদের বক্তব্য অনুযায়ী সন্দীপ বাবু আদেও তাঁদের সাথে কথা বলতে আসেননি। বরং তিনি এসেই অবরোধ তুলে নিয়ে "নাটক" বন্ধ করতে বলেন। ছাত্ররা সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা তাঁদের কি করা উচিত জানতে চাইলে তিনি বলেন, "মরে যাও"! এই মন্তব্যের পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত মানুষজন উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ফলে খুব শিগগিরই ঘটনাপরম্পরা পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি এবং লাঠিচার্জের দিকে এগোয়। যদিও ঘটনাপরবর্তী কোনো সরকারি বিবৃতি নেই যা এই ঘটনাক্রমের প্রমান হিসেবে পেশ করা যেতে পারে। ... ...
সুপ্রীম কোর্টে ৩৭৭ নিয়ে সাংবিধানিক বেঞ্চের শুনানি শেষ হয়েছে। তাতে ৩৭৭-এর পক্ষের কে একজন সুপ্রীম কোর্টে যেন বলেছেন শুনলাম, ৩৭৭ উঠে গেলে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। কেননা, সেক্ষেত্রে না কি জওয়ানরা সীমাসুরক্ষার কথা ভুলে নিজেদের মধ্যে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হবেন। হুম, গুরুতর সমস্যা। সীমা সুরক্ষার কথা ভুলে যাওয়া কোনও কাজের কথা নয়। অন্তত বুলাদি তাই শিখিয়েছিলেন। এ সবের বাইরে গত সপ্তাহে আরও কিছু সাধারন ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় কয়েকজন গনপিটুনিতে মারা গেছেন, কোথায় যেন কাকে গেস্ট হাউসে আটকে রেখে চারদিনে চল্লিশবার ধর্ষণ করা হয়েছে, টাকা নীচে ও পেট্রল ওপরে উঠে চলেছে, কিছু চাষী এদিক ওদিক আত্মহত্যা করেছে। আর ও হ্যাঁ, শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবীর প্রথম সিনেমা রিলিজ করেছে। ... ...
বেশ কয়েকদিন ধরেই কানে আসছিলো যে মালদা মেডিক্যাল কলেজেও কিছু একটা চলছে। কানে আসছিলো বলার চেয়ে চোখে পড়ছিলো বলা ভালো বরং, সোশ্যাল মিডিয়ায় দু-একটা মন্তব্য দেখা যাচ্ছিলো। কিন্তু বিশদে বোঝা যাচ্ছিলো না কিছুই। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো, মেডিক্যাল নয়, একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। কিন্তু কলেজ কি বলা যায়? নাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান? নাকি শুধুই কয়েকটি বিল্ডিং যার কোথাও কোনোদিন সঠিকভাবে নিবন্ধীকরণই হয়নি। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হয়তো পাওয়া যেতে পারতো প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের থেকে, কিন্তু মজার বা ভয়ের ব্যাপার হলো, তাঁরা নিজেরাও এ বিষয়ে সম্যক ধারণা রাখেন না। ২০১৬ থেকে ধরলে সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা এই নিয়ে তৃতীয় দফায় আন্দোলনে নেমেছে। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো সদুত্তর তারা পায়নি কর্তৃপক্ষের থেকে। ... ...
কোথা দিয়ে কেটে গেছে দুটি বছর, টেরও পাইনি। সাক্ষাৎ পরিচয় হয়েছে এক অনবদ্য পরিবারের সাথে। আমার জানা নেই, এমন পরিবার কোলকাতা শহরে আর দ্বিতীয় আছে কি না। সাহিলের বাবা মারিয়ো পিটার পেরিওয়াল ধার্মিক খ্রিস্টান। ভালোবেসে জীবনসঙ্গী হিসাবে বেছে নিয়েছেন শেহনাজকে। শেহনাজ ধর্মে মুসলিম। পিটারের মা বাবাও পরস্পরকে ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন। এবং পিটারের মা কিন্তু খ্রিস্টান নন, মাড়োয়াড়ি। পিটারের শ্যালক, মানে সাহিলের মামা আবার যাঁকে বিয়ে করেছেন, তিনি ধর্মে হিন্দু এবং বাঙালি। দু'বছরে ঈদ, ক্রিসমাস, বিজয়া দশমী, তিনটি উৎসবের নেমন্তন্ন পেয়েছি ওদের বাড়িতে। এমন নয় যে পরিবারে কেউ ধর্মের ধার ধারেনা। একই ছাদের তলায় নামাজ পড়া এবং রবিবারে চার্চে যাওয়া নিত্যকারের কাজ হিসাবেই দেখতাম আর অবাক বিস্ময়ে ভাবতাম, এও সম্ভব!! ... ...
“বাঁ দিকে একবার ঘুরে তাকান। ওখানে ওরা শুয়ে আছে। এই কদিনে আপনারা ওদের চিনে নিয়েছেন ফেসবুকে। এই কদিনে আপনারা ওদের দেখেছেন নানা ভাবে। এদের মধ্যে বেশ কিছুজন এখন আই সি ইউ তে। ওই যে কোনের ছেলেটি শুয়ে আছে ও কিন্তু...। হ্যাঁ ঠিক বলেছেন ওর নাম। আস্তে আস্তে ওর অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। আমরা প্রতিদিন ওর স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখছি। কিন্তু...।” থেমে গেলেন এক তরুন ডাক্তার। সবার হাতে মোবাইল। সবার হাতে ক্যামেরার ঝলকানি। কেমন যেন কনসেনট্রেশান ক্যাম্প ঘুরে দেখার কথা মনে হল। মনে হল এইবার আহুতি দেওয়ার জন্য যোগ্য সব ছাত্রদের পাওয়া গেছে। আমরা নিশ্চিন্ত। যাবতীয় দায়িত্ত্ব ঝেড়ে ফেলে। আপাতত ফেসবুক স্ট্যাটাসের বিল্পবে ফিরে যেতে পারবো। কিন্তু কি চেয়েছিল ওরা? ওরা চেয়েছিল ওদের ন্যায্য অধিকার। আপাত অর্থে খুবই সামান্য। কিন্তু অত্যন্ত জরুরী। না আমি ওদের ছবি তুলতে পারিনি। ... ...
বিখ্যাত মানুষজন এসেছিলেন অনেকে, যাদের মিডিয়া বিদ্বজ্জন বলে টলে। বললেনও তাদের মধ্যে অনেকে, ভালই বললেন, তাদের অনেকেই সুবক্তা। বললেন কমলেশ্বর ভট্টাচার্য, অনীক দত্ত, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কোশিক সেন, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, পল্লব কীর্তনীয়ারা। ছাত্র রাজনীতিকে "অরাজনৈতিক" করে দেওয়ার কথা উঠে এল বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্যে, কৌশিক সেন অবশ্য বললেন ছাত্রদের তোলাবাজির রাজনীতি দেওয়ার কথা। পরিচালক অনীক দত্ত বললেন নিজের হারিয়ে ফেলা শহর কলকাতাকে ফিরে পেতেই তিনি এ আন্দোলনের পাশে, এই কলকাতা তাকে বিশ্বাস যোগায় এ শহরে থাকতে চেয়ে ভুল করেননি তিনি। কিন্তু যে বয়স্ক মানুষটি বললেন আমরা অনশন করব তোমাদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনিই বোধহয় গোটা সভাগৃহটাকে এক্সুরে বেঁধে দিলেন , কিংবা যে অভিভাবক বললেন আমরা আছি তোমাদের পাশে, থাকব এ লড়াইয়ের শেষ পর্যন্ত। অন্যান্য কলেজ থেকে আসা পড়ুয়ার দল যারা স্লোগান তুলল গলা মেলাল স্লোগানে, তারাই আজকের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠল ক্রমশ। ব্যাকগ্রাউন্ডে পল্লব গাইলেন 'হোক লড়াই'। মৌসুমী গাইলেন তাঁর ক্লাসিক বহুস্বরের গান 'তুমি কোথায় ছিলে অনন্য'। গান আর স্লোগান, ভিড়ে ঠাসা সভাগৃহে ছাত্রছাত্রীদের অঙ্গীকার, এর পরে কনভেনশনই পরিণত হল মিছিলে। না হয়ে আর উপায় ছিলনা। ... ...
গত কয়েক বছরে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং স্বাস্থ্যশিক্ষার ক্ষেত্রে বর্তমান রাজ্য সরকারের ভূমিকা জনমানসে বিরূপতার জন্ম দিয়েছে। ছাত্র, চিকিৎসক এবং রোগীসাধারণ, তিনটি গোষ্ঠীর মধ্যেই ক্ষোভ ও উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অথচ এটুকু বলে থেমে গেলে বস্তুত অর্ধসত্য বলা হয় এবং সরকারের প্রতি অন্যায় করা হয়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ আদর্শ না হলেও প্রশংসনীয়। স্বাস্থ্যখাতে ভারতের গড় সরকারি ব্যয়ের তুলনায় বেশ খানিকটা বেশি। বিভিন্ন অঞ্চলে বেশ কিছু হাসপাতাল বিল্ডিং খাড়া করে বেশ কয়েক হাজার বেড বাড়িয়েছেন এই সরকার। সরকারি উদ্যোগে বা পিপিপি মডেলে ডয়ালাইসিস থেকে শুরু করে ইন্টেনসিভ কেয়ার জাতীয় বিভিন্ন পরিষেবা আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে দেবার মতো পরিকাঠামো তৈরি করার ক্ষেত্রে খানিক এগিয়েছেন। এগুলো অস্বীকার করে কেবলমাত্র সরকারকে দোষারোপ করার রাজনীতি করতে চাই না। সমস্যা হল ব্যয়বরাদ্দ বাড়িয়ে এবং পরিকাঠামোতে নজর দিয়েও স্বাস্থ্যবব্যস্থার প্রকৃত উন্নতি সম্ভব হল না পরিকল্পনার অভাবে। ... ...
কোলকাতা মেডিকেল কলেজে পুরনো হস্টেলের কিছু ছবি ... ...